প্লেনে পাইলট ও কো-পাইলটের খাবার আলাদা কেন?

সত্য নিউজ: জানেন হয়তো, প্লেনের পাইলট ও কো–পাইলটের খাবারের পদ হয় আলাদা। প্রশ্ন হলো, একই প্রতিষ্ঠানের কর্মী এবং একই প্লেন চালালেও তাঁদের কেন একই খাবার খেতে দেওয়া হয় না? উত্তর জানতে হলে একটু পেছন ফিরে তাকাতে হবে।
১৯৮২ সালের আগস্ট। পর্তুগালের লিসবন শহর থেকে একটি প্লেন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন শহরের উদ্দেশে রওনা হয়। আকাশে ওড়ার কিছু সময় পরই ঝামেলার সূত্রপাত। প্লেনটির ১০ জনের মধ্যে ৮ জন সদস্যই অসুস্থ হতে শুরু করেন। ধারণা করা হয়, নষ্ট ট্যাপিওকা পুডিং খাওয়ার পরই পেটব্যথা ও পেশিতে টান লাগে তাঁদের। প্রতিবেদন অনুসারে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার ফলেই এ ঘটনা ঘটেছিল। তবে ভাগ্য সুপ্রসন্ন, এই মিষ্টান্ন না খাওয়ায় কো-পাইলট ছিলেন সুস্থ। তাই প্লেনটির যাত্রীরা বড় কোনো বিপদে পড়েননি।
এ রকম ঘটনা হরহামেশা ঘটে না। তাই বলে সাবধানতায় ফাঁকফোকর রাখা চলে না। ওই ঘটনার পর থেকে অনেক এয়ারলাইনস কোম্পানি প্লেনের ক্রুদের খাবারের ব্যাপারে খুব সতর্ক হতে শুরু করে।
উড়াল দেওয়ার পর পাইলটরা আদতে কী খান? এ ব্যাপারে কথা বলেছেন বাণিজ্যিক প্লেনের সাবেক পাইলট ও ‘ল্যান্ডিং ইন লাস ভেগাস: কমার্শিয়াল অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড দ্য মেকিং অব আ ট্যুরিস্ট সিটি’ বইয়ের লেখক ড্যান বাব।
বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজশিল্পের একটি সাধারণ রীতি হলো, প্লেন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা পাইলটরা একই খাবার খান না। নিরাপত্তাই এর অন্যতম কারণ। লাস ভেগাসের নেভাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বুঝিয়ে বলেন, পাইলট ও কো-পাইলট (ফার্স্ট অফিসার) ভিন্ন খাবার খান। কারণ, সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে একজনের কিছু হলেও অন্যজন যাতে নিরাপদে প্লেন অবতরণ করাতে পারেন, তাই এটা করা হয়।
এমনকি প্লেনে থাকা দুজন পাইলট যদি একই খাবারের ফরমাশ দেনও, তখন পাইলটকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়। তিনি ঠিক করে দেন, কে কী খাবেন, কখন খাবেন। বাব আরও বলেন, যাত্রীবাহী প্লেনে পাইলটের কথাই শেষ কথা। তিনিই সর্বেসর্বা। ফলে যাত্রী ও ক্রুদের নিরাপত্তা বিঘ্নের মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভারও তাঁকে নিতে হয়।
ফ্লাইটের সময়সীমা ৪৫ মিনিট হোক বা ১২ ঘণ্টা, খাবারের এই নিয়ম সব ক্ষেত্রেই এক। তবে কম সময়ের ফ্লাইটে অনেক সময় খাবারের সুবিধা না–ও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাইলট নিজের খাবার নিজেই নিয়ে আসেন। কিন্তু নিজে নিয়ে এলেও মূল নিয়মের বদল হয় না। এ ক্ষেত্রেও পাইলট ও কো–পাইলটের খাবার মিলে গেলে চলবে না।
সাধারণ ছুটির সময়, অর্থাৎ দায়িত্বের বাইরে পাইলটরা নিজেদের ইচ্ছামতো খেতে পারেন। তবে অনেকে এ সময়েও খাবার বাছাই নিয়ে থাকেন সতর্ক। বাব বলেন, পাইলটরা যখন প্লেনে থাকেন না, তখনো তাঁদের খাবারের ধরন মাথায় রাখতে হয়। যদি একজনের খাদ্যে বিষক্রিয়া হয় এবং তিনি অসুস্থতার কারণে প্লেন ওড়াতে না পারেন বা ছুটি নিতে হয়, তখন তাঁর পরিবর্তে আরেকজন পাইলট দায়িত্ব পালন করতে আসেন।
পাইলটদের মতো এত নিয়মকানুনের মারপ্যাঁচ কেবিন ক্রুদের ক্ষেত্রে নেই। কিন্তু পাইলটরা যা খান, কেবিন ক্রুরা তা খান না। এটা অবশ্য এয়ারলাইনের সঙ্গে চুক্তির ওপর নির্ভর করে। কিন্তু বাসা থেকে নিজেদের খাবার আনার সুযোগ ক্রুদের আছে। অথবা ক্যাটারিংয়ের তৈরি খাবার অতিরিক্ত হলে তাঁরা খেতে পারেন। তবে তাঁদের খাবার প্লেনের সাধারণ যাত্রীদের মতোও নয়। একটি এয়ারলাইনের মুখপাত্র ডেইলি টেলিগ্রাফকে বলেন, দীর্ঘ সময়ের ফ্লাইটে কেবিন ক্রুরা সাধারণত ফ্লাইটের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের খাবার খান। তবে পাইলট ও কো–পাইলটরা আবার ক্রুদের খাবার খান না।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মাহফুজ আলমের ফেইসবুক পোস্ট: কি বার্তা দিলেন?
- আবারও খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার!
- “ইশরাককে দায়িত্ব দাও, শহর বাঁচাও!”- কেন এই স্লোগান!
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ: জনগণের সিদ্ধান্তের সঙ্গেই থাকবে বিএনপি
- ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাত: কারও প্রকৃত বিজয় নেই, শুধু দাবির প্রতিযোগিতা
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কাগজে শান্তি, মাটিতে অনিশ্চয়তা
- চীনের কৌশলগত সহায়তায় পাকিস্তানের সামরিক শক্তির উত্থান: আঞ্চলিকশক্তির নতুন বিন্যাস
- ১০৩ বছরের নীরবতা ভাঙল এল ক্লাসিকো, দেখল অভাবনীয় গোলবন্যা!
- তারেক রহমানের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তী সরকার কি স্বৈরাচারের পুনর্বাসন করছে?
- গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- হবিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৪০, কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর
- নেইমার কিনলেন ১৫ কোটি টাকার ফেরারি: কারন শুনলে অবাক হবে
- আ.লীগ নিষিদ্ধে বিএনপি কি দ্বিধায়?
- কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: সহজ এবং সাশ্রয়ী ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেখানে পড়াশোনা করা সম্ভব
- যুদ্ধবিরতিতে কাশ্মীরের কী বার্তা?