জবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
‘বোতল-বোতল!’ স্লোগানে কাকরাইলে জবির প্রতিবাদ

সত্য নিউজ: কাকরাইলের ব্যস্ত রাজপথের ওপর বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পড়ে অদ্ভুত এক শব্দ—"বোতল, বোতল!" শতাধিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, হাতে ধরা ফাঁকা পানির বোতল, গলায় স্লোগান—স্বর তীব্র কিন্তু প্রতিবাদ শান্তিপূর্ণ। এটা যেন শুধু স্লোগান নয়, বরং ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ, বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিরোধ।
এই নাটকীয় দৃশ্যের সূচনা একদিন আগে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বুধবার রাতে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। কিন্তু হঠাৎই তার দিকে ছোড়া হয় একটি পানির বোতল, যা গিয়ে লাগে তার মাথায়। ঘটনাটি যেমন ছিল অনাকাঙ্ক্ষিত, তেমনি ছিল তাৎক্ষণিক। পরে জানা যায়, ওই বোতল ছুঁড়ে দেওয়া শিক্ষার্থী হুসাইন, একজন সাধারণ ছাত্র, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু নয়—নিজের ভাষায়, “বোতলটি আকাশের দিকে ছুঁড়েছিলাম।”
কিন্তু পরদিন সেই একটিমাত্র বোতল পরিণত হয় শত শত বোতলে—প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে। শিক্ষার্থীরা বোতল হাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বোতল বাঁধেন সিগনাল লাইটের খুঁটিতে, টানিয়ে দেন রশিতে। বোতলের এই প্রতীকায়ন ছিল প্রতিক্রিয়া—যেখানে বোতল ছোড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়, সেখানে শিক্ষার্থীরা জানিয়ে দিলেন, এই বোতল তাদের কণ্ঠস্বর, তাদের অবদমিত ক্ষোভ।
ইতিহাস বিভাগের ছাত্র হৃদয় বলেন, “একটি বোতলের ঘটনাকে তিনি বড় করে দেখলেন, অথচ পুলিশের হামলায় আহত হলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী—তাদের প্রতি তাঁর কোনো সহানুভূতি ছিল না। রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকেও তিনি ঔদ্ধত্য দেখালেন।”
আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো খুব স্পষ্ট—আবাসনের জন্য বৃত্তি, পূর্ণাঙ্গ বাজেট অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দ্রুত বাস্তবায়ন, আর এখন যুক্ত হয়েছে ১৪ মে পুলিশের অতর্কিত হামলার তদন্ত ও বিচার।
অন্যদিকে, বোতল ছোড়ার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানায় জাতীয় নাগরিক পার্টি, যেটিকে তারা ‘নিকৃষ্ট’ বলেও আখ্যায়িত করে। তবে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন শিক্ষার্থী সংগঠন স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, এই একক ঘটনায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন বা সাধারণ শিক্ষার্থীদের দায়ী করা ঠিক নয়। তাদের ভাষায়, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ব্যক্তিগত অপমানকে পুরো আন্দোলনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছেন।
কিন্তু পুরো ঘটনার গভীরে গিয়ে দেখা যায়, এটি কেবল একটি বোতলের ঘটনা নয়। এটি রাষ্ট্র ও শিক্ষার্থীদের মধ্যকার আস্থার সংকটের প্রতিচ্ছবি। যেখানে একপাশে আছে ন্যায্য দাবি, আরেকপাশে রয়েছে অবিশ্বাস, সহানুভূতির অভাব, ও প্রতিক্রিয়ার রাজনীতি।
বোতল ছোড়া বা বোতল ধরা—উভয়টিই এখানে প্রতীক। কেউ তাকে দেখছেন অবমাননা হিসেবে, কেউ দেখছেন প্রতিবাদ হিসেবে। কিন্তু নিশ্চিতভাবে বলা যায়, কাকরাইলের রাস্তায় গলায় স্লোগান তোলা এই শিক্ষার্থীরা আমাদের স্মরণ করিয়ে দিলেন, ছোট কিছু থেকেও বড় বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারে।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মাহফুজ আলমের ফেইসবুক পোস্ট: কি বার্তা দিলেন?
- “ইশরাককে দায়িত্ব দাও, শহর বাঁচাও!”- কেন এই স্লোগান!
- আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ: জনগণের সিদ্ধান্তের সঙ্গেই থাকবে বিএনপি
- ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাত: কারও প্রকৃত বিজয় নেই, শুধু দাবির প্রতিযোগিতা
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কাগজে শান্তি, মাটিতে অনিশ্চয়তা
- চীনের কৌশলগত সহায়তায় পাকিস্তানের সামরিক শক্তির উত্থান: আঞ্চলিকশক্তির নতুন বিন্যাস
- ১০৩ বছরের নীরবতা ভাঙল এল ক্লাসিকো, দেখল অভাবনীয় গোলবন্যা!
- তারেক রহমানের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তী সরকার কি স্বৈরাচারের পুনর্বাসন করছে?
- হবিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৪০, কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর
- নেইমার কিনলেন ১৫ কোটি টাকার ফেরারি: কারন শুনলে অবাক হবে
- আ.লীগ নিষিদ্ধে বিএনপি কি দ্বিধায়?
- কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: সহজ এবং সাশ্রয়ী ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেখানে পড়াশোনা করা সম্ভব
- যুদ্ধবিরতিতে কাশ্মীরের কী বার্তা?
- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইন সংশোধন: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত
- ভারত-পাকিস্তান সম্মত যুদ্ধবিরতিতে