বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১৮:২৩:০৫
বাবার কবরের সামনে দাঁড়িয়ে নীরবে কেঁদেছেন তারেক রহমান

দীর্ঘ সতেরো বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে দেশে ফেরার পরদিনই আবেগঘন মুহূর্তের সাক্ষী হলো রাজধানীর জিয়া উদ্যান। দেড় যুগের বেশি সময় পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান–এর সমাধির সামনে দাঁড়ালেন তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জলভেজা চোখে বাবার রুহের মাগফিরাত কামনা করে দীর্ঘ সময় নীরবে মোনাজাতে মগ্ন থাকেন তিনি।

লন্ডনে টানা ১৭ বছর নির্বাসনে থাকার পর দেশে প্রত্যাবর্তনের পর শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জিয়া উদ্যানে যান। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–এর কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতারা। প্রথমে শহীদ রাষ্ট্রপতির কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়, এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া ও মোনাজাত।

মোনাজাতে শুরুতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দ্রুত সুস্থতা এবং ২০২৪ সালের গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। এরপর বাবার কবরের সামনে একা দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে দোয়া করেন তারেক রহমান। কিছু সময় তিনি নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকেন, এ সময় বারবার চোখ মুছতে দেখা যায় তাকে।

১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার সময় তারেক রহমানের বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর। পরবর্তী জীবনে তিনি একাধিক ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক ট্র্যাজেডির মুখোমুখি হন। ২০১৫ সালে নির্বাসনে থাকা অবস্থায় ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু, ২০০৭ সালে জরুরি অবস্থার সময় গ্রেপ্তার, কারাভোগ এবং পরবর্তী সময়ে বিদেশে চলে যেতে বাধ্য হওয়া তার জীবনের গভীর ক্ষতচিহ্ন হয়ে আছে।

শুক্রবারের এই কর্মসূচিকে ঘিরে জিয়া উদ্যানে বিপুলসংখ্যক নেতা–কর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়। গুলশান থেকে কড়া নিরাপত্তায় বুলেটপ্রুফ বাসে করে জিয়া উদ্যানে পৌঁছান তারেক রহমান। পথজুড়ে বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে নেতা–কর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন তিনি।

বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বাস থেকে নেমে হেঁটে বাবার কবরে যান তারেক রহমান। অতিরিক্ত ভিড় সামাল দিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেশ বেগ পেতে হয়। প্রায় দশ মিনিট সেখানে অবস্থানের পর তিনি সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে রওনা হন।

দলীয় সূত্র জানায়, আগামী দিনগুলোতে তারেক রহমানের কর্মসূচি আরও বিস্তৃত হবে। তিনি নির্বাচন কমিশনে ভোটার হিসেবে নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করবেন এবং জুলাই আন্দোলনে আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যাওয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।

১৭ বছরের নির্বাসন শেষে তারেক রহমানের দেশে ফেরা এবং বাবার কবর জিয়ারতকে সামনে রেখে বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে তার প্রত্যাবর্তন দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।


শিবিরে ক্ষমতার হস্তান্তর, নেতৃত্বে সাদ্দাম–সিবগা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১৯:০৯:৪০
শিবিরে ক্ষমতার হস্তান্তর, নেতৃত্বে সাদ্দাম–সিবগা

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সদ্যসমাপ্ত কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। ২০২৬ সেশনের জন্য নূরুল ইসলাম সাদ্দাম কেন্দ্রীয় সভাপতি এবং সিবগাতুল্লাহ সিবগা সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নির্বাচিত ও মনোনীত হয়েছেন।

শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। দেশজুড়ে অনলাইনে অনুষ্ঠিত ভোটগ্রহণের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হন নূরুল ইসলাম সাদ্দাম। এরপর সংগঠনের সংবিধান অনুযায়ী নবনির্বাচিত সভাপতি কার্যকরী পরিষদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সিবগাতুল্লাহকে সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে মনোনয়ন দেন।

সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন চলে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ছাত্রশিবিরকে দেশের ছাত্রসমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক ও সাংগঠনিক শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।

দ্বিতীয় অধিবেশনে নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ ফল ঘোষণা করেন। এ সময় সহকারী নির্বাচন কমিশনার ও সাবেক সভাপতি সেলিম উদ্দিন অধিবেশন পরিচালনা করেন। ফল ঘোষণার পর নবনির্বাচিত সভাপতিকে শপথবাক্য পাঠ করানো হয়।

নবনির্বাচিত সভাপতি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। পাশাপাশি নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগ থেকে ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা (HRM) বিভাগে মাস্টার্স পর্যায়ে অধ্যয়নরত।

অন্যদিকে সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত সিবগাতুল্লাহ সিবগা এর আগে সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক, সাহিত্য সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে বিএসএস ও এমএসএস সম্পন্ন করেছেন এবং বর্তমানে ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়ন করছেন।

সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০২৬ সেশনের জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি নির্বাচন ও সেক্রেটারি জেনারেল মনোনয়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যান্য সদস্যদের নাম শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।


এবার ‘হাঁস’ প্রতীক নিয়ে ভোটের ময়দানে রুমিন ফারহানা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১১:৫৪:১৪
এবার ‘হাঁস’ প্রতীক নিয়ে ভোটের ময়দানে রুমিন ফারহানা
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় রাজনীতির পরিচিত মুখ এবং বিএনপির সাহসী কণ্ঠস্বর ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা আসন্ন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলীয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’ জোটের অন্য প্রার্থীর ভাগ্যে যাওয়ায় তিনি এই কঠিন পথ বেছে নিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বুধবার তাঁর পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তিনি নির্বাচন কমিশনে তাঁর কাঙ্ক্ষিত প্রতীক হিসেবে ‘হাঁস’ চেয়ে আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ইসলামপুরে নিজের পৈতৃক ভিটায় পূর্বপুরুষদের কবর জিয়ারত করে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তিনি।

রুমিন ফারহানা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন যে দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি রাজপথে এবং জাতীয় রাজনীতিতে সাধারণ মানুষের হয়ে কথা বলেছেন, অথচ তাঁর প্রতি চরম অন্যায় করা হয়েছে। তিনি দাবি করেন যে জোটের প্রার্থী মনোনয়নের ক্ষেত্রে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করা হয়েছে। রুমিন আত্মবিশ্বাসের সাথে জানান যে ভোটাররা ব্যালটের মাধ্যমে এই অন্যায়ের দাঁতভাঙা জবাব দেবে। উল্লেখ্য যে তাঁর এলাকাটি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তিনি এই এলাকা থেকেই গণসংযোগ শুরু করেছেন।

ব্যারিস্টার রুমিনের এই স্বতন্ত্র লড়াইয়ের প্রেক্ষাপটে ফিরে আসছে তাঁর বাবা প্রখ্যাত ভাষা সৈনিক ও কিংবদন্তি রাজনীতিবিদ অলি আহাদের স্মৃতি। ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে অলি আহাদ তৎকালীন কুমিল্লা-২ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। যদিও সেই নির্বাচনে তাঁকে পরাজিত ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু রাজনৈতিক মহলে আজও সেই পরাজয় নিয়ে নানা বিতর্ক ও কারচুপির অভিযোগ রয়েছে। এখন কয়েক দশক পর মেয়ে রুমিন ফারহানাও বাবার মতোই দলের বাইরে গিয়ে জনসমর্থনের পরীক্ষায় নামতে চলেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে রুমিন ফারহানার এই স্বতন্ত্র প্রার্থিতা স্থানীয় রাজনীতিতে মেরুকরণ ঘটিয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ায় এই আসনে ভোটের হিসাব-নিকাশ পাল্টে যেতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে ‘হাঁস’ প্রতীক নিয়ে রুমিন ফারহানা নির্বাচনে অবতীর্ণ হলে তা কেবল দলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নয়, বরং তাঁর ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তার এক বড় অগ্নিপরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে। শেষ পর্যন্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাধারণ মানুষ বাবার অপূর্ণ স্বপ্ন মেয়ের মাধ্যমে পূরণ করে কি না, সেটিই এখন দেখার বিষয়।


ফ্যামিলি কার্ড থেকে বেকার ভাতা: তারেক রহমানের রূপরেখায় যা আছে

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ১১:১২:৩০
ফ্যামিলি কার্ড থেকে বেকার ভাতা: তারেক রহমানের রূপরেখায় যা আছে
দেশ নিয়ে তারেক রহমানের কী সেই ‘প্ল্যান’

রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক বিশাল গণসংবর্ধনায় দেওয়া বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার এক নতুন বার্তা প্রদান করেছেন। ১৯৬৩ সালে মার্কিন নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের দেওয়া বিশ্ববিখ্যাত ‘আই হ্যাভ অ্যা ড্রিম’ ভাষণের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান ঘোষণা করেন—‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি’ (আমার দেশের মানুষের জন্য আমার একটি পরিকল্পনা আছে)। তাঁর এই বক্তব্য কেবল আবেগ নয় বরং জ্ঞানভিত্তিক ও কাঠামোগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে তারেক রহমানের এই ‘প্ল্যান’ বা পরিকল্পনার মূল ভিত্তি হলো রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি জানিয়েছেন যে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে মানুষের দৈনন্দিন অভাব দূর করতে ফ্যামিলি কার্ড, কৃষকদের জন্য কৃষক কার্ড, সবার জন্য স্বাস্থ্য কার্ড এবং বেকার যুবকদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। মূলত সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এই পরিকল্পনার প্রধান স্তম্ভ। এছাড়া ধর্মীয় নেতাদের উন্নয়ন এবং শিক্ষা-ক্রীড়া-পরিবেশ খাতের আধুনিকায়নও এই রূপরেখার অন্তর্ভুক্ত।

তারেক রহমান কেন মার্টিন লুথার কিংয়ের উদাহরণ দিলেন—তা নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে জনমনে। মার্টিন লুথার কিং ছিলেন অহিংস আন্দোলনের অগ্রদূত যিনি কৃষ্ণাঙ্গদের অধিকার আদায়ে আজীবন লড়েছেন এবং ১৯৬৪ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তারেক রহমান সম্ভবত বাংলাদেশে নাগরিক অধিকার পুনরুদ্ধার এবং সমতা প্রতিষ্ঠার লড়াইকে সেই বৈশ্বিক সংগ্রামের সাথে তুলনা করতে চেয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানের মতে তারেক রহমানের এই রূপরেখাটি সম্পূর্ণ নীতিনির্ভর এবং এটি সরকার গঠনের সাথে সাথে বাস্তবায়নযোগ্য করে সাজানো হয়েছে।

উল্লেখ্য যে তারেক রহমান ঘোষিত এই পরিকল্পনায় শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘১৯-দফা’ এবং বেগম খালেদা জিয়ার ‘ভিশন-২০৩০’-এর মূল সুর বজায় রাখা হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালনায় আমূল পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে বিএনপি ইতোমধ্যেই আটটি বিশেষ খাতভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেছে। তারেক রহমানের এই ‘আই হ্যাভ অ্যা প্ল্যান’ বক্তব্য তৃণমূল কর্মীদের মাঝে যেমন আশার আলো দেখাচ্ছে, তেমনি দেশের শিক্ষিত ও সচেতন সমাজকেও আগামীর বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে।


তারেক রহমানের আজকের কর্মসূচি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ০৯:১০:২১
তারেক রহমানের আজকের কর্মসূচি
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বদেশের মাটিতে পা রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রত্যাবর্তনের দ্বিতীয় দিনে আজ শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) তাঁর রাজনৈতিক ও ধর্মীয় কর্মসূচির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন দলের প্রতিষ্ঠাতা ও তাঁর পিতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। দলীয় সূত্রে জানা গেছে যে আজ জুমার নামাজের পর তিনি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শহীদ জিয়ার মাজার জিয়ারত করবেন। বাবার আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত শেষে তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের অভিমুখে রওনা হবেন এবং সেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের এই কর্মসূচির বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান যে শুক্রবারের শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে শনিবারও (২৭ ডিসেম্বর) তারেক রহমানের জন্য এক বিশেষ ও মানবিক কর্মসূচি অপেক্ষা করছে। এদিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ছাত্রনেতা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করবেন। উল্লেখ্য যে সম্প্রতি আততায়ীর গুলিতে নিহত এই তরুণ নেতার মৃত্যুতে তারেক রহমান গভীর শোক প্রকাশ করেছিলেন এবং তাঁর পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

শনিবারের কর্মসূচিতে আরও একটি বড় চমক হলো তারেক রহমানের ভোটার হওয়ার প্রক্রিয়া। দীর্ঘ সময় বিদেশে থাকায় তাঁর ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল না। তবে তিনি নির্বাচন কমিশনে নাকি থানা নির্বাচন অফিসে গিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে জানিয়েছেন যে তারা এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য পাননি। একই দিনে তারেক রহমান জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে (পঙ্গু হাসপাতাল) গিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ নেবেন এবং তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন।

তারেক রহমানের এই কর্মসূচিগুলোকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রিয় নেতার সরাসরি সান্নিধ্য পেতে এবং তাঁর কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় ভিড় করছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে জিয়ারত ও শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে তারেক রহমান তাঁর নতুন রাজনৈতিক অভিযাত্রা যেমন শুরু করছেন, তেমনি আহতদের পাশে দাঁড়িয়ে গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করার বার্তাও দিচ্ছেন।


ঢাকা ও দিল্লির সম্পর্কে ফাটল: প্রতিবেশী দুই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৬ ০৯:০৩:১৬
ঢাকা ও দিল্লির সম্পর্কে ফাটল: প্রতিবেশী দুই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ
ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে সম্প্রতি চলমান সহিংস বিক্ষোভ এবং ময়মনসিংহে দিপু চন্দ্র দাস নামক এক সংখ্যালঘু ব্যক্তির নির্মম হত্যাকাণ্ড ঢাকা ও দিল্লির মধ্যকার একসময়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে এক গভীর অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। গত সপ্তাহে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যার পর তাঁর দেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। একই সময়ে ঢাকায় আলোচিত ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তি ভারতে পালিয়ে গেছেন—এমন অভিযোগ বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ভারতবিরোধী ক্ষোভকে নতুন করে উসকে দিয়েছে।

দুই দেশের মধ্যে এই চরম সন্দেহ ও অবিশ্বাস গত কয়েক দশকের মধ্যে নজিরবিহীন। ভারতের সাবেক হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাস বিবিসিকে জানিয়েছেন যে বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কোন দিকে মোড় নেবে তা অনুমান করা এখন কঠিন হয়ে পড়েছে। কূটনৈতিক সম্পর্কের এই অবনতি কেবল রাজপথের বিক্ষোভে সীমাবদ্ধ নেই বরং দুই দেশই একে অপরের হাইকমিশনারদের তলব করেছে এবং ভিসা সেবা আংশিকভাবে স্থগিত করেছে। দিল্লিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের বাইরে হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীগুলোর বিক্ষোভ এবং চট্টগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন ভবনে পাথর নিক্ষেপের ঘটনা দুই দেশের কূটনৈতিক শিষ্টাচারকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনের পতনের পর কট্টর ইসলামপন্থি গোষ্ঠীগুলোর উত্থান এবং সংখ্যালঘুসহ মাজার ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা ভারতের নীতিনির্ধারকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। অধ্যাপক অশোক সোয়াইনসহ অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন যে দুই দেশের ডানপন্থি রাজনীতি এবং ভারতীয় গণমাধ্যমের অতিরঞ্জিত সংবাদ প্রচার পরিস্থিতিকে আরও সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্পের দিকে ধাবিত করছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার সক্ষমতা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, তখন ১২ ফেব্রুয়ারির আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে আরও সহিংসতার আশঙ্কা করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা।

সাবেক প্রবীণ কূটনীতিক হুমায়ুন কবিরের মতে ভারতের জন্য এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো বাংলাদেশের মাঠপর্যায়ের নতুন বাস্তবতা মেনে নিয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা। কারণ উত্তর-পূর্ব ভারতের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা দিল্লির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্যদিকে বাংলাদেশে তথাকথিত ‘ভারতপন্থি’ আখ্যা দিয়ে ভিন্নমতাবলম্বীদের ওপর হামলার যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে তার সবচেয়ে বড় শিকার হচ্ছেন এদেশের সাধারণ নাগরিক ও সংখ্যালঘুরা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে রাজপথের জনরোষ যেন দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্থায়ী ক্ষতি করতে না পারে সে বিষয়ে দুই দেশের বুদ্ধিজীবী মহল থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

তথ্যসূত্র: বিবিসি


 গুলশানের বাসায় তারেক রহমান ,শুরু হলো নতুন অধ্যায়

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ২১:১৮:৪০
 গুলশানের বাসায় তারেক রহমান ,শুরু হলো নতুন অধ্যায়
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশে ফিরেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। স্বদেশে ফেরার প্রথম দিনেই তিনি রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তাঁর অসুস্থ মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিকেল ৫টা ৫০ মিনিটে হাসপাতাল চত্বরে প্রবেশ করেন তিনি। তাঁর আগমনের আগে থেকেই তাঁর সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমান ও মেয়ে ব্যারিস্টার জাইমা রহমান হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর দেশের মাটিতে মা ও ছেলের এই পুনর্মিলন এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি করে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তারেক রহমান তাঁর মায়ের শয্যাপাশে প্রায় দেড় ঘণ্টা অবস্থান করেন এবং দায়িত্বরত চিকিৎসকদের কাছ থেকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের সর্বশেষ আপডেট গ্রহণ করেন। গত ২৩ নভেম্বর থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া এবং ২৭ নভেম্বর থেকে তিনি ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন। মায়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটানোর পর সন্ধ্যা ৭টা ৩৪ মিনিটের দিকে তিনি হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে গুলশান অ্যাভিনিউয়ের ১৯ নম্বর রোডের ১৯৬ নম্বর বাসভবনে পৌঁছান। এই বাড়িটি তাঁর মা বেগম খালেদা জিয়ার বাসভবন ‘ফিরোজা’র একদম পাশেই অবস্থিত।

এর আগে আজ দুপুর পৌনে ১২টায় তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ড্রিমলাইনার ‘সোনার তরী’ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সেখান থেকে তিনি সরাসরি পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক বিশাল গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। লক্ষ লক্ষ মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বারবার মায়ের অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে দেশবাসীর দোয়া প্রার্থনা করেন। সংবর্ধনা শেষে তিনি কালক্ষেপণ না করে দ্রুত হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেন যাতে মায়ের পাশে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন।

তারেক রহমানের আগমনকে কেন্দ্র করে এভারকেয়ার হাসপাতাল এবং গুলশানের বাসভবন এলাকায় নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। বিএনপির শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তারেক রহমান এখন থেকে গুলশানের এই বাসভবনেই সপরিবারে অবস্থান করবেন। আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে তিনি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জাতীয় স্মৃতিসৌধে বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। মা ও ছেলের এই সাক্ষাৎ তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেছে।


অঙ্কুরেই বিনষ্ট হতে পারে এনসিপি: রিফাত রশিদের ৫টি কড়া যুক্তি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ২০:২৮:৪৭
অঙ্কুরেই বিনষ্ট হতে পারে এনসিপি: রিফাত রশিদের ৫টি কড়া যুক্তি
ছবি : সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বর্তমান রাজনৈতিক গতিপথ এবং জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতার গুঞ্জন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি রিফাত রশিদ। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ৬টা ৩৩ মিনিটে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন যে মাত্র ৩০টি আসনের লোভে জামায়াতের সঙ্গে নির্বাচনী জোটে যাওয়া এনসিপির অস্তিত্বের জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়াবে। রিফাত রশিদের মতে এই ধরণের জোটবদ্ধতা এনসিপিকে একটি স্বতন্ত্র রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে ধ্বংস করে দিতে পারে এবং দলটিকে জামায়াতের ‘বি-টিম’ হিসেবে মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত করবে।

রিফাত রশিদ তাঁর দীর্ঘ স্ট্যাটাসে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পয়েন্টের মাধ্যমে এনসিপির সম্ভাব্য সংকটের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন যে এনসিপি ইতিমধ্যে ১২৫টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে যারা মাঠ পর্যায়ে প্রচার চালাচ্ছেন। এখন মাত্র ৩০টি আসন নিয়ে জোট করলে বাকি ৯৫ জন প্রার্থী বিদ্রোহী হয়ে উঠতে পারেন যা দলটিকে ভাঙনের মুখে ঠেলে দেবে। দ্বিতীয়ত তিনি মনে করেন যে এই জোটের ফলে জুলাই অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব পুরোপুরি জামায়াতের কাছে চলে যাবে এবং এনসিপি আর কখনো স্বতন্ত্রভাবে এই বিপ্লব দাবি করতে পারবে না।

রিফাত রশিদের তৃতীয় ও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যুক্তি হলো এনসিপির অভ্যন্তরে একটি বড় গোষ্ঠী জামায়াত-বিরোধী মানসিকতার এবং তারা রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা হয়ে পদত্যাগ করতে পারেন। বিশেষ করে এনসিপির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্রশক্তির কর্মীরা যারা ক্যাম্পাসে শিবিরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করে তারা চরম হতাশ ও অকার্যকর হয়ে পড়বে। এছাড়া একাত্তরের দায় এবং সাম্প্রতিক মবোক্রেসি নিয়ে জামায়াতের যে অবস্থান তা এনসিপির ওপরও বর্তাবে যা দলটির ‘ইনক্লুসিভ পলিটিক্স’ বা অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির বয়ানকে শেষ করে দেবে।

সবশেষে রিফাত রশিদ পরামর্শ দেন যে এনসিপির উচিত স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করা অথবা তিন দলীয় জোটের পরিধি বাড়ানো। তিনি গাণিতিক ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন যে সারা দেশে ৫ শতাংশ ভোট পেলেও এনসিপি রাজনৈতিকভাবে টিকে থাকবে কিন্তু জামায়াতের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া মানে দলটিকে অঙ্কুরেই বিনষ্ট করা। ক্ষমতার অতিরিক্ত খায়েশ মেটাতে গিয়ে এনসিপি যেন নিজের দীর্ঘমেয়াদী রাজনীতি শেষ না করে সেই আহ্বান জানিয়ে তিনি দলটির শীর্ষ নেতৃত্বের শুভবুদ্ধির উদয় কামনা করেন। রিফাত রশিদের এই বিশ্লেষণ ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।


রাজনৈতিক মাঠে তারেক রহমানের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করবে জামায়াত

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ১৮:৫০:২৫
রাজনৈতিক মাঠে তারেক রহমানের ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করবে জামায়াত
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশে ফিরে আসার ঘটনাকে অত্যন্ত ইতিবাচক হিসেবে দেখছে একসময়ের রাজনৈতিক মিত্র বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন যে তাঁর একজন রাজনৈতিক সহকর্মী দীর্ঘ ১৭ বছর পর সরাসরি রাজনীতির মাঠে ফিরছেন, এটিকে তিনি বড় ধরণের ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবেই দেখছেন। তবে এই ফিরে আসার পর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তারেক রহমান জাতীয় ঐক্যের ক্ষেত্রে কী ভূমিকা রাখেন এবং তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী, সে বিষয়ে জামায়াত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

শফিকুর রহমান তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে কেবল দেশে ফেরাই বড় কথা নয় বরং বর্তমান সংকটকালীন সময়ে তারেক রহমানের পরিকল্পনা এবং তা বাস্তবায়নের কৌশলের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। বিশেষ করে দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐক্যের প্রশ্নে বিএনপির শীর্ষ এই নেতার অবস্থান কী হবে, সেদিকেই এখন সবার নজর। জামায়াতের আমির স্পষ্ট করেছেন যে তারেক রহমানের ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করেই আগামীর রাজনৈতিক সমীকরণ নির্ধারিত হতে পারে।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারও তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন যে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে তারেক রহমানের ফিরে আসা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তবে তিনিও আমিরের সুরেই মনে করেন যে জাতীয় রাজনীতিতে তারেক রহমান কীভাবে নিজের অবস্থান তৈরি করবেন এবং অন্যান্য দলের সাথে সহাবস্থান করবেন, তার ওপরই তাঁর রাজনৈতিক সাফল্যের মূল্যায়ন হবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এই নতুন বাংলাদেশে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যকার সম্পর্কের টানাপোড়েন কিংবা ঐক্যের বিষয়টি তারেক রহমানের এই ফিরে আসার মাধ্যমেই একটি চূড়ান্ত রূপ পেতে পারে। আজ সকালে তারেক রহমান সিলেট হয়ে ঢাকায় পৌঁছানোর পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে। জামায়াতের এই ‘নজর রাখা’র ঘোষণা মূলত আগামীর নির্বাচনী জোট কিংবা রাজনৈতিক ঐক্যের একটি সতর্ক সংকেত হিসেবেও দেখছেন অনেকে।


মহানবীর ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ গড়ব: তারেক রহমান

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৫ ১৮:৩৫:১৭
মহানবীর ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ গড়ব: তারেক রহমান
ছবি : সংগৃহীত

দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে বীরের বেশে স্বদেশের মাটিতে ফিরে জনতার উদ্দেশ্যে নিজের রাজনৈতিক স্বপ্ন ও পরিকল্পনার কথা ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক বিশাল গণসংবর্ধনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি এই ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। বেলা ৩টা ৫০ মিনিটে লাল-সবুজ রঙে সজ্জিত একটি বাসে চড়ে তিনি অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে লক্ষ লক্ষ জনতা তাঁকে গগণবিদারী স্লোগানে স্বাগত জানান। ঠিক ৩টা ৫৭ মিনিটে ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ সম্বোধনের মাধ্যমে তিনি তাঁর বহুল প্রতীক্ষিত বক্তৃতা শুরু করেন।

তারেক রহমান তাঁর ভাষণে ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ন্যায়বিচারের আদর্শকে আগামীর রাষ্ট্র পরিচালনার মূল ভিত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “আসুন আমরা সকলে মিলে প্রতিজ্ঞা করি, ইনশাআল্লাহ আগামী দিনে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে যারা আসবে, আমরা সকলে নবী করিম (সা.)-এর যে ন্যায়পরায়ণতা, সেই ন্যায়পরায়ণতার আলোকে দেশ পরিচালনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে ১৯৭১-এর স্বাধীনতা, ৯০-এর গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান—সবই এদেশের মানুষের সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই ছিল।

বিখ্যাত নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়ারের সেই কালজয়ী উক্তির অনুকরণে তারেক রহমান বলেন, “আই হ্যাভ আ প্ল্যান ফর দ্য পিপল অব মাই কান্ট্রি, ফর মাই কান্ট্রি।” তিনি স্পষ্ট করেন যে তাঁর এই পরিকল্পনা কেবল ব্যক্তিগত নয় বরং দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি দেশের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের সহযোগিতা ও সমর্থন কামনা করেন। তিনি এমন একটি বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন যেখানে একজন মা নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন এবং প্রতিটি নাগরিক ঘর থেকে বের হয়ে নিরাপদে ফিরে আসার নিশ্চয়তা পাবেন।

ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন যে এখন সময় এসেছে প্রতিহিংসা ভুলে দেশ গড়ার। তিনি প্রতিটি মানুষের যোগ্যতা অনুযায়ী ন্যায্য অধিকার এবং কথা বলার স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন। ভাষণের এক পর্যায়ে তিনি মহান আল্লাহর কাছে হাত তুলে প্রার্থনা করেন যাতে পরম করুণাময় এদেশের মানুষের পরিশ্রমের ওপর রহমত দান করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই বিশাল সংবর্ধনা সভায় তারেক রহমানের এই আধ্যাত্মিক ও রাজনৈতিক ভাষণ কর্মীদের মাঝে এক অভূতপূর্ব উদ্দীপনার সৃষ্টি করেছে।

পাঠকের মতামত:

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ গড়তে হলে রাষ্ট্রকে অবশ্যই তার সামাজিক ও নৈতিক দায়বদ্ধতা পুনরুদ্ধার করতে হবে

রাষ্ট্রের ধারণাটি একসময় কেবল প্রশাসনিক ক্ষমতা, আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা প্রদানের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল। কিন্তু আধুনিক বিশ্বে রাষ্ট্রের ভূমিকা এখন... বিস্তারিত