এনবিআর বিলুপ্তি নিয়ে যা বললো প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং

সত্য নিউজ:জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে করনীতি ও কর ব্যবস্থাপনা—এই দুটি পৃথক বিভাগের মাধ্যমে বাংলাদেশের করব্যবস্থায় কাঠামোগত সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এতে লক্ষ্য হচ্ছে দক্ষতা বৃদ্ধি, স্বার্থের দ্বন্দ্ব দূর করা এবং করভিত্তির বিস্তৃতি নিশ্চিত করা।
সোমবার রাতে ঘোষিত ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’-এর পরিপ্রেক্ষিতে এনবিআরের অভ্যন্তরে যে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে, তার জবাবে আজ প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং একটি বিশদ ব্যাখ্যা দিয়েছে।
প্রেস উইংয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, গত ৫০ বছরে এনবিআর কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব আহরণে সফল হতে পারেনি। বাংলাদেশে কর-জিডিপি অনুপাত বর্তমানে মাত্র ৭.৪ শতাংশ, যা এশিয়ার সর্বনিম্ন পর্যায়ের একটি। বিশ্ব গড় যেখানে ১৬.৬ শতাংশ, সেখানে এমন চিত্র একটি বিকাশমান অর্থনীতির জন্য উদ্বেগজনক। সরকার মনে করছে, এই কাঠামোগত সংস্কার না আনলে উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।
নীতি ও বাস্তবায়নকে পৃথক করাই মূল উদ্দেশ্য
বর্তমানে একই প্রতিষ্ঠান করনীতি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করছে—যা একদিকে স্বার্থের সংঘাত সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে জবাবদিহির ঘাটতি তৈরি করছে। ফলে কর ফাঁকি ও অনিয়মের সুযোগ বাড়ছে, যা জনস্বার্থের পরিপন্থী। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে আসছেন, রাজস্ব নীতিতে প্রবৃদ্ধি ও ন্যায্যতা উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।
প্রেস উইংয়ের ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়, এনবিআরের অভ্যন্তরে কার্যদক্ষতা মূল্যায়নের কোনো সুনির্দিষ্ট কাঠামো নেই। পদোন্নতি ও প্রণোদনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা অনুপস্থিত। এতে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে।
নতুন কাঠামোর সম্ভাব্য সুফল
নতুন কাঠামোয় রাজস্ব নীতি বিভাগ থাকবে কর আইন, করহার নির্ধারণ ও আন্তর্জাতিক করচুক্তি ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে। অন্যদিকে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ দেখবে কর সংগ্রহ, নিরীক্ষা ও বিধিবিধান কার্যকর করার কাজ। এই বিভাজনের ফলে সিদ্ধান্তগ্রহণ ও বাস্তবায়ন—দুই ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।
এতে করজালের বিস্তৃতি সহজ হবে, আয়কর ও কাস্টমস ক্যাডারের জনবল দক্ষতার ভিত্তিতে কাজে লাগানো যাবে। প্রত্যক্ষ কর আহরণ বাড়িয়ে পরোক্ষ কর নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে। একইসঙ্গে তথ্যনির্ভর ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব নীতি প্রণয়নের পথ প্রশস্ত হবে।
আতঙ্ক নয়, প্রশাসনিক রূপান্তরের বার্তা
প্রেস উইং এটিও স্পষ্ট করেছে যে, এই রূপান্তর কেবল প্রশাসনিক সংস্কার নয়, বরং একটি সুবিন্যস্ত, ন্যায়নিষ্ঠ ও পেশাদার করব্যবস্থা গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। বিশ্বব্যাপী প্রায় সব উন্নত অর্থনীতিতে করনীতি ও কর প্রশাসন আলাদা ইউনিট হিসেবে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশও সেই কাঠামোর দিকে এগোচ্ছে।
অধ্যাদেশে রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রশাসনিক কাঠামোয় প্রশাসন ক্যাডার ছাড়াও কর ও কাস্টমস ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জায়গা নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি অভ্যন্তরীণ বিরূপ প্রতিক্রিয়া প্রশমনে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রেস উইং জানিয়েছে, এই সংস্কার নাগরিকদের মধ্যে কর প্রশাসনের প্রতি আস্থা পুনঃস্থাপনে সহায়ক হবে, যা দেশের উন্নয়ন ও বিনিয়োগ পরিবেশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মাহফুজ আলমের ফেইসবুক পোস্ট: কি বার্তা দিলেন?
- আবারও খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার!
- “ইশরাককে দায়িত্ব দাও, শহর বাঁচাও!”- কেন এই স্লোগান!
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ: জনগণের সিদ্ধান্তের সঙ্গেই থাকবে বিএনপি
- ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাত: কারও প্রকৃত বিজয় নেই, শুধু দাবির প্রতিযোগিতা
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কাগজে শান্তি, মাটিতে অনিশ্চয়তা
- চীনের কৌশলগত সহায়তায় পাকিস্তানের সামরিক শক্তির উত্থান: আঞ্চলিকশক্তির নতুন বিন্যাস
- ১০৩ বছরের নীরবতা ভাঙল এল ক্লাসিকো, দেখল অভাবনীয় গোলবন্যা!
- তারেক রহমানের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তী সরকার কি স্বৈরাচারের পুনর্বাসন করছে?
- গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- হবিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৪০, কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর
- নেইমার কিনলেন ১৫ কোটি টাকার ফেরারি: কারন শুনলে অবাক হবে
- আ.লীগ নিষিদ্ধে বিএনপি কি দ্বিধায়?
- কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: সহজ এবং সাশ্রয়ী ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেখানে পড়াশোনা করা সম্ভব
- যুদ্ধবিরতিতে কাশ্মীরের কী বার্তা?