৩১ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজকের বাজার পর্যালোচনা

শেয়ারবাজার ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ১৫:৫০:৩৫
৩১ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজকের বাজার পর্যালোচনা

৩১ জুলাই ২০২৫ তারিখে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ৩৯৪টি শেয়ার লেনদেন সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে ১৫০টি শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, ১৬৭টি শেয়ারের দাম কমেছে এবং ৭৭টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। এই ফলাফল থেকে বোঝা যায় বাজারে কিছুটা চাপের পরিস্থিতি থাকলেও দাম ওঠানামা চলছে। বিশেষ করে “এ” ক্যাটাগরির শেয়ারগুলো তুলনামূলক সুষম পারফরম্যান্স প্রদর্শন করেছে যেখানে ১০১টি শেয়ারের দাম বেড়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার ইঙ্গিত।

“বি” ক্যাটাগরির শেয়ারগুলোতে দাম কমার পরিমাণ বেশি ছিল। মোট ৮২টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, এর মধ্যে ৪৭টির দাম কমেছে এবং মাত্র ২১টির দাম বেড়েছে। এই বিভাগে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ বিশেষজ্ঞরা দিচ্ছেন, কারণ দাম পতন বেশি হওয়া অর্থনৈতিক বা প্রতিষ্ঠানগত কোনো দুর্বলতার সংকেত হতে পারে।

“জেড” ক্যাটাগরির শেয়ারগুলোতে ৯৫টি লেনদেন হয়েছে। এখানে দাম ওঠানামার পরিমাণ ছিল মাঝারি, ২৮টি শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং ৩৮টির দাম কমেছে। এই ক্যাটাগরির শেয়ারগুলো মূলত মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে, যা বাজারের অনুভূতিতে বেশি প্রভাব ফেলে। তাই এ বিভাগে বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্ক হওয়া জরুরি।

মিউচুয়াল ফান্ড ও কর্পোরেট বন্ডের লেনদেন ছিল সীমিত। মিউচুয়াল ফান্ডে মোট ৩৬টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যেখানে ১১টির দাম বেড়েছে এবং ৬টির দাম কমেছে। কর্পোরেট বন্ড ও সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন খুবই কম ছিল এবং দাম পরিবর্তন সীমিত ছিল, যা এই সেক্টরের স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে।

আজকের মোট লেনদেনের পরিমাণ ১০৬৩ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা বাজারে বিনিয়োগকারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রতিফলন। মোট ৪০ কোটি ২৪ লক্ষ ৮৯ হাজার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে এই অঙ্কে পৌঁছানো হয়েছে, যা দিনের বাজার গতিশীলতার প্রমাণ।

বাজার মূলধনের দিক থেকে ইক্যুইটি শেয়ারের মোট বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩.৬২ ট্রিলিয়ন টাকা, মিউচুয়াল ফান্ডের বাজার মূলধন ২৯৩ কোটি এবং ঋণপত্র বা ডেব্ট সিকিউরিটিজের বাজার মূল্য প্রায় ৩.৪৭ ট্রিলিয়ন টাকা। একত্রে এগুলো মিলিয়ে মোট বাজার মূলধন দাঁড়ায় ৭.১২ ট্রিলিয়ন টাকার কাছাকাছি, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির স্টক মার্কেটের গুরুত্ব তুলে ধরে।

ব্লক ট্রানজেকশনে আজ মোট ৩৬টি শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। মোট ৬৫ লাখ ৮৯ হাজার ৪৫৮ শেয়ার ৩০৭ কোটি টাকার বেশি মূল্যে বিক্রি হয়েছে। এই বড় ধরনের লেনদেন প্রফেশনাল বিনিয়োগকারীদের সক্রিয়তার ইঙ্গিত দেয়, যারা বাজারের মূল প্রবণতাকে শক্তিশালী করে।

ব্লক ট্রানজেকশনের মধ্যে কেপিবিপিডব্লিউআইএল শেয়ার সবচেয়ে বড় ভলিউমে লেনদেন হয়েছে, ৬৮৭ হাজার ইউনিট বিক্রি হয়েছে। এছাড়া ট্রাস্ট ব্যাংক শেয়ারের ১৫টি ট্রেডে ১২ লাখ ৪২ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রদর্শন করে।

ম্যারিকো শেয়ারের সর্বোচ্চ মূল্য ২৬৮৮ টাকা ছিল, যা দেশের শেয়ারবাজারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক হিসেবে বিবেচিত। এই শেয়ারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা ও বাজারের শক্তিশালী অংশীদারিত্ব প্রমাণিত হয়।

সাধারণত আজকের বাজারে “এ” ক্যাটাগরির শেয়ারগুলো শক্ত অবস্থানে ছিল, যেখানে অনেক শেয়ারের দাম বেড়েছে এবং লেনদেনও ছিল ব্যাপক। অন্যদিকে, “বি” ও “জেড” ক্যাটাগরির শেয়ারগুলোতে দাম কমার প্রবণতা লক্ষণীয়, যা বিশেষজ্ঞদের সতর্ক করে দিয়েছে বিনিয়োগে আরও গভীর বিশ্লেষণ ও সংযমের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে।

মোটের উপর বিচার করলে, ৩১ জুলাইয়ের ডিএসই কার্যদিবসটি ছিল স্থিতিশীলতার লক্ষণ বহনকারী। দাম ওঠানামা থাকলেও মোট লেনদেনের পরিমাণ এবং বাজার মূলধনের উচ্চতা থেকে বোঝা যায় বিনিয়োগকারীদের আস্থা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে।

বিনিয়োগকারীদের জন্য পরবর্তী সময়ে সতর্ক থাকা জরুরি, বিশেষ করে নিম্নবর্গের শেয়ার ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাটাগরিতে। তবে বড় ও প্রফেশনাল বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ এবং শক্তিশালী ব্যাংক ও ফার্মাসিউটিক্যাল সেক্টরের শেয়ার লেনদেন বাজারের স্থিতিশীলতার লক্ষণ।

-রাফসান

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ