রাতের ঘুমে তেষ্টা পেলে সতর্ক হোন: সামান্য উপেক্ষা ভবিষ্যতে ডেকে আনতে পারে বড় সমস্যা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ২১:৪৮:৫৬
রাতের ঘুমে তেষ্টা পেলে সতর্ক হোন: সামান্য উপেক্ষা ভবিষ্যতে ডেকে আনতে পারে বড় সমস্যা

অনেকেই রাতের গভীর ঘুমে হঠাৎ তেষ্টা পেয়ে উঠে পড়েন। জেগে উঠে পানি পান করেও আবার সহজে ঘুমে ফিরতে পারেন না। এ ধরনের অভিজ্ঞতা অনেকের কাছেই পরিচিত, অথচ বেশিরভাগ মানুষই এটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখে না। অথচ, এ একেবারে অবহেলার মতো কোনো বিষয় নয়। কারণ, এটি আমাদের দৈনন্দিন অভ্যাস ও শরীরের অভ্যন্তরীণ ভারসাম্যের ইঙ্গিত দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে তৃষ্ণা পাওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। সবার আগে আসে জলশূন্যতা। দিনে কম পানি পান করার অভ্যাস, অতিরিক্ত ক্যাফেইনজাতীয় পানীয় গ্রহণ, কিংবা অতিরিক্ত লবণ ও মসলা দেওয়া খাবার খাওয়ার ফলে শরীর দ্রুত পানি হারায়। ফলে, শরীর ঘুমের মধ্যেও পানির চাহিদা অনুভব করে এবং আমাদের ঘুম ভেঙে যায়।

গ্রীষ্মের দিনে এই সমস্যা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। প্রচণ্ড গরমে ঘামে পানি বেরিয়ে যায়, আবার অনেক সময় প্রচুর ঠান্ডা পানীয় খাওয়ার কারণে শরীরের হাইড্রেশন ঠিক থাকলেও ঘুমের গুণগত মানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ক্যাফেইন কিংবা সোডা জাতীয় পানীয় রাতে খেলে ঘুম গভীর হয় না, আবার ঘুম ভেঙে গেলে পানি তেষ্টা বেড়ে যায়।

এই সমস্যার সমাধান খুব কঠিন নয়, তবে অবশ্যই নিয়মিত কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি। প্রথমত, দিনে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। শুধু তেষ্টা লাগলেই নয়, সময় বুঝে পানি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা উচিত। পাশাপাশি, অতিরিক্ত চা, কফি ও সফট ড্রিংক এড়িয়ে চলতে হবে, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর।

রাতে ঘুমানোর আগে ভারী বা লবণ-মসলা দেওয়া খাবার খাওয়া থেকেও বিরত থাকা ভালো। কারণ এগুলো শুধু হজমে সমস্যা তৈরি করে না, তৃষ্ণাও বাড়ায়। গরমের সময় ঠান্ডা-প্রাকৃতিক পানীয় যেমন নারকেল জল, লেবুর শরবত বা পুদিনা জল হাইড্রেশনের জন্য দারুণ উপকারী।

তবে শুধু খাবার আর পানীয় নয়, রাতের ঘুমের পরিবেশও গুরুত্ব পায়। ঘরের তাপমাত্রা বেশি হলে শরীর ঘেমে যায়, যা শরীর থেকে পানি নিঃসরণ বাড়ায়। তাই ঘরে পর্যাপ্ত বায়ু চলাচল ও উপযুক্ত শীতল পরিবেশ বজায় রাখা জরুরি।

সবশেষে, এই সমস্যা যদি ঘন ঘন হতে থাকে, তাহলে এটি ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা বা হরমোন ভারসাম্যহীনতার ইঙ্গিতও হতে পারে। তাই নিয়মিত এমন অভিজ্ঞতা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই উত্তম।

নিজেকে সুস্থ ও সতেজ রাখতে, এবং রাতের ঘুম যাতে বিঘ্ন না ঘটে, তার জন্য এই ছোট ছোট অভ্যাস গড়েই রাখা সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ