যুক্তরাজ্যে উড্ডয়নের পরই বিমান বিধ্বস্ত

বিশ্ব ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ০৮:৪৩:১০
যুক্তরাজ্যে উড্ডয়নের পরই বিমান বিধ্বস্ত

যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের এসেক্স জেলার সাউথএন্ড বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়েছে একটি ছোট আকারের যাত্রীবাহী বিমান বিচক্র্যাফট বি-২০০। স্থানীয় সময় রোববার (১৩ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। উড্ডয়নের পর মুহূর্তেই বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গেই তা বিস্ফোরিত হয়ে দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। দুর্ঘটনার পরপরই কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আশপাশের আকাশ।

এসেক্স পুলিশ এক বিবৃতিতে জানায়, “রোববার বিকেল ৪টার দিকে বিমানবন্দরের আকাশে ১২ মিটার দীর্ঘ একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছে। আমাদের পুলিশ এবং জরুরি সেবাদানকারী সংস্থার সদস্যরা ঘটনাস্থলে রয়েছেন এবং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।” পুলিশ আরও জানায়, উদ্ধার অভিযান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ জনগণকে বিমানবন্দর এলাকা এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

বিধ্বস্ত বিমানটি বিচক্র্যাফট বি-২০০ মডেলের, যা সাধারণত দুইজন পাইলট এবং সর্বোচ্চ ৯ জন যাত্রী নিয়ে চলাচল করতে সক্ষম। বিমানটি সাউথএন্ড বিমানবন্দর থেকে নেদারল্যান্ডসের উদ্দেশে যাত্রা করেছিল। তবে উড্ডয়নের পরপরই তা ভেঙে পড়ে। এখন পর্যন্ত কতজন যাত্রী ওই বিমানে ছিলেন বা কেউ হতাহত হয়েছেন কিনা সে বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত কোনো তথ্য জানায়নি।

দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পরই এসেক্স কাউন্টি ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার কাজ শুরু করেন। পাশাপাশি, দ্য ইস্ট অব ইংল্যান্ড অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানায় যে তারা চারটি অ্যাম্বুলেন্স ও একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠিয়েছে দুর্ঘটনাস্থলে। উদ্ধার কার্যক্রম চলছে এবং আহত কেউ থাকলে তাদের তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

বিমানটি কী কারণে বিধ্বস্ত হলো তা এখনও জানা যায়নি। তবে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে যুক্তরাজ্যের এয়ার অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চ (AAIB)। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাউথএন্ড বিমানবন্দর অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এক বিবৃতিতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, “পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।”

বিচক্র্যাফট বি-২০০ একটি জনপ্রিয় হালকা শ্রেণির যাত্রীবাহী বিমান, যা ব্যবসায়িক যাত্রা, জরুরি মেডিকেল সেবা এবং চার্টার ফ্লাইটে ব্যবহৃত হয়। বিশ্বজুড়ে এই বিমান বহুল ব্যবহৃত হলেও অতীতে কিছু ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে, বিশেষ করে ইঞ্জিনজনিত ত্রুটি ও নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে। ফলে সাউথএন্ডের এই দুর্ঘটনাটিও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

এই দুর্ঘটনা আবারও ছোট আকারের বেসরকারি বিমানের নিরাপত্তা, প্রযুক্তিগত রক্ষণাবেক্ষণ এবং উড্ডয়ন-পরবর্তী পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থাকে সামনে এনে দিয়েছে। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে, যা ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

-রফিক, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ