তত্ত্বাবধায়ক সরকারে চূড়ান্ত ঐকমত্য, ভবিষ্যতে পরিবর্তনে লাগবে গণভোট

জাতীয় ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ২০:০১:১৭
তত্ত্বাবধায়ক সরকারে চূড়ান্ত ঐকমত্য, ভবিষ্যতে পরিবর্তনে লাগবে গণভোট

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ভবিষ্যতে সংবিধান থেকে বাদ দিতে চাইলে গণভোট ছাড়া তা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৪তম দিনের আলোচনা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, কমিশনের আলোচনায় অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা নিয়ে মতানৈক্য নেই। ফলে এই ব্যবস্থা সংবিধানে যুক্ত হলে, তা ভবিষ্যতে পরিবর্তনের জন্য জনগণের প্রত্যক্ষ অনুমোদন অর্থাৎ গণভোট অপরিহার্য হবে। তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, সে বিষয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্যে পৌঁছানোর বিষয়ে আমরা আশাবাদী।

তিনি আরও জানান, সংবিধান সংশোধনের কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অনুচ্ছেদ যেমন রাষ্ট্রের মূলনীতি, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত ৫৮খ থেকে ৫৮ঙ পর্যন্ত অনুচ্ছেদগুলো সংবিধানে যুক্ত হলে সেগুলোর সংশোধনে গণভোট বাধ্যতামূলক হবে।

দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট নিয়ে আলোচনার অগ্রগতি প্রসঙ্গে অধ্যাপক রীয়াজ জানান, প্রথম দফার আলোচনায় যেমন অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এই ব্যবস্থার পক্ষে মত দিয়েছিল, আজকের আলোচনা থেকেও একই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। তবে উচ্চকক্ষ গঠনের পদ্ধতি নিয়ে এখনো দ্বিমত রয়েছে। কিছু দল চাইছে ভোটের আনুপাতিক হারে উচ্চকক্ষ গঠিত হোক, আবার কেউ কেউ আসনের সংখ্যানুপাতে গঠনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

যেহেতু দীর্ঘ আলোচনার পরেও রাজনৈতিক দলগুলো একটি অভিন্ন মতপ্রকাশে আসতে পারেনি, তাই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালিয়ে যাবে এবং আগামী সপ্তাহের শুরুতে একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থানে পৌঁছাতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

আজকের আলোচনায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণসংহতি আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

এই আলোচনা প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক সংস্কারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকেরা। সংবিধান সংশোধনের এমন উদ্যোগ যদি রাজনৈতিক ঐকমত্যে রূপ নেয়, তবে তা হতে পারে বাংলাদেশের গণতন্ত্রায়নের পথে একটি বড় অগ্রগতি।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ