পোড়া মরদেহ, কান্না আর ধ্বংস, আবারও রক্তাক্ত গাজা

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর পৃথক দুটি বিমান হামলায় কমপক্ষে ৫৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বহু শিশু রয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
প্রথম হামলাটি হয় গাজা সিটির ফাহমি আল-জারগাওয়ি স্কুলে, যেখানে বেইত লাহিয়া থেকে বাস্তুচ্যুত শত শত মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। আগুনে পুড়ে যাওয়া দুটি শ্রেণিকক্ষে অন্তত ২০ জন প্রাণ হারান। গাজার সিভিল ডিফেন্স বাহিনী জানিয়েছে, মরদেহগুলোর অবস্থা এতটাই করুণ যে অনেককে শনাক্ত করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, স্কুল ভবনটি হামাস ও ইসলামিক জিহাদের কমান্ড সেন্টার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি বেসামরিক নাগরিক ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছিল। তারা হামাসের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণকে 'মানবঢাল' হিসেবে ব্যবহারের অভিযোগও তুলেছে।
অপরদিকে, গাজার উত্তরের জাবালিয়ায় একটি বাড়িতে চালানো আরেক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও ১৯ জন। এই হামলা নিয়ে এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি ইসরায়েল।
এই হামলাগুলো গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক সেনা অভিযানের ধারাবাহিক অংশ। আইডিএফ-এর তথ্যমতে, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা গাজাজুড়ে ২০০টিরও বেশি স্থানে অভিযান চালিয়েছে।
সম্প্রতি একাধিক ভয়াবহ হামলার নজির পাওয়া গেছে। গত শুক্রবার গাজায় এক নারী চিকিৎসকের বাড়িতে চালানো হামলায় তার ৯ সন্তান নিহত হন, যাদের বয়স কয়েক মাস থেকে ১২ বছর পর্যন্ত। একই ঘটনায় আহত হন তার স্বামী ও একমাত্র জীবিত পুত্র।
শনিবার খান ইউনিসে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের দুই কর্মী নিহত হন, যা আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি অভিযানে অন্তত ৫৩ হাজার ৯৩৯ জন নিহত ও ১ লাখ ২২ হাজার ৭৯৭ জন আহত হয়েছেন। যদিও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে বলে দাবি করছে, কারণ বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের মানবিক মাত্রাকে আরও ঘনীভূত করেছে। বেসামরিক হতাহতের এই চিত্র আন্তর্জাতিক মহলে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে, বিশেষত শিশু ও মানবিক কর্মীদের হতাহতের ঘটনায় যুদ্ধাপরাধ প্রশ্নে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বর্ধিত সহিংসতা ও ক্রমবর্ধমান মৃত্যু সংখ্যা উভয়ই মধ্যপ্রাচ্যে একটি স্থায়ী মানবিক সংকটের দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে, যেখানে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ ও টেকসই কূটনৈতিক সমাধানের প্রয়োজন আরও প্রকট হয়ে উঠছে।
-ইসরাত, নিজস্ব প্রতিবেদক
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেয়ারবাজারে গেম্বলারদের দৌরাত্ম্য: আস্থা ফেরাতে চাই কঠোর শাস্তি ও কাঠামোগত সংস্কার
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদের দীর্ঘ ছুটি, চালু থাকবে জরুরি সেবা
- বাংলাদেশে সেনা-সরকার উত্তেজনা ও ‘কু’ এর গুঞ্জন: নেপথ্যে কি?
- নতুন রাজনৈতিক সমীকরণে কারা টিকে থাকবে, কারা হারিয়ে যাবে?
- সেনাপ্রধানের বক্তব্য, জুলকারনাইন তাতে যা বললেন!
- নাহিদের স্পষ্ট বার্তা: এনসিপিতে নেই দুই উপদেষ্টা আসিফ ও মাহফুজ
- তারকা পরিচিতি: রক্ষাকবচ না কি সমাজবিমুখ অব্যাহতি?
- বিএনপির সালাউদ্দিনকে নিয়ে কি লিখলেন প্রেস সচিব শফিকুল?
- সড়ক দুর্ঘটনায় সেনা কর্মকর্তা নিহত
- বাংলাদেশে আন্তর্বর্তী সরকারের পদক্ষেপে মৌলিক অধিকার হুমকিতে
- মুহাম্মদ ইউনূস প্রশাসনের ভবিষ্যৎ কেন অনিশ্চিত
- ডিসেম্বরে নির্বাচন চান সেনাপ্রধান
- "ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি সব রাজনৈতিক দল অকুণ্ঠ সমর্থন জানিয়েছে"
- তিন মাসে ১.১৮ লাখ কোটি টাকার মূলধন ঘাটতি, দেউলিয়াত্বের পথে ২০ ব্যাংক
- স্টারলিংক চালু, সরকারের দ্রুত সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কি?