বিশেষ প্রতিবেদন

৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের আপোষহীন কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ আগস্ট ১৫ ২১:৩০:৫১
৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের আপোষহীন কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যাদের জীবন ও কর্ম দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। বেগম খালেদা জিয়া সেই তালিকার শীর্ষে। আজ তাঁর ৮১তম জন্মদিন। চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ক্ষমতা, বিরোধিতা, আন্দোলন, কারাবাস এবং গৃহবন্দিত্বের ভেতর দিয়ে গেছেন। প্রতিটি অধ্যায় তাঁকে যেমন দৃঢ় করেছে, তেমনি রাজনৈতিক বিরোধিতার কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির নেতৃত্বে আসেন খালেদা জিয়া। তখন তিনি রাজনীতিতে নতুন ছিলেন, কিন্তু সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে তিনি দ্রুত বিরোধী শক্তির অন্যতম প্রধান মুখে পরিণত হন। ১৯৮০-এর দশকে তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকে এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রাখে, যা শেষ পর্যন্ত এরশাদের পতন ঘটায়। তাঁর নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ছিল আপোষহীনতা, সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং বিরোধী শিবিরকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা।

১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে তিনি বাংলাদেশের প্রথম গনতান্ত্রীকভাবে জনগনের ভোটে নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী হন। দীর্ঘ ১৬ বছরের রাষ্ট্রপতি শাসনের অবসান ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। তাঁর প্রথম মেয়াদে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে চালু, নারীশিক্ষায় বিশেষ প্রণোদনা, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে সহায়তা এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের মতো উদ্যোগগুলো দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। একই সঙ্গে, তিনি সার্কসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের নীতি গ্রহণ করেন। যদিও ১৯৯৪ সালে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তিনি ১৯৯৬ সালে বিরোধী দলের দাবিতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, যা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে দেয়।

২০০১ সালে বিপুল বিজয়ে ক্ষমতায় ফিরে খালেদা জিয়ার সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন সম্প্রসারণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রাথমিক অগ্রগতি সাধন করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৯/১১-পরবর্তী সময়ে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় তাঁর দৃঢ় অবস্থান প্রশংসিত হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং গ্রামীণ উন্নয়ন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০০৬ সালে মেয়াদ শেষে তিনি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

২০০৭ সালের জানুয়ারিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। দুর্নীতির অভিযোগে ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। “মাইনাস টু” পরিকল্পনার আওতায় তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ কারাগার থেকেও তিনি দলের নেতৃত্বে অবিচল থাকেন। প্রায় এক বছর কারাবাস শেষে তিনি মুক্তি পান।

২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল ঢাকার সেনানিবাসে অবস্থিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজরিত বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ। এটি ছিল শুধু তাঁর ব্যক্তিগত বাসস্থান নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক ও পারিবারিক স্মৃতিচিহ্ন। উচ্ছেদের পরপরই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়, যা বিএনপি সমর্থকদের কাছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও শহীদের স্মৃতি মুছে ফেলার প্রচেষ্টা হিসেবে ধরা পড়ে।

২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি ৭ দফা প্রস্তাব দেয়, যার মধ্যে ছিল নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন সংসদ ভেঙে দেওয়া, সেনা মোতায়েন, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। কিন্তু এসব প্রস্তাব সরকার প্রত্যাখ্যান করে এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আন্দোলন দমনে সরকারের দমননীতি তীব্র হয়। খালেদা জিয়া বারবার গৃহবন্দী হন, দলের বহু নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন, এবং বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ে।

২০১৮ সালে বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দণ্ডিত করে কারাগারে পাঠানো হয়। বিএনপি এবং আন্তর্জাতিক মহল এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেয়। কারাগারে থাকাকালীন তাঁর স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতি ঘটে। তিনি গুরুতর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুরোধ করা হলেও সরকার তা অনুমোদন করে না। সীমিত চিকিৎসাসুবিধায় তিনি হাসপাতালে থাকেন, যা দেশ-বিদেশে সমালোচিত হয়। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারির সময় মানবিক বিবেচনায় দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হলেও শর্ত ছিল তিনি বাসায় থাকবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। কার্যত গুলশানের বাসায় তিনি দীর্ঘ গৃহবন্দী জীবন কাটান, যা তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে স্থবির করে দেয়।

খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জনগণের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহিমূলক শাসন। তাঁর প্রস্তাবিত ধারণাগুলো ২০২৩ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্রসংস্কার রূপরেখা হিসেবে প্রকাশ করেন। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা, অনুচ্ছেদ ৭০ সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক সংস্কারের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূলত এই প্রস্তাবই পরবর্তীতে জনমনে রাষ্ট্রসংস্কার আকাঙ্খার সৃষ্টি করে।

২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ঘটে। দীর্ঘ কারাবাস ও গৃহবন্দী জীবনের পর জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা যে সংগ্রাম করেছি, তা প্রতিহিংসার জন্য নয়। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য, যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।” এই বক্তব্যে তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ক্ষমতার রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের স্বার্থে কাজ করার অঙ্গীকার ফুটে ওঠে।

৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়ার জীবন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। তিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করেছেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, জাতীয় উন্নয়নে অবদান রেখেছেন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বছরের পর বছর কারাবাস ও গৃহবন্দী জীবন কাটিয়েছেন। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুধু বিএনপির নেতা হিসেবে নয়, বরং গণতন্ত্রের প্রতীক, নারীর সাহসিকতার মডেল এবং রাজনৈতিক দৃঢ়তার উদাহরণ হিসেবে স্মরণ করা হচ্ছে। তাঁর সংগ্রাম ও ত্যাগ প্রমাণ করে, প্রতিকূলতার মুখেও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো সম্ভব, যদি নেতৃত্বে থাকে অদম্য সাহস, দৃঢ় বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি অবিচল দায়বদ্ধতা।


“হাসিনার পরিকল্পনায় বিপদে আওয়ামী লীগের নিরপরাধ কর্মীরা”

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:৫৮:১৫
“হাসিনার পরিকল্পনায় বিপদে আওয়ামী লীগের নিরপরাধ কর্মীরা”
ছবি: সংগৃহীত

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ ও নিরপরাধ নেতাকর্মীরা সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে নানা ষড়যন্ত্রের কারণে অযথা সন্দেহের মুখে পড়তে পারেন। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমন দাবি করেন এবং দলটির কর্মীদের প্রতি বেশ কিছু সতর্কতাও উচ্চারণ করেন।

রাশেদ খান লিখেছেন, গত ১৫ মাস আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তুলনামূলকভাবে শান্তিতে ছিলেন। কিন্তু তার মতে, শেখ হাসিনা ‘তাদের শান্তিতে রাখতে চান না’। তিনি অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে যেসব রাজনৈতিক পরিকল্পনা করছেন, তা শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নিজস্ব কর্মীদের জন্যই ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।

তার ভাষায়, “দিল্লিতে বসে হাসিনার ষড়যন্ত্রের ফাঁদে যারা রাজপথে নামবে, তারা তো বিপদে পড়বেই। বাকিরাও আওয়ামী লীগ করার কারণে সন্দেহের মধ্যে থাকবে। এর দায়টা শেখ হাসিনার।”

রাশেদ খান আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নিরপরাধ কর্মীদের এখন ‘পরীক্ষা দিতে হবে’ যে তারা কোনো উসকানিতে পা দেবেন না। বরং তাদের উচিত হবে অপরাধী আওয়ামী লীগ–ছাত্রলীগ কর্মীদের চিহ্নিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করা। তিনি স্পষ্ট করেন “নিরীহ আওয়ামী লীগের ওপর আমরা জুলুম করব না, কিন্তু কোনো অপরাধীর সঙ্গেও আপোষ নয়।”

এ সময় তিনি দাবি করেন, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা ছাত্রলীগকে অর্থসহায়তা দিয়েছে বা শেখ হাসিনাকে লালন–পালন করেছেন এদের নির্বাচনের আগেই নিয়ন্ত্রণে না আনলে তারা আবারও দেশকে অস্থির করতে পারে।

সরকারকে উদ্দেশ্য করে রাশেদ খান বলেন, নির্বাচনের আগে সন্ত্রাসী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা অত্যন্ত জরুরি। অস্ত্র উদ্ধার, অপরাধীদের গ্রেপ্তার এসব ক্ষেত্রে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।


রাজশাহীতে বিএনপির ‘দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ’: মনোনীত বনাম বঞ্চিত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৪ ১০:৪৬:৫৪
রাজশাহীতে বিএনপির ‘দুই ফ্রন্টে যুদ্ধ’: মনোনীত বনাম বঞ্চিত
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিভাগের ৩৯টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৩৪টিতে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই পুরো অঞ্চলজুড়ে তীব্র অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মনোনয়ন পাওয়া ও বঞ্চিত প্রার্থীদের অনুসারীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি, সড়ক অবরোধ, মশাল মিছিল, সংবাদ সম্মেলন ও শক্তি প্রদর্শনে ক্রমেই সংঘাতমুখী হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। অনেক এলাকায় নেতা–কর্মীরা সরাসরি দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামায় ক্ষোভ, বিভক্তি ও অনিশ্চয়তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

রাজশাহী-৩: মহাসড়ক অবরোধে ঘণ্টাব্যাপী যানজট

রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে শফিকুল হক মিলনের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ করে রায়হানুল হক ও নাসির হোসেনের সমর্থকরা। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের কারণে সড়কে প্রায় এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।মনোনীত প্রার্থীর অনুসারীরা অভিযোগ করছেন এটি একটি “পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা” এবং দলকে বিভক্ত করার খেলা।

রাজশাহী-৫: দুই দিন ধরে উত্তাল সড়ক

নজরুল ইসলাম মণ্ডলের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে বঞ্চিত চার প্রার্থীর অনুসারীরা। পরদিন শিবপুরে মহাসড়ক অবরোধ করে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে।

স্থানীয় নেতারা আশঙ্কা করছেন দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বিএনপিকে নির্বাচনী মাঠে দুর্বল করে দেবে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১: শাজাহান মিয়াকে নিয়ে তীব্র ক্ষোভ, মশাল মিছিল

এই আসনে ৯০ বছর বয়সী অধ্যাপক শাজাহান মিয়াকে মনোনয়ন দেওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দাবি উঠেছে তাঁর বদলে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকতকে প্রার্থী করার।ফেসবুকে শওকতের ‘বঞ্চনার গল্প’ ভাইরাল হওয়ার পর থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়। মঙ্গলবার কয়লাবাড়ী এলাকায় মশাল মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে তাঁর অনুসারীরা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২: 'ফ্যাসিস্টের দোসর' অভিযোগ, বিক্ষোভ চরমে

আমিনুল ইসলামের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে নাচোল ডাকবাংলা প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ করেন ইমদাদুল হক মাসুদের সমর্থকরা। তাঁরা আমিনুলকে সরাসরি “ফ্যাসিস্টের দোসর” বলে অভিযোগ করেন।

নওগাঁ: পাঁচ আসনের তিনটিতেই উত্তেজনা, অবরোধ ও পাল্টা কর্মসূচি

নওগাঁ-১, ৩ এবং ৪ নম্বর আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে একের পর এক সমাবেশ, সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ চলছে।– নওগাঁ-১: সাবেক এমপি ছালেক চৌধুরীর সমর্থকদের বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ– নওগাঁ-৩: পারভেজ আরেফিন জনির সমর্থকদের বিক্ষোভ– নওগাঁ-৪: সাবেক ছাত্রদল সভাপতি আব্দুল মতিনের অনুসারীদের মহাসড়ক অবরোধ

নাটোর-১: নতুন প্রার্থী, পুরনো ক্ষোভ

ব্যারিস্টার ফারজানা শারমিন পুতুলকে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হন মনোনয়নবঞ্চিত ডা. ইয়াসির আরশাদ রাজনের সমর্থকরা। লালপুর-বনপাড়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।

পাবনা ও জয়পুরহাটেও টানাপোড়েন

পাবনা-৩, জয়পুরহাট-১ ও জয়পুরহাট-২ আসনে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের অনুসারীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন। সড়ক অবরোধ, মিছিল, সমাবেশে tension বাড়ছে।

দলীয় নেতাদের সতর্কবার্তা

বিএনপির রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন—“বিএনপি বড় দল, অনেকেই মনোনয়ন চান। কিন্তু এখন মূল লক্ষ্য দলীয় প্রার্থীকে জেতানো। বিভেদ হলে সবচেয়ে বড় লাভবান হবে প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত।”

রাজশাহী বিভাগে বিএনপির অভ্যন্তরীণ সংকট যত গভীর হচ্ছে, ততই নির্বাচনী মাঠে বিরোধী শক্তিগুলোর জন্য “ওয়াকওভার” পাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। মনোনয়ন নিয়ে দলীয় কোন্দল যদি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা না যায়, তাহলে এর প্রভাব ভরাডুবির মতো ভয়ঙ্কর ফল বয়ে আনতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


এনসিপি, জামায়াত ও বিএনপির ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা কুমিল্লা-৪ আসনে ভোটের হিসাব জটিল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ২০:৪৪:১৮
এনসিপি, জামায়াত ও বিএনপির ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা কুমিল্লা-৪ আসনে ভোটের হিসাব জটিল
সত্য নিউজ গ্রাফিক্স

কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসনটি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতার কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এই আসনে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী এবং জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর পাশাপাশি নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির বা এনসিপি'র দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহও মনোনয়ন তুলেছেন।

তিন দলের প্রার্থী ও কঠোর অবস্থান

বিএনপি: এই আসনে দলের পরীক্ষিত নেতা এবং সাবেক সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীকে প্রার্থী করা হয়েছে। তিনি ১৯৯১ সালের নির্বাচনে এই আসন থেকে জয়ী হন। স্থানীয় বিএনপি কর্মীরা তাঁর অভিজ্ঞতার ওপর ভরসা রাখছেন।

জামায়াতে ইসলামী: জামায়াত এখানে তাদের প্রার্থী হিসেবে সাইফুল ইসলাম নাম ঘোষণা করেছে। এই অঞ্চলে জামায়াতের নিজস্ব ভোট ব্যাংক থাকায় তারা ভোটের সমীকরণকে জটিল করে তুলেছে।

এনসিপি: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহও এই আসন থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। তিনি তাঁর ২৮তম জন্মদিনের দিনই মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে ঘোষণা দেন, এই আসনটি তাঁর নিশ্চিত।

রাজনৈতিক সমীকরণ ও প্রভাব

আগের নির্বাচনে এই আসনটিতে প্রধানত আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যেত। তবে এবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন-পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং এনসিপি'র মতো নতুন দলের উত্থান এই আসনের ভোটের বিভাজন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

জামায়াত ও এনসিপির প্রার্থীর উপস্থিতি বিএনপির ভোট ব্যাংকে ভাগ বসাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। এতে মঞ্জুরুল আহসান মুন্সীকে নিজের সাবেক দুর্গে এবার কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে।

হাসনাতের ঘোষণা: এনসিপি সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর 'আসন নিশ্চিত' হওয়ার ঘোষণা স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার তীব্রতা বাড়িয়েছে।

ফলস্বরূপ, কুমিল্লা-৪ আসনটিতে ত্রিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় শেষ পর্যন্ত কোন প্রার্থীর পাল্লা ভারী হবে, তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা।


জন্মদিনের দিনেই মনোনয়ন ফরম তুললেন এনসিপি সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ২০:২৪:৪৬
জন্মদিনের দিনেই মনোনয়ন ফরম তুললেন এনসিপি সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ
হাসনাত আবদুল্লাহ। ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসন থেকে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন। বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যায় বাংলামটরে অবস্থিত এনসিপির কার্যালয় থেকে তিনি এই মনোনয়ন ফরম কেনেন।

জন্মদিনের দিনে মনোনয়ন

হাসনাত আবদুল্লাহর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের দিনটি কাকতালীয়ভাবে তাঁর ২৮তম জন্মদিনের সঙ্গে মিলে গেছে। ১৯৯৭ সালের ১৩ নভেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং ঠিক একই দিনে মনোনয়ন ফরম তুললেন।

বিজয় নিশ্চিতের ঘোষণা

মনোনয়ন ফরম নেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর সমালোচকদের জবাব দেন। তিনি বলেন:

"অনেকে বলে আমরা নাকি মেম্বার ইলেকশনেও জিতব না। তাদের বলি, আজ এই কুমিল্লা-৪ আসনের মনোনয়ন ফরম নেওয়ার মাধ্যমে এই আসনটি আমার নিশ্চিত হয়ে গেল।"

এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি সমালোচকদের উদ্দেশ্যে নিজের বিজয় নিয়ে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।


সংকট সমাধানে দায় এড়াচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা: সামান্তা শারমিন

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ২০:১৩:৫৬
সংকট সমাধানে দায় এড়াচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা: সামান্তা শারমিন
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। ছবি : সংগৃহীত

'জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫' জারির মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি দীর্ঘমেয়াদি সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির বা এনসিপি সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। তিনি অভিযোগ করেছেন, সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর সন্ধ্যার পর তিনি এসব মন্তব্য করেন।

জুলাই সনদ আদেশ ঘোষণার পর সামান্তা শারমিন তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেন:

"জুলাই সনদ আদেশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি সংকট ফেলে দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক দলের উচিত, জনগণের স্বার্থ মাথায় রেখে কাজ করা। সরকার ও প্রধান উপদেষ্টা দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।"

একই দিনে সরকার 'জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫' জারি করে।

বৃহস্পতিবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।

এর আগে রাষ্ট্রপতি মো সাহাবুদ্দিন আদেশে স্বাক্ষর করেন এবং উপদেষ্টামণ্ডলীর সভায় প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এই আদেশের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কারের প্রস্তাবগুলো এখন গণভোটে তোলা হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যস্থতায় রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত করা সংস্কার প্রস্তাবগুলোর ওপর জনগণের মতামত নেওয়া হবে এই গণভোটের মাধ্যমে।

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে দুটি বিকল্প সুপারিশ জমা দেয়। এর আগে গত ১৭ অক্টোবর বিএনপি, জামায়াতসহ ২৪টি রাজনৈতিক দল বহুল প্রত্যাশিত জুলাই জাতীয় সনদে সই করে।


জামায়াতের বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া: গণভোটের আগে কি আসছে নতুন সংকট?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ১৮:১৮:০১
জামায়াতের বিস্ফোরক প্রতিক্রিয়া: গণভোটের আগে কি আসছে নতুন সংকট?

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই গণভোট আয়োজনের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে যে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে যে ঘোষণা দিয়েছেন, জামায়াতের মতে তা জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ এবং চলমান সংকটকে আরও জটিল করতে পারে।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর মগবাজারে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জনগণ একটি সমস্যাহীন, স্বচ্ছ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আশায় ছিল। কিন্তু একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের ঘোষণা সেই সংকটকে অমীমাংসিত রেখে দিয়েছে।

গোলাম পরওয়ার অভিযোগ করেন, প্রধান উপদেষ্টা জনগণের অভিপ্রায় ও গণদাবিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেননি। তিনি বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি, নভেম্বরে গণভোট আয়োজন এবং সার্বিক সংস্কার নিশ্চিত করার দাবিতে আট দল যে যৌথ আন্দোলন চালিয়ে আসছে, সে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আজকের ভাষণে সংকট সমাধানের বদলে নতুন প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

জামায়াত নেতা জানান, সন্ধ্যায় দলের নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আরও বিস্তৃত আলোচনা হবে এবং এরপর আনুষ্ঠানিক অবস্থান ও করণীয় ঘোষণা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে আন্দোলনরত আট দলের শরিকদেরও নিজ নিজ প্ল্যাটফর্মে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে। ১৬ নভেম্বর আট দল যৌথ বৈঠকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।

গোলাম পরওয়ারের মতে, গণভোটের মূল উদ্দেশ্য সংস্কার-সম্পর্কিত সিদ্ধান্তে জনগণের সুস্পষ্ট মতামত নেওয়া। কিন্তু ভোটাররা কোন কোন প্রস্তাবের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দেবেন, তার স্পষ্ট ধারণা না থাকলে সেই গণভোটের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। তিনি বলেন, ভোটারদের প্রথমে জানতে হবে কোন সংস্কার প্রস্তাব এসেছে, কী পরিবর্তন হবে এবং কেন তাদের ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ ভোট দেওয়া উচিত। সেই প্রস্তুতিবিহীন অবস্থায় একই দিনে দুটি ভোট আয়োজন জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করতে পারে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, অতীত নির্বাচনে সহিংসতা ও কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। যদি নির্বাচনের দিন কোন কারণে কয়েকটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত হয়, তবে গণভোটের ফলাফল কীভাবে গণ্য হবে, সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। তাই নির্বাচন ও গণভোট আলাদা দিনে আয়োজনই অধিকতর নিরাপদ এবং যৌক্তিক বলে জামায়াত মনে করে।

তিনি বলেন, “আদালত বা আইনগতভাবে যেন কোনো প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য নির্বাচন-পূর্ব গণভোটই ছিল জাতীয় দাবি। সেই নিরসন হলো না। বরং নতুন একটি প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক সংকট তৈরি হলো।”


রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই বিএনপির জরুরি সভা: কোন সিদ্ধান্ত আসছে আজ রাতে?

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ১৭:৩৯:২৩
রাজনৈতিক অস্থিরতার মাঝেই বিএনপির জরুরি সভা: কোন সিদ্ধান্ত আসছে আজ রাতে?

বিএনপির শীর্ষ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার রাত ৭টায় রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপার্সন কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবীর খান।

দলের নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন তারেক রহমান। দেশের চলমান সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত নতুন জটিলতা, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ও আচরণ, অন্তর্বর্তী সরকারের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ এবং বিরোধী দলগুলোর রাজপথ ও সাংগঠনিক কৌশলসহ গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক কার্যক্রম, মাঠপর্যায়ে নেতাকর্মীদের অবস্থান, গ্রেফতার–নির্যাতন পরিস্থিতি এবং আগামী আন্দোলনপর্বের রূপরেখাও বৈঠকে বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

সভায় বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সব সদস্য উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে এমন জরুরি বৈঠক ডাকা রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আগ্রহ তৈরি করেছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।


প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের উপর সালাহউদ্দিন আহমদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ১৭:২৯:৫৭
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের উপর সালাহউদ্দিন আহমদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন কাঠামো ও পদ্ধতি সম্পর্কে যেসব সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন, তা নিজের স্বাক্ষরকৃত সনদকেই লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তাঁর ভাষায়, ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় যে সনদে অধ্যাপক ইউনূস স্বাক্ষর করেছিলেন এবং যা রাজনৈতিক দলগুলোর দীর্ঘ আলোচনার ভিত্তিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চূড়ান্ত করেছিল, আজকের ঘোষণাগুলো সেই সমঝোতা থেকে এক ধরনের একতরফা সরে যাওয়া।

বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা করেন যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে, সংসদ হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট, এবং দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে ১০০ সদস্যবিশিষ্ট একটি উচ্চকক্ষ গঠন করা হবে। ভবিষ্যতে কোনো সংবিধান সংশোধন করতে হলে এই উচ্চকক্ষের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের অনুমোদন বাধ্যতামূলক হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। কিন্তু বিএনপির মতে, এ ঘোষণার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদানই ঐকমত্য কমিশনের আলোচ্য কাঠামোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

সালাহউদ্দিন আহমদের দাবি, জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর সিস্টেম) প্রশ্নটি কমিশনের আলোচনায় ‘নোট অব ডিসেন্টে’র মাধ্যমে মীমাংসিত হয়েছিল। অর্থাৎ সেখানে স্পষ্ট আপত্তি ও মতবিরোধ নথিভুক্ত ছিল এবং সনদে বিষয়টি বাধ্যতামূলক কোনো নীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি। তাই আজ আবার একই প্রস্তাবকে অপরিবর্তনীয় কাঠামো হিসেবে জাতির সামনে উপস্থাপন করার মধ্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টা কার্যত পূর্বস্বাক্ষরিত সনদের সীমা অতিক্রম করেছেন। বিএনপির মতে, এতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার সূক্ষ্ম ভারসাম্য ও আলোচনার নৈতিক ভিত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আরও গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে প্রধান উপদেষ্টার প্রস্তাবিত ‘সংবিধান সংস্কার পরিষদ’ নিয়ে। সালাহউদ্দিনের দাবি, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার কোনো পর্যায়েই এ ধরনের নতুন সাংবিধানিক বডির প্রস্তাব আলোচনায় ওঠেনি; এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা এবং তা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি ব্যতিরেকে উপস্থাপিত। তাঁর মতে, একটি অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে এমন নতুন সাংবিধানিক কাঠামো ঘোষণা করাও প্রশ্নবিদ্ধ, কারণ কমিশনে এটা কখনো আলোচ্য ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হয়নি।

বিএনপির গণতান্ত্রিক আলাপ-আলোচনার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘদিনের প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ জুলাই সনদ বাস্তবায়নকে আরও বিতর্কিত করে তুলেছে এবং রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক আস্থার সংকটকে বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি জানান, দলটি আজ রাতে স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করবে এবং আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করবে।

বিএনপির এই অভিযোগ রাজনৈতিক বাস্তবতায় একটি নতুন প্রশ্ন সামনে এনেছে—জুলাই জাতীয় সনদ কি রাজনৈতিক সমঝোতার চুক্তি, নাকি এটি প্রধান উপদেষ্টার ইচ্ছানির্ভর ব্যাখ্যার ওপর নির্ভরশীল? এবং এই প্রশ্নটাই বর্তমান রাজনৈতিক উত্তাপকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে।


মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ: এনসিপি আহ্বায়ক কোন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ আসন থেকে লড়বেন

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ১৩ ০৯:৩৮:৩৫
মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ: এনসিপি আহ্বায়ক কোন ‘গুরুত্বপূর্ণ’ আসন থেকে লড়বেন
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। ছবি : সংগৃহীত

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মনোনয়নপ্রত্যাশী ও নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়। মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কর্মী সমর্থকদের নিয়ে মিছিলসহকারে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কার্যালয়ে আসছেন। এরই মধ্যে এনসিপি থেকে ঢাকা-১৮ আসনে নির্বাচন করতে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।

বুধবার (১২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী প্রধান কার্যালয় থেকে তিনি এই ফরম সংগ্রহ করেন।

প্রার্থী তালিকা ও আসন পরিচিতি

ঢাকা-১৮ আসন ঢাকা-১৮ আসনটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১, ১৭, ৪৩, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৪৭, ৪৮, ৪৯, ৫০, ৫১, ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড এবং বিমানবন্দর এলাকা (বৃহত্তর উত্তরার ৬টি থানা) নিয়ে গঠিত।

প্রতিদ্বন্দ্বিতা এ আসনে বিএনপি এখনও কাউকে মনোনয়ন দেয়নি, তবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক।

অন্যান্য আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা

এনসিপি থেকে অন্যান্য আসনে নির্বাচন করতে যারা ফরম কিনেছেন, তারা হলেন:

আব্দুল হান্নান মাসউদ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক, নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসন।

হাসনাত আব্দুল্লাহ দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক, কুমিল্লা-৪ (দেবীদ্বার) আসন।

সারজিস আলম উত্তরাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক, পঞ্চগড়-১ (সদর, তেঁতুলিয়া ও আটোয়ারী) আসন।

আরিফুল ইসলাম আদিব সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা-১৪ (ঢাকা উত্তর সিটি ও সাভার উপজেলার একাংশ) আসন।

সারোয়ার তুষার যুগ্ম আহ্বায়ক, নরসিংদী-২ (সদরের একাংশ ও পলাশ) আসন।

ডা. তাসনিম জারা সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব, ঢাকা-৯ (খিলগাঁও-সবুজবাগ) আসন।

সাইফ মোস্তাফিজ যুগ্ম সদস্য সচিব, সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসন।

জয়নাল আবেদীন শিশির কুমিল্লা-১০ (নাঙ্গলকোট, লালমাই) আসন।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

উড়ন্ত সরীসৃপের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে ধারণা বদল ৩২০টি ফাইটোলিথ পেলেন গবেষকরা

ডাইনোসরের যুগে আকাশে রাজত্ব করত বিশাল আকৃতির উড়ন্ত সরীসৃপ 'টেরাসর'। এই রহস্যময় প্রাণীদের বিভিন্ন প্রজাতি আবিষ্কৃত হলেও তাদের খাদ্যাভ্যাস নিয়ে... বিস্তারিত