ব্রিটিশ নীতির ছায়ায় গড়ে ওঠা আরব রাজনীতি

ওসমানি শাসনের পতনের পর গঠিত আরব রাষ্ট্রগুলোর উদ্দেশ্য আদৌ কি ছিল স্বাধীনতা অর্জন, নাকি পশ্চিমা শক্তির রাজনৈতিক স্বার্থরক্ষা? ইতিহাস বিশ্লেষণে এ প্রশ্ন নতুনভাবে সামনে এসেছে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ উসামা মাকদিসির এক সাম্প্রতিক নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর আরব রাষ্ট্রগুলোর উত্থান মূলত ব্রিটিশ ও ফরাসি সাম্রাজ্যবাদীদের কৌশলের অংশ ছিল—যার উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যক্ষ উপনিবেশের পরিবর্তে ‘স্থানীয় মুখোশে’ পরোক্ষ শাসন কায়েম করা।
১৯১৮ সালে ব্রিটিশ প্রভাব মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর এক ব্রিটিশ কর্মকর্তা স্বীকার করেছিলেন—‘পুরোনো কৌশল অচল, নতুন পরিকল্পনায় এগোতে হবে।’ এই নতুন পরিকল্পনার মূল ভিত্তি ছিল, আরবদের ‘মুখোশ’ ব্যবহার করে পশ্চিমাদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ নিশ্চিত করা। বাস্তবতা ছিল, এই শাসনের পেছনে ছিল না জনগণের অংশগ্রহণ কিংবা প্রকৃত স্বায়ত্তশাসন।
১৯১৬ সালের সাইক্স-পিকো চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটিশ ও ফরাসিরা ওসমানি সাম্রাজ্যের আরব অঞ্চল নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। অথচ শরিফ হোসাইন ইবনে আলিকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ফিলিস্তিনসহ বৃহৎ একটি স্বাধীন আরব রাষ্ট্র গঠনের আশ্বাস দিয়েছিল ব্রিটিশরা। বাস্তবে সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। বরং ফিলিস্তিনকে ঘিরে ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণায় ‘ইহুদি জাতীয় আবাস’ প্রতিষ্ঠার সমর্থন দিয়ে আরবদের সঙ্গে করা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে ব্রিটিশ সরকার।
এমন অবস্থার মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে 'আরব মুখোশ' নামে পরিচিত একটি রাজনৈতিক কাঠামো গড়ে ওঠে, যার মূল লক্ষ্য ছিল—নামমাত্র স্বাধীনতা দিয়ে পরোক্ষ শাসনের মাধ্যমে পশ্চিমা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা। স্থানীয় শাসকদের চূড়ান্ত আনুগত্য ছিল পশ্চিমা শক্তির প্রতি, যার মধ্যে হাশেমি পরিবার, সৌদি রাজপরিবার ও মিসরের বাদশাহদের নাম উল্লেখযোগ্য।
পরবর্তীতে, ফিলিস্তিনে ইহুদি উপনিবেশ স্থাপন, ব্রিটিশ সমর্থন এবং আরব রাজতন্ত্রের নীরবতা একটি বৃহৎ রাজনৈতিক বিভ্রান্তি তৈরি করে। যদিও ১৯৪৮ সালের নাকবা বা ফিলিস্তিনি জনগণের বিতাড়নের ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যে কিছু সামরিক বিপ্লব হয়—যেমন মিসরে নাসের ও ইরাকে হাশেমি রাজতন্ত্র পতন—তবু পশ্চিমা আধিপত্যের অবসান ঘটেনি।
১৯৬৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশদের উত্তরসূরি হিসেবে মধ্যপ্রাচ্যে প্রধান প্রভাবশালী শক্তি হয়ে ওঠে। তখন থেকেই গড়ে ওঠে 'আরব মুখোশ ২.০'—যার বৈশিষ্ট্য হল পশ্চিমা শাসন কাঠামো মেনে চলা, ফিলিস্তিন প্রশ্নে আপোষমূলক নীতি গ্রহণ এবং তেল রাজস্ব পশ্চিমে পুনর্বিনিয়োগ। এই নতুন কাঠামোতেও আরব শাসকেরা ছিলেন পাশের দর্শক অথবা মার্কিন নীতির সঙ্গী।
ক্যাম্প ডেভিড, অসলো চুক্তি এবং সাম্প্রতিক আব্রাহাম অ্যাকর্ড—সবই মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষার প্রক্রিয়া বলে বিশ্লেষকদের মত। এর বিপরীতে, গাজা, লেবানন ও ইয়েমেনের মতো কিছু অঞ্চলে এখনো প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে। তবে যারা নিজেদের অবস্থান পশ্চিমা শক্তির স্বার্থে উৎসর্গ করেছেন, তারা গণতান্ত্রিক চেতনার বিরুদ্ধেও অবস্থান নিচ্ছেন।
ইতিহাসবিদদের মতে, এই ‘আরব মুখোশ’ কখনোই জনগণের জন্য নয়। এটি ছিল একটি চুক্তিভিত্তিক রাজনীতি, যেখানে শাসকরা ছিলেন উপনিবেশবাদের হাতিয়ার। আজকের দিনে, গাজায় চলমান সহিংসতা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রেক্ষাপটে, এই মুখোশ কতদিন টিকবে, তা সময়ই বলবে। তবে ইতিহাস বলছে—যে কোনো মুখোশের স্থায়িত্ব সীমিত।
সূত্র: মিডল ইস্ট আই
পাঠকের মতামত:
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: মুক্তির স্বপ্ন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের চ্যালেঞ্জ
- ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের মনোবিশ্লেষণমূলক পাঠ: একটি প্রজন্মের অবচেতনের বিস্ফোরণ
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৩১ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজকের বাজার পর্যালোচনা
- ৫ আগস্ট ছুটি ঘোষণা: কোন কোন সেবা পাবেন, কোনগুলো বন্ধ থাকবে
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- খাবারের আশায় ১২ কিলোমিটার হাঁটা শিশুটি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত
- সৃজনশীলতার ৫টি ধাপ: একটি বিশ্লেষণধর্মী বাংলা প্রতিবেদন
- হুয়াংহে নদীর তীরে এক মহাজাতির উত্থান: চীনা সভ্যতার আদিগন্ত ইতিহাস
- আজ ৩০ জুলায়ের শেয়ারবাজারে শীর্ষ ১০ গেইনারের তালিকায় নতুন চমক
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলীর সময় কাটানো নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্লক মার্কেটে লেনদেনের ঝড়
- তালেবানের আফগানিস্তান: ধ্বংসস্তূপ থেকে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ
- প্রধান উপদেষ্টা: "জুলাই শহীদদের স্বপ্নই হবে আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ভিত্তি"
- ব্রিটিশ নীতির ছায়ায় গড়ে ওঠা আরব রাজনীতি
- যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গোপন চুক্তির ব্যাখ্যা দিলেন অর্থ উপদেষ্টা
- হুথিদের ‘সায়াদ’ ক্ষেপণাস্ত্রের আওতায় ইসরাইলি বাণিজ্য জাহাজ
- নির্বাচনের আগে লটারির মাধ্যমে বদলি হবেন সব এসপি ও ওসি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
- ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অগ্রগতির প্রশংসা করল তারেক রহমান
- কক্সবাজার সফর নিয়ে বিতর্কে এনসিপির ৫ নেতা, কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি
- জাতীয় নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুতির শেষ ধাপে ইসি, অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য
- নির্বাচনের আগে সরকারের কাছে ‘তিনটি বিষয়’ চায় এনসিপি
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের আজকের লেনদেন: বাজারের সামগ্রিক বিশ্লেষণ
- আজকের শেয়ারদামে দরপতন হওয়া ১০টি কোম্পানির তালিকা বিশ্লেষণ
- আজকের শেয়ারদামে এগিয়ে ১০টি কোম্পানির তালিকা বিশ্লেষণ
- শুক্রবার তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকে বসছে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা
- জুলাই ঘোষণাপত্রে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ গণ অধিকার পরিষদের
- ব্যাংক খাত লুটপাটের নজিরবিহীন চিত্র তুলে ধরলেন উপদেষ্টা’—সালেহউদ্দিন
- “গণতন্ত্রের পথে একমাত্র সমাধান নির্বাচন”—বিএনপি মহাসচিব
- পাকিস্তানে পালিত হলো ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’
- ইতিহাস বিকৃতির বিরুদ্ধে উমামা ফাতেমার বিস্ফোরক প্রতিবাদ
- আদালতে পলক-মনিরুল, জুলাই আন্দোলনের হত্যাকাণ্ডে নতুন মোড়
- রাজধানীতে আজ যেসব কর্মসূচি রয়েছে
- গাজায় দুর্ভিক্ষ, মৃত্যু আর জিম্মিদের আর্তনাদ: সংকটের মুখে আন্তর্জাতিক মানবতা
- নাচ, কণ্ঠ আর গ্ল্যামারে ফিরলেন নোরা, সঙ্গে শ্রেয়া ঘোষাল
- ম্রুনাল ঠাকুর ও ধনুশের প্রেম গুঞ্জন: আলোচনার কেন্দ্রে ‘সন অব সর্দার ২’-এর নায়িকা
- অ্যাপল ও গুগলের বিরুদ্ধে শিশু সুরক্ষায় গাফিলতির অভিযোগ
- মানসিক রোগ সম্পর্কে সচেতন হোন, চিনে নিন লক্ষণ ও প্রকারভেদ
- ট্রাম্প প্রশাসনের নাটকীয় ঘোষণা: বাতিল ২২টি mRNA ভ্যাকসিন প্রকল্প
- সহজ কিন্তু আল্লাহর কাছে প্রিয় দুটি দোয়া, পুরস্কার অফুরন্ত
- দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম: সাবেক ফার্স্ট লেডির গ্রেফতারের পথে
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এনসিপির সরকারি জমি দখলের চেষ্টায় উত্তেজনা, এসিল্যান্ডকে হুমকি
- ৪৭২ কোটি আয়ের ‘সাইয়ারা’ সিনেমার নায়ক-নায়িকার পারিশ্রমিক যত
- জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে জামায়াতের বিবৃতি আজ
- ইবাদাতে আগ্রহ ফেরাতে ৯টি শক্তিশালী টিপস!
- ‘বি’ থেকে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে জায়গা পেল যে কোম্পানি
- ৬ আগস্ট ২০২৫, বাংলাদেশি টাকায় আজকের আন্তর্জাতিক মুদ্রার রেট
- জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে এনসিপির জরুরি সংবাদ সম্মেলন আজ
- মৃত্যুর পর মানুষের ৯টি করুণ আফসোস
- বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে অর্থনীতির পুনর্জাগরণের নতুন সূচনা
- যা থাকছে জুলাই ঘোষণাপত্রে
- প্রধান উপদেষ্টার পাশে আবির্ভাব: কে এই সাহসী তরুণী শাবন্তী?
- ড. ইউনূসের নির্বাচনের ঘোষণায় বিএনপির প্রতিক্রিয়া
- আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গোপন ঘাঁটি সায়দাবাদ: রাত হলেই শুরু অস্ত্রের মহড়া
- ঢাকায় ১৪৮৩ জুলাই যোদ্ধা ও ৮২ শহীদ পরিবারকে সংবর্ধনা দিল জেলা প্রশাসন
- মূল্যস্ফীতি কমছে, ডিসেম্বরের মধ্যে ৬ শতাংশে নেমে আসবে: মুহাম্মদ ইউনূস
- প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের ঘোষণায় শেষ হলো দোদুল্যমান অবস্থা: সালাহউদ্দিন
- শিবিরের জুলাই প্রদর্শনীতে নিজামী-কাদের মোল্লার ছবি, সমালোচনার মুখে সরাতে বাধ্য হল প্রশাসন
- মানুষের মনোজগতে পরিবর্তন এসেছে হাসিনা যাওয়ার পর: আমীর খসরু
- সমুদ্র সম্পদ ব্যবহারে নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
- খুলনার আন্দোলন গোটা দেশকে অনুপ্রাণিত করেছে: জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম
- ফেব্রুয়ারীতেই ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন
- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নেই, অভিযোগ নুরের
- "বাবা হারানোর যন্ত্রণা একমাত্র তারেক রহমানই বোঝেন" — খোকন তালুকদার
- গণঅভ্যুত্থানের এক বছর: মুক্তির স্বপ্ন ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের চ্যালেঞ্জ
- ২০২৪ সালের জুলাই অভ্যুত্থানের মনোবিশ্লেষণমূলক পাঠ: একটি প্রজন্মের অবচেতনের বিস্ফোরণ
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরপতনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- ৩১ জুলাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) আজকের বাজার পর্যালোচনা
- ৫ আগস্ট ছুটি ঘোষণা: কোন কোন সেবা পাবেন, কোনগুলো বন্ধ থাকবে
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ শেয়ার
- খাবারের আশায় ১২ কিলোমিটার হাঁটা শিশুটি ইসরায়েলি গুলিতে নিহত
- সৃজনশীলতার ৫টি ধাপ: একটি বিশ্লেষণধর্মী বাংলা প্রতিবেদন
- হুয়াংহে নদীর তীরে এক মহাজাতির উত্থান: চীনা সভ্যতার আদিগন্ত ইতিহাস
- আজ ৩০ জুলায়ের শেয়ারবাজারে শীর্ষ ১০ গেইনারের তালিকায় নতুন চমক
- ৩১ জুলাই, শেয়ারবাজারে লেনদেনের শীর্ষ ১০ শেয়ার
- যুক্তরাষ্ট্রে শাকিব-বুবলীর সময় কাটানো নিয়ে মুখ খুললেন অপু বিশ্বাস
- ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্লক মার্কেটে লেনদেনের ঝড়
- তালেবানের আফগানিস্তান: ধ্বংসস্তূপ থেকে অর্থনৈতিক পুনর্জাগরণ
- প্রধান উপদেষ্টা: "জুলাই শহীদদের স্বপ্নই হবে আমাদের ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ভিত্তি"