ইউএনএফপিএ এর এক জরিপে
সন্তান নেওয়া থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে তরুণ প্রজন্ম

বাংলাদেশসহ বিশ্বের বহু দেশে তরুণদের মধ্যে বিয়ে ও সন্তান গ্রহণের আগ্রহ আশঙ্কাজনক হারে কমে যাচ্ছে। পেশাগত ব্যস্ততা, আর্থিক চাপ ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা এই পরিবর্তনের পেছনে মুখ্য ভূমিকা রাখছে বলে উঠে এসেছে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) ও ইউ গভ পরিচালিত সাম্প্রতিক এক জরিপে।
এই জরিপে বিশ্বের ১৪টি দেশের ১৪ হাজার তরুণ-তরুণী অংশগ্রহণ করেন। সেখানে দেখা যায়, অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, স্বাস্থ্যসেবা ঘাটতি এবং উপযুক্ত সঙ্গীর অভাব সবমিলিয়ে সন্তান ধারণ ও পরিবার গঠনের প্রশ্নে একটি বৃহৎ তরুণ জনগোষ্ঠী নানাভাবে পিছিয়ে পড়ছে।
বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস ২০২৫ উপলক্ষে গতকাল ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম, যিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, “ক্ষমতায়নের পূর্বশর্ত হলো আর্থিক স্বাবলম্বন। তরুণদের শুধু পরিবার গঠনের কথা বললে হবে না তাদের উপযুক্ত করে তুলতে হলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক সমর্থনের একটি কাঠামো তৈরি করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যে সমাজে সমতা নেই, সেখানে স্বাস্থ্য ও পরিবার গঠনের সিদ্ধান্তও সীমিত হয়ে পড়ে। তরুণদের পরিবার গঠনের পথ উন্মুক্ত করতে হলে প্রজনন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সচেতনতার উপর নজর দিতে হবে।”
অনুষ্ঠানে বলা হয়, জরিপে অংশগ্রহণকারী তরুণদের একটি বড় অংশ সন্তান নিতে চাইলেও তা নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। প্রতি চারজনে একজন তরুণ সময়মতো সন্তান নিতে না পারায় ভবিষ্যতে আর সন্তান নেওয়ার ইচ্ছা রাখেননি। ১৩ শতাংশ তরুণ অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভধারণের পরও সন্তানের জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়েছেন, ১৪ শতাংশ উপযুক্ত সঙ্গী না পাওয়ায় সন্তান নিতে পারেননি এবং ১৮ শতাংশ তরুণ প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ পাননি।
এ তথ্যগুলো ইঙ্গিত দেয়, বিশ্বের তরুণ প্রজন্ম সন্তান ধারণের স্বাধীনতা ও সক্ষমতা উভয়ের ঘাটতিতে ভুগছে। এই প্রবণতা শুধু জনসংখ্যা হ্রাস নয়, দীর্ঘমেয়াদে মানবজাতির টিকে থাকার দিকেও এক গুরুতর সংকেত হয়ে উঠছে।
‘স্টেট অব ওয়ার্ল্ড পপুলেশন’ রিপোর্ট অনুসারে, বিশ্ব জনসংখ্যা ৮ বিলিয়নের নিচে নেমে আসা যতটা উদ্বেগজনক নয়, তার চেয়ে বড় আশঙ্কা হলো প্রজনন হারে দীর্ঘমেয়াদি পতন। এই প্রবণতা চলতে থাকলে, অনেক দেশেই কর্মক্ষম জনসংখ্যার ঘাটতি, পেনশন ব্যবস্থার চাপ এবং সামাজিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন বিশ্ব জনসংখ্যার সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা প্রায় ৮২৩ কোটি ছাড়িয়েছে। সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, প্রতি পাঁচ মিনিটে বিশ্বে ১২৫০টি শিশু জন্ম নিচ্ছে এবং প্রায় ১০০০ মানুষ মৃত্যুবরণ করছে। ২০৫৬ সালে এই সংখ্যা ১০০০ কোটিতে পৌঁছবে এবং ২০৯৮ সালে সর্বোচ্চ সংখ্যায় পৌঁছানোর পর থেকে জনসংখ্যা হ্রাসের ধারা শুরু হতে পারে।
অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান তার বক্তব্যে বলেন, “রোবটিকস, মেশিন লার্নিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতির ফলে বিশ্ব কর্মবাজার ও জীবনধারায় বড় পরিবর্তন আসবে। এই নতুন বাস্তবতায় তরুণ সমাজকে প্রস্তুত করাই হবে ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রগঠনের মূল চ্যালেঞ্জ।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব ডা. মো. সারোয়ার বারী। আলোচনার শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে দেশের শ্রেষ্ঠ কর্মীদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তরুণদের সন্তান গ্রহণের সক্ষমতা ও ইচ্ছা পুনরুদ্ধারে একটি সমন্বিত নীতি কাঠামো গড়ে তোলা জরুরি। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা, নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার পরিকল্পনা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সমাজে লিঙ্গ-সমতা নিশ্চিতকরণ।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রয়োজন শিক্ষানীতিতে প্রজনন স্বাস্থ্য অন্তর্ভুক্তি, স্বাস্থ্য বাজেটে পরিবার পরিকল্পনা খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থার মাধ্যমে তরুণদের কাছে সঠিক তথ্য ও সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।
জুলাই হত্যা মামলার আসামির মুক্তি: আদালত অঙ্গনে তোলপাড়
জুলাই হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি এবং বিতর্কিত স্বর্ণালংকার ব্যবসায়ী ও ধনকুবের দিলীপ কুমার আগরওয়ালাকে জামিন দিয়েছেন আদালত। দ্রুত তার জামিননামা কারাগারে পৌঁছানোর পর কঠোর গোপনীয়তায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। দিলীপের এমন আকস্মিক কারামুক্তি নিয়ে আদালত অঙ্গনে তোলপাড় চলছে।
আইনজীবীদের অভিযোগ—রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যক্ষ সহায়তা ছাড়া তার এত দ্রুত কারামুক্তি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কারণ, বর্তমানে যেকোনো বন্দি মুক্তির ক্ষেত্রে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার ক্লিয়ারেন্স লাগে। অথচ দিলীপের ক্ষেত্রে অজ্ঞাত কারণে কোনো ধরনের গোয়েন্দা রিপোর্ট দেওয়া হয়নি।
গোপনীয়তা ও নেপথ্যের অভিযোগ
কারামুক্তি: গুলশান থানার একটি হত্যা মামলায় ২৭ সেপ্টেম্বর জামিন পান দিলীপ। এর তিন দিনের মাথায় ৩০ সেপ্টেম্বর কঠোর গোপনীয়তায় তিনি কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে যান।
নীরবতা: কারা কর্তৃপক্ষ ছাড়াও পুলিশের বিশেষ শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা ছিলেন নীরব।
পলাতক: সূত্র জানায়, কারাগার থেকে ছাড়া পাওয়ার পরপরই দিলীপ গা ঢাকা দিয়েছেন। তিনি সীমান্ত পার হয়ে ওপারে চলে গেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
একটি সূত্র যুগান্তর সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছে, দিলীপের মুক্তির নেপথ্যে রাষ্ট্রপক্ষের এক প্রভাবশালী কর্মকর্তা কলকাঠি নাড়েন, যার সঙ্গে দিলীপের ঘনিষ্ঠতা পুরোনো।
দিলীপের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রেক্ষাপট
রাজনৈতিক পরিচয়: দিলীপ আগরওয়ালা আওয়ামী লীগের বাণিজ্য উপকমিটির নেতা ছিলেন এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে চুয়াডাঙ্গা-১ আসন থেকে এমপি পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর তিনি বিএনপিতে ভিড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও সফল হননি।
দুদকের মামলা: গত ৮ অক্টোবর বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দিলীপ ও তার স্ত্রী সবিতা আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে হাজার কোটি টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
কারাজীবন: গ্রেফতারের পর বছরখানেক ধরে বন্দি থাকলেও, কারাজীবনের বেশিরভাগ সময় তিনি ছিলেন হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে, যেখানে তিনি আরাম-আয়েশের মধ্যে ছিলেন।
কর্তৃপক্ষের বক্তব্য
দিলীপ কুমার আগরওয়ালার কারামুক্তির ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের হাত রয়েছে—এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “যে কাউকে জামিন দেওয়া আদালতের এখতিয়ার। তবে তার চূড়ান্ত কারামুক্তির বিষয়টি আমার জানা নেই।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। যথানিয়মে বেইলবন্ড কারাগারে পৌঁছানোর পর তিনি মুক্ত হন। এক্ষেত্রে অনিয়মের কিছু নেই।” তিনি জানান, দিলীপের পাসপোর্ট জব্দ থাকায় তার বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং তিনি দেশেই আছেন।
এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিস্মিত করেছে, দায় এড়াতে পারে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল সবাইকে বিস্মিত করেছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক চৌধুরী রফিকুল আবরার। তিনি বলেন, “এত দিন ফল ভালো দেখাতে গিয়ে শিক্ষার প্রকৃত সংকট আড়াল করা হয়েছে। এই ফলের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়াতে পারে না।”
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে এইচএসসি পরীক্ষার ফল নিয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
অসন্তুষ্টির কারণ
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, এবারের ফলকে সরকার আত্মসমালোচনার সুযোগ হিসেবে দেখছে। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের মঙ্গলের জন্য এবার ‘প্রাপ্য নম্বরই’ দেওয়া হয়েছে।
সংকটের বিষয়: বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবির জানান, এবারের এইচএসসির ফলে বাস্তব চিত্র সামনে এসেছে। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন পড়ার টেবিল থেকে দূরে সরে গেছে।
ফেলের হার: বোর্ডের হিসাব অনুযায়ী, ইংরেজিতে পাসের হার ৭৭ শতাংশ থেকে ৫৮ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত ২ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন। সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী ফেল করেছে ইংরেজি ও আইসিটি বিষয়ে।
শিক্ষক আন্দোলন ও সংস্কার
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন প্রসঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সরকার শিক্ষকদের শতাংশভিত্তিক বাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। এছাড়া সাত কলেজের বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আইনের খসড়া আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, এ বছর এইচএসসিতে পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ।
ড. ইউনূস: ‘কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে’
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেছেন, “কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।”
বুধবার (১৫ অক্টোবর) জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন।
জুলাই সনদের গুরুত্ব
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “আপনাদের দীর্ঘদিনের আলোচনার ফল হলো ‘জুলাই সনদ’। আপনারা অনেক ভেবে-চিন্তে মতামত দিয়ে জুলাই সনদকে একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে এনেছেন। এর মাধ্যমে আপনারা ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন।”
তিনি আরও জানান, ‘জুলাই সনদ’-এর কপি সব দলের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। তিনি বলেন:
“আমি যতদিন এখানে আছি, আপনাদের তৈরি এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলো সংরক্ষণ ও প্রচারের কাজ করব। প্রত্যেকের কাছে কপি পৌঁছে দেব, যাতে আপনারা বুঝতে পারেন—কোন কোন বিষয়ে আপনারা ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। এই দলিলটি সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে।”
প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে আহ্বান জানান, ‘জুলাই সনদ’-এ যেসব সিদ্ধান্ত এসেছে, সেগুলো দৈনন্দিন জীবন এবং রাজনৈতিক চর্চায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
সংস্কারের পটভূমি
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন খাতে সংস্কার উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে ৬টি পৃথক সংস্কার কমিশন গঠিত হয়—সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন, পুলিশ এবং বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। এই কমিশনগুলোর সুপারিশের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বহু প্রতীক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’-এর চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হয়। তবে সনদে উত্থাপিত সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে কোনো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। পরে কমিশন এ বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশ পেশ করবে।
সিইসির সঙ্গে অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর সাক্ষাৎ: নির্বাচনী সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি, প্রক্রিয়া ও সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও বহুসাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী ড. অ্যান অ্যালি।
আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা সিইসির সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের চলমান কার্যক্রম, প্রস্তুতি এবং প্রযুক্তিনির্ভর নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন।
সাক্ষাৎ শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “এটি ছিল মূলত একটি সৌজন্য সাক্ষাৎ। তাঁরা আমাদের নির্বাচন আয়োজন, প্রস্তুতি এবং সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। পাশাপাশি নিজেদের অভিজ্ঞতাও ভাগ করেছেন।”
আলোচনায় নির্বাচনী সহযোগিতা ও প্রযুক্তি ব্যবহারের বিষয়েও মতবিনিময় হয়। সচিব বলেন, “আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), তথ্যের অপব্যবহার, ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা বিষয়ে কথা বলেছি। অস্ট্রেলিয়া জানিয়েছে, তারাও এসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।”
অস্ট্রেলীয় মন্ত্রী আসন্ন ১৩তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে কমিশনকে সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার অনুরোধ জানান, যাতে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী ও স্বচ্ছ করা যায়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে দেশি ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা আরও আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর করতে উদ্যোগ নিয়েছে।
-নাজমুল হাসান
তিন গোয়েন্দা সিরিজের লেখক রকিব হাসান আর নেই
জননন্দিত কিশোর থ্রিলার ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের লেখক রকিব হাসান মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরের দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মহিবুল্লাহ খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, “রকিব হাসান নিয়মিত আমাদের হাসপাতালে এসে কিডনি ডায়ালাইসিস করতেন। আজও তিনি এসেছিলেন। তবে ডায়ালাইসিস শুরুর কিছুক্ষণ আগে তার মৃত্যু হয়।”
লেখক জীবন ও সৃষ্টি
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন রকিব হাসান। বাবার চাকরির কারণে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। ফেনী থেকে স্কুলজীবন শেষ করে তিনি ভর্তি হন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। পড়াশোনা শেষে বিভিন্ন চাকরিতে যুক্ত হলেও, অবশেষে তিনি লেখালেখিকেই জীবনের একমাত্র পথ হিসেবে বেছে নেন।
সেবা প্রকাশনী থেকেই তার লেখকজীবনের সূচনা হয়। প্রথমদিকে তিনি বিশ্বসেরা ক্লাসিক বই অনুবাদ করে লেখালেখির জগতে প্রবেশ করেন। এরপর টারজান, গোয়েন্দা রাজু, রেজা-সুজা সিরিজসহ চার শতাধিক জনপ্রিয় বই লেখেন। তবে তার পরিচয়ের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজ লেখক হিসেবে, যা বাংলাদেশের অসংখ্য কিশোর-কিশোরীর কৈশোরের সঙ্গী।
পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
রাজউকের পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা তিন মামলায় আজ নতুন করে পাঁচজন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এই মামলাগুলোতে মোট ৪৭ জন আসামির মধ্যে রয়েছেন অপসারিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।
আজ বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এ সাক্ষ্য দেন রাজউকের পরিচালক তানজিলুর রহমান ও আল মামুন মিয়া, টাইপিস্ট জাকির হোসেন, কালীগঞ্জ উপ-রেজিস্ট্রার মাহমুদুর রহমান এবং জায়িদুর রহমান।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন শুনানি মুলতবি রেখে পরবর্তী তারিখ হিসেবে ২৯ অক্টোবর নির্ধারণ করেন।
প্রথমে পাঁচ সাক্ষী শেখ হাসিনাসহ ১২ আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দেন। এরপর তাঁরা শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৮ আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাতেও সাক্ষ্য প্রদান করেন। এ ছাড়া রাজউকের পরিচালক আল মামুন মিয়া ও টাইপিস্ট জাকির হোসেন শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাতেও সাক্ষ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী।
এর আগে চলতি বছরের ৩১ জুলাই, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এই তিন মামলার অভিযোগ গঠন করেন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। একই দিনে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ বাকি তিনটি অনুরূপ মামলার অভিযোগ গঠন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে।
২০ জুলাই, ঢাকার মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব আসামিদের হাজির না হওয়ায় মামলাগুলো বিচারের জন্য সংশ্লিষ্ট ট্রায়াল কোর্টে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এরও আগে, ১ জুলাই, আদালত শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১০০ আসামিকে হাজির হতে সরকারি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির নির্দেশ দেন।
দুদক চলতি বছরের ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি ২০২৫-এর মধ্যে মোট ছয়টি মামলা দায়ের করে এবং ১০ মার্চ এসব মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করে।
মামলার তথ্য অনুযায়ী, ১৪ জানুয়ারি দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন শেখ হাসিনাসহ আটজনের বিরুদ্ধে পূর্বাচলে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে প্রথম মামলা করেন। পরে ওই মামলায় ১২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
একই দিনে দুদকের সহকারী পরিচালক এস. এম. রাশেদুল হাসান শেখ হাসিনা ও সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা দায়ের করেন; পরবর্তীতে অভিযোগপত্রে আসামির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭ জনে।
১৩ জানুয়ারি, সালাহউদ্দিন আরও দুটি মামলা করেন—একটিতে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, রাদওয়ান মুজিব, তুলিপ সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়, অপরটিতে শেখ হাসিনা, তুলিপ ও আজমিনাসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। পরবর্তীতে উভয় মামলায় ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
অন্যদিকে, রাদওয়ান মুজিব ও ১৫ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও একটি মামলায়ও অভিযোগপত্রে ১৮ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সবশেষে, ১২ জানুয়ারি, দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া শেখ হাসিনা ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন, যার অভিযোগপত্রে ১৮ জনের নাম আসে।
বর্তমানে ছয়টি মামলাই ঢাকার দুটি বিশেষ জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
-সুত্রঃ বি এস এস
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর: আসিফ নজরুল
আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন করতে সরকার বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, “ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর। এ নিয়ে সরকারের আর কোনো দ্বিতীয় চিন্তা নেই। নির্বাচন প্রক্রিয়ার কাজ চলছে।”
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই সনদ ও বিচার বিভাগের সংস্কার
জুলাই সনদ: আইন উপদেষ্টা আশা প্রকাশ করে বলেন, “আগামী ১৭ তারিখে জুলাই সনদে সব রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করবে। এই সনদ প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দলগুলো দীর্ঘদিন ধরে ঐকমত্যের ভিত্তিতে অংশ নিয়েছে।” তিনি জানান, সনদে কোনো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার বিষয়ে স্বাক্ষর হচ্ছে না, এটি কেবল একটি কনটেন্ট।
বিচার বিভাগ: বিচার বিভাগের সংস্কার প্রসঙ্গে ড. আসিফ নজরুল জানান, বিচার বিভাগের জন্য একটি আলাদা সচিবালয় গঠনের জন্য আইনের খসড়া তৈরি হয়েছে। তিনি আশা করেন, এই খসড়াটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই উপদেষ্টা পরিষদের সভায় উত্থাপিত হবে এবং “এ সরকারের সময় এই আইন হবে।”
রাজনৈতিক সমালোচনা প্রসঙ্গে
উপদেষ্টাদের লক্ষ্য করে রাজনৈতিক দলগুলোর সমালোচনা প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো এখন উপদেষ্টাদের হুমকি দিচ্ছে, নানা সমালোচনা করছে। এটিকে গণতান্ত্রিক উত্তোরণ বলা যায়।” তবে তিনি মনে করিয়ে দেন, যারা এই সমালোচনা করছেন, তাদেরও যদি কেউ সমালোচনা করে, সেটি শোনার মানসিকতা থাকতে হবে।
‘আর যেন মিরপুরের মতো ট্র্যাজেডি না ঘটে’—ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল
অবৈধ রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল। তিনি বলেন, “অবৈধ কেমিক্যাল গুদাম নির্মাণের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। এই সচেতনতা ও সামাজিক প্রতিরোধই পারে ভবিষ্যতে মিরপুরের মতো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড রোধ করতে।”
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় অগ্নিকাণ্ডস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, “অবৈধ কেমিক্যাল গুদাম কোথাও থাকলে প্রশাসন বা ফায়ার সার্ভিসের সহায়তা নিয়ে তা উচ্ছেদ করতে হবে। এতে কিছু মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে, কিন্তু এতে রক্ষা পাবে বহু মানুষের জীবন।”
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি জানান, শিয়ালবাড়ির ওই কেমিক্যাল গুদামের আগুন সম্পূর্ণ নেভাতে আরও দুই থেকে তিন দিন সময় লাগতে পারে। তবে আগুন বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তিনি বলেন, “আমরা আগুন নেভানোর কাজে সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছি, কারণ টঙ্গীর সাম্প্রতিক এক কেমিক্যাল কারখানার আগুনে আমাদের তিনজন সাহসী অগ্নিনির্বাপক সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। তাই এখন সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই কাজ চলছে।”
তিনি সবাইকে ওই দুর্ঘটনাস্থল থেকে দূরে থাকার অনুরোধ জানান, কারণ এলাকাটি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানা ও পাশের একটি কেমিক্যাল গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। অগ্নিনির্বাপক বাহিনীর সদস্যরা কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও কারখানার ভেতর থেকে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় অন্তত আটজন দগ্ধ হন, যাদের মধ্যে তিনজন বর্তমানে জাতীয় ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে (NIBPS) চিকিৎসাধীন। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, দগ্ধদের অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেও পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল বলেন, “আমরা চাই না আর কোনো পরিবার আগুনে প্রিয়জন হারাক। তাই সবার সম্মিলিত উদ্যোগে এই অবৈধ কেমিক্যাল গুদাম সংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে।”
-আলমগীর হোসেন
স্বাস্থ্য থেকে ভূমি উন্নয়ন—বিভিন্ন খাতে অনিয়মে দুদকের হানা
রাজধানী ঢাকাসহ সাতক্ষীরা ও যশোর জেলায় পৃথক অভিযানে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট ইউনিট। এসব অভিযানে স্বাস্থ্য, ভূমি উন্নয়ন ও খাদ্য খাতে নানা অনিয়ম, দালালচক্রের তৎপরতা এবং নিম্নমানের পণ্য মজুদের প্রমাণ মেলে।
দুদকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) পরিচালিত এই অভিযানে দালালচক্র, অনুমোদনহীন প্রতিষ্ঠান, নথিতে গরমিল এবং নিম্নমানের খাদ্যপণ্য সংরক্ষণের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে।
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগীদের চিকিৎসাসেবা না দিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগে দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের একটি দল অভিযান চালায়। অভিযানে দালালচক্রের সক্রিয় ভূমিকা ধরা পড়ে। ঘটনাস্থল থেকে সাতজন দালালকে হাতেনাতে আটক করা হয় এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা তাঁদের হাতে তুলে দেন। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও জরিমানা প্রদান করে।
অভিযান চলাকালে দেখা যায়, শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংলগ্ন অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক সেন্টার অনুমোদনবিহীনভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং দালালদের মাধ্যমে রোগী সংগ্রহ করছে। দুদক কর্মকর্তারা উপস্থিতি টের পেতেই কিছু ক্লিনিক মালিক কার্যক্রম বন্ধ করে পালিয়ে যান। সেবা গ্রহণকারীদের সাক্ষ্য, নথিপত্র ও现场 পরিদর্শনের মাধ্যমে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।
অন্যদিকে, রাজধানীতে রাজউকের পুর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদক প্রধান কার্যালয়ের একটি দল পৃথক অভিযান পরিচালনা করে। অভিযোগ রয়েছে, রাজউকের অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির নানা কর্মকাণ্ড চলছে।
অভিযান চলাকালে দুদক কর্মকর্তারা প্লট বরাদ্দসংক্রান্ত আবেদনপত্র, ব্যাংক বিবরণী, এমআইএস তথ্যসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সংগ্রহ করেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বক্তব্য নেন।
এছাড়া যশোরের শার্শা উপজেলার নাভারণ সরকারি খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল দেখিয়ে মজুত থাকা ভালো চাল অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে দুদকের যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয় অভিযান চালায়। গুদামে চালের প্রকৃত মজুত যাচাইয়ের সময় দশ বস্তা নিম্নমানের চালের প্রমাণ পাওয়া যায়। একইসঙ্গে গুদাম কর্মকর্তারা কৃষকদের কাছ থেকে সংগৃহীত ধানের তালিকা দেখাতে ব্যর্থ হন। তদন্তে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হয়।
দুদক সূত্র জানায়, এসব অভিযানের লক্ষ্য হচ্ছে সরকারি সেবাখাতে দালালচক্র ও দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করা এবং জনগণের অধিকার নিশ্চিত করা। কমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, প্রাথমিক প্রমাণের ভিত্তিতে এখন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
-নাজমুল হাসান
পাঠকের মতামত:
- ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- বন্ধুরূপী শত্রু: যে ৫টি লক্ষণ দেখে বুঝবেন আপনার বন্ধুত্বের বন্ধন বিপদজনক
- পায়ের পাতায় লুকানো নীরব ইঙ্গিত: কিডনি বিকলের এই সংকেত অবহেলা করলেই বিপদ
- খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষির উন্নয়নে তারেক রহমানের ৬ দফা পরিকল্পনা
- চট্টগ্রাম সিইপিজেডের কারখানায় আগুনে ১০৫০ শ্রমিককে নিরাপদে উদ্ধার করল অ্যালার্ম!
- রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ? ট্রাম্পের দাবির পর দিল্লি নীরবতা ভাঙল
- জুলাই সনদে সইয়ের বিষয়ে আরও কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে: ফখরুল
- সিইপিজেডে আগুন: ৬ ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি, বাড়ছে ঝুঁকি
- শিক্ষক আন্দোলনের মোড়বদল: ‘লংমার্চ টু যমুনা’ স্থগিত, নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
- ১৬ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৬ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৬ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ১ হাজার ৪০০ বার মৃত্যুদণ্ড দেওয়া উচিত: ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি
- নির্বাচিত হলে পুরো শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করব: মির্জা ফখরুল
- জুলাই হত্যা মামলার আসামির মুক্তি: আদালত অঙ্গনে তোলপাড়
- এইচএসসি পরীক্ষার ফল বিস্মিত করেছে, দায় এড়াতে পারে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়
- রূপনগর অগ্নিকাণ্ডের পর সামনে এল ঢাকার আরেক ‘রাসায়নিক বোমা’র খবর
- মাইগ্রেন কি শুধু মাথাব্যথা? জেনে নিন এর ৫টি ভিন্ন ধরন
- জান্নাত-জাহান্নামের প্রহরী কারা এবং তাদের বৈশিষ্ট্য কী?
- জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না এনসিপি, ‘নাটকীয়তায় অংশ নয়’
- রাকসু নির্বাচন: ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে কালির দাগ
- সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ নিয়ে জটিলতা: খসড়ায় ক্ষুব্ধ বিচারকরা
- শিক্ষার মানদণ্ড নিয়ে প্রশ্ন: এইচএসসি পরীক্ষায় এত বড় ব্যর্থতার কারণ কী?
- ৪০০ কোটি বছর আগের সৌরজগতের রহস্য উন্মোচন: নতুন বস্তু অ্যামোনাইট
- খালি পেটে এলাচের পানি: যে ৫টি রোগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
- ওজন কমাতে সহায়ক: দিনে দুবার পান করুন এই বিশেষ ডিটক্স পানীয়
- সকালে ব্রাশ না করে পানি খেলে কী হয় শরীরের ভেতরে?
- ভারতের ৩টি কাশির সিরাপ নিয়ে WHO-এর বিশ্বব্যাপী সতর্কতা
- দেশের ১০ জেলায় বজ্রসহ বৃষ্টির শঙ্কা, সতর্কতা জারি করল বিডব্লিউওটি
- এইচএসসি ও সমমানের ফল প্রকাশ, জেনে নিন ফলাফল জানার সহজ উপায়
- দৈনিক রাশিফল: ১৬ অক্টোবর, ২০২৫
- ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি: গাজায় ফের অভিযান চালাতে পারে ইসরায়েল
- ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন শুরু, উৎসবে মেতেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
- ৪৪ বছর পর চাকসু’তে নেতৃত্বে ফিরল ছাত্রশিবির
- ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- শীতে চুল ঝরা ও খুশকি: সমাধান মিলবে এই ৬ অভ্যাসে
- জাল টাকার প্রচলন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- চট্টগ্রামে নতুন মাইলফলক: বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু
- মাথাব্যথার ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’: যে লক্ষণ দেখলে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
- পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
- প্রাচুর্যের আড়ালে নির্মমতা: জাপানের হাশিমার বুকে চাপা পড়া কান্না ও এক রক্তাক্ত অধ্যায়
- আমাজনের গভীরে লুকানো রহস্যময় সোনালী শহর, যা খুঁজছে বিশ্ব
- জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করা ছাড়া উপায় নেই: রিজভী
- ড. ইউনূস: ‘কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে’
- এ কেমন যুদ্ধবিরতি: গাজায় রক্তক্ষরণ থামছে না
- আখেরাতের সাফল্য: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ৯টি সহজ পথ
- নামাজে মোবাইল বাজলে কী করবেন? সাইলেন্ট করা কি শরিয়তে জায়েজ?
- পুরোনো স্মার্টফোনকে নতুন ফোনের মতো দ্রুত করুন ৫টি সহজ উপায়ে
- আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা জানালেন আমীর হামজা
- শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানতে হবে: এনসিপি নেতা সারজিস আলমের সমর্থন
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- সমুদ্রের মাঝে সভ্যতা: ইতিহাস, ঐতিহ্য, জলবায়ু ও কূটনীতির মিলনে মালদ্বীপের টিকে থাকার গল্প
- ট্যাঙ্গো, পাম্পাস আর বিপ্লবের দেশ: আর্জেন্টিনার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সম্ভাবনার প্রতিচ্ছবি