মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে নির্বাচনী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ বিএনপির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ২১:৩৭:২৭
মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে নির্বাচনী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ বিএনপির

রাজধানীর মিটফোর্ডে সংঘটিত সোহাগ হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে শুরু হওয়া রাজনৈতিক বিতর্ককে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) দাবি করেছে, এই ঘটনা এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই হত্যাকাণ্ডকে সামনে রেখে দেশে গৃহীত একটি কৌশলগত পরিকল্পনার মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে।

সোমবার (১৪ জুলাই) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। লিখিত বক্তব্যে মির্জা ফখরুল জানান, এ ঘটনায় একটি ‘তদন্ত ও তথ্যানুসন্ধানী কমিটি’ গঠন করা হয়েছে, যারা প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করে জনসমক্ষে তা প্রকাশ করবে।

তিনি বলেন, এ ধরনের নৃশংস হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং পরিকল্পিতভাবে রাজনৈতিক উত্তেজনা বাড়ানোর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ভিড়ের মধ্যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছাকাছি এ ঘটনা ঘটলেও কোনো ধরনের প্রতিরোধ দেখা যায়নি, যা জনমনে সন্দেহ ও প্রশ্ন তৈরি করেছে।

মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরিকল্পিতভাবে একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানো হচ্ছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে তৈরি করা ছবি ও ভিডিও। ৯ জুলাইয়ের ঘটনাটি জুমার নামাজের পর ১১ জুলাই ‘প্রাইম টাইমে’ ইন্টারনেটে ছড়ানোর পেছনেও ছিল সুপরিকল্পিত প্রচারণা।

তিনি আরও জানান, এই হত্যাকাণ্ডে বিএনপির জড়িত থাকার অভিযোগের ভিত্তিতে দলের কেউ কেউ বহিষ্কৃত হয়েছেন। তবে যারা প্রকৃত অপরাধী নয়, অথচ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে এজাহারে তাদের নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়েও নিহতের পরিবারের বক্তব্য রয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ ঘটনায় সরকার যতটা সক্রিয় হয়েছে, অন্যান্য জায়গায় সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডগুলোতে তাদের এমন তৎপরতা দেখা যায়নি। কুমিল্লা, চাঁদপুর, খুলনায় একাধিক রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটলেও প্রতিবাদ ও প্রতিক্রিয়া ছিল নিম্নমাত্রার।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, নিহত সোহাগের পরিচয় যা-ই হোক, তিনি ছিলেন এই দেশের নাগরিক এবং তার পরিবার ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবিদার। দলীয় পরিচয়কে আড়াল না করে বরং যে কেউ অপরাধ করলে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হোক—এটাই বিএনপির অবস্থান।

সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে বলেন, একদিকে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে অপমান করার চেষ্টা চলছে, অন্যদিকে দলের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে অশ্লীল মন্তব্য করে গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য দেশের মালিকানা জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।

এ সময় তিনি আরো বলেন, “আমরা শত বাধা পেরিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত ও গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যারা ষড়যন্ত্র করছে, তারা বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। তাদের অপচেষ্টা ব্যর্থ করতে আমাদের জাতীয় ঐক্য অটুট থাকবে।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন, যারা একমত পোষণ করে বলেন, এই সংকটময় সময়ে রাজনৈতিক শিষ্টাচার রক্ষা এবং গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ