ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

ঢাকার ২০টি আসনে বিএনপির নির্বাচনী কৌশল: কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ২৬ ১৮:৫৫:৫০
ঢাকার ২০টি আসনে বিএনপির নির্বাচনী কৌশল: কারা পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন?

বাংলাদেশের রাজনীতিতে রাজধানী ঢাকার ২০টি সংসদীয় আসন সব সময়ই বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। রাজধানী হিসেবে এখানে প্রতিটি বড় রাজনৈতিক দলের জন্যই আসনগুলো কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ইতোমধ্যেই এসব আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করার পথে রয়েছে। এই প্রার্থী তালিকায় একদিকে যেমন পুরনো ও অভিজ্ঞ নেতাদের নাম রয়েছে, তেমনি উঠে এসেছে পরিবারের উত্তরসূরিদের নামও। এখন দেখা যাক, ঢাকার কোন কোন আসনে কারা হতে পারেন বিএনপির চূড়ান্ত প্রার্থী।

ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক। ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তিনটি ওয়ার্ড, হাজারীবাগ, কামরাঙ্গীরচর এবং সাভারের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-২ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান। তিনি নির্বাচন না করলে বিকল্প প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন তার ছেলে ব্যারিস্টার ইরফান ইবনে আমান।

ঢাকা-৩ (সাভার) আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বিকল্প প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছে তার পুত্রবধূ এবং ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরীর নাম। ঢাকা-৪ (ডেমরা ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চল) আসনে প্রার্থী হিসেবে বিবেচনায় রয়েছেন বিএনপির সাবেক সাংসদ সালাউদ্দিন আহমেদ বা তাঁর ছেলে তানভীর আহমেদ রবিন। মতিঝিল এবং অফিসপাড়া খ্যাত এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-৫ আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন মহানগর বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী।

ঢাকা-৬ (কোতুয়ালী ও সূত্রাপুর) আসনে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের মনোনয়ন প্রায় নিশ্চিত বলেই ধরা হচ্ছে। আর রাজধানীর লালবাগ, চকবাজার, হাজারীবাগ ও ধানমণ্ডির একাংশ নিয়ে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ আসন ঢাকা-৭ এ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বিএনপির প্রয়াত নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর স্ত্রী ও সাবেক কমিশনার নাসিমা আক্তার কল্পনা। একইসাথে এই আসন থেকে জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী মনোনয়ন পেতে পারেন বলেও দলের মধ্যে আলোচনা চলছে।

ঢাকা-৮ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে উঠে এসেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী সদস্য মির্জা আব্বাসের নাম। তবে তিনি যদি এই আসনে না দাঁড়ান, তাহলে বিকল্প হিসেবে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহেল হতে পারেন দলের পছন্দ। আবার মির্জা আব্বাস যদি ঢাকা-৮ থেকে নির্বাচন করেন, তাহলে তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন ঢাকা-৯ আসনে। ঢাকা-১০ (সবুজবাগ, মুগদা, শাহজাহানপুর) আসনে মনোনয়নের দৌড়ে আছেন কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন অসীম এবং নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ বদিউল আলম রবি।

ঢাকা-১১ (উত্তরা, খিলক্ষেত, ভাটারা) আসনে প্রার্থী হতে পারেন এমএ কাইয়ুম অথবা তাঁর স্ত্রী শামিম বেগম। বিকল্প হিসেবে এজিএম শামসুল ইসলামের নামও রয়েছে আলোচনায়। ঢাকার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আসন ঢাকা-১২ (রমনা) থেকে বিএনপির মহানগর উত্তরের সাবেক আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব অথবা আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার মনোনয়ন পেতে পারেন। একইভাবে ঢাকা-১৩ (মোহাম্মদপুর ও আদাবর) আসনে প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বা আতাউর রহমান ঢালি।

ঢাকা-১৪ (মিরপুর ও সাভারের একটি অংশ) আসনে দারুস সালাম থানার আহ্বায়ক এএসএম সিদ্দিক সাজু এবং যুবনেতা মোস্তফা জগলুল পাশা পাপেল প্রার্থী হতে পারেন। পাশাপাশিই, ঢাকা-১৫ (পল্লবী ও রূপনগর) আসনে প্রার্থী হতে পারেন যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন হাসানী। পল্লবী এলাকার আরেকটি আসন ঢাকা-১৬ এ সাবেক জাতীয় ফুটবলার এবং মহানগর বিএনপির আহবায়ক আমিনুল হক প্রার্থী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন।

ঢাকা-১৭ (ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, বনানী) আসনটি বিএনপি হয়তো তাদের আন্দোলনের শরিক বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থর জন্য ছেড়ে দিতে পারে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। ঢাকা-১৮ (খিলখেত, উত্তরখান) আসনে মনোনয়ন পেতে পারেন এসএম জাহাঙ্গীর অথবা এম কফিলউদ্দিন আহমেদ। আর শেষের দুইটি আসন—ঢাকা-১৯ ও ২০ (সাভার ও ধামরাই অঞ্চল)—এই দুটি আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন দেওয়ান মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বাবু, তমিজউদ্দিন ও সুলতান আহমেদ।

এই প্রার্থী তালিকা পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিএনপি একদিকে অভিজ্ঞ নেতাদের পুনঃস্থাপন করতে চাইছে, অন্যদিকে তরুণ মুখ এবং রাজনৈতিক পরিবারগুলোকেও গুরুত্ব দিচ্ছে। ঢাকার আসনগুলোতে যেহেতু রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা সব সময়ই তীব্র, তাই দলীয় ঐক্য, স্থানীয় জনপ্রিয়তা এবং মাঠ পর্যায়ের সংগঠকদের সঙ্গে সম্পর্ক এ প্রার্থী নির্ধারণে মুখ্য ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৬:২৯:৩৭
বিক্ষোভে রক্তক্ষয়, নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
ছবিঃ সংগৃহীত

নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন। এর মাত্র একদিন আগে দেশজুড়ে বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে অন্তত ১৯ জন নিহত হয়, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দমন-পীড়নের ঘটনা।

রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দেওয়া পদত্যাগপত্রে ৭৩ বছর বয়সী ওলি লিখেছেন, “আজ থেকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করছি, যাতে রাজনৈতিক সমাধানের পথে আরও অগ্রসর হওয়া যায় এবং বিদ্যমান সংকট নিরসনের উপায় খোঁজা সম্ভব হয়।”

সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবিতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপগুলো চালু করা হয়, তবুও বিক্ষোভ থামেনি। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের তথ্যমতে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো হয়, যাতে হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।

ওলি গত বছর চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন, যখন তার কমিউনিস্ট পার্টি মধ্য-বামপন্থি নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গঠন করে সরকার গড়ে। তবে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ও ধীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে জনঅসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছিল।

হিমালয়ের এই দেশটির জনসংখ্যা প্রায় তিন কোটি। এর মধ্যে ১৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণরা মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৩ শতাংশ। কিন্তু বেকারত্বের হার ১০ শতাংশের কাছাকাছি এবং মাথাপিছু আয় মাত্র ১,৪৪৭ ডলার। ফলে তরুণ প্রজন্ম ক্রমেই হতাশ হয়ে পড়ছে।

২০০৮ সালে এক দশকব্যাপী গৃহযুদ্ধের পর নেপাল রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে ফেডারেল প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। মাওবাদীদের শান্তি চুক্তির মাধ্যমে রাজনীতিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এরপর থেকে বয়স্ক রাজনীতিবিদদের ক্ষমতা দখলের পালাবদল, দলাদলি ও ঘনঘন সরকার পরিবর্তন জনগণের কাছে রাজনৈতিক নেতৃত্বকে আরও অবিশ্বস্ত করে তুলেছে।

গত শুক্রবার থেকে টিকটকে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা যায়, সাধারণ নেপালিদের দুঃখ-দুর্দশার বিপরীতে রাজনীতিবিদদের সন্তানরা বিলাসবহুল সামগ্রী ও বিদেশ ভ্রমণ প্রদর্শন করছে। এসব দৃশ্য বিক্ষোভকে আরও উসকে দিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

ওলির পদত্যাগ নিঃসন্দেহে নেপালের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন সমীকরণ তৈরি করবে। তবে এই অস্থিরতা থেকে উত্তরণের পথ এখনো অনিশ্চিত।

-সুত্রঃ এ এফ পি


৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে, নির্বাচন স্বচ্ছ দাবি ঢাবি ভিসির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৬:২১:৫৫
৭০ শতাংশ ভোট পড়েছে, নির্বাচন স্বচ্ছ দাবি ঢাবি ভিসির
ছবিঃ সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান দাবি করেছেন, ডাকসু নির্বাচনে কোনো ধরনের স্বচ্ছতার অভাব নেই। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে সেনেট ভবনের তিনটি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।

উপাচার্য জানান, ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে ৭০ শতাংশের বেশি ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, “কার্জন হলে একটি সামান্য সমস্যা হয়েছিল, যা ভুলবশত ঘটেছে। আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছি। তারপরও বিষয়টি পুনরায় তদন্ত করা হবে। যদি কারও দায়িত্বহীনতা প্রমাণিত হয়, তবে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ভিসির এই মন্তব্যকে ঘিরে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, ডাকসু নির্বাচন নিয়ে অভিযোগ বা অনিয়মের খবর সামনে এলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা এখন মূল চ্যালেঞ্জ।

-আলমগীর হোসেন


থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১২:০৩:৩২
থাকসিন শিনাওত্রার কারাদণ্ড: রাজনৈতিক বংশপরিচয়ের পতনের আভাস
ছবিঃ সংগৃহীত

থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ আদালত মঙ্গলবার দেশটির প্রভাবশালী ও বিতর্কিত রাজনীতিবিদ থাকসিন শিনাওয়াত্রাকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত জানায়, ২০২৩ সালে নিজস্ব হাসপাতালে থেকে শিনাওত্রা কারাদণ্ড অযথা সম্পন্ন করেছিলেন, যা বেআইনি ছিল।

দশকেরও বেশি সময় ধরে শিনাওত্রার রাজনৈতিক বংশপরিচয় দেশের সামরিক ও রাজতন্ত্রপন্থী রাজনৈতিক মহলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এই পরিবার এবং তাদের পপুলিস্ট ধারা দেশটির প্রথাগত সামাজিক কাঠামোর জন্য হুমকি হিসেবে দেখা হয়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আইনি ও রাজনৈতিক ব্যর্থতার পরিশেষে তাদের প্রভাব হ্রাস পেতে শুরু করেছে। সর্বশেষ তার কন্যা পেটংটার্ন শিনাওত্রাকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়।

মঙ্গলবারের সর্বোচ্চ আদালতের রায় থাইল্যান্ডের সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জন্য একটি কঠিন ধাক্কা হিসেবে দেখা যাচ্ছে। আদালতের নির্দেশে তার ব্যাংকক রিম্যান্ড প্রিজনে স্থানান্তরের জন্য ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছে।

থাকসিন ২০০১ এবং ২০০৫ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন, তবে দ্বিতীয় মেয়াদে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নির্বাসনে যান। ২০২৩ সালের আগস্টে দেশে ফেরার পর তিনি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে আট বছরের সাজা পান। কিন্তু তিনি কখনো সেল না কাটিয়ে ব্যক্তিগত হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাজার বিশেষ ক্ষমা ও বয়স্ক বন্দীদের জন্য পূর্বমুক্তির প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সাজা এক বছরে কমিয়ে দেওয়া হয়।

এই সময়ের ফেরা ও হাসপাতাল ট্রান্সফার, যা পেউ থাই পার্টির নতুন সরকার গঠনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, তা জনমনে বিশেষ ব্যবস্থার অভিযোগ ও সন্দেহ সৃষ্টি করেছিল। আদালতের রায়ে বলা হয়, “অভিযুক্তের সাজা কার্যকর করা বেআইনি। তিনি জানতেন বা সচেতন ছিলেন যে তার স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থার মধ্যে নেই এবং এটি বহির্বিভাগে চিকিৎসা করা যেত।”

শিনাওত্রার পরিবারের জন্য রাজনৈতিক সাফল্যের এই ধাক্কা একটি চ্যালেঞ্জ হলেও তারা এখনও রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে গণ্য। তার কন্যা পেটংটার্ন জানিয়েছেন, “আমার পিতা এখনও মানুষের জীবন উন্নয়নের জন্য তাঁর নৈতিক ও রাজনৈতিক ভূমিকার মাধ্যমে নেতা হিসেবে রয়েছেন।”

বিশ্লেষকরা মনে করেন, শিনাওত্রা সহজে রাজনীতি ছাড়বেন না। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে তার প্রভাব ও বুদ্ধিমত্তা এখনও বিবেচনার বিষয়। আদালতের বাইরে তার সমর্থকরা লাল রঙের পোশাকে উপস্থিত হয়ে রায়ের প্রতি একাগ্রতা দেখিয়েছেন।

সাম্প্রতিক সময়ে পেউ থাই পার্টি ক্ষমতা হারানো এবং শিনাওত্রার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা গুজব ও রাজনৈতিক উত্তেজনা চলছে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, “এটি শেষ নয়, তবে পেউ থাইয়ের শক্তি কমিয়ে দিয়েছে।”

-সুত্রঃ এ এফ পি


প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:১৪:০৭
প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
ছবিঃ সত্য নিউজ

ফ্রান্সের জাতীয় সংসদ সোমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বাইরুর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে, যা দেশটির আধুনিক ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। মাত্র নয় মাস ক্ষমতায় থাকার পরই বাইরু তাঁর মিতব্যয়ী বাজেট নিয়ে জটিল অচলাবস্থা কাটাতে আস্থা ভোট ডাকেন। বাজেটে প্রস্তাব ছিল ৪৪ বিলিয়ন ইউরো (৫২ বিলিয়ন ডলার) সাশ্রয় করে ফ্রান্সের ঋণের বোঝা কমানো। কিন্তু ফল এসেছে উল্টো—৩৬৪ জন সাংসদ সরকারের প্রতি অনাস্থা জানান, আর আস্থা জানান মাত্র ১৯৪ জন।

ফরাসি সংবিধানের ৫০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভোটের ফলাফল ঘোষণার পরপরই প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে বলে জানিয়েছেন সংসদের স্পিকার ইয়েল ব্রন-পিভেট। বাইরু এভাবে আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হওয়া ফ্রান্সের ইতিহাসে প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

রাষ্ট্রপতি এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক বিবৃতিতে জানান, তিনি এই ফলাফল মেনে নিয়েছেন এবং আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেবেন। মঙ্গলবার বাইরুর সঙ্গে বৈঠকে তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে।

ম্যাক্রোঁর সামনে নতুন সংকট

২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর এ পর্যন্ত ছয়জন প্রধানমন্ত্রী দেখলেন ম্যাক্রোঁ। তবে ২০২২ সাল থেকে পাঁচবার নেতৃত্ব বদলের ফলে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদ এখন অস্থিরতায় ভরা। ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে সক্রিয় থাকলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট এখন তাঁর জন্য বড় মাথাব্যথা।

বাইরু আস্থা ভোটের ঝুঁকি নিয়ে বলেন, “সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হতো কোনো ঝুঁকি না নেওয়া—যেন সব আগের মতো চলতে থাকে। অথচ ঋণের পাহাড় ফ্রান্সের জন্য প্রাণঘাতী। কয়েক বছরের মধ্যে দেশকে ঋণের স্রোত থেকে বাঁচাতেই আমরা এই পরিকল্পনা নিয়েছিলাম।”

নতুন নেতৃত্ব কে?

এখন প্রশ্ন, ফ্রান্সের নতুন প্রধানমন্ত্রী হবেন কে? সমাজতান্ত্রিক পার্টির নেতা অলিভিয়ার ফোরে ঘোষণা দিয়েছেন, বামপন্থীরা দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, “আমাদের সময় এসেছে ফ্রান্সকে নতুন পথে নিয়ে যাওয়ার।” তবে এমন সরকার কতটা টিকবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।

অন্যদিকে, ম্যাক্রোঁর আস্থাভাজন হলেও ঝুঁকিপূর্ণ প্রার্থী হতে পারেন বিচারমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানাঁ। তুলনামূলকভাবে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্যাথরিন ভত্রাঁ কিংবা অর্থমন্ত্রী এরিক লম্বার।

তবে সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ফরাসিদের ৬৪ শতাংশ চান ম্যাক্রোঁ নিজেই পদত্যাগ করুন, নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ নয়। যদিও সংবিধান অনুযায়ী তিনি ২০২৭ সালের নির্বাচনে তৃতীয়বার প্রার্থী হতে পারবেন না।

লে পেনের ছায়া

রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি সামাজিক অস্থিরতাও বাড়ছে। “ব্লক এভরিথিং” নামের একটি বামপন্থী জোট বুধবার দেশে গণআন্দোলনের ডাক দিয়েছে। বড় শ্রমিক সংগঠনগুলোও আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ধর্মঘটের ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, ২০২৭ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) দলের সবচেয়ে বড় সুযোগ তৈরি হতে পারে। তবে এর নেতা মেরিন লে পেন মার্চ মাসে ভুয়া চাকরির মামলায় চার বছরের কারাদণ্ড (যার মধ্যে দুই বছর স্থগিত) ও পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণে নিষিদ্ধ হন।

লে পেন অবশ্য রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। সোমবার আদালত জানিয়েছে, তাঁর আপিল শুনানি ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। যদি আপিলে জয় পান, তবে আবারও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দৌড়ে ফিরতে পারেন তিনি। ইতোমধ্যেই তিনি ম্যাক্রোঁকে দ্রুত সংসদীয় নির্বাচনের ডাক দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর ভাষায়, “এটি আর কোনো বিকল্প নয়, এটি একটি বাধ্যবাধকতা।”

ফ্রান্সের এই রাজনৈতিক অস্থিরতা কেবল সরকারের স্থায়িত্ব নয়, বরং ইউরোপীয় রাজনীতিতেও নতুন অনিশ্চয়তার জন্ম দিচ্ছে।

-সুত্রঃ এ এফ পি


ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ০৯:৪১:১০
ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে ক্যাম্পাসজুড়ে নির্ধারিত আটটি ভোটকেন্দ্রের ৮১০টি বুথে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এই নির্বাচন শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি করেছে আলাদা উত্তেজনা ও প্রত্যাশার পরিবেশ।

নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক প্রস্তুতি

ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদেরও মোতায়েন করা হয়েছে। টিএসসি এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ, যাতে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়। সকাল থেকেই স্বেচ্ছাসেবকরা বিভিন্ন কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। নিরাপত্তা নিশ্চিতের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন রাখতে কাজ করছে পুলিশ ও প্রশাসন।

ভোটার ও প্রার্থী সংখ্যা

এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এর মধ্যে পাঁচটি ছাত্রী হলে ১৮ হাজার ৯৫৯ এবং ১৩টি ছাত্র হলে ২০ হাজার ৯১৫ জন ভোটার রয়েছেন। কেন্দ্রীয় সংসদের ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী, যার মধ্যে ৬২ জন ছাত্রী। অন্যদিকে ১৮টি হলে ১৩টি করে মোট ২৩৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী। ফলে পুরো নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা ও প্রতিযোগিতা দুই-ই প্রবল।

ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া

ভোটাররা তাদের সুবিধাজনক সময়ে কেন্দ্রে গিয়ে পরিচয় নিশ্চিত করে ভোট দেবেন। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা লাইব্রেরি কার্ড বা পে-ইন স্লিপ এবং অন্যান্য বর্ষের শিক্ষার্থীরা হল আইডি কার্ড, বিশ্ববিদ্যালয় আইডি বা লাইব্রেরি কার্ড দেখিয়ে পরিচয় প্রমাণ করবেন। এরপর আঙুলে অমোচনীয় কালি দেওয়া হবে এবং ভোটার তালিকায় সই করার পর ব্যালট প্রদান করা হবে।ভোটাররা গোপন কক্ষে প্রবেশ করে পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে ‘ক্রস চিহ্ন’ দেবেন। ব্যালট ভাঁজ না করে তা নির্ধারিত বাক্সে ফেলতে হবে। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের জন্য আলাদা ব্যালট বাক্স রাখা হয়েছে। এবারের ব্যালট পেপারের আকারও বড়—ডাকসুর জন্য পাঁচ পৃষ্ঠা এবং হল সংসদের জন্য এক পৃষ্ঠার ব্যালট ব্যবহার করা হচ্ছে।

ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট

প্রথমবারের মতো দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য ব্রেইল পদ্ধতিতে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। যারা ব্রেইল পড়তে সক্ষম নন, তারা অন্যের সহযোগিতা নিয়ে ভোট দিতে পারবেন। এই কার্যক্রম তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক শারমীন কবীর।

ভোটার ও প্রার্থীদের অভিজ্ঞতা

সকালের দিকে টিএসসি, কার্জন হলসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। অনেক শিক্ষার্থী জানান, জীবনে প্রথমবার ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা তাদের মধ্যে ভিন্ন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। কেউ কেউ রাত জেগে প্রার্থী বাছাই করেছেন বলে জানিয়েছেন। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে, যা প্রমাণ করে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি বাছাইয়ে আন্তরিক।

অন্যদিকে ছাত্রদল প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, প্রার্থীদের জন্য আলাদা কোনো কার্ড তৈরি করা হয়নি, ফলে অনেক কেন্দ্রেই তারা প্রবেশে সমস্যায় পড়ছেন। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মোস্তাক গাউসুল হক বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ভোটকক্ষে প্রবেশ করতে পারবেন না।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্যানেল

মোট ১০টির মতো আংশিক ও পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। শীর্ষ তিন পদে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ সমর্থিত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থী সংসদ, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য এবং বামপন্থী সাত সংগঠন সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ প্যানেলের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ভোটকেন্দ্র ও সময়

এবারই প্রথমবারের মতো আবাসিক হলের বাইরে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। কার্জন হল, শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্র, টিএসসি, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব, সিনেট ভবন, উদয়ন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভূতত্ত্ব বিভাগ এবং ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ—এই আটটি কেন্দ্রে শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত, তবে যারা চারটার মধ্যে কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করবেন, তারা সবাই ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন বলে প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন।

সব মিলিয়ে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫ শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার একটি প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও অংশগ্রহণমূলক চেতনার এক গুরুত্বপূর্ণ অনুশীলন।


খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাম ভাঙিয়ে ১৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৬:২০:০২
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার নাম ভাঙিয়ে ১৫ কোটি টাকা চাঁদাবাজি
বেগম খালেদা জিয়া। ছবি: সংগৃহীত

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাম ভাঙিয়ে প্রতারণা ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মোতাল্লেছ হোসেন নামে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলাটি হয়েছে।

প্রতারণার ধরন ও মামলার বিবরণ

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “অনুসন্ধানে জানা যায়, মোতাল্লেছ হোসেন নিজেকে খালেদা জিয়ার ‘লিয়াজোঁ অফিসার’ পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তার নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে প্রায় ২০ কোটি টাকার লেনদেনের প্রমাণও মিলেছে।”

সিআইডি জানায়, মোতাল্লেছ হোসেনের ‘এম এল ট্রেডিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান থাকলেও বাস্তবে এর কোনো অস্তিত্ব নেই। প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইসেন্স থাকলেও কোনো ব্যবসায়িক কার্যক্রম পাওয়া যায়নি। তিনি কখনো পোশাক কারখানার মালিক, কখনো চা-বাগান উদ্যোক্তা কিংবা ঠিকাদার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতেন। পরে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বলে তিনি বিএনপি-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেন।

মোতাল্লেছ হোসেনের বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে থাকা ৫ কোটি টাকার বেশি অর্থ আদালতের আদেশে জব্দ করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ধারায় রাজধানীর পল্লবী থানায় মামলা (নম্বর-১৯) করা হয়েছে, যেখানে মোতাল্লেছ হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা আরও দু-তিনজনকে আসামি করা হয়েছে।


আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা’ মডেল? পুত্র জয় ও কন্যা পুতুলের দিকেই ইঙ্গিত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৬:১০:২৮
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা’ মডেল? পুত্র জয় ও কন্যা পুতুলের দিকেই ইঙ্গিত
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নিয়ে নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে। টানা ৪৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে দলের সভাপতির পদে থাকা শেখ হাসিনা তার অনুপস্থিতিতে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য একটি 'সাকসেসন প্ল্যান' বা উত্তরাধিকার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন। বিবিসি বাংলা জানতে পেরেছে, এই পরিকল্পনার আওতায় তার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে শীর্ষ নেতৃত্বে আনা হচ্ছে।

সায়মা ওয়াজেদের রাজনৈতিক সক্রিয়তা

গত বছরের ৫ই আগস্ট ক্ষমতা হারানোর পর থেকে শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। এই পরিস্থিতিতে এবং বয়সের কারণে তাকে এখন দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের বিষয়ে মনোযোগ দিতে হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে অনির্দিষ্টকালের ছুটিতে যাওয়ার পর সায়মা ওয়াজেদ এখন পুরোপুরি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। তিনি মায়ের সঙ্গে একই শহরে থাকায় সরাসরি তাকে সাহায্য করছেন। মায়ের ভাষণের খসড়া তৈরি, কর্মসূচির ক্যালেন্ডার স্থির করা এবং বাইরের দর্শনার্থীদের সঙ্গে দেখা করার কাজও তিনি করছেন।

‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা’ মডেল অনুসরণ

আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, শেখ হাসিনা ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের 'রাহুল-প্রিয়াঙ্কা' মডেল অনুসরণ করতে চাইছেন। এই মডেল অনুযায়ী, রাহুল গান্ধী ও প্রিয়াঙ্কা গান্ধী যেমন তাদের মায়ের রাজনৈতিক শূন্যতা পূরণ করছেন, তেমনি শেখ হাসিনার ছেলে-মেয়েও আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন। সজীব ওয়াজেদ দলের প্রধান মুখ ও মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন, আর সায়মা ওয়াজেদ সরাসরি মাঠ পর্যায়ের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব কাঠামোতে পরিবর্তন

শেখ হাসিনা তার ছেলে-মেয়ের ওপর অনেক দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। দলের ভেতরেও ক্ষমতার কাঠামোতে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই নতুন কাঠামোতে উপেক্ষিত, যিনি প্রায় দশ মাস ধরে ভারতে থাকলেও দলীয় সভাপতির দেখা পাননি। বরং শেখ হাসিনা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ সদস্য আ.ফ.ম. বাহাউদ্দিন নাসিম এবং জাহাঙ্গীর কবির নানকের ওপর বেশি ভরসা রাখছেন। এই তিন নেতা আপাতত কলকাতা থেকে দলের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। অন্যদিকে, সজীব ওয়াজেদ আমেরিকায় বসে দলের অনুকূলে 'ন্যারেটিভ নির্মাণ' ও বিদেশের সংবাদমাধ্যমে দলের বক্তব্য তুলে ধরার কাজটি করছেন।

আওয়ামী লীগ কী বলছে?

আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা বিবিসিকে এই 'রাহুল-প্রিয়াঙ্কা' মডেল অনুসরণের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, তারা কেউই এ বিষয়ে 'অন রেকর্ড' মুখ খুলতে রাজি হননি। তবে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ আরাফাত দাবি করেছেন, এই বিষয়টি নিয়ে দলের ভেতরে এখনও কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, “এখন আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা, সেই লক্ষ্যেই সব চেষ্টা নিয়োজিত করা হচ্ছে।


সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির বিজয় ঠেকানো যাবে না: রুমিন ফারহানা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৪:৪৯:০৫
সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির বিজয় ঠেকানো যাবে না: রুমিন ফারহানা
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, কিছু দল বলছে যে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা ‘পিআর’ পদ্ধতি ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। এর কারণ, তারা জানে যে ভোটে অংশ নিলে ১০টি আসনও পাবে না। এ কারণেই তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের শরীফপুর খোলাপাড়া বালুর মাঠে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বিএনপির বিজয় ঠেকানো যাবে না। আওয়ামী লীগের অত্যাচারীদের বিচার বিএনপিই প্রথম দাবি করেছে, কারণ সবচেয়ে বেশি নির্যাতন সহ্য করেছে এই দলের নেতাকর্মীরাই।”

তিনি আরও জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলের নেতাকর্মীরা সবসময় জনগণের সমর্থন পেয়ে এসেছেন। অতীতের সরকারের আমলে বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়েছিল। তার নিজের বিরুদ্ধেও ১০টি মামলা আছে, যার মধ্যে তিনটি খুনের মামলা। তবুও তারা দল ও আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি।


“একদিনও মাথা নত করেননি”-খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ১৪:২১:২৪
“একদিনও মাথা নত করেননি”-খালেদা জিয়াকে নিয়ে ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দেশের জন্য অবদান তুলে ধরে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া দীর্ঘ নয় বছর স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এবং গত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি একদিনের জন্যও মাথা নত করেননি। সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বড় মাঠে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদাতা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, দেশের মানুষ এখন তারেক রহমানের দিকেই তাকিয়ে আছে। তার নেতৃত্বেই আগামী দিনে গণতন্ত্র শক্তিশালী হবে। মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি এই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে এবং ভিশন ২০৩০–এর মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা দিয়েছে। বর্তমানে ৩১ দফা কর্মসূচি নিয়ে দলটি এগোচ্ছে, যার লক্ষ্য হলো ভেঙে পড়া অর্থনীতি, দুর্বল রাজনৈতিক কাঠামো এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠন।

বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসনে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়েছে, অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং মানুষের মৌলিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এ সময়ে বিএনপিসহ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর হাজারো নেতাকর্মী মিথ্যা মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, গত ২৪ জুলাই ঢাকার রাজপথে হাজারো তরুণ, যুবক, নারী ও শিশু তাদের অধিকার আদায়ে আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন। শুধু ঠাকুরগাঁও জেলায়ই গত ১৫ বছরে বিএনপির ১২ জন সহকর্মী শহীদ হয়েছেন এবং জুলাই মাসেই প্রাণ দিয়েছেন চারজন। তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ ৭৫টি মামলা দিয়ে প্রায় সাড়ে সাত হাজার নেতাকর্মীকে হয়রানি করেছে। অনেকে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হয়েছেন, ধানক্ষেতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং বহুজনকে কারাভোগ করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, আজকের এই সম্মেলন যেমন আনন্দের, তেমনি দুঃখেরও। আনন্দের কারণ হলো মুক্ত পরিবেশে গণতান্ত্রিক দলীয় কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পাওয়া; আর দুঃখের কারণ হলো প্রিয় সহযোদ্ধাদের হারিয়ে ফেলা। এ সময় তিনি স্বাধীনতার ঘোষক এবং বহুদলীয় গণতন্ত্রের রূপকার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, জিয়াউর রহমান এমন একটি দল গড়ে দিয়েছিলেন, যে দল সব সময় গণতন্ত্র রক্ষার জন্য লড়াই করেছে, সংগ্রাম করেছে এবং প্রাণ দিয়েছে।

সম্মেলনের মূল পর্বে বিকাল সাড়ে তিনটায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্তরাজ্য থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

-শরিফুল

পাঠকের মতামত: