গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে শুরু হলো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১১:২৪:৩৬
গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের স্মরণে শুরু হলো স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ

গণতন্ত্রের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদ ছাত্র-জনতার স্মৃতিকে চিরন্তন করে রাখতে গোপালগঞ্জে শুরু হয়েছে একটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ প্রকল্প। সম্প্রতি জেলার শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের সংলগ্ন উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে এ স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন গোপালগঞ্জ জেলার সম্মানিত জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্মসচিব) মুহম্মদ কামরুজ্জামান।

এই স্মৃতিস্তম্ভ শুধুমাত্র একটি স্থাপনা নয় এটি একটি দর্শন, একটি আন্দোলনের আত্মা, একটি নতুন প্রজন্মের নৈতিক চেতনার কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠতে যাচ্ছে। শহীদদের সম্মানে এই নির্মাণ কর্মসূচিকে দেখা হচ্ছে ইতিহাসের গভীর বেদনাকে ভবিষ্যতের শক্তিতে রূপান্তরের একটি প্রতীকী ও বাস্তব প্রয়াস হিসেবে।

ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, “শহীদদের আত্মত্যাগ ছিল বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের পথে এক অনন্য মাইলফলক। এই স্মৃতিস্তম্ভ হবে ইতিহাস-স্মরণ, প্রেরণা এবং মূল্যবোধের প্রতীক। নতুন প্রজন্ম এখান থেকেই শিখবে স্বাধীনতা কেবল অর্জন নয়, এটি রক্ষা করারও শপথ।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গোপালগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান স্মারকের ভবিষ্যৎ গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “এই স্মারক ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সাহস, দায়িত্ববোধ ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা জোগাবে। এটি শুধু অতীত স্মরণ নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি নীরব আহ্বান।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের পদস্থ কর্মকর্তা, শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতার পরিবারের সদস্যবৃন্দ, বিশেষ করে তাদের মা, ভাই-বোন ও ঘনিষ্ঠ স্বজনরা। গোপালগঞ্জ জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমকর্মীরা পুরো আয়োজনটি গভীর আবেগ ও শ্রদ্ধার সঙ্গে প্রত্যক্ষ করেন।

অনুষ্ঠানজুড়ে এক আবেগঘন পরিবেশ বিরাজ করছিল। বিশেষ করে যখন শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাঁদের প্রিয়জনের গল্প বলেন তাঁদের স্বপ্ন, সাহসিকতা ও অবদানের কথা স্মরণ করেন তখন সবার চোখে পানি ছিল, হৃদয়ে ছিল গর্ব আর কৃতজ্ঞতা।

স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের লক্ষ্য কেবল অতীতকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা নয়, বরং এই স্মরণশক্তিকে ভবিষ্যতের পথনির্দেশক হিসেবে গড়ে তোলা। এটি শুধু এক টুকরো স্থাপত্য নয়, বরং একটি মুক্তমঞ্চ, একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শনী এলাকা, একটি শিক্ষাভিত্তিক ভিজিট সেন্টার হিসেবেও ভবিষ্যতে ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এই স্থাপনা হবে এমন এক স্থান, যেখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে জানতে পারবে স্বাধীনতার প্রকৃত মূল্য, গণতান্ত্রিক সংগ্রামের আত্মা এবং শহীদদের জীবনদর্শন। এখানে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এসে শ্রদ্ধা জানাবে, অনুপ্রেরণা নেবে এবং নিজেকে তৈরি করবে দেশ ও মানুষের সেবায় উৎসর্গ করতে।

-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ