অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট, ১২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান

খেলা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১৯:৪৫:৩৩
অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট, ১২৮ বছরের অপেক্ষার অবসান

১২৮ বছর পর আবারও অলিম্পিক মঞ্চে ফিরছে ক্রিকেট। ক্রিকেটপ্রেমীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আগামী ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে দেখা যাবে ব্যাট-বলের এই জনপ্রিয় লড়াই। এলএ২৮ আয়োজক কমিটি ইতোমধ্যে ক্রিকেটের আনুষ্ঠানিক সূচি প্রকাশ করেছে, যার মাধ্যমে নতুনভাবে ইতিহাস রচনা করতে যাচ্ছে এই বহুলচর্চিত খেলা।

২০২৮ সালের ১২ জুলাই থেকে শুরু হতে যাওয়া এই ঐতিহাসিক টুর্নামেন্টে পুরুষ ও নারী বিভাগে অংশ নেবে ছয়টি করে দল। ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, প্রতিদিনই থাকবে দুইটি ম্যাচের ডাবল হেডার আয়োজন। পুরুষ বিভাগের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ২০ জুলাই, আর নারী ফাইনাল ২৮ জুলাই। স্থানীয় সময় অনুযায়ী ম্যাচ শুরু হবে সকাল ৯টা ও সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে, যা ভারতীয় সময় অনুযায়ী রাত ৯টা ৩০ ও পরদিন ভোর ৭টা।

টুর্নামেন্টের মূল ম্যাচগুলো আয়োজিত হবে লস অ্যাঞ্জেলস শহরের প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পোমোনার ফেয়ারগ্রাউন্ডে, যেখানে নির্মিত হবে বিশেষভাবে তৈরি একটি অস্থায়ী স্টেডিয়াম। আয়োজকরা জানিয়েছেন, ১৪ ও ২১ জুলাই দিনদুটি অতিরিক্ত গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য বরাদ্দ থাকবে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) শিগগিরই ঘোষণা করবে—পুরুষ ও নারী দলগুলোর বাছাই প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হবে। প্রত্যেক দল সর্বোচ্চ ১৫ জন খেলোয়াড়ের স্কোয়াড গঠন করতে পারবে, ফলে পুরুষ ও নারী উভয় বিভাগের জন্য মোট ১৮০ জন ক্রিকেটার অলিম্পিক ভিলেজে সুযোগ পাবেন।

অলিম্পিকে ক্রিকেটের অভিষেক হয়েছিল ১৯০০ সালে, প্যারিসে। সেবার একমাত্র ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল গ্রেট ব্রিটেন ও ফ্রান্স। এরপর থেকে দীর্ঘদিন অলিম্পিক সূচি থেকে বাদ পড়ে ক্রিকেট। তবে ২০২৮ সালে এই ফেরা ক্রিকেট ইতিহাসে এক নতুন মোড় এনে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ক্রিকেট ইতোমধ্যেই অন্যান্য আন্তর্জাতিক ক্রীড়ামঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে। ২০২২ সালে কমনওয়েলথ গেমসে নারী ক্রিকেটের অভিষেক ঘটে, এবং ১৯৯৮ সালে কুয়ালালামপুর এশিয়ান গেমসে প্রথমবার অংশ নেয় পুরুষ ক্রিকেটাররা। পরবর্তীতে ২০১০, ২০১৪ ও ২০২৩ এশিয়ান গেমসেও ক্রিকেট খেলা হয়েছে।

২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেট ছাড়াও আরও চারটি নতুন খেলা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে—বেসবল/সফটবল, ফ্ল্যাগ ফুটবল, ল্যাক্রস (সিক্সেস) এবং স্কোয়াশ। এসব নতুন সংযোজন বিশ্বব্যাপী অলিম্পিকের জনপ্রিয়তা ও বৈচিত্র্য আরও বাড়াবে বলে মনে করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।

অলিম্পিকে ক্রিকেটের এই প্রত্যাবর্তন শুধু খেলাধুলার জগতে নয়, সাংস্কৃতিকভাবেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ভারতের মতো ক্রিকেট-প্রেমী দেশগুলো ইতোমধ্যেই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ভক্তের চোখ এখন এলএ অলিম্পিকের দিকে, যেখানে এক নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে ক্রিকেট।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ