জীবনে যা ঘটে সবই মুমিনের জন্য কল্যাণ: কোরআন-হাদিসের আলোকে চমৎকার ব্যাখ্যা

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিপদ, কষ্ট, সুখ কিংবা দুঃখ যা কিছুই ঘটুক না কেন, অনেকেই বলে থাকেন, “জীবনে যা কিছু হয়, সবই ভালোর জন্য হয়।” এই বাক্যটি শুনে কেউ কেউ এটিকে কেবল সান্ত্বনার বুলি মনে করলেও, ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি গভীর তাওহীদ ও তাকদিরের প্রতি বিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ। একজন প্রকৃত মুমিনের জীবনে যা কিছু ঘটে, সে তা আল্লাহর ফয়সালা হিসেবে মেনে নেয় এবং বিশ্বাস রাখে—তা অবশ্যই কোনো না কোনো কল্যাণের বাহক।
আল-কুরআনের সূরা আল-বাকারা, আয়াত ১৫৫-তে আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, তিনি মানুষকে ভয়, ক্ষুধা, জান-মালের ক্ষতি এবং ফসলহানির মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন। কিন্তু সেইসঙ্গে তিনি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দিয়েছেন, যাদের অন্তর দৃঢ় থাকে বিপদের সময়েও। এই আয়াতটি ইঙ্গিত করে, জীবনে যেসব প্রতিকূলতা আসে তা নিছক শাস্তি নয়, বরং তা ঈমানদারদের জন্য আত্মশুদ্ধি ও আত্মোন্নয়নের সুযোগ।
রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, একজন মুমিনের সবকিছুতেই কল্যাণ নিহিত থাকে। যদি কোনো সুখকর ঘটনা ঘটে, সে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে, ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর যদি কোনো কষ্ট হয়, সে ধৈর্য ধারণ করে, সেটিও তার জন্য মঙ্গলজনক হয়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস ২৯৯৯)। এই হাদিস স্পষ্টভাবে তুলে ধরে, কষ্টের মধ্যেও মুমিনের জন্য রয়েছে এক আধ্যাত্মিক লাভ ও সওয়াব।
আবু হুরাইরাহ (রাঃ) বর্ণিত অপর এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, একজন মুসলমানের শরীরে একটি কাঁটা বিদ্ধ হওয়া পর্যন্তও যদি কষ্ট সহ্য করে, তবে তার গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়। (সহিহ বুখারী ৫৬৪২; সহিহ মুসলিম ২৫৭৩)। এতে বোঝা যায়, প্রতিটি শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা এমনকি ক্ষুদ্রতম অসুবিধাও একজন মুমিনের জন্য আত্মশুদ্ধির একটি সুযোগ।
মৃত্যু কেন মুমিনের কাছে প্রিয়? হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা
মৃত্যু মানবজীবনের এক অবশ্যম্ভাবী সত্য, যা নিয়ে মানুষের মনে ভয়, আশা ও আকাঙ্ক্ষার দোলাচল থাকে। কেউ মৃত্যুকে জীবনের শেষ মনে করে আতঙ্কিত হয়, আবার মুমিনের কাছে এটি হয় আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের এক মহাসুযোগ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উম্মতকে শিক্ষা দিয়েছেন যে মৃত্যুর মুহূর্তে মানুষের আসল চেহারা প্রকাশ পায়।
হাদিসের শিক্ষা
عَنْ عُبَادَةَ بْنِ الصَّامِتِ عَنْ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ مَنْ أَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ أَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ وَمَنْ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ كَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ قَالَتْ عَائِشَةُ أَوْ بَعْضُ أَزْوَاجِهِ إِنَّا لَنَكْرَهُ الْمَوْتَ قَالَ لَيْسَ ذَاكِ وَلَكِنَّ الْمُؤْمِنَ إِذَا حَضَرَهُ الْمَوْتُ بُشِّرَ بِرِضْوَانِ اللهِ وَكَرَامَتِهِ فَلَيْسَ شَيْءٌ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِمَّا أَمَامَهُ فَأَحَبَّ لِقَاءَ اللهِ وَأَحَبَّ اللهُ لِقَاءَهُ وَإِنَّ الْكَافِرَ إِذَا حُضِرَ بُشِّرَ بِعَذَابِ اللهِ وَعُقُوبَتِهِ فَلَيْسَ شَيْءٌ أَكْرَهَ إِلَيْهِ مِمَّا أَمَامَهُ كَرِهَ لِقَاءَ اللهِ وَكَرِهَ اللهُ لِقَاءَهُ
উবাদাহ ইবনু সামিত (রা.) হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
"যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করে না, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন।"
এই হাদিসের ব্যাখ্যায় আয়িশাহ (রা.) অথবা তাঁর অন্য কোনো স্ত্রী যখন মৃত্যুকে অপছন্দ করার কথা বলেন, তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্পষ্ট করে দেন যে, স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুকে ভয় পাওয়া বা কষ্টকর মনে করা আল্লাহর সাক্ষাৎ অপছন্দ করা এক বিষয় নয়।
মুমিনের ক্ষেত্রে যখন মুমিনের মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন ফেরেশতারা তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও জান্নাতের সুসংবাদ দেন। এই সময় পৃথিবীর কষ্ট ও মৃত্যুর যন্ত্রণা তার কাছে গৌণ হয়ে যায়। তার হৃদয় আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় পূর্ণ হয়। এ কারণেই সে মৃত্যুকে পছন্দ করতে শুরু করে, কারণ তার সামনে জান্নাত ও আল্লাহর সাক্ষাতের সুখবর থাকে।
কাফিরের ক্ষেত্রে কাফিরের যখন মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর গজব, শাস্তি ও অভিশাপের কথা জানানো হয়। আখিরাতের ভয়ংকর আজাব তার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। সে তখন মৃত্যু ও পরবর্তী জীবনের সাক্ষাৎ ভীষণ ঘৃণা করতে থাকে। ফলে আল্লাহও তার সাক্ষাৎকে অপছন্দ করেন, অর্থাৎ আল্লাহ তার জন্য আখিরাতে সুখ বা সন্তুষ্টি নয়, বরং গজব নির্ধারণ করে রেখেছেন।
এই হাদিস থেকে আমরা যে শিক্ষা পাই তা হলো:
আল্লাহর সাক্ষাৎ পছন্দ করতে হলে আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক জীবনযাপন করতে হবে।
পাপাচার, কুফর ও বিদআতের জীবন আল্লাহর সাক্ষাৎকে ভীতিকর করে তুলবে।
আখিরাতের জন্য প্রস্তুত থাকা মানেই মৃত্যুকে ভয় না পাওয়া।
মৃত্যু আসলে মুমিনের জন্য প্রিয় আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে মিলনের সেতু, আর কাফিরের জন্য এটি ভয়ংকর আজাবের দরজা।
জুমার দিনে মসজিদে কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যাওয়া কেন নিষিদ্ধ?
সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমা মুসলমানদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র ও মর্যাদাপূর্ণ। আল্লাহ তায়ালা এই দিনটিকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেছেন এবং রাসুল (সা.) একে সূর্য উদিত হওয়া দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বরকতময় দিন হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এ দিনে মুসলিম উম্মাহর জন্য কিছু বিশেষ করণীয় রয়েছে, যা পালন করলে অপার সওয়াব লাভ করা যায়।
জুমার নামাজে আগে যাওয়ার গুরুত্ব
জুমার দিনে একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল হলো আজানের সঙ্গে সঙ্গে আগেভাগে মসজিদে গমন করা। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! জুমার দিনে যখন নামাজের জন্য আহ্বান জানানো হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে দ্রুত ছুটে চলো এবং ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করো। এটা তোমাদের জন্য উত্তম—যদি তোমরা বুঝতে পারো।’ (সুরা জুমআ: ৯)
হাদিসেও আগেভাগে মসজিদে যাওয়ার ব্যাপারে বিশাল প্রতিদান ও সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন ফরজ গোসলের মতো গোসল করে এবং প্রথম প্রহরে মসজিদে যায়, সে যেন একটি উট কোরবানি করল। দ্বিতীয় প্রহরে গেলে গরু কোরবানির সওয়াব, তৃতীয় প্রহরে গেলে ভেড়া, চতুর্থ প্রহরে গেলে মুরগি এবং পঞ্চম প্রহরে গেলে ডিম কোরবানির সওয়াব পাবে। এরপর যখন ইমাম খুতবা দিতে মিম্বারে ওঠেন, তখন ফেরেশতারা আর আমল লেখেন না, তারা খুতবা শুনতে থাকেন।’ (বোখারি: ৮৮১)
কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যাওয়ার বিষয়ে শরিয়তের বিধান
অভিযোগ আছে, আমাদের দেশে অনেক মুতাওয়াল্লি বা স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জুমার দিন আগে থেকেই মসজিদের সামনের কাতারে নিজেদের জন্য জায়গা দখল করে রাখেন। পরে তারা দেরিতে আসলেও অন্যদের কাঁধ ডিঙিয়ে সেই জায়গায় গিয়ে বসেন।
এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, এই ধরনের কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মানুষকে কষ্ট দিয়ে সামনে যাওয়াকে নবী করিম (সা.) জাহান্নামের ব্রিজ অতিক্রম করে জাহান্নামে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, “মসজিদ ইবাদতের জায়গা। এখানে সবাই সমান। কে মুতওয়াল্লি আর কে সাধারণ মুসল্লি, কোনো পার্থক্য নেই। মানুষকে কষ্ট দিয়ে ইমামের পেছনে সামনের কাতারে জায়নামাজ দিয়ে জায়গা জুড়ে রাখা জাহেলি বর্বরতা। এটা কোনো সভ্যতা নয়।”
শায়খ আহমাদুল্লাহ আরও বলেন, মসজিদে যে আগে আসবে সে আগে বসবে। আগে থেকে জায়গা দখল করে রাখা বা কাউকে ডিঙিয়ে সামনে বসা সম্পূর্ণ নাজায়েজ ও গুনাহের কাজ। হাদিস শরিফে এসেছে, একবার রাসুল (সা.) জুমার খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি এক ব্যক্তিকে অন্যদের কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যেতে দেখে বললেন, ‘বসে পড়, তুমি দেরি করে এসেছ, মানুষকে কষ্টও দিচ্ছো।’ (আবু দাউদ: ১১১৮)
সুতরাং ইমামের কাছাকাছি বসার জন্য মসজিদে দ্রুত উপস্থিত হতে হবে। যদি কোনো কারণে দেরি হয়ে যায়, তাহলে যেখানে খালি জায়গা পাওয়া যায়, সেখানেই বসে পড়া উচিত। অন্যদের কষ্ট দিয়ে সামনে গেলে সওয়াবের বদলে গুনাহের ভাগিদার হতে হবে।
ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময়সূচি প্রকাশিত
আজ মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ এবং ২৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। রাজধানী ঢাকা এবং এর আশপাশের এলাকার জন্য আজকের নামাজের সময়সূচি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
নামাজের সময়সূচি (ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকা)
- ফজর: ভোর ৪টা ৩০ মিনিটে আদায় করা যাবে।
- জোহর: দুপুর ১১টা ৫৭ মিনিটে শুরু হবে।
- আসর: বিকেল ৪টা ১৯ মিনিটে পড়তে হবে।
- মাগরিব: আজ সূর্যাস্তের পর ৬টা ০৬ মিনিটে মাগরিবের নামাজের সময় হবে।
- ইশা: রাত ৭টা ২০ মিনিট থেকে ইশার নামাজ আদায় করা যাবে।
এছাড়া, আজকের সূর্যোদয়ের সময় সকাল ৫টা ৪৫ মিনিট, আর সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৬টা ০১ মিনিট।
বিভাগীয় শহরের জন্য সময় পরিবর্তন
ঢাকার প্রকাশিত নামাজের সময়সূচির সঙ্গে দেশের অন্যান্য বিভাগীয় শহরের জন্য কিছুটা সময় যোগ বা বিয়োগ করতে হবে।
বিয়োগ করতে হবে:
- চট্টগ্রাম: ৫ মিনিট
- সিলেট: ৬ মিনিট
- যোগ করতে হবে:
- খুলনা: ৩ মিনিট
- রাজশাহী: ৭ মিনিট
- রংপুর: ৮ মিনিট
- বরিশাল: ১ মিনিট
অর্থাৎ, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় শহরের মুসল্লিদের জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচি অনুসারে কয়েক মিনিটের তারতম্য ঘটবে।
ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের নামাজের সময় ঘোষণা
আজ শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইংরেজি, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২ বাংলা এবং ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকার আজকের নামাজ ও সূর্যোদয়-সূর্যাস্তের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
ঢাকায় আজ ফজরের নামাজের সময় ভোর ৪টা ২৯ মিনিটে, জোহরের নামাজ দুপুর ১১টা ৫৮ মিনিটে, আসরের নামাজ বিকেল ৪টা ২১ মিনিটে, মাগরিবের নামাজ সন্ধ্যা ৬টা ৮ মিনিটে এবং ইশার নামাজ রাত ৭টা ২৩ মিনিটে আদায় করা হবে। আজ সূর্যোদয়ের সময় নির্ধারিত হয়েছে সকাল ৫টা ৪৩ মিনিটে এবং সূর্যাস্তের সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে।
বিভাগীয় শহরগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সময়সূচিতে কিছুটা যোগ-বিয়োগ করতে হবে। চট্টগ্রামের নামাজের সময় থেকে ৫ মিনিট এবং সিলেটের সময় থেকে ৬ মিনিট কমাতে হবে। অপরদিকে খুলনায় নামাজের সময় ৩ মিনিট, রাজশাহীতে ৭ মিনিট, রংপুরে ৮ মিনিট এবং বরিশালে ১ মিনিট যোগ করতে হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, প্রতিদিন নামাজের সময়সূচি পরিবর্তিত হয় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। তাই মুসল্লিদের উচিত সঠিক সময়ে নামাজ আদায়ের জন্য সরকারি ঘোষিত সময়সূচি অনুসরণ করা।
তথ্যসূত্র: ইসলামিক ফাউন্ডেশন
শির্কের ভয়াবহতা বুঝতে সহজ উদাহরণ
শির্ক- আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে শরিক করা ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ। কুরআনে একে “মহা জুলুম” বলা হয়েছে এবং স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে যে, আল্লাহ শির্ককে ক্ষমা করবেন না, যদিও এর বাইরে অন্য সব গুনাহ তিনি ইচ্ছামতো ক্ষমা করতে পারেন। এই গুরুতর বিষয়টি কীভাবে সন্তানদের বা অন্য কাউকে বোঝানো যায়, তা ব্যাখ্যা করেছেন ইসলামি চিন্তাবিদ ড. আবু বকর যাকারিয়া।
তিনি শির্কের ভয়াবহতা বোঝাতে একটি বাস্তব উদাহরণ টেনে আনেন। তিনি বলেন, সন্তানকে প্রথমে মনে করিয়ে দেওয়া উচিত শৈশব থেকে বার্ধক্য পর্যন্ত তার বাবা কত যত্ন, ত্যাগ ও ভালোবাসা দিয়ে তাকে বড় করেছেন। সন্তানের কর্তব্য হলো সেই বাবাকে সম্মান করা, মর্যাদা দেওয়া এবং সেবা করা।
এরপর সন্তানকে প্রশ্ন করা যেতে পারে যদি সে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটায়, পরে সেটা মীমাংসা হয় বা অন্য কোনো উপায়ে শেষ হয়ে যায়, তবে কি পিতা-মাতার সঙ্গে তার সম্পর্ক স্বাভাবিক হতে পারে? উত্তর অবশ্যই হবে হ্যাঁ, সম্পর্ক ফিরে আসতে পারে।
কিন্তু যদি সেই সন্তান তার বাবাকে বলে, “হে বাবা, অমুক আমার কাছেও তোমার সমান মর্যাদা ও ভালোবাসার অধিকারী” তাহলে পিতার অনুভূতি কেমন হবে? পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতিক্রিয়া কী হবে? এটি কি সহজে ভোলা যাবে? নিশ্চয়ই না। এখানে সন্তান একজন সাধারণ মানুষকে পিতার সমান মর্যাদায় বসিয়েছে এটুকুই এমন এক অপরাধ, যা ক্ষমার অযোগ্য।
ড. যাকারিয়া বলেন, যদি সন্তান পিতার সমান মর্যাদা দিয়ে দেয় কোনো তুচ্ছ সৃষ্টিকে যেমন প্রাণী, মূর্তি বা অন্য কোনো তুচ্ছ বস্তুকে তাহলে সেটা হবে ভয়ংকর অপমান এবং অতি বড় অন্যায়। এটি আসলে ঋণীর পক্ষ থেকে এমন এক ঋণদাতাকে অস্বীকার করা, যার ঋণ কোনোদিন শোধ করা সম্ভব নয়। এই কাজ তাকে পরিবারের ভালোবাসা ও সম্পর্ক থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।
তিনি ব্যাখ্যা করেন, আল্লাহর জন্যই সর্বোত্তম দৃষ্টান্ত। যিনি মানুষকে দিয়েছেন বাবা-মা, জীবনধারণের জন্য জমিন, খাদ্য, বুদ্ধি ও অসংখ্য নিয়ামত যদি সেই আল্লাহর সমকক্ষ হিসেবে মানুষ অন্য কাউকে ভালোবাসা, আশা, ভয় বা ইবাদতের আসনে বসায়, তবে তা হবে সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধ। এ কারণেই কুরআনে আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই শির্ক এক মহা জুলুম।” আবার অন্য আয়াতে বলেন: “আল্লাহ তাঁর সাথে শির্ককে ক্ষমা করেন না; তবে এর বাইরে যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন।”
ড. আবু বকর যাকারিয়া মনে করিয়ে দেন, মুসলিমের অবস্থান শির্ককারীর প্রতি হবে সেই অপরাধীর ভাইদের অবস্থানের মতো, বরং তার চেয়েও কঠোর, যেমন ছিলেন ইবরাহীম (আ.) ও তাঁর সঙ্গীরা। তারা নিজেদের সম্প্রদায়কে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছিলেন আমরা আল্লাহ ছাড়া অন্য সব ইলাহ ও উপাস্য থেকে মুক্ত এবং কেবল আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলেই এই বিভেদ শেষ হতে পারে।
শির্কের ভয়াবহতা বোঝাতে হলে মানুষকে সহজ উদাহরণ দিয়ে বুঝাতে হবে, যেন তারা উপলব্ধি করতে পারে পিতার অবমাননার তুলনায় আল্লাহর সাথে শির্ক করা কত বড় অপরাধ। এটি কেবল অকৃতজ্ঞতাই নয়, বরং এক মহা জুলুম, যা মানুষের সমস্ত সম্পর্ক, মর্যাদা এবং আখিরাতের মুক্তি নষ্ট করে দেয়।
স্ত্রীকে আদর করে ‘আপু’ বা ‘বোন’ বলার বিধান
প্রশ্ন: জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ভালোবাসা থেকে ‘আপু মনি’ বলে ডাকেন। শরীয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো সমস্যা আছে কি? এই কারণে তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে? স্ত্রীকে বোন বা আপু বলে ডাকার বিধান কী, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।
উত্তর:
ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে স্ত্রীকে ‘আপু’ বা ‘বোন’ বলে সম্বোধন করা মাকরূহ বা অনুচিত। এটি একটি গুনাহের কাজ। এ ধরনের সম্বোধন থেকে বিরত থাকা উচিত।
হাদিস শরিফে এ বিষয়ে একটি বর্ণনা এসেছে। সুনানে আবু দাউদে (হাদিস: ২২০৪) উল্লেখ আছে, একজন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ‘বোন’ বলে ডেকেছিলেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) এই সম্বোধন শুনে তাকে তা থেকে নিষেধ করেন।
তবে এই ধরনের সম্বোধনের কারণে স্বামী-স্ত্রীর বৈবাহিক সম্পর্কের কোনো ক্ষতি হবে না। এটি সরাসরি তালাকের কারণ হয় না বা সম্পর্ককে হারাম করে দেয় না। শুধুমাত্র নৈতিক ও শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের সম্বোধন অনুচিত এবং তা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
দান করার যত ফজিলত
ইসলামে দান বা সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। এটি এমন একটি ইবাদত যা মানুষকে শুধু দুনিয়াতে নয়, আখেরাতেও কল্যাণ এনে দেয়। কুরআন ও হাদিসে দানের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। দান মানুষকে দুঃখ-কষ্ট থেকে মুক্ত করে, সম্পদে বরকত আনে, গুনাহ মাফের কারণ হয় এবং কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের ছায়ায় আশ্রয় পাওয়ার অন্যতম উপায় হিসেবে বিবেচিত।
গুনাহ মাফ ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি
দান-সদকা মানুষের গুনাহ মুছে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সদকা যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে ফেলে, তেমনি এটি মানুষের পাপও ধ্বংস করে দেয়। এ কারণে দানকে গুনাহ মাফের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়। একই সঙ্গে এটি জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার সুরক্ষাও প্রদান করে।
বিপদাপদ ও বালা-মুসিবত দূর করে
দান মানুষের জীবনের নানা বিপদ ও দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে। হাদিসে উল্লেখ রয়েছে, যে ব্যক্তি সদকা করে, আল্লাহ তার জন্য অদৃশ্য থেকে বিপদ দূর করেন। অর্থাৎ দান শুধু আখেরাতেই নয়, দুনিয়ার জীবনেও নিরাপত্তা ও সুরক্ষার কারণ হয়।
সম্পদে বরকত বৃদ্ধি
দানের অন্যতম উপকার হলো আল্লাহ সম্পদে বরকত দান করেন। দান করার মাধ্যমে সম্পদ কমে না, বরং বাড়ে। এটি আর্থিক জীবনে স্থিতিশীলতা এবং মনোবল জাগিয়ে তোলে।
কিয়ামতের দিন আরশের নিচে আশ্রয়
গোপন দানের বিশেষ মর্যাদা রয়েছে। হাদিসে এসেছে, কিয়ামতের দিন যখন আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো আশ্রয় থাকবে না, তখন সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ সেই ছায়ায় রাখবেন। গোপনে দানকারীরা এর মধ্যে অন্যতম। ফলে দান আখেরাতের মুক্তি ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা প্রদান করে।
দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ
দান দুনিয়াতে প্রশান্তি ও শান্তি আনে, আবার আখেরাতে মুক্তি ও নাজাতের কারণ হয়। এভাবে এটি মানুষের উভয় জীবনের কল্যাণের মাধ্যম হয়ে দাঁড়ায়।
সহানুভূতি ও ভালোবাসা সৃষ্টি
দান মানুষকে অভাবীদের প্রতি সহানুভূতিশীল করে তোলে। এটি সমাজে ভালোবাসা, ভ্রাতৃত্ববোধ এবং পারস্পরিক সহযোগিতার পরিবেশ তৈরি করে। অভাবী মানুষের পাশে দাঁড়ানো সমাজের নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী করে।
রিজিক বৃদ্ধি
রমজানসহ বিশেষ সময়ে দান করলে আল্লাহ রিজিক বৃদ্ধি করেন। ইসলামি শিক্ষায় বলা হয়েছে, দান দারিদ্র্য কমায় না, বরং রিজিক বাড়ায় এবং সম্পদে বরকত আনে।
সৃষ্টিকর্তার নৈকট্য ও সন্তুষ্টি
দান হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের অন্যতম উপায়। অসহায় ও অভাবীদের সাহায্য করা মানে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কর্তব্য পালন করা। এভাবে দানকারীরা আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে এবং তাঁর সন্তুষ্টি লাভ করে।
দান শুধু একটি ইবাদত নয়, এটি মানবিকতা, সহানুভূতি এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতীক। এর মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার শান্তি ও আখেরাতের মুক্তি লাভ করে। দান মানুষের অন্তরকে নির্মল করে, সম্পদে বরকত আনে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের পথ তৈরি করে। তাই দানকে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত করা প্রত্যেক মুসলমানের কর্তব্য।
কোরআনের আলোকে পরকাল: অবিশ্বাসীদের শেষ পরিণতি
সুরা আনআম: পার্থিব জীবনকে পরকালের জন্য কাজে লাগানোর আহ্বান
কোরআনুল কারিম: সুরা আনআম, আয়াত ২৯-৩০
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
وَ قَالُوۡۤا اِنۡ هِیَ اِلَّا حَیَاتُنَا الدُّنۡیَا وَ مَا نَحۡنُ بِمَبۡعُوۡثِیۡنَ﴿۲۹﴾
وَ لَوۡ تَرٰۤی اِذۡ وُقِفُوۡا عَلٰی رَبِّهِمۡ ؕ قَالَ اَلَیۡسَ هٰذَا بِالۡحَقِّ ؕ قَالُوۡا بَلٰی وَ رَبِّنَا ؕ قَالَ فَذُوۡقُوا الۡعَذَابَ بِمَا كُنۡتُمۡ تَكۡفُرُوۡنَ﴿۳۰﴾
আল্লাহর বাণী, "আর তারা বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই একমাত্র জীবন এবং আমাদেরকে পুনরুত্থিতও করা হবে না।" (২৯)
এই আয়াতে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের মানসিকতা তুলে ধরেছেন। তারা মনে করে যে এই পার্থিব জীবনই একমাত্র সত্য এবং মৃত্যুর পর আর কোনো জীবন নেই। এই ধারণার বশবর্তী হয়ে তারা পরকালকে অস্বীকার করে এবং পার্থিব জীবনের ভোগ-বিলাসকে প্রাধান্য দেয়। ইবনে কাসিরের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, অবিশ্বাসীরা দুনিয়াতে ফিরে গেলেও একই কথা বলবে।
পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ বলছেন, "আপনি যদি তাদেরকে দেখতে পেতেন, যখন তাদেরকে নিজ প্রতিপালকের সম্মুখে দাঁড় করানো হবে এবং তিনি বলবেন, ‘এ (পুনরুত্থান) কি প্রকৃত সত্য নয়!’ তারা বলবে, ‘আমাদের প্রতিপালকের শপথ! নিশ্চয়ই এটা সত্য।’ তিনি বলবেন, ‘তবে তোমরা যে অবিশ্বাস করতে, তার জন্য তোমরা এখন শাস্তি ভোগ কর।’" (৩০)
এই আয়াতে পরকালের এক ভয়াবহ দৃশ্যের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। যখন কাফের ও পাপীরা আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে, তখন তারা তাদের ভুল উপলব্ধি করবে। কিন্তু তখন তাদের এই স্বীকারোক্তি কোনো কাজে আসবে না। মহান আল্লাহ তাদের মিথ্যাচার ও অবিশ্বাসের জন্য শাস্তি দেবেন।
এই দুটি আয়াত থেকে আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো, পার্থিব জীবনকে সঠিকভাবে কাজে লাগানো। এই জীবন আল্লাহর একটি বিরাট নেয়ামত। তাই ইসলামে আত্মহত্যা বা মৃত্যু কামনা করা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। আমাদের উচিত এই জীবনকে পরকালের পাথেয় হিসেবে ব্যবহার করা।
ইশরাক-চাশত-আওয়াবীন: কোন সময় কত রাকাআত পড়বেন?
ইসলামে নফল সালাতের বিশেষ কিছু সময় রয়েছে, যেগুলোতে ইবাদত করলে অশেষ ফযীলত অর্জন করা যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সালাতুল ইশরাক, সালাতুয যোহা (চাশত) এবং সালাতুল আওয়াবীন। অনেকেই এ তিনটি সালাতকে আলাদা আলাদা মনে করলেও প্রকৃতপক্ষে এগুলো একই নামাযের ভিন্ন ভিন্ন নাম মাত্র।
সালাতুল ইশরাক
‘ইশরাক’ অর্থ সূর্যোদয়। সূর্য উঠার প্রায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর যে সালাত আদায় করা হয়, তাকে বলা হয় সালাতুল ইশরাক। এটি মূলত সালাতুয যোহার প্রারম্ভিক সময় হিসেবেই গণ্য হয়। হাদীসে এ নামাযকে অত্যন্ত ফযীলতপূর্ণ বলা হয়েছে।
একটি হাদীসে এসেছে—
“যে ব্যক্তি ফজরের নামায জামাতে আদায় করে, তারপর সূর্যোদয় পর্যন্ত বসে আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে এবং সূর্য ওঠার পর দুই রাকাআত সালাত আদায় করে, তার জন্য একটি হজ্জ ও একটি উমরার পূর্ণ সওয়াব লেখা হয়।” (তিরমিযী, সহিহ তারগীব ৪৬১)যদিও কিছু মুহাদ্দিস এ হাদীসকে যঈফ বলেছেন, তবে ইমাম আলবানী রহ. এটিকে সহীহ হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন।
সালাতুয যোহা বা চাশত
‘যোহা’ অর্থ পূর্বাহ্ন। সূর্যের আলো যখন তীব্র হয়, অর্থাৎ যোহরের প্রায় দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পূর্বে এ সালাত আদায় করা উত্তম। ভারতীয় উপমহাদেশে একে চাশত নামেও ডাকা হয়।
সালাতুল আওয়াবীন
‘আওয়াবীন’ অর্থ আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারীরা। সালাতুয যোহাকেই হাদীসে সালাতুল আওয়াবীন বলা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন:“সালাতুয যোহা কেবল সেই ব্যক্তি নিয়মিত আদায় করে, যে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনকারী। এটাই হলো সালাতুল আওয়াবীন।” (সহিহ ইবনে খুযাইমা; সহিহ তারগীব তারহীব ১/১৬৪)
আরও একটি হাদীসে যায়দ ইবনে আরকাম (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন:“সালাতুল আওয়াবীনের সময় হলো তখন, যখন সূর্যের তাপে উটের বাচ্চাদের পা গরম হয়ে যায়।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৬৩১)
এ থেকে স্পষ্ট যে, সালাতুল আওয়াবীন বলতে মূলত সালাতুয যোহাকেই বোঝানো হয়েছে। যদিও অনেকেই মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী ছয় রাকাআত নফল সালাতকে সালাতুল আওয়াবীন বলে থাকেন, তবে উপরোক্ত হাদীসের আলোকে তা সঠিক নয়। মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে নফল সালাত পড়া অবশ্যই মুস্তাহাব, তবে তাকে সালাতুল আওয়াবীন বলা ভুল।
সালাতের সময়সীমা
ইশরাক বা যোহা নামায শুরু হয় সূর্য ওঠার প্রায় ১৫–২০ মিনিট পর থেকে। আর এর শেষ সময় হলো সূর্য মাথার উপরে উঠার আগ পর্যন্ত।
রাকাআতের সংখ্যা
এ সালাতের সর্বনিম্ন রাকাআত হলো দুই। তবে নবী (সা.) মক্কা বিজয়ের দিনে আট রাকাআত সালাতুয যোহা পড়েছিলেন। এর সর্বোচ্চ রাকাআত সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়। মুসলিম শরীফে আমর ইবনে আবাসাহ (রা.)–এর দীর্ঘ হাদীসে নবী (সা.) বলেছেন, “সূর্য উঠা পর্যন্ত নামায থেকে বিরত থাকো। তারপর সূর্য ওঠার পর নামায আদায় করো। ফেরেশতারা এতে উপস্থিত থাকেন। এভাবে সূর্য মাথার উপর উঠার আগ পর্যন্ত তুমি ইচ্ছেমতো সালাত আদায় করতে পারো।”
অতএব, দুই রাকাআত থেকে শুরু করে ৪, ৬, ৮, ১০, ১২ কিংবা তার বেশি পড়া যায়। অর্থাৎ এটি সীমাহীন নফল ইবাদত।
সালাতুল ইশরাক, সালাতুয যোহা (চাশত) এবং সালাতুল আওয়াবীন- সবগুলো একই নামাযের ভিন্ন ভিন্ন নাম। এর ফযীলত ও সওয়াব বিশাল, বিশেষত ফজরের নামায জামাতে আদায়ের পর নিয়মিত ইশরাক সালাত আদায়কারী ব্যক্তি হজ্জ ও উমরার সমতুল্য সওয়াব লাভ করেন। ইসলামী ফিকহ অনুযায়ী এ সালাতের সর্বোচ্চ রাকাআত নির্দিষ্ট না থাকায় এটি ইচ্ছেমতো আদায় করা যায়। এ নামায শুধু আত্মিক প্রশান্তি দেয় না, বরং মুমিনের আল্লাহর প্রতি অনাবিল প্রত্যাবর্তন ও ভক্তির প্রকাশ ঘটায়।
পাঠকের মতামত:
- ভিপির জরিমানা করা অর্থ জামায়াতের বায়তুল মালে জমা হচ্ছে: রিজভী
- তামিম ইকবালের অভিযোগ: বিসিবি নির্বাচনে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ চলছে
- ত্বকের যত্নে নারকেল তেল ও কফি স্ক্রাব: দূর হবে কালো দাগ
- ‘৭টি যুদ্ধ থামিয়েছি, ৭টি নোবেল চাই’: ট্রাম্পের নতুন দাবি
- ইসরায়েলের পরবর্তী লক্ষ্য কি তুরস্ক? মধ্যপ্রাচ্যে বাড়ছে উত্তেজনা
- ভারতের আসল শত্রু বিদেশি শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা: নরেন্দ্র মোদি
- আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে বিচারের আওতায় আনা উচিত: নাহিদ ইসলাম
- ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি : রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী
- দিল্লি হাই কোর্টের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জ্যাকুলিন ফের্নান্দেজের আপিল
- ২১ সেপ্টেম্বরের শেয়ারবাজার বিশ্লেষণ প্রতিবেদন
- ভারতীয় সিনেমায় পরিবার নয়, প্রতিভা: নতুন মুখ যারা ছাড়বে নিজের ছাপ
- ডিএসইতে রবিবারের লেনদেন শেষে টপ লুজার তালিকা প্রকাশ
- ডিএসইতে আজকের লেনদেন শেষে টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- সরকার টিকা ক্রয়ের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে
- ‘প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই’—সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকার
- টেকসই উন্নয়নে নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতির ওপর জোর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুস
- এশিয়া কাপে বাংলাদেশের সম্ভাবনা: মাশরাফি ও হাবিবুল বাশার সুমনের বিশ্লেষণ
- উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর যাচ্ছেন নুরুল হক নুর
- অবশেষে কাটল জট: রিজার্ভ চুরির সেই ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিরছে দেশে!
- পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিতর্ক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব কী বললেন?
- ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল দেশ, উৎপত্তিস্থল সিলেটে
- বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে না দাঁড়ালে অন্য শক্তি জায়গা নেবে : ফজলুর রহমান
- আবারও কর্মচারীদের বিক্ষোভে উত্তাল সচিবালয়
- ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছি: প্রভা
- লাতিন আমেরিকায় নতুন বিক্ষোভ, এবার পেরুতে ফুঁসে উঠেছে জেন-জি
- সন্ধ্যা পর্যন্ত সাত অঞ্চলে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস
- সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল সালাউদ্দিন আহমেদের ইন্তেকাল
- ট্রাম্প প্রশাসনের বড় সিদ্ধান্ত: এককালীন ফি নিয়ে আতঙ্কে বিদেশি কর্মীরা
- মিলিতাওয়ের দূরপাল্লার গোল, এমবাপ্পের নিখুঁত ফিনিশে রিয়ালের দাপট
- মৃত্যু কেন মুমিনের কাছে প্রিয়? হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা
- ইতিহাসের নতুন মোড়ে ব্রিটেন: আজ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি
- নীরব ঘাতক: যে ৫টি খাবার কিডনির ক্ষতি করছে
- জানেন কি? আজ স্ত্রী প্রশংসা দিবস, কেন এই দিনটি পালন করা হয়?
- সৌদি আরবে অবৈধ প্রবাসীদের বৈধ হওয়ার সুযোগ
- মহালয়া: দেবীপক্ষের শুরু, পূজার আনন্দ শুরু হলো আজ থেকে
- এশিয়া কাপ: চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান মহারণ আজ
- ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এরদোগান: টানাপোড়েনপূর্ণ সম্পর্কের পর কেন এই বৈঠক?
- আফগানিস্তান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা’: ট্রাম্পের হুমকিতে নতুন করে উত্তেজনা
- নির্বাচনের আগে জোটের নতুন সমীকরণ: কোন পথে হাঁটছে বিএনপি-জামায়াত?
- জাতিসংঘ সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, সফরসঙ্গী চার রাজনীতিবিদ
- শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর এখন ফাইনালের স্বপ্ন দেখতেই পারে বাংলাদেশ
- শানাকার তাণ্ডবে ১৬৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ল শ্রীলঙ্কা
- ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে মাত্র ৫টি সহজ উপায়ে
- হিজাব-নিকাব নিয়ে হেনস্তা বন্ধে পাবিপ্রবি প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ
- সুপার ফোরে বাংলাদেশের দারুণ শুরু, তাসকিন-মেহেদীর আঘাতে চাপে শ্রীলঙ্কা
- ভারত আক্রমণ করলে সৌদি আরব পাশে থাকবে: পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী
- শেখ হাসিনার দুঃশাসনের ইতিহাস নিয়ে ঢাকায় হচ্ছে ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’
- চট্টগ্রাম বন্দরের শুল্ক স্থগিতের ঘোষণা: কী প্রভাব পড়বে রপ্তানিকারকদের ওপর?
- এনআইডি সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তির সময়সীমা বেঁধে দিল ইসি
- মণিপুরে জাতিগত সংঘাতের পর কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর প্রথম হামলা
- রেনেসাঁর দর্শন ও দিশা: গ্রিক-রোমান জ্ঞান, মুসলিম দার্শনিকদের ভূমিকা ও আধুনিকতার উন্মেষ
- অটোমান সাম্রাজ্যের ইতিহাস: উত্থান, পতন ও সভ্যতা–বিজ্ঞানে অবদান
- গ্রেফতার বিএনপি নেতা হাজতে সিগারেট–ফোনে ব্যস্ত, ফাঁস হলো ছবি
- আফগানিস্তানে নারী লেখকদের বই নিষিদ্ধ করল তালেবান
- বরিশালে ১৭ বিয়ে কাণ্ড: বন কর্মকর্তা কবির হোসেন বরখাস্ত
- আদালত চত্বরে ব্যারিস্টার সুমনের বারবার উচ্চারণ: ‘ভালো থাকুক বাংলাদেশ’
- ১৩তম জাতীয় নির্বাচনের আগে ইসি’র নতুন সীমানা, ভোটারদের উদ্বেগ বহাল
- নেপালের গণঅভ্যুত্থান থেকে বাংলাদেশের শিক্ষা: বৈধতার সংকট, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও আগামীর চ্যালেঞ্জ
- ভদ্রতার নিয়ম ভাঙল ভারত, ক্ষুব্ধ পাকিস্তান
- বলিউডের গ্ল্যামার থেকে ব্যক্তিগত সংগ্রামের গল্প: জিনাত আমানের জীবন ও ভালোবাসা
- ডিএসই ব্লক মার্কেট বিশ্লেষণ
- ১৭ সেপ্টেম্বর লেনদেনে উত্থান যে ১০ টি শেয়ারে
- “অপরাধী যে বাহিনীরই হোক, বিচারের আওতায় আনতে হবে”
- যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসে ভারতীয় প্রৌঢ় খুন: অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা ট্রাম্পের
- ১৫ সেপ্টেম্বর শেয়ারবাজারে শীর্ষ দশ গেইনার