মির্জা ফখরুলের বিবৃতি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, বিএনপির স্বস্তি—নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় দলটি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ১৯:৪০:৪৯
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, বিএনপির স্বস্তি—নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় দলটি

সত্য নিউজ: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ রবিবার এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিলম্বে হলেও সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাদের পূর্ববর্তী দাবির প্রতিফলন এবং রাজনৈতিক শুদ্ধির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা আনন্দিত যে বিলম্বে হলেও গত রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করার এবং বিচারকার্য নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপি গত ১০ ফেব্রুয়ারি এবং সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে যে লিখিত পত্র দিয়েছিল, তাতে তারা স্পষ্টভাবে দাবি করেছিল—“গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে” এবং “ফ্যাসিবাদী দল ও সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে যুক্তদের বিচার করে দেশের রাজনীতিকে জঞ্জালমুক্ত করতে হবে।”

সাম্প্রতিক আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এরপর শুক্রবার বিকেল থেকে শাহবাগ মোড়ে চলতে থাকা অবরোধের মধ্যেই শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, “আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে দলটির যাবতীয় কার্যক্রম সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার আওতায় সাইবার স্পেসও অন্তর্ভুক্ত।”

এ বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, সরকার সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে যে বিচারিক উদ্যোগ নিয়েছে, তা যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী। তবে বিএনপির দাবি আগেই মেনে নেওয়া হলে সরকারকে ‘চাপের মুখে সিদ্ধান্ত’ নিতে হতো না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবসময়ই আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথা বলেছি। সভা-সমাবেশ ও সংলাপসহ প্রতিটি মাধ্যমে আমরা এই দাবি তুলে ধরেছি।”

তবে বিবৃতিতে এও উল্লেখ করা হয় যে, বিএনপি অতীতে প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, যার একটি উদাহরণ হলো—বিগত সরকারের মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ।

অবিলম্বে নির্বাচনের দাবিও পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জনগণ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন লড়াই করে আসছে। গুম, খুন, জেল ও নিপীড়নের মধ্য দিয়েও জনগণের সেই দাবি আজও পূরণ হয়নি।”

বিবৃতির শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল আহ্বান জানান, দ্রুত একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণা করে জনমনে জন্ম নেওয়া ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা নিরসনের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত