বুক ধড়ফড়: জানুন কারণ ও প্রাকৃতিক প্রতিকার

বুক ধড়ফড়- বাংলায় যাকে বলে বুকে ধক ধক করা, হার্টবিট খুব জোরে বা অনিয়মিতভাবে অনুভব হওয়া এটি একটি সাধারণ শারীরিক উপসর্গ। অনেক সময় এটা হঠাৎ করেই শুরু হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যেই থেমে যায়। কেউ কেউ মনে করেন এটি উদ্বেগ বা ঘুমের ঘাটতির ফল, কেউবা ভাবেন পেটের অস্বস্তি থেকে হচ্ছে। তবে এই উপসর্গ অনেক সময় এমন এক বিপদের আগাম বার্তা দেয়, যা অবহেলা করলে হতে পারে চরম পরিণতি। কারণ, বুক ধড়ফড়ের পেছনে থাকতে পারে হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা, রক্তে হিমোগ্লোবিনের স্বল্পতা বা হৃদযন্ত্রের ছন্দে বিপর্যয়।
বুক ধড়ফড়ের সাধারণ কারণ
বুক ধড়ফড়ের অনেক কারণ থাকলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি অস্থায়ী ও নিরীহ। যেমন:
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: জীবনের নানা সংকটময় মুহূর্তে শরীরে কর্টিসল ও অ্যাড্রেনালিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হার্টবিটে সরাসরি প্রভাব ফেলে। এ সময় বুক ধড়ফড়, শ্বাস নিতে কষ্ট বা মাথা ঘোরা দেখা দেয়।
ক্যাফেইন, নিকোটিন ও অ্যালকোহল: অতিরিক্ত চা, কফি বা এনার্জি ড্রিংকস খেলে, ধূমপান বা অ্যালকোহল সেবনে নার্ভাস সিস্টেম উত্তেজিত হয়, যা হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক ছন্দ বিঘ্নিত করে।
শারীরিক পরিশ্রম বা ঘুমের ঘাটতি: প্রচণ্ড ক্লান্তি, অনিদ্রা বা অতিরিক্ত পরিশ্রমেও শরীর সাড়া দেয় হৃদস্পন্দনের গতি বাড়িয়ে।
হরমোন পরিবর্তন: গর্ভাবস্থা, মেনোপজ বা থাইরয়েডের ভারসাম্যহীনতা নারীদের মাঝে বুক ধড়ফড়ের অন্যতম কারণ হতে পারে।
ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ, বিশেষত ইনহেলার, ডিকনজেস্ট্যান্ট, অ্যাজমার ওষুধ বা স্নায়ুবিষয়ক ওষুধ বুক ধড়ফড়ের জন্ম দিতে পারে।
রোগজনিত কারণসবসময় বুক ধড়ফড় নিরীহ নয়। কিছু চিকিৎসা-গুরুত্বপূর্ণ কারণও থাকতে পারে:
রক্তাল্পতা (অ্যানিমিয়া): রক্তে অক্সিজেন পরিবহনকারী হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি হলে হৃদযন্ত্র বেশি কাজ করতে বাধ্য হয়, এতে স্পন্দন বেড়ে যায়।
ইনফেকশন বা জ্বর: ভাইরাস সংক্রমণ, ডেঙ্গু, বা ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনে হার্টরেট বেড়ে যেতে পারে।
হৃদযন্ত্রের ছন্দে গড়বড় (Arrhythmia): এট্রিয়াল ফিব্রিলেশন বা ভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়ার মতো অবস্থা বুক ধড়ফড়ের প্রধান কারণ, যা মৃত্যুঝুঁকিও বাড়ায়।
করোনারি আর্টারি ডিজিজ বা হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব লক্ষণ: হার্টে রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি হলে বুক ধড়ফড়, চাপ, বুকে জ্বালা ও শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
কখন দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যাবেন?
বুক ধড়ফড়ের পাশাপাশি যদি দেখা দেয়:
- বুকে ব্যথা বা জ্বালা
- শ্বাস নিতে কষ্ট
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা মাথা ঘোরা
- হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
তাহলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
প্রাথমিক প্রতিকার ও ঘরোয়া ব্যবস্থাপনা
মানসিক প্রশান্তির চর্চা: মেডিটেশন, ধ্যান, প্রানায়াম বা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করলে নার্ভ শান্ত হয়, বুক ধড়ফড় কমে।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও ঘুম: ক্যাফেইন-ফ্রি খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম, নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে ভারসাম্য রাখে।
পর্যাপ্ত পানি পান করুন: ডিহাইড্রেশন হৃদস্পন্দনে প্রভাব ফেলে, তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
গরম পানির গোসল: রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং নার্ভকে শান্ত করে।
বুক ধড়ফড় একটি উপসর্গ, যার পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারে স্নায়বিক চাপ, জীবনযাপনগত অভ্যাস, এমনকি গুরুতর হৃদরোগ। এই অনুভূতিকে অবহেলা না করে বরং নিজের শরীরের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। প্রাথমিক পর্যায়ে সচেতনতা এবং সঠিক ব্যবস্থা নিলে বড় বিপদ এড়ানো সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া হৃদরোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তাই বুক ধড়ফড় করলেই আতঙ্ক নয়, বরং সচেতন হোন, কারণ সতর্কতা রোগ প্রতিরোধের প্রথম ধাপ।
পায়ের পাতায় লুকানো নীরব ইঙ্গিত: কিডনি বিকলের এই সংকেত অবহেলা করলেই বিপদ
দিনশেষে পায়ের ব্যথা, ক্লান্তি বা হালকা ফোলাভাবকে আমরা প্রায়ই তুচ্ছ মনে করি। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই সামান্য অস্বস্তির মধ্যেই লুকিয়ে থাকতে পারে ভয়ংকর বার্তা। কারণ, কিডনি যখন ধীরে ধীরে দুর্বল হতে শুরু করে, তখন তার প্রথম সংকেত দেখা দেয় আমাদের পায়ের পাতায়।
কিডনি হলো শরীরের নিঃশব্দ কর্মী—রক্ত পরিশোধন, বর্জ্য নিষ্কাশন এবং শরীরের রাসায়নিক ভারসাম্য রক্ষার দায়িত্ব যার ওপর ন্যস্ত। যখন এই অঙ্গ তার কাজ ঠিকভাবে করতে পারে না, তখন শরীরে পানি, লবণ ও টক্সিন জমে গিয়ে নানা ধরনের পরিবর্তন আনে। এর অনেকটাই প্রথম ধরা পড়ে পায়ের মাধ্যমে।
তাহলে জেনে নিন, আপনার পায়ের পাতায় দেখা দেওয়া কোন পাঁচটি লক্ষণ কিডনির জন্য বিপদসংকেত হতে পারে:
কিডনি সমস্যার ৫টি প্রাথমিক লক্ষণ
১. গোড়ালিতে অস্বাভাবিক ফোলাভাব (Pitting Edema): মোজা খোলার পর যদি দেখেন চামড়ায় দাগ থেকে গেছে বা গোড়ালি ফুলে উঠেছে, তাহলে সতর্ক হোন। কিডনি সঠিকভাবে পানি ছেঁকে ফেলতে না পারলে শরীরে তরল জমে যায়, যার প্রথম প্রভাব দেখা দেয় পায়ে।
২. দাগবিহীন চুলকানি: পায়ের পেশি বা হাঁটুর নিচে হঠাৎ চুলকানি শুরু হলেও ত্বকে কোনো র্যাশ না থাকলে এটি ‘ইউরেমিক প্রুরিটাস’ নামে কিডনি রোগের প্রাথমিক ইঙ্গিত হতে পারে। শরীরে বর্জ্য জমে গেলে ত্বকে এমন চুলকানি দেখা দেয়।
৩. রাতে হঠাৎ পেশিতে খিঁচুনি: ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায়ের পেশিতে টান লাগলে সেটি কিডনি বিকলের কারণে হতে পারে। কিডনি দুর্বল হলে শরীরে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম বা সোডিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়, যা খিঁচুনির সৃষ্টি করে।
৪. ত্বকের রঙে অস্বাভাবিক পরিবর্তন: পায়ের পাতায় বা আঙুলে নীলচে বা গাঢ় ছায়া পড়লে সেটিও চিন্তার বিষয়। কিডনি দুর্বল হলে রক্তসঞ্চালনে সমস্যা হয়, ফলে অক্সিজেনের ঘাটতিতে ত্বকের রঙ পরিবর্তিত হতে পারে।
৫. পায়ে ঝিঁঝিঁ ভাব বা অবশতা: চেয়ারে বসে থাকার সময় যদি হঠাৎ পায়ের পাতায় অবশতা বা ঝিঁঝিঁ ভাব অনুভব করেন, তাহলে এটি পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির লক্ষণ হতে পারে—যা দীর্ঘমেয়াদি কিডনি সমস্যার সঙ্গে জড়িত।
কেন এখনই সতর্ক হওয়া দরকার?
চিকিৎসকদের মতে, “পা শুধু শরীরের ভার বহন করে না—এটি কিডনির স্বাস্থ্যেরও আয়না।” এই উপসর্গগুলো অনেক সময় সাধারণ মনে হলেও, এগুলো কিডনির বিপদের প্রথম সংকেত হতে পারে। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে সমস্যা দ্রুত জটিল রূপ নিতে পারে। তাই পায়ের অস্বাভাবিক পরিবর্তনকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
অনেকেই মাইগ্রেনের ব্যথায় ভোগেন। তবে মাইগ্রেন কেবল মাথাব্যথাই নয়, ব্যথা ছাড়াও এর সঙ্গে থাকতে পারে অন্যান্য উপসর্গ। এসব উপসর্গের ভিত্তিতে মাইগ্রেনকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়। মাইগ্রেনের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা আলাদা হতে পারে, তাই ধরনটি বোঝা জরুরি। মাইগ্রেনের কয়েকটি ধরন সম্পর্কে জানিয়েছেন রাজধানীর পপুলার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. নওসাবাহ্ নূর।
সাধারণত একবার ব্যথা শুরু হলে তা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং সময়-সময় ফিরে আসে।
মাইগ্রেনের ৫টি ধরন
১. মাইগ্রেন উইথ অরা (Migraine with Aura): মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হওয়ার আগে কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে, একে বলা হয় ‘অরা’।
উপসর্গ: চোখের সামনে বক্র রেখা, তারা বা বিন্দু দেখা যাওয়া কিংবা চোখের সামনে কিছু অংশ অন্ধকার দেখানো। কারও আবার কানের ভেতর এমন শব্দ হতে পারে, বা অস্বাভাবিক ঘ্রাণ পেতে পারেন। মুখ, হাত কিংবা পা ঝিনঝিন করতে পারে বা যে জিনিসে ব্যথা অনুভব করার কথা নয়, তাতে ব্যথা অনুভব করতে পারেন।
২. মাইগ্রেন উইদাউট অরা (Migraine without Aura): এই উপসর্গগুলো ছাড়া শুধু মাথাব্যথাও হয় অনেকের।
উপসর্গ: মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত হয় মাথার যেকোনো একটা পাশে এবং তা হয় তীব্র। বমিভাব থাকতে পারে বা বমিও হতে পারে। ব্যথার মুহূর্তে আলো এবং শব্দ অসহ্য মনে হয়। সব ধরনের মাইগ্রেনেই মাথাব্যথা এবং ব্যথার সময়ের উপসর্গ এমন হয়ে থাকে।
৩. সাইলেন্ট মাইগ্রেন (Silent Migraine): যে মাইগ্রেনে কেবল অরার সময়ের উপসর্গ থাকে, তাকে সাধারণভাবে সাইলেন্ট মাইগ্রেন বলা হয়। অর্থাৎ মাথাব্যথা ছাড়া কেবল অরা থাকলে সেটি সাইলেন্ট মাইগ্রেন। ব্যথা না হলেও অরার কষ্টকর অনুভূতিতে রোগী ভোগেন।
৪. মাইগ্রেন উইথ ব্রেইনস্টেম অরা: এই মাইগ্রেনে অরার বিভিন্ন উপসর্গের সঙ্গে যোগ হয়:
উপসর্গ: মাথা ঘোরানো, কথা জড়িয়ে যাওয়া, শুনতে না পাওয়া, একটি জিনিস দুটি দেখার মতো উপসর্গ।
সতর্কতা: এ ধরনের উপসর্গ অন্যান্য রোগেও দেখা দিতে পারে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৫. হেমিপ্লেজিক মাইগ্রেন (Hemiplagic Migraine): এ ধরনের মাইগ্রেনে দেহের যেকোনো একটা পাশ অবশ হয়ে যায়। এভাবে দেহের কোনো অংশ অবশ হয়ে যাওয়া স্ট্রোকের উপসর্গ। তাই দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারও কারও এই সমস্যা সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও থেকে যায়।
সকালে ব্রাশ না করে পানি খেলে কী হয় শরীরের ভেতরে?
সকালে ঘুম ভাঙার পর আমাদের অনেকেরই একেক রকম অভ্যাস—কেউ আগে ব্রাশ করেন, কেউ আবার সরাসরি পানি খেয়ে নেন। অনেকেই দ্বিধায় থাকেন—ব্রাশ করার আগে পানি খাওয়া কি শরীরের জন্য ভালো, না ক্ষতিকর? স্বাস্থ্যবিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘লিব্রেট’-এর এক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ না করেই পানি পান করাটা একদমই ক্ষতিকর নয়, বরং এতে উপকারই হয়।
ব্যাকটেরিয়া নিয়ে শঙ্কা দূর
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মুখের ব্যাকটেরিয়া শরীরের কোনো ক্ষতি করে না। ঘুম থেকে উঠলে মুখে কিছু ব্যাকটেরিয়া থাকে ঠিকই, কিন্তু এই ব্যাকটেরিয়াগুলো যখন পানি খেয়ে গিলে ফেলা হয়, তখন তা পাকস্থলীতে চলে যায়। পাকস্থলীর অ্যাসিড এতটাই শক্তিশালী যে, এই ব্যাকটেরিয়াগুলো সেখানেই নষ্ট হয়ে যায়। জাপানি সংস্কৃতিতেও দেখা যায়, সেখানে অনেক মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ না করেই দুই গ্লাস পানি পান করেন।
চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, ঘুম থেকে উঠে অন্তত এক গ্লাস বা সম্ভব হলে দুই গ্লাস পানি পান করা উচিত।
ব্রাশ না করে পানি পানের ৬ উপকারিতা
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে: মুখের লালায় থাকা কিছু এনজাইম ও উপকারী ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। পানি খেলে সেগুলো শরীরে ঢুকে রোগের সঙ্গে লড়তে সাহায্য করে।
২. হজম ভালো হয়: সকালে পানি খেলে রাতে জমে থাকা টক্সিন ধীরে ধীরে বের হয়ে যায়। এতে হজম শক্তি বাড়ে এবং গ্যাস্ট্রিক বা বদহজমের সমস্যা কমে।
৩. বিপাকক্রিয়া বাড়ে: খালি পেটে পানি খেলে শরীরের বিপাকক্রিয়ার গতি বাড়ে। ফলে শরীর সারা দিন চাঙ্গা থাকে এবং ক্যালোরি পোড়ার হার বাড়ে।
৪. মাথা ব্যথা কমে: শরীর হাইড্রেটেড থাকলে মাথা ব্যথা, ক্লান্তি ও মাইগ্রেন হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। সকালে পানি খাওয়ায় পেট পরিষ্কার থাকে।
৫. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: খালি পেটে পানি খেলে ক্ষুধা কমে যায়, ফলে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া কম হয়। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৬. ত্বক ভালো থাকে: পানি শরীর থেকে টক্সিন দূর করে দেয়, যা ত্বকে ব্রণ, ফুসকুড়ি বা র্যাশ কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত সকালে পানি খেলে ত্বক উজ্জ্বল ও সুস্থ থাকে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্রাশ না করেই পানি পান করলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না—বরং এতে অনেক ধরনের উপকার হয়। তাই দুশ্চিন্তা না করে সকালটা শুরু করুন এক-দুই গ্লাস পানি দিয়ে।
ভারতের ৩টি কাশির সিরাপ নিয়ে WHO-এর বিশ্বব্যাপী সতর্কতা
ভারতে তৈরি তিনটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের কাশির সিরাপ নিয়ে বিশ্বজুড়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। সংস্থাটি জানিয়েছে, এই তিনটি সিরাপের কারণে শিশুদের মধ্যে বড় ধরনের প্রাণঘাতী অসুস্থতা দেখা যেতে পারে। এই সতর্কতার পর WHO বিশ্বের সব দেশকে তাদের দেশে সিরাপগুলোর উপস্থিতি সম্পর্কে দ্রুত জানাতে বলেছে।
সতর্কতা জারি করা ওই তিনটি কাশির সিরাপ হলো:
কোল্ডরিফ (Coldrif): এটি তৈরি করেছে শ্রেশান ফার্মাসিউটিক্যালস (Sresan Pharmaceuticals)।
রেসপিফ্রেশ টিআর (Respifresh TR): এটি তৈরি করেছে রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালস (Rednex Pharmaceuticals)।
রিলাইফ (Relife): এটি তৈরি করেছে শেপ ফার্মা (Shape Pharma)।
শিশুদের জন্য বিশেষ সতর্কতা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এই তিনটি কাশির সিরাপ ২ বছরের নিচের কোনো শিশুকে দেওয়া উচিত নয়। সাধারণত ৫ বছরের নিচে বয়স, এমন কোনো শিশুকেও এই সিরাপগুলো না দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এই নির্দেশিকা জারির পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসনের কাছে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে। শিশুদের জন্য কাশির সিরাপ প্রেসক্রাইব করার সময় চিকিৎসকদের অত্যন্ত সাবধান হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
মাথাব্যথার ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’: যে লক্ষণ দেখলে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
মাথাব্যথাকে আমরা সাধারণত ক্লান্তি, স্ট্রেস বা ঘুমের অভাবের ফল হিসেবে দেখি। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিদিনের মতো মনে হওয়া এই ব্যথাই কখনও কখনও শরীরের গভীরে লুকিয়ে থাকা ভয়ংকর রোগের সংকেত হতে পারে। অবহেলা করলে সেটি জীবনহানির কারণ পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলসের অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডা. মাইরো ফিগুরা সম্প্রতি সতর্ক করেছেন, কিছু বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা আসলে দীর্ঘমেয়াদি বা প্রাণঘাতী অসুস্থতার ইঙ্গিত হতে পারে।
প্রতিদিনের মাথাব্যথা ও ক্যানসার সংযোগ
ডা. ফিগুরা এক ভিডিওতে এমন এক নারীর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন, যার স্বামীর প্রতিদিন মাথাব্যথা হতো। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার মস্তিষ্কে ছিল ৭.৬ সেন্টিমিটার আকারের ক্যানসার টিউমার।
চিকিৎসকদের মতে, মাথাব্যথা মস্তিষ্কে টিউমারের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের ব্যথা সাধারণত সকালে তীব্র হয় বা মাঝরাতে ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। এর সঙ্গে খিঁচুনি, চিন্তায় বা কথায় অসুবিধা, দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণ সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
বিপদের ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’
ডা. ফিগুরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ ‘রেড ফ্ল্যাগ’ বা সতর্ক সংকেতের কথা জানিয়েছেন, যেগুলো দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণ নেওয়া জরুরি:
১. হঠাৎ জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ মাথাব্যথা: যদি হঠাৎ মনে হয় জীবনের সবচেয়ে তীব্র মাথাব্যথা শুরু হয়েছে, একে কখনোই অবহেলা করবেন না। এটি মস্তিষ্কে ‘রাপচার্ড অ্যানিউরিজম’-এর ক্লাসিক উপসর্গ হতে পারে।
২. ৫০ বছরের পর নতুন মাথাব্যথা: যদি ৫০ বছর বয়সের পর হঠাৎ নিয়মিত মাথাব্যথা শুরু হয়, সেটিও স্বাভাবিক নয়। এর সঙ্গে ভারসাম্য হারানো, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া বা কথায় জড়তা মস্তিষ্কের স্নায়বিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. সকালে বা শোয়ার সময় ব্যথা বেড়ে যাওয়া: যদি মাথাব্যথা সকালে বেশি হয় বা শোয়ার সময় তীব্র হয়ে ওঠে, এটি মাথার ভেতর চাপ বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে, যা প্রায়ই মস্তিষ্কে সিস্ট বা টিউমারজনিত চাপের কারণে হয়।
৪. অন্যান্য উপসর্গ: এর সঙ্গে ভারসাম্য হারানো, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া বা কথায় জড়তা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
মাথাব্যথা যেমন সাধারণ, তেমনি বিপজ্জনকও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ নতুন করে ব্যথা শুরু হলে বা পুরনো মাথাব্যথার ধরন বদলে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
সূত্র:https://tinyurl.com/2auhdr9d
দেশজুড়ে টাইফয়েড টিকাদান অভিযানে সাড়ে ৩৮ লাখ শিশুর টিকা সম্পন্ন
দেশজুড়ে চলমান টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকাদান অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬১২ জন শিশু টিকা পেয়েছে।
গত ১২ অক্টোবর শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর আজ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত দূষিত পানি, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে ছড়ায়। নয় মাস বয়স থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যেই এ রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
ডা. জাফর বলেন, “এই টিকা শিশুকে অন্তত পাঁচ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়। পাশাপাশি এটি ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডের বিস্তার রোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখে, যা এখন বৈশ্বিকভাবে একটি বড় জনস্বাস্থ্য হুমকি।”
তিনি জানান, এই কর্মসূচি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগে বর্ধিত টিকাদান কর্মসূচির (EPI) আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিদ্যালয় বা কলেজে টিকা পাচ্ছে। অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা নিকটস্থ ইপিআই কেন্দ্রে গিয়ে বিনামূল্যে টিকা নিতে পারছে।
এ পর্যন্ত টিকাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ জন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং ৩ লাখ ২২ হাজার ৫৬৯ জন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে টিকা পেয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যমতে, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে প্রায় ৯৩ হাজারের মৃত্যু ঘটে—এর অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। সেই বছর বাংলাদেশে প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, যাদের ৬৮ শতাংশই ছিল ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু।
ডা. জাফর সতর্ক করে বলেন, “অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী টাইফয়েড এখন একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। অনেক প্রচলিত ওষুধ আর কার্যকর থাকছে না। এই টিকা সংক্রমণ হ্রাসের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারও কমাবে।”
তিনি জানান, এই জাতীয় অভিযানের সফল বাস্তবায়নে শিক্ষা, ধর্ম, সমাজকল্যাণ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করা হয়েছে।
অভিযানের আওতায় ছিন্নমূল শিশু, অনাথ, আদিবাসী সম্প্রদায়, বস্তিবাসী ও পতিতালয় এলাকার শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ডা. জাফর আরও জানান, বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি বিশ্বের অন্যতম সফল স্বাস্থ্য উদ্যোগ, যার মাধ্যমে প্রতিবছর ৪২ লাখেরও বেশি শিশু বিভিন্ন প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগের টিকা পায় এবং প্রায় এক লাখ শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ হয়।
টাইফয়েড টিকাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ। এতে প্রোটিন ও পলিস্যাকারাইড উপাদান রয়েছে, যা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।
তিনি বলেন, “ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে হালকা ব্যথা বা লালচে ভাব হতে পারে, তবে তা দ্রুত সেরে যায়।” অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যেন সব শিশু এই টিকা গ্রহণ করে।”
-আলমগীর হোসেন
নতুন মহামারির আশঙ্কা! জাপানে ফ্লু-এর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব, রোগী বেড়েছে চারগুণ
ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে যেখানে ফ্লু মৌসুম শুরু হওয়ার কথা, সেখানে ব্যতিক্রম ঘটেছে জাপানে। শীত আসার আগেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু, যা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে জাপান সরকার। দ্রুত বাড়ছে আক্রান্ত ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা, ফলে চাপে পড়েছে পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
সময়ের আগে সংক্রমণ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার চাপ
জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা গেছে, দেশজুড়ে প্রতি চিকিৎসাকেন্দ্রে গড়ে ১.০৪ জন ফ্লু রোগী শনাক্ত হচ্ছে, যা মহামারির সতর্কসীমা ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণত নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের দিকে ফ্লু মৌসুম শুরু হয়, কিন্তু এ বছর সংক্রমণ প্রায় পাঁচ সপ্তাহ আগেই ছড়িয়ে পড়েছে।
রোগী বৃদ্ধি: অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই ৪ হাজারের বেশি মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন—যা আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ: টোকিও, ওকিনাওয়া ও কাগোশিমাসহ ২৮টি প্রিফেকচারে সংক্রমণ বাড়ছে। এসব এলাকায় অন্তত ১৩৫টি স্কুল ও শিশুসেবা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভাইরাসের আচরণ পরিবর্তন ও সতর্কতা
হোক্কাইডো হেলথ সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োকো তসুকামোতো বলছেন, “এ বছর ফ্লু মৌসুম অনেক আগেই শুরু হয়েছে। হয়তো বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন বা পরিবেশগত কারণেই এমন হচ্ছে। সামনে এটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, মৌসুমি রোগের ধরন এখন বদলে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, জনসমাগম এবং বৈশ্বিক ভ্রমণের কারণে সংক্রমণ অনেক আগেই ছড়িয়ে পড়ছে।
ঝুঁকিপূর্ণদের জন্য সতর্কতা জারি করে তিনি বলেন, বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু এবং যাদের আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। তিনি সবাইকে টিকা নিতে, নিয়মিত হাত ধুতে, মাস্ক পরতে এবং জ্বর-সর্দি থাকলে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন।
জাপানের এই আগাম ফ্লু বিস্তার বিশ্বব্যাপী এক সতর্ক সংকেত দিচ্ছে যে, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যক্তিগত সচেতনতা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।
ডিমেনশিয়া শুরু হয় মস্তিষ্ক থেকে নয়, বরং পা থেকে: স্নায়ু বিশেষজ্ঞের চমকপ্রদ তথ্য
বিশ্বজুড়ে বয়স্ক মানুষের অক্ষমতা ও নির্ভরশীলতার প্রধান কারণ হিসেবে ডিমেনশিয়া (স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও দৈনন্দিন কাজের সক্ষমতার ক্ষয়) এখন এক ভয়াবহ বাস্তবতা। যদিও অনেকে মনে করেন, মস্তিষ্ক সচল রাখাই এর প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি। কিন্তু ভারতের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)-এর প্রশিক্ষিত স্নায়ুশল্য বিশেষজ্ঞ ডা. অরুণ এল. নাইক জানালেন চমকপ্রদ তথ্য—ডিমেনশিয়ার সূত্রপাত নাকি পা থেকেই!
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাই মূল বিপদ
ডা. নাইক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আপনি কি জানেন, ডিমেনশিয়া আসলে শুরু হয় আপনার পা থেকে? শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা পায়ের পেশিকে দুর্বল করে, যার ফলে স্যারকোপেনিয়া বা পেশি ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্বল পায়ের কারণে জ্ঞানগত ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায় এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।”
BDNF সক্রিয়করণ: তিনি ব্যাখ্যা করেন, শরীরের সক্রিয় পেশি ব্রেইন-ডিরাইভড নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (BDNF) নামের রাসায়নিক উৎপাদন করে, যা মস্তিষ্কের স্মৃতিনির্ভর অংশ হিপোক্যাম্পাসে সংযোগ বৃদ্ধি করে।
মস্তিষ্কের অনুশীলন: ডা. নাইক বলেন, “হাঁটা শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি পুরো মস্তিষ্কের এক অনুশীলন।” তিনি আরও যোগ করেন, “হাঁটার ধরনে বা ভারসাম্যে পরিবর্তন দেখা গেলে সেটি মস্তিষ্কের আগাম সতর্ক সংকেত। এটি প্রায়ই স্মৃতি সমস্যার বছরখানেক আগেই দেখা দেয়।”
ডা. নাইক কয়েকটি সহজ অভ্যাসের পরামর্শ দিয়েছেন:
১. হাঁটার অভ্যাস: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটুন।
২. ভারসাম্য রক্ষা: এক পায়ে দাঁড়ানো বা সরলরেখায় হাঁটার মতো ভারসাম্য রক্ষার ব্যায়াম করুন।
৩. সমন্বয় ক্ষমতা: হাঁটার সময় কথা বলা বা হালকা মানসিক কাজ করলে মস্তিষ্কের সমন্বয় ক্ষমতা বাড়ে।
৪. পেশির ব্যায়াম: নিয়মিত পায়ের পেশির ব্যায়াম করুন, এটি মস্তিষ্কের জন্য একপ্রকার ‘বিমা’।
৫. দীর্ঘ সময় বসে থাকা পরিহার: প্রতি ঘণ্টায় কিছুটা নড়াচড়া করুন।
ডা. নাইক পরামর্শ দেন, কখনোই দেরি হয়ে যায় না। “গবেষণায় দেখা গেছে, ষাট বছর বয়সেও হাঁটা ও ব্যায়াম শুরু করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। মনে রাখবেন, শক্ত পা মানেই তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক।”
প্রস্রাব ঘোলাটে: কখন বুঝবেন এটি যৌনরোগ বা ইউটিআই?
পর্যাপ্ত জল পান করলে মূত্রের রং স্বচ্ছ থাকারই কথা। কিন্তু শারীরিক এমন অনেক সমস্যার কারণে প্রস্রাবের রং ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেও মূত্রের রং পরিবর্তিত হয়। হায়দরাবাদের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক গোপাল রামদাস বলছেন, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে তা শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত। প্রাথমিক ভাবে ডিহাইড্রেশন বা কিডনিতে সংক্রমণ হলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মূত্রের রং ঘোলাটে হওয়ার ৪টি কারণ
১. ডিহাইড্রেশন (পানিশূন্যতা): শরীরে ফ্লুইডের মাত্রা কমে গেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে মূত্রের রং ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে।
করণীয়: সারাদিনে অন্তত পক্ষে ৬-৮ গ্লাস জল খেতে হবে। দ্রুত ফল পেতে হলে ওআরএস (ORS)-ও খেতে পারেন।
২. ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন (UTI): মূত্রথলি কিংবা নালিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে মূত্রের রং ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। তার সঙ্গে দুর্গন্ধ, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা, প্রস্রাব করতে গিয়ে জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তিও হতে পারে।
করণীয়: পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। তবে শুধু জল খেলে রোগ সারবে না; প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. যৌনরোগ: নারী, পুরুষ উভয়েই যৌনরোগের শিকার হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মূত্রনালিতে সংক্রমণ হওয়া স্বাভাবিক এবং এর ফলেও ঘোলাটে প্রস্রাব হতে পারে।
করণীয়: প্রাথমিক ভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে এবং অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৪. কিডনিতে পাথর: মূত্রনালিতে ক্ষুদ্র ক্যালকুলি বা পাথর জমলে কোমর-পিঠে যন্ত্রণা হয়, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বেরোতে দেখা যায় এবং মূত্রের রং বদলে যেতে পারে।
করণীয়: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পাঠকের মতামত:
- ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- বন্ধুরূপী শত্রু: যে ৫টি লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার বন্ধুত্বের বন্ধন বিপদজনক
- পায়ের পাতায় লুকানো নীরব ইঙ্গিত: কিডনি বিকলের এই সংকেত অবহেলা করলেই বিপদ
- খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষির উন্নয়নে তারেক রহমানের ৬ দফা পরিকল্পনা
- চট্টগ্রাম সিইপিজেডের কারখানায় আগুনে ১০৫০ শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করল অ্যালার্ম!
- রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ? ট্রাম্পের দাবির পর দিল্লি নীরবতা ভাঙল
- জুলাই সনদে সইয়ের বিষয়ে আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে: ফখরুল
- সিইপিজেডে আগুন: ৬ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, বাড়ছে ঝুঁকি
- শিক্ষক আন্দোলনের মোড়বদল: ‘লংমার্চ টু যমুনা’ স্থগিত, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- ১৬ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৬ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৬ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি
- নির্বাচিত হলে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করব: মির্জা ফখরুল
- জুলাই হত্যা মামলার আসামির মুক্তি: আদালত অঙ্গনে তোলপাড়
- এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিস্মিত করেছে, দায় এড়াতে পারে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- রূপনগর অগ্নিকাণ্ডের পর সামনে এল ঢাকার আরেক ‘রাসায়নিক বোমা’র খবর
- মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
- জান্নাত-জাহান্নামের প্রহরী কারা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য কী?
- জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না এনসিপি, ‘নাটকীয়তায় অংশ নয়’
- রাকসু নির্বাচন: ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কালির দাগ
- সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ নিয়ে জটিলতা: খসড়ায় ক্ষুব্ধ বিচারকরা
- শিক্ষার মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন: এইচএসসি পরীক্ষায় এত বড় ব্যর্থতার কারণ কী?
- ৪০০ কোটি বছর আগের সৌরজগতের রহস্য উন্মোচন: নতুন বস্তু অ্যামোনাইট
- খালি পেটে এলাচের পানি: যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- ওজন কমাতে সহায়ক: দিনে দুবার পান করুন এই বিশেষ ডিটক্স পানীয়
- সকালে ব্রাশ না করে পানি খেলে কী হয় শরীরের ভেতরে?
- ভারতের ৩টি কাশির সিরাপ নিয়ে WHO-এর বিশ্বব্যাপী সতর্কতা
- দেশের ১০ জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টির শঙ্কা, সতর্কতা জারি করল বিডব্লিউওটি
- এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, জেনে নিন ফলাফল জানার সহজ উপায়
- দৈনিক রাশিফল: ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
- ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল
- ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন শুরু, উৎসবে মেতেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- ৪৪ বছর পর চাকসু’তে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির
- ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- শীতে চুল ঝরা ও খুশকি: সমাধান মিলবে এই ৬ অভ্যাসে
- জাল টাকার প্রচলন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- চট্টগ্রামে নতুন মাইলফলক: বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু
- মাথাব্যথার ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’: যে লক্ষণ দেখলে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
- পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
- প্রাচুর্যের আড়ালে নির্মমতা: জাপানের হাশিমার বুকে চাপা পড়া কান্না ও এক রক্তাক্ত অধ্যায়
- আমাজনের গভীরে লুকানো রহস্যময় সোনালী শহর, যা খুঁজছে বিশ্ব
- জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করা ছাড়া উপায় নেই: রিজভী
- ড. ইউনূস: ‘কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে’
- এ কেমন যুদ্ধবিরতি: গাজায় রক্তক্ষরণ থামছে না
- আখেরাতের সাফল্য: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ৯টি সহজ পথ
- নামাজে মোবাইল বাজলে কী করবেন? সাইলেন্ট করা কি শরিয়তে জায়েজ?
- পুরোনো স্মার্টফোনকে নতুন ফোনের মতো দ্রুত করুন ৫টি সহজ উপায়ে
- আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা জানালেন আমীর হামজা
- শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানতে হবে: এনসিপি নেতা সারজিস আলমের সমর্থন
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- সমুদ্রের মাঝে সভ্যতা: ইতিহাস, ঐতিহ্য, জলবায়ু ও কূটনীতির মিলনে মালদ্বীপের টিকে থাকার গল্প
- ট্যাঙ্গো, পাম্পাস আর বিপ্লবের দেশ: আর্জেন্টিনার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি