২২ বছর পর কারামুক্ত, ঈশ্বরদীতে ফিরে ইতিহাস গড়লেন তুহিন

এম এস রহমান
এম এস রহমান
স্টাফ রিপোর্টার, পাবনা
রাজশাহী ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ১৫:৫৯:০৯
২২ বছর পর কারামুক্ত, ঈশ্বরদীতে ফিরে ইতিহাস গড়লেন তুহিন

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় দীর্ঘ ২২ বছর কারাভোগ শেষে মুক্তি পেয়েছেন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দাশুড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম তুহিন। একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন কারাভোগ করার পর অবশেষে সরকারি সিদ্ধান্তে সাজা মওকুফের আওতায় সোমবার (১৪ জুলাই) সকাল পৌনে এগারোটায় পাবনা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।

কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তুহিনকে বরণ করে নিতে ভিড় করেন হাজারো দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থক। কারাগার গেটের সামনে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে নিয়ে একটি বিশাল আনন্দ মিছিল বের করা হয়, যা পরে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে শরিফুল ইসলাম তুহিনকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুভেচ্ছা জানানো হয় এবং এক সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, কারামুক্ত তুহিন নিজেও বক্তব্য দেন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

পরে গাড়িবহর নিয়ে তুহিনকে তার নিজ এলাকা ঈশ্বরদীতে নিয়ে যাওয়া হয়। ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে উপজেলা ও পৌর বিএনপির যৌথ উদ্যোগে তার সম্মানে আরেকটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে দলীয় নেতাকর্মী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।

মুক্তি পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় শরিফুল ইসলাম তুহিন বলেন, তাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একটি মিথ্যা হত্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। সেই মামলায় তিনি দীর্ঘ ২২ বছর কারাভোগ করেন, যা ছিল সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্রমূলক। তিনি বলেন, “যে অন্যায়ের শিকার আমি হয়েছি, তার বিচার ভবিষ্যৎ ইতিহাসে হবে।” তিনি দলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং ভবিষ্যতেও বিএনপির হয়ে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, “তুহিনের মুক্তি শুধু একজন নেতার কারামুক্তিই নয়, বরং ঈশ্বরদী বিএনপির জন্য এটি একটি শক্তিশালী বার্তা। বিএনপিকে যারা অবমূল্যায়ন করতে চেয়েছিল, তাদের জন্য এটি একটি জবাব।”

২০০৩ সালে ঈশ্বরদীতে সংঘটিত এক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শরিফুল ইসলাম তুহিনসহ যুবদলের বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে তুহিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে চলতি বছরের ১০ এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কারা-২ শাখা থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে ২৯ জন সাজাপ্রাপ্ত বন্দির মুক্তি ঘোষণা করা হয়, যাদের মধ্যে তুহিনও ছিলেন।

তার মুক্তির খবরে এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়। ঈশ্বরদীর বিভিন্ন জায়গায় তাকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন টাঙানো হয়। গতকাল থেকেই শুরু হয় আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণের উৎসব।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ