জানুন গুনাহ মাফের সেরা উপায়

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৩ ১৮:০৭:৪৩
জানুন গুনাহ মাফের সেরা উপায়

মানুষ জীবনে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় অনেক সময় ছোটখাটো গুনাহ করে ফেলে। কিন্তু ইসলামের আলোকে মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দার প্রতি এতটাই দয়ালু, যে বান্দা যদি বড় গুনাহ অর্থাৎ কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারে, তাহলে আল্লাহ তার ছোট গুনাহগুলো এমনিতেই ক্ষমা করে দেন। এই বিষয়টি কোরআনের একাধিক আয়াতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে উঠে এসেছে।

পবিত্র কোরআনের সূরা আন-নিসার ৩১ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, “তোমরা যদি নিষেধকৃত বড় গুনাহগুলো থেকে বিরত থাকো, তাহলে আমি তোমাদের ছোট গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেব এবং তোমাদের সম্মানজনক স্থানে (জান্নাতে) প্রবেশ করাবো।” এই আয়াতটি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়, সগীরা গুনাহ বা ছোট পাপসমূহের জন্য আলাদা কোনো কাফফারা না হলেও, বান্দা যদি নিজেকে বড় পাপ থেকে রক্ষা করতে পারে, তাহলে মহান আল্লাহ তাঁর করুণা ও দয়ার মাধ্যমে এসব ছোট পাপ ক্ষমা করে থাকেন।

আরেকটি আয়াত, সূরা আন-নাজমের ৩২ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, “যারা ছোটখাট দোষ-ত্রুটি ছাড়া বড় বড় পাপ ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকে, নিশ্চয় তোমার রব ক্ষমার ব্যাপারে উদার, তিনি তোমাদের ব্যাপারে সম্যক অবগত।” এখানে “إِلَّا اللَّمَمَ” (ছোট গুনাহ ছাড়া) শব্দের মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বড় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকলেই বান্দার ছোট ভুলত্রুটিগুলো নিজ করুণায় মাফ করে দেন।

এই দুটি আয়াত থেকেই একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা পাওয়া যায়: ইসলাম গুনাহ মাফের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র আল্লাহর দয়ার উপর নির্ভর করে না, বরং মানুষকে সচেতনভাবে গোনাহ থেকে বিরত থাকতে উৎসাহিত করে। এতে বান্দার চেষ্টাকে মূল্যায়ন করা হয়। বড় গুনাহ যেমন শিরক, জিনা, সুদ, মদপান, হত্যা, গিবত, অপবাদ, আত্মসাৎ ইত্যাদি থেকে বিরত থাকলে বান্দা আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় হয় এবং জান্নাতের যোগ্যতা অর্জন করে।

অতএব, মুসলিম জীবনে পাপমুক্ত থাকতে হলে প্রথম ও প্রধান কাজ হলো কবিরা গুনাহ থেকে দূরে থাকা। ছোটখাটো গুনাহ যদি কেউ করেও ফেলে, তাও যদি বান্দা তওবা ও ইস্তিগফারের মাধ্যমে শুদ্ধ থাকে এবং বড় পাপ থেকে নিজেকে দূরে রাখে, তবে আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি রহম করবেন।

এই শিক্ষাটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে খুবই প্রাসঙ্গিক। আমরা অনেক সময় বড় গুনাহকে হালকা করে দেখি, অথচ কোরআন বলছে, বড় গুনাহ পরিহারই ছোট গুনাহ মাফের শর্ত। তাই আমাদের উচিত প্রতিটি কাজে সচেতন থাকা, নিজেকে গিবত, অপবাদ, অহংকার, অশ্লীলতা এবং অন্যায় থেকে দূরে রাখা। এভাবেই একজন মুসলমান কেবল পাপ থেকে মুক্ত নয়, বরং জান্নাতের উপযুক্ত হয়ে ওঠে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ