সত্য নিউজ:শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার সময় দেওয়ার পরও ১২ বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন করতে ব্যর্থ হওয়া ১৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত ৩ মাস ধরে ইউজিসিকে এই বিষয়ে তাগিদ দেওয়া হলেও, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ইউজিসি এই বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
উল্লেখযোগ্য, ২০১০ সালের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠার পর প্রথম সাত বছর এবং পরে আরও পাঁচ বছরের সময় দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তাদের স্থায়ী ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু ১২ থেকে ২০ বছর পার হলেও, এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়নি। ফলে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসি চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বে থাকা সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হওয়ার বিষয়ে বারবার তাগিদ দেওয়া হলেও তারা তা বাস্তবায়ন করেনি। তিনি আরো বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা ইউজিসি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আগামী মাসিক সভায় চূড়ান্ত হবে।"
ইউজিসির সদস্য আরও জানান, "কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ১২, ১৫, ১৮ এমনকি ২০ বছর ধরে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে পারেনি। আমাদের পরবর্তী সভায় এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হবে, যার মধ্যে তাদের অনুমোদন বাতিলও হতে পারে।" তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হবে ইউজিসি চেয়ারম্যানের নির্দেশনায়।”
এর আগে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ইউজিসি ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়কে স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তর করতে চিঠি পাঠিয়েছিল। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ায় ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ এবং ২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ভর্তিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
এই ১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯টি ঢাকায় অবস্থিত, যার মধ্যে রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি, এবং ব্রিটানিয়া ইউনিভার্সিটি সহ আরও অনেক।
এদিকে, সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি গত শনিবার খিলগাঁও এলাকায় তাদের অর্ধসমাপ্ত স্থায়ী ক্যাম্পাস উদ্বোধন করেছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ঘটে।
শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভবিষ্যতের পথে কঠোর পদক্ষেপ
এদিকে, ইউজিসি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও গুণগত মান রক্ষার প্রয়াস স্পষ্ট হচ্ছে। আইন অনুযায়ী, যদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যেতে পারে, তবে তাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।