৩০ বছর পুরোনো ভ্রূণ থেকে জন্ম, ওহাইওতে বিজ্ঞানজগতের বিস্ময়

প্রযুক্তি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০২ ১০:০৩:৩৮
 ৩০ বছর পুরোনো ভ্রূণ থেকে জন্ম, ওহাইওতে বিজ্ঞানজগতের বিস্ময়
ছবি: সংগৃহীত

৩০ বছর আগে হিমঘরে সংরক্ষিত একটি ভ্রূণ থেকে জন্ম নিয়ে এক বিরল ঘটনার নজির স্থাপন করল যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের নবজাতক থাডেয়াস ড্যানিয়েল পিয়ার্স। ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই জন্ম নেওয়া এই শিশুটি বর্তমানে ‘বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো ভ্রূণ থেকে জন্মানো নবজাতক’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লিন্ডা আচার্ড ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চারটি ভ্রূণ তৈরি করেছিলেন। এই চারটির একটি থেকে তার কন্যার জন্ম হয়, বাকি তিনটি রাখা হয় হিমায়িত অবস্থায়—যা বিগত তিন দশক ধরে প্রতি বছর ১ হাজার ডলার খরচ করে সংরক্ষিত ছিল।

লিন্ডা শুরু থেকেই চাননি তার ভ্রূণগুলো কোনো গবেষণাগারে ব্যবহৃত হোক কিংবা অপরিচিত পরিবারের হাতে চলে যাক। তিনি এগুলিকে তার মেয়ের জিনগত ভাইবোন হিসেবেই দেখতেন। অবশেষে Snowflakes Embryo Adoption Program-এর মাধ্যমে তিনি একজন উপযুক্ত দম্পতির কাছে এই ভ্রূণগুলো দান করেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে সন্তান জন্মদানের জন্য চেষ্টা করে আসছিলেন।

এই দম্পতি ওহাইওর বাসিন্দা টিম ও লিন্ডসি পিয়ার্স, যারা সাত বছর ধরে নিঃসন্তান ছিলেন। তারা যখন Snowflakes প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানতে পারেন, তখনই তারা এই সুযোগটি গ্রহণ করেন। তারা ভ্রূণের বয়স, জাতি বা উৎস সম্পর্কে কোনো পূর্বশর্ত দেননি। পরবর্তীতে লিন্ডার ভ্রূণ তাদের সঙ্গে মেলানো হয়।

Rejoice Fertility-এর নেতৃত্বে, এমব্রায়োলজিস্ট সারাহ অ্যাটকিনসন এই ভ্রূণগুলোকে ডিফ্রস্ট করেন। আশ্চর্যজনকভাবে তিনটির তিনটিই সফলভাবে সংরক্ষণ থেকে মুক্ত হয়। এর মধ্যে দুটি ভ্রূণ লিন্ডসির গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয় এবং সেখান থেকেই থাডেয়াসের জন্ম।

লিন্ডা যখন থাডেয়াসের ছবি দেখেন, তখন তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন—শিশুটিকে দেখতে তার নিজের মেয়ের শৈশবের মতোই লাগছে। যদিও তারা এখনও একে অপরের মুখোমুখি হননি, তবে লিন্ডার ভাষায়, “ওকে একবার জড়িয়ে ধরা আমার আজীবনের স্বপ্ন।”

এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয়। ২০১৯ সালে ভারতের ৭৪ বছর বয়সী এররামাতি মঙ্গায়াম্মা IVF পদ্ধতিতে যমজ কন্যার জন্ম দিয়ে সবচেয়ে বেশি বয়সে মা হওয়ার রেকর্ড করেন। একই বছর গ্রীসে আরেক শিশুর জন্ম হয় তিনজন ব্যক্তির ডিএনএ ব্যবহার করে, যা বিজ্ঞানজগতে আলোচনার জন্ম দেয়।

থাডেয়াসের জন্ম শুধু একটি শিশুর আগমনের গল্প নয়; এটি বিজ্ঞানের এক যুগান্তকারী সাফল্যের প্রতিফলন—যা ভবিষ্যতের প্রজনন চিকিৎসাকে নতুন দিগন্তে নিয়ে যেতে পারে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ