কূটনৈতিক এলাকায় বিক্ষোভকারীদের হানা: দিল্লির কাছে জবাবদিহি চায় ঢাকা

নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে উগ্রপন্থীদের বিক্ষোভ এবং উদ্ভূত পরিস্থিতির বিষয়ে ভারত সরকারের দেওয়া আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা বা প্রেসনোট পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ সরকার। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ঢাকার এই শক্ত অবস্থানের কথা স্পষ্ট করেন। তিনি দিল্লির অত্যন্ত সুরক্ষিত কূটনৈতিক জোনের অভ্যন্তরে বিক্ষোভকারীদের প্রবেশাধিকার নিয়ে তীব্র প্রশ্ন তুলেছেন এবং ভবিষ্যতে ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর আকার ছোট করার প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন যে নয়াদিল্লির মতো একটি অতি সুরক্ষিত এলাকায় বিদেশি মিশনের এত কাছে বিক্ষোভকারীরা কীভাবে পৌঁছাতে পারল তা একটি বড় রহস্য। হাইকমিশনারের বাসভবনে হামলার চেষ্টার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি ভারতের নিরাপত্তা ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তৌহিদ হোসেনের মতে ভারতের দেওয়া প্রেসনোটে বাস্তবতাকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে যা ঢাকা কোনোভাবেই গ্রহণ করছে না। প্রয়োজনে নয়াদিল্লিতে মিশনের কার্যক্রম সংকুচিত করার বিষয়টিও সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে বলে তিনি ইঙ্গিত দেন।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে দাবি করেন যে ২০ ডিসেম্বর ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দিতে হাইকমিশনের সামনে জড়ো হয়েছিল। ভারতের দাবি অনুযায়ী সেখানে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা হয়নি এবং পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাদের সরিয়ে দিয়েছে। রণধীর জয়সওয়াল আরও উল্লেখ করেন যে ভারত ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী সব বিদেশি মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে তারা নিবিড়ভাবে নজর রাখছে।
তবে ভারতের এই দাবিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন জানান যে ময়মনসিংহে সংঘটিত একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভিনদেশের সার্বভৌম কূটনৈতিক সীমানায় বিক্ষোভ প্রদর্শন এবং হাইকমিশনারকে হুমকি দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। তিনি বলেন যে বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতোমধ্যে দীপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ত্বরিত ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু দিল্লিতে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ব্যর্থ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই দেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে যা নিরসনে দিল্লির আরও দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশা করছে ঢাকা।
হাদি হত্যার ঘাতক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত ফয়সাল করিম মাসুদের অবস্থান সম্পর্কে এখনও কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পায়নি পুলিশ। রোববার (২১ ডিসেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি খন্দকার রফিকুল ইসলাম এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে অপরাধীর শেষ অবস্থান শনাক্ত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক ইউনিট ও গোয়েন্দা সংস্থা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তবে আসামি ফয়সাল দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছেন এমন কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত আইজিপি আরও বলেন যে অনেক সময় অপরাধীদের অবস্থান নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় যা তদন্ত প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায়। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে এবং দ্রুততম সময়ে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। হাদি হত্যাকাণ্ডটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কি না কিংবা এর পেছনে কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ইন্ধন রয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান যে তদন্ত এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কোনো দলের সুনির্দিষ্ট সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।
একই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ডিবি প্রধান শফিকুল ইসলাম মামলার ভিন্ন একটি দিক তুলে ধরেন। তার মতে প্রাথমিক তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে মনে হচ্ছে যে এই হত্যাকাণ্ড রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সংঘটিত হয়েছে। এখানে ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা বা উদ্দেশ্যে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। ডিবি প্রধান আরও জানান যে ঘটনার শুরু থেকেই সব সরকারি সংস্থা সমন্বিতভাবে মাঠে রয়েছে এবং প্রতিটি সম্ভাব্য দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টনে প্রকাশ্য দিবালোকে শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। হাদির মৃত্যুতে দেশের ছাত্র-জনতার মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে এবং খুনিদের দ্রুত বিচার দাবি করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছে যে মামলার প্রধান ঘাতক ফয়সালসহ তার সহযোগীদের গ্রেপ্তার করতে পারলেই এই হত্যাকাণ্ডের পেছনের মূল রহস্য উদঘাটিত হবে।
৩ দিনের রিমান্ড শেষে জানা গেল হান্নান নির্দোষ: পেলেন জামিন
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে আটক আব্দুল হান্নান অবশেষে জামিন পেয়েছেন। রোববার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসান শাহাদাত শুনানি শেষে এই আদেশ প্রদান করেন। গত ১৭ ডিসেম্বর পুলিশের পক্ষ থেকে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় যে আব্দুল হান্নান প্রকৃত মোটরসাইকেল মালিক নন বরং শুধুমাত্র রেজিস্ট্রেশন নম্বরের একটি সংখ্যার ভুলের কারণে তাকে আটক করা হয়েছিল।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে যে গত ১২ ডিসেম্বর পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে চলন্ত অটোরিকশায় থাকা শরিফ ওসমান হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এই ঘটনায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের মালিক শনাক্ত করতে গিয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর আব্দুল হান্নানকে আটক করে র্যাব-২। পরবর্তীতে তাকে পল্টন মডেল থানায় সোপর্দ করে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তদন্ত চলাকালে পুলিশ জানতে পারে যে আব্দুল হান্নানের নামে বিআরটিএ-তে নিবন্ধিত দুটি মোটরসাইকেল থাকলেও তার কোনোটিই হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত হয়নি।
পুলিশি তদন্তে দেখা গেছে যে শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার সময় ঘাতকরা ‘হোন্ডা’ ব্র্যান্ডের ‘হর্নেট’ মডেলের একটি মোটরসাইকেল ব্যবহার করেছিল। অন্যদিকে আব্দুল হান্নানের বাইকটি ছিল ‘সুজুকি’ ব্র্যান্ডের ‘জিক্সার’ মডেলের। মূলত মোটরসাইকেলের নম্বরের শেষের একটি সংখ্যার বিভ্রান্তি থেকেই এই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যে নম্বরের শেষে ‘৬’ থাকার কথা ছিল সেখানে ‘৫’ নম্বর শনাক্ত হওয়ায় নির্দোষ হান্নানকে কারাবরণ করতে হয়। রিমান্ড চলাকালে শোরুম মালিকের মুখোমুখি করা হলে হান্নানের সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় পুলিশ।
এদিকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে ফয়সাল করিম মাসুদ ও রাহুল দাউদসহ তাদের সহযোগীদের নাম উঠে এসেছে যারা এখনো পলাতক রয়েছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন যে আসল খুনিদের শনাক্ত করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিরপরাধ আব্দুল হান্নানের মুক্তি মিললেও প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে না পারা এবং তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশের এই ভুল নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তফসিলের পর সেনাপ্রধানের সাথে প্রথম বৈঠক: বড় সিদ্ধান্তের আভাস
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং বহুপ্রতীক্ষিত গণভোটকে কেন্দ্র করে সারা দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আয়োজিত এক বিশেষ ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান যে বর্তমানে সারা দেশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত অভিযান চলছে এবং প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করতে এখন থেকে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হবে বলেও তিনি জানান।
এর আগে দুপুর থেকে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে উচ্চপর্যায়ের একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর ১২টার দিকে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান সিইসির সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন। ভোটের তফসিল ঘোষণার পর তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ যা নির্বাচনের কৌশলগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
পরবর্তীতে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনায় বড় পরিসরে আরেকটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সিইসির সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, তিন বাহিনী প্রধানের প্রতিনিধি এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, র্যাব এবং আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালকসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার এবং ইসি সচিব।
বৈঠক শেষে ইসি সূত্র জানায় যে ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোনো ধরনের নাশকতা রোধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং দাগি অপরাধীদের গ্রেপ্তারে যৌথ বাহিনীর এই অভিযান জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আরও জোরদার করা হবে। নির্বাচন কমিশন আশা করছে যে সশস্ত্র বাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এই সমন্বিত প্রচেষ্টার ফলে দেশে একটি শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনী পরিবেশ বজায় থাকবে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে জেলাভিত্তিক নিরাপত্তা ছক চূড়ান্ত করে মাঠে নামবে বিশেষ দলগুলো।
দিল্লি-ঢাকা কূটনৈতিক সংঘাত: হাইকমিশন নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি
নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনে উগ্রপন্থীদের হামলার চেষ্টা এবং উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ভারত সরকারের দেওয়া ব্যাখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন ঢাকার এই কঠোর অবস্থানের কথা জানান। তিনি বলেন যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া প্রেসনোটে ঘটনাটিকে যেভাবে ‘সহজ ও সাধারণ’ করে দেখানো হয়েছে, বাস্তব পরিস্থিতি ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি উদ্বেগজনক। বিশেষ করে নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনারকে হত্যার হুমকি দেওয়ার মতো নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে বলে ঢাকা অভিযোগ করেছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা প্রশ্ন তোলেন যে দিল্লির অত্যন্ত সুরক্ষিত এবং সংবেদনশীল কূটনৈতিক এলাকার গভীরে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনে উগ্রপন্থীরা কীভাবে এত সহজে প্রবেশ করতে পারল। তার মতে এটি কোনো সাধারণ বিক্ষোভ ছিল না বরং পরিকল্পিতভাবে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দলকে সেখানে আসতে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান যে হাইকমিশনের ভেতরে থাকা কর্মকর্তারা এবং তাদের পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তা শঙ্কায় রয়েছেন এবং এক ধরণের আতঙ্কিত পরিবেশের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ভারতের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা হলেও এক্ষেত্রে চরম অবহেলা করা হয়েছে বলে ঢাকা মনে করে।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন যে ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে ২০ থেকে ২৫ জন যুবক ময়মনসিংহে দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে স্লোগান দিয়েছেন। ভারতের দাবি অনুযায়ী সেখানে কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনী ভাঙার চেষ্টা হয়নি এবং পুলিশ কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের ‘বিভ্রান্তিকর প্রচারণা’ হিসেবে অভিহিত করা হলেও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন আজ সেই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন যে হাইকমিশনারকে ‘শালাকে গুলি করে মার’ বলে উগ্রপন্থীদের চিৎকার করার তথ্য তারা পেয়েছেন যা কোনোভাবেই অবহেলা করার মতো বিষয় নয়।
ময়মনসিংহের দীপু চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন যে একজন বাংলাদেশি নাগরিকের নৃশংস মৃত্যুকে ভারত যেভাবে ‘সংখ্যালঘু নাগরিকদের ওপর হামলা’ হিসেবে চিত্রায়িত করছে তা একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। তিনি স্পষ্ট করেন যে নিহত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক এবং এই ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তিনি উল্লেখ করেন যে এ ধরণের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা পুরো অঞ্চলেই ঘটে থাকে কিন্তু একে কেন্দ্র করে ভিনদেশের কূটনৈতিক মিশনে হামলা ও হাইকমিশনারকে হত্যার হুমকি দেওয়া কূটনৈতিক শিষ্টাচারের চরম লঙ্ঘন। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশি কূটনীতিকদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা।
নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে ঘিরে সারাদেশে কঠোর আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানিয়েছেন, খুব শিগগিরই দেশব্যাপী যৌথ অভিযান শুরু করা হবে, যাতে কোনো ধরনের সহিংসতা, সন্ত্রাসী তৎপরতা বা বিশৃঙ্খলা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার স্পষ্ট ভাষায় বলেন, সরকারের বার্তা একেবারেই পরিষ্কার। কাউকে কোনো অবস্থাতেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়াতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনকালীন পরিবেশ যাতে শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ থাকে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নির্বাচন ঘিরে কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তি যদি নাশকতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন বা সহিংস কর্মকাণ্ডের চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় জোরদার করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষাই এই যৌথ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য। পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী অভিযান আরও বিস্তৃত করা হবে বলেও ইঙ্গিত দেন কমিশনার।
-রফিক
মবকারীদের ছাড় দেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টার কড়া হুঁশিয়ারি
দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ‘মব জাস্টিস’ বা উশৃঙ্খল জনতার হাতে আইন তুলে নেওয়ার ঘটনাগুলোকে কঠোর হাতে দমন করার ঘোষণা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে মবকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন যে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা কিংবা কোনো সংবাদমাধ্যম বা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা চালানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ এবং সরকার এমন অরাজকতা কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে সরকারের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেন।
ময়মনসিংহের ভালুকায় ধর্ম অবমাননার অজুহাতে দীপু চন্দ্র দাস নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা এবং পরবর্তীতে তার মরদেহ গাছে বেঁধে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনাকে ‘অত্যন্ত নিন্দনীয়’ হিসেবে অভিহিত করেন ধর্ম উপদেষ্টা। তিনি বলেন যে এ ধরণের বর্বরতা রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। গত ১৮ ডিসেম্বর রাতের ওই ঘটনায় ইতোমধ্যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেন। নিহত যুবকের পরিবারের দাবি যে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড যা ধর্ম অবমাননার অপবাদ দিয়ে ঘটানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ধর্ম উপদেষ্টা বর্তমান পরিস্থিতির সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে বলেন যে দেশের প্রতিটি স্থাপনায় একযোগে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য কিছুটা কঠিন কাজ। তবে যেকোনো ধরণের সহিংসতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হওয়া হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন যে সংবাদমাধ্যমের ওপর এ ধরণের আক্রমণ কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। সরকার এই ঘটনাগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে এবং এর পেছনে জড়িতদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।
বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এবং দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে কিছু গোষ্ঠী উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ ধরণের অস্থিরতা তৈরি করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে এক বিবৃতিতে জানিয়েছিল যে ‘নতুন বাংলাদেশে’ এ ধরণের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। ধর্ম উপদেষ্টা তার বক্তব্যে জোর দিয়ে বলেন যে কেউ অপরাধ করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তিনি জনগণকে উস্কানিতে কান না দিয়ে শান্তি বজায় রাখার এবং সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষায় সরকারকে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।
ছয় বীর শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন: শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত সেনানিবাস
সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বরত অবস্থায় সন্ত্রাসী ড্রোন হামলায় শাহাদতবরণকারী বাংলাদেশের ছয় বীর সেনাসদস্যের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। আজ রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে অত্যন্ত আবেগঘন পরিবেশে তাদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে যে জানাজা শেষে শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়েছে। এরপর যথাযথ সামরিক ও রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদর্শন শেষে শহীদদের মরদেহবাহী হেলিকপ্টারগুলো তাদের নিজ নিজ জেলার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।
শহীদ হওয়া এই ছয় বীর সদস্য হলেন— নাটোরে করপোরাল মো. মাসুদ রানা, রাজবাড়ীর সৈনিক শামীম রেজা, কুড়িগ্রামের সৈনিক মো. মমিনুল ইসলাম ও সৈনিক শান্ত মন্ডল, কিশোরগঞ্জের মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং গাইবান্ধার লন্ড্রি কর্মচারী মো. সবুজ মিয়া। আইএসপিআর জানিয়েছে যে জানাজার আগে উপস্থিত সবার সামনে এই বীর সেনাসদস্যদের জীবনবৃত্তান্ত পড়ে শোনানো হয়। সামরিক বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সহকর্মীরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে তাদের প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান এবং স্যালুট প্রদান করেন।
এর আগে গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে এমিরেটস এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে এই ছয় শান্তিরক্ষীর মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামীম কফিনগুলো গ্রহণ করেন। সে সময় জাতিসংঘ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় একটি ঘাঁটিতে বর্বরোচিত ড্রোন হামলায় এই ছয় বাংলাদেশি প্রাণ হারান। ওই ঘটনায় আহত আরও ৮ জন বর্তমানে কেনিয়ার নাইরোবিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন যারা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত বলে জানা গেছে।
জানাজা শেষে মরদেহগুলো তাদের নিজ নিজ গ্রামে পৌঁছানোর পর সেখানেও সামরিক মর্যাদায় দাফন সম্পন্ন করার যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিশ্বশান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের এই সূর্যসন্তানদের আত্মত্যাগ দেশের সামরিক ইতিহাসে এক অনন্য গৌরবগাথা হিসেবে অক্ষয় হয়ে থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে শহীদদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়েছে এবং তাদের এই মহান বীরত্বকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো হয়েছে।
আজ ইসিতে তিন বাহিনী প্রধানের বৈঠক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবস্থা মূল্যায়নে আজ রবিবার (২১ ডিসেম্বর) একটি গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের আগারগাঁও কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুপুর আড়াইটায় এই সভা বসবে। সভায় নির্বাচন-পূর্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা, সন্ত্রাস দমন এবং আচরণবিধি বাস্তবায়নের বিষয়গুলো বিশেষ গুরুত্ব পাবে।
এর আগে একইদিন দুপুর ১২টায় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হবেন। ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ ও তথ্য) মো. রুহুল আমিন মল্লিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এই বৈঠকে নির্বাচনী নিরাপত্তা ও বাহিনীগুলোর সমন্বয় সংক্রান্ত নানা দিক আলোচনায় আসতে পারে।
তিনি আরও জানান, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভা শেষে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বেজমেন্টে গণমাধ্যমের জন্য একটি আনুষ্ঠানিক ব্রিফিং আয়োজন করা হবে, যেখানে সভার সিদ্ধান্ত ও পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হবে।
এদিকে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখা) মোহাম্মদ মনির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী সভাটি সকাল ১০টায় হওয়ার কথা থাকলেও তা পরিবর্তন করে দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য এই সভায় অন্যান্য নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত থাকবেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সভার মূল আলোচ্যসূচির মধ্যে রয়েছে নির্বাচন-পূর্ব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক মূল্যায়ন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর কার্যক্রম জোরদারকরণ এবং সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রতিরোধের কৌশল নির্ধারণ।
এ ছাড়া রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য প্রণীত আচরণবিধি ২০২৫ যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করা, নির্বাচনী পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে করণীয় নির্ধারণ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় নিয়েও সভায় বিস্তারিত আলোচনা হবে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
-শরিফুল
নির্বাচন নিয়ে বড় বৈঠক: তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বসছে ইসি
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জাতীয় গণভোটের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে দেশের তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এন নাসির উদ্দিন। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে জানা গেছে যে আগামীকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হবে। একই দিনে দেশের অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গেও পৃথক বৈঠকে মিলিত হবে কমিশন।
ইসি সচিবালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে প্রথম বৈঠকটি শুরু হবে দুপুর ১২টায়। এই সভায় সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমান বাহিনী প্রধান উপস্থিত থাকবেন। নির্বাচনের সময় মাঠ পর্যায়ে সশস্ত্র বাহিনীর মোতায়েন, নিরাপত্তা পরিকল্পনা এবং সমন্বয়ের বিষয়গুলো এই বৈঠকে প্রাধান্য পাবে। এরপর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের সভা যেখানে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
এই সভায় নির্বাচন কমিশনাররা ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। বৈঠকে মূলত ভোটগ্রহণের দিন এবং তার আগের ও পরের শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট নিরাপত্তা ছক চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া ১২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠেয় নির্বাচন ও গণভোটের সময় দেশের স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত নজরদারি বাড়ানোর বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হতে পারে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর সশস্ত্র বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে এটিই হবে নাসির উদ্দিনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বড় নিরাপত্তা বৈঠক। উল্লেখ্য যে ইতোমধ্যে নির্বাচনের সংশোধিত তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে এবং আগামী ২৯ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন নির্ধারিত রয়েছে। নির্বাচনের প্রস্তুতির এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে ইসির এই সমন্বয় সভাকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
পাঠকের মতামত:
- ভারতের যুবাদের নিয়ে ছেলেখেলা: এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান
- হাদি হত্যার ঘাতক সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই: অতিরিক্ত আইজিপি
- ৩ দিনের রিমান্ড শেষে জানা গেল হান্নান নির্দোষ: পেলেন জামিন
- দুধপুলি পিঠা বানাতে জানুন গোপন টিপস
- তফসিলের পর সেনাপ্রধানের সাথে প্রথম বৈঠক: বড় সিদ্ধান্তের আভাস
- অনিদ্রা দূর করতে রাতের সহজ অভ্যাস
- মুজিবর হল হবে ‘ওসমান হাদি’: নাম বদলের দাবিতে উত্তাল ঢাবি
- মরুভূমিতে রহমতের ঝরনা: যেভাবে সৃষ্টি হলো পবিত্র জমজম কূপ
- রাতে ঘুমানোর আগে কী খাবেন, কী খাবেন না
- স্থগিত হওয়া ঢাবির ভর্তি পরীক্ষার নতুন তারিখ ঘোষণা: জানুন নিয়ম
- ২১ ও ১৮ ক্যারেট স্বর্ণের নতুন মূল্য তালিকা
- বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে টাকার হালনাগাদ মূল্য তালিকা
- দিল্লি-ঢাকা কূটনৈতিক সংঘাত: হাইকমিশন নিয়ে পাল্টাপাল্টি দাবি
- ভারতের প্রেসনোট মানছে না বাংলাদেশ, কড়া বার্তা
- নির্বাচন সামনে রেখে সারাদেশে যৌথ অভিযান শুরু হচ্ছে
- ২১ ডিসেম্বর শেয়ারবাজারের পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ
- ২১ ডিসেম্বর ডিএসইতে বড় দরপতনের ১০টি শেয়ার
- ২১ ডিসেম্বর ডিএসই টপ গেইনার তালিকা প্রকাশ
- কেন ডিভি লটারি বন্ধ করলেন ট্রাম্প? আসল রহস্য ফাঁস
- মবকারীদের ছাড় দেবে না সরকার: ধর্ম উপদেষ্টার কড়া হুঁশিয়ারি
- মবোক্রেসি দমনে কঠোর হওয়ার বার্তা সালাহউদ্দিন আহমদের
- লেনদেনের মাঝপথে ডিএসইতে মিশ্র সূচক প্রবণতা
- তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ: বগুড়ায় উৎসবের আমেজ
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা জাতির জন্য লজ্জা: সালাহউদ্দিন
- প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারে হামলা সংবাদপত্রের ওপর আঘাত: শশী থারুর
- ইন্টারনেট ছাড়াই চলবে গুগল ম্যাপস: জেনে নিন অফলাইন ব্যবহারের নিয়ম
- জিমেইল স্টোরেজ ফুল? টাকা খরচ না করে জায়গা খালি করার ৫ উপায়
- হাড়ের শক্তি ও রোগ প্রতিরোধে রোদের জাদুকরী উপকারিতা
- ডলারের দামে ফের পরিবর্তন: জেনে নিন আজকের সর্বশেষ টাকার রেট
- নোয়াখালীতে আ.লীগ নেতার নেতৃত্বে বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর
- তারেক রহমানের ফ্লাইটে বড় রদবদল: দুই কেবিন ক্রুকে অব্যাহতি
- আমি আপনাদের এলাকার জামাই: নির্বাচনী ময়দানে গিয়াস উদ্দিন তাহেরী
- অ্যাশেজের ইতিহাস গড়া জয় অস্ট্রেলিয়ার
- জাবিতে শুরু হচ্ছে ভর্তি যুদ্ধ: পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি ও আসন বিন্যাস জানুন
- হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপছে পঞ্চগড়
- শীতের বুকে জমা কফ দূর করবে তুলসী চা: জানুন জাদুকরী গুণ
- ছয় বীর শান্তিরক্ষীর জানাজা সম্পন্ন: শেষ শ্রদ্ধায় সিক্ত সেনানিবাস
- হাদি কেন খুনের শিকার হলেন? রহস্য জানালেন জামায়াতে ইসলামী আমির
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- পুতিনের প্রেমের কবুলনামা: কার প্রেমে মজেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট?
- জন্মদিনে এমবাপের মাইলফলক: রোনালদোর রেকর্ডে ভাগ বসালেন ফরাসি তারকা
- তরঙ্গের প্রকারভেদ ও বৈজ্ঞানিক আচরণে সহজ ব্যাখ্যা
- আজ বছরের ক্ষুদ্রতম দিন: দীর্ঘতম রাতের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- আজ বছরের ক্ষুদ্রতম দিন: দীর্ঘতম রাতের সাক্ষী হতে যাচ্ছে বিশ্ব
- জল্পনার অবসান, বাগেরহাটে কাকে কাকে মনোনয়ন দিল বিএনপি
- ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে মরিয়া তারেক রহমান: ঢাকায় গোপন বৈঠক
- রবিবার রাজধানীর কোন কোন মার্কেট বন্ধ থাকছে
- গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ: মহাকাশ গবেষণায় নতুন যুগের সূচনা
- হাদি হত্যা ও অরাজকতায় বৈশ্বিক উদ্বেগ: কড়া বার্তা জাতিসংঘের
- বিপিএলের টিকিট কিনবেন যেভাবে, দাম কত
- বুধবার টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- স্বর্ণের বাজারে আগুন: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে নতুন আকাশছোঁয়া দাম
- রেকর্ড দামে স্বর্ণ: আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে বাজুসের নতুন মূল্য
- বাজুসের নতুন ঘোষণা: আজ থেকে কার্যকর স্বর্ণের বর্ধিত দাম
- ১২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা
- সিঙ্গাপুরে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ওসমান হাদি
- ১৬ অক্টোবর ২০২৫: জেনে নিন আজকের মুদ্রা বিনিময় হার
- মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় দেশসেরা জাহাঙ্গীর আলম শান্ত
- আগামী ৫ দিনের আবহাওয়ার আগাম বার্তা দিল আবহাওয়া অফিস
- ডলারসহ বিভিন্ন বৈদেশিক মুদ্রার আজকের বিনিময় হার
- আজ ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকবে না যেসব এলাকায়
- হাদির প্রথম জানাজা কোথায় ও কখন? জানাল ইনকিলাব মঞ্চ
- আইপিএল নিলামে তোলপাড়: রেকর্ড দামে বিক্রি ফিজ
- আজকের রাশিফল: জেনে নিন সোমবার কার কেমন কাটবে
- মাত্র ৫টি অভ্যাসে জব্দ হবে ডায়াবেটিস








