‘দ্বিতীয় রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা
কি আছে এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহারে?

২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি বিস্তৃত ও ব্যাপক রাজনৈতিক ইশতেহার ঘোষণা করেন, যার লক্ষ্য একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ‘দ্বিতীয় রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে দেশজুড়ে দলীয় নেতা-কর্মী, শহীদ পরিবার ও আহতদের উপস্থিতিতে তিনি ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ নামে এই ২৪ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।
পটভূমি ও ঘোষণার প্রেক্ষাপট
সমাবেশের সূচনায় নাহিদ ইসলাম স্মরণ করেন এক বছর আগের ঐতিহাসিক ঘোষণা—যেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নামে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, এই আন্দোলনের নেতৃত্ব কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়, বরং গোটা দেশের জনগণ ও অভ্যুত্থানকারী তরুণদের। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এনসিপির জন্ম এবং আজকের এই ২৪ দফা ইশতেহার।
নাহিদ ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই ইশতেহার জনগণের স্বপ্ন ও শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি। আমাদের সংগ্রাম কেবল সরকারের পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং সেই কাঠামো বদলের জন্য, যার ভেতরে ফ্যাসিবাদ গড়ে ওঠে।”
ইশতেহারের মূল আকর্ষণ
এই ২৪ দফায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, যেমন নতুন সংবিধান প্রণয়ন, ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিচার, বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নারী-যুব-সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়ন, শ্রমিক-কৃষকের অধিকার, প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণা, জলবায়ু সহনশীলতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।
প্রতিটি দফা মূলত একটি করে রাষ্ট্রীয় সংকল্প ও উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনার ভিত্তি স্থাপন করে।
১। নতুন সংবিধান ও দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রবর্তন
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক পরিকাঠামো একনায়কতান্ত্রিক ও পরিবারতন্ত্রের সুবিধার্থে ব্যবহৃত হওয়ায়, এনসিপি একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে। এই সংবিধান হবে জনগণের অংশগ্রহণে গণপরিষদের মাধ্যমে গৃহীত, যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় নির্মিত হবে। নতুন সংবিধানে ব্যক্তির মর্যাদা, মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র, ক্ষমতার ভারসাম্য এবং আইনের শাসন সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হবে। একনায়কতন্ত্র, দলীয়করণ, বিচারব্যবস্থার ওপর নির্বাহী হস্তক্ষেপ, ও ফ্যাসিবাদী প্রবণতাকে বন্ধ করা হবে সাংবিধানিকভাবে।
২। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার নিশ্চিতকরণ
২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা কর্তৃক পরিচালিত গণঅভ্যুত্থান ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী এক ঐতিহাসিক রূপান্তর। এনসিপি এই অভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের পাশাপাশি শাপলা গণহত্যা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। পাশাপাশি আহতদের পুনর্বাসন ও আজীবন রাষ্ট্রীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ সংস্কার
জনগণের প্রকৃত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এনসিপি এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করতে চায়, যেখানে সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থ না হয়ে স্বতন্ত্র ও কার্যকর হবে। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে কালো টাকার প্রভাব দূর করার জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে নির্বাচনী ব্যয় বহনের পরিকল্পনা রয়েছে। গণতন্ত্র শুধু ভোটাধিকারেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিটি স্তরে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
৪। বিচারব্যবস্থার ন্যায়ভিত্তিক রূপান্তর
এনসিপি চায় এমন এক বিচারব্যবস্থা, যা ক্ষমতাবানদের রক্ষা না করে, মজলুমদের পক্ষে দাঁড়াবে। ঔপনিবেশিক যুগের অসামঞ্জস্যপূর্ণ আইন সংস্কার করে মানবাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিচারনীতি চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল ফাইলিং, অনলাইন ট্র্যাকিং, আলাদা সচিবালয়, বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ইত্যাদির মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর হবে।
৫। দুর্নীতিমুক্ত ও জনসেবামূলক প্রশাসন
আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক দলগুলোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের বিপরীতে এনসিপি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও সেবামুখী প্রশাসন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে। সরকারি নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে। ডিজিটাল গভর্ন্যান্স চালু করে জনসেবার গতি বাড়ানো হবে এবং দুর্নীতির দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির নিশ্চয়তা থাকবে। Whistleblower Protection আইন প্রণয়ন করে দুর্নীতিবিরোধী সাহসী নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া হবে।
৬। মানবাধিকার রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কার
র্যাব বিলুপ্তিসহ পুলিশ ব্যবস্থার রাজনৈতিক অপব্যবহার রোধে স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে। গ্রেপ্তারে ওয়ারেন্ট বাধ্যতামূলক করা, বডি ক্যামেরা চালু, কমিউনিটি পুলিশিং চালু, এবং মানবাধিকারভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আইনি কাঠামোর আওতায় আনা হবে যাতে রাজনৈতিক নির্যাতন বন্ধ হয়।
৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ
শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়, উন্নয়ন ছড়িয়ে দিতে গ্রামে 'গ্রাম পার্লামেন্ট' গঠন করা হবে যাতে স্থানীয় সমস্যা, উন্নয়ন ও সরকারি সেবার বিষয়গুলো জনগণের অংশগ্রহণে নির্ধারিত হয়। সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা ছাঁটাই করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্যকর করা হবে। স্থানীয় সরকারকে একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে পরিচালনা করে তা শক্তিশালী করা হবে।
৮। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ
গণমাধ্যম যেন কোনো কর্পোরেট বা রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর না হয়ে জনগণের পক্ষ হয়ে কথা বলে, তার জন্য মালিকানার বৈচিত্র্য ও আইনি কাঠামো নিশ্চিত করা হবে। প্রেস কাউন্সিলকে সক্রিয় করা হবে এবং মিথ্যা তথ্য বা গুজব রোধে নিরপেক্ষ তথ্য যাচাই ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণে নীতিনির্ধারণে গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদার করা হবে।
৯। সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা
জিপিএস-চালিত অ্যাম্বুলেন্স, ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড, ইউনিক হেলথ আইডি, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ, অঞ্চলভিত্তিক বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নারী-সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা হবে। প্রাথমিক চিকিৎসাকে মূল ভিত্তি হিসেবে ধরে একটি শক্তিশালী জাতীয় স্বাস্থ্য কাঠামো গঠন করা হবে।
১০। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য শিক্ষানীতি
সকল শিক্ষার ধারা যেমন বাংলা, ইংরেজি, মাদ্রাসা ইত্যাদির মধ্যে সমন্বয় করে জাতীয় পাঠ্যক্রম আধুনিকায়ন করা হবে। শিক্ষা হবে অধিকার, পণ্য নয়। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিভিত্তিক, নৈতিকতা ও নাগরিক চেতনা সম্পন্ন শিক্ষার মাধ্যমে উদ্ভাবনক্ষম নাগরিক তৈরি করা হবে। শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এনসিপি গবেষণা খাতে বিপ্লব ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে। সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে ৫০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যার আওতায় থাকবে মহাকাশ প্রযুক্তি, রাডার, AI, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি, ন্যানোটেক, নিউক্লিয়ার সায়েন্স, সেমিকন্ডাক্টর, বায়োটেকনোলোজি প্রভৃতি ক্ষেত্রে গবেষণা ও ল্যাব প্রতিষ্ঠা। বিশ্বমানের গবেষণাগারের সঙ্গে সহযোগিতা করে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হবে। কম্পিউটেশনাল গবেষণার জন্য ন্যাশনাল কম্পিউটিং সার্ভার গঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। সাইবার নিরাপত্তা রক্ষায় আলাদা কমিশন গঠন করা হবে।
১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্ত্বার মর্যাদা
বাংলাদেশের বহুজাতিক, বহু ভাষাভিত্তিক ও বহু সংস্কৃতির সমাজে ধর্ম বা জাতিগত পরিচয়ের কারণে নিপীড়নের বিরুদ্ধে এনসিপির অবস্থান দৃঢ়। তারা প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে। হিন্দুদের জমি দখলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা, দলিত ও তফসিলি সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে বিশেষ বরাদ্দ এবং সকল ধর্মে বিদ্বেষমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানবাধিকার কমিশনের অধীনে একটি স্বতন্ত্র সেল গঠন করা হবে যা এসব নিপীড়নের তদন্ত ও পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।
১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন
নারী অংশগ্রহণের সত্যিকার নিশ্চয়তা দিতে সংসদে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীর অংশ, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমবেতন, গৃহিনীর অবদানকে জিডিপির অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। প্রতিটি থানায় নারী সহিংসতা প্রতিরোধ সেল, নারী পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি, ধর্ষণ মামলার ফাস্ট ট্র্যাক ট্রায়াল এবং গণমাধ্যমে ভিকটিমের পরিচয় গোপনের বিধান কার্যকর করা হবে। মাতৃত্বকালীন ও পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত, ব্রেস্টফিডিং রুম, বয়স্ক ও শিশু সেবা কেন্দ্র এবং নিরাপদ যাতায়াতের জন্য নারীবাস চালু করা হবে।
১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি
এনসিপি চায় এমন একটি অর্থনীতি যেখানে ব্যক্তি নয়, সমাজ ও রাষ্ট্র হবে কেন্দ্রীয়—যেখানে মানুষ, পরিবেশ, এবং সামাজিক ন্যায়বিচার থাকবে মূলধারায়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি নয়, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হবে উন্নয়নের সূচক। বেকার, প্রবীণ, বিধবা, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হবে। কর কাঠামো হবে প্রগতিশীল; ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করে গরিবদের জন্য উন্নয়ন বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। ব্যাংক, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও ঋণনীতির পূর্ণ সংস্কার ঘটানো হবে।
১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান
বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি ইন্টার্নশিপ সম্প্রসারণ, প্রশ্নফাঁস রোধে স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষা ব্যবস্থা, উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা ও ফ্রিল্যান্স হাব গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। প্রবাসে কাজের জন্য IT, নার্সিং, হসপিটালিটি ইত্যাদি খাতে ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, বিদেশি সনদপ্রাপ্তি এবং জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি
গার্মেন্টসনির্ভরতা কমিয়ে চামড়া, আসবাব, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। ওষুধ শিল্পের সুরক্ষা, ICT খাত সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম-মংলা-মাতারবাড়িকে লজিস্টিক হাবে রূপান্তর এবং শিল্প উন্নয়নে ৫০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনার জন্য জাতীয় কমিশন গঠন করা হবে।
১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব
প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে প্রযুক্তি ও ভর্তুকি, বিষমুক্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, কৃষকদের সরাসরি বিক্রয়ের সুযোগ এবং ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে অঞ্চলভিত্তিক তথ্যভাণ্ডার গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন ও কৃষি রপ্তানির উপযোগিতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।
১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার
শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি কাঠামো, সামাজিক সুরক্ষা, বাধ্যতামূলক কর্ম-সুরক্ষা-বীমা, পেনশন তহবিল, শ্রম ট্রাইব্যুনালের বিস্তৃতি এবং শিশুশ্রম নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দামে বিক্রির জন্য হিমাগার, কৃষি বীমা, আবহাওয়া ও বাজার সম্পর্কিত জাতীয় মোবাইল প্ল্যাটফর্ম গঠনের কথা বলা হয়েছে।
১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা
গ্যাস, খনিজ, কয়লা, পাথরসহ প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা হবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে টেকসই খনন নীতি প্রণয়ন, আন্তর্জাতিক চুক্তির পুনর্বিন্যাস এবং সুন্দরবনের সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
২০। পরিকল্পিত নগরায়ন ও পরিবহন ব্যবস্থা
রাজধানীকেন্দ্রিক কেন্দ্রীয়করণ বন্ধ করে অন্যান্য শহরে সরকারি সেবা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে। সামাজিক আবাসন, বাড়িভাড়া নীতিমালা, নদী খাল ভিত্তিক নগরায়ন, পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন, সবুজ উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ এবং সাশ্রয়ী ও গতিশীল আন্তঃজেলা যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।
২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা
জলবায়ু বিপর্যয়ের ঝুঁকি মোকাবিলায় বনায়ন, নদী সংরক্ষণ, সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা, খনন নিয়ন্ত্রণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিস্তার, আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জলবায়ু ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয় কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার
প্রবাসীদের শুধু রেমিট্যান্স উৎস না ভেবে রাষ্ট্রের অংশীদার হিসেবে দেখার কথা বলা হয়েছে। দূতাবাসে হয়রানিমুক্ত সেবা, ভোটাধিকার, বিনিয়োগ সহায়তা, প্রবাসে মৃত্যুর পর মরদেহ ফেরত আনা এবং প্রবাসী নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।
২৩। বাংলাদেশকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি
বাংলাদেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চে রেখে দলনিরপেক্ষ, সার্বভৌম, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ, রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক সমাধান, মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব, আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও পাবলিক ডিপ্লোম্যাসির বিস্তার হবে এই নীতির মূল লক্ষ্য।
২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল
সক্ষমতা ও শৃঙ্খলাভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্য নিয়ে সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, UAV ব্রিগেড, সাবমেরিনভিত্তিক নৌবাহিনী, সেকেন্ড স্ট্রাইক সক্ষমতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করা হবে। প্রতিরক্ষা হবে সংসদীয় নজরদারিতে পরিচালিত, যা আঞ্চলিক শান্তি ও কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখবে।
ইশতেহার ঘোষণার শেষ মুহূর্তে নাহিদ ইসলাম আবারও জনগণকে স্মরণ করিয়ে দেন শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া শপথের কথা—এই দেশকে স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করার। তিনি বলেন, “আপনারা সাড়া দিয়েছেন, ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছেন। এখন সময় এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার।”
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতেই হবে: ফয়জুল করীম
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, দেশে প্রপোর্শনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। তিনি বলেন, পূর্বের মতো ‘জগাখিচুড়ি’ নির্বাচন হলে দখলবাজি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির রাজত্ব আবারও কায়েম হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডেমরার কোনাপাড়া বাসস্ট্যান্ডে অনুষ্ঠিত এক গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
‘ইসলামী সরকার দেখতে চাই’
মুফতি ফয়জুল করীম বলেন, বর্তমানে একটি দল এ দেশকে দখলবাজি, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ওই দল যদি বলে নির্বাচন হলে ৯৫ শতাংশ ভোট তারাই পাবে, তাহলে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনে আসতে এত ভয় কেন?”
তিনি বলেন, পূর্বের মতো নির্বাচন হলে “যেই লাউ সেই কদু” হবে। তাই তিনি এবার ৯৫ শতাংশ মুসলমানের দেশে একটি ইসলামী সরকার দেখতে চান। তার মতে, ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে আর ধনী-গরিবের ব্যবধান থাকবে না এবং কোনো মানুষ না খেয়ে বা বিনা চিকিৎসায় কষ্ট করবে না।
‘জুলাই অভ্যুত্থানের খুনিদের বিচার চাই’
ফয়জুল করীম বলেন, অভাব না থাকলে দেশে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই কমে যাবে এবং মানুষ নিরাপদে ও শান্তিতে বসবাস করতে পারবে। এই লক্ষ্য পূরণে অবশ্যই পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এর আগে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহতদের খুনিদের দৃশ্যমান বিচার দাবি করেন তিনি।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহসভাপতি ও ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এম এইচ মোস্তফার সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার হোসাইন সাকীসহ অন্যান্য নেতারা। সমাবেশে কেন্দ্রীয় ও মহানগর পর্যায়ের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নুরের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জরুরি বার্তা
হামলায় গুরুতর আহত গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও এখনও পুরোপুরি সুস্থ নন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে কমপক্ষে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টা ৫২ মিনিটে নুরের ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ থেকে এক জরুরি বার্তায় তার বর্তমান শারীরিক অবস্থার কথা জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, মাথায়, নাকে ও মুখমণ্ডলে গুরুতর আঘাতের কারণে চিকিৎসকরা নুরকে এই দীর্ঘ বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। নাক ও চোয়ালে আঘাত থাকায় তাকে শক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে এবং কম কথা বলতে বলা হয়েছে। যদিও রাজনীতির মানুষ হওয়ায় মনের জোরে তিনি ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং কথা বলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার দ্রুত আরোগ্য নিশ্চিত করতে আপাতত সব ধরনের সাক্ষাৎ ও কথা বলা বন্ধ করা হয়েছে। তার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়াও চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর ১৮ দিন পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান নুরুল হক নুর। রাজধানীর কাকরাইলে হামলায় গুরুতর আহত হওয়ার পর থেকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার সময় তিনি জানিয়েছিলেন, পুরোপুরি সুস্থ নন এবং বাসায় ফিরে অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা নেবেন।
বাউফলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক, ছাড়াতে থানায় হাজির জামায়াত নেতা
পটুয়াখালীর বাউফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এক নাটকীয় ঘটনা। সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ, আর তাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় হাজির হয়েছেন স্থানীয় এক জামায়াত নেতা। বিষয়টি স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে।
আটক যুবক মাইনুল ইসলাম মমিনপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আব্দুস সালাম সিকদারের ছেলে এবং কেশবপুর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টার দিকে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ মাইনুলকে নিজ গ্রাম থেকে আটক করে।
আটকের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মাইনুলের কয়েকটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে। সেসব ছবিতে তাকে আওয়ামী লীগের কিছু নেতার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়। ফলে তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে এলাকায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, ২০২৪ সালের কেশবপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সময় মাইনুল ও তার ভাই আমিনুল নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এনামুল হক ওরফে অপুর সমর্থকদের পক্ষে ভাঙচুর ও সংঘর্ষে অংশ নিয়েছিলেন। এনামুল হক হলেন সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের শ্যালক এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা।
তবে বৃহস্পতিবার মাইনুল আটক হওয়ার পর ঘটনাটি ভিন্ন মোড় নেয়। তাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় যান কেশবপুর ইউনিয়ন যুব জামায়াতের সভাপতি গোলাম আবু সাঈদ। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সাঈদ দাবি করেন, মাইনুল এখন আর ছাত্রলীগের সঙ্গে যুক্ত নন। বরং তিনি বর্তমানে ইউনিয়ন জামায়াতের যুব কমিটির অর্থ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তার ভাষায়, “যেহেতু তিনি আমাদের কমিটির পদে আছেন, তাই আমি স্বাভাবিকভাবেই থানায় গিয়েছিলাম।”
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরুজ্জামান সরকার ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “মাইনুলকে ছাড়ার কোনো সুযোগ নেই। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন।”
-রাফসান
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন করবে না: মেজর হাফিজ
বিএনপি ক্ষমতায় এলে কোরআন ও সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন পাস করবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে লালমোহন উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির আয়োজনে একটি ওলামায়ে কেরাম সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
‘ইসলামের মর্যাদা সমুন্নত রাখা হবে’
মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বিএনপি সবসময় দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের যথাযথ মূল্যায়ন করে। তিনি বলেন, “বিগত সময়ে বিএনপি চারবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করেছিল। তখনও আমরা আলেম-ওলামা ও ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখতে চেয়েছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “বিএনপি যদি আগামীতে দেশের জনগণের ভোটে জাতীয় সংসদে যেতে পারে, তাহলে আমাদের দল কখনই কোরআন ও সুন্নাহ’র আদর্শের বিরুদ্ধে কোনো আইন পাশ করবে না। অতীতেও আমরা আলেম-ওলামাদের সম্মান দিয়েছি এবং ভবিষ্যতেও সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করব।”
‘ইসলামের জাগরণ হয়েছে’
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র। এখানে ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো আইন পাস করে কোনো শাসকের স্থান ভবিষ্যতে আর হবে না। তিনি বলেন, “বিশেষ করে, শেখ হাসিনার এই পরিণতি দেখার পরে সকল রাজনৈতিক দল এখন সাবধান এবং এ দেশে ইসলামের জাগরণ হয়েছে।”
লালমোহন করিম রোড জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই সভায় উপস্থিত ছিলেন লালমোহন উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা এবং বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন ও আলেম-ওলামারা।
আলোচনার সময় কর্মসূচি দেওয়া গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আলোচনার সময় কর্মসূচি দিয়ে অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। রাজপথে নেমে সমস্যার সমাধান হবে না, বরং আলোচনার মাধ্যমেই তা সম্ভব। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বিএনপি কোনো ইস্যুতে আন্দোলনে যায়নি। তিনি আরও জানান, বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয়।
তিনি বলেন, আগামীতে তিনি জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেবেন, তবে এজেন্ডা নিয়ে এখনো কোনো আলোচনা হয়নি। তিনি আশা প্রকাশ করেন, সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আমীর খসরু: নির্বাচিত সরকার ছাড়া অস্থিতিশীলতা কাটবে না
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশে রাজনৈতিক সরকার না থাকায় জবাবদিহিতা ও স্থিতিশীলতার অভাব তৈরি হয়েছে। তার মতে, নির্বাচিত সরকার ছাড়া রাষ্ট্রের সব অঙ্গকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তাই দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে গণতান্ত্রিক ধারায় প্রত্যাবর্তন জরুরি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি ঢাকা মহানগরীর হাতিরঝিলে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরকে দেখতে যান। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা একটি স্থিতিশীল অবস্থা চাই, যেখানে দেশের মানুষ নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারবে। সরকার যদি নির্বাচনের মাধ্যমে আসে এবং জনগণের সমর্থন পায়, তাহলে রাষ্ট্রের সব অঙ্গ রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। তা না হলে অস্থিরতা চলতেই থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, সরকারের শক্তির মূল উৎস জনগণ। নির্বাচিত সরকার ছাড়া রাষ্ট্রের শক্তি টেকসই হয় না। এজন্য দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত একটি সরকার গঠন অপরিহার্য।
নুরুল হক নূরের সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে
আলাপচারিতার প্রসঙ্গ টেনে খসরু বলেন, “আমরা যত দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার পাব, যেখানে জনগণের সমর্থন থাকবে, যারা রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী হবে—তত দ্রুত স্থিতিশীলতা ফিরবে। জনগণের শক্তির অনুপস্থিতিতে এ ধরনের ঘটনা ঘটতেই থাকবে, বরং ভবিষ্যতে আরও বাড়বে।”
জবাবদিহিতার সংকট
সংসদের অনুপস্থিতি ও জবাবদিহিতার ঘাটতির প্রসঙ্গ টেনে খসরু বলেন, “সংসদ নেই, এখানে জবাবদিহিতার অনুপস্থিতি স্পষ্ট। এটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগ নেই। এর জন্য কাউকে দায়ী করায় লাভ নেই, কারণ নির্বাচিত সরকার না থাকলে দায়বদ্ধতার ঘাটতি থাকবেই।”
ভিন্ন রাজনৈতিক দলের দাবি প্রসঙ্গে
বৃহস্পতিবার ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল পাঁচ দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে, যেখানে জাতীয় নির্বাচন সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে করার প্রস্তাব রাখা হয়। এ বিষয়ে বিএনপি নেতা খসরু বলেন, “এটা চাইতেই পারে, এতে কোনো অসুবিধা নেই। আমাদেরও কিছু দাবি আছে। তবে সব দাবিতে ঐক্যমত হবে, তা ভাবার কারণ নেই। বিভিন্ন দর্শন ও চিন্তাধারার কারণে আলাদা দল টিকে আছে। যদি সবার একই দাবি হতো, তাহলে বাকশালের মতো একদলীয় ব্যবস্থা হয়ে যেত। সুতরাং জনগণের কাছে গিয়ে, নির্বাচনের মাধ্যমে ম্যান্ডেট নিয়েই এসব দাবি পূরণ করতে হবে। এটাই গণতন্ত্র।”
গণতন্ত্র না হলে অস্থিতিশীলতা বাড়বে
খসরুর মতে, গণতান্ত্রিক কাঠামোতে জনগণই রাজনৈতিক শক্তির উৎস। জনগণের আস্থা ও ম্যান্ডেট ছাড়া কোনো পরিবর্তন টেকসই হবে না। তিনি বলেন, “যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস না করা হয়, তবে দেশে স্থিতিশীলতা আসবে না। বরং এভাবে চলতে থাকলে পরাজিত শক্তির জন্য সুযোগ তৈরি হবে এবং তারা লাভবান হবে।”
নির্বাচনের প্রস্তুতি
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। এ প্রসঙ্গে খসরু বলেন, “দেশ নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে। এর জন্যই গত ১৫–১৬ বছর ধরে সবাই ত্যাগ স্বীকার করেছে। নির্বাচনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের দাবি-দাওয়ার কোনো সম্পর্ক নেই। দাবি থাকতে পারে, তবে সেগুলো জনগণের কাছে নিয়ে যেতে হবে, ম্যান্ডেট পেতে হবে, তারপর সংসদে আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে অনুমোদন পেতে হবে। এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলাকালে কেউ যদি অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে, তবে তাদের রাজনৈতিকভাবে দায় বহন করতে হবে।”
জনগণের আস্থা পুনর্গঠনে কাজ করছে বিএনপি: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে জনগণের, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের, আস্থা পুনর্গঠন করাই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
দলীয় শৃঙ্খলা ও জবাবদিহিতা
তারেক রহমান তার পোস্টে বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি তৃণমূল থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে যাচ্ছে। গ্রাম থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত দলের সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায় দল। তিনি জানান, এরই মধ্যে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে প্রায় ৭ হাজার দলীয় সদস্যের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও অসদাচরণের দায়ে অনেকে বহিষ্কৃত ও পদচ্যুত হয়েছেন। তারেক রহমান বলেন, "শৃঙ্খলা কোনো দুর্বলতা নয়; বরং সেটিই আমাদের শক্তি।"
আধুনিকায়ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
তারেক রহমান আরও জানান, সময়ের চাহিদা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিএনপি সবসময় নিজেকে আধুনিকায়ন করেছে। দলটি জনগণের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ ও যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করছে। তিনি বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, তরুণদের কর্মসংস্থান, জলবায়ু পরিবর্তন এবং ডিজিটাল উদ্ভাবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে ৩১ দফা কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। তার মতে, বিএনপি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী এবং সে কারণে দলটিতে নারী, তরুণ নেতা ও পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, "আমরা চাই, বিএনপির পরিচয় হোক সেবা, ন্যায়বিচার ও দক্ষতার প্রতীক হিসেবে; বিভাজন কিংবা সুবিধাভোগের প্রতীক নয়।"
জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আদর্শ
পোস্টে তিনি বলেন, বিএনপি তার ঐতিহ্যকে ধারণ করে এগিয়ে চলেছে। তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে স্মরণ করে বলেন, তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন এবং জনগণের ক্ষমতায়নকে রাজনীতির কেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। একইভাবে, বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আপসহীনভাবে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছেন। তিনি জানান, তাদের সেই আদর্শকে সামনে রেখেই বিএনপি একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ, ভবিষ্যৎমুখী এবং আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান
পোস্টের শেষে তারেক রহমান তার সহকর্মী ও নেতাদের প্রতি ঐক্যবদ্ধ, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং জনগণের সেবায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "আমি যেমন আপনাদের প্রত্যেকের ওপর আস্থা রাখি, আপনারাও তেমনি আমার ওপর আস্থা রাখুন। তাহলেই গণতন্ত্রের পথ আরও উজ্জ্বল হবে।" তিনি বিশ্বাস করেন যে, একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রব্যবস্থা, স্থিতিশীল প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো এবং গণআকাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব।
“অপরাধী যে বাহিনীরই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে”
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমনকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের মামলাগুলো সাধারণ আদালতে বিচারাধীন থাকলেও সেগুলো নিয়ে এখনো আশাব্যঞ্জক কোনো অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ রাষ্ট্রপক্ষের ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে জবানবন্দি প্রদান করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “শহীদ পরিবারগুলোর সঙ্গে যখন কথা বলি, সাধারণ আদালতে থাকা মামলাগুলো নিয়ে তাদের হতাশা প্রকাশ পায়। অনেক আসামি জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে, অথচ সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো পরিকল্পনার কথা আমরা জানতে পারছি না। তাই আমাদের দাবি, এসব মামলাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হোক।”
ন্যায়বিচারের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে নাহিদ ইসলাম বলেন, “এ আন্দোলনে অসংখ্য মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, আহত হয়েছেন, রক্ত দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ, পুলিশ ও যেসব ব্যক্তি সরাসরি জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে, শাস্তি হবে এটাই আমরা দেখতে চাই। এটি কেবল বাংলাদেশের জন্য নয়, বিশ্বের জন্যও এক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে, যে স্বৈরশাসন কায়েমকারীদের পরিণতি কী হয়।”
তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজ আমাদের সন্তুষ্ট করছে। তবে মামলার সংখ্যা অনেক। ট্রাইব্যুনালে রয়েছে, সাধারণ কোর্টেও রয়েছে, আবার গুম সংক্রান্ত অভিযোগও আছে। তাই বিচার প্রক্রিয়াকে সার্বিকভাবে দেখতে হবে।”
এনসিপি আহ্বায়ক স্পষ্ট করে জানান, শুধু রাজনৈতিক নেতৃত্ব নয়, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় হত্যাকাণ্ড ও গুমে জড়িত পুলিশ, সেনা ও অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদেরও বিচারের আওতায় আনা আবশ্যক। তিনি বলেন, “কোনো বাহিনীর কেউ যাতে দায়মুক্তি না পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। গুমের ঘটনায় অনেক অভিযোগ এসেছে। আমি নিজেও অভিযোগ দিয়েছি ডিজিএফআইয়ের যেসব কর্মকর্তা আমাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল এবং হেনস্তা করেছিল, তাদের বিরুদ্ধেও।”
রামপুরা–বাড্ডার ঘটনায় বিজিবির একজন সেনা কর্মকর্তার নাম উঠে এলেও এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, “আমাদের আবেদন হলো, অপরাধী যারাই হোক না কেন, কোন বাহিনীর তা বিবেচনা না করে, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
শেষে তিনি জোর দিয়ে বলেন, যারা জনগণের ওপর হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, গুম ও নির্যাতন করেছে এবং ফ্যাসিবাদী সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সহায়তা করেছে, তাদের সবাইকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
-রাফসান
জামায়াতের পাঁচ দফা দাবিতে আজ ঢাকায় বড় সমাবেশ
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনসহ একাধিক রাজনৈতিক দাবি সামনে রেখে রাজধানীতে আজ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে জামায়াতে ইসলামীসহ সাতটি রাজনৈতিক দল। একই লক্ষ্য সামনে রেখে তিন দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও দলগুলো পৃথকভাবে নিজেদের কর্মসূচি পালন করছে। কর্মসূচি সফল করতে প্রতিটি দলই ইতিমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে।
জামায়াত ছাড়া অন্য ছয়টি দল হলো— ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন এবং জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। প্রথম দিনের সূচি অনুযায়ী আজ রাজধানীতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রতিনিধিত্বমূলক অনুপাত (PR) পদ্ধতি নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য বিদ্যমান।
দাবিগুলোর মধ্যে প্রধান্য পেয়েছে— জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, পিআর পদ্ধতি চালু করা, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, ফ্যাসিবাদী সরকারের জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারী শক্তির সহযোগী দল জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। এর আগে দলগুলো বৃহস্পতিবার, শুক্রবার এবং ২৬ সেপ্টেম্বর—এই তিন দিনের অভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছিল।
জামায়াতের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পাঁচ দফা দাবির অংশ হিসেবে আজ বিকাল সাড়ে ৪টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে ঢাকা মহানগর শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। ওই মিছিলে নেতৃত্ব দেবেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।
একইভাবে বিকেলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করবে। একই দাবিতে খেলাফত মজলিসও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে, জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তুলে আন্দোলনে যোগ দিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। কর্মসূচি অনুযায়ী দলটি আজ ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করবে। একই দিনে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি এবং বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও রাজধানীতে পৃথক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে।
-রফিক
পাঠকের মতামত:
- বাংলাদেশ ও চীন হাতে হাত রেখে এগিয়ে যাবে: অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস
- পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দিতেই হবে: ফয়জুল করীম
- দেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর: রেমিট্যান্স প্রবাহে আবারও রেকর্ড
- টিউলিপ সিদ্দিককে ঘিরে নতুন বিতর্ক, নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন
- শাকিবের বিপরীতে ঢালিউডে অভিষেকের পথে পাকিস্তানি তারকা হানিয়া আমির
- বিরল ‘মস্তিষ্ক-খেকো’ অ্যামিবার বিস্তার, কেরালায় স্বাস্থ্য সতর্কতা
- নুরের শারীরিক অবস্থা নিয়ে জরুরি বার্তা
- স্মার্টফোনের পাসওয়ার্ড ভুলে গেছেন? ঘরে বসেই সমাধান করার উপায়
- গাজার পর এবার পূর্ব জেরুজালেমকে ঘিরে ফেলছে ইসরায়েল
- বাউফলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আটক, ছাড়াতে থানায় হাজির জামায়াত নেতা
- চাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেল ঘোষণা
- মোদি সরকারের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ
- বইপ্রেমীদের জন্য সুখবর: আগামী বইমেলার তারিখ ঘোষণা
- অবহেলা নয়: ক্যান্সারের ৫টি প্রাথমিক উপসর্গ, যা জানা জরুরি
- বিএনপি ক্ষমতায় গেলে কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী কোনো আইন করবে না: মেজর হাফিজ
- আলোচনার সময় কর্মসূচি দেওয়া গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়: মির্জা ফখরুল
- আমীর খসরু: নির্বাচিত সরকার ছাড়া অস্থিতিশীলতা কাটবে না
- সৌদি–পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে আসিফ নজরুলের পোস্ট
- জাতীয় নির্বাচন: ৭০% সরঞ্জাম কেনা শেষ
- সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ, নাহিদ ইসলামের জেরা অব্যাহত ট্রাইব্যুনালে
- শুক্রবার রাতে গ্যাস থাকবে না হাজারো গ্রাহকের ঘরে
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানি
- ব্লক মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের দাপট
- ১৮ সেপ্টেম্বরের শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- ১৮ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে ১০টি শেয়ারে বড় দরপতন
- ১৮ সেপ্টেম্বর লেনদেনে উত্থান যে ১০ টি শেয়ারে
- জনগণের আস্থা পূরণে ব্যর্থ অন্তর্বর্তী সরকার: রাশেদ খান
- রানরেটের কঠিন অঙ্ক: আবুধাবির মাঠে আজ বাংলাদেশের ভাগ্য নির্ধারিত হবে
- চবিতে ছাত্রদলের নির্বাচনী প্যানেল ঘোষণা
- শাহবাগ বিক্ষোভ ও মার্চ টু ঢাকা প্রসঙ্গে নাহিদের বিস্ফোরক তথ্য
- পুজোর আগে চড়া দামে ইলিশ: কলকাতায় বাংলাদেশের ইলিশের দাম কত?
- আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস
- দাফনের সময় নড়ে উঠল নবজাতক, চাঞ্চল্যকর ঘটনার ভিডিও ভাইরাল
- নিষিদ্ধ দলের লোকজনকে বাসা ভাড়া নয়, চট্টগ্রামে পুলিশের মাইকিং
- ডিএসই প্রকাশ করল মার্জিনযোগ্য সিকিউরিটিজ তালিকা
- বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় ভারতেরও ব্যাপার: নির্বাচন নিয়ে শ্রিংলার কড়া বার্তা
- ১৮ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজার চিত্র
- সার্কিট ব্রেকারে আটকালো ইসলামী ব্যাংক ও বেক্সিমকো শেয়ার
- যানজটে অচল ঢাকা: সাত দলের সমাবেশ ও বিসিএস পরীক্ষার্থীদের ভিড়
- বিনিয়োগকারীদের জন্য সুখবর
- ইসলামী ব্যাংক শেয়ার লেনদেন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা
- চরিত্র বদলের খেলায় শুভশ্রী গাঙ্গুলি
- জনগণের আস্থা পুনর্গঠনে কাজ করছে বিএনপি: তারেক রহমান
- জাতিসংঘে আজ গাজা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোট, ভেটো ইস্যুতে নজর যুক্তরাষ্ট্রের দিকে
- বিএনপি নেতাকে খুঁজতে এসে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, টাঙ্গাইলে চাঞ্চল্য
- ভারতীয় সিনেমায় শেখ হাসিনার চরিত্র, ট্রেলারে ফুটলো ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক
- পাকিস্তান ও সৌদি আরবের নতুন সামরিক জোট: কী আছে এই চুক্তিতে?
- বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লিতে আলোচনা
- ট্রাম্পের তালিকায় ভারত–পাকিস্তান ‘মাদক পাচারকারী’ রাষ্ট্র
- চাঁদ কি হারিয়ে যাবে? মহাকাশ গবেষণায় নতুন তথ্য
- এফটির তথ্যচিত্র: শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশের হারানো বিলিয়ন ডলারের গল্প
- উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও ভূরাজনীতি: জাপান–বাংলাদেশ সম্পর্কের ভবিষ্যৎ সমীকরণ
- অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস: উত্থান, পতন ও সভ্যতা–বিজ্ঞানে অবদান
- নেপালে অন্তর্বর্তী সরকার, নেতৃত্বে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কারকি
- জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার জরুরি: বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন
- ফাউন্ডেশনাল ইলেকশন সামনে: জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জোর দিলেন ড. ইউনূস
- লিটনের ব্যাটে স্মার্ট জয়: হংকংকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশ
- বাংলাদেশে মিথ্যা মামলা: আইনি প্রতিকার ও প্রতিরোধমূলক কৌশল
- গ্রেফতার বিএনপি নেতা হাজতে সিগারেট–ফোনে ব্যস্ত, ফাঁস হলো ছবি
- জাকসু নির্বাচনী দায়িত্বে শিক্ষকের মৃত্যু
- বরিশালে ১৭ বিয়ে কাণ্ড: বন কর্মকর্তা কবির হোসেন বরখাস্ত
- উটাহে চার্লি কার্ক হত্যা: রাজনৈতিক সহিংসতার নতুন ধাক্কায় আমেরিকার গণতন্ত্র ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা
- ১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসি’র নতুন সীমানা, ভোটারদের উদ্বেগ বহাল
- আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
- নেপালের গণঅভ্যুত্থান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা: বৈধতার সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আগামীর চ্যালেঞ্জ