"একনায়কতন্ত্রের পর গণতন্ত্রের সূচনা"

সত্য নিউজ: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, "১৬ বছরের একনায়কতান্ত্রিক শাসনের ভূমিকম্পের পর বাংলাদেশের সামনে এখন এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।" ২০২৪ সালের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এই রাজনৈতিক রূপান্তরের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।
শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের শাসনামলকে তিনি চিহ্নিত করেছেন 'ভীতি ও দুর্নীতির যুগ' হিসেবে। একটি সরকারি শ্বেতপত্র অনুযায়ী, তার সরকারের মেয়াদে প্রতিবছর গড়ে ১৬ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড, গুম এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের একাধিক মামলা চলমান, যদিও তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত একাধিক সংস্কার কমিশন-নির্বাচন, বিচারব্যবস্থা ও সংবিধানসহ এখন একটি ‘জাতীয় ঐকমত্যের খসড়া’ (Charter of Consensus) তৈরির কাজ করছে, যার মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে এই ঐকমত্য সহজে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। বিশেষ করে নারী অধিকার কমিশনের সুপারিশ ইসলামি উত্তরাধিকার আইনে সংশোধনের প্রস্তাব রক্ষণশীল ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রবল প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। আবার, শিক্ষাখাত বা শিল্পনীতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে কমিশনের অনুপস্থিতি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি ড. আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে বিচারপতি নিয়োগে স্বতন্ত্র পদ্ধতি চালু হয়েছে এবং জুলাইয়ের মধ্যে চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশের পরিকল্পনা রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর কিংবা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে। ড. ইউনূস স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তিনি নিজে নির্বাচনে অংশ নেবেন না।
অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল, এবং নাগরিকদের মধ্যে ৬০ শতাংশ এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট নন। রাজপথে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের ধারাবাহিকতাও বিরাজমান।
প্রতিবাদগুলোর মূল দাবি এখন 'আওয়ামী লীগের বিচার'। দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন, ফলে তারা আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। তবে দলটির শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ আরাফাত একে 'জনগণের রায়ের অপমান' বলে উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, "আমরা আমাদের অবস্থান ফিরে পেতে লড়াই চালিয়ে যাবো।"
দ্য ইকোনমিস্ট তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে লিখেছে, ক্ষমতার বাইরে থেকেও আওয়ামী লীগ হয়তো নতুন করে অস্থিরতা সৃষ্টির সক্ষমতা ধরে রেখেছে। তবুও বর্তমান সরকারের লক্ষ্য একটি গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক ও স্বচ্ছ রাষ্ট্র ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন।
বাংলাদেশ আজ দাঁড়িয়ে আছে রাজনৈতিক রূপান্তরের এক সন্ধিক্ষণে যেখানে গণতন্ত্র শুধু প্রতিশ্রুতি নয়, বরং পুনর্গঠনের বাস্তব পরীক্ষা।
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- মাহফুজ আলমের ফেইসবুক পোস্ট: কি বার্তা দিলেন?
- আবারও খুলছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারের দুয়ার!
- “ইশরাককে দায়িত্ব দাও, শহর বাঁচাও!”- কেন এই স্লোগান!
- ভারত-পাকিস্তান সাম্প্রতিক সংঘাত: কারও প্রকৃত বিজয় নেই, শুধু দাবির প্রতিযোগিতা
- ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি: কাগজে শান্তি, মাটিতে অনিশ্চয়তা
- রেলওয়ের আয় ১ টাকা, খরচ ২.৫!নৈপথ্যে কারন?
- চীনের কৌশলগত সহায়তায় পাকিস্তানের সামরিক শক্তির উত্থান: আঞ্চলিকশক্তির নতুন বিন্যাস
- ১০৩ বছরের নীরবতা ভাঙল এল ক্লাসিকো, দেখল অভাবনীয় গোলবন্যা!
- গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- তারেক রহমানের প্রশ্ন: অন্তর্বর্তী সরকার কি স্বৈরাচারের পুনর্বাসন করছে?
- শেয়ার বাজারে স্বরণকালের বড় ধ্বসঃ নেপথ্যে কি?
- হবিগঞ্জে সংঘর্ষে আহত অন্তত ৪০, কয়েকটি বাড়িঘর ভাঙচুর
- নেইমার কিনলেন ১৫ কোটি টাকার ফেরারি: কারন শুনলে অবাক হবে
- আ.লীগ নিষিদ্ধে বিএনপি কি দ্বিধায়?
- কম খরচে উচ্চশিক্ষার সুযোগ: সহজ এবং সাশ্রয়ী ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যেখানে পড়াশোনা করা সম্ভব