ইরান-ইসরাইল সংঘাত বিশ্লেষণ

ক্যাথরিন পেরেজ-শাকদাম: ইরানে ইসরায়েলি গুপ্তচরবৃত্তির নিখুঁত ছকের এক নারী মুখ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ২১:০৮:৩৬
ক্যাথরিন পেরেজ-শাকদাম: ইরানে ইসরায়েলি গুপ্তচরবৃত্তির নিখুঁত ছকের এক নারী মুখ

মধ্যপ্রাচ্যের উত্তপ্ত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এমন এক রাতে বিশ্ব চমকে ওঠে, যখন জানা গেল ইরানের হৃদয়ে বসে বহু বছর ধরে কাজ করছিলেন এক নারী—সাধ্বীর বেশে, অথচ এক ভয়ানক পরিকল্পনার বাহক হয়ে। তাঁর নাম ক্যাথরিন পেরেজ-শাকডাম। যিনি পশ্চিমে জন্মালেও শিয়া মুসলিম রূপে ইরানের রাজনৈতিক ও সামরিক অভিজাত মহলে জায়গা করে নেন। তাঁকে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বাস করা হচ্ছিল ইরানের ঘরোয়া প্রোপাগান্ডার অন্যতম স্বরলিপিকার হিসেবে। কিন্তু বাস্তবে তিনি ছিলেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একটি সুপরিকল্পিত গুপ্তচরবৃত্তির অংশ।

ফ্রান্সে জন্ম নেয়া ক্যাথরিন ছিলেন এক ধর্মনিরপেক্ষ ইহুদি পরিবারের সন্তান। মনোবিজ্ঞানে শিক্ষিত এই নারী ইয়েমেনি এক সুন্নি পুরুষকে বিয়ে করে ইসলাম গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে বিচ্ছেদ হলেও তার পরিচয়ের কাঠামো ততদিনে বদলে গেছে। ২০১৭ সালে তিনি ‘শিয়া’ রূপে ইরানে প্রবেশ করেন এবং দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমে নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন। এমনকি তাঁর নিবন্ধ স্থান পায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটেও।

তেহরানে তিনি পরিণত হন এক অদ্ভুত দ্বৈত চরিত্রে—বাহ্যত একজন প্রভাবশালী বিশ্লেষক, অন্তরে ছিলেন মোসাদের নজরদার গৃহিণী। তিনি প্রেসিডেন্ট রাইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন, এমনকি কারবালায় গিয়ে কুদস ফোর্সের প্রয়াত কমান্ডার কাসেম সোলেইমানির সঙ্গেও আলাপ জমিয়ে তুলেছিলেন। তার ফার্সি ভাষার সাবলীলতা ও ধর্মীয় জ্ঞানে মুগ্ধ হন শীর্ষ ধর্মীয় ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা।

কিন্তু সবচেয়ে ভয়ানক ছিল তাঁর কৌশলগত অবস্থান। তিনি ইরানের বিপ্লবী গার্ডের জেনারেলদের স্ত্রীদের সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। তাঁদের পারিবারিক আলাপচারিতা, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, গোপন বৈঠক ও চলাচলের তথ্য খুব সূক্ষ্মভাবে সংরক্ষণ করতেন। নিজের ছদ্মনাম ব্যবহার করে ফোনে ছবি, ভিডিও ও অডিও রেকর্ড করে পাঠাতেন দূরবর্তী বিশ্লেষক দলের কাছে। এই সব তথ্য একসময় রূপ নেয় মরণ ফাঁদে।

২০২৫ সালের ১৩–১৪ জুন রাতে ইসরায়েল চালায় ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’। মোসাদ ও ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর যৌথ পরিকল্পনায় এক বিশাল বিমান হামলা চালানো হয়, যার মূল তথ্যভিত্তি ছিল ক্যাথরিনের কাছ থেকে সংগ্রহ করা তথ্য। এই হামলায় এক রাতে নিহত হন ইরানের বিপ্লবী গার্ডের অন্তত আটজন শীর্ষ কমান্ডার, সাতজন পরমাণু বিজ্ঞানী ও একাধিক কুদস ফোর্স কর্মকর্তা। ধ্বংস হয় নাতানজ, ইস্পাহান ও পারচিনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। এই নিখুঁত হামলার মূল রহস্য ছিল ক্যাথরিনের মোবাইলে গচ্ছিত সামরিক সময়সূচি, কার চলাচল কখন, কোথায়—এই রকম অগণন মানবিক তথ্য।

ছবি: ইরানের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিমরাইসির সাক্ষাতকার নিচ্ছেন ছদ্মবেশী মোসাদের এজেন্টক্যাথরিন। ধারণা করা হয়, রাইসির হেলিকপ্টার দূর্ঘটনার পিছনেও হাত থাকতে পারে এই এজেন্টের।

হামলার পর ইরানের গোয়েন্দা বিভাগ চমকে ওঠে। কীভাবে এমন নিখুঁত হামলা সম্ভব হলো? তদন্তের মুখে আসে ক্যাথরিনের নাম। তাঁর ছবি পোস্টার হয়ে ছড়িয়ে পড়ে তেহরানের অলিগলিতে। একে একে ধরা পড়ে তিনজন সহযোগী, যাদের একজন তালেবান ঘরানার শরণার্থী। কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডও দেওয়া হয়। কিন্তু ক্যাথরিন তখন আর ইরানে নেই। ধারণা করা হয়, হামলার আগেই তিনি ইরান ছেড়েছেন এবং এখন মোসাদের আরেকটি প্রকল্পে নিযুক্ত।

তিনি নিজে অবশ্য দাবি করেন, তিনি মোসাদের মসঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি ছিলেন একজন সাংবাদিক মাত্র, যিনি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান Wikistrat–এ যুক্ত ছিলেন। তবে তাঁর অতীতের ব্লগ, রেকর্ড, এবং আন্তর্জাতিক সংযোগ ইঙ্গিত করে—এই দাবি হয়তো বিশ্বাসযোগ্য নয়।

ইরান-ইসরায়েল সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই বৈরী। ইসরায়েল সবসময়ই আশঙ্কা করে এসেছে যে, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি তাদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। অন্যদিকে, ইরান বলেছে, তারা শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পারমাণবিক প্রযুক্তি চায়। এই দ্বন্দ্বের মধ্যে গোয়েন্দা লড়াই বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ২০১০ সালে স্টাক্সনেট সাইবার ভাইরাস ব্যবহার করে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটানো হয়, ২০১৮ সালে চুরি হয় পারমাণবিক আর্কাইভ, এবং একের পর এক বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়। ক্যাথরিনের ঘটনা যেন এই ধারাবাহিকতাকেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়—এইবার ব্যবহৃত হয়েছে একজন মানুষ, একজন নারী, যিনি বিশ্বাস অর্জনের নীরব নৈপুণ্যে ভেঙে দিয়েছেন একটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তার ভিত।

এই ঘটনা গোটা মুসলিম বিশ্বে ও ইরানে এক অভ্যন্তরীণ আত্মবিশ্লেষণের দরজা খুলে দেয়। প্রশ্ন ওঠে, আমাদের গোয়েন্দা ব্যবস্থায় কোথায় ঘাটতি রয়ে গেছে? কীভাবে একজন পশ্চিমা নারী এত সহজে বিপ্লবী গার্ড, প্রেসিডেন্টের দপ্তর এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর গভীরে ঢুকে পড়লেন? এসব প্রশ্ন এখনো ঘুরপাক খাচ্ছে তেহরানের রাজনীতির কেন্দ্রস্থলে।

এই ঘটনার শিক্ষাগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, শত্রু আর প্রতিপক্ষের সংজ্ঞা এখন আর ইউনিফর্ম বা অস্ত্র দিয়ে নির্ধারিত হয় না। আধুনিক গোয়েন্দাবৃত্তিতে সবচেয়ে ভয়ানক অস্ত্র এখন বিশ্বাস। দ্বিতীয়ত, ইরান যদি সত্যিই এক আধ্যাত্মিক ও আদর্শিক বিপ্লবের ধারা বজায় রাখতে চায়, তাহলে অভ্যন্তরীণ সতর্কতা ও নৈতিক আত্মবিশ্বাস পুনর্গঠনের প্রয়োজন আছে।

ক্যাথরিনের গল্প শেষ হয়ে গেছে হয়তো, কিন্তু তার রেখে যাওয়া ছায়া এখনো ঘুরে বেড়ায় তেহরানের অলিতে গলিতে। রেভল্যুশনারি গার্ডের করিডোরে এখন হয়তো নতুন করে প্রশ্ন জাগে—আমরা কাকে বিশ্বাস করছি?

শেষ পর্যন্ত বলা যায়, এই যুদ্ধ ছিল না বারুদের, এটি ছিল শব্দের, আস্থার এবং তথ্যের—আর সেই যুদ্ধে, একটি চাদরের নিচে লুকানো ছুরি অনেক বেশি কার্যকর হয়েছিল এক ডিভিশন সেনাবাহিনীর চেয়ে।


ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৬ ০৯:৪৫:৫২
ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল
ছবিঃ সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস যদি যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত মানতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ইসরায়েলকে নতুন করে গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বার্তাসংস্থা আনাদোলু এই তথ্য জানিয়েছে।

নিজেকেই শান্তি-রচয়িতা হিসেবে দাবি ট্রাম্পের

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “হামাস নিয়ে যা ঘটছে, তা খুব দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে।”

নিঃশর্ত সমর্থন: যদি হামাস নিরস্ত্র হতে অস্বীকার করে, এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “আমি বললেই ইসরায়েল আবার রাস্তায় ফিরে যাবে। ইসরায়েল যদি চায়, তারা ওদের একেবারে গুঁড়িয়ে দিতে পারে।” তিনি আরও দাবি করেন, “আমি-ই ওদের (ইসরায়েল) এখন পর্যন্ত থামিয়ে রেখেছি।”

জিম্মি মুক্তি: ট্রাম্প জানান, জীবিত ২০ জন ইসরায়েলি বন্দির মুক্তিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে হামাসকে অবশ্যই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নিহত অন্যদের মরদেহ ফেরত দিতে হবে এবং অস্ত্র জমা দিতে হবে।

হামাসের ব্যাখ্যা

এদিকে হামাসের সামরিক শাখা কাসাম ব্রিগেডস এক বিবৃতিতে জানায়, তারা চুক্তি অনুযায়ী সব জীবিত বন্দিকে হস্তান্তর করেছে, পাশাপাশি যেসব মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, সেগুলোও দিয়েছে। হামাস জানায়, বাকি মরদেহগুলো উদ্ধার করতে ‘বিশেষ সরঞ্জাম ও দীর্ঘ প্রচেষ্টা প্রয়োজন’ এবং তারা এই কাজ সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার থেকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ কার্যকর হয়েছে। এতে হামাস ২০ জন জীবিত ইসরায়েলি জিম্মি ও ৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করে, বিনিময়ে প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি পায়।


পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৫ ২১:১৯:১৭
পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
ছবিঃ সংগৃহীত

দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী মুসলিম দেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান বুধবার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসলামাবাদ। এর আগে সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও বিমান হামলায় এক ডজনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এটাই দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ।

আকাশপথে হামলা ও ধ্বংসের দাবি

সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ ও উত্তেজনার মধ্যেই আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল ও কান্দাহার প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভি নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী আফগানিস্তানের ভেতরে ‘নির্ভুল হামলা’ চালিয়েছে, যা আফগান তালেবানের হামলার পাল্টা জবাব হিসেবে করা হয়েছে।

সামরিক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, এই হামলায় আফগান তালেবানের ‘বাটালিয়ন নম্বর ৪’ ও ‘বর্ডার ব্রিগেড নম্বর ৬’ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে এবং ডজনখানেক আফগান ও বিদেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছে। পরবর্তীতে একটি আপডেটে পিটিভি নিরাপত্তা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, কাবুলেও হামলা চালানো হয়েছে।

যুদ্ধবিরতি ও পাল্টাপাল্টি দাবি

যুদ্ধবিরতি: পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দুই দেশ ৪৮ ঘণ্টার একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে, যা বুধবার গ্রিনিচ মান সময় (জিএমটি) দুপুর ১টা থেকে কার্যকর হয়েছে।

দাবির ভিন্নতা: ইসলামাবাদ জানায়, আফগান তালেবান সরকারের অনুরোধে এই যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব এসেছে। তবে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেন, পাকিস্তানের অনুরোধ ও জোরাজুরির ফলে যুদ্ধবিরতি এসেছে।

পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি: ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্স (আইএসপিআর) জানিয়েছে, নিরাপত্তা বাহিনী বালুচিস্তান সীমান্তে আফগান তালেবানের একটি হামলা প্রতিহত করেছে। আই এস পি আরের দাবি, আফগান বাহিনীর হামলায় পাকিস্তানি বাহিনীর ২৩ সেনা নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন। বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০০-এর বেশি তালেবান ও সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলেও জানানো হয়।

হামলার কারণ: আফগানিস্তান দাবি করেছে যে তারা প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, তারা যেকোনো বহিরাগত আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার সম্পূর্ণ সক্ষমতা ও প্রস্তুতি রাখে।


এ কেমন যুদ্ধবিরতি: গাজায় রক্তক্ষরণ থামছে না

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১৯:৪৩:১৫
এ কেমন যুদ্ধবিরতি: গাজায় রক্তক্ষরণ থামছে না
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় প্রাণহানি বেড়েছে/ ফাইল ছবি: এএফপি

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজা উপত্যকা এবং পশ্চিম তীরে সহিংসতা থামেনি। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নতুন করে আরও অন্তত দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। একইসঙ্গে অধিকৃত পশ্চিম তীরে অব্যাহত রয়েছে ইসরায়েলের গণগ্রেফতার অভিযান। ফলে প্রশ্ন উঠছে, ইসরায়েল আদৌ এই শান্তিচুক্তি মানবে কি না।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা বুধবার (১৫ অক্টোবর) জানিয়েছে, গাজা সিটির শুজায়েয়া এলাকায় ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

হতাহতের সংখ্যা ও মানবিক বিপর্যয়

আল-জাজিরার মাঠ-প্রতিবেদকরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর ছিটেফোঁটা হামলায় নতুন করে প্রাণহানি ঘটছে। এর আগের দিনও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অবরুদ্ধ উপত্যকায় অন্তত নয়জন নিহত হয়েছিলেন।

সর্বশেষ পরিস্থিতি: গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন হাসপাতালে ২৫ জনের মরদেহ আনা হয়েছে, যার মধ্যে ১৬টি মরদেহ ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়। আহত হয়েছেন আরও ৩৫ জন।

মোট হতাহত: ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মোট ৬৭ হাজার ৯৩৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ১৬৯ জন আহত হয়েছেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দৈনিক পরিসংখ্যান প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বহু মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন, কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

পশ্চিম তীরে গ্রেফতার অভিযান

কথিত যুদ্ধবিরতির মধ্যেও অধিকৃত পশ্চিম তীরে গণগ্রেফতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। বার্তা সংস্থা ওয়াফার প্রতিবেদন অনুসারে:

আল-ইসাওয়িয়া শহরে: জেরুজালেমের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আল-ইসাওয়িয়া শহরে অভিযানে এক ফিলিস্তিনি নারী ও তার শিশুকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি সেনারা।

শারীরিক নির্যাতন: স্থানীয় গভর্নর কার্যালয় জানায়, সৈন্যরা বাড়িতে প্রবেশ করে তল্লাশি করে এবং পরিবারের সদস্যদের ওপর শারীরিক নির্যাতন চালায়।

অন্যান্য গ্রেপ্তার: জেনিনের কাছে সেলেম সামরিক ক্যাম্পে সাক্ষাৎ দিতে যাওয়ার পর টুবাস শহরের এক তরুণকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দি অধিকার সংগঠন ‘প্রিজনারস ক্লাব’।

এই নতুন সহিংসতা ও নিপীড়নের ঘটনা যুদ্ধবিরতি টেকসই হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে নতুন করে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।


গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত পেরু: আইনশৃঙ্খলা পুনর্গঠনে তরুণ প্রেসিডেন্টের কঠোর পদক্ষেপ

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১২:০৮:৫৬
গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত পেরু: আইনশৃঙ্খলা পুনর্গঠনে তরুণ প্রেসিডেন্টের কঠোর পদক্ষেপ
ছবিঃ সংগৃহীত

অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থান নিতে পেরুর নতুন প্রেসিডেন্ট হোসে জেরি তাঁর মন্ত্রিসভায় নিয়োগ দিয়েছেন এক সাবেক কঠোরপন্থী সেনা কর্মকর্তাকে। সংগঠিত অপরাধ, মাদক ব্যবসা ও গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত দেশটিতে আইনশৃঙ্খলা পুনঃপ্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।

৩৮ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট হোসে জেরি গত সপ্তাহে পদে আসীন হন, যখন দেশটির পার্লামেন্ট অজনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তেকে অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মাথায় মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) তিনি নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করেন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন ৬১ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ জেনারেল ভিসেন্তে টিবুরসিওকে।

টিবুরসিও পূর্বে পেরুর কুখ্যাত বিদ্রোহী সংগঠন ‘শাইনিং পাথ’-এর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে নেতৃত্ব দেন এবং কঠোর অবস্থানের জন্য পরিচিত। সরকার জানায়, সংগঠিত অপরাধ, মাদক পাচার ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে দীর্ঘ অভিজ্ঞতার কারণে তাঁকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।

দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট জেরি ইতিমধ্যেই “অপরাধের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার এক ভাষণে তিনি গ্যাং নেতাদের উদ্দেশে সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “যদি তারা এখনো কারাগার থেকে রাস্তায় প্রভাব বিস্তার চালিয়ে যায়, তাহলে আমরা আরও কঠোর পদক্ষেপ নেব। যা পরিবর্তন করা দরকার, তা পরিবর্তন করব—এটাই শেষ সতর্কতা।”

নতুন মন্ত্রিসভায় ১৯ সদস্য রয়েছেন, যার মধ্যে চারজন নারী। মন্ত্রিসভার প্রধান (প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য পদে) নিয়োগ পেয়েছেন ৬৪ বছর বয়সী আইনজীবী ও সাবেক সাংবিধানিক আদালতের সভাপতি এরনেস্তো আলভারেজ।

বিরোধ, অস্থিতিশীলতা ও দুর্নীতির অভিযোগে জর্জরিত পেরুতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নেতৃত্বের সংকট ক্রমশ গভীর হয়েছে। গত নয় বছরে দেশটিতে সাতজন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করেছেন, যাদের মধ্যে তিনজনকেই পার্লামেন্ট অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ করেছে।

উল্লেখ্য, আগামী বছর নির্ধারিত সময়েই দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে—যে সময়টি ছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট দিনা বোলুয়ার্তের মেয়াদপূর্তির বছর। বর্তমানে তিনি দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে একাধিক তদন্তের মুখোমুখি।

বিশ্লেষকদের মতে, তরুণ প্রেসিডেন্ট জেরির সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা একসঙ্গে বজায় রাখা। অপরাধ দমন ও জনআস্থা পুনরুদ্ধারে তাঁর কঠোর অবস্থান আগামী এক বছরের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

-হাসানুজ্জামান


মানবিক সহায়তা প্রবাহ স্বাভাবিক করতে রাফাহ সীমান্ত খুলে দিল ইসরায়েল

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১১:২২:৪১
মানবিক সহায়তা প্রবাহ স্বাভাবিক করতে রাফাহ সীমান্ত খুলে দিল ইসরায়েল
ছবিঃ সংগৃহীত

গাজা উপত্যকার সঙ্গে মিশরের রাফাহ সীমান্ত খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে স্থগিত থাকা মানবিক সহায়তা প্রবাহও স্বাভাবিকভাবে চলবে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম কান (Kan)।

এর আগে, ইসরায়েল সরকার আজ বুধবার থেকে গাজায় মানবিক সহায়তা সীমিত করা এবং রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখাসহ নতুন কিছু নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পরিকল্পনা করেছিল। তবে শেষ মুহূর্তে এসব সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে বলে টাইমস অফ ইসরায়েলকে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

জিম্মিদের মরদেহ হস্তান্তর

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত রাতে হামাস আরও চারজন জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলের হাতে তুলে দিয়েছে। এই নিয়ে হামাস মোট ২৮ জন নিহত জিম্মির মধ্যে ৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করল। ফেরত পাওয়া মরদেহগুলো ফরেনসিক প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে, যেখানে শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে দুই দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। হামাস এখন পর্যন্ত ফেরত দেওয়া এই চারজনের পরিচয় প্রকাশ করেনি।

মধ্যপ্রাচ্যের এক কূটনীতিক এবং সংশ্লিষ্ট সূত্র টাইমস অব ইসরায়েলকে জানিয়েছেন, আজকের মধ্যেই হামাস আরও চারজন জিম্মির মরদেহ ইসরায়েলের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।


যুদ্ধবিরতি ঝুঁকিতে: স্বভাব বদলায়নি ইসরায়েলের

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৪ ২২:০৪:৫২
যুদ্ধবিরতি ঝুঁকিতে: স্বভাব বদলায়নি ইসরায়েলের
গাজায় ইসরায়েলের হামলা-অবরোধ অব্যাহত/ ফাইল ছবি: এএফপি

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে গাজায় আবারও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে। এই অব্যাহত হামলার ফলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ইসরায়েল আদৌ এই শান্তিচুক্তি মানবে কি না।

বাড়ি ফেরা ফিলিস্তিনিরা লক্ষ্যবস্তু

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, উত্তর গাজার গাজা সিটি এবং দক্ষিণের খান ইউনিসে নিজেদের পুরোনো বাড়িতে ফেরার চেষ্টা করছিলেন ফিলিস্তিনিরা। এ সময় ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। এছাড়া খান ইউনিসে ইসরায়েলের চালানো একটি ড্রোন হামলায়ও বেশ কয়েকজন ফিলিস্তিনি হতাহত হয়েছেন।

মানবতার চরম বিপর্যয়

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪টি মরদেহ আনা হয়েছে এবং আহত অবস্থায় এসেছেন আরও ২৯ জন। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ৩৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, এবং বহু মানুষ এখনো চাপা পড়ে আছেন।

নিহতের সংখ্যা: ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান যুদ্ধে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৭ হাজার ৯১৩ জন। আহত হয়েছেন অন্তত ১ লাখ ৭০ হাজার ১৩৪ জন ফিলিস্তিনি।

ত্রাণ অবরোধ: ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, ইসরায়েল এখনও মানবিক সহায়তা সরঞ্জাম গাজায় ঢুকতে দিচ্ছে না। খাদ্য, ওষুধ, পরিচ্ছন্নতা সামগ্রী ও আশ্রয়সামগ্রী—সবকিছুই এখন গাজার বাইরের গুদামে পড়ে আছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এসব হামলা ও সহায়তা অবরোধের ফলে নবঘোষিত যুদ্ধবিরতি এখন মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়েছে।


 ইতালি তাহলে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে? গাজা শান্তি সম্মেলনের নতুন বার্তা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৪ ১৯:৪৭:১২
 ইতালি তাহলে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে? গাজা শান্তি সম্মেলনের নতুন বার্তা
ছবিঃ সংগৃহীত

ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ঘোষণা করেছেন, তার দেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে শিগগিরই ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে। সোমবার (১৩ অক্টোবর) মিশরের শারম আল-শেখে অনুষ্ঠিত ‘গাজা শান্তি সম্মেলন’-এ তিনি এই ঘোষণা দেন।

শান্তি চুক্তির পর স্বীকৃতির পথে ইতালি

মেলোনি বলেন, ইতালি গাজায় যুদ্ধবিরতির অপেক্ষায় ছিল। তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এই ইস্যুতে একটি সময়োপযোগী পরিকল্পনা প্রস্তাব করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী বলেন:

“আমরা দেখব—পরিকল্পনাটির সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন ঘটে কি না। যদি ঘটে, সেক্ষেত্রে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে আমাদের সামনে আর কোনো বাধা থাকবে না। অর্থাৎ এক কথায় বললে, ইতালি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত এবং বর্তমানে আমরা এর খুব কাছাকাছি আছি।”

তিনি আরও বলেন, ইতালির লক্ষ্য হলো একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন। ইতালি যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠনে অংশ নিতেও আগ্রহী। মেলোনি বলেন, “আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আমি খুবই গর্বিত যে এই সম্মেলনে ইতালির উপস্থিতি আছে।”


শ্রমঘাটতি পূরণে মালয়েশিয়ার নতুন ঘোষণা, বিদেশি কর্মী নিয়োগে বিশেষ সুবিধা

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৪ ১৭:১৭:৫৫
শ্রমঘাটতি পূরণে মালয়েশিয়ার নতুন ঘোষণা, বিদেশি কর্মী নিয়োগে বিশেষ সুবিধা
মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল। ছবি : সংগৃহীত

নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ১৩টি খাতে শ্রমঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে বিদেশি কর্মী নিয়োগে বিশেষ অনুমোদন-সুবিধা ঘোষণা করেছে মালয়েশিয়া। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশি কর্মী কোটার আবেদনগুলো ‘কেস বাই কেস’ ভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছে দেশটির সরকার।

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেন।

যেসব খাতে মিলবে বিশেষ সুবিধা

সরকার তিনটি প্রধান খাত ও ১০টি উপখাতে বিদেশি কর্মী কোটার আবেদনের জন্য এই বিশেষ সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে।

প্রধান ৩টি খাত: বৃক্ষরোপণ, কৃষি, খনি ও খনন।

১০টি উপখাত: নিরাপত্তা পরিষেবা, ধাতু ও স্ক্র্যাপ সামগ্রী, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ভবন রক্ষণাবেক্ষণ, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, লন্ড্রি, রেস্তোরাঁ, স্থলভিত্তিক গুদামজাতকরণ, কার্গো হ্যান্ডলিং, সরকারি প্রকল্পের অধীনে নির্মাণকাজ এবং মালয়েশিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি কর্তৃক অনুমোদিত নতুন বিনিয়োগ।

নাসুশন ইসমাইল বলেন, “এই সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে সরকার শুধু গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোর শ্রম চাহিদা পূরণ করছে না, বরং অর্থনৈতিক স্বার্থ ও জনগণের কল্যাণের মধ্যে ভারসাম্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মাদানি সরকারের অঙ্গীকারও প্রতিফলিত হচ্ছে।”

নিয়োগ প্রক্রিয়া ও মূল্যায়ন

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই বিশেষ প্রক্রিয়ার অধীনে যেসব নিয়োগকর্তার বিদেশি কর্মী প্রয়োজন, তারা সরাসরি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ওয়ান স্টপ সেন্টার (ওএসসি) ফর ফরেন ওয়ার্কার ম্যানেজমেন্টে তাদের কোটা আবেদন জমা দিতে পারবেন।

যাচাইকরণ: প্রতিটি আবেদন উপদ্বীপ মালয়েশিয়ার শ্রম বিভাগ (জেটিকেএসএম) এবং সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর মূল্যায়নের সাপেক্ষে বিবেচিত হবে। নিয়োগকর্তাদের প্রয়োজনীয় সব সহায়ক নথি জমা দিতে হবে।

লক্ষ্য: এই নমনীয় পদ্ধতি শিল্পগুলোকে দক্ষতার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে এবং প্রতিযোগিতামূলক থাকতে সাহায্য করবে। এই পদক্ষেপ সরকারকে আগামী বছর বিদেশি কর্মী নিয়োগের নীতি ও ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া পর্যালোচনা ও শক্তিশালী করার সুযোগ দেবে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে মোট কর্মশক্তির ১০ শতাংশে বিদেশি কর্মীর সংখ্যা সীমাবদ্ধ করার জাতীয় লক্ষ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।


হজ যাত্রীদের জন্য ৪ টিকা বাধ্যতামূলক করল সৌদি আরব

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ অক্টোবর ১৪ ১৪:২৭:০৩
হজ যাত্রীদের জন্য ৪ টিকা বাধ্যতামূলক করল সৌদি আরব
ছবিঃ সংগৃহীত

২০২৬ সালের হজ মৌসুমকে সামনে রেখে হজযাত্রী ও হজসংশ্লিষ্ট কর্মীদের জন্য কঠোর চিকিৎসা নির্দেশনা প্রকাশ করেছে সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় এ বছর টিকা গ্রহণ ও শারীরিক যোগ্যতা যাচাই আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে।

নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনাভাইরাস, মেনিনজাইটিস, পোলিও ও ইয়েলো ফিভার—এই চারটি টিকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই টিকাগুলো না নিলে কোনো হাজি দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন না।

টিকা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম

কোভিড-১৯ টিকা: টিকা অবশ্যই সৌদি অনুমোদিত প্রস্তুতকারকের হতে হবে। সর্বশেষ ডোজ ২০২১ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে নেওয়া থাকতে হবে এবং যাত্রার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে তা সম্পন্ন করতে হবে।

মেনিনজাইটিস টিকা: এই টিকা পাঁচ বছর পর্যন্ত বৈধ থাকবে, তবে সৌদিতে প্রবেশের কমপক্ষে দশ দিন আগে নিতে হবে।

পোলিও ও ইয়েলো ফিভার: পোলিও নজরদারিতে থাকা দেশগুলোর হাজিদের টিকা যাত্রার অন্তত চার সপ্তাহ আগে নিতে হবে। ইয়েলো ফিভারের টিকা নয় মাস বয়সের ঊর্ধ্বে সব যাত্রীর জন্য বাধ্যতামূলক।

যাদের হজে অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ

সৌদি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেসব ব্যক্তি গুরুতর শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তারা হজে অংশ নিতে পারবেন না। গুরুতর হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে:

প্রধান অঙ্গ বিকল হওয়া রোগী।

জটিল দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতা, মানসিক বা স্নায়বিক সমস্যাযুক্ত ব্যক্তি।

উচ্চঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা বা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি।

ক্যান্সারের চলমান চিকিৎসায় থাকা রোগী।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হজের মতো শারীরিকভাবে পরিশ্রমসাপেক্ষ ইবাদতের সময় যাত্রীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হজ করতে ইচ্ছুকরা নির্ধারিত টিকা ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন না করলে তাদের সৌদি প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে বা প্রয়োজনে কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে।

পাঠকের মতামত: