চোখের যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন কিডনি নষ্ট হচ্ছে

মানবদেহের অভ্যন্তরীণ শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় কিডনি বা বৃক্কের ভূমিকা অপরিসীম এবং এই অঙ্গটিকে শরীরের ছাঁকনি হিসেবে অভিহিত করা হয় যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা ও ক্ষতিকর বর্জ্য নিষ্কাশনে নিরলসভাবে কাজ করে যায়। শরীরের দুই পাশে অবস্থিত এই গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গটি এতটাই নীরবে কাজ করে যে এর কার্যকারিতা নষ্ট হতে শুরু করলেও প্রাথমিক অবস্থায় বা একটি কিডনি বিকল হলেও মানুষ সচরাচর তা টের পান না। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা কিডনি রোগকে একটি 'সাইলেন্ট কিলার' হিসেবে চিহ্নিত করেছেন তবে তারা এও জানিয়েছেন যে কিডনি পুরোপুরি অকেজো হওয়ার আগেই আমাদের শরীর বিশেষ করে চোখ কিছু আগাম সতর্কবার্তা প্রেরণ করে যা সময়মতো বুঝতে পারলে বড় ধরনের বিপদ এড়ানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে কিডনি যখন রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ সঠিকভাবে ছাঁকতে ব্যর্থ হয় তখন শরীরে টক্সিন বা বিষাক্ত উপাদানের মাত্রা বেড়ে যায় এবং এর ফলে পানি ও খনিজের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে সরাসরি চোখের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কিডনি রোগের প্রভাবে চোখের সূক্ষ্ম রক্তনালিগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে যার ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া বা ফোকাস করতে সমস্যা এমনকি সবকিছু দ্বিগুণ দেখার মতো জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যা হাইপারটেনসিভ বা ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির লক্ষণ হিসেবে পরিচিত। উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীরা যদি হঠাৎ করে দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন লক্ষ্য করেন তবে তাদের কেবল চোখের ডাক্তার নয় বরং দ্রুত নেফ্রোলজিস্টের শরণাপন্ন হওয়া উচিত কারণ রেটিনায় তরল জমা বা ফোলাভাব অন্ধত্বের ঝুঁকি পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে।
অনেকেরই ঘুম থেকে ওঠার পর চোখের নিচে সাময়িক ফোলাভাব দেখা যায় কিন্তু এই ফোলা ভাব যদি সারাদিন স্থায়ী হয় এবং চোখের পাতার চারপাশে অস্বাভাবিক স্ফীতি লক্ষ্য করা যায় তবে এটি প্রোটিনুরিয়া নামক কিডনি সমস্যার স্পষ্ট ইঙ্গিত হতে পারে। চিকিৎসকরা ব্যাখ্যা করেছেন যে প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় প্রোটিন বেরিয়ে গেলে রক্তে এর ঘাটতি দেখা দেয় এবং তখন শরীরের নরম টিস্যুগুলোতে বিশেষ করে চোখের চারপাশে তরল জমে গিয়ে এই দীর্ঘস্থায়ী ফোলাভাব তৈরি করে। এছাড়া শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের ভারসাম্যহীনতার কারণে চোখ অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে যাওয়া, অনবরত চুলকানি বা খচখচানি অনুভব করা এবং কৃত্রিম লুব্রিকেশনেও কাজ না হওয়া কিডনি জটিলতার বা ডায়ালাইসিস প্রয়োজনের পূর্বলক্ষণ হতে পারে।
কিডনি বিকল হওয়ার আরেকটি বিরল কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ হলো রঙের পার্থক্য বুঝতে না পারা বিশেষ করে নীল ও হলুদ রঙের বিভাজন করতে চোখের অক্ষমতা তৈরি হওয়া যা শরীরে ইউরেমিক টক্সিন জমে অপটিক নার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে ঘটে থাকে। এছাড়া কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই যদি চোখ ঘন ঘন লাল বা রক্তবর্ণ ধারণ করে তবে এটি অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের কারণে চোখের ক্ষুদ্র রক্তনালি ফেটে যাওয়ার ফল হতে পারে যা কিডনি রোগের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। লুপাস নেফ্রাইটিসের মতো অটোইমিউন রোগগুলো একইসঙ্গে কিডনি ও চোখকে আক্রান্ত করতে পারে তাই চোখের যেকোনো দীর্ঘস্থায়ী সমস্যাকে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং নিয়মিত কিডনি স্ক্রিনিং করা অত্যন্ত জরুরি।
সূত্র : মায়ো ক্লিনিক
হঠাৎ মাসিক বন্ধ বা অনিয়মিত হলে কী করবেন এবং কখন যাবেন চিকিৎসকের কাছে
নারীদের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যচক্রের একটি অবিচ্ছেদ্য ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মাসিক বা পিরিয়ড। চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী ২১ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে নিয়মিত মাসিক হওয়াকে স্বাভাবিক ধরা হয়। কিন্তু বর্তমানে অনেক নারীই হঠাৎ মাসিক দেরিতে হওয়া আগেভাগে হওয়া অতিরিক্ত রক্তপাত বা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন। চিকিৎসকদের মতে মাসিক অনিয়মিত হওয়ার পেছনে একাধিক শারীরিক ও মানসিক কারণ সক্রিয় থাকে।
হরমোনের ভারসাম্যহীনতাই প্রধান কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়াই মাসিক অনিয়মের প্রধান কারণ। শরীরে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের মাত্রা ঠিক না থাকলে মাসিক চক্র বিঘ্নিত হয়। বিশেষ করে থাইরয়েড সমস্যা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম বা পিসিওএস এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগে হরমোনের বড় ধরনের গোলযোগ দেখা দেয় যা সরাসরি পিরিয়ডের ওপর প্রভাব ফেলে।
মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তার প্রভাব মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাও বড় একটি কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দীর্ঘদিন মানসিক চাপ থাকলে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশ প্রভাবিত হয় যা সরাসরি মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে সময়মতো ডিম্বস্ফোটন না হওয়ায় মাসিক পিছিয়ে যায় বা সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ওজন ও জীবনযাপনের ভূমিকা ওজনের হঠাৎ পরিবর্তন অর্থাৎ অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া বা দ্রুত ওজন কমে যাওয়া মাসিক অনিয়মের আরেকটি বড় কারণ। শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমলে বা চর্বি খুব কমে গেলে হরমোনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। বিশেষ করে কঠোর ডায়েট বা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা নারীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ ছাড়া ঘুমের অভাব অনিয়মিত জীবনযাপন দীর্ঘদিন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহার জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের সংক্রমণ এবং বয়সজনিত পরিবর্তনও মাসিক অনিয়মের জন্য দায়ী হতে পারে। কিশোরী বয়সে বা মেনোপজের আগের সময়েও মাসিক চক্র স্বাভাবিকের তুলনায় অনিয়মিত হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ চিকিৎসকেরা বলছেন মাসিক অনিয়মিত হওয়া অনেক সময় শরীরের ভেতরের কোনো বড় সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। তাই তিন মাসের বেশি সময় ধরে মাসিক অনিয়ম চললে বা অতিরিক্ত ব্যথা ও রক্তপাত হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। নিয়মিত জীবনযাপন সঠিক খাদ্যাভ্যাস মানসিক চাপ কমানো এবং পর্যাপ্ত ঘুম মাসিক চক্র স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
শীতকালে সাইনাস বাড়লে ঘরে কী করবেন
শীতের আগমনেই সাইনাস আক্রান্তদের দুর্ভোগ নতুন করে অনুভূত হয়। ঠান্ডা ও শুষ্ক বাতাস নাকের ভেতরের পথকে শুকিয়ে দেয়, ফলে সাইনাসে জমাট বাঁধা প্রদাহ, মাথাব্যথা, নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ও মুখে চাপের মতো উপসর্গ বাড়তে থাকে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৌসুম বদলের এই সময়ে নাকের সঠিক যত্ন ও ঘরের পরিবেশ আর্দ্র রাখলেই উপসর্গ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
নাক পরিষ্কার রাখা সাইনাসের প্রথম সুরক্ষা
বিশেষজ্ঞদের মতে, নাকের ভেতর শ্লেষ্মা জমে থাকা ও অ্যালার্জেন অবরোধ দূর করতে লবণজল ভিত্তিক স্যালাইন স্প্রে নিয়মিত ব্যবহার খুবই কার্যকর। অনেকেই নেটি পট ব্যবহার করে নাক ধুয়ে থাকেন, যা সাইনাস প্যাসেজ পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে এবং নাক বন্ধভাব দ্রুত কমায়।
শীতের শুষ্ক বাতাসে বাড়ে প্রদাহ, হিউমিডিফায়ার উপকারী
শীতকালে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ কম থাকে, ফলে সাইনাসের অভ্যন্তরীণ টিস্যুগুলো সহজেই উত্তেজিত হয়। এজন্য ঘরে হিউমিডিফায়ার চালিয়ে বাতাসে আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনলে নাকের ভেতরের প্রদাহ কমে এবং স্বস্তি আসে। শুষ্ক আবহাওয়া যাদের সাইনাসে সমস্যা বাড়িয়ে দেয়, তাদের জন্য এটি বিশেষভাবে সহায়ক।
গরম ভাপ নিলে দ্রুত আরাম
গরম জলের ভাপ নেওয়া দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত উপায়। গরম ভাপ নিলে নাকের পথ আর্দ্র হয় এবং জমাট বাঁধা স্রাব নরম হয়ে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হয়, যা সাইনাসের চাপ কমাতে সাহায্য করে।
উষ্ণ সেঁকের মাধ্যমে ব্যথা উপশম
মুখের সাইনাস এলাকায় উষ্ণ ভেজা তোয়ালে বা কমপ্রেস লাগালে রক্তসঞ্চালন বাড়ে এবং প্রদাহের কারণে সৃষ্ট চাপ ও ব্যথা অনেকটাই কমে যায়।
শরীরকে আর্দ্র রাখা জরুরি
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীর শুষ্ক হয় না, ফলে সাইনাসের শ্লেষ্মা পাতলা থাকে এবং সহজে বেরিয়ে আসে। তরল গ্রহণ কম হলে সাইনাসের সমস্যাগুলো আরও তীব্র হতে পারে।
পুষ্টিকর খাবার ও বিশ্রাম
বদল সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। এজন্য ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান সাইনাসের সঙ্গে লড়তে সহায়তা করে।
ভিটামিন ডি সাইনাস স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ
গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি–এর ঘাটতি থাকলে সাইনাস প্রদাহের প্রবণতা বাড়তে পারে। তাই পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি নিশ্চিত করাও শীতকালের জন্য প্রয়োজনীয়।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন
ঘরোয়া যত্ন নেওয়ার পরও যদি নাক বন্ধভাব, মাথাব্যথা, জ্বর বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ কমতে না থাকে, তাহলে দ্রুত নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। দির্ঘস্থায়ী বা পুনর্বার দেখা দেওয়া সাইনাস সমস্যা চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান ছাড়া উপেক্ষা করা ঠিক নয়।
ঠান্ডায় জয়েন্ট পেইন বাড়ে কেন এবং কীভাবে কমাবেন
শীত এলেই দেশের বহু মানুষ হাঁটু, কোমর, আঙুল, কাঁধসহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা বাড়ার অভিযোগ করেন। বিশেষ করে আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, অস্টিওআর্থ্রাইটিস বা পুরোনো আঘাতজনিত সমস্যা থাকা ব্যক্তিদের জন্য শীতকাল হয়ে ওঠে সবচেয়ে কষ্টকর সময়। চিকিৎসকেরা বলছেন, তাপমাত্রা কমে গেলে মানবদেহের রক্তপ্রবাহ, জয়েন্টের তরল, টিস্যুর চাপ এবং স্নায়বিক প্রতিক্রিয়ায় বহু পরিবর্তন ঘটে। সেই কারণেই এই মৌসুমে জয়েন্ট পেইন বেড়ে যায় বহুগুণে।
ঠান্ডা আবহাওয়ার প্রভাবে শরীরের ভেতরে যা ঘটে
শরীরের জৈব-ফিজিওলজিক্যাল কার্যক্রম শীতের তীব্রতায় ধীর হয়ে যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানী গবেষণায় দেখা গেছে-
১. রক্তনালী সংকুচিত হওয়া
শীত পড়লেই হাত-পায়ের ছোট রক্তনালী দ্রুত সঙ্কুচিত হয়, যাকে ভ্যাসোকনস্ট্রিকশন বলা হয়। এর ফলে জয়েন্টে পর্যাপ্ত রক্ত, অক্সিজেন ও পুষ্টি পৌঁছায় না। এই ঘাটতি জয়েন্টকে আরও সংবেদনশীল করে তোলে, যার ফলে ব্যথা ও শক্তভাব বাড়ে।
২. সিনোভিয়াল ফ্লুইড ঘন হয়ে যাওয়া
জয়েন্টকে নরমভাবে নড়াচড়া করতে যে পিচ্ছিল তরল (synovial fluid) সাহায্য করে, ঠান্ডা তাপমাত্রায় তা ঘন হয়ে আঠালো হয়। এর ফলে জয়েন্ট শক্ত হয়ে যায়, হঠাৎ নড়াচড়া করতে গেলে ব্যথা অনুভূত হয়। আর্থ্রাইটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি আরও বেশি অনুভূত হয়।
৩. ব্যারোমেট্রিক চাপ কমে যাওয়া
ঠান্ডা আবহাওয়ার সঙ্গে সাধারণত বায়ুচাপ কমে। এই কম চাপ জয়েন্টের টিস্যুকে সামান্য প্রসারিত করে এবং স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এ কারণেই অনেকেই শীত আসার আগে ব্যথা বাড়ার আগাম সংকেত অনুভব করেন।
৪. শুষ্কতা ও প্রদাহ বৃদ্ধি
শীতকালে বাতাস শুষ্ক থাকে, যা প্রদাহজনিত সমস্যাকে তীব্র করতে পারে। আর্থ্রাইটিস, গাউট বা রিউমাটয়েড সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা শুষ্ক বাতাসে আরও ব্যথা অনুভব করেন।
৫. পেশী সংকোচন
ঠান্ডায় পেশীগুলো স্বাভাবিকের তুলনায় শক্ত হয়ে যায়, যা জয়েন্টের স্থিতিস্থাপকতা কমিয়ে দেয়। এর ফলে জয়েন্টের ওপর চাপ বাড়ে এবং ব্যথা তীব্র হয়।
কোন কোন গোষ্ঠী বেশি ঝুঁকিতে?
শীতের সময়ে জয়েন্ট ব্যথা বাড়ার ক্ষেত্রে কয়েকটি গোষ্ঠীর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি—
- রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস রোগী
- অস্টিওআর্থ্রাইটিস রোগী
- বয়স্ক মানুষ
- অতিরিক্ত ওজনধারী ব্যক্তি
- পুরোনো হাড়-জয়েন্টে আঘাত আছে এমন রোগী
- ভিটামিন-ডি বা ক্যালসিয়াম ঘাটতি আছে এমন ব্যক্তি
চিকিৎসকদের মতে, এই গোষ্ঠীর মানুষদের জন্য শীত আগেভাগে প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
জয়েন্ট পেইন কমাতে যা করবেন
১. গরম সেঁক ও উষ্ণ থেরাপি
হট ওয়াটার ব্যাগ বা হিটিং প্যাড দিয়ে দিনে কয়েকবার সেঁক দিলে পেশী শিথিল হয় এবং রক্তপ্রবাহ বাড়ে। গরম পানিতে গোসলও ব্যথা কমাতে খুব কার্যকর।
২. জয়েন্টকে উষ্ণ রাখা
হাত, পা, হাঁটু ও কোমর ঢেকে রাখলে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে। শীতপ্রবণদের জন্য থার্মাল পোশাক অত্যন্ত উপকারী।
৩. নিয়মিত হালকা ব্যায়াম
চলাফেরা বন্ধ করলে পেশী শক্ত হয়ে যায়। প্রতিদিন একটু হাঁটা, যোগব্যায়াম, স্ট্রেচিং বা সাঁতার করলে জয়েন্ট সচল থাকে।
৪. ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ খাবার
স্যালমন, সার্ডিন, আখরোট, ফ্ল্যাক্সসিড প্রকৃতিগতভাবে প্রদাহ কমায়। এই খাবারগুলো জয়েন্টের সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
৫. ব্যথানাশক ও প্রদাহনাশক ওষুধ
চিকিৎসকের পরামর্শে NSAIDs যেমন আইবুপ্রোফেন, ন্যাপ্রোক্সেন নেওয়া যেতে পারে। নিজে নিজে ওষুধ নেওয়া বিপজ্জনক।
৬. ঘরের আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ
ঘরের পরিবেশ অত্যন্ত শুষ্ক থাকলে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করা ভালো। এতে জয়েন্টের শুষ্কতা কমে।
৭. ফিজিওথেরাপি ও পেশী শক্তিশালীকরণ
নিয়মিত ফিজিওথেরাপি পেশীকে শক্তিশালী করে এবং জয়েন্টে চাপ কমায়।
৮. ভিটামিন ডি পরীক্ষা ও চিকিৎসা
অনেকের শীতকালে ভিটামিন-ডি কমে যায়, যা হাড়কে দুর্বল করে। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে সাপ্লিমেন্ট নেওয়া উচিত।
কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
ব্যথা টানা কয়েক দিন ধরে চললে
জয়েন্ট ফুলে গেলে
হাঁটতে বা ওঠানামা করতে কষ্ট হলে
জ্বরের সঙ্গে জয়েন্ট ব্যথা হলে
পুরোনো আর্থ্রাইটিস হঠাৎ খারাপ হলে
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ব্যথা উপেক্ষা করলে দীর্ঘমেয়াদে জয়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বারবার হাই তোলা শুধুই ক্লান্তি নয় বরং এটি হতে পারে হৃদরোগের আগাম বার্তা
হাই তোলা মানেই শরীর ক্লান্ত বা ঘুম পাচ্ছে এমনটাই সাধারণত মনে করা হয়। কিন্তু চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন বারবার বা অস্বাভাবিকভাবে হাই তোলা সব সময় ঘুম বা ক্লান্তির ইঙ্গিত নয় বরং এটি হতে পারে হৃদরোগের প্রাথমিক সতর্ক সংকেত। সাম্প্রতিক গবেষণায় জানা গেছে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি বা রক্তচাপের ওঠানামা হলে মস্তিষ্কের হাই রিফ্লেক্স সক্রিয় হয়ে ওঠে যা হৃদযন্ত্রে বাড়তি চাপের বার্তা দেয়।
মস্তিষ্ক কেন সংকেত পাঠায়
মস্তিষ্কের ব্রেইনস্টেম অংশ নিয়ন্ত্রণ করে হৃদস্পন্দন রক্তচাপ ও শ্বাসপ্রশ্বাস। যখন হৃদপিণ্ড ঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে ব্যর্থ হয় বা রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায় তখন মস্তিষ্ক অস্থির হয়ে ওঠে। তখন শরীরের তাপমাত্রা সামঞ্জস্যে রাখতে মস্তিষ্ক হাই তোলার সংকেত পাঠায়। এই কারণেই অনেক সময় দেখা যায় হার্ট অ্যাটাকের আগে বা চলাকালীন রোগী বারবার হাই তুলছেন।
কখন সতর্ক হবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে যদি বারবার হাই উঠছে অথচ ঘুম পাচ্ছে না এবং এর সঙ্গে বিশেষ কিছু উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। লক্ষণগুলো হলো বুকে চাপ বা অস্বস্তি অনুভব করা হালকা মাথা ঘোরা বা ভার লাগা অতিরিক্ত ঘাম হওয়া বমিভাব এবং চোয়াল ঘাড় বা কাঁধে ব্যথা। এছাড়া হঠাৎ নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিলে তা হৃদযন্ত্রে রক্ত চলাচলের ব্যাঘাত বা হার্ট অ্যাটাকের আগাম সতর্কতা হতে পারে।
করণীয় ও পরামর্শ
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত হাই তোলা যদি নিয়মিত হয় তাহলে দ্রুত ইসিজি ইকোকার্ডিওগ্রাম বা ট্রেডমিল টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত। পাশাপাশি ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ কোলেস্টেরল ও স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে রাখা দরকার। ধূমপান মদ্যপান ও মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম ও পর্যাপ্ত ঘুম হৃদপিণ্ডকে সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। সব হাই হৃদরোগের ইঙ্গিত না হলেও হঠাৎ ঘন ঘন হাই এবং সঙ্গে বুকে অস্বস্তি দেখা দিলে বিষয়টি হালকাভাবে না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
এইচআইভি চিকিৎসায় বড় সুখবর, ওষুধ ছাড়াই ১৮ মাস সুস্থ থাকার রেকর্ড
এইচআইভি বা এইডস আজও এমন একটি রোগ যার পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য কোনো চিকিৎসা নেই। একবার সংক্রমিত হলে রোগীকে সারা জীবন ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয়। প্রতিদিন ওষুধ খাওয়া এবং নিয়ম মেনে চিকিৎসা চালানো ও বিভিন্ন জটিলতা এড়িয়ে চলা সব মিলিয়ে রোগীর জীবন মানসিকভাবে ক্লান্তিকর হয়ে ওঠে। কিন্তু সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা গেছে আশার ঝলক। যেখানে এখন পর্যন্ত রোগীদের প্রতিদিন অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি বা এআরটি নিতে হয় সেখানে নতুন এক থেরাপি ব্যবহার করে কয়েকজন রোগী পুরো ১৮ মাস ওষুধ ছাড়াই সুস্থ ছিলেন। এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও চিকিৎসা জগতে এক বড় সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা প্রচলিত ওষুধের পরিবর্তে কম্বিনেশন থেরাপি ব্যবহার করছেন। এই বিশেষ থেরাপিতে রোগীদের প্রতিষেধক বা ভ্যাকসিন এবং ইমিউন অ্যাকটিভ ওষুধ ও বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবডি দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষাটি চালানো হয়েছে ১০ জন রোগীর ওপর এবং বিস্ময়করভাবে দেখা গেছে যে তাঁরা কেউই ১৮ মাস ধরে নিয়মিত এআরটি ছাড়াই সুস্থ ছিলেন। এমনকি যাদের অবস্থা আগে বেশি খারাপ ছিল তাঁরাও আলাদা কোনো চিকিৎসা ছাড়াই ভালো ছিলেন বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।
এইচআইভি ধীরে ধীরে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় যার ফলে রোগী সহজেই বিভিন্ন সংক্রমণ ও জটিল রোগে আক্রান্ত হন। এর মধ্যে যক্ষ্মা ও ছত্রাকজনিত সংক্রমণ এবং স্নায়ু সমস্যা ও কিছু ধরনের ক্যানসার অন্যতম। সংক্রমণ শুরুর প্রথম কয়েক সপ্তাহ জ্বর বা সর্দি কাশির মতো হালকা উপসর্গ দেখা দিলেও পরে দীর্ঘ সময় কোনো লক্ষণ দেখা নাও দিতে পারে। তবে শেষ পর্যায়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে পড়ে এবং নানা জটিলতা দেখা দেয়।
এখন পর্যন্ত মানুষের নির্ভরশীলতা মূলত এআরটির ওপর। এটি ভাইরাস পুরোপুরি নির্মূল করতে পারে না তবে ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রোগীকে দীর্ঘদিন সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। নতুন এই থেরাপির পরীক্ষায় দেখা গেছে ওষুধ ছাড়া রোগীরা দীর্ঘ সময় ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হচ্ছেন। গবেষকরা আশা করছেন এটি ভবিষ্যতে রোগীকে কঠিন চিকিৎসা ছাড়াই সুস্থ রাখার পথ খুলে দিতে পারে এবং এইডস নির্মূলের লক্ষ্যের দিকে বিশ্বকে এক ধাপ এগিয়ে নিতে পারে।
পুরুষের শক্তি ও টেস্টোস্টেরন বাড়াতে রোজকার পাতে রাখুন এই ৫টি খাবার
পুরুষদের শরীরের জন্য টেস্টোস্টেরন হরমোন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। এটি যৌন স্বাস্থ্য বজায় রাখার পাশাপাশি পেশি গঠনে ও শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তবে আধুনিক জীবনধারা ও অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত মদ্যপানের কারণে অনেকের শরীরে এই হরমোনের মাত্রা কমে যায়। অনেকেই তখন হরমোন ইনজেকশন বা ওষুধের ওপর নির্ভর করেন যা সবসময় নিরাপদ নাও হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন কিছু সাধারণ খাবারের মাধ্যমে স্বাভাবিকভাবেই টেস্টোস্টেরন হরমোন বাড়ানো সম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতে উদ্ভিজ দুধ যেমন সয়া আমন্ড বা ওটসের দুধ টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে। যাদের ল্যাকটোজ অ্যালার্জি আছে তাঁদের জন্য উদ্ভিজ দুধ একটি নিরাপদ এবং কার্যকর বিকল্প হতে পারে। এছাড়া অ্যান্টি অক্সিড্যান্টে ভরপুর বেদানা শরীরে প্রদাহ কমায় এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখে। মানসিক চাপও হরমোনের মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে তাই নিয়মিত বেদানা খেলে মানসিক চাপ কমে যায় এবং টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ স্বাভাবিক থাকে।
খাদ্যতালিকায় তেলযুক্ত মাছ রাখার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। রুই কাতলা আর বোয়াল বা চিতলের মতো তেলযুক্ত মাছ ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ। এটি হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি টেস্টোস্টেরনের ক্ষরণ বাড়াতেও সহায়তা করে। প্রোটিন ভিটামিন ডি ও অ্যামাইনো অ্যাসিডে ভরপুর ডিম শরীরের টেস্টোস্টেরন বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ডিম রাখা পুরুষদের শক্তি ও পেশি গঠনের জন্য সহায়ক।
কলা নিয়মিত খেলে শরীরে শক্তি ও স্ফূর্তি আসে। এটি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে এবং শরীরকে চাঙ্গা রাখে। এই সহজ কিছু খাবার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখলেই পুরুষদের শরীর সুস্থ ও শক্তিশালী থাকে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় থাকে বলে মনে করেন পুষ্টিবিদরা।
প্রিয় খাবারই যখন কিডনির শত্রু, কিডনি সুস্থ রাখতে পাত থেকে বাদ দিন এই ৫টি খাবার
মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি হলো কিডনি। দেহের বর্জ্য ছেঁকে ফেলা এবং মূত্র তৈরি করা থেকে শুরু করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন সবই নির্ভর করে এই অঙ্গটির ওপর। অথচ অনেকেই কিডনির যত্নে উদাসীন থাকেন। এর ফল হিসেবে অজান্তেই বাড়তে থাকে ক্রনিক কিডনি ডিজিজসহ নানা জটিলতা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসের কিছু পরিচিত খাবারই কিডনির ওপর বাড়তি চাপ ফেলে এবং নিয়মিত খেলে দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরনের ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই কোন খাবারগুলোতে সতর্ক থাকতে হবে তা জেনে নেওয়া জরুরি।
লবণ ও উচ্চ সোডিয়ামযুক্ত খাবার
ভাত বা প্রিয় খাবারের সঙ্গে লবণ না হলে অনেকেরই যেন চলেই না। কিন্তু অতিরিক্ত লবণ কিডনির ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করে। কাঁচা লবণ হোক বা প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা সোডিয়াম উভয়ই কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
ফাস্ট ফুড ও প্রসেসড ফুড
কাজের ফাঁকে কিংবা সন্ধ্যার আড্ডায় ফাস্ট ফুড এখন খুবই জনপ্রিয়। কিন্তু নিয়মিত এসব খাবার শরীরে প্রদাহ বাড়ায় এবং বাড়ায় কিডনি রোগের ঝুঁকিও। তাই অভ্যাসবশত প্রতিদিন ফাস্ট ফুড খাওয়া থেকে বিরত থাকাই উত্তম। এছাড়া বাজারে সহজলভ্য প্রসেসড ফুড দ্রুত ক্ষুধা মেটালেও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব খাবার প্রদাহ বাড়াতে পারে এবং কিডনির টিস্যুতে ক্ষতি করে। তাই প্রসেসড ফুডকে নিয়মিত খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দেওয়াই কিডনির জন্য নিরাপদ।
আচার বা পিকেল
ভাত খিচুড়ি বা নাস্তার সঙ্গে আচার অনেকেই খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু আচারে থাকা উচ্চমাত্রার লবণ কিডনির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। নিয়মিত আচার খেলে কিডনি সমস্যার আশঙ্কা বাড়ে। তাই প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় আচার রাখলে সতর্ক হতে হবে।
মিষ্টিজাতীয় খাবার
মিষ্টি শুধু ডায়াবেটিস বা ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ায় না বরং কিডনির ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত চিনি রক্তে গ্লুকোজের ভারসাম্য নষ্ট করে কিডনিকে ধীরে ধীরে দুর্বল করে দেয়। তাই কিডনির সুস্থতা চাইলে মিষ্টিজাত খাবার কমাতে হবে।
রোজকার খাবারের তালিকায় থাকা এই পরিচিত উপাদানগুলোই অজান্তে কিডনির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এগুলো কমিয়ে তাজা শাকসবজি ও পুষ্টিকর খাবার এবং পর্যাপ্ত পানি পান করার বিষয়টিকে খাদ্য তালিকায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন তাহলেই কিডনি থাকবে সুস্থ এবং আপনিও থাকবেন ঝুঁকিমুক্ত।
অজান্তেই স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দিচ্ছে আপনার পছন্দের যে ৩টি পানীয়
ব্যস্ত জীবনে বাইরে খাওয়াদাওয়ার সময় অনেকেই খেয়াল করেন না কী পান করছেন। অথচ আমাদের অজান্তেই কিছু পানীয় ধীরে ধীরে ক্ষতি করতে পারে মস্তিষ্কের এবং কমিয়ে দিতে পারে স্মৃতির ক্ষমতা। সম্প্রতি গবেষকরা এমনই এক ভীতিকর তথ্য সামনে এনেছেন। ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত এক ভিডিওতে নিউরোসায়েন্টিস্ট রবার্ট ডব্লিউ বি লাভ জানিয়েছেন তিনটি পরিচিত পানীয় রয়েছে যেগুলো দীর্ঘদিন নিয়মিত গ্রহণ করলে মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এতে স্মৃতি দুর্বল হওয়া ছাড়াও দেখা দিতে পারে নানা স্নায়বিক জটিলতা।
বিশেষজ্ঞের তালিকায় প্রথম পানীয়টি হলো অ্যালকোহল। মদ্যপানের ক্ষতি নতুন কিছু নয় তবে রবার্টের ব্যাখ্যা অনুযায়ী অ্যালকোহল মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয় যার ফলে ঘুমের সমস্যা স্মৃতি দুর্বলতা ও মানসিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে। তিনি আরও জানান অ্যালকোহল অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া নষ্ট করে যা পরোক্ষভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নিয়মিত পান করলে স্মৃতিভ্রষ্টতা বা অনিদ্রা পর্যন্ত হতে পারে।
দ্বিতীয় ক্ষতিকর পানীয় হিসেবে তিনি চিনি মেশানো সোডার কথা উল্লেখ করেছেন। সোডা পানীয়তে থাকে উচ্চমাত্রার চিনি যা শরীরে শর্করা বাড়ানোর পাশাপাশি মস্তিষ্কে প্রদাহ সৃষ্টি করে। গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত চিনি মেশানো সোডা পান করলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে এই প্রদাহ অ্যালঝেইমার্সসহ অন্যান্য নিউরোডিজেনারেটিভ রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এমনকি ডায়েট সোডাও মস্তিষ্কের জন্য নিরাপদ নয় বলে তিনি মত দিয়েছেন।
তৃতীয়ত অপরিশোধিত কলের পানি বা ট্যাপ ওয়াটার নিয়েও সতর্ক করেছেন এই বিজ্ঞানী। বর্ষাকালে ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ পেটের নানা রোগ বেড়ে যায় তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন কলের পানি অবশ্যই ফুটিয়ে বা ফিল্টার করে খেতে হবে। কারণ অপরিশোধিত ট্যাপ ওয়াটারে থাকা ফ্লুয়োজাইড নামের রাসায়নিক উপাদান মস্তিষ্কের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। দাঁতের সুরক্ষায় ফ্লুয়োজাইড ব্যবহার হলেও এটি গিলে ফেলা বা দীর্ঘদিন অপরিশোধিত অবস্থায় গ্রহণ করলে স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হতে পারে।
মস্তিষ্ক সুস্থ রাখতে শুধু খাবার নয় পানীয় নির্বাচনের দিকেও সতর্ক থাকা জরুরি বলে মনে করেন চিকিৎসকরা। নিউরোসায়েন্টিস্টদের পরামর্শ হলো সুষম খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা এবং যথেষ্ট ঘুমের পাশাপাশি নিরাপদ পানীয় বেছে নেওয়া। আগেভাগে সতর্ক হলে ভবিষ্যতের অনেক মানসিক ও শারীরিক ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব।
নারীদের নীরব শত্রু জরায়ুমুখের ক্যানসার, কারা আছেন সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে জেনে নিন
নারীর জীবনে সবচেয়ে ভয়াবহ এক শত্রুর নাম জরায়ুমুখের ক্যানসার। অনেক সময় এই রোগ শুরুতে কোনো তীব্র লক্ষণ দেখায় না বরং ধীরে ধীরে শরীরে বাসা বাঁধে। অথচ চাইলে একেবারে শুরুর দিকেই খুব সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে এটি শনাক্ত করা সম্ভব। চিকিৎসকরা বলছেন নিয়মিত পরীক্ষা নিরীক্ষা করালে এ রোগ থেকে শতভাগ নিরাপদ থাকা যায়। বিশ্বজুড়ে নারীদের ক্যানসারের তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা এই ক্যানসার বাংলাদেশেও ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো শহর বা গ্রাম এবং শিক্ষিত বা অশিক্ষিত সব শ্রেণির নারীর মধ্যেই এ রোগের ঝুঁকি রয়েছে।
গবেষণা বলছে জরায়ুমুখে প্রাথমিক পরিবর্তন থেকে পূর্ণাঙ্গ ক্যানসারে রূপ নিতে সময় লাগে প্রায় ১০ থেকে ১২ বছর। তাই চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে এই ক্যানসার সাধারণত নারীদের জীবনের দুটি পর্যায়ে হতে পারে যার প্রথম পর্যায় ৩৫ থেকে ৩৯ বছর এবং দ্বিতীয় পর্যায় ৬০ থেকে ৬৯ বছর। স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ডা. পবিনা আফরোজ পারভীন জানান দুর্গন্ধযুক্ত ঋতুস্রাব অনিয়মিত মাসিক সহবাসের সময় রক্তপাত মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি হওয়ার পর রক্ত যাওয়া এবং তলপেটে ব্যথা জরায়ুমুখের ক্যানসারের প্রধান লক্ষণ।
কারা বেশি ঝুঁকিতে আছেন সে বিষয়ে ডা. পবিনা বলেন যারা জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি ১০ বছরের বেশি সময় ধরে খাচ্ছেন কিংবা যাদের অল্প বয়সে বিয়ে হয়েছে এবং কম বয়সে সন্তান নিয়েছেন তাঁরা এই ক্যানসারের ঝুঁকিতে রয়েছেন। এছাড়া ঘন ঘন ও পাঁচটির বেশি সন্তান জন্মদান এবং বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক থাকাও এই রোগের অন্যতম কারণ। মূলত হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভিকে জরায়ুমুখের ক্যানসার হওয়ার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয় যার মধ্যে ১৬ ও ১৮ সেরোটাইপ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। যৌন সংসর্গের মাধ্যমেই এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ায়।
রোগ শনাক্তকরণের বিষয়ে চিকিৎসকরা জানান গ্রামে ভায়া টেস্ট এবং শহরে বা বড় হাসপাতালে প্যাপস স্মিয়ার লিকুইড বেজড সাইটোলজি ও কলপোস্কোপি ইত্যাদির মাধ্যমে এটি শনাক্ত করা যায়। সুস্থ সব নারীর জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং করা জরুরি এবং স্ক্রিনিংয়ে ক্যানসারের সন্দেহ হলে বায়োপসি ও হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করতে হবে। ক্যানসারটি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানার জন্য এমআরআই পেলভিস করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
জরায়ুমুখের ক্যানসার প্রতিরোধে প্রাথমিক পর্যায়ে ৯ থেকে ৪৫ বছর বয়সী সব সুস্থ মেয়ে ও নারীর জন্য হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের টিকা নেওয়া জরুরি। এছাড়া ৩০ বছর বয়স থেকে সব সুস্থ নারীর নিয়মিত স্ক্রিনিং করা উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সার্জারি এবং পরে রেডিওথেরাপি ও কেমোথেরাপির মাধ্যমে এই রোগ পুরোপুরি নিরাময়যোগ্য বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
পাঠকের মতামত:
- চোখের যে ৫ লক্ষণে বুঝবেন কিডনি নষ্ট হচ্ছে
- হাদির ওপর হামলায় ক্ষুব্ধ জামায়াত আমির দিলেন সিইসিকে হুঁশিয়ারি
- শকুনেরা আবারও স্বাধীনতা খামচে ধরছে: সারজিস
- জিয়ার রহমানের ডাকেই ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জিত: তারেক রহমান
- ঘুমেও নিরাপত্তা নেই: লুট হওয়া অস্ত্রে কাঁপছে খুলনা
- সিঙ্গাপুরের পথে হাদি, চিকিৎসকদের আশার বাণী
- পোস্টাল ভোটে বিপ্লব: ফেব্রুয়ারির ভোটে প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া
- হাদিকে হত্যাচেষ্টায় ফয়সালসহ যাদের নাম এল মামলায়
- উপদেষ্টার সামনেই পদত্যাগের হুমকি দিলেন সাদিক
- ১৬ ডিসেম্বর বের হওয়ার আগে যে সতর্কতা জানা জরুরি
- ১৬ ডিসেম্বর দুপুরে মেট্রোরেল যাত্রীদের জন্য সতর্কতা
- একসঙ্গে আট ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন সাময়িক বন্ধ
- কলকাতার কলঙ্ক মুছতে দিল্লিতে মেসির রাজকীয় নিরাপত্তা
- হাদির ঘটনা বিচ্ছিন্ন, নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে না: সিইসি
- জুলাই পরবর্তী ষড়যন্ত্রে আনিস ও শাওনের নাম
- সৌরজগতের সীমানা পেরিয়ে ঐতিহাসিক মাইলফলকের পথে নাসা
- বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডে বড় নিয়োগ, সময় শেষ আজ বিকেলে
- ডেট বোর্ডে স্থবিরতা, লেনদেন সীমিত কয়েকটি বন্ডে
- শীতে পুরুষদের স্মার্ট লুকের ৮টি দুর্দান্ত আউটফিট
- শেয়ারবাজারে সতর্কতা, প্রধান তিন সূচকই নিম্নমুখী
- ডিএসই–৩০ সূচকে কোন শেয়ারে বাড়ল লেনদেন
- এক লাফে ভরি প্রতি স্বর্ণের দাম বাড়ল যত
- সিনেমার স্টাইলে পুলিশকে বোকা বানইয়ে পালালো দুই হামলাকারী
- কেমন থাকবে আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়া জানাল অধিদপ্তর
- পুষ্পা টুর রেকর্ড ভাঙল রণবীরের ধুরন্ধর
- শেয়ারহোল্ডারদের জন্য দুঃসংবাদ দিল মাকসন্স স্পিনিং
- স্বর্ণের নতুন বাজার দর: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার ফল পুনর্নিরীক্ষণের নিয়ম জানুন
- ডিএসইতে আজ একাধিক ফান্ডের ডেইলি এনএভি ঘোষণা
- ডলারসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার আজকের বিনিময় হার
- ১৫ ডিসেম্বর গাজীপুর মুক্ত দিবস: একাত্তরের সেই গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস
- সেমাই পিঠা/চুষি পিঠার ঘরোয়া স্বাদের সহজ রেসিপি
- মুখের দুর্গন্ধ দূর করার সহজ উপায়, বিব্রতকর পরিস্থিতি এড়াতে করণীয়
- নজরদারি ফাঁকি দিয়ে ডিজিটাল ধোঁকায় ভারতে পালালেন হাদির হামলাকারীরা
- অস্ট্রেলিয়ার বিচে উৎসবে হামলা, হামলাকারী বাবা ও ছেলের পরিচয় প্রকাশ
- আজকের রাশিফল: জেনে নিন সোমবার কার কেমন কাটবে
- শুক্রাণুর মান ধ্বংস করছে অনিদ্রা ,পুরুষের জন্য বড় সতর্কবার্তা
- পড়ালেখা ও কাজে এআই ব্যবহারের ১০ কার্যকর কৌশল
- সিলেট হয়ে ঢাকায় ফিরবেন তারেক রহমান
- নির্বাচন কমিশনের রিপোর্টে চিহ্নিত ১২ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র
- গরিবের হক মেরে বিত্তবানদের পেট ভরাচ্ছে ভিডব্লিউবি কার্ড
- সোমবার ঢাকায় কী কী কর্মসূচি? এক নজরে বিস্তারিত
- সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে যাচ্ছেন গুলিবিদ্ধ হাদি
- ঢাকায় আজ আবহাওয়া যেমন থাকতে পারে
- বাংলাদেশ বনাম নেপাল ম্যাচসহ টিভিতে আজকের সব খেলার সময়সূচি
- নিরাপত্তার সংকটে রাজনীতি, প্রার্থীদের মনে চরম আতঙ্ক
- ১৫ ডিসেম্বর ঢাকা ও আশপাশের এলাকার নামাজের সময়সূচি
- বুধবার ঢাকার যেসব মার্কেট ও এলাকা বন্ধ থাকবে
- রাতে জিম থেকে সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে নিয়ে গেল ডিবি
- অনিয়ম ঠেকাতে বিচারিক কর্মকর্তাদের মাঠে নামাল ইসি
- যেভাবে জানা যাবে স্কুল ভর্তি লটারির ফল
- দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়
- স্কুলভর্তির ডিজিটাল লটারি শুরু, ফল প্রকাশের সময় জানা গেল
- শনি-রবিবার বিদ্যুৎ থাকবে না বহু এলাকায়
- চিকিৎসক জানাল ওসমান হাদীর বর্তমান অবস্থা
- মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি শুরুর সময়সূচি প্রকাশ
- রাজশাহীতে নলকূপে আটকে পড়া শিশুকে বের করতে সুরঙ্গ খনন
- এমপি হওয়ার আগেই ভিআইপি প্রোটোকল পেলেন হাদি: ডা. মাহমুদা মিতু
- দেশে ফেরা নিয়ে যা জানালেন সাকিব আল হাসান
- রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিদ্যুৎহীন যেসব এলাকা
- তানোরে ৩২ ঘণ্টা পর উদ্ধার শিশুসাজিদ, কেমন আছে সে
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আজ শুরু, একটি আসনের জন্য লড়াই যতজনের
- শীতে ত্বক শুষ্ক ও র্যাশ কেন হয়, জানুন সমাধান
- দেশের বাজারে স্বর্ণের দামের নতুন রেকর্ড
- ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ








