ভাগ্য নির্ধারিত নাকি পরিবর্তনযোগ্য? ইসলামী দৃষ্টিকোণ

ধর্ম ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৭ ২০:২৬:৪৭
ভাগ্য নির্ধারিত নাকি পরিবর্তনযোগ্য? ইসলামী দৃষ্টিকোণ

তাকদির ও ভাগ্য: আল্লাহ নির্ধারণ করেন, তবে মানুষ দায়বদ্ধ নিজের কাজের জন্য ইসলামে ‘ভাগ্য’ বা ‘তাকদির’ বিষয়ে রয়েছে গভীর দার্শনিক ও আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা। ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, আল্লাহ তাআলা মানুষের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে পূর্ব থেকেই অবগত। তবে এটি মানেই নয় যে, তিনি কাউকে জোরপূর্বক জান্নাত বা জাহান্নামে পাঠান।

ধর্মীয় বর্ণনায় তাকদিরকে দুইভাবে ব্যাখ্যা করা হয়:

১. তাকদিরে মুবরাম — অর্থাৎ চূড়ান্ত ও অপরিবর্তনযোগ্য ভাগ্য।২. তাকদিরে মুআল্লাক — অর্থাৎ শর্তসাপেক্ষ বা পরিবর্তনযোগ্য ভাগ্য।

তাকদিরে মুআল্লাককে আল্লাহ তাআলা নির্দিষ্ট শর্তের সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখেন। উদাহরণস্বরূপ: কেউ যদি পিতামাতার সেবা করে, তবে তার আয়ু দীর্ঘ হতে পারে; আর না করলে হতে পারে না।

তবে আল্লাহর জ্ঞানের আলোকে এই দুই ভাগ্য-ধারার পার্থক্য থাকে না। আল্লাহ অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞাত। তাই সবই তাঁর কাছে চূড়ান্ত, যা লিপিবদ্ধ রয়েছে 'লাওহে মাহফুজে'।

কোরআনে বলা হয়েছে,"আল্লাহ যা ইচ্ছা তা মুছে দেন এবং যা ইচ্ছা তা অবিকৃত রাখেন। আর তাঁর কাছেই রয়েছে উম্মুল কিতাব।" (সূরা রা'দ, আয়াত ৩৯)

তবে আল্লাহর এই পূর্বজ্ঞান বা লিপিবদ্ধ সিদ্ধান্ত কখনোই মানুষের স্বাধীনতা খর্ব করে না। মানুষকেই তার কর্ম ও সিদ্ধান্তের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। যেমন, কোনো শিক্ষক তার ছাত্রের প্রস্তুতি দেখে অনুমান করতে পারেন যে সে ফেল করবে—এতে শিক্ষক দায়ী হন না, দায়ী হয় ছাত্রের নিজের অনাগ্রহ।

তেমনি, আল্লাহ জানেন কে তাঁর আনুগত্য করবে, আর কে করবে না। কিন্তু সেই কর্মের সিদ্ধান্ত মানুষের নিজের। এবং সে অনুসারে আল্লাহ বিচার করবেন।

এভাবে ইসলাম তাকদির ও কর্মের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে—আল্লাহ সর্বজ্ঞ এবং সবকিছু পূর্ব থেকেই জানেন, তবু মানুষের রয়েছে স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি এবং কর্মের দায়।

পাঠকের মতামত:

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ