রান্নাঘরের যে ৫টি জিনিস নিঃশব্দে শরীরে বিষ ছড়াচ্ছে

আমরা সাধারণত রান্নাঘরকে পরিবারের সুস্বাস্থ্য ও পুষ্টির আধার হিসেবে বিবেচনা করি। তবে প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহৃত সাধারণ কিছু উপকরণ যে আমাদের অলক্ষ্যেই শরীরের মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনছে, তা নিয়ে সম্প্রতি এক বিশেষ সতর্কবার্তা দিয়েছেন খ্যাতনামা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ড. অলোক চোপড়া। তার মতে আমরা কী খাবার রান্না করছি তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো কোন পাত্রে বা কী উপকরণ দিয়ে তা রান্না করছি। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় তিনি আধুনিক রান্নাঘরের পাঁচটি প্রচলিত জিনিসের দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করেছেন।
ড. চোপড়ার সতর্কবার্তায় তালিকার প্রথমেই রয়েছে জনপ্রিয় ‘নন-স্টিক ফ্রাইপ্যান’। তিনি জানিয়েছেন যে এই প্যানগুলো অতিরিক্ত উত্তপ্ত হলে এক ধরণের বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হয়। বিশেষ করে যদি প্যানের গায়ে আঁচড় থাকে, তবে সেখান থেকে পিএফওএ এবং পিএফএএস জাতীয় রাসায়নিক সরাসরি খাবারের সঙ্গে মিশে যায় যা শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। এই ঝুঁকি এড়াতে তিনি স্টেইনলেস স্টিল, কাস্ট আয়রন বা সিরামিকের পাত্র ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন। একইভাবে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহারের বিপদ সম্পর্কেও তিনি সতর্ক করেছেন। উচ্চ তাপে টক জাতীয় খাবারের সংস্পর্শে এলে ফয়েল থেকে অ্যালুমিনিয়াম খাবারে মিশে যায় যা দীর্ঘমেয়াদে স্নায়বিক সমস্যা ও অ্যালঝেইমার রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
রান্নাঘরের আরেকটি নীরব ঘাতক হলো প্লাস্টিকের পাত্র এবং রান্নার সরঞ্জাম। ড. অলোক চোপড়া বলেন যে প্লাস্টিকের চামচ বা স্প্যাচুলা দিয়ে গরম খাবার নাড়ালে সেখান থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং বিপিএ-এর মতো রাসায়নিক শরীরে প্রবেশ করে যা প্রজননক্ষমতা কমানোর পাশাপাশি রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও দুর্বল করে দেয়। বিশেষ করে কালো রঙের প্লাস্টিক আরও বেশি বিপজ্জনক কারণ এগুলো অনেক সময় ইলেকট্রনিক বর্জ্য থেকে পুনরুৎপাদন করা হয়। খাবার সংরক্ষণের জন্য কাচ বা স্টেইনলেস স্টিলের পাত্রই সবচেয়ে নিরাপদ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সবশেষে তিনি গ্যাস স্টোভ থেকে নির্গত ধোঁয়ার বিপদ নিয়ে কথা বলেছেন। যেসব রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বায়ুচলাচলের ব্যবস্থা নেই, সেখানে গ্যাস স্টোভ থেকে নির্গত নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড এবং কার্বন মনোঅক্সাইড শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও ফুসফুসের জটিল সংক্রমণের কারণ হতে পারে। ড. চোপড়ার মতে সম্ভব হলে ইন্ডাকশন কুকটপ ব্যবহার করা উত্তম অথবা রান্নার সময় অবশ্যই জানালা খোলা রাখা বা শক্তিশালী এক্সহস্ট ফ্যান ব্যবহার করা জরুরি। প্রতিদিনের এই ছোট ছোট পরিবর্তনগুলোই দীর্ঘমেয়াদে বড় ধরণের স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে আমাদের রক্ষা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অনিদ্রা দূর করতে রাতের সহজ অভ্যাস
ব্যস্ত জীবন, অতিরিক্ত স্ক্রিন ব্যবহার এবং মানসিক চাপের কারণে অনিদ্রা এখন একটি নীরব জনস্বাস্থ্য সমস্যায় পরিণত হয়েছে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শুধু ক্লান্তিই বাড়ে না, দীর্ঘমেয়াদে মনোযোগহীনতা, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া, মানসিক অস্থিরতা এবং শারীরিক নানা জটিলতাও দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওষুধের ওপর নির্ভর না করে রাতের কিছু নিয়মিত অভ্যাস বদলালেই অনিদ্রা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
কেন রাতের রুটিন ঘুমে প্রভাব ফেলে
মানুষের শরীর একটি নির্দিষ্ট জৈব ছন্দ অনুযায়ী কাজ করে। রাতে আলো, শব্দ, খাবার ও মানসিক উত্তেজনা এই ছন্দকে বিঘ্নিত করলে ঘুম দেরিতে আসে অথবা গভীর হয় না। ফলে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া বা সকালে ক্লান্ত বোধ করার প্রবণতা বাড়ে। সুশৃঙ্খল রাতের রুটিন শরীরকে নিয়মে ফেরাতে সহায়তা করে।
অনিদ্রা দূর করতে রাতের কার্যকর অভ্যাস
নির্দিষ্ট ঘুমের সময়সূচী বজায় রাখা
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা শরীরকে একটি স্থায়ী সংকেত দেয়। ছুটির দিনেও সময়সূচী বদল না করলে ঘুমের গভীরতা ও স্থায়িত্ব বাড়ে।
ঘুমের আগে স্ক্রিন ব্যবহার কমানো
ঘুমানোর অন্তত ৩০ থেকে ৬০ মিনিট আগে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও টিভি বন্ধ রাখা জরুরি। এসব ডিভাইসের নীল আলো মেলাটোনিন হরমোনের নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, যা ঘুম আসার প্রক্রিয়াকে বিলম্বিত করে।
আরামদায়ক প্রাক-ঘুম রুটিন তৈরি করা
হালকা গরম পানিতে গোসল, বই পড়া, ধীর গতির সঙ্গীত শোনা বা কয়েক মিনিটের ধ্যান মস্তিষ্ককে শান্ত করে। এই অভ্যাসগুলো শরীরকে জানিয়ে দেয় যে বিশ্রামের সময় এসেছে।
খাবার ও পানীয়ের বিষয়ে সতর্কতা
রাতে ভারী ও চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। ক্যাফেইন, অ্যালকোহল ও নিকোটিন স্নায়ুকে উত্তেজিত করে ঘুমের স্বাভাবিক ধাপ নষ্ট করে। ঘুমানোর আগে এক গ্লাস গরম দুধ বা ক্যাফেইন-মুক্ত ভেষজ চা আরাম দিতে পারে।
শোবার ঘরের পরিবেশ ঠিক রাখা
ঘুমের জন্য ঘর অন্ধকার, নীরব এবং তুলনামূলক শীতল রাখা সবচেয়ে উপযোগী। তাপমাত্রা ১৮ থেকে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে শরীর দ্রুত বিশ্রামে যেতে পারে।
ব্যায়ামের সঠিক সময় নির্বাচন
নিয়মিত শরীরচর্চা ঘুমের মান উন্নত করে, তবে শোবার ঠিক আগে ব্যায়াম করলে শরীর অতিরিক্ত সজাগ হয়ে ওঠে। অন্তত চার ঘণ্টা আগে ব্যায়াম শেষ করা ভালো।
দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণের কৌশল
ঘুমানোর আগে মাথায় ঘুরতে থাকা চিন্তাগুলো কাগজে লিখে রেখে নিজেকে আশ্বস্ত করা যেতে পারে যে এগুলো পরদিন ভাবা হবে। এতে মানসিক চাপ কমে এবং ঘুম সহজ হয়।
ঘুম না এলে করণীয়
বিছানায় শুয়ে ১৫ মিনিটের বেশি সময় ঘুম না এলে উঠে অন্য ঘরে গিয়ে শান্ত কোনো কাজ করা ভালো। ঘুম ভাব ফিরে এলে আবার বিছানায় যাওয়া উচিত।
যে অভ্যাসগুলো অনিদ্রা বাড়ায়
দিনের বেলায় দীর্ঘ সময় ঘুমানো, সন্ধ্যার পর ক্যাফেইন গ্রহণ, রাতে পেট ভরে খাওয়া এবং ঘুমের সময় বারবার পরিবর্তন করা অনিদ্রাকে দীর্ঘস্থায়ী করে তোলে। এসব অভ্যাস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষ সতর্কতা
অনিদ্রা হঠাৎ তৈরি হয় না, আবার দ্রুত সেরে যায়ও না। তবে নিয়মিত স্বাস্থ্যকর রাতের অভ্যাস গড়ে তুললে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ঘুমের মানে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যায়। দীর্ঘদিন অনিদ্রা থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
রাতে ঘুমানোর আগে কী খাবেন, কী খাবেন না
ভালো ঘুম শুধু ক্লান্তি দূর করে না, বরং শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা, মানসিক স্থিতি, হরমোনের ভারসাম্য এবং পরদিনের কর্মক্ষমতাও নির্ধারণ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঘুমানোর আগের খাদ্যাভ্যাস ঘুমের মান নির্ধারণে অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখে। সঠিক খাবার মস্তিষ্ককে বিশ্রামের সংকেত দেয়, আর ভুল খাবার ঘুমের স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে।
কেন ঘুমের আগে খাবার গুরুত্বপূর্ণ
ঘুমের সময় শরীর নিজেকে মেরামত করে। এই সময় মেলাটোনিন ও সেরোটোনিন নামের হরমোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিছু খাবার এই হরমোন নিঃসরণে সহায়তা করে, আবার কিছু খাবার স্নায়ুকে অতিরিক্ত সক্রিয় করে তোলে। তাই রাতে কী খাবেন, সেটি শুধু পেটের বিষয় নয়; এটি পুরো স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে জড়িত।
ঘুমানোর আগে যেসব খাবার খাওয়া উপকারী
কলা
কলা ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়ামে সমৃদ্ধ, যা পেশী শিথিল করে এবং স্নায়ুকে শান্ত করে। ঘুমানোর আগে একটি কলা শরীরকে ধীরে ধীরে বিশ্রামের জন্য প্রস্তুত করে।
গরম দুধ
গরম দুধে থাকা ট্রিপটোফ্যান নামক অ্যামিনো অ্যাসিড মস্তিষ্কে ঘুমের সংকেত পাঠাতে সাহায্য করে। অনেকের ক্ষেত্রে এটি মানসিক প্রশান্তিও আনে।
বাদাম (বিশেষ করে কাঠবাদাম)
বাদামে ম্যাগনেসিয়াম ও প্রাকৃতিক মেলাটোনিন থাকে, যা ঘুমের জৈব ঘড়ি ঠিক রাখতে সহায়ক। অল্প কয়েকটি বাদামই যথেষ্ট।
মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু সহজপাচ্য এবং এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম ও পটাশিয়াম স্নায়ু ও পেশীকে প্রশান্ত করে। ভারী খাবারের বিকল্প হিসেবে এটি ভালো।
চেরি
চেরি প্রাকৃতিকভাবে মেলাটোনিনের উৎস। নিয়মিত অল্প পরিমাণে খেলে ঘুমের সময়সূচি স্থিতিশীল হতে পারে।
হালকা কার্বোহাইড্রেট
ওটস, হোল গ্রেইন ক্র্যাকার বা অল্প ভাত ট্রিপটোফ্যানকে মস্তিষ্কে পৌঁছাতে সহায়তা করে, ফলে ঘুম সহজ হয়।
ঘুমানোর আগে যেসব খাবার এড়িয়ে চলা জরুরি
ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয়
কফি, চা, চকলেট ও এনার্জি ড্রিংক স্নায়ুকে সক্রিয় রাখে এবং ঘুম আসতে বাধা দেয়। সন্ধ্যার পর এগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো।
অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার
মিষ্টি বা ডেজার্ট রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়িয়ে আবার কমিয়ে দেয়, যার ফলে মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
মশলাদার খাবার
ঝাল ও মশলাদার খাবার অ্যাসিডিটি, বুকজ্বালা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করে, যা ঘুম ব্যাহত করে।
চর্বিযুক্ত ও ভাজা খাবার
এ ধরনের খাবার হজম হতে বেশি সময় নেয়, ফলে রাতে শরীর বিশ্রামের বদলে হজমে ব্যস্ত থাকে।
অতিরিক্ত জলীয় খাবার
রাতে বেশি স্যুপ বা ফল খেলে বারবার প্রস্রাবের চাপ তৈরি হতে পারে, যা ঘুম ভাঙার কারণ হয়।
অ্যালকোহল
অনেকে ভাবেন অ্যালকোহলে ঘুম আসে, কিন্তু এটি গভীর ঘুমের ধাপ নষ্ট করে এবং ঘন ঘন ঘুম ভাঙায়।
টাইরামিনসমৃদ্ধ খাবার
পুরোনো বা সংরক্ষিত কিছু পনিরে থাকা টাইরামিন স্নায়ুকে অতিরিক্ত সজাগ করে তোলে।
হাড়ের শক্তি ও রোগ প্রতিরোধে রোদের জাদুকরী উপকারিতা
আধুনিক ব্যস্ত জীবনধারা আমাদের দিনের বেশিরভাগ সময় চার দেয়ালের মাঝে আটকে দিচ্ছে। ঘর কিংবা অফিসের কৃত্রিম আলো আর স্মার্টফোনের স্ক্রিনে বুঁদ হয়ে থাকার ফলে বর্তমান প্রজন্মের বড় একটি অংশ প্রাকৃতিক সূর্যালোক থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে বিজ্ঞান বলছে যে সূর্যের আলো থেকে দূরে থাকা কেবল একটি অভ্যাস নয় বরং এটি আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য বড় ধরনের হুমকি। নিয়মিত রোদে সময় কাটানো শরীর ও মনের সুস্থতা বজায় রাখার পাশাপাশি মানুষের গড় আয়ু বাড়াতেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সূর্যের আলোর সবচেয়ে বড় অবদান হলো শরীরে ভিটামিন ডি তৈরি করা। যখন ত্বক রোদের সংস্পর্শে আসে তখন প্রাকৃতিকভাবেই এই ভিটামিন উৎপন্ন হয় যা হাড় শক্ত রাখা এবং পেশির কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে অপরিহার্য। শরীরে ভিটামিন ডির পর্যাপ্ত উপস্থিতি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও সক্রিয় করে তোলে। এছাড়া হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্যের ওপরও রোদের ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে। সূর্যের আলো শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড নিঃসরণে সহায়তা করে যা রক্তনালী প্রসারিত করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির ক্ষেত্রে সূর্যালোক একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-ডিপ্রেসেন্ট হিসেবে কাজ করে। রোদ পোহালে মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক এক ধরণের হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় যা মানুষের মেজাজ বা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। দীর্ঘদিনের মানসিক ক্লান্তি বা অবসাদ কাটাতে সূর্যের আলো ওষুধের মতো কাজ করে। এমনকি রাতের ঘুমের গুণগত মান উন্নত করতেও এটি অপরিহার্য। সকালের রোদ শরীরের ভেতরকার জৈবঘড়ি বা সার্কাডিয়ান রিদমকে সঠিকভাবে পরিচালনা করে যার ফলে রাতে গভীর ও আরামদায়ক ঘুম নিশ্চিত হয়।
সরাসরি স্বাস্থ্যগত উপকারের পাশাপাশি রোদে সময় কাটানোর অর্থ হলো বাইরের মুক্ত পরিবেশে চলাফেরা ও শারীরিক সক্রিয়তা। খোলা হাওয়ায় হাঁটাচলা করলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের মতো মরণব্যাধির ঝুঁকি কমে আসে। তবে মনে রাখতে হবে যে অতিরিক্ত রোদ আবার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বিশেষ করে দুপুরের কড়া রোদ এড়িয়ে চলে সকাল বা বিকেলের নরম রোদে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় কাটানোই সবচেয়ে বেশি উপযোগী। সুস্থ শরীর আর প্রশান্ত মনের জন্য প্রতিদিন কিছুটা সময় হলেও প্রাকৃতিক সূর্যের আলো উপভোগ করা এখন সময়ের দাবি।
শীতের বুকে জমা কফ দূর করবে তুলসী চা: জানুন জাদুকরী গুণ
শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঘরে সর্দি, কাশি আর বুকে জমে থাকা কফের সমস্যা যেন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা কমে যাওয়ায় ভাইরাসজনিত সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই সরাসরি অ্যান্টিবায়োটিক বা কফ সিরাপের দিকে ঝুঁকলেও প্রাচীন ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্র বা আয়ুর্বেদ বলছে ভিন্ন কথা। ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপায়ে শীতের এই অস্বস্তি থেকে মুক্তি পেতে তুলসী পাতার চা হতে পারে একটি অত্যন্ত কার্যকর ও নিরাপদ সমাধান।
আয়ুর্বেদে তুলসীকে ‘ভেষজের রানি’ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে কারণ এর রয়েছে অসাধারণ ঔষধি গুণ। তুলসী পাতায় বিদ্যমান ‘ইউজেনল’ নামক উপাদান শরীরের প্রদাহ কমাতে ও ব্যথা উপশমে কাজ করে। অন্যদিকে এতে থাকা ক্যাম্পফিন ও সিনেমোল ফুসফুসের শ্বাসনালিতে জমে থাকা ঘন শ্লেষ্মাকে তরল করতে সাহায্য করে। এর ফলে জমে থাকা কফ সহজে বের হয়ে আসে এবং শ্বাস নিতে স্বস্তি মেলে। নিয়মিত তুলসী চা পানে শরীরের প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী হয় যা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে শরীরকে ভেতর থেকে প্রস্তুত করে তোলে।
বিশেষজ্ঞদের মতে তুলসী চা কেবল কফ পাতলা করে না বরং শ্বাসনালির ভেতরের প্রদাহ কমিয়ে কাশির তীব্রতাও হ্রাস করে। সাধারণ সর্দি, ফ্লু কিংবা শ্বাসযন্ত্রের যেকোনো সংক্রমণে এই পানীয় বিশেষ উপকারী। এর সঙ্গে সামান্য কুচানো আদা ও মধু মিশিয়ে নিলে গলা ব্যথা ও সংক্রমণ থেকে দ্রুত আরাম পাওয়া সম্ভব। তুলসীর অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল গুণাগুণ শরীরকে দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা প্রদান করে যা শীতের এই প্রতিকূল আবহাওয়ায় সুস্থ থাকতে সাহায্য করে।
তাজা তুলসী পাতা দিয়ে বাড়িতেই খুব সহজে এই চা তৈরি করা যায়। এক কাপ পানিতে ৮ থেকে ১০টি তুলসী পাতা এবং সামান্য আদা দিয়ে কয়েক মিনিট ফুটিয়ে নিলেই এটি প্রস্তুত হয়ে যায়। পানি ফুটে কিছুটা কমে এলে ছেঁকে নিয়ে হালকা গরম অবস্থায় মধু বা গুড় মিশিয়ে পান করা সবচেয়ে ভালো। প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় অন্তত দুইবার এই চা পানের অভ্যাস শীতকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক কমিয়ে দেয়। তবে শারীরিক সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে বা তীব্রতা বাড়লে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।
অনিদ্রা ও ক্লান্তি দূর হবে: রাতে ঘুমানোর আগে সেরা ৫টি খাবারের তালিকা
সুস্থ জীবনের জন্য কেবল পুষ্টিকর খাবার গ্রহণই যথেষ্ট নয় বরং দিনের কোন সময়ে আমরা কী খাচ্ছি তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পুষ্টিবিদদের মতে দিনের শেষভাগে আমাদের গৃহীত খাদ্যের ওপর নির্ভর করে শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা, ঘুমের গভীরতা এবং পরবর্তী দিনের কর্মশক্তি। রাতে হালকা কিন্তু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবার যেমন শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান দেয় তেমনি এটি হজম প্রক্রিয়াকেও সহজ করে তোলে। রাতের খাবারের তালিকায় বিশেষ কিছু পরিবর্তন আনলে তা দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সুরক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
রাতের আদর্শ খাবারের তালিকায় পুষ্টিবিদরা প্রথমেই রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন এক গ্লাস হালকা গরম দুধ। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম ও ট্রিপটোফ্যান নামক উপাদান মস্তিষ্কে প্রশান্তি আনে যা দ্রুত ঘুমাতে সাহায্য করে। এছাড়া যারা দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখতে চান তাদের জন্য ওটস একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে। ওটসে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা হজম প্রক্রিয়া সচল রাখে এবং মধ্যরাতের ক্ষুধাবোধ কমিয়ে দেয়। পেশি পুনর্গঠন এবং প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে একটি সেদ্ধ ডিমও রাতের জন্য বেশ উপযোগী।
শাকসবজির গুরুত্ব তুলে ধরে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে রাতে কম ক্যালরিযুক্ত সবজি স্যুপ শরীরকে হাইড্রেটেড রাখার পাশাপাশি ভিটামিন ও খনিজের যোগান দেয়। এছাড়া পটাশিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ কলা স্নায়ুকে শান্ত রাখে যা ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক। হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা এবং নিরবচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য সামান্য পরিমাণে কাঠবাদাম বা আখরোট খাওয়া যেতে পারে। তবে পুষ্টিবিদরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত বা গুরুপাক খাবার রাতে এড়িয়ে চলাই ভালো অন্যথায় বদহজমের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
সুস্থ থাকতে কেবল সঠিক খাবার নির্বাচনই নয় বরং খাওয়ার সময়ের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে ঘুমানোর অন্তত এক থেকে দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করা উচিত। এটি পাকস্থলীকে খাবার হজম করার পর্যাপ্ত সময় দেয় যার ফলে শরীর ও মন সতেজ থাকে। সঠিক খাদ্যাভ্যাস আর নিয়মিত জীবনযাত্রাই পারে আধুনিক জীবনের নানা শারীরিক জটিলতা থেকে মুক্তি দিতে।
সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পেতে, গুড়ের চা পানের অবিশ্বাস্য ৪ উপকারিতা
শীতের আগমনে ঘরে ঘরে হাঁচি, কাশি এবং ঠাণ্ডাজনিত শারীরিক সমস্যার প্রাদুর্ভাব যেন লেগেই থাকে। ঋতু পরিবর্তনের এই সময়ে সর্দি ও গলার ব্যথার পাশাপাশি অনেকেরই কাজের উদ্যম বা এনার্জি কমে যায়। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই সাধারণ সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে দামি ওষুধের প্রয়োজন নেই বরং প্রতিদিনের চায়ের সঙ্গে সামান্য গুড় মিশিয়ে খেলেই মিলতে পারে জাদুকরী সমাধান। গুড় কেবল খাবারের স্বাদই বাড়ায় না বরং শীতকালে শরীরকে ভেতর থেকে উষ্ণ ও রোগমুক্ত রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে।
চায়ের সঙ্গে গুড় মেশালে শরীরে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বহুগুণ বেড়ে যায়। গুড়ে থাকা আয়রন ও জিঙ্ক সরাসরি শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে যা নিয়মিত পানে সর্দি-কাশির প্রবণতা কমিয়ে দেয়। এছাড়া শীতকালীন পিকনিক বা ভারী খাবারের ফলে সৃষ্ট হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও গুড় অত্যন্ত কার্যকর। দিনে অন্তত এক থেকে দুই কাপ গুড়ের চা পান করলে পাকস্থলী পরিষ্কার থাকে এবং বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত হয়।
বায়ুদূষণ এবং তীব্র ঠাণ্ডার কারণে যাদের শ্বাসকষ্ট বা ফুসফুসের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য গুড় বিশেষ আশীর্বাদ স্বরূপ। এটি ফুসফুস ও শ্বাসনালী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে যা বিশেষ করে সিওপিডি রোগীদের জন্য বেশ আরামদায়ক। পাশাপাশি গুড় রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং লিভার থেকে বিষাক্ত টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে ত্বকের উজ্জ্বলতার ওপর।
তবে গুড়ের চা তৈরির ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম মানা জরুরি। চা ফোটানোর সময় সরাসরি গুড় মেশালে পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর পরিবর্তে চা পাতা, আদা ও এলাচ ফুটিয়ে ছেঁকে নেওয়ার পর কাপে এক চা চামচ গুড় বা গুড়ের পাউডার মেশানোই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। উল্লেখ্য যে গুড় মিশিয়ে চা পান করলে দুধ এড়িয়ে চলাই ভালো। শীতের এই দিনগুলোতে নিজেকে সজীব ও রোগমুক্ত রাখতে প্রতিদিনের অভ্যাসে গুড়ের চা অন্তর্ভুক্ত করা একটি চমৎকার স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্ত হতে পারে।
সূত্র : এই সময় অনলাইন
ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে সেরা ৫ ইনডোর প্ল্যান্ট
ঘরের ভেতরের বাতাস অনেক সময় বাইরের তুলনায় বেশি দূষিত হয়ে ওঠে। এসি, রান্নার ধোঁয়া, আসবাবপত্রের কেমিক্যাল ও পরিষ্কারক দ্রব্য থেকে নির্গত ফরমালডিহাইড, বেনজিন ও কার্বন মনোক্সাইডের মতো ক্ষতিকর গ্যাস ধীরে ধীরে ঘরের বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে। এই সমস্যা সমাধানে প্রাকৃতিক ও কার্যকর উপায় হতে পারে ইনডোর প্ল্যান্ট। গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট গাছ বাতাস থেকে বিষাক্ত উপাদান শোষণ করে পরিবেশকে বিশুদ্ধ ও সতেজ রাখতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত ঘরে সবুজ গাছ রাখলে শুধু বাতাস পরিষ্কার হয় না, বরং মানসিক প্রশান্তি বাড়ে, আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা কমে। নিচে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে সবচেয়ে কার্যকর পাঁচটি ইনডোর প্ল্যান্টের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।
প্রথমেই রয়েছে স্নেক প্ল্যান্ট। এই গাছটি কম আলোতেও সহজে বেড়ে ওঠে এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো এটি রাতে অক্সিজেন ছাড়ে। ফলে শোবার ঘরের জন্য এটি অত্যন্ত উপযোগী। কার্বন ডাই-অক্সাইড ও ফরমালডিহাইড শোষণ করে স্নেক প্ল্যান্ট ঘরের বাতাসকে স্বাস্থ্যসম্মত রাখতে সহায়তা করে।
দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ গাছ পিস লিলি। এটি ফরমালডিহাইড ও বেনজিনের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিক দূর করতে কার্যকর। একই সঙ্গে এটি বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায়, যা শুষ্ক আবহাওয়ায় শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জির ঝুঁকি কমাতে সহায়ক। ফুলের সৌন্দর্যের কারণে ঘরের নান্দনিকতাও বৃদ্ধি পায়।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে স্পাইডার প্ল্যান্ট। খুব কম যত্নে বেড়ে ওঠা এই গাছটি নতুনদের জন্য আদর্শ। এটি বাতাস থেকে কার্বন মনোক্সাইড ও অন্যান্য দূষক শোষণ করতে পারে এবং দ্রুত বংশবিস্তার করে ঘরের পরিবেশ আরও সবুজ করে তোলে।
চতুর্থ গাছ মানি প্ল্যান্ট, যাকে ডেভিল’স আইভি নামেও ডাকা হয়। এই গাছটি প্রায় সব ধরনের পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। ফরমালডিহাইড, বেনজিনসহ বিভিন্ন VOCs শোষণের মাধ্যমে এটি ঘরের বাতাস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। অনেকেই এটিকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবেও বিবেচনা করেন।
পঞ্চম এবং অত্যন্ত কার্যকর গাছ হলো বোস্টন ফার্ন। এই ফার্ন জাতীয় গাছ বাতাস থেকে জাইলিন ও টলুইনের মতো দূষণকারী উপাদান দূর করতে বিশেষভাবে সক্ষম। পাশাপাশি এটি ঘরের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা ত্বক ও শ্বাসতন্ত্রের জন্য উপকারী।
এছাড়াও ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখতে আরও কিছু গাছ কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে অ্যারিকা পাম, ইংলিশ আইভি, রাবার প্ল্যান্ট, ড্রেসিনা এবং জেরবেরা ডেইজি। এসব গাছ ঘরের সৌন্দর্য বাড়ানোর পাশাপাশি প্রাকৃতিক এয়ার পিউরিফায়ার হিসেবে কাজ করে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ঘরে কয়েকটি সঠিক ইনডোর প্ল্যান্ট রাখলে আলাদা কোনো যন্ত্র ছাড়াই বাতাস পরিষ্কার রাখা সম্ভব। নিয়মিত পানি দেওয়া, পর্যাপ্ত আলো নিশ্চিত করা এবং মাঝেমধ্যে পাতাগুলো পরিষ্কার রাখলেই এই গাছগুলো দীর্ঘদিন সুস্থ থাকবে এবং আপনার ঘরের পরিবেশকে রাখবে আরও স্বাস্থ্যকর ও প্রাণবন্ত।
বয়স বাড়লেও টেস্টোস্টেরন থাকবে অটুট: জানুন কার্যকরী উপায়
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের দেহে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিকভাবেই কমতে শুরু করে। চিকিৎসকরা সতর্ক করে বলছেন যে এই হরমোনের ঘাটতি দেখা দিলে শরীরে ক্লান্তি, যৌন সক্ষমতা হ্রাস, মাংসপেশির দুর্বলতা এমনকি গভীর মানসিক অবসাদও দেখা দিতে পারে। তবে সুসংবাদ হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের মাধ্যমে বয়স বাড়লেও এই হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখা সম্ভব বলে গবেষকরা দাবি করছেন। হরমোন উৎপাদনে সহায়ক কিছু নির্দিষ্ট খাবার নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখলে পুরুষরা দীর্ঘকাল সজীব ও শক্তিশালী থাকতে পারেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে টেস্টোস্টেরন বাড়াতে প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ডিম অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে। এছাড়া বাদাম ও আখরোটে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট এবং জিঙ্ক হরমোন বৃদ্ধিতে সরাসরি সহায়তা দেয়। শরীরকে শক্তিশালী রাখতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ চর্বিহীন মাংস ও সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-র উৎস হিসেবে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার হরমোন ব্যালেন্স ঠিক রাখতে অপরিহার্য। পাশাপাশি উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে ডাল ও শস্যজাতীয় খাবার টেস্টোস্টেরনের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হতে পারে।
সবুজ শাকসবজি বিশেষ করে পালং শাক ও ব্রোকলিতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম দেহে হরমোন উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ যোগান দেয়। ফলের মধ্যে ডালিম ও কলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট টেস্টোস্টেরনের মাত্রাকে স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। তবে কেবল খাবারই যথেষ্ট নয় বরং হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি। বিশেষজ্ঞরা আরও মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের হরমোন নিঃসরণ প্রক্রিয়াকে সচল রাখতে অন্যতম প্রধান শর্ত। সঠিক খাবার আর সুশৃঙ্খল জীবনযাপনই পারে বার্ধক্যেও পুরুষের জীবনীশক্তি অটুট রাখতে।
থামবে বয়সের চাকা: বৃদ্ধ কোষকে তারুণ্য দেবে ‘জাদুকরী ফুল’
মানুষের চিরকালীন স্বপ্ন বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখা বা তারুণ্য ধরে রাখা নিয়ে বিজ্ঞানীদের গবেষণার শেষ নেই। এবার টেক্সাসের একদল গবেষক দাবি করেছেন, তারা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ধীর করার এবং বয়সের ছাপ মুছে ফেলার এক অভিনব উপায় খুঁজে পেয়েছেন। তাদের উদ্ভাবিত এই পদ্ধতিতে দুর্বল ও বয়স্ক মানবকোষকে পুনরুজ্জীবিত করা সম্ভব হবে, যা চিকিৎসা বিজ্ঞানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। গবেষকরা মূলত কোষের শক্তি উৎপাদনকারী অংশ বা ‘পাওয়ার হাউস’ খ্যাত মাইটোকন্ড্রিয়াকে পুনরায় সক্রিয় করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানবদেহে মাইটোকন্ড্রিয়ার সংখ্যা ও কার্যক্ষমতা কমতে থাকে, যার ফলে হৃদরোগ, স্নায়ুজনিত সমস্যা এবং পেশির দুর্বলতাসহ নানা বার্ধক্যজনিত রোগ দেখা দেয়।
এই সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানীরা মলিবডেনাম ডাইসালফাইড দিয়ে ফুলের মতো আকৃতির এক বিশেষ ধরনের অতিক্ষুদ্র কণা তৈরি করেছেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘ন্যানোফ্লাওয়ার’। স্পঞ্জ জাতীয় ছিদ্রযুক্ত এই কণাগুলো কোষের জন্য ক্ষতিকর অক্সিজেন অণু বা রিয়্যাক্টিভ অক্সিজেন স্পিসিস শুষে নিতে সক্ষম। একই সঙ্গে এটি কোষের নির্দিষ্ট কিছু জিনকে সক্রিয় করে যা নতুন মাইটোকন্ড্রিয়া তৈরিতে সহায়তা করে। গবেষণার অন্যতম গবেষক ও বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অখিলেশ গাহারওয়ার জানিয়েছেন, তারা সুস্থ কোষগুলোকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন যাতে সেগুলো দুর্বল বা ক্ষতিগ্রস্ত কোষের সঙ্গে নিজেদের মাইটোকন্ড্রিয়া ভাগ করে নিতে পারে। কোনো ধরনের জেনেটিক পরিবর্তন বা ওষুধের ব্যবহার ছাড়াই এই পদ্ধতিতে বৃদ্ধ কোষকে সজীব করে তোলা সম্ভব।
গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণত স্টেম সেল প্রাকৃতিকভাবেই প্রতিবেশী কোষে মাইটোকন্ড্রিয়া শেয়ার করে, তবে ন্যানোফ্লাওয়ার ব্যবহারের ফলে এই শেয়ারিংয়ের হার প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। এর ফলাফলও বেশ চমকপ্রদ। স্মুথ মাংসপেশির কোষে শক্তি পুনরুদ্ধারের হার তিন থেকে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কেমোথেরাপিতে ক্ষতিগ্রস্ত হৃদপেশির কোষগুলোর বেঁচে থাকার হারও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। জেনেটিসিস্ট জন সুকার এই প্রযুক্তিকে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, এটি বার্ধক্যজনিত দুর্বলতা, হৃদরোগ ও পেশির অবক্ষয় রোধে চিকিৎসার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে এবং ভবিষ্যতে আরও নতুন আবিষ্কারের পথ দেখাবে।
পাঠকের মতামত:
- রান্নাঘরের যে ৫টি জিনিস নিঃশব্দে শরীরে বিষ ছড়াচ্ছে
- পুলিশ ও প্রশাসন চালানো এখন কঠিন কাজ: আইন উপদেষ্টা
- দেশকে রক্ষা করবে বিএনপিই: তারেক রহমান
- কূটনৈতিক এলাকায় বিক্ষোভকারীদের হানা: দিল্লির কাছে জবাবদিহি চায় ঢাকা
- ভারতের যুবাদের নিয়ে ছেলেখেলা: এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান
- হাদি হত্যার ঘাতক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি
- ৩ দিনের রিমান্ড শেষে জানা গেল হান্নান নির্দোষ: পেলেন জামিন
- দুধপুলি পিঠা বানাতে জানুন গোপন টিপস
- তফসিলের পর সেনাপ্রধানের সাথে প্রথম বৈঠক: বড় সিদ্ধান্তের আভাস
- অনিদ্রা দূর করতে রাতের সহজ অভ্যাস
- মুজিবর হল হবে ‘ওসমান হাদি’: নাম বদলের দাবিতে উত্তাল ঢাবি
- মরুভূমিতে রহমতের ঝরনা: যেভাবে সৃষ্টি হলো পবিত্র জমজম কূপ
- রাতে ঘুমানোর আগে কী খাবেন, কী খাবেন না
- স্থগিত হওয়া ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা: জানুন নিয়ম
- ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন মূল্য তালিকা
- বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে টাকার হালনাগাদ মূল্য তালিকা
- দিল্লি-ঢাকা কূটনৈতিক সংঘাত: হাইকমিশন নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি
- ভারতের প্রেসনোট মানছে না বাংলাদেশ, কড়া বার্তা
- নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে
- ২১ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ২১ ডিসেম্বর ডিএসইতে বড় দরপতনের ১০টি শেয়ার
- ২১ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- কেন ডিভি লটারি বন্ধ করলেন ট্রাম্প? আসল রহস্য ফাঁস
- মবকারীদের ছাড় দেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টার কড়া হুঁশিয়ারি
- মবোক্রেসি দমনে কঠোর হওয়ার বার্তা সালাহউদ্দিন আহমদের
- লেনদেনের মাঝপথে ডিএসইতে মিশ্র সূচক প্রবণতা
- তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ: বগুড়ায় উৎসবের আমেজ
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা জাতির জন্য লজ্জা: সালাহউদ্দিন
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা সংবাদপত্রের ওপর আঘাত: শশী থারুর
- ইন্টারনেট ছাড়াই চলবে গুগল ম্যাপস: জেনে নিন অফলাইন ব্যবহারের নিয়ম
- জিমেইল স্টোরেজ ফুল? টাকা খরচ না করে জায়গা খালি করার ৫ উপায়
- হাড়ের শক্তি ও রোগ প্রতিরোধে রোদের জাদুকরী উপকারিতা
- ডলারের দামে ফের পরিবর্তন: জেনে নিন আজকের সর্বশেষ টাকার রেট
- নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর
- তারেক রহমানের ফ্লাইটে বড় রদবদল: দুই কেবিন ক্রুকে অব্যাহতি
- আমি আপনাদের এলাকার জামাই: নির্বাচনী ময়দানে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী
- অ্যাশেজের ইতিহাস গড়া জয় অস্ট্রেলিয়ার
- জাবিতে শুরু হচ্ছে ভর্তি যুদ্ধ: পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি ও আসন বিন্যাস জানুন
- হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়
- শীতের বুকে জমা কফ দূর করবে তুলসী চা: জানুন জাদুকরী গুণ
- ছয় বীর শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন: শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত সেনানিবাস
- হাদি কেন খুনের শিকার হলেন? রহস্য জানালেন জামায়াতে ইসলামী আমির
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- পুতিনের প্রেমের কবুলনামা: কার প্রেমে মজেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট?
- জন্মদিনে এমবাপের মাইলফলক: রোনালদোর রেকর্ডে ভাগ বসালেন ফরাসি তারকা
- তরঙ্গের প্রকারভেদ ও বৈজ্ঞানিক আচরণে সহজ ব্যাখ্যা
- আজ বছরের ক্ষুদ্রতম দিন: দীর্ঘতম রাতের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- আজ বছরের ক্ষুদ্রতম দিন: দীর্ঘতম রাতের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- জল্পনার অবসান, বাগেরহাটে কাকে কাকে মনোনয়ন দিল বিএনপি
- ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া তারেক রহমান: ঢাকায় গোপন বৈঠক
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন আকাশছোঁয়া দাম
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
- সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫: জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা জাহাঙ্গীর আলম শান্ত
- আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- ডলারসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার আজকের বিনিময় হার
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- আইপিএল নিলামে তোলপাড়: রেকর্ড দামে বিক্রি ফিজ
- আজকের রাশিফল: জেনে নিন সোমবার কার কেমন কাটবে
- মাত্র ৫টি অভ্যাসে জব্দ হবে ডায়াবেটিস








