জানুন নিয়মিত বেদানা খাওয়ার যত উপকারীতা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ৩১ ১৫:০৬:২৮
জানুন নিয়মিত বেদানা খাওয়ার যত উপকারীতা
ছবি: সংগৃহীত

তাজা ফলের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ পুষ্টিগুণ, আর এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো লাল বেদানা। ঋতু অনুযায়ী বাজারে নানা ধরনের ফল পাওয়া যায়, তবে বেদানা তার টকটকে স্বাদ ও পুষ্টিতে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেছে। পুষ্টিবিদ এবং স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই ফলকে নিয়মিত খাদ্যাভাসে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।

বেদানায় রয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন ও মিনারেল, যেমন ফাইবার, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, পটাশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়াম। এসব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং সার্বিক সুস্থতা নিশ্চিত করে। পুষ্টিবিদ অনুশ্রী জানান, বেদানায় থাকা অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায় এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি অসুখের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতেও সহায়ক।

হার্টের জন্য বেদানার উপকারিতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। বেদানার রস উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। পুষ্টিবিদ অনুশ্রী বলেন, হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য বেদানা একটি গুরুত্বপূর্ণ ফল।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও বেদানা উপকারী। বেদানার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। নিয়মিত বেদানা খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করার উচ্চতা বাড়ার আশঙ্কা কমায়।

হজম প্রক্রিয়ায় বেদানার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এতে থাকা ডায়েটারি ফাইবার অন্ত্রের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। তবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেদানা খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় না, কারণ কিছু ক্ষেত্রে এটি সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

ত্বকের যত্নেও বেদানা খুবই কার্যকর। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বককে ফ্রি র‌্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে এবং বলিরেখা প্রতিরোধে সহায়ক। বেদানায় বিদ্যমান ভিটামিন সি ও ফলিক অ্যাসিড ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বককে প্রাণবন্ত রাখে।

রক্তশূন্যতা মোকাবিলায় বেদানার ভূমিকা রয়েছে। যদিও বেদানায় আয়রনের পরিমাণ বেশি নয়, তবুও এতে থাকা ভিটামিন সি শরীরে আয়রনের শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়। তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে বেদানা খেলে শরীরে আয়রনের শোষণ বৃদ্ধি পেয়ে রক্তশূন্যতার ঝুঁকি কমে।

পুষ্টিবিদ অনুশ্রী বেদানা খাওয়ার সময় নির্দিষ্ট করেছেন। তিনি জানান, সকালের নাশতার পর এবং দুপুরের খাবারের আগে বেদানা খাওয়া যেতে পারে। বিকেলে দুপুরের খাবারের পরেও বেদানা গ্রহণ উপকারী। বেদানার সর্বোচ্চ পুষ্টি পাওয়ার জন্য খোসা ছাড়িয়ে গোটা দানা চিবিয়ে খাওয়া উচিত। এর রসও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং শরীরে দ্রুত শোষিত হয়।

বেদানাকে স্ন্যাকস বা ডেজার্ট হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। টক দই, ওটস, স্মুদি কিংবা ফ্রুট সালাদের সঙ্গে মিশিয়ে বেদানা খাওয়া যেতে পারে, যা স্বাদ ও পুষ্টি দুটোই বৃদ্ধি করে।

সার্বিকভাবে, বেদানা একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর ফল, যা নিয়মিত খাদ্যাভাসে অন্তর্ভুক্ত করলে শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই ঋতু বিশেষে বাজারে পাওয়া গেলে বেদানা গ্রহণ করা উচিত।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ