চেলসির শিরোপা জয়ে বিতর্ক: ট্রাম্প বললেন ট্রফি রেখে দিয়েছেন নিজের অফিসে

খেলা ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৫ ১৪:৪১:৫২
চেলসির শিরোপা জয়ে বিতর্ক: ট্রাম্প বললেন ট্রফি রেখে দিয়েছেন নিজের অফিসে

প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে অভাবনীয় চমক ও বিতর্কে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির বিখ্যাত মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে পিএসজিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শিরোপা জেতে ইংলিশ জায়ান্ট চেলসি। তবে ম্যাচ শেষে শিরোপা বিতরণী মঞ্চে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতি ও তার করা মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে আলোচনা, সমালোচনা এবং বিভ্রান্তি।

শিরোপা বিতরণ অনুষ্ঠানে স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টারে করে মাঠে অবতরণ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। পরবর্তী সময়ে চ্যাম্পিয়ন চেলসির হাতে ট্রফি তুলে দেন তিনি। তবে ট্রফি দেওয়ার পরপরই মঞ্চ ছাড়ার কথা থাকলেও তিনি দীর্ঘক্ষণ সেখানে অবস্থান করেন, যা কিছুটা অস্বস্তির কারণ হয় চেলসির খেলোয়াড়দের জন্য।

এই নিয়েই আরও বিস্ময়ের জন্ম দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যখন তিনি দাবি করেন—মূল ট্রফিটি তিনি নিজের অফিসে রেখে দিয়েছেন। ক্লাব বিশ্বকাপের অফিসিয়াল সম্প্রচারকারী চ্যানেল ডিএজেডএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “তারা (ফিফা) আমাকে বলেছিল, আপনি কি সাময়িকভাবে ট্রফিটি ধরবেন? আমি বলেছি না, ওটা আমরা ওভাল অফিসেই রেখে দেব। এরপর তারা বলে, ঠিক আছে, আপনি এটা রেখে দিন। আমরা নতুন একটা বানিয়ে নেব।”

ট্রাম্পের এ দাবিকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়। বিভিন্ন প্রতিবেদন জানায়, ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর মার্চ মাসের যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময়ই মূল ট্রফিটি প্রেসিডেন্টের দপ্তরে পাঠানো হয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যম এবিসি নিউজ দাবি করে, ফাইনাল শেষে চেলসির হাতে আসল ট্রফি নয়, বরং তার রেপ্লিকা তুলে দেওয়া হয়েছিল।

এই ঘটনায় বিভ্রান্ত হয়েছেন চেলসির খেলোয়াড়রাও। ম্যাচে জোড়া গোল করে ম্যাচসেরা হওয়া কোল পালমার বলেন, “আমি জানতাম প্রেসিডেন্ট আসবেন, কিন্তু ট্রফি দেওয়ার পরও মঞ্চে থাকবেন—এটা ভাবিনি। আমরা কিছুটা দ্বিধায় পড়ে যাই।” চেলসির অধিনায়ক রিচ জেমস বলেন, “আমাকে বলা হয়েছিল ট্রাম্প ট্রফি তুলে দিয়ে চলে যাবেন। কিন্তু তিনি ছিলেন, এবং মঞ্চ ছাড়ছিলেন না। আমরা ঠিক বুঝতে পারছিলাম না কী করবো।”

ট্রাম্পের ট্রফি দাবির পরপরই ফিফার পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি না আসায় গুঞ্জন আরও বেড়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের মূল ট্রফি যদি সত্যিই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত দপ্তরে থেকে যায়, তবে তা ক্রীড়াজগতের গ্রহণযোগ্যতা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য।

এই ঘটনার পর ফুটবলপ্রেমীরা যেমন বিস্মিত, তেমনি ক্রীড়ানীতির বিশ্লেষকরাও শঙ্কিত যে, ফিফার মতো একটি সংস্থা এমন রাজনৈতিক প্রভাবের কাছে কতটা নমনীয় হয়ে উঠেছে।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ