সাকিবের দলে ফেরা নিয়ে মুখ খুললেন বিসিবি সভাপতি

খেলা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ১৬:৩৯:২৩
সাকিবের দলে ফেরা নিয়ে মুখ খুললেন বিসিবি সভাপতি

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ও প্রভাবশালী খেলোয়াড়দের একজন সাকিব আল হাসান দীর্ঘদিন ধরেই জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন। তবে এবার তাকে ঘিরে আলোচনার পেছনে কেবল খেলার বিষয় নয়, বরং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও গভীরভাবে জড়িত হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সাকিব নতুন বিতর্কে জড়িয়েছেন। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগ ও ক্ষমতাসীনদের রাজনৈতিক সংকটের সঙ্গে সাকিবের নাম একত্রে উচ্চারিত হচ্ছে সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে।

খেলাধুলা থেকে রাজনীতিতে পা রাখার পর সাকিবকে কেন্দ্র করে নানা আলোচনা শুরু হয়। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলার অভিযোগ উঠেছে। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন এবং গত বছরের আগস্টে ভারতের বিপক্ষে খেলার পর আর জাতীয় দলে খেলেননি। বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো কোনো ঘোষণা দেয়নি। তবে তার অনুপস্থিতি নিয়ে জল্পনা ক্রমেই বাড়ছে।

বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল সাকিবের দলে ফেরা নিয়ে গণমাধ্যমকে জানান, এ নিয়ে বোর্ডে কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তিনি বলেন, যদি এমন কিছু থাকত তবে তা বোর্ডে আলোচিত হতো। তিনি এই সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানেন না এবং এ মুহূর্তে সাকিবের দলে ফেরার প্রসঙ্গটি তাদের আলোচনার বাইরে বলেও উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে গুজবের কথাও তিনি উড়িয়ে দেন না।

অন্যদিকে, বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান মিঠু বলেন, সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ক্রিকেটার। তার জন্য জাতীয় দলের দরজা সবসময় খোলা রয়েছে। তবে বিষয়টি এখন সম্পূর্ণভাবে নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের হাতে। তারা সময় মতো সিদ্ধান্ত নেবেন। তিনি জানান, বর্তমান বোর্ড সভাপতি ক্রিকেট অপারেশন্স ও টিম ম্যানেজমেন্টকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং তারাই এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

সাকিবের খেলোয়াড়ি দক্ষতা নিয়ে সংশয় না থাকলেও, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ও মামলার বিষয়টি তাকে জাতীয় দলের বাইরে রাখছে কি না—এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। তৃণমূল থেকে শুরু করে ক্রিকেট ভক্ত, এমনকি রাজনৈতিক মহলেও সাকিবের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা মতভেদ দেখা যাচ্ছে। কেউ বলছেন, একজন জনপ্রিয় খেলোয়াড়ের রাজনীতিতে আসা ছিল সময়ের দাবি, আবার কেউ এটিকে দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত বলেও মনে করছেন।

এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে—সাকিব কি কেবল ক্রিকেটের মাঠেই থাকলে ভালো করতেন, না কি রাজনীতির মঞ্চ তাকে নতুন পরিচয় এনে দেবে? আপাতত এসব প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতের হাতে, তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, সাকিব এখন কেবল একজন অলরাউন্ডার নন—তিনি রাজনীতিরও এক বিতর্কিত চরিত্রে পরিণত হয়েছেন।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ