অবশেষে দশম গ্রেড পাচ্ছেন প্রাথমিক প্রধান শিক্ষকরা, কিন্তু আছে কিছু শর্ত!

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা পাচ্ছেন দশম গ্রেড, শর্ত পূরণে মিলবে সুবিধাদেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডের বেতন-ভাতার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। ফলে এখন থেকে তারা দশম গ্রেড অনুযায়ী বেতন ও অন্যান্য সুবিধা পাবেন।
সোমবার (২৮ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। উপসচিব খালেদা নাছরিনের সই করা আদেশটি প্রকাশের পর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ শিবলী সাদিক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তবে এই সুবিধা পেতে প্রধান শিক্ষকদের কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে—
প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা উপদেষ্টার সম্মতি নেওয়া
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণ
প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ গ্রহণ
অর্থ বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখা কর্তৃক বেতন স্কেল যাচাই ও নির্ধারণ
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে চার কপি সরকারি আদেশ (জিও) জারি করে অর্থ বিভাগের পৃষ্ঠাঙ্কন গ্রহণ
সংশ্লিষ্ট দপ্তরের টিওঅ্যান্ডই হালনাগাদ করে উন্নীত পদ অন্তর্ভুক্ত করা
বিদ্যমান নিয়োগবিধি সংশোধন করে নতুন গ্রেড অন্তর্ভুক্ত করা
যারা এখনো প্রশিক্ষণ নেননি, তাদের ১৮ মাসের মধ্যে বিটিপিটি প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সব শর্ত মেনে চলা
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব শর্ত পূরণ সাপেক্ষেই প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেডে উন্নীত হবেন এবং তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেতন ও সুবিধা পাবেন। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হবে।
/আশিক
জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোট গণনার সময় এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। শুক্রবার সকালে সিনেট ভবনের তৃতীয় তলায় গণনার কক্ষের সামনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল ফেরদৌস (৩১)। দ্রুত তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকরা মৃত্যুর ঘোষণা দেন।
দায়িত্ব পালনকালে দুর্ঘটনা
জান্নাতুল ফেরদৌস জাকসু নির্বাচনে প্রীতিলতা হলের পোলিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। বৃহস্পতিবার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে রাতে বাসায় ফেরার পর শুক্রবার সকালে তিনি আবারও ভোট গণনার কাজে যোগ দিতে আসেন। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আটটার মধ্যে সিনেট ভবনে পৌঁছে ভোট গণনার কক্ষের দরজার সামনেই হঠাৎ পড়ে যান তিনি।
চারুকলা বিভাগের সভাপতি শামীম রেজা জানান, তিনি নিজে প্রীতিলতা হলে রিটার্নিং অফিসার ছিলেন। জান্নাতুল গণনার কাজের জন্য এসেছিলেন তাঁর আহ্বানে। তবে অপ্রত্যাশিতভাবে সহকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় সবাই হতবাক হয়ে পড়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও নির্বাচন কমিশনের সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ভোটগ্রহণের দিন রাতভর কর্মব্যস্ততার কারণে সব হলে একসঙ্গে গণনা করা সম্ভব হয়নি। শুক্রবার সকালে প্রীতিলতা হলের গণনা চলছিল। সে সময়েই এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, “আমাদের সবাই শোকে আচ্ছন্ন। তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।”
পরিবেশে শোকের ছায়া
জান্নাতুল ফেরদৌসের আকস্মিক মৃত্যুর খবরে সিনেট ভবনের গণনাকক্ষে শোকের আবহ ছড়িয়ে পড়ে। দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। কমিশনার রেজোয়ানা করিম স্নিগ্ধা মাইকে উপস্থিত সবার কাছে মরহুম শিক্ষকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করার আহ্বান জানান এবং জানান, প্রীতিলতা হলের ভোট গণনা দ্রুত সম্পন্ন করা হবে।
নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় এক তরুণ শিক্ষকের মৃত্যু পুরো বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রদায়কে গভীর শোকে নিমজ্জিত করেছে। সহকর্মী, শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জান্নাতুল ফেরদৌসের পরিবারকে সমবেদনা জানানো হয়েছে।
শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১টি আবাসিক হলে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে ভোট চলাকালীন সময়ে অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া দুটি বড় ছাত্রসংগঠন—ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল এবং ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেল।
ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের বর্জন ঘোষণা
বিকেল পৌনে ৩টার দিকে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেয়। প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী তানজিলা হোসেন বৈশাখী মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন। এ সময় প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তাঁরা অভিযোগ করেন, ভোটগ্রহণে নানা অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে তারা এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।
ছাত্রশিবির সমর্থিত জোটের অভিযোগ
এদিকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সমন্বিত শিক্ষার্থী জোটও একইভাবে অনিয়মের অভিযোগ তোলে। বেলা ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁদের ভিপি প্রার্থী আরিফ উল্লাহ বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের যথাযথ প্রস্তুতি ছিল না। ক্যাম্পাসে ভীতি ও অনিয়মের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।”
তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন হলে বহিরাগতদের আনাগোনা দেখা গেছে এবং ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ভোটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কিছু সিদ্ধান্ত নির্বাচনী পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য
অন্যদিকে, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৫০ শতাংশেরও বেশি ভোট পড়েছে। কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, “কিছু কেন্দ্রে বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও ভোটগ্রহণ সামগ্রিকভাবে চলমান রয়েছে। যেসব কেন্দ্রে সাময়িক বিরতি ছিল, সেগুলোতে ভোটারদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে।”
নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটার সংখ্যা
এই নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৭৪৩ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ৫ হাজার ৭২৮ জন এবং পুরুষ ভোটার ৬ হাজার ১৫ জন। মোট ২৫টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৭৭ জন প্রার্থী। সকাল থেকে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম থাকলেও দুপুরের পর তা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায়।
ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর আয়োজিত এ নির্বাচনে প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষার্থী আটটি কেন্দ্রে ৮১০টি বুথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। শিক্ষার্থীরা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করলেও সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসজুড়ে দেখা দিয়েছে থমথমে পরিস্থিতি।
প্রায় তিন দশকের বেশি সময় পর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আয়োজিত এ নির্বাচনকে ঘিরে দেশজুড়ে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোরও নানা হিসাব-নিকাশ চলছিল। নানা আশঙ্কা ও আলোচনা-সমালোচনা সত্ত্বেও গত ১৫ দিনে প্রশাসনের উদ্যোগে সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এটি মাত্র অষ্টম ডাকসু নির্বাচন। সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০১৯ সালে, যা ছিল বিতর্কিত।
এবার ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। অন্যদিকে ১৮টি হল সংসদে ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন এক হাজার ৩৫ জন। সব মিলিয়ে একজন ভোটারকে মোট ৪১টি ভোট দিতে হয়েছে।
ভোটগ্রহণ শেষে শিক্ষার্থীরা ফলাফলের অপেক্ষায় থাকলেও বিকেল থেকে একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলতে শুরু করেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পাসজুড়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের সামনেই শিক্ষার্থীদের ভিড় জমেছে ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষায়।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শাহবাগ ও নীলক্ষেত এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মাসুদ আলম জানান, যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে এবং সন্দেহভাজন যানবাহনে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
তবে নির্বাচন নিয়ে অভিযোগও তুলেছেন বিভিন্ন প্রার্থীরা। ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, সকাল থেকে ভোটকেন্দ্রে যেতে গিয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হয়েছেন তাঁরা। আচরণবিধিতে অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও তাঁকে কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। অনেক জায়গায় প্রার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে।
অন্যদিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী সাদেক কায়েম শিক্ষার্থীদের ম্যান্ডেট মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডাকসু নির্বাচনে হার-জিতের কিছু নেই। জুলাই বিপ্লবের সহযোদ্ধা হিসেবে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করেছি। তাই শিক্ষার্থীরা যাকে বেছে নেবে, তাকেই মেনে নিতে হবে।” তিনিসতর্ককরেদেন, শিক্ষার্থীদেরওপরকিছুচাপিয়েদেওয়ারচেষ্টাকরলেতাউল্টোফলবয়েআনবে।
সব মিলিয়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ শেষে এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে মূলত ফলাফল ঘোষণার অপেক্ষা। তবে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ আর রাজনৈতিক পক্ষগুলোর সক্রিয় অবস্থানের কারণে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উত্তেজনা, আর সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আজ মঙ্গলবার। ভোটের আগের দিন নিজের কার্যালয়ে নির্বাচন আয়োজন ও প্রক্রিয়া নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, এবারের নির্বাচন প্রকৃত অর্থেই ঐতিহাসিক, কারণ স্বাধীনতার পর মাত্র আটবার এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের গণতান্ত্রিক চেতনা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ইতিবাচক ঐতিহ্য রেখে যাওয়ার লক্ষ্য—এই তিন কারণে নির্বাচন আয়োজন করা হয়েছে।
অধ্যাপক নিয়াজ জানান, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ১১ মাস ধরে প্রশাসন ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবারে ৮১০টি বুথ রাখা হয়েছে, যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। ভোটকেন্দ্রগুলো প্রথমবারের মতো আবাসিক হলের বাইরে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে কোনো বিতর্ক না থাকে। সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে, ভোট গণনার সময় প্রার্থীদের প্রতিনিধি, শিক্ষক, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাসহ সাংবাদিকরাও উপস্থিত থাকবেন। বাইরে বড় পর্দায় গণনার দৃশ্য দেখানো হবে।
তবে সবকিছু সত্ত্বেও উপাচার্য মনে করেন, কোনো আয়োজনেই শতভাগ ‘ফুলপ্রুফ’ ব্যবস্থা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অপ্রত্যাশিত কিছু ঝুঁকি থাকতেই পারে, তবে নির্বাচনের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও আনন্দঘন পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে। তাঁর ভাষায়, “আমাদের লুকানোর কিছু নেই। সবাই ক্যামেরার অধীনে থাকবে। এ অবস্থায় কেউ রিগিং করার সাহস করবে না।”
সেনা মোতায়েনের প্রসঙ্গে তিনি জানান, এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো অনুরোধ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আসেনি। ক্যাম্পাসে নিয়মিত সেনা উপস্থিতি রয়েছে, তবে ডাকসু নির্বাচনের জন্য তাদের প্রয়োজন হবে বলে তিনি মনে করেন না। নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছে।
উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ডাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদেরই অনুষ্ঠান, তাই সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিতে হবে। তিনি চান, এ নির্বাচন নিয়মিত ক্যালেন্ডারের অংশ হয়ে উঠুক এবং বছরে একবার অনুষ্ঠিত হোক। তিনি আরও জানান, প্রশাসন ইতিমধ্যে উপাচার্যের একক ক্ষমতা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে—সিনিয়র ম্যানেজমেন্ট টিম গঠন ও আর্থিক ক্ষমতা সীমিত করার প্রস্তাব সিন্ডিকেটে উপস্থাপন করা হয়েছে। ডাকসু সংক্রান্ত সিদ্ধান্তও উপাচার্য একা নিতে পারবেন না, সিন্ডিকেটের পরামর্শ লাগবে।
প্রার্থীদের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতির প্রসঙ্গে অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজনের কারণে আবেগ বেশি থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তবে প্রশাসন ও ছাত্র প্রতিনিধি একসঙ্গে বাস্তবায়নযোগ্য কাজগুলো করতে পারবে। তিনি বলেন, “আমরা আল্লাহর নামে এগোচ্ছি। শিক্ষার্থীদের সমর্থন, সারা দেশের মানুষের শুভকামনা এবং আমাদের সীমিত সামর্থ্যের প্রতিটি পদক্ষেপ মিলেই এই নির্বাচনকে সফল করবে।”
জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট আজ মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে জাকসু নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ প্রকাশ করা হয়। নোটিশে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান ও সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. এ কে এম রাশিদুল আলম স্বাক্ষর করেন।
নোটিশ অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করা হবে। তবে আলাদা সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের জন্য।
জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীরা সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার মধ্যে ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করবেন। ২১টি আবাসিক হল সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীরা দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ডোপ টেস্ট করবেন।
বাধ্যতামূলক শর্ত হিসেবে ডোপ টেস্ট
নোটিশে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাইলে সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। এর বাইরে কোনো প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী এ প্রসঙ্গে বলেন, “আমাদের জাকসুর গঠনতন্ত্রে বলা আছে যে মাদকাসক্ত কেউ জাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এর পাশাপাশি একজন শিক্ষার্থী ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার দাবিতে অনশনে বসেছিলেন। এরপর আমরা প্রার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করি এবং কেউই এর বিরোধিতা করেনি। তাই কমিশন সব প্রস্তুতি শেষ করে আজকের মধ্যে ডোপ টেস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করছে, প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট প্রক্রিয়া নির্বাচনী প্রার্থীদের স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কাছে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে।
যুক্তরাজ্যে উচ্চশিক্ষায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের আস্থার শীর্ষে এএইচজেড
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিত্বকারী এএইচজেড এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার নির্ভরযোগ্য সহযোগী হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি বছর হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছে এবং এখন পর্যন্ত ২৫,০০০-এরও বেশি শিক্ষার্থীকে তাদের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন পূরণে সহায়তা করেছে।
এমএইচ গ্লোবাল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এএইচজেড আজ একটি বৈশ্বিক নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। ১৫টি দেশে তাদের ৬৫টিরও বেশি শাখা রয়েছে। বাংলাদেশেও ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও খুলনায় ১০টিরও বেশি স্থানীয় শাখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। এভাবে শিক্ষার্থীরা মাতৃভাষায় ও পরিচিত পরিবেশে সহজে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারছে।
বাংলাদেশে এএইচজেড-এর কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়াহিদ জামান বলেন, “প্রতিটি শিক্ষার্থীর স্বপ্নই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ভর্তি নিশ্চিত করা পর্যন্ত আমরা তাদের প্রতিটি ধাপে পাশে থাকি। আমাদের লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের জন্য এই যাত্রাকে যতটা সম্ভব সহজ, মসৃণ ও চাপমুক্ত করে তোলা।”
বর্তমানে এএইচজেড-এর বৈশ্বিক টিমে রয়েছে ৭৫০ জনেরও বেশি ব্রিটিশ কাউন্সিল-সার্টিফায়েড কাউন্সিলর, যারা সম্মিলিতভাবে ৬ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে সেবা প্রদান করেছেন। শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত কোর্স নির্বাচন, আবেদনপত্র তৈরি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ এবং স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP) প্রস্তুতকরণে তারা নির্ভুল দিকনির্দেশনা দেন। তাদের এই অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ, এএইচজেড ৫০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছে।
এএইচজেড শুধু ভর্তি প্রক্রিয়া নয়, বরং শিক্ষার্থীদের নতুন জীবনের প্রস্তুতিতেও সহায়তা করে। তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আইইএলটিএস সহায়তা, প্রি-ডিপার্চার ব্রিফিং, ব্রিটিশ সংস্কৃতি ও জীবনযাপন বিষয়ে ধারণা, আবাসন খোঁজার পরামর্শ, পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ এবং সাংস্কৃতিক মানিয়ে নেওয়ার দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়।
২০১২ সালে লন্ডনে প্রতিষ্ঠিত এএইচজেড আজ নৈতিকতা ও বিনামূল্যে পূর্ণাঙ্গ সেবা প্রদানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য এক বিশ্বস্ত শিক্ষা পরামর্শদাতা সংস্থায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন থেকে শুরু করে ভর্তি নিশ্চিতকরণ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণই তাদের প্রধান অঙ্গীকার।
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি: মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নাতি-নাতনিদের আবেদন বাতিল
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদন নিয়ে শিক্ষার্থীদের সতর্ক করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি। বোর্ড জানিয়েছে, এই কোটায় শুধুমাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরাই আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থী নাতি-নাতনি পরিচয়ে এই কোটায় আবেদন বা নিশ্চায়ন করেছেন।
এ কারণে তাদের আবেদন বাতিল করে নতুন করে আবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যথায় ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোনো জটিলতা তৈরি হলে বোর্ড তার কোনো দায় নেবে না বলেও সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা-২০২৫’ এর ৩.২ উপধারা অনুযায়ী, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় কেবল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরাই আবেদন করতে পারবেন। এই কোটায় নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির সময় সংশ্লিষ্ট প্রমাণপত্র বা সরকারি গেজেটের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে, পাশাপাশি মূল কপিও দেখাতে হবে। সঠিক প্রমাণপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হলে ওই শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হবে।
বোর্ড জানিয়েছে, যেসব শিক্ষার্থী ভুলক্রমে নাতি-নাতনি পরিচয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটায় আবেদন বা নিশ্চায়ন করেছেন, তাদের সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে আবেদন বা নিশ্চায়ন বাতিল করে পুনরায় আবেদন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবেদন সংশোধন না করলে পরবর্তীতে ভর্তি প্রক্রিয়ায় জটিলতা তৈরি হতে পারে, যার জন্য বোর্ড দায়ী থাকবে না।
গত ২৪ জুলাই একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। নীতিমালায় বলা হয়, মোট আসনের ৯৩ শতাংশ সকল শিক্ষার্থীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে। বাকি ৭ শতাংশের মধ্যে ৫ শতাংশ বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য, ১ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এবং ১ শতাংশ তাদের অধীন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তাদের সন্তানদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে।
/আশিক
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর নতুন ৫ দফা দাবি প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের
ইঞ্জিনিয়ার স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনরত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সহ অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বের তিন দফা দাবির সঙ্গে আরও নতুন দুই দফা যোগ করে মোট পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, সরকারের স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টা সরাসরি শাহবাগে এসে তাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৫টার দিকে শাহবাগের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের এক্সিট গেটের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ এই দাবিগুলো তুলে ধরেন।
শিক্ষার্থীদের নতুন ৫ দফা দাবি
দাবি ১ ও ২ (স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা): আজকের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলমকে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে এবং একইসঙ্গে জবাবদিহি করতে হবে। এছাড়াও, আন্দোলনে অংশ নেওয়া রোকনের ওপর হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আজকের এই হামলায় জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
দাবি ৩ (নতুন কমিটি): প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গঠিত কমিটিকে শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর পরিবর্তে দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে।
দাবি ৪ (পূর্বের ৩ দফা): পূর্বে ঘোষিত ৩ দফা দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাহী আদেশে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
দাবি ৫ (শিক্ষামন্ত্রীর নিশ্চয়তা): তিন উপদেষ্টা— ফওজুল করিম, আদিলুর রহমান ও সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে এখানে এসে নিশ্চয়তা দিতে হবে।
এছাড়াও, হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বহন এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, তাদের যৌক্তিক আন্দোলনে আর কোনো হামলা করা যাবে না। সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, পুলিশের হামলায় শিক্ষার্থীদের অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন।
এর আগে বুধবার সকাল ১১টার দিকে প্রকৌশল শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্বঘোষিত ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দফা দাবি আদায়ে শাহবাগে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে তাদের দাবি আদায়ে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রায় পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, ইট নিক্ষেপ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ও শিক্ষার্থী আহত হন।
এরপর থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনের সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বলেন, ‘পুলিশ দিয়ে আন্দোলন দমানো যাবে না’, ‘ব্লকেড ব্লকেড, শাহবাগ ব্লকেড’সহ বিভিন্ন স্লোগানে তারা শাহবাগ এলাকা উত্তাল করে তোলেন।
/আশিক
বুয়েট শিক্ষার্থীদের ঘোষণা: ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ আজ
সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর আশ্বাস না পাওয়ায় সারাদেশের প্রকৌশলীদের নিয়ে রাজধানী অভিমুখে ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের প্রকৌশল অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাত ৮টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন প্রকৌশলী অধিকার আন্দোলনের সভাপতি এম ওয়ালীউল্লাহ। তিনি জানান, সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বারবার দাবি জানানো হলেও কার্যকর পদক্ষেপ না আসায় এই কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সাকিবুল হক লিপু বলেন, বুধবার (২৭ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের গণজমায়েত শুরু হবে। ইতোমধ্যে দেশের সব প্রকৌশল ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা তিন দফা সুনির্দিষ্ট দাবি উত্থাপন করেছেন—
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ৯ম গ্রেড বা সহকারী প্রকৌশলী (বা সমমান পদ)-এ প্রবেশের জন্য সকল প্রার্থীকে নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে এবং ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি থাকতে হবে। একইসঙ্গে কোটা বা অন্য নামে সমমানের নতুন পদ সৃষ্টির মাধ্যমে পদোন্নতির সুযোগ বাতিল করতে হবে।
টেকনিক্যাল ১০ম গ্রেড বা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (বা সমমান পদ)-এর জন্য নিয়োগ পরীক্ষা উন্মুক্ত রাখতে হবে, যাতে ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী ও বিএসসি ডিগ্রিধারী উভয়েই সমানভাবে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে বিএসসি ডিগ্রি ছাড়া কেউ ‘প্রকৌশলী’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। এ সংক্রান্ত আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। একই সঙ্গে যেসব নন-অ্যাক্রিডেটেড বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্স চলছে, সেগুলোকে আইইবি-বিএইটিই অ্যাক্রিডেশনের আওতায় আনতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার স্বচ্ছতা ও মান নিশ্চিত হয়।
-রাফসান
পাঠকের মতামত:
- হাসিনা, রাজাপাকসে, শর্মা–এর পর কি এবার মোদি? মণিপুরের অস্থিরতায় দিল্লিতে কাঁপন
- ডাকসু নির্বাচন কি জাতীয় রাজনীতির পূর্বাভাস? জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য
- ঢাকার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম: কোন পণ্য বেড়েছে, কোথায় মিলছে স্বস্তি
- জাহাঙ্গীরনগরে রাতভর ভোট গণনা, বিক্ষোভ ও বর্জনে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস
- নেপালে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ: নিহত ৩৪, আহত দেড় হাজারের বেশি
- জাকসু ভোট গণনায় ট্র্যাজেডি: দায়িত্ব পালনে এসে সহকারী অধ্যাপকের মৃত্যু
- UNHRC-তে মুখোমুখি ভারত–সুইজারল্যান্ড, পাকিস্তানকে আক্রমণ দিল্লির
- দুর্বল পাঁচ ব্যাংক একীভূতকরণ, উদ্যোক্তাদের সব শেয়ার বাজেয়াপ্ত
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ঝড়ের উত্থান: ২৮২ শেয়ার দাম বাড়ল, লেনদেনে রেকর্ড ৭৭৮ কোটি টাকা!
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- শিবিরের অভিযোগ, ছাত্রদলের বর্জন—প্রশ্নের মুখে ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন
- শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
- দিনের বেলা ভাতঘুম: উপকারী নাকি ক্ষতিকর?
- সপ্তাহের শেষ দিনে ডিএসইতে সূচকের মিশ্র প্রতিক্রিয়া
- জাকসুতে নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সাদীর
- গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী চার্লি কার্ক
- ডাকসুতে শিবিরের নিরঙ্কুশ জয়ের পেছনে যত কৌশল
- অস্থির নেপাল থেকে দেশে ফিরছে বাংলাদেশ ফুটবল দল
- নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য প্রধান পছন্দ সুশিলা কার্কি, বলছে ‘জেন জেড’ আন্দোলন
- মার্কিন রাজনীতিতে নতুন বিভাজনের আশঙ্কা
- নেপালে রাজনৈতিক শূন্যতা: সেনা তত্ত্বাবধানে উত্তাল দেশ, নতুন নেতৃত্ব কে?
- ৩৩ বছর পর জাকসু নির্বাচন: নিরাপত্তা, অনিয়ম ও বিতর্কে সরগরম ক্যাম্পাস
- ১০ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারের সার্বিক চিত্র ও বিশ্লেষণ
- ডিএসই ব্লক মার্কেট: বড় লেনদেনে যেসব কোম্পানি
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- জলবায়ু ইস্যুতে গণমাধ্যমের দায়িত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর পতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা: নিরাপত্তায় ১২০ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ
- ১০ সেপ্টেম্বর ডিএসইতে দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, একদিনে আক্রান্ত ৬২৫
- ভাঙ্গায় ১১ ঘণ্টা অবরোধ শেষে ফের নতুন ঘোষণা
- জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে আর জিডি করতে হবে না: ইসি
- ডাকসুতে জয়ীদের উদ্দেশ্যে জামায়াত আমিরের বার্তা
- কর ফাঁকি তদন্তে শেখ হাসিনার ব্যাংক লকার সিলগালা
- "ষড়যন্ত্র ভেদ করে ধানের শীষের জয় নিশ্চিত করতে হবে"
- ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৫: কারা পেলেন সেরা সম্মাননা
- যুক্তরাষ্ট্রে আটক কোরীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরাতে চার্টার্ড ফ্লাইট
- কাপ্তাই বাঁধে ১৬ গেট খোলা: কর্ণফুলীতে তীব্র পানি প্রবাহ
- জরায়ুর যত্নে সচেতনতা: নারীর সুস্থ জীবনের অপরিহার্য শর্ত
- মহেশখালী-মাতারবাড়ি: পর্যটন ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত
- ডোপ টেস্ট কী, কেন করা হয়, কেন এত এখন জরুরি
- একীভূতকরণ প্রসঙ্গে এক্সিম ব্যাংকের ব্যাখ্যা
- বিজয়ের পর শিবিরের তিনটি কাজের নির্দেশ
- ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমকে নিয়ে জুলকারনাইন সায়েরের বার্তা
- স্বাস্থ্য জটিলতায় স্ত্রীকে নিয়ে বিদেশে বিএনপি মহাসচিব
- মাত্র ২৪ ঘণ্টায় নতুন প্রধানমন্ত্রী
- ডাকসু নির্বাচনের ভোট শেষ, ফলাফলের আগে অস্থির ঢাবি—পাল্টাপাল্টি অভিযোগে উত্তপ্ত পরিবেশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- গোয়ালন্দে কবর অবমাননার ঘটনায় অন্তর্বর্তী সরকারের তীব্র নিন্দা
- “তারেক রহমানের নেতৃত্বেই ঐক্য সম্ভব”
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ডাকসু নির্বাচন: ৪৭১ প্রার্থী, ৩৯ হাজার ভোটার, টানটান নিরাপত্তায় উৎসবমুখর ভোটযুদ্ধ
- প্রথমবার আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বিদায়, ইতিহাস গড়ল ফ্রান্স
- নেপালে অস্থিরতা: বাংলাদেশি নাগরিকদের ঘরে থাকার নির্দেশ দূতাবাসের
- শেখ হাসিনার উত্তরাধিকার প্রশ্ন: আওয়ামী লীগের সামনে এক অমীমাংসিত সংকট
- চাকরির প্রলোভনে কোটি টাকা হাতিয়ে ৩ প্রতারক গ্রেপ্তার
- জাকসু নির্বাচন: প্রার্থীদের জন্য আজ বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্ট
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- রজনীকান্ত–কমল হাসান আবারও একসঙ্গে বড় পর্দায়
- নিরাপদ কাতারেও হামলা! দোহায় ইসরাইলি হামলায় তোলপাড় আরব বিশ্ব