‘দ্বিতীয় রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠার ঘোষণা

 কি আছে এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহারে? 

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৪ ২৩:৫১:১৪
 কি আছে এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহারে? 
জুলাই-গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ ঘোষণা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। ছবি: প্রথম আলো।

২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি বিস্তৃত ও ব্যাপক রাজনৈতিক ইশতেহার ঘোষণা করেন, যার লক্ষ্য একটি বৈষম্যহীন, গণতান্ত্রিক, মানবিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র ‘দ্বিতীয় রিপাবলিক’ প্রতিষ্ঠা। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে দেশজুড়ে দলীয় নেতা-কর্মী, শহীদ পরিবার ও আহতদের উপস্থিতিতে তিনি ‘নতুন বাংলাদেশের ইশতেহার’ নামে এই ২৪ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন।

পটভূমি ও ঘোষণার প্রেক্ষাপট

সমাবেশের সূচনায় নাহিদ ইসলাম স্মরণ করেন এক বছর আগের ঐতিহাসিক ঘোষণা—যেখানে ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের প্রতীক হিসেবে এক দফা দাবিতে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নামে। তিনি স্পষ্ট করে দেন, এই আন্দোলনের নেতৃত্ব কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়, বরং গোটা দেশের জনগণ ও অভ্যুত্থানকারী তরুণদের। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় এনসিপির জন্ম এবং আজকের এই ২৪ দফা ইশতেহার।

নাহিদ ইসলাম তাঁর বক্তব্যে বলেন, “এই ইশতেহার জনগণের স্বপ্ন ও শহীদের রক্তের ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতি। আমাদের সংগ্রাম কেবল সরকারের পরিবর্তনের জন্য নয়, বরং সেই কাঠামো বদলের জন্য, যার ভেতরে ফ্যাসিবাদ গড়ে ওঠে।”

ইশতেহারের মূল আকর্ষণ

এই ২৪ দফায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার, যেমন নতুন সংবিধান প্রণয়ন, ফ্যাসিবাদী অপরাধের বিচার, বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, নারী-যুব-সংখ্যালঘুদের ক্ষমতায়ন, শ্রমিক-কৃষকের অধিকার, প্রযুক্তিনির্ভর গবেষণা, জলবায়ু সহনশীলতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল।

প্রতিটি দফা মূলত একটি করে রাষ্ট্রীয় সংকল্প ও উন্নয়ন কর্মপরিকল্পনার ভিত্তি স্থাপন করে।

১। নতুন সংবিধান ও দ্বিতীয় রিপাবলিকের প্রবর্তন

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক পরিকাঠামো একনায়কতান্ত্রিক ও পরিবারতন্ত্রের সুবিধার্থে ব্যবহৃত হওয়ায়, এনসিপি একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছে। এই সংবিধান হবে জনগণের অংশগ্রহণে গণপরিষদের মাধ্যমে গৃহীত, যা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনায় নির্মিত হবে। নতুন সংবিধানে ব্যক্তির মর্যাদা, মৌলিক অধিকার, গণতন্ত্র, ক্ষমতার ভারসাম্য এবং আইনের শাসন সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হবে। একনায়কতন্ত্র, দলীয়করণ, বিচারব্যবস্থার ওপর নির্বাহী হস্তক্ষেপ, ও ফ্যাসিবাদী প্রবণতাকে বন্ধ করা হবে সাংবিধানিকভাবে।

২। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্বীকৃতি ও বিচার নিশ্চিতকরণ

২০২৪ সালের জুলাই মাসে ছাত্র-শ্রমিক-জনতা কর্তৃক পরিচালিত গণঅভ্যুত্থান ছিল ফ্যাসিবাদবিরোধী এক ঐতিহাসিক রূপান্তর। এনসিপি এই অভ্যুত্থানের শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদানের পাশাপাশি শাপলা গণহত্যা, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত ও বিচারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়। পাশাপাশি আহতদের পুনর্বাসন ও আজীবন রাষ্ট্রীয় সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

৩। গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ সংস্কার

জনগণের প্রকৃত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে এনসিপি এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করতে চায়, যেখানে সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো নির্বাহী বিভাগের অধীনস্থ না হয়ে স্বতন্ত্র ও কার্যকর হবে। নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে কালো টাকার প্রভাব দূর করার জন্য রাষ্ট্রীয় তহবিল থেকে নির্বাচনী ব্যয় বহনের পরিকল্পনা রয়েছে। গণতন্ত্র শুধু ভোটাধিকারেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিটি স্তরে জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

৪। বিচারব্যবস্থার ন্যায়ভিত্তিক রূপান্তর

এনসিপি চায় এমন এক বিচারব্যবস্থা, যা ক্ষমতাবানদের রক্ষা না করে, মজলুমদের পক্ষে দাঁড়াবে। ঔপনিবেশিক যুগের অসামঞ্জস্যপূর্ণ আইন সংস্কার করে মানবাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিচারনীতি চালু করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল ফাইলিং, অনলাইন ট্র্যাকিং, আলাদা সচিবালয়, বিচারক নিয়োগে স্বচ্ছতা ইত্যাদির মাধ্যমে বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর হবে।

৫। দুর্নীতিমুক্ত ও জনসেবামূলক প্রশাসন

আমলাতন্ত্রকে রাজনৈতিক দলগুলোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের বিপরীতে এনসিপি দক্ষ, নিরপেক্ষ ও সেবামুখী প্রশাসন গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে। সরকারি নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে। ডিজিটাল গভর্ন্যান্স চালু করে জনসেবার গতি বাড়ানো হবে এবং দুর্নীতির দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির নিশ্চয়তা থাকবে। Whistleblower Protection আইন প্রণয়ন করে দুর্নীতিবিরোধী সাহসী নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়া হবে।

৬। মানবাধিকার রক্ষায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কার

র‌্যাব বিলুপ্তিসহ পুলিশ ব্যবস্থার রাজনৈতিক অপব্যবহার রোধে স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে। গ্রেপ্তারে ওয়ারেন্ট বাধ্যতামূলক করা, বডি ক্যামেরা চালু, কমিউনিটি পুলিশিং চালু, এবং মানবাধিকারভিত্তিক প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা হবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে আইনি কাঠামোর আওতায় আনা হবে যাতে রাজনৈতিক নির্যাতন বন্ধ হয়।

৭। গ্রাম পার্লামেন্ট ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ

শুধু শহরকেন্দ্রিক নয়, উন্নয়ন ছড়িয়ে দিতে গ্রামে 'গ্রাম পার্লামেন্ট' গঠন করা হবে যাতে স্থানীয় সমস্যা, উন্নয়ন ও সরকারি সেবার বিষয়গুলো জনগণের অংশগ্রহণে নির্ধারিত হয়। সংসদ সদস্যদের ক্ষমতা ছাঁটাই করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্যকর করা হবে। স্থানীয় সরকারকে একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে পরিচালনা করে তা শক্তিশালী করা হবে।

৮। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও শক্তিশালী নাগরিক সমাজ

গণমাধ্যম যেন কোনো কর্পোরেট বা রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কণ্ঠস্বর না হয়ে জনগণের পক্ষ হয়ে কথা বলে, তার জন্য মালিকানার বৈচিত্র্য ও আইনি কাঠামো নিশ্চিত করা হবে। প্রেস কাউন্সিলকে সক্রিয় করা হবে এবং মিথ্যা তথ্য বা গুজব রোধে নিরপেক্ষ তথ্য যাচাই ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা হবে। নাগরিক সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণে নীতিনির্ধারণে গণতান্ত্রিক চর্চা জোরদার করা হবে।

৯। সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা

জিপিএস-চালিত অ্যাম্বুলেন্স, ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড, ইউনিক হেলথ আইডি, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সম্প্রসারণ, অঞ্চলভিত্তিক বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য নারী-সহায়ক পরিবেশ গড়ে তোলা হবে। প্রাথমিক চিকিৎসাকে মূল ভিত্তি হিসেবে ধরে একটি শক্তিশালী জাতীয় স্বাস্থ্য কাঠামো গঠন করা হবে।

১০। অন্তর্ভুক্তিমূলক ও ন্যায্য শিক্ষানীতি

সকল শিক্ষার ধারা যেমন বাংলা, ইংরেজি, মাদ্রাসা ইত্যাদির মধ্যে সমন্বয় করে জাতীয় পাঠ্যক্রম আধুনিকায়ন করা হবে। শিক্ষা হবে অধিকার, পণ্য নয়। বিজ্ঞান-প্রযুক্তিভিত্তিক, নৈতিকতা ও নাগরিক চেতনা সম্পন্ন শিক্ষার মাধ্যমে উদ্ভাবনক্ষম নাগরিক তৈরি করা হবে। শিক্ষক সমাজের মর্যাদা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

১১। গবেষণা, উদ্ভাবন ও তথ্যপ্রযুক্তি বিপ্লব

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনের লক্ষ্যে এনসিপি গবেষণা খাতে বিপ্লব ঘটানোর ঘোষণা দিয়েছে। সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে ৫০ বছরের দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প হাতে নেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে, যার আওতায় থাকবে মহাকাশ প্রযুক্তি, রাডার, AI, কোয়ান্টাম প্রযুক্তি, ন্যানোটেক, নিউক্লিয়ার সায়েন্স, সেমিকন্ডাক্টর, বায়োটেকনোলোজি প্রভৃতি ক্ষেত্রে গবেষণা ও ল্যাব প্রতিষ্ঠা। বিশ্বমানের গবেষণাগারের সঙ্গে সহযোগিতা করে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হবে। কম্পিউটেশনাল গবেষণার জন্য ন্যাশনাল কম্পিউটিং সার্ভার গঠন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ক্লাস্টার তৈরি করা হবে। সাইবার নিরাপত্তা রক্ষায় আলাদা কমিশন গঠন করা হবে।

১২। ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতিসত্ত্বার মর্যাদা

বাংলাদেশের বহুজাতিক, বহু ভাষাভিত্তিক ও বহু সংস্কৃতির সমাজে ধর্ম বা জাতিগত পরিচয়ের কারণে নিপীড়নের বিরুদ্ধে এনসিপির অবস্থান দৃঢ়। তারা প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অধিকার, মাতৃভাষায় শিক্ষার অধিকার ও ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চিত করবে। হিন্দুদের জমি দখলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা, দলিত ও তফসিলি সম্প্রদায়ের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে বিশেষ বরাদ্দ এবং সকল ধর্মে বিদ্বেষমূলক আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মানবাধিকার কমিশনের অধীনে একটি স্বতন্ত্র সেল গঠন করা হবে যা এসব নিপীড়নের তদন্ত ও পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হবে।

১৩। নারীর নিরাপত্তা, অধিকার ও ক্ষমতায়ন

নারী অংশগ্রহণের সত্যিকার নিশ্চয়তা দিতে সংসদে ১০০টি সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। উত্তরাধিকার সম্পত্তিতে নারীর অংশ, কর্মক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমবেতন, গৃহিনীর অবদানকে জিডিপির অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। প্রতিটি থানায় নারী সহিংসতা প্রতিরোধ সেল, নারী পুলিশের সংখ্যা বৃদ্ধি, ধর্ষণ মামলার ফাস্ট ট্র্যাক ট্রায়াল এবং গণমাধ্যমে ভিকটিমের পরিচয় গোপনের বিধান কার্যকর করা হবে। মাতৃত্বকালীন ও পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত, ব্রেস্টফিডিং রুম, বয়স্ক ও শিশু সেবা কেন্দ্র এবং নিরাপদ যাতায়াতের জন্য নারীবাস চালু করা হবে।

১৪। মানবকেন্দ্রিক ও কল্যাণমুখী অর্থনীতি

এনসিপি চায় এমন একটি অর্থনীতি যেখানে ব্যক্তি নয়, সমাজ ও রাষ্ট্র হবে কেন্দ্রীয়—যেখানে মানুষ, পরিবেশ, এবং সামাজিক ন্যায়বিচার থাকবে মূলধারায়। জিডিপি প্রবৃদ্ধি নয়, মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হবে উন্নয়নের সূচক। বেকার, প্রবীণ, বিধবা, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের ভাতা নাগরিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত হবে। কর কাঠামো হবে প্রগতিশীল; ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায় করে গরিবদের জন্য উন্নয়ন বরাদ্দ নিশ্চিত করা হবে। ব্যাংক, পুঁজিবাজার, সঞ্চয়পত্র ও ঋণনীতির পূর্ণ সংস্কার ঘটানো হবে।

১৫। তারুণ্য ও কর্মসংস্থান

বাংলাদেশের তরুণ জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানবসম্পদে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি ইন্টার্নশিপ সম্প্রসারণ, প্রশ্নফাঁস রোধে স্বচ্ছ নিয়োগ পরীক্ষা ব্যবস্থা, উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনা ও ফ্রিল্যান্স হাব গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে। প্রবাসে কাজের জন্য IT, নার্সিং, হসপিটালিটি ইত্যাদি খাতে ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, বিদেশি সনদপ্রাপ্তি এবং জেলা পর্যায়ে ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

১৬। বহুমুখী বাণিজ্য ও শিল্পায়ন নীতি

গার্মেন্টসনির্ভরতা কমিয়ে চামড়া, আসবাব, হালকা প্রকৌশল, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য ইত্যাদি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানো হবে। ওষুধ শিল্পের সুরক্ষা, ICT খাত সম্প্রসারণ, চট্টগ্রাম-মংলা-মাতারবাড়িকে লজিস্টিক হাবে রূপান্তর এবং শিল্প উন্নয়নে ৫০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনার জন্য জাতীয় কমিশন গঠন করা হবে।

১৭। টেকসই কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব

প্রচলিত কৃষি ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে প্রযুক্তি ও ভর্তুকি, বিষমুক্ত ও পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদন, কৃষকদের সরাসরি বিক্রয়ের সুযোগ এবং ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে অঞ্চলভিত্তিক তথ্যভাণ্ডার গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভরতা অর্জন ও কৃষি রপ্তানির উপযোগিতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা রয়েছে।

১৮। শ্রমিক-কৃষকের অধিকার

শ্রমিকদের জন্য ন্যূনতম মজুরি কাঠামো, সামাজিক সুরক্ষা, বাধ্যতামূলক কর্ম-সুরক্ষা-বীমা, পেনশন তহবিল, শ্রম ট্রাইব্যুনালের বিস্তৃতি এবং শিশুশ্রম নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দামে বিক্রির জন্য হিমাগার, কৃষি বীমা, আবহাওয়া ও বাজার সম্পর্কিত জাতীয় মোবাইল প্ল্যাটফর্ম গঠনের কথা বলা হয়েছে।

১৯। জাতীয় সম্পদ ব্যবস্থাপনা

গ্যাস, খনিজ, কয়লা, পাথরসহ প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা হবে। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে টেকসই খনন নীতি প্রণয়ন, আন্তর্জাতিক চুক্তির পুনর্বিন্যাস এবং সুন্দরবনের সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি রয়েছে।

২০। পরিকল্পিত নগরায়ন ও পরিবহন ব্যবস্থা

রাজধানীকেন্দ্রিক কেন্দ্রীয়করণ বন্ধ করে অন্যান্য শহরে সরকারি সেবা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি করা হবে। সামাজিক আবাসন, বাড়িভাড়া নীতিমালা, নদী খাল ভিত্তিক নগরায়ন, পরিবেশবান্ধব গণপরিবহন, সবুজ উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ এবং সাশ্রয়ী ও গতিশীল আন্তঃজেলা যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।

২১। জলবায়ু সহনশীলতা ও নদী-সমুদ্র রক্ষা

জলবায়ু বিপর্যয়ের ঝুঁকি মোকাবিলায় বনায়ন, নদী সংরক্ষণ, সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা, খনন নিয়ন্ত্রণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির বিস্তার, আবহাওয়া পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং জলবায়ু ক্ষতিপূরণের দাবিতে আন্তর্জাতিক ফোরামে সক্রিয় কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

২২। প্রবাসী বাংলাদেশির মর্যাদা ও অধিকার

প্রবাসীদের শুধু রেমিট্যান্স উৎস না ভেবে রাষ্ট্রের অংশীদার হিসেবে দেখার কথা বলা হয়েছে। দূতাবাসে হয়রানিমুক্ত সেবা, ভোটাধিকার, বিনিয়োগ সহায়তা, প্রবাসে মৃত্যুর পর মরদেহ ফেরত আনা এবং প্রবাসী নীতিনির্ধারণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।

২৩। বাংলাদেশকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি

বাংলাদেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চে রেখে দলনিরপেক্ষ, সার্বভৌম, স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের কথা বলা হয়েছে। সীমান্ত হত্যা বন্ধ, রোহিঙ্গা সংকটের মানবিক সমাধান, মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর সঙ্গে বন্ধুত্ব, আন্তর্জাতিক কূটনীতি ও পাবলিক ডিপ্লোম্যাসির বিস্তার হবে এই নীতির মূল লক্ষ্য।

২৪। জাতীয় প্রতিরক্ষা কৌশল

সক্ষমতা ও শৃঙ্খলাভিত্তিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গঠনের লক্ষ্য নিয়ে সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল, UAV ব্রিগেড, সাবমেরিনভিত্তিক নৌবাহিনী, সেকেন্ড স্ট্রাইক সক্ষমতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ গঠন করা হবে। প্রতিরক্ষা হবে সংসদীয় নজরদারিতে পরিচালিত, যা আঞ্চলিক শান্তি ও কূটনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখবে।

ইশতেহার ঘোষণার শেষ মুহূর্তে নাহিদ ইসলাম আবারও জনগণকে স্মরণ করিয়ে দেন শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া শপথের কথা—এই দেশকে স্বৈরতন্ত্রের কবল থেকে মুক্ত করার। তিনি বলেন, “আপনারা সাড়া দিয়েছেন, ফ্যাসিবাদকে পরাজিত করেছেন। এখন সময় এসেছে নতুন বাংলাদেশ গড়ার।”


তারেক রহমানের ফ্লাইটে টিকিট নিয়ে হুলুস্থুল: সব ‘সোল্ড আউট’!

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ২১:১৯:৪০
তারেক রহমানের ফ্লাইটে টিকিট নিয়ে হুলুস্থুল: সব ‘সোল্ড আউট’!
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর সকালে তিনি ঢাকায় পা রাখবেন। মঙ্গলবার এক আলোচনা সভায় তিনি নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন।

তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবরে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, তিনি বাংলাদেশ বিমানের বিজি-২০২ ফ্লাইটে দেশে ফিরবেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ওই নির্দিষ্ট ফ্লাইটের টিকিট কাটার জন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে রীতিমতো হিড়িক পড়ে যায়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, অনেক নেতা তাদের প্রিয় নেতার সফরসঙ্গী হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই ওই ফ্লাইটের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। লন্ডন সময় ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে তিনি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। তার সঙ্গে অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী থাকতে পারেন।

এদিকে দেশে ফেরার সময় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে ভিড় না করার জন্য যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতাকর্মীদের অনুরোধ জানিয়েছেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, বিমানবন্দরে ভিড় করলে হট্টগোল সৃষ্টি হতে পারে, যাতে দেশের ও দলের সুনাম নষ্ট হবে। তাই কাউকে বিমানবন্দরে না যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

তারেক রহমানের আগেই তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান ঢাকায় পৌঁছেছেন। তাদের একমাত্র মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমানও বাবার সঙ্গে একই ফ্লাইটে দেশে ফিরতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসভবনটি তারেক রহমানের বসবাসের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। বাড়ির সংস্কারকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরা ও পুলিশ বক্স। দেয়াল রং করা হয়েছে এবং গেট বড় করা হয়েছে।

বিএনপির মিডিয়া সেল জানিয়েছে, কোনো কারণে গুলশানের বাসা পুরোপুরি প্রস্তুত না হলে তিনি মা বেগম খালেদা জিয়ার ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় উঠবেন। দেশে ফিরে তিনি গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অফিস করবেন।

এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাদের ‘প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা’ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এ কে এম শামছুল ইসলামকে।

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিলেন তারেক রহমান। এরপর রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কারণে দীর্ঘ দেড় যুগ তাকে দেশের বাইরে অবস্থান করতে হয়।


ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির চিকিৎসা নিয়ে নতুন তথ্য

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৩:৫০:৩৬
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হাদির চিকিৎসা নিয়ে নতুন তথ্য
ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র এবং ঢাকা–৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি বর্তমানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে গত সোমবার তাকে বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

বুধবার সকালে ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শরিফ ওসমান হাদির শারীরিক অবস্থা এখনো পুরোপুরি স্থিতিশীল হয়নি। অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে শরীরকে সম্পূর্ণভাবে স্থিতিশীল অবস্থায় আনার প্রয়োজন রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এই ধাপটি সফলভাবে সম্পন্ন হলে পরবর্তী চিকিৎসা প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা হবে।

ইনকিলাব মঞ্চের বরাতে শরিফ ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, চিকিৎসা সিঙ্গাপুর কিংবা প্রয়োজনে ইংল্যান্ডে সম্পন্ন হতে পারে। ব্রেনের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধারে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন বলে চিকিৎসকরা মনে করছেন। বর্তমানে চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হলো শরীর ও মস্তিষ্কের মধ্যকার সংযোগ পুনঃস্থাপন করা। বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, মস্তিষ্ক ছাড়া শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সক্রিয় রয়েছে।

এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডের বিজয়নগর এলাকায় হামলার শিকার হন শরিফ ওসমান হাদি। তিনি একটি রিকশায় করে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় গুলিতে তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে।

হামলার পরপরই তাকে দ্রুত রাজধানীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। বাংলাদেশ সময় সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে তাকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, এই হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দুই ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজন ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খান, যাকে প্রধান সন্দেহভাজন শ্যুটার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অপরজন আলমগীর হোসেন, যিনি মোটরসাইকেল চালকের ভূমিকায় ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত এই দুই মূল সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

-রফিক


ঈশ্বরদীতে বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১৩:৪৬:৪১
ঈশ্বরদীতে বিএনপি নেতাকে গুলি করে হত্যা
ছবি: সংগৃহীত

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বিএনপির এক স্থানীয় নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। নিহত ব্যক্তি লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক বিরু মোল্লা, বয়স প্রায় ৬০ বছর। অভিযোগ উঠেছে, তার আপন চাচাতো ভাই জহুরুল ইসলাম মোল্লাই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত।

বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর সকালে আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলার লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর চরাঞ্চলের জমিতে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরু মোল্লা ও তার চাচাতো ভাই জহুরুল ইসলাম মোল্লার মধ্যে বিরোধ চলছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বুধবার সকালে ওই বিরোধ মীমাংসার উদ্দেশ্যে বিরু মোল্লা জহুরুল ইসলাম মোল্লার বাড়িতে যান। এ সময় কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে এক পর্যায়ে জহুরুল ইসলাম মোল্লা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে বিরু মোল্লাকে গুলি করেন।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় বিরু মোল্লাকে দ্রুত ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তবে সেখানে পৌঁছানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমিনুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছে এবং হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম চলছে। অভিযুক্তকে আটক ও ঘটনার পেছনের বিস্তারিত কারণ উদঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে বলেও তিনি জানান।

-শরিফুল


বিমানবন্দর থেকে গুলশান: তারেককে বরণ করতে বিশাল শোডাউনের ছক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১০:৫৮:০৬
বিমানবন্দর থেকে গুলশান: তারেককে বরণ করতে বিশাল শোডাউনের ছক
ফিরেই ‘মাঠে’ নামবেন তারেক রহমান

দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে অবশেষে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি ঢাকায় পা রাখবেন—এমন খবরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।

দলের দ্বিতীয় প্রধান নেতাকে বরণ করে নিতে রাজধানীতে চলছে সর্বাত্মক প্রস্তুতি। বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত রাজপথ দখলে রাখার পরিকল্পনা করেছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে গঠিত হচ্ছে একাধিক বিশেষ অভ্যর্থনা কমিটি।

তারেক রহমানের বসবাসের জন্য গুলশান অ্যাভিনিউর ১৯৬ নম্বর বাড়িটি প্রস্তুত করা হচ্ছে। এই বাড়ির দলিল সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেছে। তবে দেশে ফেরার পর শুরুতে তিনি মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে ‘ফিরোজা’ বাসভবনে থাকতে পারেন বলে জানা গেছে।

বাসভবনের পাশাপাশি তারেক রহমানের দাপ্তরিক কাজের জন্য গুলশান ও নয়াপল্টনের কার্যালয়ে ব্যাপক সংস্কারকাজ চলছে। গুলশানে চেয়ারপারসনের কক্ষের পাশেই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য তৈরি হচ্ছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন নতুন চেম্বার।

সেখানে ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থা, ল্যাপটপ এবং বৈঠকের জন্য লাউঞ্জের ব্যবস্থা থাকছে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের দোতলায়ও তার জন্য একটি সাদামাটা কিন্তু কর্মমুখী কক্ষ প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেন তিনি তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে সহজে মিশতে পারেন।

দেশে ফিরেই নির্বাচনী প্রচারণায় নামার ঘোষণা দিয়েছেন তারেক রহমান। গত সোমবার বিজয় দিবসের এক ভার্চুয়াল আলোচনায় তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচনে গ্রামে-গঞ্জে ও রাজপথে তিনি নেতাকর্মীদের সঙ্গেই মিছিলে থাকবেন।

নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কে ১০/সি বাড়িটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। এখান থেকেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কৌশল ও প্রচারণামূলক কাজ মনিটরিং করা হবে। সেখানে গবেষণা সেল ও ব্রিফিং রুম চালু করা হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ২৫ ডিসেম্বর বিমানবন্দর এলাকায় লাখো নেতাকর্মী সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে অভ্যর্থনা জানাবেন। তারেক রহমানের এই প্রত্যাবর্তন দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


বিজয় দিবসে বড় ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ১০:২৮:০৬
বিজয় দিবসে বড় ঘোষণা দিলেন তারেক রহমান
ছবি: সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রবাসজীবনের অবসান ঘটিয়ে চলতি মাসের শেষ দিকে দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করবেন বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দেওয়া এক বক্তব্যে।

মঙ্গলবার ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের লন্ডনে যুক্তরাজ্য বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন। বক্তব্যে তারেক রহমান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরার পাশাপাশি নিজের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক ও গৌরবের দিন। একই সঙ্গে তিনি স্মরণ করেন যে প্রায় ১৭ থেকে ১৮ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে এখানকার নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক সম্পর্ক গভীরভাবে গড়ে উঠেছে। তবে আসন্ন ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফিরে যাচ্ছেন বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তারেক রহমান বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সতর্ক বার্তা উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, সামনে যে সময় আসছে তা সহজ হবে না এবং নানা ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলাই হবে সবচেয়ে বড় শক্তি।

তিনি আরও বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে পারলে বিএনপির রাজনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে এবং জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী একটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা যাবে।

-রাফসান


এয়ারপোর্টে আসবেন না: লন্ডন ছাড়ার আগে তারেক রহমানের বার্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৭ ০৮:৪৭:৩৭
এয়ারপোর্টে আসবেন না: লন্ডন ছাড়ার আগে তারেক রহমানের বার্তা
ছবি : সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডনে আয়োজিত বিজয় দিবসের এক বিশাল সমাবেশে নিজের দেশে ফেরার চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করে জানিয়েছেন যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি দীর্ঘ প্রবাস জীবনের ইতি টেনে বাংলাদেশে ফিরছেন। মঙ্গলবার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এই সভায় তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে একটি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বলেন যে দেশে ফেরার দিন তাকে বিদায় জানাতে যেন কেউ লন্ডন বিমানবন্দরে ভিড় না করেন। তারেক রহমান আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে বিমানবন্দরে অতিরিক্ত জনসমাগম অপ্রীতিকর হট্টগোল সৃষ্টি করতে পারে এবং বিদেশিরা যখন দেখবে যে ভিড় করা সবাই বাংলাদেশি তখন এতে বিদেশের মাটিতে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বিএনপি নেতা কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন এবং বলেন যে এই দীর্ঘ সময়ে প্রবাসে বহু মানুষের সঙ্গে তার দেখা হয়েছে এবং তিনি তাদের সঙ্গে নিজের অনেক সুখ-দুঃখ ও কষ্ট ভাগ করে নিয়েছেন। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন যে সবার সঙ্গে তার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে কিন্তু দেশের বৃহত্তর স্বার্থে বিদায়বেলায় শৃঙ্খলা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে যারা তার এই অনুরোধ রক্ষা করে বিমানবন্দরে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন তিনি ধরে নেবেন তারাই প্রকৃত অর্থে দল ও দেশের সম্মানের প্রতি মর্যাদা প্রদর্শন করেছেন। বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তারেক রহমান নিজের এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য উপস্থিত সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন এবং ২৫ ডিসেম্বর তার এই প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।


বিজয় দিবসেই লন্ডনের মঞ্চে শেষবারের মতো তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:৫৫:৫৪
বিজয় দিবসেই লন্ডনের মঞ্চে শেষবারের মতো তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে ফেরার চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আজ মঙ্গলবার মহান বিজয় দিবসের দিনে লন্ডনে নিজের শেষ দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিদায় ও দিকনির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় লন্ডনের সিটি প্যাভিলিয়নে আয়োজিত এই সমাবেশে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এবং নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন। লন্ডনের স্থানীয় বিএনপি নেতারা নিশ্চিত করেছেন যে সময়ের স্বল্পতার কারণে কমিউনিটি ও সুধীজনদের সঙ্গে আলাদা কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি তাই আজকের এই সমাবেশটিই কার্যত তারেক রহমানের আনুষ্ঠানিক বিদায়ী অনুষ্ঠান হিসেবে গণ্য হচ্ছে।

যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খসরুজ্জামান খসরু জানিয়েছেন যে প্রিয় নেতার দেশে ফেরার আগে লন্ডনে অনুষ্ঠিতব্য এই সম্ভাব্য শেষ জনসভায় অংশ নেওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং অনুষ্ঠানটি সফল করতে দলের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আজকের এই হাইভোল্টেজ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক এবং সভা পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদ। দলীয় সূত্রমতে জানা গেছে আগামী ২৪ ডিসেম্বর তারেক রহমান যখন লন্ডনের কিংস্টনের বাসভবন থেকে হিথ্রো বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হবেন তখন রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে হাজারো নেতাকর্মী তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানাবেন। উল্লেখ্য ২০০৭ সালের এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর কারাবরণ এবং পরবর্তীতে ২০০৮ সালে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর পর থেকে দীর্ঘ দেড় যুগ ধরে তিনি সেখানেই অবস্থান করছিলেন এবং আজকের এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তার দীর্ঘ লন্ডন অধ্যায়ের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে।


তারেককে নিয়ে রিল বানালেই পুরস্কার! বিএনপির অভিনব ঘোষণা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১৮:২৭:২২
তারেককে নিয়ে রিল বানালেই পুরস্কার! বিএনপির অভিনব ঘোষণা
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৮ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আগামী ২৫ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার এই প্রত্যাবর্তনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে এক উৎসবমুখর পরিবেশ। তারেক রহমানের ঢাকায় বসবাসের জন্য গুলশান এভিনিউয়ের ১৯৬ নম্বর বাসাটি চূড়ান্ত করা হয়েছে যা মূলত সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর তৎকালীন সরকারের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তে খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এবং সম্প্রতি গণপূর্ত উপদেষ্টা ও রাজউক চেয়ারম্যান এই বাড়ির দলিলপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে হস্তান্তর করেছেন। তারেক রহমানের নতুন এই বাসভবনটি খালেদা জিয়ার বর্তমান বাসভবন ‘ফিরোজা’র ঠিক পাশেই অবস্থিত এবং সেখানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে যে নিরাপত্তার জন্য বাসার সামনে ছাউনি বসানো হয়েছে এবং সড়কজুড়ে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে।

তারেক রহমানের দাপ্তরিক কাজ পরিচালনার জন্য গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয় এবং নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলাদা চেম্বার প্রস্তুত করার পাশাপাশি গুলশানের ৯০ নম্বর সড়কের ১০/সি বাড়িটি নতুন অফিস হিসেবে ভাড়া নেওয়া হয়েছে যেখান থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। চারতলা বিশিষ্ট এই নতুন ভবনে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি দোতলায় ব্রিফিং রুম এবং অন্যান্য তলায় গবেষণা সেলসহ বিভিন্ন বিভাগের জন্য বসার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে এই নতুন কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন ‘আমার ভাবনায় বাংলাদেশ’ শিরোনামে একটি জাতীয় রিল মেকিং প্রতিযোগিতার ঘোষণা দেন এবং জানান যে এই কার্যালয়টি মূলত নির্বাচনী কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হবে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন যে আগামী ২৫ ডিসেম্বর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সড়কের দুই পাশে সুশৃঙ্খলভাবে অবস্থান নিয়ে তাদের প্রিয় নেতাকে রাজকীয় অভ্যর্থনা জানাবেন। এই প্রস্তুতি সফল করতে গতকাল গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর এক যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে অভ্যর্থনার বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান আবেগঘন কণ্ঠে বলেন যে তারা বহু বছর ধরে এই দিনটির অপেক্ষায় ছিলেন এবং তারা বিশ্বাস করেন যে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই দেশে হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং একটি আধুনিক ও স্বনির্ভর রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।


৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ: রাশেদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ১৬ ১১:৩০:৩৩
৫০ জন প্রার্থীকে হত্যার মিশন নিয়েছে আওয়ামী লীগ: রাশেদ
ছবি : সংগৃহীত

মহান বিজয় দিবসের দিনে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান এক বিস্ফোরক অভিযোগ উত্থাপন করে বলেছেন যে আওয়ামী লীগ একটি ভয়ংকর মিশন হাতে নিয়েছে যার অংশ হিসেবে তারা প্রায় ৫০ জন সম্ভাব্য প্রার্থীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছে। মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি দাবি করেন যে এই হত্যা মিশনের শুরুটা হয়েছে বিপ্লবী যোদ্ধা ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠস্বর ওসমান হাদির ওপর হামলার মধ্য দিয়ে যাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই মাথায় গুলি চালানো হয়েছিল। হাদির ওপর হামলার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সাম্প্রতিক ঘোষণার সমালোচনা করে রাশেদ খান বলেন যে আসামিদের ধরিয়ে দিতে ৫০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণার বিষয়টি প্রমাণ করে গোয়েন্দা সংস্থা পুলিশ র‍্যাব ও যৌথ বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। তিনি সরকারের প্রতি ইঙ্গিত করে মন্তব্য করেন যে এর আগে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ ঘোষণা করা হলেও এখন সময় এসেছে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ২’ শুরু করার যার লক্ষ্য হওয়া উচিত খোদ সরকারে উপদেষ্টা পরিষদে ও বিভিন্ন দপ্তরে ঘাপটি মেরে থাকা ফ্যাসিবাদের দোসরদের খুঁজে বের করা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন যে রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের অযোগ্যতা অদক্ষতা এবং উপদেষ্টাদের মধ্যে চরম সমন্বয়হীনতা দৃশ্যমান হয়েছে এবং তারা আমেরিকা বা ইউরোপের মতো উন্নত রাষ্ট্র ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখালেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি।

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও সাম্য মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে না পারার আক্ষেপ জানিয়ে তিনি বলেন যে একাত্তরের মুক্তিযোদ্ধারা যে স্বপ্নের কথা বলেছিলেন তা আজও অধরা রয়ে গেছে। আওয়ামী লীগের কঠোর সমালোচনা করে ছাত্রনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া রাশেদ খান মন্তব্য করেন যে যারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি দাবি করে তারাই মূলত ২০১৪ ২০১৮ ও ২০২৪ সালের পাতানো নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তিনি আরও যোগ করেন যে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও বাকস্বাধীনতার যে বাংলাদেশ গড়ার কথা ছিল তা আওয়ামী লীগের দুঃশাসনের কারণে সম্ভব হয়নি বরং তারা মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনাকেই ভূলুণ্ঠিত করেছে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত