জানুন অতিরিক্ত ঘাম কমানোর সহজ ও কার্যকর উপায়

গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত ঘাম অনেকের জীবনে অস্বস্তিকর ও বিব্রতকর সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। তবে এই সমস্যাটি শুধু আবহাওয়ার কারণে নয়, বরং শরীরের ভেতরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় ও মানসিক প্রক্রিয়ার ফলেও হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে হাইপারহাইড্রোসিস (Hyperhidrosis) বলা হয়। ঘাম শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রাকৃতিক পদ্ধতি হলেও যখন তা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি হতে শুরু করে, তখন তা দৈনন্দিন জীবন, আত্মবিশ্বাস এবং সামাজিক সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। তবে আশার কথা হলো, কিছু ঘরোয়া উপায় এবং চিকিৎসা সহায়তার মাধ্যমে এই সমস্যা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
পর্যাপ্ত পানি পান: সহজ কিন্তু উপেক্ষিত সমাধান
ঘাম কমানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সহজ একটি উপায় হলো পর্যাপ্ত পানি পান। শরীর যখন পানিশূন্য হয়, তখন ঘামগ্রন্থিগুলো আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। প্রতিদিন অন্তত ২.৫ থেকে ৩ লিটার পানি পান করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ঘাম কমে আসে।
অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট: আধুনিক বিজ্ঞানের সহায়ক হাতিয়ার
অধিক ঘামপ্রবণ অংশ যেমন বগল, হাত বা পায়ের তালুতে অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট ব্যবহার করা কার্যকরী হতে পারে। এগুলোর মধ্যে এমন উপাদান থাকে যা ঘামগ্রন্থিকে সাময়িকভাবে ব্লক করে দেয়। বাজারে বিভিন্ন মেডিকেল গ্রেড অ্যান্টিপারস্পিরেন্ট লোশন ও স্প্রে পাওয়া যায়, যেগুলো বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করলে ভালো ফল মেলে।
মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমানো: ঘামের অদৃশ্য ট্রিগার
অনেক সময় অতিরিক্ত ঘামের মূল কারণ শারীরিক নয়, বরং মানসিক। উদ্বেগ, স্ট্রেস বা অতিরিক্ত উত্তেজনা শরীরের ‘ফাইট অর ফ্লাইট’ প্রতিক্রিয়াকে সক্রিয় করে তোলে, যার ফলে ঘাম বেড়ে যায়। এই অবস্থায় ধ্যান, যোগব্যায়াম, শ্বাসনিয়ন্ত্রণ ব্যায়াম কিংবা নিয়মিত ঘুম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন: ঘামের উৎসেই নিয়ন্ত্রণ
প্রতিদিনের খাদ্য তালিকাতেও রয়েছে ঘাম নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি। মশলাদার খাবার, অতিরিক্ত ক্যাফেইন, ও অ্যালকোহল শরীরের উত্তাপ বাড়িয়ে ঘামগ্রন্থিকে উত্তেজিত করে। এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চললে ঘাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। পরিবর্তে বেশি পরিমাণে শাকসবজি, জলযুক্ত ফলমূল ও হালকা প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।
ঢিলেঢালা ও হালকা পোশাক: ঘামের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক পদ্ধতি
গরমের সময় টাইট ও সিনথেটিক কাপড় শরীরের তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে এবং ঘামের প্রবণতা বাড়ায়। তাই ঢিলেঢালা, সুতির ও শ্বাস-প্রশ্বাসযোগ্য পোশাক পরার অভ্যাস গড়ে তুললে শরীর স্বস্তিতে থাকে এবং ঘাম কম হয়।
ঠান্ডা পানিতে গোসল: তাৎক্ষণিক স্বস্তির উপায়
প্রতিদিন অন্তত একবার ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করা শরীরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয় এবং ঘামগ্রন্থির কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখে। বিশেষ করে কর্মঘণ্টার আগে এই অভ্যাস ঘাম কমানোর পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তিও প্রদান করে।
চিকিৎসকের সহায়তা: যখন ঘরোয়া উপায় যথেষ্ট নয়
যদি ঘরোয়া কোনো উপায়েই অতিরিক্ত ঘাম নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তবে এটি হাইপারহাইড্রোসিস হতে পারে, যার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। অনেক ক্ষেত্রেই ডার্মাটোলজিস্ট বা নিউরোলজিস্টরা বোটক্স (Botulinum Toxin) ইনজেকশন, অ্যান্টিকোলিনার্জিক ওষুধ কিংবা আয়নোফোরেসিস নামক চিকিৎসা পদ্ধতির পরামর্শ দেন, যা ঘামগ্রন্থির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
অতিরিক্ত ঘাম শুধু শারীরিক অস্বস্তিই নয়, অনেক সময় মানসিক সংকোচ ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে সময়োচিত ব্যবস্থা ও সচেতনতার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। ঘরোয়া পদ্ধতির সঙ্গে আধুনিক চিকিৎসা-পদ্ধতির সমন্বয় ঘটিয়ে ঘামজনিত সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া আর অসম্ভব নয়। সর্বোপরি, সুস্থ জীবনযাপন এবং স্বাস্থ্যসচেতনতা এই দু’টিই হতে পারে ঘাম সমস্যার টেকসই সমাধান।
মাথাব্যথার ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’: যে লক্ষণ দেখলে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
মাথাব্যথাকে আমরা সাধারণত ক্লান্তি, স্ট্রেস বা ঘুমের অভাবের ফল হিসেবে দেখি। কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, প্রতিদিনের মতো মনে হওয়া এই ব্যথাই কখনও কখনও শরীরের গভীরে লুকিয়ে থাকা ভয়ংকর রোগের সংকেত হতে পারে। অবহেলা করলে সেটি জীবনহানির কারণ পর্যন্ত হয়ে উঠতে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলসের অ্যানেসথেসিওলজিস্ট ডা. মাইরো ফিগুরা সম্প্রতি সতর্ক করেছেন, কিছু বিশেষ ধরনের মাথাব্যথা আসলে দীর্ঘমেয়াদি বা প্রাণঘাতী অসুস্থতার ইঙ্গিত হতে পারে।
প্রতিদিনের মাথাব্যথা ও ক্যানসার সংযোগ
ডা. ফিগুরা এক ভিডিওতে এমন এক নারীর অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন, যার স্বামীর প্রতিদিন মাথাব্যথা হতো। পরে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তার মস্তিষ্কে ছিল ৭.৬ সেন্টিমিটার আকারের ক্যানসার টিউমার।
চিকিৎসকদের মতে, মাথাব্যথা মস্তিষ্কে টিউমারের অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। এ ধরনের ব্যথা সাধারণত সকালে তীব্র হয় বা মাঝরাতে ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। এর সঙ্গে খিঁচুনি, চিন্তায় বা কথায় অসুবিধা, দৃষ্টিশক্তি বা শ্রবণ সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
বিপদের ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’
ডা. ফিগুরা চারটি গুরুত্বপূর্ণ ‘রেড ফ্ল্যাগ’ বা সতর্ক সংকেতের কথা জানিয়েছেন, যেগুলো দেখলে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণ নেওয়া জরুরি:
১. হঠাৎ জীবনের সবচেয়ে ভয়াবহ মাথাব্যথা: যদি হঠাৎ মনে হয় জীবনের সবচেয়ে তীব্র মাথাব্যথা শুরু হয়েছে, একে কখনোই অবহেলা করবেন না। এটি মস্তিষ্কে ‘রাপচার্ড অ্যানিউরিজম’-এর ক্লাসিক উপসর্গ হতে পারে।
২. ৫০ বছরের পর নতুন মাথাব্যথা: যদি ৫০ বছর বয়সের পর হঠাৎ নিয়মিত মাথাব্যথা শুরু হয়, সেটিও স্বাভাবিক নয়। এর সঙ্গে ভারসাম্য হারানো, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া বা কথায় জড়তা মস্তিষ্কের স্নায়বিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত হতে পারে।
৩. সকালে বা শোয়ার সময় ব্যথা বেড়ে যাওয়া: যদি মাথাব্যথা সকালে বেশি হয় বা শোয়ার সময় তীব্র হয়ে ওঠে, এটি মাথার ভেতর চাপ বেড়ে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে, যা প্রায়ই মস্তিষ্কে সিস্ট বা টিউমারজনিত চাপের কারণে হয়।
৪. অন্যান্য উপসর্গ: এর সঙ্গে ভারসাম্য হারানো, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হওয়া বা কথায় জড়তা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন।
মাথাব্যথা যেমন সাধারণ, তেমনি বিপজ্জনকও হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, হঠাৎ নতুন করে ব্যথা শুরু হলে বা পুরনো মাথাব্যথার ধরন বদলে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে নিরাপদ।
সূত্র:https://tinyurl.com/2auhdr9d
দেশজুড়ে টাইফয়েড টিকাদান অভিযানে সাড়ে ৩৮ লাখ শিশুর টিকা সম্পন্ন
দেশজুড়ে চলমান টাইফয়েড প্রতিরোধী টিকাদান অভিযানে এখন পর্যন্ত ৩৮ লাখ ৩৭ হাজার ৬১২ জন শিশু টিকা পেয়েছে।
গত ১২ অক্টোবর শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর আজ এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত দূষিত পানি, অস্বাস্থ্যকর খাবার ও অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থার মাধ্যমে ছড়ায়। নয় মাস বয়স থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যেই এ রোগের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
ডা. জাফর বলেন, “এই টিকা শিশুকে অন্তত পাঁচ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেয়। পাশাপাশি এটি ওষুধ-প্রতিরোধী টাইফয়েডের বিস্তার রোধেও কার্যকর ভূমিকা রাখে, যা এখন বৈশ্বিকভাবে একটি বড় জনস্বাস্থ্য হুমকি।”
তিনি জানান, এই কর্মসূচি অন্তর্বর্তী সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ উদ্যোগে বর্ধিত টিকাদান কর্মসূচির (EPI) আওতায় পরিচালিত হচ্ছে।
প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বিদ্যালয় বা কলেজে টিকা পাচ্ছে। অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের বাইরে থাকা নয় মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা নিকটস্থ ইপিআই কেন্দ্রে গিয়ে বিনামূল্যে টিকা নিতে পারছে।
এ পর্যন্ত টিকাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৩৫ লাখ ১৫ হাজার ৪৩ জন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এবং ৩ লাখ ২২ হাজার ৫৬৯ জন কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে টিকা পেয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্যমতে, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে ৭০ লাখেরও বেশি মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে প্রায় ৯৩ হাজারের মৃত্যু ঘটে—এর অধিকাংশই দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। সেই বছর বাংলাদেশে প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, যাদের ৬৮ শতাংশই ছিল ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু।
ডা. জাফর সতর্ক করে বলেন, “অ্যান্টিবায়োটিক-প্রতিরোধী টাইফয়েড এখন একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। অনেক প্রচলিত ওষুধ আর কার্যকর থাকছে না। এই টিকা সংক্রমণ হ্রাসের পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহারও কমাবে।”
তিনি জানান, এই জাতীয় অভিযানের সফল বাস্তবায়নে শিক্ষা, ধর্ম, সমাজকল্যাণ, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থা, এনজিও এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অংশীদারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয় করা হয়েছে।
অভিযানের আওতায় ছিন্নমূল শিশু, অনাথ, আদিবাসী সম্প্রদায়, বস্তিবাসী ও পতিতালয় এলাকার শিশুদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।
ডা. জাফর আরও জানান, বাংলাদেশের ইপিআই কর্মসূচি বিশ্বের অন্যতম সফল স্বাস্থ্য উদ্যোগ, যার মাধ্যমে প্রতিবছর ৪২ লাখেরও বেশি শিশু বিভিন্ন প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগের টিকা পায় এবং প্রায় এক লাখ শিশুমৃত্যু প্রতিরোধ হয়।
টাইফয়েড টিকাটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদিত এবং সম্পূর্ণ নিরাপদ। এতে প্রোটিন ও পলিস্যাকারাইড উপাদান রয়েছে, যা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে।
তিনি বলেন, “ইনজেকশন দেওয়ার স্থানে হালকা ব্যথা বা লালচে ভাব হতে পারে, তবে তা দ্রুত সেরে যায়।” অভিভাবক ও অভিভাবিকাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই যেন সব শিশু এই টিকা গ্রহণ করে।”
-আলমগীর হোসেন
নতুন মহামারির আশঙ্কা! জাপানে ফ্লু-এর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব, রোগী বেড়েছে চারগুণ
ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে যেখানে ফ্লু মৌসুম শুরু হওয়ার কথা, সেখানে ব্যতিক্রম ঘটেছে জাপানে। শীত আসার আগেই দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু, যা এখন আনুষ্ঠানিকভাবে ‘জাতীয় মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করেছে জাপান সরকার। দ্রুত বাড়ছে আক্রান্ত ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা, ফলে চাপে পড়েছে পুরো স্বাস্থ্যব্যবস্থা।
সময়ের আগে সংক্রমণ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার চাপ
জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যে জানা গেছে, দেশজুড়ে প্রতি চিকিৎসাকেন্দ্রে গড়ে ১.০৪ জন ফ্লু রোগী শনাক্ত হচ্ছে, যা মহামারির সতর্কসীমা ছাড়িয়ে গেছে। সাধারণত নভেম্বরের শেষ বা ডিসেম্বরের দিকে ফ্লু মৌসুম শুরু হয়, কিন্তু এ বছর সংক্রমণ প্রায় পাঁচ সপ্তাহ আগেই ছড়িয়ে পড়েছে।
রোগী বৃদ্ধি: অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই ৪ হাজারের বেশি মানুষ ফ্লুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন—যা আগের সপ্তাহের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ: টোকিও, ওকিনাওয়া ও কাগোশিমাসহ ২৮টি প্রিফেকচারে সংক্রমণ বাড়ছে। এসব এলাকায় অন্তত ১৩৫টি স্কুল ও শিশুসেবা কেন্দ্র সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভাইরাসের আচরণ পরিবর্তন ও সতর্কতা
হোক্কাইডো হেলথ সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়োকো তসুকামোতো বলছেন, “এ বছর ফ্লু মৌসুম অনেক আগেই শুরু হয়েছে। হয়তো বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তন বা পরিবেশগত কারণেই এমন হচ্ছে। সামনে এটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠতে পারে।”
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, মৌসুমি রোগের ধরন এখন বদলে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন, জনসমাগম এবং বৈশ্বিক ভ্রমণের কারণে সংক্রমণ অনেক আগেই ছড়িয়ে পড়ছে।
ঝুঁকিপূর্ণদের জন্য সতর্কতা জারি করে তিনি বলেন, বয়স্ক ব্যক্তি, শিশু এবং যাদের আগে থেকেই শ্বাসকষ্ট বা দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে, তাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে। তিনি সবাইকে টিকা নিতে, নিয়মিত হাত ধুতে, মাস্ক পরতে এবং জ্বর-সর্দি থাকলে বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দিয়েছেন।
জাপানের এই আগাম ফ্লু বিস্তার বিশ্বব্যাপী এক সতর্ক সংকেত দিচ্ছে যে, জনস্বাস্থ্য রক্ষায় ব্যক্তিগত সচেতনতা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।
ডিমেনশিয়া শুরু হয় মস্তিষ্ক থেকে নয়, বরং পা থেকে: স্নায়ু বিশেষজ্ঞের চমকপ্রদ তথ্য
বিশ্বজুড়ে বয়স্ক মানুষের অক্ষমতা ও নির্ভরশীলতার প্রধান কারণ হিসেবে ডিমেনশিয়া (স্মৃতি, চিন্তাশক্তি ও দৈনন্দিন কাজের সক্ষমতার ক্ষয়) এখন এক ভয়াবহ বাস্তবতা। যদিও অনেকে মনে করেন, মস্তিষ্ক সচল রাখাই এর প্রতিরোধের মূল চাবিকাঠি। কিন্তু ভারতের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস (এইমস)-এর প্রশিক্ষিত স্নায়ুশল্য বিশেষজ্ঞ ডা. অরুণ এল. নাইক জানালেন চমকপ্রদ তথ্য—ডিমেনশিয়ার সূত্রপাত নাকি পা থেকেই!
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তাই মূল বিপদ
ডা. নাইক এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “আপনি কি জানেন, ডিমেনশিয়া আসলে শুরু হয় আপনার পা থেকে? শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা পায়ের পেশিকে দুর্বল করে, যার ফলে স্যারকোপেনিয়া বা পেশি ক্ষয়ের ঝুঁকি বাড়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, দুর্বল পায়ের কারণে জ্ঞানগত ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পায় এবং ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।”
BDNF সক্রিয়করণ: তিনি ব্যাখ্যা করেন, শরীরের সক্রিয় পেশি ব্রেইন-ডিরাইভড নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর (BDNF) নামের রাসায়নিক উৎপাদন করে, যা মস্তিষ্কের স্মৃতিনির্ভর অংশ হিপোক্যাম্পাসে সংযোগ বৃদ্ধি করে।
মস্তিষ্কের অনুশীলন: ডা. নাইক বলেন, “হাঁটা শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি পুরো মস্তিষ্কের এক অনুশীলন।” তিনি আরও যোগ করেন, “হাঁটার ধরনে বা ভারসাম্যে পরিবর্তন দেখা গেলে সেটি মস্তিষ্কের আগাম সতর্ক সংকেত। এটি প্রায়ই স্মৃতি সমস্যার বছরখানেক আগেই দেখা দেয়।”
ডা. নাইক কয়েকটি সহজ অভ্যাসের পরামর্শ দিয়েছেন:
১. হাঁটার অভ্যাস: প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটুন।
২. ভারসাম্য রক্ষা: এক পায়ে দাঁড়ানো বা সরলরেখায় হাঁটার মতো ভারসাম্য রক্ষার ব্যায়াম করুন।
৩. সমন্বয় ক্ষমতা: হাঁটার সময় কথা বলা বা হালকা মানসিক কাজ করলে মস্তিষ্কের সমন্বয় ক্ষমতা বাড়ে।
৪. পেশির ব্যায়াম: নিয়মিত পায়ের পেশির ব্যায়াম করুন, এটি মস্তিষ্কের জন্য একপ্রকার ‘বিমা’।
৫. দীর্ঘ সময় বসে থাকা পরিহার: প্রতি ঘণ্টায় কিছুটা নড়াচড়া করুন।
ডা. নাইক পরামর্শ দেন, কখনোই দেরি হয়ে যায় না। “গবেষণায় দেখা গেছে, ষাট বছর বয়সেও হাঁটা ও ব্যায়াম শুরু করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়। মনে রাখবেন, শক্ত পা মানেই তীক্ষ্ণ মস্তিষ্ক।”
প্রস্রাব ঘোলাটে: কখন বুঝবেন এটি যৌনরোগ বা ইউটিআই?
পর্যাপ্ত জল পান করলে মূত্রের রং স্বচ্ছ থাকারই কথা। কিন্তু শারীরিক এমন অনেক সমস্যার কারণে প্রস্রাবের রং ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। অনেক সময় ওষুধের প্রতিক্রিয়াতেও মূত্রের রং পরিবর্তিত হয়। হায়দরাবাদের এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ নেফ্রোলজি অ্যান্ড ইউরোলজি বিভাগের চিকিৎসক গোপাল রামদাস বলছেন, বিশেষ কোনো কারণ ছাড়া যদি এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, তবে তা শারীরিক সমস্যার ইঙ্গিত। প্রাথমিক ভাবে ডিহাইড্রেশন বা কিডনিতে সংক্রমণ হলে এই ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মূত্রের রং ঘোলাটে হওয়ার ৪টি কারণ
১. ডিহাইড্রেশন (পানিশূন্যতা): শরীরে ফ্লুইডের মাত্রা কমে গেলে কিডনির ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে। পর্যাপ্ত জলের অভাবে কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়, ফলে মূত্রের রং ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে।
করণীয়: সারাদিনে অন্তত পক্ষে ৬-৮ গ্লাস জল খেতে হবে। দ্রুত ফল পেতে হলে ওআরএস (ORS)-ও খেতে পারেন।
২. ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন (UTI): মূত্রথলি কিংবা নালিতে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হলে মূত্রের রং ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে। তার সঙ্গে দুর্গন্ধ, ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা, প্রস্রাব করতে গিয়ে জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তিও হতে পারে।
করণীয়: পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। তবে শুধু জল খেলে রোগ সারবে না; প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. যৌনরোগ: নারী, পুরুষ উভয়েই যৌনরোগের শিকার হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে মূত্রনালিতে সংক্রমণ হওয়া স্বাভাবিক এবং এর ফলেও ঘোলাটে প্রস্রাব হতে পারে।
করণীয়: প্রাথমিক ভাবে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে এবং অতি অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৪. কিডনিতে পাথর: মূত্রনালিতে ক্ষুদ্র ক্যালকুলি বা পাথর জমলে কোমর-পিঠে যন্ত্রণা হয়, মূত্রের সঙ্গে রক্ত বেরোতে দেখা যায় এবং মূত্রের রং বদলে যেতে পারে।
করণীয়: এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সকালের শুরুতে কেন বাদাম খাবেন? জেনে নিন ৫টি স্বাস্থ্যকর কারণ
জীবনের প্রথম আহারে কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদান যুক্ত থাকলে সারাদিনের কার্যক্ষমতা অনেক গুণ বেড়ে যায়। এই স্বাস্থ্যকর উপাদানগুলোর মধ্যে বাদাম অন্যতম। ছোটখাটো এই খাবারটি পুষ্টিতে ভরপুর এবং নিয়মিত সকালে বাদাম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য একাধিকভাবে উপকারী।
বাদামের পুষ্টি উপাদান
বাদামের (যেমন আখরোট, কাজু, পেস্তা, কাঠবাদাম) মধ্যে রয়েছে:
প্রোটিন
স্বাস্থ্যকর ফ্যাট (ওমেগা-৩ এবং মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট)
ফাইবার
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট
ভিটামিন ই, বি৬
ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক ইত্যাদি
সকালে বাদাম খাওয়ার ৫টি উপকারিতা
১. সারাদিনের শক্তি: সকালে বাদাম খেলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়, যা আপনাকে দিনভর কর্মক্ষম রাখে। প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর চর্বি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, ফলে দুর্বলতা বা ক্লান্তি সহজে আসে না।
২. হজম ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর: বাদামে থাকা ফাইবার হজমক্রিয়াকে সহায়তা করে, পেট পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে।
৩. ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: পরিমাণমতো বাদাম খেলে তা পেট ভরা রাখে দীর্ঘসময়। এতে অপ্রয়োজনীয় খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়, যা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে দারুণ কাজ করে।
৪. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়: বাদামে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা ভালো রাখে। এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৫. মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি: বাদামের ভিটামিন ই, ওমেগা-৩ এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থ মস্তিষ্কের কোষের পুষ্টি নিশ্চিত করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। এটি চুল ও ত্বকের জন্যও উপকারী।
বাদাম গ্রহণের পদ্ধতি ও সতর্কতা
খাওয়ার নিয়ম: প্রতিদিন সকালে ৫-৬টি ভিজানো অ্যালমন্ড খাওয়া সবচেয়ে উপকারী। অন্যান্য বাদামগুলিও ২০-৩০ গ্রাম পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে।
সতর্কতা: চিনি বা লবণমিশ্রিত বাদাম এড়িয়ে চলা ভালো। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান, তাদের জন্য কাঁচা বা ভেজানো বাদাম উপযুক্ত। বাদামে অ্যালার্জি থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
প্রস্রাবে ফেনা কেন হয়? কখন বুঝবেন এটি কিডনি রোগের সংকেত?
প্রস্রাবে ফেনা হওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। অনেক কারণে এটি হতে পারে—যেমন লম্বা সময় প্রস্রাব চেপে রাখা। বেশি গতিতে যেকোনো তরল কোথাও পড়লে যেমন ফেনা হয়, প্রস্রাবের ক্ষেত্রেও এটা স্বাভাবিক। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ফেনার মাত্রা বেশি হয় বা দীর্ঘদিন ধরে দেখা যায়, তবে এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়।
অনেক কারণেই প্রস্রাবে ফেনা হতে পারে:
স্বাভাবিক গতি: লম্বা সময় প্রস্রাব চেপে রাখার পর বেশি গতিতে প্রস্রাব করলে ফেনা হতে পারে।
প্রোটিনের উপস্থিতি: প্রস্রাবের সঙ্গে শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিন বেরিয়ে গেলে সাদাটে ফেনা দেখা যায়।
কিডনি সমস্যা: বিভিন্ন রোগ, যা কিডনির কার্যক্ষমতা বাধাগ্রস্ত করে, সেগুলোর কারণে এমনটা হতে পারে।
পানিশূন্যতা: পানিশূন্যতায় (ডিহাইড্রেশন) ভুগলেও কিছুটা ফেনা দেখা যেতে পারে।
কখন চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি
প্রস্রাবে ফেনা হলেই যে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে, তা নয়। একজন সুস্থ ব্যক্তির মাঝেমধ্যে কিছুটা ফেনা হতেই পারে। কিন্তু কিছু লক্ষণ দেখলে অবহেলা করা উচিত নয়:
বেশি ফেনা বা স্থায়ীত্ব: যদি প্রস্রাবে অনেক বেশি ফেনা হয় কিংবা ফেনার মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকে (এমনকি একবার ফ্লাশ করার পরও ফেনা দূর না হলে)।
ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি: টানা বেশ কিছুদিন প্রস্রাবে অল্প পরিমাণ ফেনা দেখা দিলে ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বা নারীদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবে প্রোটিন যাওয়া মারাত্মক হতে পারে।
কিডনি রোগী: আগে থেকেই কিডনির রোগ থাকলে এমন লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসককে জানান।
প্রতিরোধে করণীয়
প্রস্রাবের সঙ্গে ফেনার পাশাপাশি যদি রং গাঢ় হয়ে যায় কিংবা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায়, তাহলে তা পানিশূন্যতার লক্ষণ হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে তরল খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন (যদি অতিরিক্ত পানি খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের কোনো নিষেধাজ্ঞা না থাকে)।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লম্বা সময় ধরে প্রস্রাব চেপে রাখার অভ্যাস এড়িয়ে চলা উচিত, কারণ এই অভ্যাস প্রস্রাবের সংক্রমণ এবং অন্যান্য জটিলতা তৈরি করতে পারে।
অস্টিওপোরোসিস থেকে মুক্তি: গর্ভাবস্থায় হাড় শক্ত রাখতে মেনে চলুন এই নিয়ম
গর্ভাবস্থা প্রতিটি নারীর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই সময় শরীরে নানা পরিবর্তন আসে, যার মধ্যে একটি সাধারণ কিন্তু অবহেলিত সমস্যা হলো হাড়ের দুর্বলতা বা অস্টিওপোরোসিস। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন, গর্ভাবস্থায় এই হাড় ক্ষয়ের কারণে হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। এই সমস্যা এড়ানোর জন্য শুরু থেকেই যত্ন নেওয়া জরুরি।
হাড় দুর্বল হওয়ার কারণ
গর্ভাবস্থায় শরীরের হরমোনের ভারসাম্য বদলে যায় এবং শরীরের গঠনে পরিবর্তন আসে। এসব কারণে অনেক নারী হাড়ের ঘনত্ব হারান, যাকে গর্ভাবস্থাজনিত অস্টিওপোরোসিস বলা হয়। এটি এমন এক ধরনের হাড় ক্ষয়, যাতে হাড় ভঙ্গুর হয়ে যায়। বিশেষ করে বয়স্ক নারীরা বা যাদের আগে থেকেই হাড় দুর্বল, তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।
হাড় ভালো রাখতে করণীয়
১. ক্যালসিয়াম গ্রহণ: হাড় ভালো রাখার জন্য ক্যালসিয়াম খুব দরকার। গর্ভাবস্থায় এই খনিজ উপাদানের প্রয়োজন আরও বেড়ে যায়, কারণ মায়ের সঙ্গে সঙ্গে শিশুরও হাড় তৈরি হয়।
খাদ্য: প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ, সবুজ শাকসবজি এবং দুগ্ধজাত খাবার (যেমন দই, পনির) খান।
সাপ্লিমেন্ট: প্রয়োজন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খান।
২. ভিটামিন ডি: শরীর যেন ক্যালসিয়াম শোষণ করতে পারে, তার জন্য দরকার ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডি পেতে ডিমের কুসুম, মাশরুম, ফ্যাটি ফিশ খান এবং প্রতিদিন সকালে কিছুক্ষণ সূর্যের আলোতে থাকুন।
৩. হালকা ব্যায়াম: সুস্থ থাকতে ব্যায়াম খুব দরকার, এমনকি গর্ভাবস্থাতেও। হাঁটা, হালকা যোগব্যায়াম বা সাঁতার করলে হাড় মজবুত থাকে এবং মনও ভালো থাকে। তবে যেকোনো ব্যায়াম শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪. ক্ষতিকর অভ্যাস ত্যাগ: গর্ভাবস্থায় ধূমপান ও মদ্যপান একদম এড়িয়ে চলুন। এগুলো শুধু শিশুর নয়, মায়ের হাড়েরও ক্ষতি করে। অতিরিক্ত ক্যাফেইন বা প্রক্রিয়াজাত খাবারও কম খাওয়া ভালো।
গর্ভাবস্থায় হাড় দুর্বল হওয়া অস্বাভাবিক নয়, কিন্তু সঠিক খাবার, হালকা শরীরচর্চা এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে এটি এড়ানো সম্ভব। সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন এবং নিজের যত্ন নিন।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
অবিশ্বাস্য! ১১ বছর বয়সী শিশুর মুখে ৮১টি দাঁত
ভারতের চিকিৎসকরা এক ১১ বছর বয়সী একটি শিশুর মুখে অবিশ্বাস্য ৮১টি দাঁত আবিষ্কার করেছেন। বিরল এক দাঁতের রোগ ‘হাইপারডনশিয়া’ (Hyperdontia)-এর কারণে এমন অস্বাভাবিকভাবে দাঁত গজিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সাধারণত মানুষের মুখে ৩২টি স্থায়ী দাঁত থাকে, কিন্তু এই রোগে আক্রান্তদের মুখে দাঁতের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এটি ঘটে ‘ডেন্টাল লামিনা’ নামের এক বিশেষ টিস্যুর অস্বাভাবিক কার্যকলাপের কারণে।
বিরলতা ও ঝুঁকি
চিকিৎসকদের মতে, জিনগত পরিবর্তন, বিকাশজনিত ত্রুটি বা কিছু নির্দিষ্ট সিনড্রোম (যেমন গার্ডনার সিনড্রোম ও ক্লেইডোক্রানিয়াল ডিসপ্লাসিয়া)-এর কারণে এই অতিরিক্ত দাঁত গজাতে পারে। সাধারণত অতিরিক্ত ১ থেকে ৪টি দাঁতের ঘটনা দেখা গেলেও, ৮১টি দাঁত থাকার ঘটনা অত্যন্ত বিরল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি মানুষের দাঁতের বিকাশ প্রক্রিয়া সম্পর্কে আমাদের ধারণাকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করবে।
পূর্বের ঘটনা: এর আগেও ২০১৯ সালে ভারতের এক সাত বছর বয়সী শিশুর চোয়াল থেকে ৫২৬টি দাঁতের মতো গঠন অপসারণের ঘটনা বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসে।
চিকিৎসা ও গবেষণা
চিকিৎসকরা জানান, হাইপারডনশিয়া সনাক্ত করা হয় প্যানোরামিক এক্স-রে বা ত্রিমাত্রিক (৩ডি) স্ক্যানের মাধ্যমে। পরে সার্জারির মাধ্যমে অতিরিক্ত দাঁত অপসারণ করা হয়, যাতে মুখের ভেতর জায়গা সংকোচন, ব্যথা বা চোয়ালের বিকৃতি না ঘটে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ধরনের বিরল ঘটনা গবেষকদের জন্য মানবদেহে দাঁত গঠনের প্রক্রিয়া বা টুথ মর্ফোজেনেসিস সম্পর্কে নতুন তথ্য উদঘাটনে সহায়ক হবে।
পাঠকের মতামত:
- ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশের প্রধান অঞ্চলের নামাজের সময়সূচি
- শীতে চুল ঝরা ও খুশকি: সমাধান মিলবে এই ৬ অভ্যাসে
- জাল টাকার প্রচলন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪ গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা
- চট্টগ্রামে নতুন মাইলফলক: বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদনে পরীক্ষামূলক কাজ শুরু
- মাথাব্যথার ৪টি ‘রেড ফ্ল্যাগ’: যে লক্ষণ দেখলে মৃত্যুঝুঁকি এড়াতে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন
- পাকিস্তান-আফগান সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর ৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি
- প্রাচুর্যের আড়ালে নির্মমতা: জাপানের হাশিমার বুকে চাপা পড়া কান্না ও এক রক্তাক্ত অধ্যায়
- আমাজনের গভীরে লুকানো রহস্যময় সোনালী শহর, যা খুঁজছে বিশ্ব
- জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে করা ছাড়া উপায় নেই: রিজভী
- ড. ইউনূস: ‘কথার কথা নয়, নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে’
- এ কেমন যুদ্ধবিরতি: গাজায় রক্তক্ষরণ থামছে না
- আখেরাতের সাফল্য: আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের ৯টি সহজ পথ
- নামাজে মোবাইল বাজলে কী করবেন? সাইলেন্ট করা কি শরিয়তে জায়েজ?
- পুরোনো স্মার্টফোনকে নতুন ফোনের মতো দ্রুত করুন ৫টি সহজ উপায়ে
- আয়নাঘরের অভিজ্ঞতা জানালেন আমীর হামজা
- শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি মানতে হবে: এনসিপি নেতা সারজিস আলমের সমর্থন
- দেশজুড়ে টাইফয়েড টিকাদান অভিযানে সাড়ে ৩৮ লাখ শিশুর টিকা সম্পন্ন
- নতুন মহামারির আশঙ্কা! জাপানে ফ্লু-এর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব, রোগী বেড়েছে চারগুণ
- সিইসির সঙ্গে অস্ট্রেলীয় মন্ত্রীর সাক্ষাৎ: নির্বাচনী সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা
- ডিমেনশিয়া শুরু হয় মস্তিষ্ক থেকে নয়, বরং পা থেকে: স্নায়ু বিশেষজ্ঞের চমকপ্রদ তথ্য
- ঠান্ডা-সর্দি-কাশি? ওষুধ নয়, লবঙ্গ চায়েই মিলবে আরাম
- তিন গোয়েন্দা সিরিজের লেখক রকিব হাসান আর নেই
- পূর্বাচল প্লট অনিয়ম মামলা: শেখ হাসিনা ও পরিবারের বিরুদ্ধে পাঁচজনের সাক্ষ্য
- ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকার বদ্ধপরিকর: আসিফ নজরুল
- ১৫ অক্টোবর ডিএসই লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ১৫ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ১৫ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সবুজ শিল্পে নতুন মাইলফলক: আরও পাঁচটি কারখানা পেল লিড সার্টিফিকেশন
- আগামীকাল প্রকাশিত হচ্ছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল
- দেশটাকে বাঁচান, নির্বাচন পেছানোর চেষ্টা করবেন না: মির্জা ফখরুল
- এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলনে অচল শাহবাগ, পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে অবরোধ
- গ্যাং সহিংসতায় বিপর্যস্ত পেরু: আইনশৃঙ্খলা পুনর্গঠনে তরুণ প্রেসিডেন্টের কঠোর পদক্ষেপ
- ‘আর যেন মিরপুরের মতো ট্র্যাজেডি না ঘটে’—ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাহেদ কামাল
- সরল মা–বাবাকে নিয়ে যারা ব্যবসা করেছে, তাদের বিচার হবে: রিপন মিয়া
- স্বাস্থ্য থেকে ভূমি উন্নয়ন—বিভিন্ন খাতে অনিয়মে দুদকের হানা
- মানবিক সহায়তা প্রবাহ স্বাভাবিক করতে রাফাহ সীমান্ত খুলে দিল ইসরায়েল
- ২৩ ঘণ্টা পরও জ্বলছে রূপনগরের রাসায়নিক গুদাম
- রোম সফর শেষে দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস
- সরকারের ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়ে প্রশ্ন বিএনপির
- যুদ্ধবিরতি ঝুঁকিতে: স্বভাব বদলায়নি ইসরায়েলের
- ১৫ অক্টোবর ২০২৫, বুধবার: নামাজের সময়সূচি
- নিখোঁজদের খোঁজে রূপনগরে স্বজনদের আহাজারি
- পৃথিবীর মানচিত্রেও যার অস্তিত্ব নেই! তিব্বতের সেই লুকানো জগতের অবিশ্বাস্য রূপ
- শায়খ আহমাদুল্লাহর কণ্ঠে ইসলামী ব্যাংকিংয়ে স্বচ্ছতার আহ্বান
- এশিয়ান কাপের স্বপ্ন শেষ বাংলাদেশের
- ইতালি তাহলে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে? গাজা শান্তি সম্মেলনের নতুন বার্তা
- মিরপুরের আগুনে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬, নিখোঁজদের খোঁজে স্বজনদের ভিড়
- মানুষের বুদ্ধিমত্তা ছাড়িয়ে যাবে এআই, ‘সিঙ্গুলারিটি’ কি তবে সন্নিকটে?
- শাপলা প্রতীক না পেলে আদায় করে নেব: এনসিপি নেতার হুঁশিয়ারি
- তাওয়া গরম করছি: রাজপথে নেমে সরকারকে হুঁশিয়ারি জামায়াত নেতার
- ওয়েস্টফালিয়ার শান্তিচুক্তি ১৬৪৮: যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার উত্থান
- মাইগ্রেন বোঝার সহজ পথ: কোন লক্ষণে চিনবেন, কীসে বাড়ে, কীভাবে সামলাবেন
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় ভর করে চাঙ্গা রাজধানীর শেয়ারবাজার
- স্বাস্থ্যকর রান্না: ৫টি কৌশলে খাবারে তেলের ব্যবহার কমাবেন যেভাবে
- হিটলার কেন ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করেছিলেন? নেপথ্যের কারণ কী?
- বিশ্বজুড়ে কোরিয়ান ড্রামার ঝড়: যে ১০টি সিরিজ আপনাকে মুগ্ধ করবেই
- ১৩ অক্টোবরের ডিএসই লেনদেনে শীর্ষ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- রাতে ঘুম আসে না? শোয়ার ঘরে যে সামান্য বদল আনলে মিলবে শান্তি
- স্বনির্ভরতা অর্জনেই জোর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের
- সাবধান! আপনার হোয়াটসঅ্যাপ কি অন্য কেউ ব্যবহার করছে? বুঝবেন যেভাবে
- জায়ান-শমিতকে নিয়েই একাদশ, বেঞ্চে বসলেন দলের অন্যতম তারকা
- হোয়াটসঅ্যাপে আর লাগবে না নম্বর,ইউজার নেম দিয়েই করা যাবে যোগাযোগ
- মধু খাঁটি না ভেজাল? আগুন দেওয়া বা পানিতে মেশানো নয়, যা বলছেন গবেষকরা
- গুমের বিচার শুরু: শেখ হাসিনা ও সাবেক শীর্ষ সেনা–পুলিশ কর্মকর্তারা আসামির তালিকায়
- কন্যা হত্যা ও গোত্রীয় সংঘাতের যুগে এক বিশ্বস্ত শিশুর বেড়ে ওঠা