জীবনে সফল হতে শিখুন কৃতজ্ঞতা: ৭টি পরিস্থিতিতে বলুন “ধন্যবাদ”

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১২:০৬:৫৫
জীবনে সফল হতে শিখুন কৃতজ্ঞতা: ৭টি পরিস্থিতিতে বলুন “ধন্যবাদ”
ছবিঃ সংগৃহীত

আমরা প্রায়শই ভদ্রতা বা সৌজন্যের অংশ হিসেবে “ধন্যবাদ” বলি। কিন্তু বাস্তবে এই দুটি শব্দ আমাদের জীবনকে আরও সুন্দর, সম্পর্ককে আরও মজবুত এবং মনকে আরও ইতিবাচক করে তুলতে পারে। গবেষণা বলছে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মানুষকে মানসিকভাবে দৃঢ় করে তোলে এবং সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে। নিচে এমন সাতটি বিশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হলো যেখানে একটি আন্তরিক “ধন্যবাদ” শুধু অন্যকে নয়, আপনাকেও বদলে দিতে পারে।

১. প্রশংসা পাওয়ার সময় ধন্যবাদ জানান

প্রশংসা পেলে আমরা অনেক সময় সেটিকে হালকাভাবে নেই বা অতিরিক্ত বিনয় দেখাতে গিয়ে কথাটিকে নষ্ট করে দিই। যেমন কেউ যদি বলে, “তোমার পোশাকটা দারুণ লাগছে”, তখন অনেকেই বলে বসেন, “আরে এটা তো পুরোনো।” অথচ এর পরিবর্তে শুধু একটি আন্তরিক “ধন্যবাদ, ভালো লেগেছে জেনে খুশি হলাম” বললেই কথাটির মর্যাদা থাকে। প্রশংসা এড়িয়ে গেলে তা নিজেও গ্রহণ করতে পারেন না, বরং একটি “ধন্যবাদ” সেই প্রশংসাকে নিজের শক্তিতে রূপান্তর করে।

২. দেরি করে পৌঁছালে ধন্যবাদ বলুন

দেরি করা যেমন অস্বস্তিকর, তেমনি অন্যের জন্য বিরক্তিকর। সাধারণত আমরা বলি, “দুঃখিত, দেরি হয়ে গেল।” কিন্তু এর ফলে বিষয়টি নিজের ওপরই ঘুরে আসে। এর পরিবর্তে “ধন্যবাদ, অপেক্ষা করার জন্য” বলা অনেক বেশি সৌজন্যপূর্ণ। এতে অপেক্ষাকারীর ধৈর্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়, যা সম্পর্ককে সুন্দর রাখে।

৩. কারো দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার সময়

কেউ খারাপ খবর শেয়ার করলে আমরা প্রায়ই সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বলি, “অন্তত তোমার এটা তো আছে।” অথচ এ ধরনের মন্তব্য অনেক সময় অসংবেদনশীল মনে হয়। এর পরিবর্তে বলা উচিত, “আমার সঙ্গে এটা ভাগ করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। আমি তোমার পাশে আছি।” এতে বোঝায়, আপনি কষ্ট ভাগাভাগি করতে প্রস্তুত এবং সেই মানুষটি আপনার ওপর আস্থা রেখেছে।

৪. গঠনমূলক পরামর্শ বা সমালোচনা পেলে

অফিসের বসের কাছ থেকে নেতিবাচক মন্তব্য অথবা কোনো গ্রাহকের অভিযোগ আমাদের সহজেই প্রতিরক্ষামূলক করে তোলে। অথচ সঠিক প্রতিক্রিয়া হলো, “ধন্যবাদ, আমাকে উন্নতির সুযোগ দেওয়ার জন্য।” এতে সমালোচনাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ মনে না করে আত্মোন্নতির উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়।

৫. অন্যায্য সমালোচনার মুখে

সব সমালোচনাই গঠনমূলক হয় না। অনেক সময় তা হয় বিদ্বেষমূলক বা অযৌক্তিক। এসব ক্ষেত্রে উত্তপ্ত তর্কে জড়ানোর চেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশই সেরা প্রতিক্রিয়া। যেমন, “ধন্যবাদ, মতামত শেয়ার করার জন্য।” এভাবে বললে সমালোচক তার ক্ষমতা হারায় এবং আপনি শান্ত থেকে পরিস্থিতি সামলে নিতে পারেন।

৬. অযাচিত উপদেশ শোনার সময়

জিমে বা কর্মস্থলে প্রায়ই অনেকে অযাচিত পরামর্শ দেন। এতে বিরক্ত না হয়ে ধন্যবাদ জানানো উচিত। যেমন কেউ বললে, “তুমি ব্যায়ামে কোমরটা আরও সোজা রাখতে পারো”, তখন উত্তর দিন, “ধন্যবাদ, সাহায্যের জন্য।” এতে অহেতুক প্রতিরক্ষামূলক মনোভাব না দেখিয়ে আত্মসচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হয়।

৭. সন্দেহ হলে ধন্যবাদ বলুন

অনেক সময় আমরা দ্বিধায় পড়ি এক্ষেত্রে ধন্যবাদ বলা উচিত কি না। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত কৃতজ্ঞতা প্রকাশের কোনো নেতিবাচক দিক নেই। আপনি কার্ড পাঠাবেন কি না ভাবছেন? পাঠান। টিপ দেবেন কি না বুঝতে পারছেন না? অন্তত ধন্যবাদ জানান। সন্দেহ হলে ধন্যবাদ বলুন, কারণ এটি কখনোই ভুল হয় না।

“ধন্যবাদ” শুধু ভদ্রতার শব্দ নয়, এটি জীবনকে সহজতর করার এক অসাধারণ হাতিয়ার। প্রশংসা, সমালোচনা, কষ্টের মুহূর্ত বা অযাচিত উপদেশ যে কোনো পরিস্থিতিতে ধন্যবাদ বললে সম্পর্ক হয় মজবুত, মন হয় শান্ত এবং জীবন হয় আরও ইতিবাচক। তাই প্রতিটি পরিস্থিতিতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশের অভ্যাস গড়ে তুলুন।


আক্রাসিয়া ইফেক্ট: কেন আমরা পরিকল্পনা করেও কাজ করি না

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১২:১৬:৩১
আক্রাসিয়া ইফেক্ট: কেন আমরা পরিকল্পনা করেও কাজ করি না
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের জীবনের সবচেয়ে বড় বৈপরীত্যগুলোর একটি হলো- আমরা জানি আমাদের কী করা উচিত, কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীতটাই করি। এই প্রবণতা শুধু আধুনিক যুগের নয়, প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ এমন করে আসছে। দার্শনিক সক্রেটিস ও এরিস্টটল এই আচরণের জন্য বিশেষ একটি শব্দ তৈরি করেছিলেন আক্রাসিয়া (Akrasia)। এর অর্থ হলো নিজের উত্তম বিচারবুদ্ধি জেনেও সেটিকে অমান্য করা, অর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদি লাভকে উপেক্ষা করে তাত্ক্ষণিক আনন্দে ঝুঁকে পড়া। আজকের দিনে আমরা যেটিকে প্রসক্রাস্টিনেশন বা কাজ ফেলে রাখার প্রবণতা বলি, সেটিই মূলত আক্রাসিয়া।

ভিক্টর হুগোর গল্প: দেরির বিরুদ্ধে অদ্ভুত কৌশল

১৮৩০ সালে খ্যাতিমান ফরাসি সাহিত্যিক ভিক্টর হুগো এমন এক পরিস্থিতিতে পড়েছিলেন যেখানে তাকে স্বল্প সময়ে অসম্ভব এক কাজ সম্পন্ন করতে হয়েছিল। এক বছর আগে তিনি নতুন বই লেখার অঙ্গীকার করেছিলেন, কিন্তু বছরের পর বছর তা পিছিয়ে দিয়েছেন নানা অজুহাতে—অন্য কাজ, অতিথি আপ্যায়ন, অবসর সময় নষ্ট করা। প্রকাশক যখন বিরক্ত হয়ে কঠোর সময়সীমা বেঁধে দিলেন—ছয় মাসের কম সময়ে বই শেষ করতে হবে—তখন হুগো নিলেন এক অদ্ভুত সিদ্ধান্ত।

তিনি তার সমস্ত পোশাক সহকারী দিয়ে একটি বড় বাক্সে তালাবদ্ধ করে রাখলেন। বাইরে যাওয়ার মতো পোশাক না থাকায় তিনি ঘরে আবদ্ধ থাকলেন এবং বাধ্য হয়ে লেখায় মন দিলেন। সেই অদ্ভুত কৌশলের ফলেই দ্য হাঞ্চব্যাক অব নটরডেম বইটি নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রকাশিত হয়। এই উদাহরণ প্রমাণ করে, মানুষ যখন নিজের ভবিষ্যৎ আচরণকে বেঁধে ফেলে, তখন আক্রাসিয়ার বিরুদ্ধে জয়লাভ করা সম্ভব।

আক্রাসিয়ার শিকড়: সময়গত অসঙ্গতি (Time Inconsistency)

আক্রাসিয়ার মূল কারণ হলো আমাদের মস্তিষ্কের একটি দুর্বলতা, যাকে বলা হয় টাইম ইনকনসিসটেন্সি। আমরা যখন কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করি, যেমন—ওজন কমানো, নতুন ভাষা শেখা, বা বই লেখা তখন আসলে আমরা পরিকল্পনা করি আমাদের ভবিষ্যৎ সত্তার জন্য। ভবিষ্যতের কথা ভেবে মস্তিষ্ক দীর্ঘমেয়াদি লাভকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে।

কিন্তু যখন কাজ করার সময় আসে, তখন সিদ্ধান্ত নেয় আমাদের বর্তমান সত্তা। আর বর্তমান সত্তার কাছে ভবিষ্যতের পুরস্কারের চেয়ে বর্তমানের ছোট আনন্দ বেশি মূল্যবান মনে হয়। এ কারণেই আমরা রাতের বেলা দৃঢ় সংকল্প করি সকালে ব্যায়াম করব, কিন্তু সকালে ঘুম ভেঙে আবার বিছানায় ফিরে যাই।

এই বৈপরীত্যের কারণেই আক্রাসিয়া আমাদের জীবনে প্রবল প্রভাব ফেলে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য থেকে সরে গিয়ে আমরা বারবার তাত্ক্ষণিক আনন্দকে বেছে নিই।

আক্রাসিয়া জয় করার কাঠামো

আক্রাসিয়া জেতা যায় না শুধুমাত্র ইচ্ছাশক্তি দিয়ে; বরং কার্যকর কিছু কৌশল ব্যবহার করতে হয়। মনোবিজ্ঞানীরা তিনটি বড় উপায় প্রস্তাব করেছেন:

১. ভবিষ্যৎ কাজের নকশা করুন (Commitment Device তৈরি করুন):

ভিক্টর হুগোর মতো, নিজের ভবিষ্যৎ আচরণকে আগে থেকেই সীমাবদ্ধ করে ফেলুন। এটাই কমিটমেন্ট ডিভাইস।

  • অতিরিক্ত খাওয়া বন্ধ করতে খাবার ছোট প্যাকেটে কিনুন।
  • জুয়া বন্ধ করতে স্বেচ্ছায় ক্যাসিনোর ব্ল্যাকলিস্টে নাম লিখান।
  • ব্যায়াম নিশ্চিত করতে আগে থেকেই জিমে সেশন বুক করে রাখুন।

কমিটমেন্ট ডিভাইস আপনাকে ভবিষ্যতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করে এবং দুর্বল মুহূর্তে ভুল করা থেকে বিরত রাখে।

২. শুরু করার বাধা কমান (Reduce Friction):

প্রসক্রাস্টিনেশনের সবচেয়ে কঠিন অংশ হলো শুরু করা। একবার শুরু করলে কাজ অনেক সহজ হয়ে যায়। তাই ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে শুধু কাজ শুরু করার অভ্যাস তৈরি করুন।

  • পড়াশোনা শুরু করতে পুরো এক ঘণ্টা নয়, বরং পাঁচ মিনিটের জন্য বসুন।
  • ব্যায়ামের লক্ষ্য না ধরে শুধু জুতার ফিতা বাঁধার অভ্যাস করুন।
  • লেখালেখি শুরু করতে বড় অধ্যায় নয়, একটি ছোট অনুচ্ছেদ লেখার প্রতিশ্রুতি দিন।
  • শুরুটা যত সহজ করবেন, আক্রাসিয়ার ফাঁদ ততটাই দুর্বল হয়ে যাবে।

৩. ইমপ্লিমেন্টেশন ইন্টেনশন ব্যবহার করুন (Implementation Intention):

শুধু লক্ষ্য স্থির করাই যথেষ্ট নয়; সেটিকে নির্দিষ্ট সময়, স্থান ও কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করুন। যেমন—“আগামীকাল সকাল ৭টায় লেক পার্কে আমি ৩০ মিনিট দৌড়াব।”

গবেষণা বলছে, এভাবে নির্দিষ্ট সময় ও স্থানে কাজ নির্ধারণ করলে সেই কাজ করার সম্ভাবনা ২ থেকে ৩ গুণ বেড়ে যায়। এমনকি অফিসে ফ্লু ভ্যাকসিন নেওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা গেছে, যারা দিন-তারিখ লিখে রেখেছেন তারা বেশি সফল হয়েছেন।

আক্রাসিয়া বনাম এংক্রাটেইয়া

এরিস্টটল আক্রাসিয়ার বিপরীতে ব্যবহার করেছিলেন এংক্রাটেইয়া শব্দটি, যার অর্থ নিজের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকা। আক্রাসিয়া আমাদেরকে তাত্ক্ষণিক আনন্দের বন্দি করে রাখে, আর এংক্রাটেইয়া আমাদের দেয় দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য পূরণের ক্ষমতা।

আক্রাসিয়ার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের শিখতে হবে-

  • ভবিষ্যৎ আচরণকে নিয়ন্ত্রণে রাখা,
  • কাজ শুরু করার সহজ পদ্ধতি তৈরি করা,
  • এবং পরিকল্পনাকে বাস্তবে প্রয়োগের প্রতিশ্রুতি দেওয়া।

আক্রাসিয়া মানবজীবনের এক প্রাচীন সমস্যা। ভিক্টর হুগোর গল্প যেমন প্রমাণ করে, মানুষের দুর্বলতা জয় করতে মাঝে মাঝে অদ্ভুত কৌশলও কাজে আসে। আধুনিক মনোবিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, কমিটমেন্ট ডিভাইস, ঘর্ষণ কমানো, এবং ইমপ্লিমেন্টেশন ইন্টেনশন ব্যবহারের মাধ্যমে আক্রাসিয়া থেকে মুক্ত হয়ে আমরা এংক্রাটেইয়ার পথে হাঁটতে পারি—যেখানে আমরা নিজের জীবন ও অভ্যাসের নিয়ন্ত্রক।

এই প্রবন্ধটি অ্যাটমিক হ্যাবিটস-এর ১৪তম অধ্যায়ের একটি অংশ।


খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্তি: মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষিত তিনটি কৌশল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ২১ ১১:৩৯:৪১
খারাপ অভ্যাস থেকে মুক্তি: মনোবিজ্ঞানের পরীক্ষিত তিনটি কৌশল
ছবি: সংগৃহীত

মানুষের জীবনে খারাপ অভ্যাস যেন এক অদৃশ্য শৃঙ্খল, যা ব্যক্তিগত উন্নতি ও মানসিক স্বাস্থ্যের পথে বাধা সৃষ্টি করে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, অভ্যাস ভাঙা শুধু ইচ্ছাশক্তির ওপর নির্ভর করে না, বরং এর সঙ্গে যুক্ত থাকে পরিবেশ, মানসিক কাঠামো ও জীবনযাপনের ধরণ। সাম্প্রতিক গবেষণা ও বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে উঠে এসেছে খারাপ অভ্যাস ভাঙার তিনটি কার্যকর উপায়।

১. খারাপ অভ্যাসকে ভেঙে ভালো অভ্যাসে রূপান্তর

খারাপ অভ্যাস সরাসরি বাদ দেওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে। তাই বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, সেই অভ্যাসকে ধীরে ধীরে একটি ভালো অভ্যাস দিয়ে প্রতিস্থাপন করা। যেমন ধূমপানের পরিবর্তে ব্যায়াম করা, বা অপ্রয়োজনীয় মোবাইল স্ক্রলিংয়ের পরিবর্তে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা। এতে করে মস্তিষ্কে অভ্যাস গঠনের পুরনো ধারা ভেঙে নতুন এক ইতিবাচক ধারা তৈরি হয়।

২. পরিবেশ পরিবর্তন করে অভ্যাস ভাঙা

ভিয়েতনাম যুদ্ধ থেকে ফিরে আসা মার্কিন সেনাদের অভিজ্ঞতা থেকে জানা যায়, তারা কীভাবে মারাত্মক হেরোইন আসক্তি থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবেশ ছেড়ে দেশে ফিরে আসা মানে তাদের চারপাশ থেকে আসক্তিকে উস্কে দেওয়া সমস্ত প্রভাব দূর হয়ে যায়। এর ফলে নতুন জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে তাদের আর মাদকদ্রব্যের দিকে ফিরতে হয়নি। অর্থাৎ, পরিবেশই অনেকাংশে খারাপ অভ্যাস টিকিয়ে রাখে, আর সেই পরিবেশ বদল করলেই অভ্যাস ভাঙা সহজ হয়।

৩. ‘ব্রাইট-লাইন’ নিয়ম মেনে চলা

মনোবিজ্ঞানে ‘ব্রাইট-লাইন’ নিয়ম বলতে বোঝানো হয় এমন একটি সুনির্দিষ্ট ও স্পষ্ট নিয়ম, যেখানে কোনো ধোঁয়াশা থাকে না। যেমন—“আমি কখনো ফাস্টফুড খাব না” বা “রাত ১১টার পর ফোন ব্যবহার করব না।” এই নিয়মগুলোতে কোনো ব্যাখ্যা বা ফাঁকফোকর থাকে না, ফলে মানুষ নিজের সঙ্গে আপস করার সুযোগ কম পায়। এ ধরনের নিয়ম জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনে এবং ইচ্ছাশক্তিকে দৃঢ় করে তোলে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খারাপ অভ্যাস ভাঙতে হলে শুধু শক্ত মানসিকতা নয়, বরং সঠিক কৌশলও প্রয়োজন। পরিবেশ পরিবর্তন, বিকল্প ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা এবং স্পষ্ট নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে যে কেউ তার জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারে।


লিভার ডিটক্স পণ্য আসলেই কতটা কার্যকর? চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৯ ১২:৩৪:২৪
লিভার ডিটক্স পণ্য আসলেই কতটা কার্যকর? চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কবার্তা
ছবি: সংগৃহীত

বর্তমানে বাজার ভরিয়ে দিয়েছে নানারকম হারবাল ও প্রাকৃতিক উপাদানের পণ্য, যেগুলোকে লিভার পরিষ্কার বা ‘ডিটক্স’-এর মহৌষধ হিসেবে প্রচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে আছে বিটরুট, আমলকি কিংবা হলুদের গুঁড়ার বিজ্ঞাপন, যেখানে দাবি করা হচ্ছে এগুলো শরীরের সব টক্সিন বের করে লিভারকে নতুন করে সচল করবে। তবে চিকিৎসক, পুষ্টিবিদ ও গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের ধারণা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভ্রান্তিকর এবং বৈজ্ঞানিকভাবে অপ্রমাণিত।

লিভার নিজেই করে শরীর পরিষ্কার

চিকিৎসা বিজ্ঞানে লিভার ডিটক্সিফিকেশন বলতে বোঝানো হয় এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে ধারণা করা হয় নির্দিষ্ট খাদ্য, হারবাল উপাদান বা সাপ্লিমেন্ট লিভারকে টক্সিনমুক্ত করতে সাহায্য করে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষের শরীরে লিভার নিজেই প্রতিদিন টক্সিন ছেঁকে ফেলে এবং এ জন্য কোনো আলাদা ডিটক্স পণ্যের প্রয়োজন নেই। বরং অতিরিক্ত পরিমাণে এসব পণ্য সেবনে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

জন্স হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হেপাটোলজিস্ট ড. টিনস্যে ওরেটা লিখেছেন, লিভার স্বাভাবিকভাবে শরীরের টক্সিনকে বর্জ্যে রূপান্তর করে, রক্তকে বিশুদ্ধ করে এবং পুষ্টি উপাদান ও ওষুধকে বিপাকের মাধ্যমে প্রোটিনে রূপান্তরিত করে যা শরীরের জন্য অপরিহার্য। তার মতে, লিভার ডিটক্সের নামে বাজারজাত পণ্যগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি ‘প্রচলিত ভুল ধারণা’। এসব পণ্য এফডিএ নিয়ন্ত্রিত নয়, ফলে এগুলোর মান ও নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়।

বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ

বাংলাদেশের ল্যাবএইড হাসপাতালের পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম জানান, লিভার একটি স্বয়ংক্রিয় ও দক্ষ অঙ্গ, যা প্রাকৃতিকভাবেই শরীর থেকে টক্সিন, ওষুধের উপজাত এবং বিপাকীয় বর্জ্য বের করে দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদে অ্যালকোহল, অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাদ্য বা ভাইরাল সংক্রমণে লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তিনি বলেন, হারবাল উপাদান চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় তখনই, যখন বৈজ্ঞানিকভাবে তার কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়। বাজারে যে ডিটক্স পণ্যগুলো পাওয়া যায়, তার অধিকাংশই লোকজ বিশ্বাসভিত্তিক, যার নিরাপত্তা বা ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য নেই।

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) জানিয়েছে, কিছু হারবাল ওষুধ অন্যান্য ওষুধের কার্যকারিতা কমাতে পারে এবং তা থেকে নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও হতে পারে।

হামদর্দ ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ইউনানী মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, “ওষুধি উপাদান অবশ্যই নির্দিষ্ট ডোজে এবং মান নিয়ন্ত্রণের আওতায় সেবন করতে হবে। ভেষজ পণ্য বাজারজাত করার সময় সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত না করলে তা ফাঙ্গাস বা দূষণে আক্রান্ত হতে পারে, যা মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।”

কোন হারবাল উপাদান উপকারী হতে পারে

জন্স হপকিন্সের তথ্যমতে, মিল্ক থিসল লিভারের প্রদাহ কমাতে সহায়ক হতে পারে এবং হলুদের নির্যাস লিভারকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে ভূমিকা রাখে। তবে এসব উপাদানের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারের পক্ষে বৈজ্ঞানিক সুপারিশ এখনো নেই। পুষ্টিবিদ সামিয়া তাসনিম বলেন, হলুদ, আদা, রসুন বা গ্রিন টি-এর মতো উপাদানে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এগুলো লিভারের জন্য কিছুটা উপকারী হতে পারে, তবে এগুলোর প্রভাব সীমিত।

ড. মনিরুজ্জামান খান উদাহরণ টেনে বলেন, বিটরুটে আয়রন থাকে যা রক্তস্বল্পতা দূর করতে এবং এনার্জি লেভেল বাড়াতে সাহায্য করে। তবে সঠিক প্রক্রিয়াজাত না হলে এসব গুঁড়ো পণ্য স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তার মতে, গোলাপের পাপড়ি, ভুঁই আমলা বা কালো মেঘের মতো কিছু ভেষজ উপাদান ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকর প্রমাণিত হলেও এগুলোর ব্যবহার অবশ্যই বিশেষজ্ঞ পরামর্শে হওয়া উচিত।

লিভার সুস্থ রাখার উপায়

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লিভারের সুরক্ষার জন্য কৃত্রিম ডিটক্স পণ্যের উপর নির্ভর না করে জীবনধারায় পরিবর্তন আনা বেশি কার্যকর। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ, সুষম খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত পানি পান, অ্যালকোহল ও মাদক থেকে বিরত থাকা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলাই হলো সুস্থ লিভারের মূল চাবিকাঠি।

ড. টিনস্যে ওরেটার মতে, অতিরিক্ত অ্যালকোহল, অতিভোজন কিংবা একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে অরক্ষিত যৌনসম্পর্ক লিভারের ক্ষতি করে। তাই সংযমী জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিরাপদ আচরণই লিভার রক্ষার উপযুক্ত উপায়। তিনি বলেন, “কোনও গবেষণায় প্রমাণ হয়নি যে ডিটক্স বা ক্লিনজ পণ্য লিভারের ক্ষতি পূরণ করতে সক্ষম।”


পিকাসো থেকে নিকোলস: প্রতিভা, সংগ্রাম আর অর্থপূর্ণ জীবনের দিশা

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৮ ১৩:০৪:০৭
পিকাসো থেকে নিকোলস: প্রতিভা, সংগ্রাম আর অর্থপূর্ণ জীবনের দিশা
ছবি: সংগৃহীত

ইতিহাসের যেসব শিল্পী, সাহিত্যিক ও গবেষক তাঁদের প্রতিভা ও সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে বিশ্বকে আলো দেখিয়েছেন, তাঁদের জীবন কেবল সাফল্যের গল্পে ভরপুর নয়; বরং সেখানে আছে ত্যাগ, কষ্ট, সংগ্রাম এবং গভীর আত্মদর্শন। তাঁদের জীবন আমাদের শেখায় যে, সফলতার মঞ্চে আলো যেমন উজ্জ্বল, তেমনি তার আড়ালে থাকে কঠিন ছায়াও। সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিশেষ ফিচারে পিকাসো, লুই আগাসিজ, জোসেফ ব্রডস্কি, মার্থা গ্রাহাম এবং নিকেল নিকোলসের জীবন থেকে নেওয়া অনন্য জীবনপাঠ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

প্রতিভার আড়ালে পিকাসোর ছায়াপাশ

বিশ্বখ্যাত চিত্রশিল্পী পাবলো পিকাসোকে আধুনিক শিল্পকলার সবচেয়ে বিপ্লবী রূপকার বলা হয়। কিন্তু তাঁর এই প্রতিভার পেছনে ছিল বিশাল এক মূল্য। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অস্থির, সম্পর্কগুলো ছিল জটিল, এবং সৃজনশীলতার প্রতি অদম্য সাধনা তাঁকে প্রায়শই নিঃসঙ্গ করে তুলত। ফিচারে বলা হয়েছে, পিকাসোর সাফল্য প্রমাণ করে যে, মহান প্রতিভা অর্জনের পেছনে প্রায়শই থাকে মানসিক টানাপোড়েন ও ব্যক্তিগত ত্যাগ, যা সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না।

পর্যবেক্ষণের শক্তি: লুই আগাসিজের শিক্ষা

প্রখ্যাত জীববিজ্ঞানী লুই আগাসিজ ছাত্রদের শিখিয়েছিলেন, পর্যবেক্ষণই হলো শিক্ষার মূল হাতিয়ার। তিনি বিশ্বাস করতেন, বই বা বক্তৃতা নয়, প্রকৃতির সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়েই শেখা যায় জীবনের আসল পাঠ। তাঁর মতে, আত্মসচেতনতা ও সূক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ ছাড়া সাফল্য কখনো টেকসই হয় না। এই শিক্ষা কেবল জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রেই নয়, বরং প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য—যেখানে মনোযোগ, ধৈর্য ও আত্মবিশ্লেষণই এগিয়ে যাওয়ার চাবিকাঠি।

সমালোচকদের মোকাবিলায় ব্রডস্কির কৌশল

রুশ কবি জোসেফ ব্রডস্কি রাজনৈতিক কারণে নির্বাসিত হয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। প্রিয়জনকে হারান, মাতৃভূমির মাটি থেকেও দূরে থাকতে হয় তাঁকে। তবুও তিনি ভেঙে পড়েননি। ১৯৮৮ সালে তিনি প্রকাশ্যে বলেন, সমালোচক ও বিরূপ মানুষদের মোকাবিলা করার একমাত্র উপায় হলো ধৈর্য, মানসিক শক্তি এবং আত্মবিশ্বাস। তিনি শিখিয়েছিলেন, সমালোচনার জবাব রাগ দিয়ে নয়, বরং নিজের কাজের উৎকর্ষ দিয়ে দিতে হয়। জীবনের প্রতিকূলতা মোকাবিলার এই কৌশল আজকের প্রতিযোগিতামূলক ও চাপপূর্ণ সমাজেও সমান প্রাসঙ্গিক।

তুলনার ফাঁদ এড়িয়ে সৃজনশীলতা: মার্থা গ্রাহামের শিক্ষা

২০শ শতাব্দীর প্রভাবশালী নৃত্যশিল্পী ও কোরিওগ্রাফার মার্থা গ্রাহাম বলেছিলেন, “নিজের কাজের বিচার করা আপনার দায়িত্ব নয়।” তাঁর মতে, শিল্পীর দায়িত্ব হলো নিজের সৃষ্টিশীলতাকে প্রকাশ করা, বিচার করার দায়িত্ব অন্যের। তিনি ব্যাখ্যা করেন, অন্যের সঙ্গে তুলনা করা কেবল হতাশা ও আত্মবিনাশ ডেকে আনে। এই শিক্ষা শুধু শিল্পীর জন্য নয়, বরং প্রতিটি মানুষের জন্য সমান জরুরি—কারণ জীবনে সফল হতে হলে আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রকাশের স্বাধীনতা বজায় রাখতে হয়।

অর্থপূর্ণ জীবনের অনুপ্রেরণা: নিকেল নিকোলস

বিখ্যাত অভিনেত্রী নিকেল নিকোলস জনপ্রিয় সিরিজ স্টার ট্রেক-এ অভিনয়ের মাধ্যমে অজান্তেই নাগরিক অধিকার আন্দোলনে প্রভাব ফেলেছিলেন। তাঁর চরিত্র আফ্রো-আমেরিকান নারী সমাজকে নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করেছিল। তিনি দেখিয়েছেন, সমাজ পরিবর্তনের জন্য সবসময় আন্দোলনের সামনের সারিতে থাকতে হয় না; বরং নিজের অবস্থান থেকে ইতিবাচক বার্তা ছড়িয়ে দিয়েও পরিবর্তন আনা সম্ভব। তাঁর জীবন প্রমাণ করে, অর্থবহ জীবন মানে কেবল ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, বরং সমাজ ও মানবতার প্রতি দায়িত্বশীল অবদানও।


গবেষণায় উন্মোচিত খারাপ সিদ্ধান্তের মনস্তাত্ত্বিক কারণ

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ১৪:০১:০৪
গবেষণায় উন্মোচিত খারাপ সিদ্ধান্তের মনস্তাত্ত্বিক কারণ
ছবি: সংগৃহীত

আমরা অনেকেই নিজেদের যুক্তিবাদী মানুষ মনে করি, কিন্তু বাস্তবে তা নই—এমনকি বিজ্ঞান বলছে, আমরা সবাই কমবেশি অযৌক্তিকভাবে সিদ্ধান্ত নেই। দীর্ঘদিন ধরে গবেষক ও অর্থনীতিবিদরা বিশ্বাস করতেন, মানুষ সুপরিকল্পিত ও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কিন্তু সাম্প্রতিক দশকগুলোতে মনোবিজ্ঞানীরা একাধিক মানসিক ভুলের সন্ধান পেয়েছেন, যা আমাদের চিন্তাভাবনাকে ভুল পথে পরিচালিত করে। বিভিন্ন গবেষণালব্ধ তথ্য অনুযায়ী, এই ভুলগুলো আমাদের দৈনন্দিন সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাতেও প্রভাব ফেলে।

৫টি সাধারণ মানসিক ভুল যা সঠিক সিদ্ধান্ত থেকে দূরে সরিয়ে দেয়

মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, কিছু নির্দিষ্ট মানসিক ভুল আমাদের জীবনে নিয়মিতভাবে দেখা দেয় এবং সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে রয়েছে—

Survivorship Bias (টিকে থাকার পক্ষপাত): শুধুমাত্র সফল উদাহরণ দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া, ব্যর্থতার তথ্য উপেক্ষা করা।

Loss Aversion (ক্ষতি এড়ানোর প্রবণতা): লাভের চেয়ে ক্ষতির ভয়কে বেশি গুরুত্ব দেওয়া।

Availability Heuristic (সহজে মনে পড়া তথ্যের ওপর নির্ভরতা): যে তথ্য সহজে মনে আসে, সেটিকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ধরে নেওয়া।

Anchoring (প্রথম তথ্যের প্রভাব): কোনো বিষয়ে প্রথম পাওয়া তথ্যের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হওয়া।

Confirmation Bias (নিজের মতামতকে সমর্থনকারী তথ্য খোঁজা): যা আমরা আগে থেকেই বিশ্বাস করি, শুধু সেটিকেই সমর্থনকারী প্রমাণ খোঁজা।

ভুল ধারণা সনাক্ত করার উপায়

মনোবিজ্ঞানের শত শত গবেষণা প্রমাণ করেছে, আমরা যে ঘটনাগুলো সহজে মনে করতে পারি, তাদের গুরুত্ব অনেক সময় অতিমূল্যায়ন করি; আর যেগুলো মনে আনা কঠিন, সেগুলোকে অবমূল্যায়ন করি। এই প্রবণতাকে Illusory Correlation (ভ্রমমূলক সম্পর্ক) বলা হয়। এই ভুল এড়াতে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন—গোপন অনুমান চিহ্নিত করার চেষ্টা করতে হবে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তা বাস্তবতার সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে হবে। এভাবে আমরা ভ্রান্ত সম্পর্কের ফাঁদ থেকে বের হতে পারি।

প্রকাস্টিনেশন বা কাজ ফেলে রাখার মনস্তাত্ত্বিক কারণ

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই অধ্যাপক জানিয়েছেন, আমাদের মস্তিষ্ক স্বাভাবিকভাবে বর্তমান সত্ত্বাকে ভবিষ্যতের সত্ত্বার চেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়। এর ফলে আমরা দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের চেয়ে তাৎক্ষণিক আরামের দিকে ঝুঁকে পড়ি, যা প্রকাস্টিনেশনের অন্যতম বড় কারণ। এই প্রবণতা কাটাতে এবং ভবিষ্যতের স্বার্থে বর্তমান সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে তিনটি কৌশল কার্যকর হতে পারে-

১. ভবিষ্যতের লক্ষ্যকে বর্তমানের সঙ্গে যুক্ত করা

২. ছোট ছোট পদক্ষেপে বড় লক্ষ্য পূরণ করা

৩. বর্তমান সিদ্ধান্তের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কল্পনা করা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজের মানসিক প্রবণতাগুলো বুঝে এবং এগুলোর প্রভাব কমানোর জন্য সচেতনভাবে কাজ করলে আমরা শুধু সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেই পারব না, বরং জীবনের নানা ক্ষেত্রে আরও সফল হতে পারব।


মনোযোগ বাড়াতে ৬টি সেরা কৌশল

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১১ ১৪:৫৯:৩৪
মনোযোগ বাড়াতে ৬টি সেরা কৌশল
ছবিঃ সংগৃহীত

আধুনিক ব্যস্ত জীবনে মনোযোগ ধরে রাখা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজে একাগ্র হওয়া অনেকের কাছেই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত ডিজিটাল যুগে নানা রকম নোটিফিকেশন, ইমেইল, ফোনকল বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রলোভন আমাদের মনোযোগকে বারবার ভেঙে দেয়। উৎপাদনশীলতা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ কিন্তু কার্যকর কৌশল অনুসরণ করলে এই মনোযোগ বিভ্রাট কমানো সম্ভব এবং দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো আরও দক্ষতার সঙ্গে সম্পন্ন করা যায়।

প্রতিদিন একটি “অ্যাঙ্কর টাস্ক” বেছে নিন

প্রতিদিনের কাজের তালিকায় অনেক কিছুই থাকতে পারে, তবে দিনের জন্য একটি অগ্রাধিকারমূলক কাজ ঠিক করে নেওয়া কার্যকর পদ্ধতি। এটিকেই বলা হয় “অ্যাঙ্কর টাস্ক”। এটি এমন একটি কাজ, যা যেকোনো অবস্থাতেই সম্পন্ন করতে হবে। এই একটিমাত্র অগ্রাধিকার মূলত সারাদিনের পরিকল্পনাকে কেন্দ্রবিন্দুতে ধরে রাখে এবং অন্যান্য কাজের বিন্যাস সেই অনুযায়ী গড়ে ওঠে।

সময় নয়, শক্তি ব্যবস্থাপনা করুন

বেশিরভাগ উৎপাদনশীলতা কৌশল সময় ব্যবস্থাপনার উপর জোর দিলেও বিশেষজ্ঞদের মতে, আসল বিষয়টি হলো শক্তি ব্যবস্থাপনা। যেসব কাজ সর্বোচ্চ মনোযোগ ও সৃজনশীলতার দাবি রাখে, সেগুলো দিনের সেই সময়টিতে করুন যখন আপনার শক্তি ও মানসিক সতেজতা সবচেয়ে বেশি থাকে। যেমন, সকালে সৃজনশীলতা বেশি থাকলে সকালেই লিখন, কৌশলগত পরিকল্পনা বা জটিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার কাজগুলো সম্পন্ন করুন এবং বিকেলে অপেক্ষাকৃত কম মনোযোগসাপেক্ষ কাজগুলো রাখুন।

দুপুরের আগে ইমেইল এড়িয়ে চলুন

দিনের শুরুতে ইমেইল চেক করা মানে নিজের এজেন্ডা বাদ দিয়ে অন্যের এজেন্ডায় সাড়া দেওয়া। তাই অন্তত সকালবেলার কয়েক ঘণ্টা ইমেইল থেকে দূরে থেকে নিজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোনিবেশ করা উচিত। যদিও অনেকের জন্য দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করা কঠিন, তবুও সম্ভব হলে সকাল ৮:৩০, ৯টা বা অন্তত ১০টা পর্যন্ত ইমেইল চেক না করার চেষ্টা করা যেতে পারে।

ফোন অন্য কক্ষে রেখে দিন

দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টা ফোন থেকে দূরে থাকলে মনোযোগের ঘনত্ব অনেক বেড়ে যায়। ফোনকল, বার্তা বা অ্যাপ নোটিফিকেশন সবকিছুই মনোযোগ ভাঙতে পারে। তাই মনোযোগসাপেক্ষ কাজের সময় ফোন দূরে রাখা ভালো।

ফুলস্ক্রিন মোডে কাজ করুন

কম্পিউটারে কাজ করার সময় ফুলস্ক্রিন মোড ব্যবহার করলে দৃষ্টি অন্য কোনো অ্যাপ বা আইকনের দিকে সরে যায় না। যেমন, ব্রাউজারে পড়া, এভারনোটে লেখা বা ফটোশপে ছবি সম্পাদনার সময় পুরো স্ক্রিন জুড়ে সেই অ্যাপ রাখলে মনোযোগের ঘাটতি কমে যায়।

সকালের গুরুত্বপূর্ণ সময় থেকে বিভ্রান্তি সরিয়ে ফেলুন

দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সকালে করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এ সময় জরুরি কাজের চাপ বা বাইরের প্রভাব এখনো তেমনভাবে প্রবেশ করে না। কেউ কেউ এমনকি সকালের খাবারও বিলম্বিত করে দুপুরে খান, যাতে সকালে অতিরিক্ত সময় পাওয়া যায়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, যেকোনো কৌশলই হোক, মূল বিষয় হলো একটি কাজে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিবেদন করা। শুরুতে নিখুঁতভাবে সম্পন্ন না হলেও মনোযোগ ধরে রাখার অনুশীলন ধীরে ধীরে দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা দুই-ই বাড়িয়ে তুলবে।


সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই বুক ধড়ফড়ায়? সমস্যা বাড়ার আগে যা করণীয়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ২১:৩২:১৭
সিঁড়ি বেয়ে উঠতেই বুক ধড়ফড়ায়? সমস্যা বাড়ার আগে যা করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

অফিস কিংবা কাজের জায়গায় লিফট ব্যবহার করা এখন অনেকেরই স্বাভাবিক অভ্যাস। সিঁড়ি বেয়ে হেঁটে উঠা কিংবা নামার চর্চা কমে গেছে। কিন্তু যদি অল্প সিঁড়ি বেয়ে ওঠার সময় হাঁপিয়ে যাচ্ছেন, বুক ধড়ফড় করছে, তাহলে সেটি অবহেলা করার মতো নয়। বিশেষ করে ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিলে তা হৃদরোগের সম্ভাবনার সংকেত হতে পারে।

আগে ধারণা ছিল, হার্টের রোগ বেশি হয় বয়সের সঙ্গে। কিন্তু এখনকার তথ্য বলছে, হৃদরোগ যে কোনো বয়সেই আসতে পারে এবং এর প্রবণতা কম বয়সির মধ্যেও বাড়ছে। এর পেছনে প্রধান কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত শরীরচর্চার অভাব।

হার্ট বিশেষজ্ঞ দিলীপ কুমার জানান, যদি সিঁড়ি বেয়ে কয়েক ধাপ ওঠার সময় বুক ধড়ফড় করে, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তবে দ্রুত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো জরুরি। এই লক্ষণগুলো হার্টের পেশির পুরু হওয়া বা ‘কার্ডিয়াক হাইপারট্রফি’র ইঙ্গিত দিতে পারে।

কার্ডিয়াক হাইপারট্রফি হলো এমন একটি অবস্থা যেখানে হার্টের পেশি অতিরিক্ত শক্ত ও পুরু হয়ে যায়, বিশেষ করে বাম পেশির দেয়াল। এর ফলে হার্টের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা কমে যায় এবং অনিয়মিত হৃদস্পন্দন দেখা দেয়। এর প্রভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি যেমন বাড়ে, তেমনই আচমকা হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়।

উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বৃদ্ধি, পরিবারের ইতিহাসে হৃদরোগ থাকা এবং অতিরিক্ত ওজন থাকা কার্ডিয়াক হাইপারট্রফির ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া হৃদযন্ত্রের ধমনী যদি সরু হয়, তখন রক্ত সঠিকভাবে চলতে পারে না, যা রক্তজমাট বাঁধার কারণ হতে পারে।

এই সমস্যাগুলো এড়াতে জীবনযাত্রার ধরন পরিবর্তন করা জরুরি। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ, নিয়মিত ব্যায়াম, ধূমপান ও মদ্যপান থেকে বিরত থাকা হলে হার্ট সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।

/আশিক


মাসিক আয় থেকে সঞ্চয় করার সহজ ছয়টি উপায়

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১২:৩১:০১
মাসিক আয় থেকে সঞ্চয় করার সহজ ছয়টি উপায়
ছবি: সংগৃহীত

আপনার মাসিক আয়ের থেকে সঞ্চয় করতে চান, কিন্তু সেটি কঠিন মনে হচ্ছে? বেতন থাকলেও খরচের অনিয়ন্ত্রণে মাস শেষে হাত খালি হয়ে যায়? ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় না থাকায় জরুরি মুহূর্তে অর্থসংকট দেখা দিতে পারে। তাই চাকরির আয়ের একটি অংশ অবশ্যই সঞ্চয়ের জন্য আলাদা রাখা জরুরি। পরিকল্পনা করে খরচ করলে সঞ্চয় সহজ হয়। সবচেয়ে জনপ্রিয় ৫০/৩০/২০ নিয়ম অনুসরণ করতে পারেন, যেখানে আয়ের ৫০% দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় খরচে, ৩০% ইচ্ছামতো খরচে এবং ২০% সঞ্চয় ও বিনিয়োগে রাখবেন।

সঞ্চয়ের উদ্দেশ্য স্পষ্ট করা প্রয়োজন—স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য অনুযায়ী সঞ্চয়ের পরিমাণ ঠিক করুন। প্রথম মাসে মাসিক খরচ হিসেব করলে পরের মাস থেকে সঞ্চয় শুরু করা সহজ হবে। অপ্রত্যাশিত ব্যয় যেমন চিকিৎসা বা উৎসবের জন্য আলাদা অর্থ জমিয়ে রাখাটাও জরুরি।

মাসিক বেতনের থেকে সঞ্চয় নিশ্চিত করতে এই ছয়টি উপায় অনুসরণ করুন—

১. মাসিক বাজেট তৈরি করুন: আপনার আয়ের সব উৎস ও মাসিক খরচ লিখে রাখুন। এতে খরচের অপ্রয়োজনীয় অংশ চিহ্নিত করে কমানো সম্ভব হবে।

২. নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা সঞ্চয় শুরু করুন: প্রথম মাস থেকে যেটুকু জমাতে পারেন সেটাই নিয়মিত করুন। বছর শেষে বড় অঙ্ক জমবে।

৩. প্রতিদিনের খরচ লিখে রাখুন: কোন খাতে কত টাকা খরচ হচ্ছে নজর রাখলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো যাবে।

৪. বিল কমান: গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি, ইন্টারনেট, মোবাইল বিল কমানোর চেষ্টা করুন। শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করুন।

৫. ঘরেই রান্না করুন: বাইরের খাবারের চেয়ে ঘরোয়া খাবার সাশ্রয়ী ও স্বাস্থ্যকর। সপ্তাহের খাবারের পরিকল্পনা করে রান্না করলে খরচ কমে।

৬. গণপরিবহণ ব্যবহার করুন: ব্যক্তিগত বা অ্যাপভিত্তিক পরিবহণের চেয়ে গণপরিবহণে যাতায়াত অনেক সাশ্রয়ী হয়। সময় বুঝে বাস কিংবা ট্রেন ব্যবহার করুন।

এই নিয়মগুলো মেনে চললে সঞ্চয় হবে সহজ ও নিয়মিত। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও সচেতনতা অপরিহার্য।

/আশিক


ছবিতে প্রথমে যা দেখলেন, সেটাই বলে দেবে আপনার চরিত্র

জীবনযাপন ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ০৯ ১০:১৩:২৩
ছবিতে প্রথমে যা দেখলেন, সেটাই বলে দেবে আপনার চরিত্র

অপটিক্যাল ইলিউশন: চোখের ধাঁধা ও মনের ছায়া

আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃষ্টিভ্রম বা অপটিক্যাল ইলিউশনের ছবি এবং ভিডিও খুবই জনপ্রিয়। অপটিক্যাল ইলিউশন হল এমন এক ধরণের ছবি যা দেখতে এক রকম হলেও, প্রত্যেক ব্যক্তির চোখে তার ভিন্ন ভিন্ন অর্থ ফুটে ওঠে। এটি মূলত চোখ ও মস্তিষ্কের মধ্যে সমন্বয়ের অসঙ্গতির কারণে সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এই ছবি শুধুমাত্র দৃষ্টিভ্রমই তৈরি করে না, বরং মানুষের মনোভাব ও ব্যক্তিত্বের আভাসও দেয়।

এক জনপ্রিয় অপটিক্যাল ইলিউশন হলো ‘রুবিন ভেস’ (Rubin Vase)। এই ছবিতে দুইটি ভিন্ন ছবি দেখা যায়—একদিকে একটি ফুলদানি, অন্যদিকে দুইজন মুখো মুখে বসে আছে। আপনি প্রথমে যা দেখেন, তা আপনার চিন্তার ধরন ও ব্যক্তিত্বের একটি সংকেত হতে পারে।

যদি প্রথমে আপনি ফুলদানি দেখেন, তাহলে এর মানে আপনি সাধারণত বিষয়ভিত্তিক এবং বিস্তারিতভাবে চিন্তা করেন। আপনি সমস্যা বা বিষয়কে সরল এবং স্পষ্টভাবে বুঝতে পছন্দ করেন। অন্যদিকে, যদি আপনি প্রথমে দুইটি মুখ দেখতে পান, তাহলে আপনি সামাজিক ও পারস্পরিক সম্পর্কের প্রতি বেশি মনোযোগী। আপনি পটভূমি বা পরিবেশ বুঝতে চান এবং মানুষের অনুভূতি ও সম্পর্ককে গুরুত্ব দেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন অপটিক্যাল ইলিউশনভিত্তিক কুইজের জনপ্রিয়তার পেছনে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এগুলো কেবল বিনোদন নয়, নিজের অবচেতন মনের প্রবণতা বুঝতে সাহায্য করে। যখন আমাদের মস্তিষ্ক অস্পষ্ট বা দ্ব্যর্থবোধক কোনো ছবি দেখে, তখন প্রথম যে উপাদানটি চিনতে পারে, তা আমাদের মানসিক অগ্রাধিকার সম্পর্কে ইঙ্গিত দেয়।

ছবি দেখে আপনি প্রথমে কী দেখলেন—মহিলা না মোরগ? মজা মনে হলেও, এটির মধ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে আপনার ব্যক্তিত্ব ও পছন্দের নানা দিক। এটি বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে শেয়ার করেও জানতে পারেন তারা কোন দলে পড়েন।

নিজেকে চিনতে এবং মজার ছলে বন্ধুদের সঙ্গে ভাব বিনিময় করার জন্য এখনই সময়।

/আশিক

পাঠকের মতামত: