একপাক্ষিক বিদ্যুৎ চুক্তি বাতিলের ইঙ্গিত অর্থ উপদেষ্টার

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে স্বাক্ষরিত সব বিদ্যুৎ প্রকল্প–সম্পর্কিত চুক্তি নতুন করে পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “পূর্ববর্তী সরকারের সময় যেসব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত চুক্তি করা হয়েছে, সেগুলোর অনেকগুলোতেই একপাক্ষিক ও রাষ্ট্রের জন্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ শর্ত রাখা হয়েছে। এসব চুক্তি খতিয়ে দেখতে হাইকোর্ট থেকেও নির্দেশনা রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে দেশি এবং বিদেশি—উভয় ধরনের বিদ্যুৎ চুক্তি নতুন করে আইনি সহায়তা নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।”

তিনি আরও বলেন, সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। তাই চুক্তিগুলোর কার্যকারিতা, আর্থিক দায় এবং পরিবেশগত প্রভাব বিবেচনায় এনে এগুলো যাচাই করা হবে। প্রাথমিকভাবে কিছু পাওয়ার প্ল্যান্টে অতিরিক্ত মূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয়, উৎপাদন সক্ষমতার সঙ্গে খাপ না খাওয়া বিনিয়োগ এবং দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক বোঝা তৈরির বিষয়গুলো সামনে এসেছে।

এ সময় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন দেশের খাদ্য মজুদ পরিস্থিতি নিয়েও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “খাদ্য মজুদ বর্তমানে আশাব্যঞ্জক পর্যায়ে রয়েছে। ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে—বোরো ধান সবচেয়ে বেশি কেনা হবে, এরপর আমন এবং সবচেয়ে কম কেনা হয় আউশ ধান।”

বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যেন বাজারে দামের অস্থিরতা না থাকে। চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”

অতিরিক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিয়ে ড. সালেহউদ্দিন জানান, “আগামী ৫ আগস্ট 'জুলাই স্মৃতি জাদুঘর' উদ্বোধন করা হবে। এই জাদুঘরের নির্মাণ ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণের এই প্রতিষ্ঠান হবে একটি ঐতিহাসিক উদ্যোগ।”

অর্থ উপদেষ্টার বক্তব্যে স্পষ্ট, বর্তমান সরকার আগের প্রশাসনের আর্থিক দায়-দায়িত্ব এবং চুক্তিগত স্বচ্ছতা নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। এতে বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সুযোগ যেমন তৈরি হচ্ছে, তেমনি জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার বিষয়টিও সামনে আসছে।