জানুন লবণের অতিরিক্ত ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ১৬:১২:০৩
জানুন লবণের অতিরিক্ত ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক
ছবিঃ সংগৃহীত

রান্নাঘর ও ডাইনিং টেবিলে লবণ প্রায়শই এক অপরিহার্য উপাদান হিসেবে দেখা যায়। তবে এই সাধারণ উপাদানটির অতিরিক্ত ব্যবহার স্বাদের জন্য যতটা প্রিয়, তার থেকে অনেক বেশি ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে মানবদেহে। হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ লবণের মূল উপাদান হলো ৪০ শতাংশ সোডিয়াম এবং ৬০ শতাংশ ক্লোরাইড। এর মধ্যে সোডিয়ামই প্রধান কারণ যা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ও কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা তৈরি করে এবং দীর্ঘমেয়াদে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়।

অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ক্ষতিকর প্রভাব এড়াতে চিকিৎসকরা বিভিন্ন বিকল্প সমাধান প্রস্তাব করেন। পুষ্টিবিদ আস্থুল জৈব ভারতীয় পরামর্শ দেন লো-সোডিয়াম লবণের ব্যবহার, যা স্বাদ বজায় রেখে শরীরকে সোডিয়ামের অতিরিক্ত প্রভাব থেকে রক্ষা করে। লো-সোডিয়াম লবণে থাকে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

রান্নায়ও লবণের পরিবর্তে ফ্রেশ ফল, সবজি, মাছ-মাংসের মতো প্রাকৃতিক খাবার বেশি ব্যবহার করতে উৎসাহ দেওয়া হয়। মশলা, লেবুর রস বা ভিনেগার ব্যবহার করে খাবারে স্বাদ বৃদ্ধি সম্ভব, যা স্বাস্থ্যকর হওয়ার পাশাপাশি স্বাদের সমৃদ্ধিও বয়ে আনে। বিশেষ করে খাবার টেবিলে অতিরিক্ত লবণ রাখা থেকে বিরত থাকা জরুরি, কারণ এ অভ্যাসে আমরা অজান্তেই অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করি।

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রখ্যাত ‘ড্যাশ ডায়েট’ অনুসরণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়। এতে প্রচুর পরিমাণে ফলমূল, সবজি, হোল গ্রেইন, লিন প্রোটিন এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত পণ্য থাকে, যা সোডিয়ামের মাত্রা কমিয়ে হৃদয় স্বাস্থ্য রক্ষা করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পরামর্শ দেয় দৈনিক সোডিয়াম গ্রহণ এক্সপ্রেস করে ২,৩০০ মিলিগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়, যা প্রায় এক চা চামচ লবণের সমান। তবে উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ আক্রান্তদের জন্য এই সীমা ১,৫০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত নামানো হয়। বাস্তবে অধিকাংশ মানুষ এই নির্ধারিত সীমার চেয়ে অনেক বেশি লবণ গ্রহণ করেন, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকারক।

সুতরাং, লবণের স্বাদ বাড়ানোর ক্ষমতা সত্ত্বেও, এটি নিয়ন্ত্রণহীনভাবে গ্রহণ করলে ‘নীরব ঘাতক’ হিসেবে কাজ করে। খাদ্যাভ্যাসে সচেতনতা আনাই বর্তমানে সবচেয়ে জরুরি। নিয়মিত কম লবণযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি জটিলতার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে এবং দীর্ঘস্থায়ী সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত হয়। রান্না ও খাওয়ার অভ্যাসে সঠিক পরিবর্তন আনা এখন সময়ের অপরিহার্য দাবী।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ