মির্জা ফখরুলের বিবৃতি

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, বিএনপির স্বস্তি—নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় দলটি

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১১ ১৯:৪০:৪৯
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ, বিএনপির স্বস্তি—নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় দলটি

সত্য নিউজ: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। আজ রবিবার এক বিবৃতিতে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, বিলম্বে হলেও সরকারের এই সিদ্ধান্ত তাদের পূর্ববর্তী দাবির প্রতিফলন এবং রাজনৈতিক শুদ্ধির পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা আনন্দিত যে বিলম্বে হলেও গত রাতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদী সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করার এবং বিচারকার্য নির্বিঘ্ন করার স্বার্থে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিএনপি গত ১০ ফেব্রুয়ারি এবং সর্বশেষ ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতে যে লিখিত পত্র দিয়েছিল, তাতে তারা স্পষ্টভাবে দাবি করেছিল—“গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আওয়ামী লীগকে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে” এবং “ফ্যাসিবাদী দল ও সংশ্লিষ্ট সরকারের সঙ্গে যুক্তদের বিচার করে দেশের রাজনীতিকে জঞ্জালমুক্ত করতে হবে।”

সাম্প্রতিক আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আন্দোলনকারীরা গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। এরপর শুক্রবার বিকেল থেকে শাহবাগ মোড়ে চলতে থাকা অবরোধের মধ্যেই শনিবার রাতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, “আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা, এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার স্বার্থে দলটির যাবতীয় কার্যক্রম সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে, যার আওতায় সাইবার স্পেসও অন্তর্ভুক্ত।”

এ বিষয়ে বিএনপির প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, সরকার সংশ্লিষ্ট আইন সংশোধন করে যে বিচারিক উদ্যোগ নিয়েছে, তা যৌক্তিক এবং সময়োপযোগী। তবে বিএনপির দাবি আগেই মেনে নেওয়া হলে সরকারকে ‘চাপের মুখে সিদ্ধান্ত’ নিতে হতো না বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবসময়ই আইনসম্মত প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কথা বলেছি। সভা-সমাবেশ ও সংলাপসহ প্রতিটি মাধ্যমে আমরা এই দাবি তুলে ধরেছি।”

তবে বিবৃতিতে এও উল্লেখ করা হয় যে, বিএনপি অতীতে প্রশাসনিক আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল, যার একটি উদাহরণ হলো—বিগত সরকারের মেয়াদ শেষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদ।

অবিলম্বে নির্বাচনের দাবিও পুনর্ব্যক্ত করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে জনগণ ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নিরবচ্ছিন্ন লড়াই করে আসছে। গুম, খুন, জেল ও নিপীড়নের মধ্য দিয়েও জনগণের সেই দাবি আজও পূরণ হয়নি।”

বিবৃতির শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল আহ্বান জানান, দ্রুত একটি সুনির্দিষ্ট নির্বাচন রোডম্যাপ ঘোষণা করে জনমনে জন্ম নেওয়া ক্ষোভ ও অনিশ্চয়তা নিরসনের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে।


দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১১:৫৩:৪২
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস
ছবিঃ সংগৃহীত

আগামী শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আজ সকাল ১১টার দিকে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির পরিদর্শন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস।

প্রধান উপদেষ্টা মন্দিরে পৌঁছে পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখেন এবং সেখানে উপস্থিত পুরোহিত, ভক্ত ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে তিনি শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এ সময় তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের আগাম শুভেচ্ছা জানান এবং শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্‌যাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার এ সফরকে হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতারা আন্তরিক স্বাগত জানান। তারা জানান, এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক সৌহার্দ্যকে আরও সুদৃঢ় করবে। ঢাকেশ্বরী মন্দির কমিটির প্রতিনিধিরা এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে পূজা উপলক্ষে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও সহায়তার বিষয়েও কথা বলেন।

দুর্গাপূজা দেশের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। প্রতিবছরই রাজধানীসহ সারাদেশে লাখো মানুষ এতে অংশ নেয়। প্রধান উপদেষ্টার এই সফরকে অনেকেই সরকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গির প্রতীক হিসেবে দেখছেন।

-নাজমুল হোসেন


ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ইসিতে পৌঁছাতে শুরু করেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১১:৩৯:২১
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন: ইসিতে পৌঁছাতে শুরু করেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম
ছবিঃ সত্য নিউজ

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনী সরঞ্জাম গ্রহণ শুরু করেছে। ঢাকার আগারগাঁওয়ে ইসির প্রধান কার্যালয়ে একে একে পৌঁছাচ্ছে ব্যালট বাক্স থেকে শুরু করে ফরম, সিল, প্যাকেটসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী।

ইসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কয়েক মাস আগে জারি করা ওয়ার্ক অর্ডারের ভিত্তিতে চলতি সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই ধাপে ধাপে এসব সরঞ্জাম সরবরাহ শুরু হয়েছে। অন্তত ছয় ধরনের সরঞ্জাম কমিশনের গুদামে এসে পৌঁছাচ্ছে, যা গত বৃহস্পতিবার ও আজ রেকর্ড করা হয়েছে।

আজ ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ, অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নওয়াজসহ কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইসি ভবনের বেইসমেন্টে অবস্থিত গুদাম পরিদর্শন করেন। এ সময় তারা ব্যালট বাক্স, তালা, ঢাকনা, জুটের বস্তা, সিল, বিভিন্ন ধরনের ফরম ও প্যাকেটসহ কেনাকাটা করা সামগ্রী সরেজমিনে পরীক্ষা করেন।

ইসির ঘোষিত কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়ে ধাপে ধাপে ফরম ও প্যাকেট বিতরণ করা হবে। এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, “আজ বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা নিয়ে আমাদের বৈঠক হয়েছে। নির্বাচনী সামগ্রী ইতোমধ্যেই আসতে শুরু করেছে। কিছু সামগ্রীর প্রায় অর্ধেক হাতে এসেছে, বাকিগুলোও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চলে আসবে বলে আমরা আশাবাদী।”

অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নওয়াজ বলেন, “আমরা আশা করছি সেপ্টেম্বরের মধ্যেই সব ধরনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হাতে থাকবে।”

ইসি জানিয়েছে, দেশের ৬৪ জেলার ১০ অঞ্চলের ৩০০ সংসদীয় আসনে বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখ ৬১ হাজার ২০১ জন। গড়ে প্রতি ৩ হাজার ভোটারের জন্য একটি কেন্দ্রের হিসেবে ৪২ হাজার ৬১৮টি ভোটকেন্দ্র প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে মোট বুথের সংখ্যা হবে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪৬। আগামী ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আরও বলেন, “পিতলের সিল ও সিলিং ওয়াক্স ছাড়া অন্যান্য সব সরঞ্জাম যথাসময়ে আসছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আমাদের হাতে সব উপকরণ এসে যাবে বলে আমরা আশাবাদী।”

নির্বাচনকে সামনে রেখে এই সরঞ্জাম গ্রহণ ও বিতরণ প্রক্রিয়া চলমান থাকা মানে এখন থেকে মাঠপর্যায়ে প্রশাসনিক প্রস্তুতিও গতি পাবে। পর্যাপ্ত ও মানসম্মত সরঞ্জাম হাতে এলে ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে কমিশনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি আরও মজবুত হবে।

-ইশতিয়াক আহামেদ


ইইউ-বাংলাদেশ কূটনীতি: গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জলবায়ু মোকাবিলায় যৌথ অঙ্গীকার

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৬ ১১:০৩:৩৯
ইইউ-বাংলাদেশ কূটনীতি: গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জলবায়ু মোকাবিলায় যৌথ অঙ্গীকার
ছবিঃ ইউ এন বি

বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্পর্ক এখন এক কৌশলগত পর্যায়ে পৌঁছেছে। মানবাধিকার সুরক্ষা, অর্থনৈতিক সম্ভাবনার সৃষ্টি এবং গণতন্ত্রের বিকাশ—সবকিছুর মধ্যেই রয়েছে এই অংশীদারিত্বের মূল দর্শন। ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক আলোচনায় ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার এসব মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন অব ফরমার অ্যাম্বাসেডরস (AOFA), যেখানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আবদুল্লাহ আল হাসান।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে রয়েছে। এই সময়ে ইইউ বাংলাদেশের সঙ্গে থেকে গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়াকে সহায়তা করতে চায় এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দ্রুত সাড়া দিতে প্রস্তুত। তিনি উল্লেখ করেন, “এটি একটি অনন্য সুযোগ, যেখানে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং নাগরিক সমাজের জন্য মুক্ত পরিবেশ তৈরির সুযোগ রয়েছে।”

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি জানান, ইইউ বাংলাদেশকে “মুক্ত ও সুষ্ঠু” নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতিতে সহযোগিতা করছে এবং নাগরিক ও ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার উদ্যোগকে সমর্থন দিচ্ছে।

অর্থনৈতিক খাতেও ইইউ বাংলাদেশের এক শক্তিশালী অংশীদার। রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাংক (EIB) এ বছর শেষে বাংলাদেশের জন্য দ্বিগুণ ঋণ সহায়তা দেবে, যা জানুয়ারিতে ইআইবি ভাইস প্রেসিডেন্টের দেওয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন। তিনি বলেন, ইউরোপের ‘গ্লোবাল গেটওয়ে’ উদ্যোগ পরিবহন, জ্বালানি, পানি, ডিজিটাল ও টেলিকম খাতে নিরাপদ ও টেকসই সংযোগ বাড়াতে কাজ করছে, যা বাংলাদেশের উন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করবে।

রাষ্ট্রদূত জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ইউরোপের জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। “আপনাদের স্থিতিশীলতা মানে আমাদের স্থিতিশীলতা, আপনাদের সমৃদ্ধি মানে আমাদের সমৃদ্ধি।”

গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কথা তুলে ধরে মিলার বলেন, ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকায় সফরের মাধ্যমে তিনি জানতে চেষ্টা করছেন স্থানীয় মানুষদের প্রয়োজন ও ইইউ-অর্থায়িত প্রকল্পের প্রভাব। “আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো সরাসরি জনগণের মুখে শুনে জানা—কি ঘটছে বাস্তবে,” তিনি বলেন।

বাণিজ্য বিষয়ে তিনি উল্লেখ করেন, ইইউ বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত ও ন্যায্য বাণিজ্য নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে একসঙ্গে কাজ করছে। এ ছাড়া ইইউ তাদের বাজেট থেকে ইউরোপের বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ নিশ্চিতে গ্যারান্টি দিচ্ছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে সরাসরি প্রবৃদ্ধি আনবে।

রাষ্ট্রদূত মিলারের বক্তব্যে স্পষ্ট, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক রূপান্তরের অংশীদার হতে চায়—গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করা থেকে শুরু করে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা পর্যন্ত।

-সুত্রঃ ইউ এন বি


পিতৃত্বকালীন ছুটি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা!

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৮:৩৪:৫০
পিতৃত্বকালীন ছুটি পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশিরা!
ছবিঃ সংগৃহীত

বাংলাদেশে পিতৃত্বকালীন ছুটির আইনি স্বীকৃতির পথে বড় অগ্রগতি ঘটেছে। সরকারি কর্মীদের জন্য ১৫ দিনের সবেতনে পিতৃত্বকালীন ছুটি প্রদানের প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি ও পারিবারিক বাস্তবতার অভিজ্ঞতা থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে পরিবার কাঠামোয় বাবার সক্রিয় ভূমিকার গুরুত্ব নতুন করে সামনে এসেছে।

বর্তমানে সরকারি চাকরিজীবী নারীরা ৬ মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটির সুবিধা পান। কিন্তু বাবাদের জন্য এমন কোনো ছুটির বিধান নেই। অথচ সন্তান জন্মের পর পরিবার গঠনের প্রতিটি ধাপে বাবার উপস্থিতি সমান গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, মা যখন শারীরিক ও মানসিকভাবে দুর্বল অবস্থায় থাকেন, তখন বাবার পাশে থাকা কেবল আবেগীয় সহায়তা নয়, বরং বাস্তব প্রয়োজন।

সিজারিয়ান ডেলিভারির পর একজন মা দীর্ঘ সময় দুর্বল থাকেন, আর নবজাতক থাকে অতি সংবেদনশীল। এই সময় বাবার সহায়তা পরিবারে জীবনযাত্রার ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম উপাদান হতে পারে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অধিকাংশ সরকারি চাকরিজীবী বাবাকে অফিসের দায়িত্ব পালন করতে হয়, স্ত্রীর ও সন্তানের পাশে থাকার সুযোগ পান না। এ ধরনের অভিজ্ঞতা প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি কর্মীর জীবনে ঘটে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ৭৮টি দেশে ইতিমধ্যেই পিতৃত্বকালীন ছুটি চালু রয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ভুটানেও বাবাদের জন্য ছুটির ব্যবস্থা আছে। ইউরোপে এ ছুটির সময়কাল আরও দীর্ঘ এবং কাঠামোবদ্ধ। উদাহরণস্বরূপ, স্পেনে বাবারা ১২ সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটি পান, আর পোল্যান্ডে এই সুবিধা ৯০ দিন পর্যন্ত।

বাংলাদেশেও কিছু অগ্রগামী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেমন আড়ং, ব্র্যাক এবং রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়—ইতোমধ্যে পিতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্থা চালু করেছে। এবার রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ১৫ দিনের ছুটির প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সন্তান জন্মের পরপরই বাবা পরিবারকে সময় দিতে পারেন, স্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে পারেন এবং নবজাতকের সঙ্গে প্রথম দিনের বন্ধনে যুক্ত হতে পারেন।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পিতৃত্বকালীন ছুটি কেবল একটি সামাজিক দাবি নয়, এটি কর্মদক্ষতা, মানসিক স্বাস্থ্য এবং পারিবারিক কল্যাণের সঙ্গেও সম্পর্কিত। এ ছুটি শেষে কাজে যোগ দেওয়ার পর অনেক কর্মী আরও মনোযোগী, আত্মবিশ্বাসী এবং দায়িত্বশীল হয়ে ওঠেন। মা-বাবার যৌথ অংশগ্রহণ শিশুর বিকাশ ও মানসিক বৃদ্ধিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

-রাফসান


শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৭:৪৫:১২
শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে
ছবিঃ বি এস এস

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) প্রধান প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আরও এক বা দুইজন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হলে মামলার যুক্তি উপস্থাপন শুরু হবে।

আজ ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দি চলাকালে বিরতির সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা ট্রাইব্যুনালে আবেদন করব যাতে আরও এক-দু’জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের পরই সাক্ষ্যগ্রহণের প্রক্রিয়া সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর খুব শিগগিরই যুক্তি উপস্থাপন শুরু হবে বলে আশা করছি।”

মামলাটি বিচার করছেন ট্রাইব্যুনালের তিন সদস্যের বেঞ্চ, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার। আজকের শুনানিতে প্রধান প্রসিকিউটরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এম এইচ তামিম। প্রসিকিউশন টিমের অন্যান্য সদস্যরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী অ্যাডভোকেট আমির হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। অপরদিকে, সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের পক্ষে আইনজীবী অ্যাডভোকেট জায়েদ বিন আমজাদ যুক্তি উপস্থাপন করছেন।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল আনুষ্ঠানিকভাবে তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এবং বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। মামলার একপর্যায়ে সাবেক আইজিপি মামুন দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী হওয়ার আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তার আবেদন গ্রহণ করে এবং তাকে মামলার ৩৬তম সাক্ষী হিসেবে হাজির করা হয়।

এছাড়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইসিটিতে আরও দুটি মামলা চলমান। একটি মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের। অন্য মামলায় অভিযোগ রয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর এলাকায় হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ চলাকালে গণহত্যা সংঘটনের।

প্রধান প্রসিকিউটরের বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, সাক্ষ্যগ্রহণ প্রায় শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে এবং শিগগিরই যুক্তি উপস্থাপন শুরু হলে মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে এগোতে পারে।

-সুত্রঃ বি এস এস


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ — প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৭:০৭:৫৪
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক আরও গভীর করতে প্রস্তুত বাংলাদেশ — প্রধান উপদেষ্টা
ছবিঃ বি এস এস

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশেষ করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি এবং উন্নয়ন সহযোগিতার ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন।

আজ রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে (সিএও) যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি (AUSTR) ব্রেন্ডান লিঞ্চের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। বৈঠকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বলেন, “এটি আমাদের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ।”

উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র গত ৩১ জুলাই বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর আরোপিত পারস্পরিক শুল্কহার ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনে। ড. ইউনূস এই সিদ্ধান্তকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক বলে অভিহিত করেন।

বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য ঘাটতি কমানো, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও সয়াবিনসহ কৃষিপণ্য আমদানি বৃদ্ধি এবং জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করে। আলোচনার বিষয়বস্তুতে আরও ছিল—এলপিজি আমদানি, সিভিল এয়ারক্রাফট ক্রয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং রোহিঙ্গা মানবিক সংকট।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য আমদানি করতে প্রস্তুত এবং আশা করছে এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে শুল্ক আরও হ্রাস পাবে, যা উভয় দেশের জন্য টেকসই ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক বাণিজ্য অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে। তিনি চলমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত স্বাক্ষর হওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শ্রম অধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবিত ১১ দফা শ্রম কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক শ্রমমান রক্ষায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

আগামী দিনে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ ও স্বল্পসুদে ঋণ প্রবাহ আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি। “আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের দরজা বাংলাদেশে আরও প্রশস্ত হোক,” বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডান লিঞ্চ বাংলাদেশের গঠনমূলক ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং বলেন, ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া আলোচনাগুলো গতি পাওয়ায় আলোচনার ফলাফল ইতিবাচক হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের আলোচক দলের কঠোর পরিশ্রমের প্রশংসা করেন এবং সময়মতো শুল্ক চুক্তি বাস্তবায়ন ও ক্রয় প্রতিশ্রুতি পূরণের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৈঠকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, ইউএসটিআরের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক পরিচালক এমিলি অ্যাশবি, এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মুর্শেদ, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান এবং ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন উপস্থিত ছিলেন।

-সুত্রঃ বি এস এস


দেশের উন্নয়নে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৬:৪৯:০০
দেশের উন্নয়নে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
ছবিঃ বি এস এস

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তরুণদের দেশের উন্নয়নে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রতিটি তরুণের প্রতিভা, শক্তি ও সৃজনশীলতা যেন কেবল ব্যক্তিগত সাফল্যে সীমাবদ্ধ না থাকে; বরং তা সমাজ ও দেশের জন্য উদাহরণ হয়ে উঠুক।

আজ রাজধানীর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে “ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২৫” প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এ বছর ১২ জন তরুণ-তরুণীকে সমাজসেবায় অসাধারণ অবদানের জন্য এ পুরস্কার দেওয়া হয়।

ড. ইউনূস বলেন, তরুণরা যদি সক্রিয় থাকে তবে এই দেশের কোনো সমস্যা অমীমাংসিত থাকবে না। “আজ আমরা তরুণদের শক্তি উদযাপন করছি। তারা আমাদের জাতির চালিকাশক্তি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যদি তরুণরা উদ্যমী, কর্মচঞ্চল ও নতুন চিন্তাধারায় সমৃদ্ধ থাকে, তবে তাদের অগ্রযাত্রাকে কোনো বাধাই থামাতে পারবে না।”

অনুষ্ঠানের শুরুতে তিনি উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এখানে থাকতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানান এবং পুরস্কারপ্রাপ্তদের আন্তরিক অভিনন্দন জানান।

প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের তরুণদের উদ্ভাবনী শক্তি এখন আর শিক্ষাক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নেই। তারা স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ সুরক্ষা, দারিদ্র্য বিমোচন এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায়ও অগ্রণী ভূমিকা রাখছে। “২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান তরুণদের নেতৃত্বেই হয়েছে—তারা ইতিহাস লিখেছে এবং ভবিষ্যতেও লিখবে,” তিনি যোগ করেন।

ড. ইউনূস বলেন, পথচলায় নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসবে—জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশগত সংকট—কিন্তু এসব চ্যালেঞ্জে হতাশ হওয়া যাবে না। “আমাদের নিজেদের শক্তি দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করি, এই নেতৃত্বও তরুণরাই দেবে।”

তিনি আরও বলেন, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ কেবল মানবিক সেবার জন্য নয়, এটি আত্মোন্নয়ন, চরিত্র গঠন ও নেতৃত্ব তৈরির একটি অনন্য মাধ্যম। “আমরা চাই আমাদের তরুণরা শুধু স্বেচ্ছাসেবক নয়—তারা যেন সমাজের নীতি নির্ধারক, উদ্ভাবক ও পরিবর্তনের স্থপতি হয়ে ওঠে।”

ইয়ুথ ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ডকে তিনি কেবল সম্মাননা নয়, বরং নতুন নেতৃত্ব ও নতুন ভাবনার সাহসী যাত্রার ডাক হিসেবে উল্লেখ করেন।

ড. ইউনূস বলেন, সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে তরুণদের অংশগ্রহণ ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে। স্বাস্থ্যখাতে ছোট উদ্যোগও হাজারো শিশুকে রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে; শিক্ষাক্ষেত্রে ছোট প্রচেষ্টা জাতীয় শিক্ষার মান অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারে। পরিবেশ রক্ষায় তাদের সম্মিলিত পদক্ষেপ আগামী প্রজন্মের জন্য নিরাপদ ও সবুজ ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে।

তিনি স্বীকার করেন, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের পথ সহজ নয়—সময়, অর্থ এবং মানসিক চাপের মতো বাধা রয়েছে। কিন্তু এই বাধা অতিক্রমের মধ্য দিয়েই ধৈর্য, সহনশীলতা এবং নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করা যায়।

ড. ইউনূস শেষ বক্তব্যে পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, “আমি আমার পক্ষ থেকে, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এবং পুরো জাতির পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনারাই হোন নতুন নীতি প্রণেতা, বিপ্লবী চিন্তার বাহক এবং সামাজিক রূপান্তরের পথিকৃৎ।”

অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শোজিব ভূঁইয়া, মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব-উল-আলম এবং পুরস্কারপ্রাপ্ত সুরাইয়া ফারহানা রেশমাও বক্তব্য দেন।

-সুত্রঃ বি এস এস


বিশ্ব পর্যটন দিবসে ভ্রমণ মেলা, থাকছে ছাড় ও র‍্যাফেল ড্র

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১৩:০৮:০৪
বিশ্ব পর্যটন দিবসে ভ্রমণ মেলা, থাকছে ছাড় ও র‍্যাফেল ড্র
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজন করা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ভ্রমণ ও পর্যটন প্রদর্শনী ১২তম এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ার (এটিএফ)। ভ্রমণপ্রেমীদের কাছে পর্যটনকে আরও জনপ্রিয় করে তোলা, পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নেওয়া এবং দেশি-বিদেশি ভ্রমণ উদ্যোক্তাদের এক মঞ্চে আনার লক্ষ্যে এই আয়োজন আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হবে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায়। তিন দিনব্যাপী এ মেলা চলবে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এবং প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

আয়োজক ও সহযোগী সংস্থাগুলো

সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আয়োজক পর্যটন বিচিত্রা। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মেলার আয়োজনকে সফল করতে সহযোগিতায় রয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এবং ট্যুরিস্ট পুলিশ বাংলাদেশ। সরকারি সহযোগিতা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগে এটি হয়ে উঠবে একটি পূর্ণাঙ্গ আঞ্চলিক পর্যটন উৎসব।

মেলায় কী থাকছে

পর্যটন বিচিত্রার সম্পাদক ও এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “দেশি-বিদেশি পর্যটন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলো অংশ নিচ্ছে এই মেলায়। দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে নানা রকম ডিসকাউন্ট অফার, বিশেষ প্যাকেজ ডিল, আকর্ষণীয় র‍্যাফেল ড্র, এবং পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট নতুন সুযোগ-সুবিধার তথ্য।”

মেলায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে—

বিজনেস-টু-বিজনেস (B2B) সেশন: যেখানে দেশি ও বিদেশি পর্যটন উদ্যোক্তা এবং ট্রাভেল এজেন্সিগুলো পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: দেশের ঐতিহ্য, লোকসংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির পরিচয় তুলে ধরা হবে।

আঞ্চলিক পর্যটন গন্তব্যের প্রচার: ভ্রমণপিপাসুদের জন্য দেশি-বিদেশি ভ্রমণ প্যাকেজ ও গন্তব্য সম্পর্কিত তথ্য সহজলভ্য করা হবে।

বিশেষ ছাড়: শীত মৌসুমের ভ্রমণ পরিকল্পনার জন্য হোটেল, এয়ারলাইন্স, ট্রাভেল এজেন্সি এবং ট্যুর অপারেটররা বিশেষ অফার দেবে।

প্রবেশ ও পুরস্কার ব্যবস্থা

মেলায় প্রবেশমূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। তবে আগ্রহীরা যদি অনলাইনে নিবন্ধন করেন, তবে প্রবেশ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। প্রতিটি প্রবেশ কুপনের বিপরীতে দর্শনার্থীরা অংশ নিতে পারবেন আকর্ষণীয় র‍্যাফেল ড্র–তে, যেখানে থাকবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় এয়ারলাইন্সের টিকিট, ভ্রমণ ভাউচার, এবং অন্যান্য উপহার।

এশিয়ান ট্যুরিজম ফেয়ারের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন হেলাল বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি পর্যটন কেবল অর্থনীতির চালিকাশক্তি নয়, এটি আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও জাতীয় পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ বাহক। এই মেলার মাধ্যমে আমরা শুধু নতুন ভ্রমণের সুযোগ তৈরি করছি না; বরং আমরা চাই টেকসই পর্যটনশিল্প গড়ে তুলতে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে সমানভাবে সমৃদ্ধ হবে।”

-রফিক


সংস্কার কমিশনের ৭০ শতাংশ সুপারিশ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব: আসিফ নজরুল

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৫ ১১:৫৬:৩৩
সংস্কার কমিশনের ৭০ শতাংশ সুপারিশ ডিসেম্বরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা সম্ভব: আসিফ নজরুল
ছবিঃ বি এস এস

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অস্থায়ী সরকার দলগতভাবে কাজ করছে এবং ইতিমধ্যেই প্রায় অর্ধেক সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হয়েছে।

রবিবার রাজধানীর ফোরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংহতি কমিশনের বৈঠকে তিনি জানান, “ছয়টি সংস্কার কমিশনের তৎক্ষণাৎ বাস্তবায়নযোগ্য প্রস্তাবের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করা সম্ভব।”

বৈঠকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি অংশ নেন এবং ‘জুলাই জাতীয় চাটার ২০২৫’ বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। ড. আসিফ বলেন, “আমরা প্রথমে সেই প্রস্তাবগুলো বাছাই করেছি যা তৎক্ষণাৎ বাস্তবায়নযোগ্য, এবং তার প্রায় অর্ধেক ইতিমধ্যেই কার্যকর করা হয়েছে।”

সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, “সংবিধানকে আদেশ বা নির্বাহী সিদ্ধান্তের মাধ্যমে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি কে নেতৃত্ব দেবে—এর মতো কিছু বিষয় সহজেই প্রসিডিউর রুলস পরিবর্তনের মাধ্যমে সমাধান করা যেতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “কিছু প্রস্তাব পুনরাবৃত্তিমূলক বা রুটিন কাজের মতো, যেমন দুর্নীতি বিরোধী কৌশলপত্র প্রস্তুতি। অনেক সংস্কার রুটিন কার্যাবলী; কিছু নির্বাহী আদেশ বা অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে করা যায়, আর কিছু সংবিধানগত বিষয় যা বিস্তৃত সংহতির দাবি করে।”

নির্বাচনের বিষয়ে ড. আসিফ জানান, সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার প্রতিশ্রুতিতে অটল। তিনি বলেন, “একবার নির্বাচন সময়সূচি ঘোষণা হলে কোনো আইনগত সংশোধনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলতে পারে। তাই সমস্ত প্রয়োজনীয় আইনগত সংস্কার ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।”

ড. আসিফ আশা প্রকাশ করেন, “আপনাদের মত শুনে খুব আশাবাদী হলাম। সবাই চায় সংহতির ভিত্তিতে ভালো সমাধান। যদি আমাদের লক্ষ্য থাকে গণআন্দোলনের ঐক্য রক্ষা, ফ্যাসিবাদ প্রতিহত করা এবং দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাহলে সমাধান খুঁজে পাওয়া সহজ হবে।”

তিনি ঐক্য বজায় রাখার গুরুত্বকেও উল্লেখ করেন, “সর্বোপরি, উদ্দেশ্যই মূল। যদি উদ্দেশ্যে আমরা একসাথে থাকি, সামনের পথ স্পষ্ট হবে।”

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংহতি কমিশনের উপ-সভাপতি প্রফেসর আলী রিয়াজ, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়েতে ইসলামের সহ-সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান আজাদ এবং ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টির সাধারণ সম্পাদক আখতার হোসেন। সভার সঞ্চালক ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার, যিনি জাতীয় সংহতি চাটার প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিলেন।

-সুত্রঃ বি এস এস

পাঠকের মতামত: