এনবিআরের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন: এবার বরখাস্ত ১৪ কর্মকর্তা

অর্থনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ২২:৫১:৪৩
এনবিআরের অভ্যন্তরীণ টানাপোড়েন: এবার বরখাস্ত ১৪ কর্মকর্তা

অবশেষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) চলমান অস্থিরতা আরও তীব্র হলো ১৪ কর্মকর্তার সাময়িক বরখাস্তের মধ্য দিয়ে। এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমানের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুর ও রাতে পৃথক দুটি দফায় এই বরখাস্তের আদেশ জারি করা হয়। এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব আবদুর রহমান খানের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

দুপুরে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন—যুগ্ম-কর কমিশনার মাসুমা খাতুন, মুরাদ আহমেদ, মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দীন খান, মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, মো. আশরাফুল আলম প্রধান এবং উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম, মোসা. নুশরাত জাহান শমী ও ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল। রাতে বরখাস্ত করা হয় দ্বিতীয় সচিব মো. শাহাদাত জামিল, অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, অতিরিক্ত কমিশনার হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, উপ-প্রকল্প পরিচালক সিফাত-ই-মরিয়ম এবং রাজস্ব কর্মকর্তা সবুজ মিয়া ও শফিউর বশরকে।

প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, গত ২৪ জুন এনবিআর ভবনে দুটি বদলি আদেশকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ দাবি করে প্রকাশ্যে তা ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে কর্মকর্তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছেন। এ ঘটনায় তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮-এর ৩৯ (১) ধারা অনুসারে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তারা বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা পাবেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ জুন আয়কর অনুবিভাগের পাঁচ কর্মকর্তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বদলি করার আদেশ দিলে এনবিআরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কর্মকর্তাদের একটি বড় অংশ এই বদলিকে ‘নিপীড়নমূলক ও প্রতিহিংসামূলক’ বলে বিক্ষোভে অংশ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ জুন চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে চলা আন্দোলন স্থগিত করা হয় এবং একই সঙ্গে চার শীর্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়। এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এনবিআরের আরও ১১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে।

রাজস্ব খাতের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা এনবিআরে এই অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রশাসনিক স্থিতিশীলতার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অস্থিরতা শুধু প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনাকেই নয়, রাজস্ব আদায় প্রক্রিয়াকেও ব্যাহত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ