বিশেষ প্রতিবেদন
৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়া: গণতন্ত্রের আপোষহীন কণ্ঠস্বর ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন কিছু নাম আছে যাদের জীবন ও কর্ম দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে। বেগম খালেদা জিয়া সেই তালিকার শীর্ষে। আজ তাঁর ৮১তম জন্মদিন। চার দশকের বেশি সময় ধরে তিনি ক্ষমতা, বিরোধিতা, আন্দোলন, কারাবাস এবং গৃহবন্দিত্বের ভেতর দিয়ে গেছেন। প্রতিটি অধ্যায় তাঁকে যেমন দৃঢ় করেছে, তেমনি রাজনৈতিক বিরোধিতার কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।
১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের পর বিএনপির নেতৃত্বে আসেন খালেদা জিয়া। তখন তিনি রাজনীতিতে নতুন ছিলেন, কিন্তু সেনাশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে তিনি দ্রুত বিরোধী শক্তির অন্যতম প্রধান মুখে পরিণত হন। ১৯৮০-এর দশকে তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকে এবং ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রাখে, যা শেষ পর্যন্ত এরশাদের পতন ঘটায়। তাঁর নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য ছিল আপোষহীনতা, সরাসরি আন্দোলনে অংশগ্রহণ এবং বিরোধী শিবিরকে ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষমতা।
১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি জয়লাভ করলে তিনি বাংলাদেশের প্রথম গনতান্ত্রীকভাবে জনগনের ভোটে নির্বাচিত নারী প্রধানমন্ত্রী হন। দীর্ঘ ১৬ বছরের রাষ্ট্রপতি শাসনের অবসান ঘটিয়ে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছিল তাঁর সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন। সংবিধানের দ্বাদশ সংশোধনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ফিরিয়ে দিয়ে জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্বের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়। তাঁর প্রথম মেয়াদে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও বিনামূল্যে চালু, নারীশিক্ষায় বিশেষ প্রণোদনা, ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে সহায়তা এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের মতো উদ্যোগগুলো দীর্ঘমেয়াদে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। একই সঙ্গে, তিনি সার্কসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সক্রিয় ছিলেন এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের নীতি গ্রহণ করেন। যদিও ১৯৯৪ সালে রাজনৈতিক অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়, তিনি ১৯৯৬ সালে বিরোধী দলের দাবিতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন, যা শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে দেয়।
২০০১ সালে বিপুল বিজয়ে ক্ষমতায় ফিরে খালেদা জিয়ার সরকার অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন সম্প্রসারণ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রাথমিক অগ্রগতি সাধন করে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৯/১১-পরবর্তী সময়ে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় তাঁর দৃঢ় অবস্থান প্রশংসিত হয়। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং গ্রামীণ উন্নয়ন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হয়। ২০০৬ সালে মেয়াদ শেষে তিনি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
২০০৭ সালের জানুয়ারিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষাপটে সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে। দুর্নীতির অভিযোগে ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৭ খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। “মাইনাস টু” পরিকল্পনার আওতায় তাঁকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, কারণ কারাগার থেকেও তিনি দলের নেতৃত্বে অবিচল থাকেন। প্রায় এক বছর কারাবাস শেষে তিনি মুক্তি পান।
২০০৯ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর রাজনৈতিক বিরোধিতা দমনে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা ছিল ঢাকার সেনানিবাসে অবস্থিত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতি বিজরিত বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে উচ্ছেদ। এটি ছিল শুধু তাঁর ব্যক্তিগত বাসস্থান নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক ও পারিবারিক স্মৃতিচিহ্ন। উচ্ছেদের পরপরই বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয়, যা বিএনপি সমর্থকদের কাছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও শহীদের স্মৃতি মুছে ফেলার প্রচেষ্টা হিসেবে ধরা পড়ে।
২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হওয়ার পর ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দেন খালেদা জিয়া। তাঁর নেতৃত্বে বিএনপি ৭ দফা প্রস্তাব দেয়, যার মধ্যে ছিল নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনকালীন সংসদ ভেঙে দেওয়া, সেনা মোতায়েন, রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা। কিন্তু এসব প্রস্তাব সরকার প্রত্যাখ্যান করে এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আন্দোলন দমনে সরকারের দমননীতি তীব্র হয়। খালেদা জিয়া বারবার গৃহবন্দী হন, দলের বহু নেতা-কর্মী গ্রেফতার হন, এবং বিএনপির রাজনৈতিক কার্যক্রম সীমিত হয়ে পড়ে।
২০১৮ সালে বহুল আলোচিত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে দণ্ডিত করে কারাগারে পাঠানো হয়। বিএনপি এবং আন্তর্জাতিক মহল এই মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দেয়। কারাগারে থাকাকালীন তাঁর স্বাস্থ্য দ্রুত অবনতি ঘটে। তিনি গুরুতর আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা এবং অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুরোধ করা হলেও সরকার তা অনুমোদন করে না। সীমিত চিকিৎসাসুবিধায় তিনি হাসপাতালে থাকেন, যা দেশ-বিদেশে সমালোচিত হয়। ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারির সময় মানবিক বিবেচনায় দণ্ড স্থগিত করে মুক্তি দেওয়া হলেও শর্ত ছিল তিনি বাসায় থাকবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। কার্যত গুলশানের বাসায় তিনি দীর্ঘ গৃহবন্দী জীবন কাটান, যা তাঁর রাজনৈতিক সক্রিয়তাকে স্থবির করে দেয়।
খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল জনগণের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহিমূলক শাসন। তাঁর প্রস্তাবিত ধারণাগুলো ২০২৩ সালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ৩১ দফা রাষ্ট্রসংস্কার রূপরেখা হিসেবে প্রকাশ করেন। এতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদসীমা, অনুচ্ছেদ ৭০ সংস্কার, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং প্রশাসনিক সংস্কারের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত ছিল। মূলত এই প্রস্তাবই পরবর্তীতে জনমনে রাষ্ট্রসংস্কার আকাঙ্খার সৃষ্টি করে।
২০২৪ সালে রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে খালেদা জিয়ার কারামুক্তি ঘটে। দীর্ঘ কারাবাস ও গৃহবন্দী জীবনের পর জনতার উদ্দেশ্যে ভাষণে তিনি বলেন, “আমরা যে সংগ্রাম করেছি, তা প্রতিহিংসার জন্য নয়। এটি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য, যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হবে।” এই বক্তব্যে তাঁর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও ক্ষমতার রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে জনগণের স্বার্থে কাজ করার অঙ্গীকার ফুটে ওঠে।
৮১ বছরে বেগম খালেদা জিয়ার জীবন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। তিনি সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আপোষহীন লড়াই করেছেন, গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছেন, জাতীয় উন্নয়নে অবদান রেখেছেন এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে বছরের পর বছর কারাবাস ও গৃহবন্দী জীবন কাটিয়েছেন। আজ তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুধু বিএনপির নেতা হিসেবে নয়, বরং গণতন্ত্রের প্রতীক, নারীর সাহসিকতার মডেল এবং রাজনৈতিক দৃঢ়তার উদাহরণ হিসেবে স্মরণ করা হচ্ছে। তাঁর সংগ্রাম ও ত্যাগ প্রমাণ করে, প্রতিকূলতার মুখেও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়ানো সম্ভব, যদি নেতৃত্বে থাকে অদম্য সাহস, দৃঢ় বিশ্বাস এবং জনগণের প্রতি অবিচল দায়বদ্ধতা।
২২ বছর জামায়াত বিএনপির ছায়াতলে থেকেছে: ব্যারিস্টার খোকন
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা ‘পিআর’ পদ্ধতিতে নির্বাচন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে এবং সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হবে। তা না হলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।
রোববার নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়ন বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াত ও পিআর পদ্ধতি
ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, “২২ বছর জামায়াত বিএনপির ছায়াতলে থেকে আন্দোলন করেছে। এখন আওয়ামী লীগ পালিয়ে যাওয়ায় তারা নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি চাচ্ছে।”
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে দলের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে এবং ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিপুল ভোটে নির্বাচিত সরকার গঠন করার জন্য তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
সংগঠনে মূল্যায়নের আশ্বাস
সোনাইমুড়ী ও চাটখিল উপজেলা বিএনপির কমিটিতে অনেক ত্যাগী ও তৃণমূল নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়নি মন্তব্য করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন আশ্বাস দেন, ভবিষ্যতে ত্যাগীদের যথাস্থানে মূল্যায়ন করা হবে।
সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন নুরের খোঁজ নিলেন তারেক রহমান
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় তিনি নুরকে ফোন করে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মো. রাশেদ খান জানান, তারেক রহমান সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুরের সঙ্গে ফোনে কথা বলে তার চিকিৎসা ও বর্তমান অবস্থার খোঁজ নেন এবং তার পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন।
হামলার ঘটনা ও চিকিৎসা
গত ২৯ আগস্ট রাজধানীর বিজয়নগরে জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের মধ্যে সংঘর্ষ হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে নুরুল হক নুর, রাশেদ খানসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। নুরকে প্রথমে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ১৮ দিন চিকিৎসা শেষে তিনি বাসায় ফেরেন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ২২ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভারত শুধু বড় দাদা না হয়ে বন্ধু হোক: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে দিল্লি নিজেই ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করেছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ভারত ভোটারবিহীন প্রতিটি নির্বাচনকে সমর্থন করেছে এবং এই কাজগুলোই ভারত ও বাংলাদেশের উভয়ের ক্ষতি করেছে।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশের একটি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ ও টানাপড়েন
মির্জা ফখরুল বলেন, “রাজনীতি থেকে দূরে সরে গিয়ে যখনই আপনি ষড়যন্ত্রে যাবেন, তখনই আপনার ক্ষতি হয়ে যাবে। তা-ই হয়েছে। আওয়ামী লীগেরও ক্ষতি হয়েছে।” তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগ নিজেরাই এসব করে নিজেদের ক্ষতিটা করেছে, অন্য কাউকে কিছু করতে হয়নি।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চলমান টানাপড়েন কাটিয়ে উঠতে ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, “এটা নির্ভর করবে ভারতের ওপর। ভারত যদি চায় যে বাংলাদেশের সঙ্গে সে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বাড়াবে—শুধু বড় দাদা না হয়ে, বন্ধু হয়ে সমস্যা সমাধান যদি করে কিছু, সেটা হবে।”
তিনি বলেন, “আমরা সব দেশের সঙ্গেই বন্ধুত্ব করতে চাই। আর ভারতের ব্যাপারটা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে আমাদের একটা যোগাযোগ তো ছিল। কিন্তু ভারতের ওপর নির্ভর করবে যে তারা কতদূর বিএনপির সঙ্গে একটা জায়গায় আসবে।”
খুঁজে খুঁজে জামায়াত-শিবির মতাদর্শের কর্মকর্তাদের প্রশাসনে বসানো হয়েছে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, খুঁজে খুঁজে জামায়াত-শিবির মতাদর্শের কর্মকর্তাদের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। গতকাল তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি এই অভিযোগ তোলেন।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তিনি বলেন, “ফ্যাসিবাদের দোসররা প্রশাসনে তো আছেই। এরপর যে সব ছেলেরা সেই বিশেষ ইসলামপন্থি দলটির যারা এক সময়ে ছাত্রজীবনে শিবির করেছেন... তাদের যদি কিং পয়েন্টে আনা হয়, তাহলে এই রাষ্ট্র একটি আর্টিক্যুলেট রাষ্ট্র হবে না।”
সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা
রিজভী বলেন, “এভাবে দল যদি খোঁজখবর নিয়ে এদের কিং পয়েন্টে আনে এবং তারা যদি ভূমিকা রাখতে চান, তাহলে কখনই আপনি একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবেন না। যখনই দলীয় মতাদর্শের ক্যাডারদের আপনি বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করবেন, প্রশাসনই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে দেবে না।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “আজকে আমরা শুনি যে, মন্ত্রিপরিষদ সচিব তিনি জামায়াতের লোক।” তিনি তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে উদ্দেশ করে বলেন, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের মাধ্যমে সাবেক জনপ্রশাসন সচিব (মোখলেসুর রহমান) গোঁড়া থেকেই একজন বিএনপিবিরোধী লোক ছিলেন। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা সাজিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, “ছাত্রদল ব্যাকগ্রাউন্ডের জাকির হোসেনকে চুক্তিভিত্তিক নেওয়া হয়নি। আবদুর রউফকে পদায়ন করে আবার অতিরিক্ত সচিব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তরিকুল ইসলামকে গুরুত্বহীন জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে।”
প্রশাসনের দলীয়করণ ও অস্থিরতার আশঙ্কা
রুহুল কবির রিজভী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বিএনপি যখনই ক্ষমতায় এসেছে, বিসিএস পরীক্ষায় কোনো ধরনের কারচুপি বা দলীয়করণের অভিযোগ ছিল না। তিনি বলেন, “বরং ১৯৭২-৭৫ এর সময়ে বিসিএসকে বিটিএস (বাংলাদেশ তোফায়েল সার্ভিস) বলা হতো। প্রশাসনকে দলীয়করণ করা আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কাজ।”
তিনি পাহাড়ে চলমান অস্থিরতা ও গার্মেন্টসে অশান্তির লক্ষণ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এগুলো কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এসব ঘটনার সঙ্গে কোনো চক্র জড়িত আছে।” তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ওই চক্রের দেশবিরোধী মাস্টার প্ল্যান ব্যর্থ করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
ভুয়া ধর্ষণ’ মন্তব্য করে বিপাকে এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ
খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনাকে ‘ভুয়া ধর্ষণ’ বলে উল্লেখ করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। এই মন্তব্যের জেরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর একমাত্র প্রতিনিধি অলিক মৃ আজ সোমবার সকালে পদত্যাগ করেন। এরপরই হান্নান মাসউদ ফেসবুক পোস্টে দুঃখ প্রকাশ করে সেই মন্তব্য থেকে সরে আসেন এবং ধর্ষণের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
পদত্যাগ ও সমালোচনার মুখে ক্ষমা
অলিক মৃ পদত্যাগের কারণ হিসেবে হান্নান মাসউদের ‘ভুয়া ধর্ষণ’ শব্দচয়নকে মিথ্যাচার উল্লেখ করে এর প্রতিবাদ জানানোর কথা বলেছেন। এই পদত্যাগের ঘোষণার পর হান্নান মাসউদ প্রথম দিকে আরও একটি পোস্ট দেন, যেখানে তিনি ‘ভুয়া ধর্ষণ’ মন্তব্যটিকে পুনরায় উল্লেখ করে ‘ফালতু সুশীলগিরি’ বন্ধ করার আহ্বান জানান। তবে কিছুক্ষণ পরই তিনি সেই পোস্ট মুছে দেন।
পরে দুপুর দুইটার দিকে দেওয়া দ্বিতীয় পোস্টে হান্নান মাসউদ তার অবস্থান স্পষ্ট করে দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি লেখেন:
“গতকাল (রোববার) দ্বীপ হাতিয়ায়... আমি ভুলবশত ও তাৎক্ষণিকভাবে ‘ভুয়া ধর্ষণ’ শব্দটি ব্যবহার করে ফেলি, যা কোনোভাবেই আমার ইন্টেনশন (উদ্দেশ্য) ছিল না। ধর্ষণের মতো গর্হিত অপরাধকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। ধর্ষকের কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এই অনাকাঙ্ক্ষিত শব্দটি ব্যবহার করায় আমি বিব্রত ও দুঃখিত। আশা করি, আমার শুভাকাঙ্ক্ষী, সমর্থক ও সমালোচকেরা এটাকে আমার মুহূর্তের ভুল হিসেবেই বিবেচনা করবেন।”
আন্দোলন ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ
আবদুল হান্নান মাসউদ তার আগের বক্তব্যে খাগড়াছড়ির ঘটনাকে ‘ভারতের শেষ ট্রাম্প কার্ড’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “ভারত আমাদের পার্বত্য অঞ্চল কেড়ে নিতে চায়। একটা ভুয়া ধর্ষণের ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা আমাদের বাঙালি ও পার্বত্য পাহাড়িদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে।”
নতুন পোস্টে তিনি পাহাড় ও সমতলের সব নাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা ‘পরাজিত ও ফ্যাসিবাদী শক্তির সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে ঐক্যবদ্ধ থাকেন’। একই সঙ্গে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারের প্রতি আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের এবং উভয় পক্ষের কথা গুরুত্ব দিয়ে শোনার আহ্বান জানান।
এগুলো কীসের লক্ষণ?: খাগড়াছড়ির ঘটনায় জামায়াত আমিরের উদ্বেগ
গতকাল রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ১৪৪ ধারার মধ্যেই খাগড়াছড়িতে সহিংসতা ও সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পার্বত্য অঞ্চলের সব জাতিগোষ্ঠী, রাজনৈতিক দলের নেতা ও জনগণকে সংযত আচরণের আহ্বান জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
নিহত হওয়া ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের আহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি অবিলম্বে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন।
‘হঠাৎ অস্থিরতার নেপথ্যে কারা?’
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে জামায়াত আমির বলেন, “খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষে অন্তত ৩ জন নিহত হয়েছেন এবং একজন মেজরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও ১৫ জন সদস্য আহত হয়েছেন। এগুলো কীসের লক্ষণ? হঠাৎ করে পাহাড়ে এমন অস্থিরতার নেপথ্যে কারা আছে?”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “অবিলম্বে উপযুক্ত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে এবং তাদের পেছনে কোনো ক্রীড়নক থাকলে তাকেও খুঁজে বের করতে হবে।”
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “খাগড়াছড়ি অখণ্ড বাংলাদেশেরই অংশ। জনগণ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের অনস্বীকার্য দায়িত্ব।” এ বিষয়ে যথাযথ দৃষ্টি দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সাবেক দুই এমপিসহ ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য (এমপি) সহ মোট ১৩ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রোববার রাতে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
গ্রেপ্তার হওয়া সাবেক দুই সংসদ সদস্য হলেন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ আসনের সাবেক এমপি ফয়জুর রহমান বাদল।
সংরক্ষিত নারী আসনের (৩২৪) সাবেক এমপি তামান্না নুসরাত বুবলী।
চীন-উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলগত চিন্তা
চীন ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। রবিবার বেইজিংয়ে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী চো সন-হুইয়ের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই বার্তা দেন। বিশ্লেষকদের মতে, এই মন্তব্য মূলত যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করেই করা হয়েছে।
বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাম্প্রতিক বেইজিং সফরের কয়েক সপ্তাহ পর। ওই সফরে কিম দুই দেশের সম্পর্ক আরও উন্নয়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। বৈঠকে ওয়াং ই বলেন, “চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক বজায় রাখা, সুসংহত করা ও উন্নয়ন করা চীনা সরকারের এক অটল কৌশলগত নীতি।” তিনি আরও যোগ করেন, “চীন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়াতে প্রস্তুত। আমরা সব ধরনের আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করব এবং দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার রক্ষা করব।”
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে গভীর আলোচনা করেছেন এবং পূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ সংবাদ সংস্থা জানায়, বৈঠকে দুই দেশ যৌথ সহযোগিতা, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করার ব্যাপারে একমত হয়েছে।
যদিও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অতীতে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল, বেইজিং ও পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঘনিষ্ঠ হয়েছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে বেইজিংয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজে কিম জং উন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে কূটনৈতিক ঐক্য প্রদর্শন করেন।
বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন পিয়ংইয়ংয়ের জন্য চীন কেবল কূটনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমর্থনেরও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎস। দুই দেশই যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখে। কিম জং উন সম্প্রতি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, যুক্তরাষ্ট্র যদি পিয়ংইয়ংকে তার পারমাণবিক কর্মসূচি পরিত্যাগের চাপ দেওয়া বন্ধ করে, তবে তিনি ওয়াশিংটনের সঙ্গে পুনরায় সংলাপে ফিরতে প্রস্তুত।
উত্তর কোরিয়া দীর্ঘদিন ধরে দাবি করে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের হুমকি মোকাবিলার জন্যই প্রয়োজনীয়। এই প্রেক্ষাপটে চীন-উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়া যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্য কৌশলগত উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
-আলমগীর হোসেন
ভারত আমাদের পার্বত্য অঞ্চলকে কেড়ে নিতে চায়: হান্নান মাসউদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, ভারত শেষ ‘ট্রাম্পকার্ড’ খেলে বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। তিনি অভিযোগ করেন, একটি ভুয়া ধর্ষণের ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা পাহাড়ি-বাঙালিদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নোয়াখালীর হাতিয়ার চানন্দী ইউনিয়নের সাইফুল মার্কেটে জাতীয় নাগরিক পার্টি আয়োজিত ঐক্য ও সংহতির সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তরুণ নেতৃত্ব ও নির্বাচন
আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, “আমরা এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে ছেড়ে দেব না। ১৯৭১ সালে যেমন পাকিস্তানের মোকাবেলা করেছি, এ দেশের মানুষ তেমনি ২০২৫ সালে ভারতকে মোকাবেলা করবে।”
তিনি বলেন, দেশের তরুণ নেতৃত্বকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ যেই পথ দেখিয়েছে, সেই পথেই ইন্দোনেশিয়া ও নেপাল নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর বয়স মাত্র ৩৫ বছর। বাংলাদেশেও ৩৫ বছর বয়সী একজন প্রধানমন্ত্রী হবেন।”
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে হান্নান মাসউদ বলেন, “ভোটের সময় বিভিন্ন অতিথি পাখি আপনাদের কাছে এসে মায়াকান্না করবে। আমি আপনাদের সন্তান, তাই কখনো আপনাদের কাছে ভোট চাইতে আসব না। আপনারা বিপদে-আপদে যাকে কাছে পাবেন, তাকেই ভোট দেবেন।”
পাঠকের মতামত:
- যোগ্যতা যাচাই পরীক্ষা ঘিরে ইসলামী ব্যাংকে বিপুল সংখ্যক কর্মী ছাঁটাই ও ওএসডি
- ২২ বছর জামায়াত বিএনপির ছায়াতলে থেকেছে: ব্যারিস্টার খোকন
- এশিয়া কাপ শেষে গৌতম গম্ভীর: বাংলাদেশের শক্তি-দুর্বলতা নিয়ে স্পষ্ট মতামত
- ঘুম ভাঙলেই অসহ্য মাথা ব্যথা? হতে পারে ৫টি গুরুতর কারণ
- পাকিস্তানে টিটিপি’র হয়ে যুদ্ধে নিহত বাংলাদেশি তরুণ, জানতেন না পরিবারও
- সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন নুরের খোঁজ নিলেন তারেক রহমান
- জুলাই আন্দোলন দমনে পুলিশ সারাদেশে ৩ লাখের বেশি গুলি ছুড়েছিল
- ফাঁস হলো ট্রাম্পের শান্তি পরিকল্পনা: চুক্তি হলে হামাস নেতাদের নিরাপদ প্রস্থান!
- ভারত শুধু বড় দাদা না হয়ে বন্ধু হোক: মির্জা ফখরুল
- চট্টগ্রামে যানজট নিরসনে মনোরেল প্রকল্প, ফিল্ড সার্ভে শুরু
- ‘দুর্নীতিবাজ’ হারুনের বিরুদ্ধে রাজশাহীতে ঠিকাদারদের মানববন্ধন
- আমি শুধু নির্বাচনটাই করেছিলাম, রাজনীতিতে জড়াইনি
- ৪৮তম বিশেষ বিসিএস-এর ২১ চিকিৎসকের মনোনয়ন স্থগিত
- রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের জন্য এডিবি’র ৮৬.৭ মিলিয়ন ডলার সহায়তা
- খুঁজে খুঁজে জামায়াত-শিবির মতাদর্শের কর্মকর্তাদের প্রশাসনে বসানো হয়েছে: রিজভী
- সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্লাস্টার ধসে শ্রমিকের মৃত্যু
- ২০৫০ সালের চাহিদা পূরণে খুলনাকে ১৫ কোটি ডলার দিচ্ছে এডিবি
- ভুয়া ধর্ষণ’ মন্তব্য করে বিপাকে এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদ
- রেকর্ড ভাঙা দামে বিশ্ববাজারে স্বর্ণ
- বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিততে চলেছেন আমিনুল বুলবুল ও নাজমুল ফাহিম
- সাবেক আইনমন্ত্রীর পিএস-এর ১১৪ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ
- টিসিবির তালিকায় যুক্ত হচ্ছে আরও ৫ পণ্য
- সাকিবের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক
- ডিএসইতে সোমবারের লেনদেনের সারসংক্ষেপ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে সোমবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বিজয় সমাবেশে পদদলন: শোকে মুষড়ে পড়েছেন অভিনেতা, ছেড়ে দিলেন খাওয়াদাওয়া
- স্থায়ী বসবাসের নিয়মে কঠোরতা আনছে যুক্তরাজ্য, থাকতে হবে কঠোর শর্ত
- বিশ্বের কাছে আবেদন জানানো ছেড়ে দিয়েছি: গাজাবাসীি
- সাকিবের পোস্টের পর ইলিয়াস হোসাইনের পরামর্শ: ‘সম্পত্তি ক্রোক করেন’
- এগুলো কীসের লক্ষণ?: খাগড়াছড়ির ঘটনায় জামায়াত আমিরের উদ্বেগ
- ৫২ হাজার ৫০০ টন গম নিয়ে রাশিয়ার জাহাজ চট্টগ্রামে
- নেতানিয়াহুর টার্গেট এবার ইরাক
- সাবেক দুই এমপিসহ ১৩ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
- খাগড়াছড়ির ঘটনায় প্রতিবেশী দেশের ইন্ধন রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু করতে যুক্তরাজ্য সহায়তা দেবে: ব্রিটিশ হাইকমিশনার
- বলিউডের শক্তিশালী কণ্ঠস্বর: নারী অধিকার ও পরিবেশ রক্ষায় সোচ্চার তারকারা
- কারাগার থেকে হাসপাতালে, পরদিনই মৃত্যু—শেষ হলো নুরুল মজিদ হুমায়ুনের অধ্যায়
- ইউরোপের পরিবেশ সংকট: অগ্রগতি সত্ত্বেও সতর্কবার্তা ইইএ’র
- মার্কিন মাটিতে সহিংসতার মহামারী: ট্রাম্পের তীব্র নিন্দা
- ফাইনালের পর মাঠে নাটক: ট্রফি প্রদান অনুষ্ঠান বাতিল, দর্শকদের স্লোগানে গর্জে উঠল স্টেডিয়াম
- চীন-উত্তর কোরিয়ার ঘনিষ্ঠতা বাড়ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কৌশলগত চিন্তা
- খাগড়াছড়ি-গুইমারায় সহিংসতা: সেনাবাহিনীর বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ
- ভারত আমাদের পার্বত্য অঞ্চলকে কেড়ে নিতে চায়: হান্নান মাসউদ
- বিয়ে করতে গিয়ে বিপত্তি: ‘প্রথম স্ত্রীর’ হাতে আটক ছাত্রলীগ নেতা
- হুন্ডি প্রতিরোধে সুফল: রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত
- অমর একুশে বইমেলা স্থগিত ঘোষণা
- খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারার মধ্যে সংঘর্ষ, রামসু বাজারে আগুন
- আমার স্ত্রী ঠিক করেন কখন হামলা হবে : নেতানিয়াহু
- থালাপতি বিজয়ের সমাবেশে প্রাণহানির ঘটনায় পুলিশের মামলা
- ডিএসইতে বৃহস্পতিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ‘আমাকে আলাদা করে তুলে ধরার চেষ্টা হয়নি’: ডা. তাসনিম জারা
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- বিএনপি ক্ষমতায় এলে কুমিল্লা বিভাগ প্রতিষ্ঠা করা হবে: ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন
- খাগড়াছড়ি-গুইমারায় সহিংসতা: সেনাবাহিনীর বিস্তারিত বিবৃতি প্রকাশ
- বৃষ্টির দিনে ইন্টারনেটের গতি কমে যায় কেন? সমাধান জেনে নিন
- গাজায় ‘গণহত্যা’ ঠেকাতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্পেনের ‘বড় পদক্ষেপ’
- ডিএসইতে রবিবার লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- ফার্মগেটে ঝটিকা মিছিলের প্রস্তুতিকালে আটক অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী
- অমানবিক! পাকিস্তানে নিজেদের গ্রামেই বিমানবাহিনীর হামলা
- সঞ্চয়পত্রকে ‘লেনদেনযোগ্য’ করার পথে সরকার? আসছে নতুন বাজার
- অঘোষিত সেমিফাইনাল: টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল বাংলাদেশ
- ওয়াজে রাশমিকাকে টেনে বিপাকে মুফতি আমির হামজা
- আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে নির্বাচন চান মির্জা ফখরুল