আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে বাংলাদেশের নজিরবিহীন পদক্ষেপ

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ২০:০৬:২৭
আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে বাংলাদেশের নজিরবিহীন পদক্ষেপ

দেশে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় টাকার বিপরীতে ডলারের বিনিময় হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সোমবার আন্তঃব্যাংকিং বাজারে ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১২০ টাকা ১০ পয়সা, যা গত ৯ জুলাই ছিল ১২২ টাকা ৩০ পয়সা। অন্যদিকে ডলারের ক্রয়মূল্যও কমে ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে।

২০২২ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর প্রভাব ও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে টাকার অবমূল্যায়ন শুরু হয়। এরপর থেকে টাকার মান প্রায় ৩০ শতাংশ কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে টাকার মজবুত অবস্থানের পেছনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ কাজ করছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর প্রবাসী কর্মীদের রেমিট্যান্স অর্থ প্রবাহ বৃদ্ধি, অবৈধ হুন্ডি আর মানি লন্ডারিং কার্যক্রমের হ্রাস এবং ঋণদাতাদের তরল অর্থ ছাড়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছর ২০২৪-২৫ এ প্রবাসী থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮১ শতাংশ বা প্রায় ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বেশি। একই সময়ে, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) থেকে প্রাপ্ত ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ কর্মসূচির শর্তে, বাংলাদেশ ব্যাংক মে মাসে একটি উদার মুদ্রাবিনিময় হার ব্যবস্থা চালু করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শুরুতে ব্যাংকাররা আশঙ্কা করেছিলেন যে নতুন মুদ্রানীতি টাকার মান আরও দুর্বল করে দিতে পারে, তবে বাস্তবে মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল হয়েছে এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়েছে। ১০ জুলাই পর্যন্ত দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার বেশি।

ডলারের দাম দ্রুত পতনের কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক ১৩ জুলাই প্রথমবারের মতো বাজার থেকে ডলার কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। নতুন ব্যবস্থার আওতায় দেশের ১৮টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের কাছ থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৭১ মিলিয়ন ডলার কিনেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের বলেন, ডলারের দাম অতিরিক্ত কমে গেলে তা মুদ্রাবাজারের জন্য ইতিবাচক নয়, কারণ এতে রপ্তানিকারক ও রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের ক্ষতি হতে পারে। তাই বাজারে স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। তিনি জানান, ১৭১ মিলিয়ন ডলার কেনার সময় সর্বনিম্ন মূল্য ছিল ১২১ টাকা ৫০ পয়সা।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ