আজ কিংবদন্তি কবি আল মাহমুদের ৮৯তম জন্মদিন

আজ ১১ জুলাই, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি, আধুনিক কাব্যধারার অনন্য নির্মাতা আল মাহমুদের ৮৯তম জন্মদিন। ১৯৩৬ সালের এই দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ, যিনি পরবর্তীতে শুধু ‘আল মাহমুদ’ নামেই হয়ে ওঠেন বাংলা ভাষার চিরকালীন কাব্যচরিত্র। ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পরপারে পাড়ি জমালেও তাঁর সাহিত্য, তাঁর ভাষা, তাঁর কবিতা আজও বাংলা সাহিত্যে দীপ্ত হয়ে জ্বলছে অন্ধকারে আলোর মতো, নিস্তব্ধতায় উচ্চারণের মতো।
সাহিত্যে নতুন ধারা: মাটি ও মানুষের কণ্ঠস্বর
আল মাহমুদের কাব্যবিশ্বের প্রধান উপাদান ছিল বাংলার মাটি, কৃষকজীবন, নদী, ঋতু, প্রেম এবং ইতিহাসবোধ। নগরায়ণের বিপরীতে গ্রামীণ আবহমান জীবন, লোকজ সংস্কৃতি ও ইসলামি চেতনার এক অদ্ভুত সংমিশ্রণে তাঁর কবিতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘লোক লোকান্তর’ বাংলা কবিতায় নতুন ঢেউ তোলে। এরপর ‘কালের কলস’, ‘সোনালি কাবিন’, ‘মায়াবী পর্দা দুলে ওঠো’ তাঁকে নিয়ে যায় পাঠকহৃদয়ের গভীরে।
বিশেষ করে ‘সোনালি কাবিন’ কাব্যগ্রন্থ বাংলা আধুনিক কবিতার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। এই গ্রন্থে প্রেমিক কবি, গ্রামবাংলার কবি, ইতিহাসসচেতন কবি—সব মিলিয়ে এক আল মাহমুদের আত্মপ্রকাশ ঘটে। কবি রফিক আজাদের কথায়, “তিনি ছিলেন গ্রাম থেকে শহরে আসা এক আত্মপ্রত্যয়ী কবি।”
বহুমাত্রিক সাহিত্যচর্চা
কবিতার পাশাপাশি আল মাহমুদ গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ এবং শিশুসাহিত্যে রেখেছেন শক্তিশালী উপস্থিতি।
উপন্যাসে তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
- কবির মৃত্যু
- দ্বিতীয় ভাঙন
- উপমাহীন উপকূল
- যেভাবে বেড়ে উঠি
জনপ্রিয় ছোটগল্প:
- লোকটি
- মায়া
- তোমার চোখে আলো দেখে
তাঁর প্রবন্ধ ও কলামে ফুটে উঠেছে ধর্ম, ইতিহাস, সাহিত্য এবং জাতিসত্তার গাঢ় অনুধ্যান। বিশেষ করে ইসলামের ইতিহাস ও আত্মানুসন্ধানের দিক তাঁর লেখায় প্রখর হয়ে উঠেছে—যা অনেকের কাছে রক্ষণশীলতার প্রতীক হলেও সাহিত্যিক সৌন্দর্যে তা সবসময়ই ছিল উদার ও হৃদয়গ্রাহী।
সাংবাদিকতা ও কর্মজীবন
শুধু সাহিত্যিক নন, আল মাহমুদ ছিলেন একজন প্রাজ্ঞ সাংবাদিক ও গবেষক। ১৯৫৪ সালে সাপ্তাহিক কাব্য পত্রিকায় লেখালেখি শুরু করে পরবর্তীতে দৈনিক মিল্লাত, ইত্তেফাক, কর্ণফুলী ও গণকণ্ঠে কাজ করেন। দৈনিক গণকণ্ঠে তিনি ছিলেন সম্পাদক। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের সহপরিচালক হিসেবে যোগ দিয়ে পরবর্তীতে পরিচালক হিসেবে অবসর নেন ১৯৯৭ সালে।
সাহিত্যজীবনে সম্মাননা ও পুরস্কার
বাংলা সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ আল মাহমুদ পেয়েছেন বহু পুরস্কার ও সম্মাননা। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
- বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৮)
- একুশে পদক (১৯৮৭)
- ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার
- নতুন গতি সাহিত্য পুরস্কার
- ত্রিকাল সাহিত্য পুরস্কার (কলকাতা)
এক কবির উত্তরাধিকার
আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যে এমন এক নাম, যিনি সাহিত্যের ভেতর দিয়ে সমাজের গভীর সত্তাকে উন্মোচন করেছেন। তাঁর কবিতা শুধু প্রেম বা প্রকৃতি নয় তা ছিল আত্মজিজ্ঞাসা, ইতিহাসপাঠ, জাতির জাগরণ এবং একটি ধর্মীয় সংস্কৃতির আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইও।
তিনি ছিলেন একাধারে প্রেমিক, বিপ্লবী, ধর্মচিন্তক, ইতিহাসসন্ধানী এবং আত্মার কবি। তাঁর কাব্যভাষা ছিল সাবলীল, চিত্রাত্মক, একান্ত নিজস্ব। তাঁর লেখায় যেভাবে ‘সোনালি কাবিন’ আবেগের আকাশে পতাকা তুলে দেয়, সেভাবেই তাঁর উপন্যাসে দেখা মেলে বেদনার রূপকল্প, বঞ্চনার ইতিহাস।
জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি
আজ তাঁর ৮৯তম জন্মদিনে সাহিত্যপিপাসু মানুষ, তরুণ লেখক, পাঠক, গবেষক সবাই তাঁকে স্মরণ করছেন গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায়। তাঁর সাহিত্যের আলো আজও প্রজন্মের চিন্তা ও কল্পনায় দীপ্ত।
“সোনালি কাবিনের ছায়া পড়ে আছে আজও কবিতার প্রতিটি সোনার পাতায়।”- এই কবিতার জন্মকারিগর আল মাহমুদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও কাব্যিক ভালবাসা।
নোবেল ঘিরে জল্পনা: কে জিতবেন এ বছরের সাহিত্যর মুকুট?
বিশ্ব সাহিত্যের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ স্বীকৃতি—নোবেল সাহিত্য পুরস্কার—ঘিরে শুরু হয়েছে নতুন আলোচনা ও প্রত্যাশা। সুইডেনের স্টকহোমে বৃহস্পতিবার ঘোষিত হবে এ বছরের বিজয়ীর নাম। সাহিত্যানুরাগী ও বিশ্লেষকদের ধারণা, এ বছর পুরস্কারটি যেতে পারে ইউরোপীয় কোনো পুরুষ লেখকের হাতে।
গত বছর ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার লেখিকা হান কাং, যিনি প্রথম এশীয় নারী হিসেবে নোবেল সাহিত্য পুরস্কার পান। কিন্তু এবার অনেকেই মনে করছেন, এক বছরের ব্যবধানেই পুরস্কারটি ফিরে যেতে পারে ইউরোপে—আর বিজয়ী হতে পারেন একজন পুরুষ লেখক।
সুইডিশ রেডিওর সংস্কৃতি বিশ্লেষক লিনা কালমটেগ এএফপিকে বলেন, “একজন ইউরোপীয় পুরুষ লেখককে পুরস্কার দেওয়া এখন একপ্রকার যুক্তিযুক্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে, কারণ গত বছর এক অ-ইউরোপীয় নারীকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল।”
আলোচনায় ক্রিশ্চিয়ান ক্রাখট, লাসলো ক্রাসনাহোরকাই ও মিরচা কার্তারেস্কু
এ বছর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন সুইস উত্তরাধুনিক লেখক ক্রিশ্চিয়ান ক্রাখট, হাঙ্গেরির লাসলো ক্রাসনাহোরকাই ও পিটার নাডাশ, এবং রোমানিয়ার মিরচা কার্তারেস্কু।
৫৮ বছর বয়সী ক্রাখট জার্মান ভাষার একজন খ্যাতনামা লেখক, যিনি আধুনিক ভোক্তাবাদ, সংস্কৃতি ও উত্তর-উপনিবেশিক বাস্তবতা নিয়ে লেখেন। সুইডিশ দৈনিক ডাগেন্স নিয়াহেতার-এর সংস্কৃতি সম্পাদক বিয়র্ন উইমান বলেন, “এ বছর গথেনবার্গ বইমেলায় তাঁর বক্তৃতায় সুইডিশ অ্যাকাডেমির অনেক সদস্য সামনের সারিতে বসেছিলেন—যা সাধারণত একটি ইঙ্গিতবাহী দৃশ্য। ২০০৪ সালে যখন অস্ট্রিয়ার নাট্যকার এলফ্রিডে ইয়েলিনেক পুরস্কার পান, তখনও এমনটাই ঘটেছিল।”
নারী লেখকদের উত্থান, কিন্তু পুরুষদের সম্ভাবনা বেশি
১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের ইতিহাসে পশ্চিমা পুরুষ লেখকদেরই প্রাধান্য দেখা গেছে। মোট ১২১ জন বিজয়ীর মধ্যে মাত্র ১৮ জন নারী, আর আফ্রিকান ভাষাভাষী কোনো লেখক এখনো পুরস্কার পাননি।
২০১৮ সালে যৌন হয়রানির অভিযোগে অ্যাকাডেমি চরম সংকটে পড়লে সদস্যপদে বড় পরিবর্তন আসে। এরপর প্রতিষ্ঠানটি প্রতিশ্রুতি দেয় ভৌগোলিক ও ভাষাগত বৈচিত্র্য আনার। ফলস্বরূপ, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নারী বিজয়ীর সংখ্যা বেড়েছে।
বিয়র্ন উইমান বলেন, “হান কাং-এর মতো লেখককে পুরস্কৃত করা কয়েক বছর আগেও অকল্পনীয় ছিল। আগের ধারাবাহিকতায় দেখা গেছে, অ্যাকাডেমি সাধারণত বয়োজ্যেষ্ঠ পুরুষ লেখকদেরই স্বীকৃতি দিত।” তবে তিনি মনে করেন, এবার পুরস্কারটি যাবে “অ্যাংলো-স্যাক্সন, জার্মান বা ফরাসি ভাষার কোনো পুরুষ লেখকের হাতে।”
কালমটেগ বলেন, “অ্যাকাডেমির পুরস্কার বাছাইয়ে একধরনের ঘূর্ণন প্যাটার্ন আছে—এক বছর ইউরোপ, পরের বছর অন্য অঞ্চল; এক বছর নারী, পরের বছর পুরুষ। এ বছর তাই ইউরোপীয় পুরুষ লেখক নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।”
অস্ট্রেলীয়দের উত্থান: জেরাল্ড মারনেন ও অ্যালেক্সিস রাইট আলোচনায়
তবে এ বছর সম্ভাব্য বিজয়ীদের আলোচনায় ইউরোপের বাইরেও আছেন কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নাম। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার দুই লেখক—জেরাল্ড মারনেন ও অ্যাবরিজিন লেখিকা অ্যালেক্সিস রাইট।
১৯৩৯ সালে মেলবোর্নে জন্ম নেওয়া মারনেন নিজের কাজকে বলেন “আমার মনের অন্তর্গত সাহিত্যিক প্রতিফলন”। তাঁর প্রথম বই Tamarisk Row (১৯৭৪)-এ ফুটে উঠেছে পিতার জুয়াখেলা, মায়ের ধর্মবিশ্বাস ও শৈশবের নিষ্ঠুর বাস্তবতা। তাঁর বিখ্যাত উপন্যাস The Plains (১৯৮২) অস্ট্রেলিয়ার ভূমি-মালিকদের সংস্কৃতি নিয়ে এক গভীর দার্শনিক অন্বেষণ, যা দ্য নিউ ইয়র্কার–এর ভাষায় “একটি অদ্ভুত কিন্তু অসাধারণ স্বপ্নের মতো রচনা”।
সুইডিশ দৈনিক Svenska Dagbladet-এর সাহিত্য সমালোচক জোসেফিন দে গ্রেগোরিও রসিকতার ছলে বলেন, “প্রশ্ন হলো, পুরস্কার ঘোষণার সময় তিনি ফোন ধরবেন তো? কারণ তিনি এমনকি ফোনও ব্যবহার করেন না!”
তিনি আরও বলেন, “তিনি অস্ট্রেলিয়া কখনো ছাড়েননি, গ্রামের বাড়িতে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করেন। তবে আমি চাই তিনি জিতুন, যাতে বিশ্ব তাঁর অনন্য সাহিত্যকর্মকে চিনতে পারে।”
অন্য সম্ভাব্য নাম ও সাহিত্য বৈচিত্র্য
কানাডার অ্যান কারসন, চিলির রাউল জুরিতা, ভারতের অমিতাভ ঘোষ, আর্জেন্টিনার সিজার আইরা, এবং মেক্সিকোর ক্রিস্টিনা রিভেরা গারজা-র নামও আলোচনায় রয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সর্বশেষ বিজয়ী ছিলেন পেরুর মারিও ভার্গাস লোসা, যিনি ২০১০ সালে পুরস্কার পান।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘ এক দশক পর লাতিন আমেরিকা আবারও এই পুরস্কারের দৌড়ে এগিয়ে আসতে পারে। তবে যেহেতু সুইডিশ অ্যাকাডেমির আলোচনা ও মনোনয়নের তালিকা ৫০ বছর গোপন রাখা হয়, তাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সবসময়ই এক অপ্রত্যাশিত মোড় নিতে পারে।
পুরস্কার ঘোষণার অপেক্ষা
২০২৫ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কারের বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হবে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়)। বিজয়ী লেখক পাবেন ১.২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সম্মানী।
বিশ্বজুড়ে সাহিত্যপ্রেমীরা তাই আবারও অপেক্ষায়—এইবার কাকে ঘিরে উচ্চারিত হবে সাহিত্যের সর্বোচ্চ স্বীকৃতির নাম?
-হাসানুজ্জামান
বাংলা গানের অগ্রদূত অতুলপ্রসাদ সেন: দেশাত্মবোধ, ভক্তি আর প্রেমের মূর্ছনায় এক অমর নাম
বাংলা গানের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় ও কাজী নজরুল ইসলামের পাশাপাশি আরেক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন অতুলপ্রসাদ সেন (১৮৭১–১৯৩৪)। তিনি ছিলেন কবি, গীতিকার, সুরকার এবং গায়ক চার গুণে সমৃদ্ধ এক বিরল প্রতিভা। তার গান দেশাত্মবোধক, ভক্তিমূলক এবং প্রেমনির্ভর হলেও ব্যক্তিগত জীবনের দুঃখবোধ ও বেদনা তার সৃষ্টিকে দিয়েছে গভীর আবেগময়তা ও হৃদয়গ্রাহী সুর।
শৈশব ও সংগীত সাধনার শুরু
১৮৭১ সালের ২০ অক্টোবর ঢাকার মাতুয়াইলে জন্ম নেন অতুলপ্রসাদ। তাদের আদি নিবাস ছিল শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার মগর গ্রামে। শৈশবেই পিতৃহারা হয়ে তিনি মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের কাছে বড় হন। কালীনারায়ণ ছিলেন ভক্তিমূলক গানের রচয়িতা ও গায়ক। তার কাছেই অতুলপ্রসাদের সংগীতসাধনার বীজ বপন হয়।
শিক্ষা ও বিদেশ যাত্রা
১৮৯০ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন অতুলপ্রসাদ সেন। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনের মিডল টেম্পলে আইন পড়তে যান। সেখানেই তিনি গান লেখার প্রথম প্রেরণা পান। বিদেশি সুরের প্রভাবেই রচিত হয় তার অমর দেশাত্মবোধক গান ‘উঠ গো ভারতলক্ষ্মী’। লন্ডনে তিনি চিত্তরঞ্জন দাশ, অরবিন্দ ঘোষ ও সরোজিনী নাইডুর মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং সকলের কাছে সম্মানীয় হয়ে ওঠেন।
আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠা ও সংগীতের আসর
১৮৯৪ সালে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি বাংলায় ফিরে আসেন এবং পরে লখনউতে আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি অউধ বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্বাচিত হন। জীবদ্দশাতেই লখনউ শহরে তার বাসভবনের রাস্তার নামকরণ হয় তার নামে। তবে আইন পেশার বাইরেও তার মূল আসক্তি ছিল সংগীতে। প্রায় প্রতিদিনই তার বাড়িতে সংগীতের আসর বসত, যেখানে খ্যাতনামা ওস্তাদরা অংশ নিতেন।
বাংলা গানে নতুন ধারা
অতুলপ্রসাদ সেন বাংলা গানে ঠুমরি ধারার প্রবর্তক হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রথম বাংলায় গজল রচনা করেন। তার গানকে তিনটি প্রধান ধারায় ভাগ করা যায়-১. দেশাত্মবোধক গান: যেমন ‘উঠ গো ভারতলক্ষ্মী’, ‘হও ধরমেতে ধীর’।২. ভক্তিগীতি: ভগবানের প্রতি নিবেদিত অসংখ্য গান।৩. প্রেমের গান: করুণ আবেগময় সুরে ভরা গান।
তার সৃষ্টিতে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের গভীর প্রভাব দেখা যায়। দাদরা, ঠুমরি, খেয়াল প্রভৃতি ধারাকে তিনি বাংলায় প্রয়োগ করেন, যা একদিকে শাস্ত্রীয় ভিত্তি মজবুত করেছে, অন্যদিকে তার গানকে করেছে হৃদয়স্পর্শী।
ব্যক্তিজীবনের বেদনা ও গানের আবেগ
লন্ডনে পড়াশোনার সময় মামাতো বোন হেমকুসুমকে বিয়ে করেছিলেন অতুলপ্রসাদ। তবে সংসার জীবনে সুখ পাননি। স্ত্রী ও মায়ের দ্বন্দ্বে দাম্পত্য ভেঙে যায়। এই ব্যক্তিগত বেদনা তার গানে করুণ রস যোগ করেছিল, যা তাকে আলাদা বৈশিষ্ট্যে অনন্য করে তোলে।
গানসংগ্রহ ও অবদান
১৯৩১ সালে তার গানের সংকলন ‘গীতিপুঞ্জ’ প্রকাশিত হয়। জীবদ্দশা ও মৃত্যুর পর মিলিয়ে তার প্রায় ২০৬টি গান সংকলিত হয়েছে, যার মধ্যে অন্তত ৫০–৬০টি গান বিশেষ জনপ্রিয়। বাংলা সংগীতে রাগপ্রধান ধারা, ঠুমরি এবং গজলকে সংযোজন করে তিনি এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলামসহ পরবর্তী প্রজন্মের কবি-গীতিকাররা তার সৃষ্টির দ্বারা গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে প্রেরণা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় অতুলপ্রসাদের লেখা গান ‘মোদের গরব, মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’ বাঙালির সংগ্রামকে উজ্জীবিত করেছিল। এটি স্বাধীনতার আন্দোলনে প্রেরণার গান হিসেবে অমর হয়ে আছে।
মৃত্যু ও স্মরণ
১৯৩৪ সালের ২৬ আগস্ট লখনউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পর তার অস্থি গাজীপুরের কাওরাইদ ব্রহ্ম মন্দির প্রাঙ্গণে সমাধিস্থ করা হয়। আজও তিনি বাংলা গানের ইতিহাসে অগ্রদূত ও পথপ্রদর্শক হিসেবে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক যতীন সরকার আর নেই
স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক যতীন সরকার আর নেই। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ৯০ বছর বয়সে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী জাগো নিউজকে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
জানা যায়, যতীন সরকার পলি আর্থ্রাইটিসে ভুগছিলেন এবং কয়েক মাস আগে তার শরীরে একটি অস্ত্রোপচারও করা হয়। সুস্থ হয়ে তিনি নেত্রকোনায় নিজ বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু গত ৫ জুন নিজের শোওয়ার ঘরের সামনে পড়ে গিয়ে তার ডান পায়ের ফিমার নেক ফ্যাকচার হয়। এরপর তাকে প্রথমে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও সম্প্রতি উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন যতীন সরকার। তিনি ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষক ছিলেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি বাম রাজনীতি, প্রগতিশীল আন্দোলন এবং মননশীল সাহিত্যচর্চায় সক্রিয় ছিলেন। তিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
যতীন্দ্রনাথ সরকার ২০১০ সালে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থ পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন। শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি নিজের শেকড়ের টানে নেত্রকোনার চন্দপাড়া গ্রামে ফিরে যান। তার প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’, ‘পাকিস্তানের জন্ম মৃত্যু-দর্শন’, ‘বাঙালির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য’ এবং ‘প্রাকৃতজনের জীবনদর্শন’।
/আশিক
স্বাধীনতা পুরস্কারজয়ী সাহিত্যিক যতীন সরকারের প্রয়াণে জাতির শোক
বাংলাদেশের প্রগতিশীল চেতনা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র অধ্যাপক যতীন সরকার আর নেই। জীবনের নব্বইতম বছরে এসে তিনি শেষ বিদায় নিলেন পৃথিবী থেকে। ১৩ আগস্ট, মঙ্গলবার বিকেল পৌনে তিনটার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক ডা. লেলিন চৌধুরী।
দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন। বহু বছর ধরে পলি আর্থ্রাইটিসের কষ্টও তাঁকে ভোগাতে থাকে। সম্প্রতি একাধিক শারীরিক জটিলতার কারণে তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। কিছুটা সুস্থতা ফিরে পেলে তিনি নিজ জেলা নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার চন্দপাড়া গ্রামে অবস্থিত বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু গত জুন মাসে শোওয়ার ঘরের সামনের বারান্দা থেকে পত্রিকা আনতে গিয়ে তিনি পড়ে গিয়ে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতে তাঁর ডান পায়ের উরুর হাড়ের গলার অংশ (রাইট ফিমার নেক) ভেঙে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে শেষ পর্যন্ত তাঁর জীবনাবসান ঘটে।
অধ্যাপক যতীন সরকার ১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোনার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাজীবনের পর তিনি ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে দীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষকতার মাধ্যমে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে জ্ঞান, যুক্তিবাদ ও মানবিকতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করেছেন। কেবল শিক্ষাক্ষেত্রেই নয়, মননশীল সাহিত্যচর্চা, বামপন্থী রাজনীতি এবং প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গেও তিনি অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত ছিলেন।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্বপালনকারী একজন সাহসী সাংস্কৃতিক সংগঠক। তাঁর প্রজ্ঞা, লেখনী ও সাংস্কৃতিক নেতৃত্ব বাংলাদেশের প্রগতিশীল আন্দোলনে গভীর ছাপ রেখে গেছে।
লেখক হিসেবে যতীন সরকার ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। সাহিত্যে তাঁর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১০ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কার’ লাভ করেন। এর আগে ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৫ সালে প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থ পুরস্কার, ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার, মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হন।
২০০২ সালে ৪২ বছরের শিক্ষকতা জীবন শেষে অবসর গ্রহণ করেন তিনি। কিন্তু অবসর মানেই তাঁর কাছে ছিল শেকড়ে ফেরা। স্ত্রী কানন সরকারকে নিয়ে তিনি স্থায়ীভাবে চলে যান জন্মভূমি নেত্রকোনায় এবং সেখান থেকেই অব্যাহত রাখেন তাঁর লেখালেখি, গবেষণা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘সাহিত্যের কাছে প্রত্যাশা’, ‘পাকিস্তানের জন্ম মৃত্যু-দর্শন’, ‘বাঙালির সমাজতান্ত্রিক ঐতিহ্য’, ‘প্রাকৃতজনের জীবনদর্শন’ প্রভৃতি। এই গ্রন্থগুলো কেবল সাহিত্য ও ইতিহাসে নয়, সমাজচিন্তায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
-ইসরাত
চীনের হারানো ব্যবসা ধীরে ধীরে জায়গা নিচ্ছে বাংলাদেশে
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান শক্তিশালী হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন—এই ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৫ শতাংশ, যা শীর্ষ ১০ সরবরাহকারীর মধ্যে সর্বোচ্চ। একই সময় চীনের রপ্তানি কমেছে ১১১ কোটি ডলার। এ প্রবণতা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কনীতির কারণে তৈরি হয়েছে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র চীনসহ বিভিন্ন দেশের আমদানি পণ্যের ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। নতুন শুল্কহার অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের পণ্যে ২০ শতাংশ, ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ এবং চীনের পণ্যে ৩০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। তবে রাশিয়ার জ্বালানি তেল কেনার কারণে ভারতের পণ্যে বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায়, তাদের মোট শুল্কহার দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের অধীনস্থ অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলস (OTEXA)-এর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি-জুন সময়ে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৪২৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে। গত বছরের একই সময়ে এই রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৪০ কোটি ডলার। এর ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৫.১৩ শতাংশ।
শুধু রপ্তানি বৃদ্ধিই নয়, বাজারে বাংলাদেশের হিস্যাও বেড়েছে। গত বছর এটি ছিল ৯.২৬ শতাংশ, যা ২০২৫ সালের জুন শেষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে।
অন্যদিকে, এই সময়ে চীনের রপ্তানি ৫৭৩ কোটি ডলারে নেমে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ কম। ফলে দেশটির মার্কেট শেয়ারও কমে দাঁড়িয়েছে ১৮.৮৮ শতাংশে। বিপরীতে ভিয়েতনাম ৭৭৭ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে ১৯.৭৯ শতাংশ বাজার দখল করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীনের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যিক চাপ এবং পাল্টা শুল্কের কারণে ক্রয়াদেশ ধীরে ধীরে স্থানান্তর হচ্ছে। একাধিক রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মতে, গত ৬-৮ মাস ধরে চীনের হারানো অর্ডার ধীরে ধীরে বাংলাদেশে আসছে। বিশেষ করে কম মূল্যের পোশাকের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে।
তুসুকা গ্রুপের চেয়ারম্যান আরশাদ জামাল জানান, সেপ্টেম্বর থেকে গ্রীষ্মকালীন পোশাকের অর্ডার আসতে শুরু করবে। তিনি বলেন, "আমরা তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে আছি। শুধু মার্কিন নয়, ইউরোপীয় ক্রেতারাও বাড়তি অর্ডার দিচ্ছেন।"
ভবিষ্যতে এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে রপ্তানিতে বাংলাদেশের অবস্থান আরও মজবুত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, "চীন থেকে স্থানান্তরিত অর্ডার বাংলাদেশে আসছে এবং এই ধারা চলতে থাকলে আমাদের ব্যবসায় ভালো সম্ভাবনা তৈরি হবে। তবে আমরা সদস্যদের মার্কিন ক্রেতাদের সঙ্গে শুল্ক ভাগাভাগি না করার নির্দেশনা দিয়েছি।"
ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের রপ্তানিও এ সময় বেড়েছে। ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি হয়েছে ২২৬ কোটি ডলার, প্রবৃদ্ধি ১৮ শতাংশ। ভারত রপ্তানি করেছে ২৮৪ কোটি ডলারের পোশাক, প্রবৃদ্ধি ১৬ শতাংশ।
সামগ্রিকভাবে, যুক্তরাষ্ট্রে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে তৈরি পোশাক আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৮ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬.৭৬ শতাংশ বেশি। এই বৃদ্ধির পেছনে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
/আশিক
কাঁদিস নে গোপনে

আশিকুর রহমান
মানবজাতির মন বোঝা বড়ই জটিল আর কষ্টসাধ্য।
কারো সাথে আঁকড়ে থাকলেও, একদিন জানবে অনেক দূরে।
সে নিজেও জানতো না, কী পেতে চেয়েছিল তোমার থেকে।
কোনো এক অজানা কারণ দেখিয়ে হতাশায় চলে যায় দূরে।
যা আছে তাতে যে খুশি না, সে কোথাও গিয়েও হবে না সুখী।
তা যদি সে জেনেও থাকে, তবুও যাবে তোমার থেকে দূরে।
তুমি তো ছিলে তার জীবনের এক খণ্ড নাটকের অংশবিশেষ।
তুমি থাকো তোমার মতো, এভাবেই যদি তোমার জীবন চলে বেশ।
তুমি যদি দিয়ে দাও তোমার সবটুকু স্নিগ্ধতা আর সর্বস্ব,
দিবা-রাত্রি কষবে সে হিসাব, কী দিলে তারে এত বালুকণা মাত্র।
কোথায় শান্তি, কোথায় সুখ—এ খোঁজেই তো মানুষ প্রতিনিয়ত চলে।
নদীর ওপার যাওয়ার পরে, আবার এপারে কেন ফিরে আসে চলেই?
ওরে, মানবজীবনের খাতায় শুরু জোয়ারে, আর শেষ হয় ভাটায়।
এ ঘাটে ও ঘাটে না ঘুরে, তোর তালে সাতর রে তুই মানুষ।
বুঝে-শুনে ফেলিস পা, বিপদে আর সংকটে পথ যেন না হারাস।
মানুষ, আপন মানুষ হারিয়ে তুই কাঁদিস নে গোপনে।
একা মানুষ

রুবা, টুংটাং
যদিও পৃথিবী পূর্ণ মানুষে, তবুও মানুষ একা।
এমন কিছু ক্ষত থাকে যা, কখনও যায় না দেখা।
স্বার্থের টানে সরে যায় দূরে, স্বার্থেই কাছে আসে।
তবে কি মানুষ চির দিন আপন, স্বার্থকে ভালবাসে?
কত যত্নে সুনিপুণ ভাবে, হৃদয়ে আঘাত করে।
কখনও দেখে না সে আঘাতে, কতটা রক্ত ঝরে।
কত সুমধুর ছলনা করে, মায়াবী বাঁধনে বাঁধে।
মিথ্যে প্রেমের অভিনয় করে, মায়া কান্না কাঁদে।
আলোর আশায় আলেয়ার দিকে, মানুষ ছুটে চলে।
বোঝেনা তো তারা ডুবে যেতে থাকে, অথই সাগর তলে।
মানুষ বড় এক কেন্দ্রীক, আর কারো কথা ভাবেনা।
নিজের জন্য স্বর্গ গড়তে, অন্যকে দেয় বেদনা।
স্নেহ, ভালবাসা, আদর, মমতা, সব পেছনে ফেলে।
সুখের খোঁজে দুঃখের আগুনে, ধুকে ধুকে শুধু জ্বলে।
অজানা নেশায় অস্থির হয়ে, ছুটে চলে রাত দিন।
মৃত্যূ এসে ম্লান করে সব, করে সব অর্থহীন।
যে অমূল্য সম্পদ আছে, ভালবাসার মাঝে।
তা কি কখনও পাওয়া যায় বল, ঐশ্বর্যের কাছে?
লাভ কি হবে জীবনটাকে, জটিল করে আর?
সবাই মিলে গাই চল গান,মানবঐক্যতার।
সৃষ্টির সেরা জীব

রুবা, টুংটাং
মানুষ করেছে কত কি সৃষ্টি, কত যে আবিষ্কার।
সৃষ্টির সেরা জীব এই মানুষ, প্রমাণিত বারংবার।
যুগে যুগে এই মানব জাতি, গড়ে চলেছে কত সভ্যতা।
প্রস্তর অগ্নি লোহ তাম্র, মেনেছে তাদের বসতা।প্রতিকূলতা পেছনে ঠেলে, মানুষ এগিয়ে চলে।
বাধা সংকট নিরসন করে, আপন গ্যেনের বলে।
মহাকাশ থেকে সাগর তলায়, মানুষের বিচরণ।
কত রহস্য আর অজানাকে, করছে উন্মোচন।
সর্ব গুনে শ্রেষ্ঠ মানুষ, হয়না তাদের তুলনা।
হিংসা নিন্দা যুদ্ধ করা, মানবজাতিরশাজেনা।
পাঠকের মতামত:
- ইতালি তাহলে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে? গাজা শান্তি সম্মেলনের নতুন বার্তা
- মিরপুরের আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, নিখোঁজদের খোঁজে স্বজনদের ভিড়
- মানুষের বুদ্ধিমত্তা ছাড়িয়ে যাবে এআই, ‘সিঙ্গুলারিটি’ কি তবে সন্নিকটে?
- শাপলা প্রতীক না পেলে আদায় করে নেব: এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি
- তাওয়া গরম করছি: রাজপথে নেমে সরকারকে হুঁশিয়ারি জামায়াত নেতার
- খ্যাতি পেয়ে মা-বাবা ও স্ত্রীকে অস্বীকারের অভিযোগ জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরের বিরুদ্ধে
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- ব্যর্থতাই সাফল্যের পথ: যে ৭টি কৌশলে হারকে পরিণত করবেন জয়ে
- শ্রমঘাটতি পূরণে মালয়েশিয়ার নতুন ঘোষণা, বিদেশি কর্মী নিয়োগে বিশেষ সুবিধা
- মিরপুরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামের আগুনে নিহত ৯
- গ্রিন টির চেয়েও বেশি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট: ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে যে ৩ চা
- আগামী নির্বাচনের ওপর দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে: মির্জা ফখরুল
- বিচার প্রক্রিয়ায় নতুন দিগন্ত: এক ক্লিকে জামিননামা যাবে জেলখানায়
- মঙ্গলবার ১৪ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৪ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ দরপতনশীল কোম্পানির তালিকা প্রকাশ
- ১৪ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- রাশিফল: ১৪ অক্টোবর দিনটি আপনার জন্য কেমন যাবে?
- লাল তারার বিস্ফোরণ: মহাবিশ্বের গোপন নাট্যমঞ্চে মানুষের উপস্থিতি
- প্রস্রাব ঘোলাটে: কখন বুঝবেন এটি যৌনরোগ বা ইউটিআই?
- আজ বাংলাদেশের বাঁচা-মরার লড়াই, টিভিতে নয় ২৫ টাকায় দেখুন অনলাইনে
- হজ যাত্রীদের জন্য ৪ টিকা বাধ্যতামূলক করল সৌদি আরব
- ইসলামী বক্তা আবু ত্বহা আদনানের বিরুদ্ধে স্ত্রীর নতুন বিস্ফোরক অভিযোগ
- মেলোনিকে ধূমপান ছাড়ার পরামর্শ তুর্কি প্রেসিডেন্টের
- এনসিপিকে সময় বেঁধে দিল ইসি: শাপলার বিকল্প প্রতীক বেছে নিতে হবে
- ‘আমরা ছিলাম কসাইখানায়’: ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্ত ফিলিস্তিনিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা
- একনজরে দেখে নিন টিভিতে আজকের খেলার সূচি
- ইসরায়েলি কারাগার থেকে ৩৭০০ বন্দির মুক্তি, ফিলিস্তিনে আনন্দ
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আজ সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ
- শিক্ষক সমাজে ক্ষোভ: ঢাকা কলেজের ঘটনায় আজ সারা দেশে অবস্থান কর্মসূচি
- ১৪ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার: নামাজের সময়সূচি
- সকালের শুরুতে কেন বাদাম খাবেন? জেনে নিন ৫টি স্বাস্থ্যকর কারণ
- দেনমোহর পরিশোধ না করলে স্ত্রীর সঙ্গে থাকা জায়েজ? জেনে নিন শরীয়তের বিধান
- ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম, নতুন রেকর্ড
- ফ্যাসিস্টের দোসর সালাহউদ্দিন পেলেন দেশ ছাড়ার অনুমতি
- খাদ্য নিরাপত্তা ও দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়তে ফোরামে ড. ইউনূসের ৬ প্রস্তাব
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- প্রস্রাবে ফেনা কেন হয়? কখন বুঝবেন এটি কিডনি রোগের সংকেত?
- ১৭ কোটি ৩০ লাখ মানুষের খাদ্যের জোগান দিচ্ছে সরকার : ড. ইউনূস
- পূর্বের আটলান্টিস: চীনের সেই ডুবো শহর যেখানে সময় থেমে আছে!
- রক্তস্বল্পতা দূর করা থেকে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি—বিট রুটের ১০ উপকারিতা
- পাকিস্তানে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে ভয়াবহ সংঘর্ষ
- ঢাকা কলেজে শিক্ষক লাঞ্ছনা: এবার সব সরকারি কলেজে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- পর্যটন খাতে নতুন দিগন্ত: কক্সবাজার বিমানবন্দর পেল আন্তর্জাতিক মর্যাদা
- হাতে-পায়ে চামড়া উঠছে? এটি শুধু শীত নয়, ৫ ভিটামিনের ঘাটতির লক্ষণ
- মৃত্যু যখন সুন্দরের প্রতীক: ভালো মৃত্যুর ১৫টি আলামত
- এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ ১৬ অক্টোবর, জানুন ফলাফল জানার উপায়
- ফোন স্লো হয়ে গেলে কী করবেন? স্টোরেজ খালি করার ১০ সহজ কৌশল
- অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ বিজ্ঞানী
- হংকং ম্যাচের আগে ভোগান্তি বাংলাদেশের: বাফুফের ‘অদূরদর্শিতায়’ বাড়তি চাপ
- অতিরিক্ত সিম নিয়ে বিটিআরসির জরুরি বার্তা: কী করতে হবে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে?
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা
- হোয়াটসঅ্যাপে আর লাগবে না নম্বর,ইউজার নেম দিয়েই করা যাবে যোগাযোগ
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- সমুদ্রের মাঝে সভ্যতা: ইতিহাস, ঐতিহ্য, জলবায়ু ও কূটনীতির মিলনে মালদ্বীপের টিকে থাকার গল্প
- হাটহাজারীতে হেফাজতের অবরোধ: চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ