টিকা নিয়ে গুজব আর সহায়তা কমে লাখো শিশু ঝুঁকিতে

স্বাস্থ্য ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১০:৪২:০৯
টিকা নিয়ে গুজব আর সহায়তা কমে লাখো শিশু ঝুঁকিতে

বিশ্বজুড়ে শিশুদের টিকাদান কোভিড মহামারির পর একটু উন্নতি করেছে, তবে জাতিসংঘ বলছে—বিভ্রান্তিকর তথ্য (গুজব) আর বিদেশি সহায়তা কমে যাওয়ায় অনেক শিশু এখনও বিপদের মুখে আছে।

২০২৪ সালে ডিপথেরিয়া, টিটেনাস ও হুপিং কাশির (ডিটিপি) তিনটি ডোজ টিকা পেয়েছে ৮৫ শতাংশ শিশু—প্রায় ১০৯ মিলিয়ন। এটি গত বছরের তুলনায় ১ শতাংশ বেশি এবং আরও ১০ লাখ শিশুকে টিকার আওতায় আনা গেছে।

তবুও প্রায় ২ কোটি শিশু অন্তত একটি ডোজও পায়নি, আর এর মধ্যে ১ কোটি ৪৩ লাখ শিশু একটিও টিকা পায়নি—তাদের বলা হয় 'শূন্য-ডোজ শিশু'। ২০১৯ সালের তুলনায় এ সংখ্যা ১৪ লাখ বেশি।

ইউনিসেফ প্রধান ক্যাথরিন রাসেল বলেছেন, “আমরা আরও শিশুদের টিকা দিতে পেরেছি—এটি ভালো খবর। তবে এখনও অনেক শিশু রক্ষা পাচ্ছে না, যা আমাদের সবার জন্য চিন্তার বিষয়।”

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৯০ শতাংশ শিশু-কিশোরকে প্রয়োজনীয় টিকা দেওয়ার যে লক্ষ্য ছিল, তা অর্জনের পথ থেকে বিশ্ব এখন পিছিয়ে পড়েছে।

ডব্লিউএইচও প্রধান টেড্রোস গেব্রেয়েসুস বলেন, “অনেক দেশ বিদেশি সহায়তা কমিয়ে দিয়েছে, আর টিকা নিয়ে গুজব ব্যাপকভাবে ছড়াচ্ছে—যা টিকাদানে দীর্ঘদিনের সাফল্য নষ্ট করে দিচ্ছে।”

বিশ্বজুড়ে অনেক দেশে যুদ্ধ ও সহিংসতা থাকায় অনেক শিশুই টিকা পাচ্ছে না। ইউনিসেফের এক কর্মকর্তা বলেছেন, ৫০টি দেশে রোগ ছড়ানো রোধে আমাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে, কারণ অর্থের অভাব দেখা দিয়েছে।

এর পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমে টিকার ক্ষতি নিয়ে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ছে, যা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এতে শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের ঘাটতি তৈরি হচ্ছে।

২০২৪ সালে ৬০টি দেশে বড় ধরনের হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে—যা ২০২২ সালের তুলনায় দ্বিগুণ। যদিও ২০২৪ সালে আগের বছরের তুলনায় ২০ লাখ শিশু বেশি হাম টিকা পেয়েছে, কিন্তু এটি এখনও ৯৫ শতাংশের নিরাপদ সীমা ছুঁয়েছে না।

একটি ভালো দিক হলো, গাভি নামের টিকা সহায়তা সংস্থার সাহায্যে ৫৭টি দরিদ্র দেশে টিকাদান কিছুটা বেড়েছে। তবে মধ্য ও ধনী দেশগুলোর অনেক জায়গায় আগে যেসব স্থানে ৯০ শতাংশ শিশুর টিকাদান ছিল, এখন সেখানে কমে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামান্য পতনও ভয়াবহ পরিণতি আনতে পারে। তাই টিকাদান বাড়াতে আন্তর্জাতিক সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ভুল তথ্য ছড়ানো বন্ধ করতে হবে।

-আশরাফুল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ