পারফিউমের গন্ধ সারাদিন ধরে রাখার জাদুকরী কৌশল

সুগন্ধি বা পারফিউম কেবল শরীরের দুর্গন্ধ ঢাকার জন্য নয়, এটি একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব, রুচি এবং উপস্থিতির জানান দেয়। কিন্তু অনেকেই না জেনে ভুলভাবে পারফিউম ব্যবহার করেন, যার ফলে দামি সুগন্ধিও তার আসল রূপ প্রকাশ করতে পারে না এবং দ্রুত মিলিয়ে যায়।
বেশির ভাগ মানুষ পারফিউম স্প্রে করার পর দুই হাতের কব্জি একে অপরের সঙ্গে ঘষে নেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি সুগন্ধি ব্যবহারের সবচেয়ে বড় ভুল। এই ঘর্ষণের ফলে ত্বকে তাপ উৎপন্ন হয় এবং প্রাকৃতিক এনজাইম তৈরি হয়, যা পারফিউমের মূল ঘ্রাণ বদলে দেয়।
তাই কব্জি বা ত্বকে স্প্রে করার পর তা ঘষাঘষি না করে প্রাকৃতিকভাবে শুকাতে দেওয়া উচিত। এতে সুগন্ধির গন্ধ ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় এবং এর স্থায়িত্ব বাড়ে।
সুগন্ধি ব্যবহারের ক্ষেত্রে শরীরের সঠিক স্থান নির্বাচন করা অত্যন্ত জরুরি। শরীরের যেসব জায়গায় নাড়ির স্পন্দন বা পালস রেট বেশি, সেখানেই পারফিউম সবচেয়ে ভালো কাজ করে। ঘাড়ের পাশ, কব্জি, কানের পেছন এবং বক্ষবিভাজিকার মতো উষ্ণ স্থানগুলো থেকে সুগন্ধ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, শরীর থেকে অন্তত ৫ ইঞ্চি দূর থেকে পালস পয়েন্টগুলোতে দুই-তিনবার স্প্রে করলেই যথেষ্ট। এছাড়া চুলেও সামান্য স্প্রে করে নেওয়া যেতে পারে।
শুষ্ক ত্বকে পারফিউম ব্যবহার করলে গন্ধ খুব দ্রুত হারিয়ে যায়। ত্বক আর্দ্র না থাকলে সুগন্ধি ধরে রাখার মতো কোনো স্তর তৈরি হয় না। তাই পারফিউম ব্যবহারের আগে ত্বকে সামান্য ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নেওয়া ভালো।
বিশেষ করে গোসলের পর যখন ত্বক পরিষ্কার এবং হালকা ভেজা থাকে, তখন পারফিউম ব্যবহার করলে তা দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী হয়। তবে মনে রাখা জরুরি, একই সুগন্ধি সবার শরীরে একরকম ঘ্রাণ ছড়ায় না। শরীরের নিজস্ব রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে পারফিউমের গন্ধ বদলে যেতে পারে।
অনেকের ধারণা, বেশি স্প্রে করলে হয়তো গন্ধ বেশি হবে। এই ধারণাটি ভুল। অতিরিক্ত সুগন্ধি অনেক সময় আশেপাশের মানুষের বিরক্তি ও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই পরিমিত ব্যবহারই কাম্য; সাধারণত ২-৩টি স্প্রেই সারাদিনের জন্য যথেষ্ট হতে পারে।
চুল পড়া বন্ধের ৬টি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
বর্তমান সময়ে চুল পড়া নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্যই একটি সাধারণ কিন্তু উদ্বেগজনক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানসিক চাপ, অপুষ্টি, হরমোনের পরিবর্তন কিংবা অতিরিক্ত কেমিক্যালযুক্ত পণ্যের ব্যবহার—নানা কারণে অকালে ঝরে যাচ্ছে চুল।
তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। হাতের কাছে থাকা কিছু সাধারণ ঘরোয়া উপাদান নিয়মিত ব্যবহার করলে এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব। এর মধ্যে অন্যতম কার্যকর উপাদান হলো পেঁয়াজের রস।
পেঁয়াজের রসে প্রচুর পরিমাণে সালফার থাকে, যা মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে। এটি নতুন চুল গজাতেও বেশ কার্যকর। সপ্তাহে ২-৩ দিন পেঁয়াজের রস মাথায় লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ভালো ফল পাওয়া যায়।
চুলের গভীর থেকে পুষ্টি জোগাতে নারকেল তেলের জুড়ি নেই। এর সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে খুশকি দূর হয়। ২ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে ১ চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ম্যাসাজ করলে চুল সতেজ থাকে।
চুল পড়া বন্ধে মেথি বীজের ব্যবহার বহু পুরোনো। এতে থাকা প্রোটিন ও নিকোটিনিক অ্যাসিড চুলকে মজবুত করে। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মেথি সকালে বেটে মাথায় লাগালে চুল পড়া কমে।
মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে এবং চুল মজবুত করতে অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এটি সরাসরি স্ক্যাল্পে লাগিয়ে ৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হয়।
এছাড়া আমলকীতে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুল ঘন করতে সহায়তা করে। শুকনো আমলকীর গুঁড়া নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে চুলে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
চুলকে ভেতর থেকে পুষ্টি দিতে ডিম ও অলিভ অয়েলের হেয়ার মাস্ক দারুণ কাজ করে। ডিমে থাকা প্রোটিন ও বায়োটিন চুলের স্বাস্থ্য ফেরাতে সাহায্য করে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু বাহ্যিক যত্নই যথেষ্ট নয়, চুল পড়া কমাতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনাও জরুরি। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা, প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা পরিহার করতে হবে।
তবে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহারের পরও যদি চুল পড়া অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে বা মাথায় টাক পড়ে যায়, তবে দেরি না করে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
পিরিয়ডের তীব্র ব্যথা: শরীরে বাসা বাঁধছে যে গোপন রোগ
ঋতুস্রাবের সময় তলপেটে তীব্র ব্যথা হবে—এমন ধারণা আমাদের সমাজে দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। ব্যথা কমাতে অনেকেই গরম পানির ব্যাগ বা ব্যথানাশক ওষুধের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই ব্যথা সবসময় স্বাভাবিক নয় এবং একে অবহেলা করা উচিত নয়।
শরীরের সামান্য কিছু পরিবর্তন বড় কোনো রোগের ইঙ্গিত হতে পারে। বিশেষ করে ঋতুস্রাবের সময় অসহ্য যন্ত্রণা ‘এন্ডোমেট্রিওসিস’ নামক একটি জটিল রোগের লক্ষণ হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এটি নারীদের বন্ধ্যত্বের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
কুয়ালালামপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. শরিফা হালিমা জাফর জানিয়েছেন, প্রতি ১০ জন নারীর মধ্যে একজন এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। অথচ সচেতনতার অভাবে অনেকেই এটি বুঝতে পারেন না।
সাধারণত জরায়ুর ভেতরে এন্ডোমেট্রিয়াম নামক একটি স্তর থাকে, যা প্রতি মাসে খসে ঋতুস্রাব হিসেবে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। কিন্তু এন্ডোমেট্রিওসিস হলে এই স্তরটি জরায়ুর বাইরে যেমন ডিম্বাশয়, ফ্যালোপিয়ান টিউব বা পেলভিসে তৈরি হতে পারে।
সমস্যা হলো, জরায়ুর বাইরের এই স্তর থেকেও রক্তপাত হয়, কিন্তু সেই রক্ত শরীর থেকে বের হতে পারে না। ফলে ভেতরেই রক্ত জমাট বেঁধে প্রদাহ ও তীব্র ব্যথার সৃষ্টি করে।
ডা. শরিফা সতর্ক করে বলেন, অনেকেই এই উপসর্গগুলোকে সাধারণ মাসিকের ব্যথা মনে করে ভুল করেন। ফলে রোগ নির্ণয় করতে ৬ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত দেরি হয়ে যায়। আর এই দীর্ঘলগ্নের দেরি ডেকে আনতে পারে চিরস্থায়ী বন্ধ্যত্ব বা জটিল স্বাস্থ্যঝুঁকি।
এই রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো ঋতুস্রাবের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত। যদি হঠাৎ করে স্রাব বেড়ে যায় বা ঘন ঘন স্যানিটারি ন্যাপকিন বদলাতে হয়, তবে তা অবশ্যই উদ্বেগের বিষয়।
যৌনমিলনের সময় বা পরে তীব্র ব্যথা হওয়াও এই রোগের একটি বড় উপসর্গ। পেলভিক অঙ্গগুলোতে ক্ষত থাকলে এমনটি হতে পারে, যা অনেক সময় নারীদের যৌনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
এছাড়া মলত্যাগের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া বা রক্তপাত হওয়াকেও অনেকে সাধারণ পেটের সমস্যা বা আইবিএস ভেবে ভুল করেন। কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্য বা মলত্যাগের সমস্যাও এন্ডোমেট্রিওসিসের লক্ষণ হতে পারে।
দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা থেকে শরীরে অকারণে ক্লান্তি ভর করতে পারে। পর্যাপ্ত বিশ্রামের পরও যদি ক্লান্তি না কাটে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো, এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণে জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে আঠালো স্তর তৈরি হয়ে ডিম্বাণু নিষিক্তকরণে বাধা দিতে পারে। তাই পিরিয়ডের ব্যথাকে ‘স্বাভাবিক’ ভেবে অবহেলা না করে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
খালি পেটে পাকা কলা খাওয়া: উপকার, ঝুঁকি ও সঠিক নিয়ম
সকালে ঘুম থেকে উঠে অনেকেই দ্রুত শক্তি পাওয়ার আশায় খালি পেটে পাকা কলা খান। সহজলভ্য, স্বল্পমূল্য এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হওয়ায় কলা দীর্ঘদিন ধরেই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। তবে পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসকদের মতে, খালি পেটে কলা খাওয়ার বিষয়টি সবার জন্য সমানভাবে উপকারী নয়। কারও জন্য এটি উপকার বয়ে আনলেও, কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো শারীরিক সমস্যা তৈরি করতে পারে।
কেন খালি পেটে কলা খেলে দ্রুত শক্তি পাওয়া যায়
পাকা কলায় প্রাকৃতিক শর্করা যেমন গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ থাকে, যা খুব সহজেই হজম হয়ে রক্তে মিশে যায়। সকালে শরীর দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার ফলে এনার্জি লেভেল কমে যায়। এ অবস্থায় কলা খেলে তাৎক্ষণিক শক্তি পাওয়া সম্ভব হয়। এজন্য অনেক ক্রীড়াবিদ বা নিয়মিত ব্যায়ামকারীরা সকালে বা ওয়ার্কআউটের আগে কলা খেয়ে থাকেন।
হজমে সহায়ক হলেও সবাই সমান উপকার পায় না
কলায় থাকা খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে এবং অন্ত্রের কার্যক্রম উন্নত করে। নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমে এবং পেট পরিষ্কার থাকতে সাহায্য করে। তবে খালি পেটে কলা খেলে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে উল্টো পেট ফাঁপা, অম্বল বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই অ্যাসিডিটি বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি অস্বস্তিকর হতে পারে।
রক্তে শর্করার হঠাৎ ওঠানামার ঝুঁকি
খালি পেটে কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যায়। কিছু সময় পর ইনসুলিন নিঃসরণের কারণে সেই মাত্রা আবার দ্রুত নেমে আসতে পারে। এই ওঠানামার ফলে মাথা ঘোরা, দুর্বল লাগা বা অতিরিক্ত ক্ষুধা অনুভূত হতে পারে। ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া আরও ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে, কারণ এতে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ভারসাম্য প্রশ্নে
পাকা কলা ম্যাগনেসিয়ামের একটি ভালো উৎস। তবে খালি পেটে নিয়মিত কলা খেলে শরীরে ম্যাগনেসিয়ামের আধিক্য তৈরি হতে পারে, যা ক্যালসিয়ামের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘমেয়াদে জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে কিছু গবেষণায় ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
মানসিক স্বাস্থ্যে ইতিবাচক প্রভাব
কলায় থাকা ট্রিপটোফ্যান শরীরে সেরোটোনিন নামের ‘ফিল-গুড হরমোন’ উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে পরিমিত পরিমাণে কলা খেলে মেজাজ ভালো থাকে এবং মানসিক চাপ কিছুটা কমতে পারে। তবে এই উপকার পেতে কলাকে একমাত্র সমাধান হিসেবে দেখা ঠিক নয়।
ওজন বাড়ার আশঙ্কা কতটা
কলায় ক্যালরি তুলনামূলকভাবে বেশি। খালি পেটে শুধু কলা খেলে কিছু সময় পর আবার ক্ষুধা বাড়তে পারে, ফলে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণের ঝুঁকি তৈরি হয়। এতে দীর্ঘমেয়াদে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে কলা যদি প্রোটিন বা স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের সঙ্গে খাওয়া হয়, তাহলে শর্করা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
কারা বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেন
ডায়াবেটিস রোগী, কিডনি সমস্যায় ভুগছেন এমন ব্যক্তি, হৃদ্রোগী এবং দীর্ঘদিনের গ্যাস্ট্রিক বা অ্যাসিডিটির সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের খালি পেটে কলা খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। একই সঙ্গে খুব বেশি পাকা কলা বা একেবারে কাঁচা কলা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
কীভাবে কলা খেলে সবচেয়ে উপকার পাওয়া যাবে
পুষ্টিবিদদের মতে, কলা একা না খেয়ে এর সঙ্গে প্রোটিন ও ফ্যাটযুক্ত খাবার যুক্ত করাই সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর উপায়। যেমন দই, বাদাম, চিনাবাদামের মাখন বা ওটসের সঙ্গে কলা খেলে রক্তে শর্করা ধীরে মিশবে এবং শক্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে। মাঝামাঝি পাকা কলা নির্বাচন করাও গুরুত্বপূর্ণ
সকালের ৫ অভ্যাস যা আপনাকে সারাদিন এনার্জি দেবে
দিনের শুরুটা কেমন হবে, তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করে আপনার সারাদিনের এনার্জি, মনোযোগ ও মানসিক অবস্থা। ঘুম থেকে ওঠার পর প্রথম এক ঘণ্টায় আপনি কী করছেন, সেটিই নির্ধারণ করে দেয় আপনি ক্লান্ত থাকবেন নাকি কর্মচঞ্চল। স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালে কিছু সহজ কিন্তু সচেতন অভ্যাস গড়ে তুললেই সারাদিন শরীর ও মন থাকে সতেজ। জেনে নিন এমন ৫টি কার্যকর সকালবেলার অভ্যাসের বিস্তারিত।
১. ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গেই পানি পান করুন
রাতভর ঘুমের সময় শরীর প্রাকৃতিকভাবেই পানিশূন্য হয়ে পড়ে। তাই ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পরিষ্কার পানি পান করলে শরীর দ্রুত রিহাইড্রেট হয়। এটি হজমশক্তি সক্রিয় করে, মাথার ঝিমুনি কমায় এবং মেটাবলিজমকে জাগিয়ে তোলে। অনেক বিশেষজ্ঞ ঠান্ডা বা স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পানের পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যা শরীরকে দ্রুত সতেজ করে।
২. সকালের প্রাকৃতিক আলোয় কিছু সময় কাটান
ভোরের সূর্যালোক শরীরের অভ্যন্তরীণ জৈবঘড়ি বা সার্কেডিয়ান রিদম ঠিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সকালে জানালার পাশে দাঁড়িয়ে বা খোলা জায়গায় কিছু সময় কাটালে মস্তিষ্ক বুঝতে পারে যে দিন শুরু হয়েছে। এতে মেলাটোনিন হরমোনের মাত্রা কমে এবং মনোযোগ ও কর্মক্ষমতা বাড়ে।
৩. হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করুন
সকালে ভারী ব্যায়াম না করলেও ৫ থেকে ১৫ মিনিটের হালকা স্ট্রেচিং, হাঁটা বা ধীর জগিং রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে যথেষ্ট। এতে পেশি সক্রিয় হয়, শরীরের জড়তা কাটে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলস্বরূপ আপনি দিন শুরু করেন বেশি আত্মবিশ্বাস ও উদ্যম নিয়ে।
৪. পুষ্টিকর নাস্তা দিয়ে দিন শুরু করুন
সকালের নাস্তা বাদ দেওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। প্রোটিন ও জটিল কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার যেমন ডিম, ওটস, ফল বা শস্যজাতীয় খাবার শরীরে ধীরে ধীরে শক্তি সরবরাহ করে। এতে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় থাকে এবং দুপুর পর্যন্ত শক্তির ঘাটতি অনুভূত হয় না।
৫. সকালবেলা মোবাইল ও সোশ্যাল মিডিয়া এড়িয়ে চলুন
ঘুম থেকে উঠেই মোবাইল ফোনে খবর, মেসেজ বা সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা মানসিক চাপ বাড়াতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনের শুরুতেই অতিরিক্ত তথ্য গ্রহণ মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে তোলে। তাই প্রথম ৩০ থেকে ৬০ মিনিট ফোন ব্যবহার না করে নিজের শরীর ও মনে মনোযোগ দেওয়া বেশি উপকারী।
এই পাঁচটি অভ্যাস নিয়মিত অনুসরণ করলে শুধু শরীর নয়, মানসিকভাবেও আপনি থাকবেন বেশি স্থির ও কর্মক্ষম। ধীরে ধীরে এগুলোকে রুটিনে পরিণত করলে আপনার দিনের মান যেমন বদলাবে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদে উন্নত হবে সামগ্রিক জীবনযাপন।
ভোরের স্বপ্ন কি সত্যিই ফলে? যা বলছে বিজ্ঞান
ভোরের স্বপ্ন নিয়ে আমাদের সমাজে দীর্ঘদিনের একটি প্রচলিত ধারণা রয়েছে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, ভোরের স্বপ্ন নাকি সত্যি হয়। বিশেষ করে ফুটবলপ্রেমীদের জীবনে এমন অভিজ্ঞতার কথা প্রায়ই শোনা যায়।
ধরুন, আপনি আর্জেন্টিনার ভক্ত এবং দলের বিশ্বকাপ জয় নিয়ে চিন্তিত। গভীর রাতে ঘুমানোর পর ভোরে স্বপ্ন দেখলেন মেসি ট্রফি হাতে দৌড়াচ্ছেন। ঘুম ভাঙার পর হয়তো ভাবলেন এটি শুধুই স্বপ্ন।
কিন্তু খেলা শেষে যখন দেখা যায় আর্জেন্টিনা সত্যিই জিতেছে, তখন মনে প্রশ্ন জাগে। এটি কি শুধুই কাকতালীয় ঘটনা, নাকি এর পেছনে কোনো রহস্য আছে? বিশেষজ্ঞরা অবশ্য ভিন্ন কথা বলছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, ভোরের স্বপ্ন সত্যি হবে—এমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই। এটি মূলত একটি লোকজ বিশ্বাস বা কুসংস্কার মাত্র। আধুনিক বিজ্ঞান এই ভবিষ্যৎবাণীর ধারণাকে সমর্থন করে না।
তবে ভোরের স্বপ্ন কেন মানুষের মনে বেশি দাগ কাটে, তার একটি বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে। মানুষের ঘুম সাধারণত ৪ থেকে ৬টি চক্রের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে স্বপ্ন দেখার প্রধান ধাপ হলো ‘আরইএম’ (REM) বা র্যাপিড আই মুভমেন্ট।
এই পর্যায়ে ঘুমন্ত মানুষের চোখের মণি দ্রুত নড়াচড়া করে এবং মানুষ স্বপ্ন দেখে। রাতের শেষভাগে বা ভোরের দিকে এই আরইএম পর্যায়টি তুলনামূলক দীর্ঘ হয়। ফলে এই সময়ের স্বপ্নগুলো বেশি স্পষ্ট হয়।
ঘুমের শেষ ভাগে স্বপ্ন দেখার পরপরই সাধারণত মানুষের ঘুম ভেঙে যায়। ফলে সেই স্বপ্নের স্মৃতি মস্তিষ্কে একদম তাজা থাকে। একারণেই অন্য সময়ের তুলনায় ভোরের স্বপ্ন মানুষ বেশি মনে রাখতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কখনো কখনো কাকতালীয়ভাবে কোনো স্বপ্ন বাস্তব ঘটনার সঙ্গে মিলে যেতে পারে। কিন্তু এর মানে এই নয় যে স্বপ্ন ভবিষ্যৎ বলে দেয়। মস্তিষ্ক মূলত সারাদিনের ভাবনা ও আবেগ থেকেই স্বপ্ন তৈরি করে।
তাই ভোরের স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা বা কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যুক্তিসংগত নয়। তবে স্বপ্ন যে মানুষের অবচেতন মনের কৌতূহল ও অনুভূতিকে নাড়া দেয়, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।
স্ট্রোকের ৫টি আগাম লক্ষণ যা জীবন বাঁচাতে পারে
চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্ট্রোককে বর্তমানে একটি ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে যা কোনো পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই মানুষের জীবন বিপন্ন করে তুলতে পারে তবে বিশেষজ্ঞরা আশার বাণী শুনিয়েছেন যে বড় ধরনের আক্রমণের আগে শরীর আসলে কিছু সূক্ষ্ম সতর্কবার্তা বা সিগন্যাল দিয়ে থাকে যা সময়মতো বুঝতে পারলে ভয়াবহ বিপদ এড়ানো সম্ভব। নিউরোলজিস্টদের মতে স্ট্রোকের অন্যতম প্রধান লক্ষণ হলো শরীরের যেকোনো একপাশ হঠাৎ করে অবশ হয়ে যাওয়া বা হাত-পায়ে ঝিনঝিনি অনুভব করা এবং অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখও সামান্য বেঁকে যেতে পারে। এছাড়া কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই যদি হঠাৎ করে প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হয় তবে সেটিকে সাধারণ সমস্যা মনে না করে মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের ব্যাঘাত বা রক্তক্ষরণের লক্ষণ হিসেবে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।
বিশেষজ্ঞরা আরও সতর্ক করেছেন যে বারবার মাথা ঘোরা, হাঁটার সময় শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা কিংবা চোখে ঝাপসা দেখা স্ট্রোকের শক্তিশালী পূর্বাভাস হতে পারে। অনেক সময় আক্রান্ত ব্যক্তির কথা বলার সময় হঠাৎ জড়তা চলে আসে বা শব্দ উচ্চারণ করতে কষ্ট হয় এবং অন্যের কথা বুঝতে সমস্যা হওয়ার মতো লক্ষণও প্রকাশ পায় যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কমে যাওয়ার ইঙ্গিত বহন করে। শারীরিক এসব লক্ষণের পাশাপাশি যদি কোনো কারণ ছাড়াই সবসময় অস্বাভাবিক ক্লান্তি অনুভব হয়, কাজে মনোযোগ ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে বা হঠাৎ কোনো বিষয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয় তবে একেও স্ট্রোকের আগাম সংকেত হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছেন যে শরীরের এই নীরব ভাষাগুলো বোঝার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি কারণ সামান্য অবহেলা মৃত্যু বা স্থায়ী পঙ্গুত্বের কারণ হতে পারে। স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনার জন্য উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়মিত নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি ধূমপান বর্জন এবং অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলার মতো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাত্র ৩ সপ্তাহেই বিদায় জানান সিগারেটকে: জানুন জাদুকরী ৩-৩-৩-৩ নিয়ম
ধূমপান ছেড়ে দেওয়া অনেকের কাছেই এক অসাধ্য সাধন বা বিশাল চ্যালেঞ্জ মনে হলেও সঠিক পদ্ধতি জানা থাকলে এই মরণনেশা থেকে চিরতরে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। জানালার বাইরে তাকালেই কাউকে না কাউকে সিগারেট হাতে দেখা যায় এবং এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সবাই অবগত থাকার পরেও আসক্তির কারণে এটি ছাড়তে পারেন না তবে ভারতীয় চিকিৎসক ডা. নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একটি সহজ ও কার্যকর ‘৩-৩-৩-৩’ পদ্ধতির কথা জানিয়েছেন যা ধূমপায়ীদের জন্য আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে। ডা. নারায়ণের মতে ধূমপান ছাড়তে না পারার মূল কারণ হলো মস্তিষ্কে নিকোটিনের গভীর প্রভাব যা শরীরকে নেশার দাসে পরিণত করে এবং একবার দেহে প্রবেশ করার পর নিকোটিন সহজে বের হতে চায় না।
ধূমপান ছাড়ার প্রক্রিয়ায় ‘ক্রেভিং’ বা হঠাৎ করে কোনো জিনিসের প্রতি নিয়ন্ত্রণহীন আকর্ষণ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক এবং সাধারণত সিগারেট ছাড়ার প্রথম দুই-তিন দিন শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এই আকাঙ্ক্ষা তীব্র আকার ধারণ করে যার ফলে মন খিটখিটে বা অস্থির হয়ে উঠতে পারে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডা. নারায়ণ ‘৩-৩-৩-৩’ নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন যেখানে বলা হয়েছে যে ধূমপান ছাড়ার প্রথম তিন সপ্তাহ হলো সবচেয়ে কঠিন সময়। এই সময়ে হাতের কাছে চুইংগাম, চকোলেট বা লজেন্স রাখা এবং নিজের মনের জোর ধরে রাখা অত্যন্ত জরুরি কারণ ক্রেভিং সাধারণত কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয় তাই সেই মুহূর্তটিতে নিজেকে অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত রাখলে নেশার আকর্ষণ প্রতিহত করা সম্ভব।
চিকিৎসকের মতে প্রথম তিন সপ্তাহ কষ্ট করে পার করতে পারলে পরবর্তী তিন মাসে ধূমপান ছাড়ার প্রতি নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং যদি কেউ টানা তিন বছর সিগারেট ছাড়া থাকতে পারেন তবে তাকে সম্পূর্ণ নেশামুক্ত বলা যায়। ডা. নারায়ণ আরও পরামর্শ দেন যে প্রয়োজনে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেওয়া যেতে পারে এবং ধূমপায়ী বন্ধুদের এড়িয়ে চলা বা নিজেকে ব্যস্ত রাখার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিত। তিনি সতর্ক করে বলেন যে ধূমপান কেবল একটি সাধারণ নেশা নয় বরং এটি জীবনকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেয় এবং বিশেষ করে ওরাল ক্যান্সার ও ফুসফুসের জটিল সমস্যার প্রধান কারণ তাই সময় থাকতেই এই ৩-৩-৩-৩ নিয়ম অনুসরণ করে সুস্থ জীবনে ফিরে আসা একান্ত জরুরি।
সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা
মাত্র ৫টি অভ্যাসে জব্দ হবে ডায়াবেটিস
চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে রক্তে শর্করার মাত্রা বা এইচবিএ১সি নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব একটা জটিল বিষয় নয় এবং প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ রায়ান ফার্নান্ডোর মতে দৈনন্দিন মাত্র পাঁচটি সহজ অভ্যাস গড়ে তুললেই ওষুধ ছাড়াই সুস্থ থাকা সম্ভব। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে এই অভ্যাসগুলো সম্মিলিতভাবে শরীরে ইনসুলিন সেনসিটিভিটি বা সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং খাওয়ার পর রক্তে শর্করার আকস্মিক বৃদ্ধি রোধ করার পাশাপাশি শরীরে গ্লুকোজ জমা হওয়ার প্রবণতাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফার্নান্ডো তার পরামর্শে উল্লেখ করেছেন যে মানুষের শরীরের পেশি হলো সবচেয়ে বড় অঙ্গ যা গ্লুকোজ জমা রাখতে পারে তাই প্রতি সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট অ্যারোবিক এবং দুই থেকে তিন দিন শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম করলে শর্করার মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।
গবেষণায় দেখা গেছে দেহের মোট ওজনের সাত থেকে দশ শতাংশ কমাতে পারলে লিভারের গ্লুকোজ উৎপাদন ক্ষমতা এবং ইনসুলিনের কার্যকারিতা অবিশ্বাস্যভাবে বৃদ্ধি পায় যা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অন্যতম চাবিকাঠি। পুষ্টিবিদরা খাওয়ার সময়ের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে জানিয়েছেন যে দৈনিক খাবার গ্রহণ ১০ থেকে ১২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ করা উচিত এবং মধ্যরাতে খাবার এড়িয়ে চললে অগ্ন্যাশয় প্রয়োজনীয় বিশ্রাম পায় যা শরীরকে প্রাকৃতিকভাবে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন যে কম কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার এবং বেশি পরিমাণে ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার যেমন চর্বিহীন প্রোটিন বাদাম ও মাছ খাদ্যতালিকায় রাখলে খাওয়ার পর রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি রোধ করা যায় এবং ইনসুলিন আরও কার্যকরভাবে কাজ করতে পারে।
এছাড়া খাওয়ার পরপরই শুয়ে বসে না থেকে অন্তত ১০ মিনিট হাঁটাচলা করা বা লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করার মতো ছোট ছোট শারীরিক কসরত রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে জাদুকরী ভূমিকা পালন করে। ফার্নান্ডোর মতে যারা নিয়মিত এই পাঁচটি নিয়ম মেনে চলেন তাদের ক্ষেত্রে জটিল ও ব্যয়বহুল ওষুধের ওপর নির্ভরতা অনেকাংশে কমে যায় এবং তারা দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।
শীতে ঠোঁট ফাটা রোধে জাদুকরী ৫টি টিপস
শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতা কমে যাওয়ার ফলে অনেকেরই ঠোঁট ফেটে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয় যা কেবল সৌন্দর্যহানিই করে না বরং প্রচণ্ড অস্বস্তিরও কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকের তুলনায় ঠোঁটের ত্বক অত্যন্ত পাতলা এবং এতে কোনো প্রাকৃতিক তেলগ্রন্থি না থাকায় এটি খুব দ্রুত শুষ্ক হয়ে পড়ে যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় 'কেইলাইটিস' বলা হয়। সাধারণত আবহাওয়ার পরিবর্তন বা শুষ্ক বাতাস এর প্রধান কারণ হলেও সূর্যের তীব্র অতিবেগুনি রশ্মি, শরীরে পানির ঘাটতি কিংবা ভিটামিন বি ও আয়রনের অভাবজনিত কারণেও এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করতে পারে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন যে বারবার জিভ দিয়ে ঠোঁট ভেজানোর অভ্যাসটি সাময়িক আরাম দিলেও দীর্ঘমেয়াদে এটি ঠোঁটের নাজুক চামড়াকে আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে তোলে।
ঠোঁট ফাটার সমস্যাটি বিভিন্ন ধরণের হতে পারে যেমন অতিরিক্ত রোদে পোড়ার কারণে অ্যাক্টিনিক কেইলাইটিস, ঠোঁটের কোণায় ফাঙ্গাল সংক্রমণের ফলে অ্যাঙ্গুলার কেইলাইটিস কিংবা কোনো প্রসাধনী বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় কন্টাক্ট বা ড্রাগ-ইনডিউসড কেইলাইটিস দেখা দিতে পারে। ঠোঁট খসখসে হয়ে যাওয়া, চামড়া উঠে আসা, তীব্র জ্বালাপোড়া এবং খাবার খাওয়ার সময় ব্যথা অনুভব করা এমনকি রক্তপাত হওয়া এই সমস্যার সাধারণ উপসর্গ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করে শরীরকে আর্দ্র রাখার পাশাপাশি নিয়মিত মানসম্মত লিপবাম বা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি বিশেষ করে বাইরে বের হওয়ার সময় এসপিএফ যুক্ত লিপবাম ব্যবহার করলে সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
লিপবাম নির্বাচনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন কারণ সুগন্ধিযুক্ত, মেন্থল, ইউক্যালিপটাস বা অতিরিক্ত মোমযুক্ত পণ্য ঠোঁটের শুষ্কতা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে পেট্রোলিয়াম জেলি, গ্লিসারিন, সিরামাইড বা মিনারেল অয়েল সমৃদ্ধ লিপবাম ব্যবহার করা সবচেয়ে নিরাপদ এবং ঘুমানোর আগে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার বা লিপ অয়েন্টমেন্ট লাগালে সারারাত ঠোঁট আর্দ্র থাকে। তবে যদি দীর্ঘসময় ধরে ঘরোয়া যত্ন নেওয়ার পরেও ঠোঁট ফাটা না কমে, তীব্র ব্যথা বা রক্তপাত অব্যাহত থাকে এবং ঠোঁটের চারপাশে র্যাশ বা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয় তবে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ এটি বড় কোনো শারীরিক অসুস্থতার ইঙ্গিত হতে পারে।
সূত্র: ক্লিভল্যান্ড হসপিটাল ও সামা
পাঠকের মতামত:
- পারফিউমের গন্ধ সারাদিন ধরে রাখার জাদুকরী কৌশল
- চুল পড়া বন্ধের ৬টি সহজ ও কার্যকরী ঘরোয়া উপায়
- নতুন অপারেশনের ঝুঁকি: হাদির চিকিৎসায় জটিলতা
- মামলা দেখার দরকার নেই, আ.লীগ হলেই অ্যাকশন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র-ভেনেজুয়েলা: উত্তেজনা চরমে
- হাসনাতের প্রচারণায় আটক ২ ‘সন্দেহভাজন’ ব্যক্তি
- ঋণের নামে লুটপাট: এস আলমের সাম্রাজ্যে দুদকের হানা
- অবশেষে কাটল জটিলতা: বইমেলার নতুন তারিখ ঘোষণা
- পিরিয়ডের তীব্র ব্যথা: শরীরে বাসা বাঁধছে যে গোপন রোগ
- নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই, সবাই নিরাপদে চলছে: উপদেষ্টা
- ইহুদি উৎসবে হামলাকারী বাবা-ছেলের পরিচয় মিলল
- নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহত’ অগ্রহণযোগ্য: তৌহিদ হোসেন
- ১৭ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ১৭ ডিসেম্বরের বাজারে লুজার শেয়ারের তালিকা
- আজকের বাজারে শীর্ষ দশ লাভজনক শেয়ার
- বেক্সিমকো গ্রিন সুকুকের স্পট ট্রেডিং সূচি ঘোষণা
- খালি পেটে পাকা কলা খাওয়া: উপকার, ঝুঁকি ও সঠিক নিয়ম
- কূটনৈতিক উত্তেজনায় দিল্লিতে বাংলাদেশি হাইকমিশনার তলব
- চার সরকারি বন্ডের কুপন রেকর্ড তারিখ ঘোষণা
- ডিএসইএক্স, ডিএসইএস ও ডিএস৩০-সবই লাল
- ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির চিকিৎসা নিয়ে নতুন তথ্য
- ঈশ্বরদীতে বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা
- আমিরাতে ব্যাংকিংয়ে আর লাগবে না ‘ওটিপি’
- IPL 2026 নিলামে কে কোথায়, জানুন বিস্তারিত
- মানুষকে ‘ভিন্ন জগতে’ নেওয়া ৬টি প্রাণী
- যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন: নেতানিয়াহুর ওপর চটলেন ট্রাম্প প্রশাসন
- বিদেশ থেকে টাকা পাঠাচ্ছেন? জানুন আজকের বিনিময় হার
- আজ ঢাকার যেসব মার্কেট বন্ধ থাকবে: জেনে নিন তালিকা
- ভিডিও এডিটিং এখন আরও সহজ: অ্যাডোবির ফায়ারফ্লাই নতুন রূপে
- আইপিএলে রেকর্ড গড়েও ব্যাটে শূন্য গ্রিন
- রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সুদের হারে শেয়ারবাজারের করুণ দশা
- বিনিয়োগকারীদের জন্য ডিএসইর গুরুত্বপূর্ণ বার্তা
- বিমানবন্দর থেকে গুলশান: তারেককে বরণ করতে বিশাল শোডাউনের ছক
- প্রথম প্রান্তিকে জেনেক্সের আর্থিক চিত্র প্রকাশ
- ব্যাংক এশিয়া বন্ডের কুপন রেকর্ড তারিখ ঘোষণা
- আজ ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- তিন কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং প্রকাশ
- এনএভি: কোন ফান্ড কোথায় দাঁড়াল
- বিজয় দিবসে বড় ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান
- সকালের ৫ অভ্যাস যা আপনাকে সারাদিন এনার্জি দেবে
- ভোরের স্বপ্ন কি সত্যিই ফলে? যা বলছে বিজ্ঞান
- গয়না কিনবেন? স্বর্ণ-রুপার আজকের দরদাম জেনে নিন
- আজ সারাদিন টিভিতে খেলার মেলা: ক্রিকেট ও ফুটবলের সময়সূচি
- আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- জেনে নিন আজকের নামাজের সময়সূচি: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
- নরসিংদীর বিলে মিলল হাদিকে হত্যাচেষ্টা ব্যবহৃত সেই বিদেশি পিস্তল
- মেসি-এমবাপ্পে নয়, ফিফার বর্ষসেরা এবার দেম্বেলে
- রাজধানীতে আজ কার কী কর্মসূচি দেখে নিন একনজরে
- রেমিট্যান্স বাড়লেও স্বস্তি নেই: বাণিজ্য ঘাটতি তুঙ্গে
- গাজায় থামছে না মৃত্যুর মিছিল: এক বাড়ি থেকেই মিলল ৩০ লাশ
- যেভাবে জানা যাবে স্কুল ভর্তি লটারির ফল
- দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- স্কুলভর্তির ডিজিটাল লটারি শুরু, ফল প্রকাশের সময় জানা গেল
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- চিকিৎসক জানাল ওসমান হাদীর বর্তমান অবস্থা
- শনি-রবিবার বিদ্যুৎ থাকবে না বহু এলাকায়
- মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি শুরুর সময়সূচি প্রকাশ
- রাজশাহীতে নলকূপে আটকে পড়া শিশুকে বের করতে সুরঙ্গ খনন
- এমপি হওয়ার আগেই ভিআইপি প্রোটোকল পেলেন হাদি: ডা. মাহমুদা মিতু
- রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন যেসব এলাকা
- তানোরে ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার শিশুসাজিদ, কেমন আছে সে
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আজ শুরু, একটি আসনের জন্য লড়াই যতজনের
- দেশের বাজারে স্বর্ণের দামের নতুন রেকর্ড
- শীতে ত্বক শুষ্ক ও র্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান
- ইউরোপা লিগ ও টি২০, আজকের সব ম্যাচ কখন কোথায়








