দুই বাংলাদেশির পক্ষে আদালতের রায়, ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৩ ২২:১১:৩৫
দুই বাংলাদেশির পক্ষে আদালতের রায়, ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি ছবিঃ সংগৃহীত

ইতালির অভিবাসন নীতিতে বড় ধাক্কা, ইউরোপীয় আদালতের রায়ে জয় পেলেন দুই বাংলাদেশি নাগরিক

ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতের এক রায়ে বড় ধাক্কা খেল ইতালির আলোচিত আলবেনিয়া অভিবাসন প্রকল্প। রায়টি আসে দুই বাংলাদেশি নাগরিকের মামলার প্রেক্ষিতে, যারা সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছানোর পর আলবেনিয়ার একটি ক্যাম্পে পাঠানো হয় এবং পরবর্তীতে তাদের আশ্রয় আবেদন বাতিল করা হয়।

২০২৩ সালে ইতালি ও আলবেনিয়ার মধ্যে একটি চুক্তি হয়, যার আওতায় সমুদ্রপথে ইতালিতে প্রবেশকারী অভিবাসীদের আলবেনিয়ার স্থাপিত বিশেষ ক্যাম্পে পাঠানো শুরু করে ইতালি। এই চুক্তির আওতায় বাংলাদেশি ওই দুই নাগরিককেও সরাসরি ক্যাম্পে স্থানান্তর করা হয়। তাদের আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে তারা আইনি লড়াই শুরু করেন এবং বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদালতে গড়ায়।

চূড়ান্ত রায়ে ১ আগস্ট আদালত স্পষ্টভাবে জানায়—“কোনো দেশকে নিরাপদ ঘোষণা করা যাবে না, যদি সেই নিরাপত্তা সব নাগরিকের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য না হয়।” আদালত আরও উল্লেখ করে, “নিরাপদ দেশ হিসেবে কোনো দেশকে তালিকাভুক্ত করার আগে বিচারিক পর্যালোচনার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে এবং সেই সিদ্ধান্ত হতে হবে পর্যাপ্ত ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতে।”

এই রায় বাংলাদেশি দুই নাগরিকের পক্ষে গেলেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে ইতালির অভিবাসন নীতির ভিত্তি। বিশেষ করে বাংলাদেশকে ‘নিরাপদ দেশ’ হিসেবে ঘোষণার বিষয়টি নতুন করে আলোচনায় আসে, যেটি ২০২৪ সালের অক্টোবরে ইতালি সরকার গ্রহণ করেছিল।

রায় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “এই রায় আমাদের জাতীয় সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ এবং সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য হুমকি।” ইতালির সরকার আরও দাবি করে, “আদালত সরকারের তদন্তের চেয়ে বিচারকদের মতামতকে অগ্রাধিকার দিয়েছে, যা অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের সক্ষমতা দুর্বল করছে।”

তবে আদালতের এই রায় সত্ত্বেও ইতালি আলবেনিয়ায় অভিবাসীদের স্থানান্তর অব্যাহত রেখেছে। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, শুধু তাদেরকেই ক্যাম্পে পাঠানো হচ্ছে যাদের আশ্রয় আবেদন ইতোমধ্যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

বাংলাদেশি নাগরিকদের এই আইনি লড়াই ইতালির কিছু মানবাধিকার সংস্থার প্রশংসা কুড়িয়েছে। তারা একে “বিচার বিভাগের জয়” এবং “ইউরোপীয় মানবাধিকার মানদণ্ডের বিজয়” হিসেবে দেখছে।

/আশিক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ