জাতীয় স্বার্থক্ষুন্ন হবেনা: আশিক চৌধুরী 

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৪ ১০:৪২:১২
জাতীয় স্বার্থক্ষুন্ন হবেনা: আশিক চৌধুরী 

সত্য নিউজ: বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী হারুন মঙ্গলবার এক মতবিনিময় সভায় স্পষ্ট করে বলেন, জাতীয় স্বার্থ এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো ধরণের আপসের সুযোগ নেই। তিনি চট্টগ্রাম বন্দরের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, এই বন্দর গোটা দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি সম্পদ। একে বিশ্বমানের বাণিজ্যিক কেন্দ্রে রূপান্তরের আকাঙ্ক্ষা থাকলেও, সবকিছুর ঊর্ধ্বে স্থান পাবে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা।

বিডা আয়োজিত এই সভাটি অনুষ্ঠিত হয় দেশের টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে, যেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে নীতিগত ধারাবাহিকতা, চলমান সংস্কার এবং তার সাম্প্রতিক অগ্রগতির বিষয়ে মতবিনিময় করা হয়।

চৌধুরী আশিক তাঁর বক্তব্যে বলেন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানকে তিনি দলীয় বা রাজনীতির পরিধির বাইরে একটি বিশুদ্ধ জাতীয় স্বার্থ হিসেবে বিবেচনা করেন। বাংলাদেশে একটি অনুকূল বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরিতে বিডা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে তিনি এও স্বীকার করেন যে, বিনিয়োগের পরিবেশ এখনো নানা সংকটে জর্জরিত, এবং এসব সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার ভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে।

সভায় বিডার হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি একটি প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে বিডার সংস্কার পরিকল্পনা, অগ্রগতির চিত্র এবং বিনিয়োগ সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত প্রতিক্রিয়ার সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি জানান, স্থানীয় বিনিয়োগকারী ও অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করে বাংলাদেশে বিনিয়োগকে ঘিরে বিদ্যমান অন্তরায়গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে।

এই প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উঠে আসে সরকারি পরিষেবার মান, নীতির ধারাবাহিকতার অভাব, শিল্প সংশ্লিষ্ট পরামর্শ প্রক্রিয়ায় দুর্বলতা, দুর্নীতির উপস্থিতি এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত না হওয়া—যেগুলো বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। এসব সমস্যা সমাধানে বিডা ইতিমধ্যেই কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপও প্রণয়ন করেছে।

সভায় উপস্থিত প্রায় সব রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বিডার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য স্থানীয় ও বিদেশি উভয় ধরনের বিনিয়োগকারীদের প্রতি সমান গুরুত্ব দিতে হবে।

এছাড়া তারা দেশের দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের প্রসার, অবকাঠামো উন্নয়ন, আইনগত জটিলতার অবসান, শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা এবং পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ নীতির বাস্তবায়নের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন। বিডার কার্যক্রম যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বিত হয়, সে আহ্বানও উঠে আসে আলোচনায়।

সভার শেষ অংশে বিডা চেয়ারম্যান ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে জানান, ভবিষ্যতের উপস্থাপনাগুলোতে স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের গুরুত্ব আলাদাভাবে তুলে ধরা হবে। একইসঙ্গে তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই ধরনের রাজনৈতিক সংলাপ ভবিষ্যতেও নিয়মিত ও গঠনমূলকভাবে অনুষ্ঠিত হবে, যা দেশের বিনিয়োগ কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের উপস্থিতি এ আলোচনা সভাকে একটি বহুমাত্রিক ও বহুপক্ষীয় মতবিনিময়ে রূপ দেয়। তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং পূর্ণ সমর্থন এই বার্তাই দেয় যে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক মতানৈক্য পেছনে রেখে জাতীয় স্বার্থে ঐক্য গঠন সম্ভব।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত