দেশে বিনিয়োগের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে গণতান্ত্রিক শূন্যতা: আমীর খসরু

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ মে ১৩ ২১:১৪:০৮
দেশে বিনিয়োগের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে গণতান্ত্রিক শূন্যতা: আমীর খসরু

সত্য নিউজ: রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে আজ অনুষ্ঠিত হয় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা এবং বিশিষ্ট জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা। দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, সংস্কারের রূপরেখা ও ভবিষ্যৎ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নিয়ে আলোচনা উঠে আসে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে। সভায় বক্তারা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিকে স্মরণ করেননি বরং তার আদর্শ ও কাজকে কেন্দ্র করে দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন ও সংস্কারের সংকট নিয়েও স্পষ্ট মত প্রকাশ করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন যারা আজ সংস্কারের কথা বলছেন, গত ১৭ বছর তাদের কেউ রাস্তায় দেখা যায়নি। তিনি বলেন শেখ হাসিনা পরবর্তী বাংলাদেশ কেমন হবে সেই লক্ষ্য সামনে রেখে বিএনপি ৩১ দফা সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছে। জনগণের সমর্থন ছাড়া কোনো সংস্কার সম্ভব নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন দেশে বিনিয়োগের পথে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে গণতান্ত্রিক শূন্যতা। বিনিয়োগকারীরা আজ জানতে চায় সুষ্ঠু নির্বাচন কবে হবে।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রশ্ন তোলেন, সংস্কারের কথা বলা হলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। পুলিশ-প্রশাসনে কোনো পরিবর্তন হয়নি, বরং আগের মতই তারা সক্রিয় আছে। তিনি বলেন, সরকারের অবস্থান এমন একটু চাপ দিলেই দাবি মেনে নেয় অথচ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে কোনো পদক্ষেপ নেই।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন সরকার গঠনের নয় মাস পরও তারা কোন পথে হাঁটছে তা স্পষ্ট নয়। সবাই পরিবর্তন চায় কিন্তু পুরোনো কাঠামোর ভেতর দিয়ে সেটা সম্ভব নয়। তিনি প্রস্তাব করেন, সব দলের ঐকমত্যে একটি ‘ম্যাগনা কার্টা’ স্বাক্ষর করা হোক যা হবে একটি ন্যাশনাল কম্প্যাক্ট, গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের ভিত্তি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আদর্শ ছিল সাধারণ মানুষের হাতে রাষ্ট্রের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়া। কিন্তু বর্তমানে বিভাজনের রাজনীতি সেই লক্ষ্যকে ব্যাহত করছে। নির্বাচন ও সংস্কার দুই বিষয়কেই সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

স্মরণসভায় বক্তারা জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জনস্বাস্থ্য আন্দোলনের ভূমিকা স্মরণ করেন। গণস্বাস্থ্য ক্যানসার হাসপাতালের প্রকল্প সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন সরকারিভাবে যেখানে স্বাস্থ্যবিমা চালু হয়নি সেখানেই ডা. জাফরুল্লাহ সেই কাঠামো গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি চিকিৎসাকে সেবার বদলে ‘জনস্বাস্থ্য’ বলে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন।

ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন জাতীয় সংগীত ও রাষ্ট্রের মৌল কাঠামো নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলনের ভূমিকা থাকলেও একাত্তরের জন্য তাদের ক্ষমা চাইতে হবে।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত বলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন বাংলাদেশের ‘চে গুয়েভারা’। তিনি ছিলেন নিপীড়িত মানুষের বন্ধু, এবং তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন প্রকৃত দেশপ্রেমিককে হারিয়েছে।

স্মরণসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্ত্রী শিরীন হক গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং ভাসানী জনশক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় নেতারা। বক্তারা সকলেই একমত হন জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আদর্শকে সামনে রেখে দেশকে একটি নতুন, সমতা ও গণতন্ত্রভিত্তিক পথে এগিয়ে নিতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সর্বদলীয় ঐক্য এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট প্রতিষ্ঠা।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্যযুদ্ধ: বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভবিষ্যৎ প্রতিযোগিতা

বিশ্ব অর্থনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে, এবং এই পরিবর্তনটির মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ।... বিস্তারিত