আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে।:মেজর হাফিজ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০২ ২০:২২:৪৭
আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে।:মেজর হাফিজ
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছেন, তারা কোনো ভোট পদ্ধতির জন্য নয়—তাদের লক্ষ্য ছিল প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার একমাত্র উপায় হচ্ছে সুষ্ঠু নির্বাচন, যা হতে হবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে।

শনিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে (আইইবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত শহীদ পরিবারের প্রতি সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।

মেজর হাফিজ বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার লোভে সহজ পথ এড়িয়ে প্যাঁচালো পথে হাঁটছে। পিআর বা আনুপাতিক পদ্ধতিতে নয়, দেশের জনগণ সরাসরি ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে চায়। তিনি বলেন, “ভোলায় যদি সংসদ সদস্য হন কুড়িগ্রামের কেউ, তাহলে সাধারণ মানুষ কীভাবে তার সমস্যার সমাধান পাবেন? এটা বাস্তবসম্মত নয়।”

একজন শহীদ পিতার মন্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “যে স্বপ্ন নিয়ে তার সন্তান শহীদ হয়েছেন, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। এর কারণ হলো—বর্তমান সরকার এবং তাদের উপদেষ্টারা কেউই জুলাই চেতনাকে ধারণ করেন না।” তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে কোনো উপদেষ্টা শেখ হাসিনার দুঃশাসনের বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেননি, শুধু ড. আসিফ নজরুল ব্যতিক্রম।

তিনি আরও বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা শেখ হাসিনার স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, বিপ্লবের পর শহীদদের মূল্যায়ন হয় না। বরং কিছু লোক পরবর্তীতে এসে আন্দোলনের সব কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করে।”

মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের সময় যাদের সংখ্যা ছিল ৮১ হাজার, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে আড়াই লাখে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, আত্মীয়-স্বজনসহ সবাইকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে।”

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে বিএনপির একদিকে থাকা এবং অন্যদিকে ৩৪টি দলের থাকা নিয়ে তিনি বলেন, “এই দুই পক্ষের প্রকৃত জনসমর্থন যাচাই করা দরকার।”

মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও ৭২-এর সংবিধান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “যারা একসময় মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছে, আজ তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করছে। কিন্তু তারা এসব বলার সুযোগ কোথায় পেল?” তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধে আহত হওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি এসব কথা বলেন, আর এসব শুনে তাঁর হৃদয়ে ব্যথা লাগে।

তিনি দেশের তরুণ প্রজন্মের সাহস ও শক্তির প্রশংসা করে বলেন, “আমাদের তরুণ সমাজ অত্যন্ত সাহসী। তারা ভবিষ্যতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রকৌশলী মো. হেলাল উদ্দিন তালুকদার। এতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহ-সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী আব্দুস সোহবান, এ্যাবের সাবেক মহাসচিব আলমগীর হাসিন আহমেদ, আইইবির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সাব্বির মোস্তফা খান, ও ঢাকা কেন্দ্রের সদস্য প্রকৌশলী লোকমান প্রমুখ।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ