জুলাই সনদ জারি করুন, নয়তো মর্যাদা হারাবেন: প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত সেক্রেটারির হুঁশিয়ারি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১২:৩৭:২০
জুলাই সনদ জারি করুন, নয়তো মর্যাদা হারাবেন: প্রধান উপদেষ্টাকে জামায়াত সেক্রেটারির হুঁশিয়ারি
মতিঝিল শাপলা চত্বরে সমাবেশে বক্তব্য দেন অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ছবি : সংগৃহীত

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার সরাসরি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, যদি তিনি অবিলম্বে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি না করেন, তবে তিনি তার অর্জিত মর্যাদা নষ্ট করবেন।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে আটটি সমমনা ইসলামী দলের এক সমাবেশে তিনি এই কঠোর মন্তব্য করেন।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, "আপনি ঐকমত্য কমিশনের প্রধান, আপনি সরকারপ্রধান। আপনি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি করুন।"

পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা জামায়াতে ইসলামীসহ এই আটটি ইসলামী দল আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবে। এরই অংশ হিসেবে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শাপলা চত্বরে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মান রক্ষার জন্য এক টেবিলে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এখানে প্রধান উপদেষ্টাকে রেফারির দায়িত্ব পালন করতে হবে। তিনি আরও আশাবাদ ব্যক্ত করেন, "আমরা বৃহত্তর ঐক্যের মধ্য দিয়ে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন সুষ্ঠু করব।"

জামায়াত সেক্রেটারি জেনারেল জানান, "আমরা ৮টি দল আজ যমুনা অভিমুখে অংশগ্রহণ করব। এখন পল্টনে আমাদের অন্যান্য দলের সঙ্গে জড়ো হবো। বিভিন্ন রাস্তা থেকে মিছিল আসছে। শৃঙ্খলার সঙ্গে মিছিল নিয়ে পল্টন থেকে যমুনার উদ্দেশ্যে যাত্রা করব ইনশাআল্লাহ।"

সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুলসহ অন্যান্য নেতারা বক্তব্য দেন।


শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ বিএনপিতে: যোগদানের নেপথ্যের দুটি কারণ জানালেন

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১২:১৯:০২
শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ বিএনপিতে: যোগদানের নেপথ্যের দুটি কারণ জানালেন
বিএনপিতে যোগদানকালে মীর স্নিগ্ধ। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধের যমজ ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ রাজনীতিতে যোগদান করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-কে বেছে নেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম হয়েছে। গত ৪ নভেম্বর বিএনপিতে যোগদান করা স্নিগ্ধ এবার নিজেই ব্যাখ্যা করেছেন, কেন তিনি এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিলেন এবং এর পেছনে প্রধান দুটি কারণ কী ছিল।

তিনি একটি ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তিনি মনে করেন, এখন সময় এসেছে অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম থেকে সরে এসে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার।

স্নিগ্ধ লিখেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে জোয়ার উঠেছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে তিনি সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা চলছে, সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের আকাঙ্ক্ষা থেকেই তিনি রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন।

তিনি স্পষ্ট করেন, তিনি বা তার ভাই মুগ্ধ কেউই আগে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। তিনি বলেন, "মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। তাই আমি মনে করি, মুগ্ধসহ শহীদরা কোনো রাজনৈতিক দলের নয়, তারা সব মানুষ এবং দেশের সম্পদ।"

স্নিগ্ধ ব্যাখ্যা করে বলেন, এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার। তাঁর রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পেছনে অন্যতম কারণগুলো হলো

সর্বোচ্চ জায়গা থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা।

জুলাই শহীদ, আহত যোদ্ধা, শহীদ পরিবার এবং সর্বোপরি জুলাইয়ের 'ভয়েস' বা কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা।

রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং বাংলাদেশপন্থি ও জুলাইপন্থি সব অংশীজনের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা।

রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিকে বেছে নেওয়ার পেছনে স্নিগ্ধ দুটি প্রধান কারণ উল্লেখ করেছেন

১. দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস ও দর্শন

তিনি বলেন, বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে। তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ২০২৩-এর অনেক জায়গা আছে, যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে তিনি আগ্রহী।

২. জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব

তিনি মনে করেন, সব পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। তাই তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, যা জুলাইয়ের ঐক্যকে শক্তিশালী এবং দীর্ঘায়িত করবে।

তিনি আরও জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও চান যে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করুন। যা তাঁর নিজেরও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার একটি। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল এবং তরুণদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে তিনি মনে করেন।

স্নিগ্ধ বলেন, তিনি সব রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ ও জুলাইপন্থি সবার সঙ্গে কাজ করে যেতে চান। রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণ তাঁর রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য।

নবাগত এই নেতা অনুরোধ করে বলেন, এতদিন তিনি যত দায়িত্ব পালন করেছেন, সব নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পালন করেছেন। তিনি চান, যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে, তবে তা যেন অভিযোগে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রমাণসহ উপস্থাপন করা হয় এবং গঠনমূলক সমালোচনা করা হয়। তিনি বলেন, "নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এতটুকু সংস্কার তো আমরা আশাই করতে পারি।"


৫ দফা দাবিতে রাজধানীতে জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনের পদযাত্রা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১২:০৪:৩৮
৫ দফা দাবিতে রাজধানীতে জামায়াত-ইসলামী আন্দোলনের পদযাত্রা
ছবিঃ সংগৃহীত

জুলাই সনদ অবিলম্বে বাস্তবায়নের আদেশ ও নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজনসহ মোট পাঁচ দফা দাবিতে রাজধানীতে পদযাত্রা শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি সমমনা রাজনৈতিক দল।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে প্রথমে রাজধানীর শাপলা চত্বর এলাকায় এই দলগুলোর নেতাকর্মীরা একত্রিত হন। এরপর তাঁরা পল্টন মোড়ের দিকে পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রায় জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ আটটি দলের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। পদযাত্রা শেষে পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন দলগুলোর নেতারা।

এই পদযাত্রায় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির (বিডিপি) নেতারা যোগ দেন।

পদযাত্রা শেষে দলগুলো প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঁচ দফা দাবিতে একটি স্মারকলিপি দেবে। তাদের পাঁচ দফা দাবি হলো

১. জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা।

২. আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয়কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা।

৩. অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা।

৪. 'ফ্যাসিস্ট' সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা।

৫. 'স্বৈরাচারের দোসর' হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।


বগুড়া-৬, দিনাজপুর-৩, ফেনী-১: খালেদা-তারেকের ত্রিমুখী চমক

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১০:৫০:৩০
বগুড়া-৬, দিনাজপুর-৩, ফেনী-১: খালেদা-তারেকের ত্রিমুখী চমক
ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষ করে ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করার পর দলীয় কার্যক্রম এবং প্রচারণা তুঙ্গে পৌঁছেছে। মনোনীত প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে কিছু এলাকায় মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।

দীর্ঘদিন ভোটাধিকার বঞ্চিত সাধারণ মানুষ এবার নির্বাচনের প্রতি আগ্রহ ও প্রত্যাশা প্রকাশ করছেন। স্থানীয় ভোটাররা প্রার্থীদের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা, বিদ্রোহের ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য ফলাফল নিয়ে আলোচনা করছেন। মনোনীত প্রার্থীরা মনোনয়নবঞ্চিতদের বাড়ি গিয়ে সমর্থন চাইছেন। যদিও মনোনয়নবঞ্চিতরা হতাশ, তবুও অধিকাংশই দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, এটি প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা, যা ভবিষ্যতে পরিবর্তন হতে পারে। তিনি মনোনয়নবঞ্চিতদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দল তাদের যথাযোগ্য দায়িত্ব ও সম্মান প্রদান করবে।

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামবে বিএনপি। এবারের নির্বাচনী প্রচারণায় দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একসঙ্গে অংশগ্রহণ করবেন। নিরাপত্তার কারণে সরকার থেকে বুলেটপ্রুফ গাড়ি ব্যবহারের অনুমতিও পেয়েছে দলটি। দলীয় নেতারা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার উপস্থিতি ভোটের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রার্থীরা স্থানীয় সমস্যা তুলে ধরে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। দলের ৩১ দফা ইশতেহারের আলোকে গণসংযোগ ও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিছু মনোনয়নবঞ্চিত সমর্থক বিচ্ছিন্ন বিক্ষোভের অংশ হলেও, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, মাদারীপুরের ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে এবং শরীয়তপুর, মেহেরপুর, কুষ্টিয়ায় এরকম ঘটনা ঘটেছে। মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত কামাল জামান মোল্লা-এর মনোনয়ন স্থগিত করা হয়।

বগুড়ার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে শীর্ষ নেতৃত্বকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করার ফলে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে নেতাকর্মীরা গণসংযোগ চালাচ্ছেন এবং ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সমর্থন চাইছেন। ঘোষিত তালিকা অনুযায়ী, খালেদা জিয়া দিনাজপুর-৩, বগুড়া-৭ ও ফেনী-১ আসনে লড়বেন, আর তারেক রহমান প্রথমবারের মতো বগুড়া-৬ আসন থেকে প্রার্থী হয়েছেন।

ভোলা-৪ আসনের প্রার্থী নুরুল ইসলাম নয়ন জানিয়েছেন, দীর্ঘ আন্দোলনের পর সাধারণ মানুষ এবার ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছে। লক্ষ্মীপুর-২ আসনের আবুল খায়ের ভূঁইয়া উল্লেখ করেছেন, নির্বাচনি এলাকায় নেতাকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ঢাকা-৪, ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১৬ আসনের প্রার্থীরা গণমিছিল ও লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।

-শরিফুল


গ্যাং লিডার থেকে বিএনপির সমাবেশে: সরোয়ার বাবলার অজানা গল্প

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১০:৩৪:৩১
গ্যাং লিডার থেকে বিএনপির সমাবেশে: সরোয়ার বাবলার অজানা গল্প
ছবি: সংগৃহীত

চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগের সময় গুলিতে নিহত হন সরোয়ার হোসেন বাবলা, যিনি পুলিশের তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ছিলেন। বাবলা প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় ধরে চট্টগ্রামের অপরাধ জগতে সক্রিয় ছিলেন। এক সময় তিনি ‘এইট মার্ডার’ মামলার আসামি এবং সাজ্জাদ হোসেন খানের সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। পরে সাজ্জাদের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হলে বাবলা নিজস্ব একটি গ্যাং গঠন করেন এবং এরপর থেকে দুজনের মধ্যে বিরোধ চলতে থাকে।

এর আগে বাবলাকে একাধিকবার লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ বুধবার বিকেলে তাকে পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ জানিয়েছেন, প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী এই হামলার আসল লক্ষ্য এরশাদ উল্লাহ ছিলেন না, বরং মূল টার্গেট ছিল সরোয়ার বাবলা।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাবলা ও তার সহযোগী নুরুন্নবী ম্যাক্সন সাজ্জাদ হোসেনের সহায়তায় অপরাধ জগতে প্রবেশ করেন। তারা অত্যাধুনিক অস্ত্র হাতে চট্টগ্রামে ত্রাস সৃষ্টি করতেন। ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিঙ্গারবিল থেকে ম্যাক্সন গ্রেফতার হন। তার তথ্যের ভিত্তিতে বাবলাকেও চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকা থেকে আটক করা হয়। তখন তাদের কাছ থেকে একে-৪৭ রাইফেল, এলজি, পিস্তল এবং বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

২০১৭ সালে জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তারা কাতারে চলে যান এবং সেখানে চাঁদাবাজি ও সহিংস কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকেন। ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বাবলাকে কাতার থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং পরবর্তীতে চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানায় অভিযান চালিয়ে তার বাসা থেকে আরও অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।

বাবলাকে গত বছরের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময়ও গ্রেফতার করা হয়েছিল। জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর তিনি বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিশেষ করে চট্টগ্রাম-৪ আসনের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে সম্পর্কের পর তিনি মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ এবং দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানসহ দলের অন্যান্য নেতাদের সঙ্গেও ঘনিষ্ঠ হন। মাত্র এক মাস আগে বাবলা বিয়ে করেন, যেখানে তার বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন এরশাদ উল্লাহ ও আবু সুফিয়ানসহ দলের কয়েকজন নেতা। এছাড়া, বিএনপির বিভিন্ন সমাবেশে তাকে দলের নেতাদের পাশে দেখা গেছে।

বুধবার বিকেলে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলী এলাকায় গণসংযোগের সময় এরশাদ উল্লাহ এবং আরও দুইজন গুলিবিদ্ধ হন। ঘটনাস্থলেই সরোয়ার বাবলা মারা যান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, এই হামলার সঙ্গে প্রার্থীর কোনো সম্পর্ক নেই। এই ঘটনা মূলত দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের পুরনো বিরোধের জের। তিনি বলেন, প্রচারণায় শত শত মানুষ অংশ নিয়েছেন, বাবলা সেখানে উপস্থিত ছিলেন ঠিকই, তবে এটি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, নির্বাচনের আগে এই ধরনের ঘটনা একটি অশুভ বার্তা। তিনি সকল রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করেছেন, নির্বাচনী প্রচারণার ২৪ ঘণ্টা আগে পুলিশকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জানাতে, যাতে সম্ভাব্য ঝুঁকি প্রতিরোধ করা যায়।

-শরিফুল


মির্জা ফখরুলের নিন্দা, এরশাদ উল্লাহ হামলার দ্রুত তদন্তের দাবি

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১০:২৬:৪৯
মির্জা ফখরুলের নিন্দা, এরশাদ উল্লাহ হামলার দ্রুত তদন্তের দাবি
ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহকে নগরীর হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগের সময় গুলিবিদ্ধ করা হয়েছে। তিনি নগর বিএনপির আহ্বায়ক। ঘটনাস্থলে আরও একজন যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিএনপি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেছেন এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বরাতে জানা যায়, এরশাদ উল্লাহ মনোনয়ন পাওয়ার পর হামজারবাগ এলাকায় গণসংযোগ কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন। এ সময় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের গুলিতে তিনি পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হামলাকারীর পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

চট্টগ্রাম মহনগর পুলিশ উত্তর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) আমিরুল ইসলাম জানান, নির্বাচনি প্রচারণার সময় এরশাদ উল্লাহর ওপর হামলার খবর পেয়েছেন এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এরশাদ উল্লাহর নাম ঘোষণা করা হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এই হামলা ঘটায় আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে।

-রফিক


সাবেক অর্থমন্ত্রীর পুত্র রেজা কিবরিয়া বিএনপিতে, যোগ দিয়ে জানালেন নির্বাচনী পরিকল্পনা

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৬ ১০:১৩:২৬
সাবেক অর্থমন্ত্রীর পুত্র রেজা কিবরিয়া বিএনপিতে, যোগ দিয়ে জানালেন নির্বাচনী পরিকল্পনা
ছবিঃ সংগৃহীত

প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়ার ছেলে রেজা কিবরিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-তে যোগ দিয়েছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বুধবার (৫ নভেম্বর) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরানোর আপিল শুনানি শেষে অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন রেজা কিবরিয়া।

রেজা কিবরিয়া সাংবাদিকদের বলেন, "আমি ইতিমধ্যে বিএনপিতে যোগ দিয়েছি এবং কয়েক দিন আগে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ ফরম পূরণ করেছি।" তিনি জানান, তিনি হবিগঞ্জ-১ আসন থেকে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে চান। তিনি আরও যোগ করেন, "দলের উচ্চপর্যায় থেকে আমাকে ওই আসনে মনোনয়ন দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।"

বিএনপি সূত্র জানাচ্ছে, দলের পক্ষ থেকে হবিগঞ্জ-১ আসনটি এখনো শূন্য রাখা হয়েছে। গত সোমবার দল ২৩৭টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও ওই আসনসহ মোট ৬৩টি আসন ফাঁকা রাখা হয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে রেজা কিবরিয়া সেখান থেকে মনোনয়ন পেতে পারেন।

রেজা কিবরিয়া এর আগে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনেও এই হবিগঞ্জ-১ আসন থেকেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোটের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

নির্বাচনের পর তিনি সাবেক ঢাবি ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বাধীন 'গণঅধিকার পরিষদ'-এ যোগ দেন এবং সংগঠনটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তবে পরবর্তীতে দুই নেতার মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেওয়ায় রেজা কিবরিয়া ধীরে ধীরে রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। এবার সরাসরি বিএনপিতে যোগ দিয়ে তিনি আবারো সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরলেন।


কেউ যেন ফাউল গেম খেলতে না পারে: চট্টগ্রাম হামলায় সতর্ক করলেন জামায়াত আমির

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ২১:৩৮:৫৯
কেউ যেন ফাউল গেম খেলতে না পারে: চট্টগ্রাম হামলায় সতর্ক করলেন জামায়াত আমির
ছবিঃ সংগৃহীত

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামে গণসংযোগ চালানোর সময় বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এই হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হওয়া সরওয়ার বাবলা মারা গেছেন। বুধবার (৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরের পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় এই সহিংস ঘটনা ঘটে।

আহত এরশাদ উল্লাহকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে এই হামলার পর রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র নিন্দা ও প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

জামায়াত আমিরের নিন্দা ও সতর্কতা

হামলা ও হত্যাকাণ্ডের এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার রাতে নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই নিন্দা জানান এবং সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

জামায়াত আমির তার পোস্টে বলেন, "আজ চট্টগ্রামে রাজনৈতিক দলের এক নেতা, যিনি আগামী নির্বাচনে প্রার্থী, তাঁর সহকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে একজনকে খুন করেছে এবং প্রার্থীসহ আরও কয়েকজনকে আহত করেছে। এ ঘটনাটি একান্তই নিন্দনীয়।"

তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন এবং প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করেন।

ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, অতীতের মতো এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা নিয়ে যেন কেউ 'ফাউল গেম' খেলতে না পারে, সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখা জরুরি। তিনি সতর্ক করে বলেন, ফাউল গেমের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী ও খুনিরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে, যা কারো জন্যই কল্যাণকর নয়।


কালো শকুনের হাতে দেশ, সতর্ক করলেন সারজিস আলম

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৭:১২:৪১
কালো শকুনের হাতে দেশ, সতর্ক করলেন সারজিস আলম
ছবি : কালের কণ্ঠ

দেশব্যাপী আবারও চাঁদাবাজি, ধান্দাবাজি, লুটপাট, দখলদারি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের পুনরাবৃত্তি শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, "আগের বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আবারও ধান্দাবাজিতে লিপ্ত হওয়া শুরু করেছে।"

বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাতকাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওই ইউনিয়নের এনসিপি কমিটি ঘোষণা অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, "আগের যা সিস্টেম, ওই সিস্টেম আবার নতুন করে চালু হওয়া শুরু করেছে।" তিনি আরও বলেন, "কেউ কেউ সুযোগ পেয়ে তার চেয়ে খারাপ অবস্থা তৈরি করা শুরু করেছে।"

তিনি উল্লেখ করেন, গত বছরের আগস্ট থেকে ফেব্রুয়ারি—এই ছয় মাস তারা কোনো রাজনৈতিক দল করেননি। কিন্তু যখন দেখলেন, নতুন করে যদি রাজনীতির হাল না ধরা হয়, তাহলে ঘুরেফিরে আবার "কালো শকুনের হাতে বাংলাদেশ চলে যাবে", তখন তারা রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

এনসিপি নেতা বলেন, "একটা অভ্যুত্থান ঘটানোর পরে আমাদের দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।" তিনি আরও বলেন, যারা জীবন দিল, রক্ত দিল, তাদের এই দায়বদ্ধতাটা এনসিপি কর্মীদের জীবন শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পালন করতে হবে।

সারজিস আলম প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, "এই অপকর্মকারী যারা আছে, যেই দলের হোক না কেন, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি রাখতে হবে।"

এ সময় পঞ্চগড় সদর উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী নয়ন তানবীরুল বারীসহ এনসিপি এবং জাতীয় যুবশক্তির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।


"বিএনপি নেতাদের হাতে হেনস্তার শিকার সালাউদ্দিন"

রাজনীতি ডেস্ক . সত্য নিউজ
২০২৫ নভেম্বর ০৫ ১৫:২৫:৪৮
"বিএনপি নেতাদের হাতে হেনস্তার শিকার সালাউদ্দিন"
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শহীদ গাজী সালাউদ্দিন মৃত্যুর আগে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের হাতে অপমানের শিকার হয়েছিলেন। তার এই ঘটনার মধ্য দিয়েই স্পষ্ট হয়েছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নাহিদ ইসলাম মনে করেন, এই নিরাপত্তা সংকট শুধু কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় নয়, বরং এটি গোটা দেশের একটি রাজনৈতিক বাস্তবতা, যেখানে আন্দোলনে অংশ নেওয়া মানুষগুলো এখনো প্রতিশোধ ও ভয়-ভীতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছে।

বুধবার সকাল ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় নিহত শহীদ সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এসময় নাহিদ ইসলাম বলেন, জুলাই আন্দোলনের সময় যারা ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের পাশে এনসিপি সবসময় থাকবে। তবে তিনি স্পষ্ট করে জানান, শুধু তাদের দল নয়, বরং সরকারসহ সব রাজনৈতিক দলেরই উচিত এই শহীদ ও আহতদের পাশে দাঁড়ানো। কারণ এই আন্দোলনের লড়াইয়ের ফলেই আজকের গণতন্ত্রের পুনর্জন্ম ঘটেছে।

তিনি আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধাদের চিকিৎসার দায়িত্ব অন্তর্বর্তী সরকারের ছিল, কিন্তু তারা সেই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে এখনো আহতদের মৃত্যু ঘটছে, লাশের সারি দীর্ঘ হচ্ছে, এবং শহীদের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গাজী সালাউদ্দিনও ছিলেন সেই আহতদের একজন, যিনি শেষ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন। নাহিদ ইসলাম সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যেসব আহত যোদ্ধা এখনো কাতরাচ্ছেন, তাদের অবিলম্বে সর্বাত্মক ও দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, “শুধু অল্প সময়ের চিকিৎসা নয়, তাদের এমন চিকিৎসা প্রয়োজন যা তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারে।”

নির্বাচনের প্রসঙ্গে এসে তিনি বলেন, “এখন যখন নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে, তখন যেন আমরা আমাদের আহত ও শহীদ ভাইদের ভুলে না যাই।” তার মতে, তাদের প্রতি অবহেলা চলতে থাকলে সালাউদ্দিনের মতো আরও অনেক শহীদের নাম যুক্ত হবে তালিকায়। নাহিদ ইসলাম অভিযোগ করেন, সরকারের পক্ষ থেকে আহত যোদ্ধাদের যে স্বাস্থ্যসুবিধার কথা বলা হয়েছে, তা বাস্তবে যথাযথভাবে কার্যকর নয় এবং এতে নানা অনিয়ম রয়েছে।

ভবিষ্যৎ নির্বাচনের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, এনসিপি ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে এবং ৩০০টি আসনকেই লক্ষ্য করে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে তিনি সম্মানের সঙ্গে জানান, গণতন্ত্র রক্ষায় খালেদা জিয়ার অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, যে আসনগুলোতে তিনি প্রভাবশালী, সেখানে এনসিপি প্রার্থী দেবে না। বাকি আসনগুলোতে শাপলা কলি প্রতীকে তাদের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান করেছি, গডফাদারদের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার সময় এখন। সমাজের সাধারণ, শিক্ষিত ও গ্রহণযোগ্য মানুষদেরকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদে দেখতে চাই।” তার বক্তব্যে উঠে এসেছে একটি নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির আহ্বান, যেখানে নেতৃত্ব গড়ে উঠবে যোগ্যতা, সততা ও মানুষের আস্থার ভিত্তিতে।

বক্তব্য শেষে নাহিদ ইসলাম গাজী সালাউদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল-আমীন, কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, সদস্য আহমেদুর রহমান তনু, এবং জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি তুহিন খান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, জুলাই আন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে গাজী সালাউদ্দিন এক চোখের দৃষ্টি হারান এবং অপর চোখেও আংশিকভাবে অন্ধ হয়ে পড়েন। গলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ায় তার শ্বাসনালিতেও জটিলতা দেখা দেয়। দীর্ঘ ১৫ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর ২৬ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু শুধু একটি পরিবার নয়, বরং পুরো জুলাই আন্দোলনের জন্য এক গভীর ক্ষতি বলে মন্তব্য করেছেন এনসিপি নেতারা।

-রফিক

পাঠকের মতামত:

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

গবেষণা ভিত্তিক শিক্ষা: বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য এক নতুন দিগন্ত

বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পাঠদান, দীর্ঘদিন ধরে পাঠ্যপুস্তকনির্ভর শিক্ষা ও পরীক্ষাকেন্দ্রিক মূল্যায়নের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এই ব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের... বিস্তারিত

হৃদরোগের ঝুঁকি কম বয়সে: হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ চিনে সতর্ক হোন

হৃদরোগের ঝুঁকি কম বয়সে: হার্টের রক্তনালী বন্ধ হওয়ার ৭টি প্রাথমিক লক্ষণ চিনে সতর্ক হোন

বর্তমানে কম বয়সের মধ্যেই হৃদরোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, তীব্র মানসিক চাপ এবং অপর্যাপ্ত শারীরিক চলাফেরার মতো কারণগুলো... বিস্তারিত