রাশিয়ার হুমকির জবাবে পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০২ ১১:১১:৪০
রাশিয়ার হুমকির জবাবে পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ ট্রাম্পের
ছবি : এএফপি

ট্রাম্পের পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের হুমকি, মেদভেদেভের পাল্টা কটাক্ষে উত্তপ্ত পরিস্থিতিরাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান নিরাপত্তা পরিষদের উপ-চেয়ারম্যান দিমিত্রি মেদভেদেভের এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন বলে দাবি করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

ট্রাম্প লিখেছেন, "মেদভেদেভের বিবৃতি ছিল অত্যন্ত উসকানিমূলক। কথার এমন গভীর প্রভাব থাকে যে, অনেক সময় তা অনিচ্ছাকৃত বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেয়। তাই আমি দুইটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি এবার তেমন কিছু ঘটবে না।" তবে সাবমেরিন দুটি কোন অঞ্চলে মোতায়েন করা হয়েছে কিংবা সেগুলো পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত কিনা, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।

ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে ট্রাম্পের দেওয়া শান্তিপূর্ণ সমাধানের সময়সীমা ঘিরেই মূলত এই বাকযুদ্ধের সূত্রপাত। ট্রাম্প সম্প্রতি রাশিয়াকে ১২ দিনের সময়সীমা দিয়ে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলে মেদভেদেভ তা প্রত্যাখ্যান করেন এবং পাল্টা হুমকিসূচক বক্তব্য দেন। এর জবাবে ট্রাম্প মেদভেদেভকে ‘রাশিয়ার ব্যর্থ সাবেক প্রেসিডেন্ট’ বলে কটাক্ষ করেন এবং বলেন, "তিনি এখনো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ভাবেন, কিন্তু কথার লাগাম না টানলে বিপজ্জনক সীমানায় প্রবেশ করবেন।"

এর পাল্টা জবাবে মেদভেদেভ সামাজিক মাধ্যমে কটাক্ষ করে লেখেন, "ট্রাম্প যেন ‘দ্য ওয়াকিং ডেড’ মনে রাখেন এবং ভুলে না যান সোভিয়েত আমলের ‘ডেড হ্যান্ড’ পারমাণবিক ব্যবস্থা কতটা ভয়ঙ্কর ছিল।"

উল্লেখ্য, ‘ডেড হ্যান্ড’ ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গোপন স্বয়ংক্রিয় পারমাণবিক প্রতিশোধ ব্যবস্থা। বলা হয়ে থাকে, যুক্তরাষ্ট্র আকস্মিক হামলা চালালে এই ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাল্টা হামলা হতো। ১৯৮৫ সালে এটি চালু করা হয় এবং রুশ কর্মকর্তাদের মতে, এটি এখনো সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরে একের পর এক পোস্টে মেদভেদেভ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরব। শান্তি প্রস্তাবের সময়সীমা ৫০ দিন থেকে কমিয়ে ১২ দিন করায় তিনি ট্রাম্পকে ‘আল্টিমেটাম খেলা’র দায়ে অভিযুক্ত করে বলেন, “প্রতিটি আল্টিমেটাম যুদ্ধকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিচ্ছে।”

তিনি ট্রাম্পকে কটাক্ষ করে আরও বলেন, “উনি যেন ঘুমন্ত জো (জো বাইডেন)-এর পথ না ধরেন।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই বাকযুদ্ধ কেবল ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নয়। পারমাণবিক সাবমেরিন ও ‘ডেড হ্যান্ড’-এর মতো স্পর্শকাতর বিষয় উঠে আসায়, এটি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে উদ্বেগের সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে যখন পশ্চিমা বিশ্ব ও রাশিয়ার সম্পর্কে নতুন করে টানাপোড়েন দেখা দিচ্ছে, তখন এ ধরনের উত্তেজনাকর বার্তা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

—আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ