কেন জামায়াতের হাত ধরল এনসিপি: সংবাদ সম্মেলনে জানালেন নাহিদ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ২০:৪৯:৩৯
কেন জামায়াতের হাত ধরল এনসিপি: সংবাদ সম্মেলনে জানালেন নাহিদ
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে গত কয়েক দিনের সব ধোঁয়াশা কাটিয়ে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগদানের ঘোষণা দিলেন দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন। নাহিদ ইসলাম জানান, দেশের বৃহত্তর স্বার্থে এবং নির্বাচনী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাঁরা জামায়াতসহ ৮ দলীয় জোটের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে জোটের সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০-এ।

সংবাদ সম্মেলনে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা কেবল নির্বাচনেই নয়, বরং আগামী দিনের রাষ্ট্র সংস্কার ও গণভোটে ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে জোটবদ্ধভাবে কাজ করব।’ তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে, আসন সমঝোতার পর জোটের বাইরে এনসিপির আলাদা কোনো প্রার্থী থাকবে না এবং মনোনীত প্রার্থীদের বাইরে বাকি সবাই জোটের প্রার্থীর জয়ের লক্ষ্যে রাজপথে নামবে। তবে কে কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন, সেই তালিকাটি আগামীকাল সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে।

এর আগে আজ বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ১০ দলীয় জোটের ঘোষণা দেন। সেখানে তিনি এলডিপি এবং এনসিপি-কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশ এক কঠিন বাঁকে দাঁড়িয়ে আছে এবং দুর্নীতিমুক্ত ইনসাফ কায়েমের লক্ষ্যেই এই জোট গঠিত হয়েছে। এনসিপি প্রধান নাহিদ ইসলাম জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কয়েক দফা রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এনসিপির এই যোগদান একদিকে যেমন জোটকে শক্তিশালী করবে, অন্যদিকে দলের ভেতরে চলা বিদ্রোহকে আরও উসকে দিতে পারে। ইতোমধ্যে তাজনূভা জাবীন, তাসনিম জারা এবং মনিরা শারমিনের মতো শীর্ষ নেত্রীরা জামায়াত-জোটের বিরোধিতা করে পদত্যাগ করেছেন অথবা স্বতন্ত্র লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। তবুও নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে ১৮৪ জন কেন্দ্রীয় নেতার সমর্থনে গঠিত এই জোট নির্বাচনী মাঠে নিজেদের অস্তিত্ব প্রমাণে কতটা সফল হয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।


নৈতিকতা বিক্রি করে রাজনীতি করব না: এনসিপি নেত্রী

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ২০:১৮:৩৪
নৈতিকতা বিক্রি করে রাজনীতি করব না: এনসিপি নেত্রী
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নির্বাচনী পরিকল্পনায় বড় ধরণের ধস নেমেছে। জামায়াতে ইসলামীর সাথে ৩০টি আসনের সমঝোতা নিয়ে দলের ভেতরে চলমান বিদ্রোহের অংশ হিসেবে এবার নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের মনোনীত প্রার্থী মনিরা শারমিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে এক আবেগঘন ও কড়া বার্তার মাধ্যমে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। মনিরা স্পষ্ট করেছেন যে, দল তার মৌলিক অবস্থান পরিবর্তন করায় তিনি আর এই ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নন।

মনিরা শারমিন তাঁর পোস্টে লিখেন, এনসিপি গঠিত হয়েছিল গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী একটি স্বতন্ত্র ও মধ্যপন্থী রাজনৈতিক ভরসাস্থল হিসেবে। ৩শ আসনে একক নির্বাচনের কথা বলে তাঁকে মনোনয়ন দেওয়া হলেও পর্দার আড়ালে জামায়াতের সাথে আসন ভাগাভাগির বিষয়টি তাঁর কাছে গোপন রাখা হয়েছিল। তিনি উল্লেখ করেন, “দলের প্রতি আমার কমিটমেন্টের চেয়ে গণঅভ্যুত্থান ও দেশের মানুষের প্রতি কমিটমেন্ট এখন অনেক বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি ক্ষমতার লোভে নিজের নৈতিকতা বিক্রি করতে পারব না।” যদিও তিনি এখনই দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেননি, তবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একগুঁয়েমি সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন।

এনসিপির নওগাঁ জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান মাহবুব আল হাসান সোহাগ মনিরা শারমিনের এই সিদ্ধান্তের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ব্যক্তিগত ও আদর্শিক কারণে মনিরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। এর আগে দলের হেভিওয়েট নেত্রী ডা. তাসনিম জারা ও তাজনূভা জাবীনও একই কারণে দল ও নির্বাচন থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছেন। এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির মোট ২১৬ জন সদস্যের মধ্যে একটি বড় অংশ এই জোটের বিরুদ্ধে থাকলেও শীর্ষ নেতৃত্বের অনড় অবস্থানে দলের ভবিষ্যৎ এখন খাদের কিনারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণ ও মেধাবীদের নিয়ে গঠিত এই দলটির ভেতরে ‘আদর্শ বনাম কৌশল’ এর এই লড়াই শেষ পর্যন্ত এনসিপিকে বড় ধরণের ভাঙনের দিকে নিয়ে যেতে পারে। বিশেষ করে জামায়াতের মতো একটি ধর্মভিত্তিক দলের সাথে এনসিপির জোটবদ্ধ হওয়াকে সাধারণ ছাত্র-জনতা এবং দলের তৃণমূল কর্মীরা সহজভাবে গ্রহণ করতে পারছে না। মনিরা শারমিনের এই ঘোষণা নওগাঁর নির্বাচনী মাঠে এনসিপির অস্তিত্বকে সংকটে ফেলে দিল।


লড়াইয়ের আগেই ময়দান ছাড়লেন আন্দালিভ পার্থ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৮:৫১:৫৪
লড়াইয়ের আগেই ময়দান ছাড়লেন আন্দালিভ পার্থ
ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর গুলশান, বনানী ও ক্যান্টনমেন্ট এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সবচেয়ে বড় চমক দেখাল বিএনপি। এই আসন থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে তাঁর পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের পরপরই এই আসন থেকে দীর্ঘদিনের মিত্র ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। পার্থ জানিয়েছেন, তারেক রহমানের মতো বড় নেতার প্রতি সম্মান জানাতেই তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং ইতোমধ্যে নিজের পৈতৃক আসন ভোলা-১ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

প্রাথমিকভাবে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে বিএনপি এই আসনটি আন্দালিভ রহমান পার্থকে ছেড়ে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। পার্থ নিজেও বেশ কিছুদিন ধরে এই এলাকায় ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে আসছিলেন। তবে আজ রোববার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলে সব জল্পনার অবসান ঘটে। পার্থ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, “ঢাকা-১৭ আসনের জন্য তারেক ভাই-ই সেরা প্রার্থী। তাঁর সম্মানে আমি এই আসন থেকে ফরম সংগ্রহ করিনি।”

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তারেক রহমানের এই আসনে প্রার্থী হওয়া বিএনপির নির্বাচনী কৌশলের একটি বড় অংশ। দলের শীর্ষ নেতা সরাসরি ঢাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে নির্বাচন করলে সারা দেশের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে। অন্যদিকে, আন্দালিভ রহমান পার্থের এই সরে দাঁড়ানোকে জোটের সংহতির একটি বড় উদাহরণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি ভোলা-১ আসন থেকে লড়াই করার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এখন ঢাকা-১৭ আসনটি পুরোপুরি তারেক রহমানের জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল।

তারেক রহমানের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের সময় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কেবল ঢাকা-১৭ নয়, তারেক রহমান আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ আসন থেকে নির্বাচন করতে পারেন। তবে রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রের এই আসনে তাঁর লড়াই জাতীয় রাজনীতিতে একটি বিশেষ মাত্রা যোগ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেন এনসিপি নেতা আখতার

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৮:৪৫:২৪
আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেন এনসিপি নেতা আখতার
ছবি: কালবেলা

রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা হত্যাচেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার পৃথক দুটি মামলায় জামিন পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আওলাদ হোসাইন মোহাম্মদ জুনায়েদ এবং জশিতা ইসলামের পৃথক দুটি আদালত এই জামিন আদেশ দেন। এর আগে সকালে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন প্রার্থনা করেছিলেন। তাঁর আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, আদালত পৃথক দুই মামলায় মোট এক হাজার পাঁচশত টাকার মুচলেকায় এই জামিন মঞ্জুর করেছেন।

আখতার হোসেনের বিরুদ্ধে এই মামলাগুলো করা হয়েছিল ২০২১ সালে। তখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের প্রতিবাদে শাহবাগ এলাকায় আন্দোলন এবং পবিত্র রমজান মাসে দুস্থদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণের সময় তাঁকে আটক করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও দাঙ্গার অভিযোগে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। এনসিপি নেতা আখতার হোসেন আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে মোট ৬টি মামলা করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪টি মামলা থেকে তিনি আগেই অব্যাহতি পেয়েছেন এবং আজকের দুই মামলায় জামিন পাওয়ার মাধ্যমে তিনি বর্তমানে সব মামলায় মুক্ত অবস্থায় রয়েছেন।

আইনজীবীদের দাবি, মূলত রাজনৈতিক কণ্ঠরোধ করার লক্ষ্যেই বিগত সরকার এই কাল্পনিক ও হয়রানিমূলক মামলাগুলো করেছিল। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে নতুন রাজনৈতিক আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় এবং বিচার বিভাগে স্বচ্ছতা ফেরায় তিনি আজ ন্যায়বিচার পেয়েছেন। আখতার হোসেনের এই জামিন পাওয়ার খবরটি এনসিপি এবং ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীদের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে। বর্তমানে তিনি জামায়াত নেতৃত্বাধীন ১০ দলীয় জোটের নির্বাচনী দরকষাকষি এবং দলের অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁর রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে আর কোনো আইনি বাধার সম্মুখীন হবেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।


শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের হুংকার: অন্তর্বর্তী সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৮:৩৮:৩৯
শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের হুংকার: অন্তর্বর্তী সরকারকে চরম হুঁশিয়ারি
বক্তব্য দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর শাহবাগ মোড় আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে ফের ছাত্র-জনতার দখলে চলে গেছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদির খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারের দাবিতে এই ‘সর্বাত্মক অবরোধ’ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। দুপুর ১টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের নেতাকর্মীরা শাহবাগে অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ২টার দিকে রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিশাল মিছিল নিয়ে শাহবাগে এসে আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

অবরোধ চলাকালে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে লক্ষ্য করে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ক্ষমতার মোহ করি না। যদি ক্ষমতার চিন্তা করতাম, তবে শহীদ হাদির জানাজার ময়দান থেকেই চূড়ান্ত ঘোষণা দিয়ে দিতাম। সরকার আমাদের ধৈর্যকে দুর্বলতা ভাববেন না। আগামীকাল যদি আমরা নতুন কোনো ঘোষণা দিই, তবে আপনাদের আর পেছনে ফেরার পথ থাকবে না।’ জাবের আরও অভিযোগ করেন যে, একটি চক্র আন্দোলনের ভেতরে ঢুকে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু সাধারণ ছাত্র-জনতা কেবল ইনকিলাব মঞ্চের নেতৃত্বের নির্দেশেই রাজপথে অটল থাকবে।

আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়কে ‘শহীদ হাদি চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা করেছেন এবং সেখানে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে—দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন, স্বরাষ্ট্র ও আইন উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং পলাতক খুনিদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা। অবরোধের ফলে সায়েন্স ল্যাব, ফার্মগেট এবং মৎস্য ভবন অভিমুখী সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। কেবল অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি রোগী বহনকারী যানবাহনগুলোকে চলাচলের সুযোগ দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শাহবাগ এলাকায় বিপুল পরিমাণ পুলিশ ও সেনাসদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিকেলে ডিএমপির পক্ষ থেকে খুনিদের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করার পর আন্দোলনকারীদের মধ্যে ক্ষোভ আরও ছড়িয়ে পড়ে। ইনকিলাব মঞ্চের নেতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার না করা হবে এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু না হবে, ততক্ষণ তাঁরা শাহবাগ ছাড়বেন না।


নির্বাচনের আগে নয়া মেরুকরণ: জামায়াতের জোটের পরিধি বেড়ে হলো ১০

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৮:৩৩:০৩
নির্বাচনের আগে নয়া মেরুকরণ: জামায়াতের জোটের পরিধি বেড়ে হলো ১০
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্বাচনের আগে এক অভাবনীয় মেরুকরণ প্রত্যক্ষ করল দেশবাসী। দীর্ঘদিনের মিত্র বিএনপিকে ছেড়ে কর্নেল (অব.) অলি আহমদের লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) এবং জুলাই বিপ্লবের অন্যতম কারিগরদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আনুষ্ঠানিকভাবে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়েছে। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান এই ১০ দলীয় জোটের ঘোষণা দেন। এতে আগের আটটি দলের সঙ্গে নতুন এই দুই শক্তি যুক্ত হওয়ায় রাজপথ ও ভোটের মাঠে জামায়াত-জোটের অবস্থান আরও সুসংহত হলো।

সংবাদ সম্মেলনে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং রাষ্ট্র সংস্কারের অঙ্গীকার নিয়ে আমরা আজ থেকে এক হয়েছি।’ এলডিপির সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ তাঁর বক্তব্যে বিএনপির প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আসন ভাগাভাগি এবং যথাযথ সম্মান না পাওয়ার কারণেই তিনি নতুন এই প্ল্যাটফর্মে এসেছেন। অন্যদিকে, এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন জানিয়েছেন, জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন এবং নতুন রাজনৈতিক কাঠামো গড়ার লক্ষ্যেই তাঁরা জামায়াতের সঙ্গে এই নির্বাচনী সমঝোতায় পৌঁছেছেন। তবে এনসিপির ভেতরে জামায়াত-জোট নিয়ে ব্যাপক অভ্যন্তরীণ বিরোধের মধ্যেই এই সিদ্ধান্তটি চূড়ান্ত করা হলো।

নতুন ১০ দলীয় জোটের পূর্ণাঙ্গ তালিকা: ১. বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ২. লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) ৩. জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ৪. ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৫. বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ৬. বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ৭. খেলাফত মজলিস ৮. নেজামে ইসলাম পার্টি ৯. জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ১০. বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি (বিডিপি)

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এলডিপি ও এনসিপির এই যোগদান ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের সমীকরণ সম্পূর্ণ বদলে দিতে পারে। বিশেষ করে তরুণ ভোটব্যাংক এবং অভিজ্ঞ অলি আহমদের কৌশল জামায়াতকে নির্বাচনী দরকষাকষিতে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে। তবে এনসিপির মতো একটি ‘মধ্যপন্থী’ ও ‘প্রগতিশীল’ দাবিদার দল কেন জামায়াতের মতো ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে জোট বাঁধল, তা নিয়ে জনমনে এবং দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এই জোটের ফলে ঢাকার রাজপথে ক্ষমতার লড়াই এখন আরও তীব্র হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।


কোরআন ও সুন্নাহই হবে আইনের ভিত্তি: মির্জা ফখরুল

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৬:২৪:৪৮
কোরআন ও সুন্নাহই হবে আইনের ভিত্তি: মির্জা ফখরুল
ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দলকে ঘিরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, বাংলাদেশের জনসংখ্যার প্রায় ৯৫ শতাংশ মুসলমান হওয়ায় বিএনপি দৃঢ়ভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কোরআন ও সুন্নাহর পরিপন্থী কোনো আইন প্রণয়ন করা হবে না।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার সালান্দর ইউনিয়নে মানব কল্যাণ পরিষদ প্রাঙ্গণে আলেম–ওলামাদের সঙ্গে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণকে সময়োপযোগী আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় বিভেদ নয়, ঐক্যই দেশকে নিরাপদ রাখবে।

মির্জা ফখরুল আরও জানান, দেশ এক সংকটময় পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। পর্দার আড়াল থেকে কিছু গোষ্ঠী অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিভক্তি তৈরি হলে তার সুযোগ নেবে দেশবিরোধী শক্তি।

নির্বাচন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আসন্ন নির্বাচন ব্যর্থ করার নানা চক্রান্ত চলছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই অপচেষ্টা রুখে দেওয়াই বিএনপির প্রধান লক্ষ্য। ব্যক্তিগত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, এটি তার জীবনের শেষ নির্বাচন হতে পারে তাই জনগণের সহযোগিতা ও সমর্থন একান্ত প্রয়োজন।

এ সময় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া–এর প্রসঙ্গ তুলে বলেন, দীর্ঘ ছয় বছর কারাবন্দি থাকার পর তিনি মুক্ত হলেও বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার দ্রুত সুস্থতার জন্য সবার দোয়া কামনা করেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় জেলা বিএনপির সভাপতি মির্জা ফয়সল আমিন, সাধারণ সম্পাদক পয়গাম আলীসহ জেলার বিভিন্ন আলেম–ওলামা, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব এবং স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভাটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় বলে আয়োজকরা জানান।

-শরিফুল


টাঙ্গাইল-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত, জমা পড়ল মনোনয়ন

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৬:১৯:২১
টাঙ্গাইল-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত, জমা পড়ল মনোনয়ন
ছবি: সংগৃহীত

ঘাটাইল উপজেলা নিয়ে গঠিত টাঙ্গাইল–৩ সংসদীয় আসনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তাদের নির্বাচনী তৎপরতা জোরদার করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হক নাসির দলীয় প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

রবিবার (আজ) দুপুরে তিনি ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ, অঙ্গসংগঠনের কর্মী এবং বিপুলসংখ্যক সমর্থক উপস্থিত ছিলেন, যা নির্বাচনী মাঠে দলটির সাংগঠনিক শক্তির বহিঃপ্রকাশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল হক নাসির বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যেই বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত জনগণের কণ্ঠস্বর সংসদে তুলে ধরতে তিনি ঘাটাইলবাসীর দোয়া, সমর্থন ও সক্রিয় সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

স্থানীয় দলীয় সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইল–৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর থেকেই ঘাটাইল উপজেলা জুড়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও সাংগঠনিক কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।

-রফিক


তাসনিম জারার পর এবার তাজনূভা: এনসিপিতে বিদ্রোহের আগুন থামছেই না

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১৩:৫৮:৩১
তাসনিম জারার পর এবার তাজনূভা: এনসিপিতে বিদ্রোহের আগুন থামছেই না
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ অসন্তোষ এবার প্রকাশ্য বিচ্ছেদে রূপ নিয়েছে। দলের সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারার পদত্যাগের রেশ কাটতে না কাটতেই আজ রোববার দুপুরে দল ছাড়ার ঘোষণা দিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক তাজনূভা জাবীন। ঢাকা-১৭ আসনের এই মনোনীত প্রার্থী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পদত্যাগের কথা জানিয়ে বলেন, দলের বর্তমান রাজনৈতিক গতিপথ ও জামায়াতের সাথে সমঝোতার সিদ্ধান্তের সাথে তিনি একমত হতে পারছেন না। নির্বাচনী ডামাডোলের মাঝে দুই প্রভাবশালী নারী নেত্রীর প্রস্থান এনসিপির সাংগঠনিক শক্তিকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।

অন্যদিকে, এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্ব জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট গঠনের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে রয়েছে। আজ বিকেলের মধ্যেই এই আলোচিত জোটের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। এনসিপি সূত্রমতে, দলের ২১৬ জন কেন্দ্রীয় নেতার মধ্যে ১৮৪ জনই জামায়াতের সাথে সমঝোতার পক্ষে মত দিয়েছেন। তবে ৩০ জন কেন্দ্রীয় সদস্য এই জোটের বিরুদ্ধে এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দিয়ে তাঁদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। তা সত্ত্বেও দলের মূল অঙ্গসংগঠনগুলো—জাতীয় যুব শক্তি, শ্রমিক শক্তি এবং ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র শক্তিকে বর্তমান নেতৃত্বের পক্ষেই শক্ত অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

জানা গেছে, জামায়াত-এনসিপির এই জোটে ‘আমার বাংলাদেশ পার্টি’ (এবি পার্টি) সহ আরও কয়েকটি ছোট দল যুক্ত হতে পারে। এনসিপি এই বৃহত্তর সংস্কার জোটের অধীনে অন্তত ৫০টি আসন দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ৪০টি আসনে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সমঝোতা হলে এনসিপি নিজেদের ১২৫ জন প্রাথমিক প্রার্থীর তালিকা থেকে সরিয়ে এনে কেবল চূড়ান্ত ৪০টি আসনেই লড়াই করবে এবং বাকি আসনগুলোতে জোটের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবে। দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, এককভাবে লড়াই করার চেয়ে বৃহত্তর জোটের অংশ হওয়া নির্বাচনী কৌশলের দিক থেকে বেশি ফলপ্রসূ হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির এই ভাঙন এবং নতুন জোটের সমীকরণ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এক নতুন মাত্রা যোগ করবে। একদিকে আদর্শিক কারণে পদত্যাগ এবং অন্যদিকে নির্বাচনী সফলতার জন্য কৌশলগত ঐক্য—এই দুইয়ের লড়াইয়ে এনসিপি শেষ পর্যন্ত কতটা সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে দলের ভেতরের এই বিদ্রোহ নির্বাচনী প্রচারণায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।


জামায়াত নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়: এনসিপি নেত্রী সামান্তা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ১১:১৯:০১
জামায়াত নির্ভরযোগ্য মিত্র নয়: এনসিপি নেত্রী সামান্তা
সামান্তা শারমিন- ফাইল ছবি

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাথে জোটবদ্ধ হওয়া নিয়ে যে অস্থিরতা চলছে, তাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। আজ রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে তিনি জামায়াতকে ‘অনির্ভরযোগ্য মিত্র’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তাঁর মতে, জামায়াতের রাজনৈতিক দর্শন ও অবস্থানের সঙ্গে সমঝোতা করলে এনসিপিকে ভবিষ্যতে কঠিন মাশুল দিতে হবে। সামান্তার এই অবস্থান মূলত দলের গত দেড় বছরের আদর্শিক লড়াইয়েরই প্রতিফলন বলে তিনি দাবি করেছেন।

সামান্তা শারমিন তাঁর পোস্টে উল্লেখ করেন, এনসিপি গঠিত হয়েছিল বিচার, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ বা দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে। অথচ জামায়াত নিম্নকক্ষে পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) ব্যবস্থার আওয়াজ তুলে সংস্কার প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করার চেষ্টা করছে। তিনি মনে করিয়ে দেন যে, এনসিপির আহ্বায়ক নিজেই একসময় বলেছিলেন—যারা সংস্কারের পক্ষে নয়, তাদের সঙ্গে জোট সম্ভব নয়। এই নীতির ওপর ভিত্তি করেই সারা দেশ থেকে প্রার্থীদের আহ্বান করে ৩০০ আসনে এককভাবে লড়ার ঘোষণা দিয়েছিল এনসিপি। এখন সেই অবস্থান থেকে সরে আসা মানেই সাধারণ মানুষ ও প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা।

এনসিপির এই প্রভাবশালী নেত্রী আরও বলেন, জামায়াতের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করার অর্থ এই নয় যে তিনি বিএনপির পক্ষে। বরং বিএনপি কিংবা জামায়াত—যেকোনোটির সঙ্গে জোট গঠন করা এনসিপির মৌলিক সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক পলিসি থেকে বিচ্যুত হওয়া। তিনি নিজেকে এনসিপির আদি আদর্শের ‘সৈনিক’ দাবি করে বলেন, একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচয় টিকিয়ে রাখা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জামায়াতের জুলাইয়ের স্পিরিট এবং বাংলাদেশ নিয়ে পরিকল্পনার বিষয়ে একমত হওয়ার যে দাবি, তার সঙ্গে এনসিপির রাষ্ট্রকল্পের মৌলিক পার্থক্য রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

সামান্তা শারমিনের এই প্রকাশ্য বিদ্রোহের ফলে এনসিপির শীর্ষ নেতৃত্বে ফাটল এখন স্পষ্ট। গতকাল দলের ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতা জামায়াত-জোটের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেওয়ার পর সামান্তার এই কঠোর বার্তা দলটিকে বড় ধরনের ভাঙনের মুখে ঠেলে দিতে পারে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণ নেতৃত্বের এই অংশটি যদি জোটের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, তবে নির্বাচনী ময়দানে এনসিপির সাংগঠনিক কাঠামো তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ব্যক্তিগত দায় বনাম প্রাতিষ্ঠানিক দায়: দায়মুক্তির এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের ঘটনা কাগজে পড়লে প্রথমে মনে হয় এটা যেন কোনো যুদ্ধের খবর। এক তরুণকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে হাত–পা প্রায়... বিস্তারিত